ক্রিকইনফো এবং ভারতের সম্ভাব্য দালালি

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ১৯/০৩/২০১২ - ৭:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যারা ক্রিকইনফোর সাথে পরিচিত, তাঁরা হয়ত জানেন, ক্রিকইনফোর যেকোন সংবাদ পাতার ডানদিকে Latest, Most Viewed আর Most Discussed নামে তিনটি অপশন থাকে। উদ্দেশ্য – পাঠকের কাছে সুবিধাজনকভাবে খবর পৌঁছে দেয়া। আমার ক্রিকইনফোর অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, যেসব লেখা Most Viewed অংশে থাকে, সেগুলো Most Discussed অংশেও থাকে। কারণটা খুবই পরিষ্কার, মানুষ যে খবর বেশি পড়ে সেটাতেই তো মন্তব্য বেশি হবে। ক্রিকইনফোর মন্তব্য করার নিয়ম হচ্ছেঃ একটা খবর যখনই প্রকাশিত হয়, তখন থেকেই তার নিচে মন্তব্য করার জায়গা বিদ্যমান থাকে। এই মন্তব্য দুভাবে করা যেতে পারে – খোমাখাতার মাধ্যমে লগইন করে অথবা সরাসরি ক্রিকইনফোতে রেজিস্ট্রেশন/লগইন করে। ছোট্ট এই ভূমিকার পর এবার মূল কথায় আসি।

ভারতের সাথে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয় নিয়ে আর দশজন মানুষের মত আমারও উচ্ছাসের কমতি ছিলো না। আর যেহেতু আমি ক্রিকইনফোর একজন নিয়মিত পাঠক, তাই সেখানে এই ম্যাচ সম্পর্কিত সব খবরই আমি পড়েছিলাম, সাথে মন্তব্যগুলোতেও চোখ বুলিয়েছিলাম। এখানে বলে রাখি, ক্রিকইনফোর মন্তব্য অনেক সময়ই অনেক গঠনমূলক আলোচনা চোখে পড়ে। তবে এবার আমার লক্ষ্য ছিলো বাংলাদেশের প্রতি বর্ষিত প্রশংসাবাণীতে গা ভাসানো। কিন্তু অবাক হয়ে খেয়াল করলাম, ঐতিহাসিক সেই জয়ের পর ক্রিকইনফোর ম্যাচ রিপোর্টের নিচে মন্তব্য অংশ অনুপস্থিত। প্রথমে আমি ভেবেছিলাম, কারিগরী কোন গোলযোগের কারণে মন্তব্য দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু বেশ অনেকক্ষন পরে ও যখন জিনিসটা ঠিক হল না, তখন আমার মনে সন্দেহ দানা বাধতে শুরু করে। আগে থেকেই সন্দেহ করার একটা কারণ ছিল – ক্রিকইনফোতে মাত্রাতিরিক্ত রকম ভারতের প্রতি পক্ষপাত দেখানো হয়। ভারতের খবর যে ব্যাপ্তি এবং গুরুত্ব নিয়ে ছাপা হয়, অন্য কোন দেশের খবর সেভাবে ছাপা হয় না; এমনকি ভারতের ঘরোয়া লীগের খবর জানার জন্য তাদের একটা আলাদা বাটনই রয়েছে! (অন্য কোন দেশের জন্য সরাসরি এরকম ব্যবস্থা নেই)

আজ দুপুরে হঠাৎ করে Most Viewed অংশে গিয়ে দেখি, সেখানে বাংলাদেশের জয়ের সংবাদ দ্বিতীয়তে অবস্থা করছে, প্রথম অবস্থানে অনুমিতভাবেই শচীন টেন্ডুলকারের শততম সেঞ্চুরির খবর। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, Most Discussed অংশে সেঞ্চুরির খবর ১০৭৬টা কমেন্ট নিয়ে প্রথমে থাকলেও বাংলাদেশের খবর সেরা পাঁচেই আসতে পারেনি। বাংলাদেশের খবরে ঢুকে খেলাম আরেকটা ধাক্কা – সেখানে কমেন্ট নেয়া শুরু হয়েছে। প্রথম মন্তব্য করা হয়েছে ১৯ তারিখ বাংলাদেশ সময় রাত ১২.২৭ এ; মোট মন্তব্যের সংখ্যা ৯। যেখানে ১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত ভারত বনাম পাকিস্তানের খেলার সংবাদে মন্তব্যের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে, সেখানে একই প্রতিযোগিতার অন্য একটি খেলার ক্ষেত্রে বৈষম্য সত্যিই চোখে পড়ার মত।

আমার আশঙ্কা, ভারতের প্রতি পক্ষপাতিত্বের কারণে মন্তব্য করার সুযোগ বন্ধ রাখা হয়েছিল। ক্রিকেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের এ ধরণের আচরণ সত্যিই অগ্রহণযোগ্য।

তুষার কাওসার
tushar ডট kawsar অ্যাট gmail ডট com


মন্তব্য

তারেক এর ছবি

ক্রিকইনফো মেইনলি ইন্ডিয়ানদের জন্য বানানো সাইট,তাই যেসব খবর ওদের ভালো লাগবে না তা ওরা কম দেখাবে,এইটাই স্বাভাবিক।

যেমন সেদিন দেখলাম নিও ক্রিকেট চ্যানেলে বাংলাদেশের সাথে হারা ম্যাচের হাইলাইটস না দেখায়া খালি 'শ শ সালাম' নাম দিয়ে টেন্ডুল্কারের সেঞ্চুরির হাইলাইটস দেখাচ্ছে।

সাই দ এর ছবি

এটা ইন্ডিয়ার সাইট। ওরা তো তা করবেই। আর ইন্ডিয়ান মিডিয়া অনেক শক্তিশালি। তবে আমার মনে হয় আমরা যদি ধারাবাহিক ভাল খেলতে থাকি তাহলে আমাদের সংবাদকেও ওরা গুরুত্ব দিবে।
দেশপ্রেম আর জিংগোইজম-এর মধ্যে যে পার্থক্য আছে- এটা সম্ভবত আজকাল মিডিয়া এটা বুঝতে পারে না বা চায় না

তুষার কাওসার এর ছবি

একটা উদাহরণ দিতে পারি। ভারত যদি দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে খেলতে যায়, তাহলে অনুমিতভাবেই বেশি কাভারেজ পাবে ভারতের খেলোয়াড়রা, যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতের চেয়ে কোন বিচারেই কম ভালো দল নয়।

ahamed al nahian এর ছবি

হমম।।।।জোর জার মুললুক টার।।।।।সব জায়গায় একি নিয়য়োম চোলতেসে।।।।।নিরেপেকখতা বলতে কিছুই নাই।।

তুষার কাওসার এর ছবি

নিরপেক্ষতা ধারণাটাই দিনে দিনে অপ্রচলিত হয়ে যাচ্ছে।

সৌরভ এর ছবি

ইন্ডিয়ারা সব কিনে নিসে আমাদের কিছু করার নাই।বড় দেশ,বড় লোকসংখ্যা,কূটনৈতিক দিক থেকেও বড়।

Shantanu এর ছবি

সত্যি বলতে। ইন্ডিয়ার একটা মহা সমস্যা হল তাদের ডমিনেট করার প্রবনতা সেই ১৭৫৭ সাল থেকে চলে আসছে। কি উপনেবেশিক শাসন, কি স্বাধীন অবস্থা, সব সময় তাদের প্রাধান্য বিস্তার করতে চাই ছিল। এখন ত আবার ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন, কিন্তু তারা এতা ভুলে যায়, এই মহাদেশের বাইরে গেলেই তাদের চিরাগ নিভে যায়। অথচ এই তারাই কিনা আবার ২০২০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সাথে খেলতে চায় নাই, আসলে তারা চায় টা কি, এটাই এখন প্রশ্ন। আশা করি তারা বাংলাদেশের সাথে পরের বার খেলতে সময় একটু ভেবে চিন্তে খেলবে।

তুষার কাওসার এর ছবি

করার অনেক কিছুই আছে। প্রতিবাদের প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে 'ভারত বনধ'।

তৌহিদ এর ছবি

ভালো লিখেছেন তুষার ভাই হাসি প্রথম দর্শনেই প্রতিবাদী কণ্ঠ হাসি নিয়মিত হয়ে যান গুরু গুরু

তুষার কাওসার এর ছবি

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ তৌহিদ হাসি

বঙ্গসন্তান এর ছবি

আমিও ব্যাপারটা খেয়াল করেছিলাম। মুশফিক এর ভারতীয় বোলারদের নিয়ে যে নিউজ ওটাতেও মনে হয় খেলার পরে কিছু মন্তব্য মুছে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে যেখানে মুশফিকের কথা নিয়ে অতিমাত্রায় ঠাট্টা করা হয়েছিল।

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

ক্রিকইনফো ইংল্যান্ডের সাইট যদিও ২০০৭ সন থেকে এর মলিকানা যুক্তরাষ্ট্রের ইএসপিএন এর হাতে রয়েছে। আরো অতীতে গেলে দেখা যায় এই সাইটটার জন্ম হয়েছে ব্রিটিশ গবেষক ডক্টর সায়মন কিং এর হাতে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অভ মিনাসোটায় বসে। পরবর্তিতে উইজডেন কিনে নেয় সাইটটা যা তারা ২০০৭ এ ইএসপিএন-কে বিক্রি করে দেয়। এ কথাগুলো এজন্যে বললাম, কারণ উপরে কিছু মন্তব্যে দেখলাম সবাই ঢালাও ভাবে বলছে সাইটটা ভারতীয়। যেহেতু সচলায়তনের পাঠক প্রচুর, তাই এতে মানুষের মধ্যে ভুল তথ্য ছড়ানোর সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।

এবার আসছি নিরপেক্ষতার প্রশ্নে। ক্রিকইনফো আসলে কোন দিনও নিরপেক্ষ ছিল না। আইপিএল এর অ-নে-ক আগে থেকে ডোমেস্টিক ক্রিকেট হিসেবে ক্রিকইনফো শুধু কাউন্টি ক্রিকেটকেই কভার করতো। যখন আন্তর্জাতিক ম্যাচ চলতো, তখনও পাশে ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ম্যাচগুলোর স্কোর থাকতো। ইএসপিএন এর হাতে মালিকানা যাবার পর মূলতঃ ক্রিকইনফোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট ফোকাস পেতে শুরু করেছে। আর আইপিএল তো টাকার খেলা। যেখানে টাকা, সেখানে মিডিয়া যাবেই।

আন্তর্জাতিক ম্যাচের ক্ষেত্রে ক্রিকইনফোর পক্ষপাতিত্ব সীমাহীন। ইংল্যান্ডের যে কোন ম্যাচের খেলার কমেন্ট্রি খুলে দেখতে পারেন। বিশেষতঃ অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গের খেলাগুলো। কমেন্টেটররা কীভাবে নির্লজ্ব পক্ষপাত করে তার নমুনা রয়েছে। আর ভারতের প্রতি তাদের যে পক্ষপাতের কথা আপনি তুলে ধরেছেন, সেটা আসলে ১০০ কোটি জনগণের বাজার দ্বারা প্রভাবিত। গার্ডিয়ানের এই নিউজটা সে কথাই বলে। এই আর্টিকেলের একদম নিচে ক্রিকইনফোর টাইমলাইনও দেয়া আছে।

তবে শেষ কথা হলো, আমরা আসল জায়গায় জবাব দিয়ে দিয়েছি। আর সেই আসল জায়গাটা হচ্ছে মাঠ হাসি

সচল জাহিদ এর ছবি

চলুক চলুক চলুক


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

তুষার কাওসার এর ছবি

অনেক কিছু জানতে পারলাম। অনেক ধন্যবাদ, পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

এই মন্তব্যটা দারুণ !!

শৌভিক এর ছবি

ক্রিকইনফো এখন ইএসপিএন এর আন্ডারে চলে । আর ইএসপিএনে স্পোর্টসসেন্টার যারা দেখেন তারা অন্তত বুঝবেন । এখানে ইন্ডিয়ান টিম নিয়ে ২০ টা রিপোর্টের পর একটা ইন্টারন্যাশনাল ম্যাচের খবর দেওয়া হয় । এমনকি ধোনিরা আজ বিচে গেলেন , যুবরাজের বিয়ের খবরও থাকে । আর কি বলব

তুষার কাওসার এর ছবি

আসলেই, কিছু বলার নাই।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

@নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী,
উত্তম জাঝা!

অরিত্র অরিত্র এর ছবি

চলুক

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

চলুক

সাইফুল ইসলাম এর ছবি

আমিও ব্যাপারটা খেয়াল করেছি, শালাদের লজ্জা-শরম কম আরকি। রেগে টং

ফাহিম সরদার এর ছবি

আসলেই সত্যি কথা হচ্ছে "জোর জার মুল্লুক তার।" কিন্তু যেকোনো বস্তুনিষ্ঠ মিডিয়ার উচিত বিষয়টার দিকে নজর রাখা। কারণ মিডিয়া কেবল একটি নির্দিষ্ট জাতির প্রতিনিধিত্ব করেনা(অন্তত ক্রিকইনফোর মত একটি আন্তর্জাতিক খেলার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট)। তবে ভারতীয়দের আত্মপ্রচার সবসময়ই দৃষ্টিকটু ছিল এবং আছে, এবং দেখে মনে হচ্ছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। বিষয়টা দুঃখজনক, কিন্তু এর প্রতিকার আমাদেরই করতে হবে। দেশী মিডিয়াকে আসুন আরও বেশি জাগিয়ে তুলি, মিডিয়াতে মেধাবী তরুণ সমাজের প্রবেশ প্রয়োজন। একই সাথে আমাদের ক্রিকেট, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের শিক্ষাঙ্গন, সবজায়গায় আমরা যেন নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারি। মেধার আমাদের কমতি নেই, দরকার কেবল আত্মবিশ্বাস আর প্রচেষ্টা। জাতি হিসেবে আমরা অন্য জাতিকে শ্রদ্ধা করব, কিন্তু তাদের উপর নির্ভর নয়!

লেখাটি চমৎকার। চলুক

তুষার কাওসার এর ছবি

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ ফাহিম।

mostafiz  এর ছবি

তুষার ভাই, ভালো লিখছেন।
বছর খানিক আগে আমি যখন লাইভস্কোর দেখতে ক্রিকইনফোতে জেতাম, বেশিরভাগ সময়ই ওদের সার্ভার ডাউন পেতাম। তাই এই সাইটটির উপর আমার ডেপেন্ডেনসি অনেক কম। তবে ইদানিং মাঝে মাঝে ঢুঁ মারলেও অ্যাডব্লকে অপ্রয়োজনীয় আইফ্রেম ব্লক থাকায় ফালতু কমেন্টগুলো আমার ব্রাউজার শো করে না হাসি

তবে সবখানে ইন্ডিয়ানদের দালালী আর প্রতারণা নিয়ে আমি শঙ্কিত।

তুষার কাওসার এর ছবি

অ্যাডব্লক নিয়ে তোর কেরামতি দেখে কিছুক্ষণ অবাক হয়ে ছিলাম, মনে আছে? গুরু গুরু

আর ভারতীয়দের দালালি নিয়ে শঙ্কিত আমরা সবাই।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ক্রিকইনফো সম্ভবত ইংল্যান্ডের সাইট। তবে কাজ করে বেশিরভাগই ইন্ডিয়ানরা। সেখানে ভারতের দালালি করবে এটাই স্বাভাবিক।

আমাদের নিজেদের মিডিয়ার অবস্থা আরো খারাপ। বাংলাদেশের টাইগার ক্রিকেট কোন কামের সাইট না। বেশিরভাগ সময়ই ডাউন। লাইভ স্কোর পর্যন্ত দেখায় না।

বাংলাক্রিকেট একটা ফ্যান সাইট আছে। ওখানে পাকিস্তান নিয়া কিছু বললেই ব্যান।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

তুষার কাওসার এর ছবি

ক্রিকইনফো ছাড়া অন্য কোন সাইটে যাওয়া হয় না, তাই অন্যগুলোর অবস্থা সম্পরকে পরিষ্কার ধারণা নেই। এতোদিন পর্যন্ত এদের আচরণ মুখ বুজে সয়ে গিয়েছি; কিন্তু এবারেরটা আগের সব কিছুকে ছাড়িয়ে গিয়েছে।

মন মাঝি এর ছবি

এইখানে ইন্ডিয়ানদের 'দালালি', 'প্রতারনা', ইত্যাদি কিভাবে পাওয়া গেল আমি বুঝলাম না। ক্রিকইনফো কোন ভারতীয় প্রতিষ্ঠান বা মিডিয়া নয় বলেই জানি, বরং একটা মার্কিন প্রতিষ্ঠান "Entertainment and Sports Programming Network" ওরফে ESPN-এর মালিকানাভুক্ত এটি। 'দালালি' করলে তারাই করছে, আর কেউ নয়। আর সেটাও কেন এত অফেন্সিভ হবে তা ঠিক বোধগম্য না আমার কাছে। মালিক প্রতিষ্ঠানের নামের একদম প্রথম শব্দটাই জানিয়ে দিচ্ছে তাদের আসল কাজ হচ্ছে 'বিনোদন' জোগানো - এর চেয়ে বড় কোন মহৎ লক্ষ্য নেই তাদের। তো, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে যদি একটা বিনোদন-ব্যবসায়ী তার প্রোডাকটা তার বৃহত্তম কাস্টোমার-বেইসকে (যে কিনা ক্রিকেটের ক্ষেত্রে সম্ভবত আর সব কাস্টোমারের মোট যোগফলের চেয়েও বড়) লক্ষ্য করে কাস্টমাইজ করে, টেইলর করে, তাহলে কি তাকে দোষ দেয়া যায়? সেটাই কি স্বাভাবিক না? ভারতীয় ক্রিকেটের টিভি-দর্শকসংখ্যা সম্ভবত যে কোন সময়ই বাংলাদেশের টিভি-অটিভি মিলায়ে পুরা দেশের সম্পূর্ণ জনসংখ্যার থেকেও বেশি, আর বিশ্বকাপ বা বড় কোন টুর্নামেন্ট হলে তো কোন কথাই নেই - চীন বাদে তখন তাদের কেবল টিভি-দর্শকসংখ্যাই দুনিয়ার যে কোন দেশের সম্পূর্ণ জনসংখ্যা থেকেও বেশি হয়ে যায়, আর বাংলাদেশের পুরো জনসংখ্যার ৪-৫ গুনেরো বেশি হয়ে যেতে পারে মনে হয়। একটা গ্লোবাল বিনোদন-ব্যবসায়ী তো সেই গ্রাহক-বেইসকে সবার আগে তুষ্ট করা, ধরে রাখা, আকৃষ্ট করা ও অগ্রাধিকার দেয়ার পলিসিই গ্রহন করবে, তাই না? সেটাই কি স্বাভাবিক, কাম্য, এবং তাদের দায়িত্ব না? সেজন্যে তারা বা তাদের প্রধান গ্রাহকরা কেন 'দালাল' বা 'প্রতারক' হতে যাবেন?

আরেকটা ব্যাপার - খোদ বাংলাদেশের মিডিয়াই যখন একই কাজ করে (যাদের প্রায় পুরো কাস্টমার-বেইসই বাংলাদেশী বা এদেশ থেকে যাওয়া প্রবাসী), তখন অন্যদের দোষ দিয়ে লাভ কি? দেশের এক লম্বর পত্রিকা 'শেষের অন্ধকার', যার সব ক্রেতাই বাংলাদেশি, যখন বাংলাদেশের জয় নিয়ে একটা রিপোর্ট লিখতে গিয়ে অন্য দেশের প্রশংসা দিয়ে পৃষ্ঠা ভরিয়ে দেয় আর যাকে নিয়ে লিখতে বসা তার কথাই ভুলে যায় প্রায় - 'দালালি', 'প্রতারনা' এইসব শব্দবন্ধ তখনই বরং প্রযোজ্য হয় বেশি।

****************************************

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

চলুক

তুষার কাওসার এর ছবি

কষ্ট করে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। হাসি

দালালির সংজ্ঞা আপনার কাছে কীরকম সেটা আমার কাছে পরিষ্কার হল না। বিনোদন জোগানো আর দালালির মাঝে বেশ বড় একটা ফারাক আছে বলেই আমার ধারণা। বিনোদন আমরা অনেক উৎস থেকেই পাই, কয়টা জায়গায় এরকম পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণ সহ্য করতে হয় আমাদের? দালালি ESPN করুক আর যেই করুক, এতে করে ক্রিকইনফো ধোয়া তুলসি পাতা হয়ে যাচ্ছে না।

আপনার শেষের প্যারার কথাগুলোর সাথে সহমত। আলুপেপারের কীর্তিকলাপ আসলে কারো কাছেই অজানা নয়, এবং এটাই বোধহয় দালালির প্রকৃষ্ট উদাহরণ। তবে একটা কথা উল্লেখ করা অপ্রাসঙ্গিক হবে না - খবরের কাগজগুলো অনেক সময়ই এরকম আচরণ করে মানুষের অসচেতনতার সুযোগ নিয়ে। একটা উদাহরণ দেই - আমি বহু বছর ধরে আলুপেপারের নিয়মিত পাঠক, কিন্তু ব্লগোস্ফিয়ারে পা রাখার আগে এদের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ তেমনভাবে কখনোই খেয়াল করা হয়নি।

আমার লেখাটার প্রধান উদ্দেশ্যই ছিল মানুষকে সচেতন করে তোলা, কারণ সচেতনতা ছাড়া অন্যায়ের নাগপাশ থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব হবে না।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

চিন্তিত

আপনার এই মন্তব্যটা পড়ে আবার নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।
আপনার কথাটা যুক্তিপূর্ণ।
মন্তব্য করারা সুযোগ না দেওয়াটা অবশ্যই অন্যায় ।

তুষার কাওসার এর ছবি

চলুক

ধুসর গোধূলি এর ছবি

এই ভিডিওটা দেখেন।
২০০৭-এ জনৈক ভারতীয় দর্শক বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের আগে বেশ উৎসাহ নিয়ে বলেছিলো ধোনি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এক ওভারে 'সাত খানা ছক্কা' হাঁকাবে!

তো, তৎকালীন ভারতীয় দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণে ধোনি এন্ড কোং 'সাত্তা পে ছক্কা' হাঁকিয়েছিলো কিনা, সেটা বাংলাদেশের সাথে খেলতে নামলেই ভারত দলের প্রতিটা খেলোয়াড় দমে দমে জপে বলেই ধারণা করি! এ ব্যাপারে সচল শিমুল অসাধারণ একটি লেখা লিখেছিলেন

এবারও ভারতীয়দের সেই একই মানসিকতার দেখা মিললো বাংলাদেশের 'উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে' ৪৪৪ রান করার প্রত্যাশায়, নিচের রিপোর্টে-

এরকম থাকে যাদের আকাশচুম্বী মামুর বাড়ির আশা। তারা জায়গামতো মোম্বাই মরিচের ডলা খেলে সব দরজা-জানালা বন্ধ করে সেখানে হাতপাখার বাতাস করবেই, এটাই তো স্বাভাবিক।

মন মাঝি এর ছবি

মোম্বাই/বোম্বাই না, এটা আসলে আমাদের সিলেটের (আর আসাম) মরিচ - 'নাগা মরিচ'। এজন্যেই এত ঝাল দেঁতো হাসি

আসেন, মুশফিক-সাকিবদের আরও বেশি করে নাগা বা কামরাঙা মরিচ সাপ্লাই দেই যাতে 'জায়গামতো ডলা' দেওয়ার মিশনটা ভালমত অব্যাহত থাকে -

****************************************

মন মাঝি এর ছবি

হা হা -- এইবার শ্রীলঙ্কার 'নাগা মরিচের' সোয়াদ পাওয়ার পালা !!!

(বাঘুইয়েস)

****************************************

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

নাগা মরিচের ঝালটা এবারও ভারতের মুখেই বেশি পড়ছে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

মুখে না, ঝালটা ওদের অন্য জায়গায় হচ্ছে। এবং খুব সম্ভবত কালকে সকালে গোটা ভারত জুড়ে পানির তীব্র সংকট দেখা দিতে পারে!

তুষার কাওসার এর ছবি

ভাল বলসেন দেঁতো হাসি

তুষার কাওসার এর ছবি

ভিডিওটা দেখে কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে বসে ছিলাম। মুখের ভেতর থুথু জমা হয়েছিলো একদলা।

আনোয়ার সাদাত শিমুলের লেখাটা পড়লাম। ভালো লাগলো।

মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

দুর্দান্ত এর ছবি

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীই যখন দেশী টিমের বিজয় উতযাপনের চাইতে শচীনের শততম সেন্চ্য়ুরিতে যিয়াফতের আয়োজনে ব্য়াস্ত, তখন আর ই এস পি এন এর কি দোষ?

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

হাততালি
খুবই যুক্তিসঙ্গত প্রশ্ন ।

তুষার কাওসার এর ছবি

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ দুর্দান্ত।

তুষার কাওসার এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ সত্যপীর। গতকাল ই আমাকে একজন ফেইসবুকে বলেছিলেন কমপ্লেইন করার জন্য, পরে ভুলে গিয়েছিলাম। এখুনি করছি। আশা করি তাতে করে ভবিষ্যতে এ ধরণের প্রবণতা কমবে।

তুষার কাওসার এর ছবি

এই মুহূর্তের আপডেইটঃ

বাংলাদেশকে এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠানো ম্যাচের ক্রিকইনফো রিপোর্ট; আর একই দিনের ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের রিপোর্ট - প্রথমটাতে মন্তব্য করার অপশন নেই, দ্বিতীয়টাতে আছে।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

জাতি হিসেবে বাঙালিরে বা বাঙালির কোনো ঘটনারে কি কমেন্ট করার বা মত প্রকাশের যোগ্য মনে করা হয় নাই?

সত্যপীর এর ছবি

আমি এখানে একটা কমপ্লেন পাঠিয়েছি ঠিক আপনার যুক্তি তুলে ধরে। একটায় আছে আরেকটায় নাই কেন সেই ব্যাখ্যা চেয়ে। আপনিও করতে পারেন। কয়টা ফিডব্যাক ডিলিট করবে কন দেখি?

..................................................................
#Banshibir.

আবদুল কাওসার তুষার এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ সত্যপীর। গতকালই আমাকে একজন ফেইসবুকে বলেছিলেন কমপ্লেইন করার জন্য, পরে ভুলে গিয়েছিলাম। এখুনি করছি। আশা করি তাতে করে ভবিষ্যতে এ ধরণের প্রবণতা কমবে।

মন_মাঝি এর ছবি

"Login - Register to post comments - Login" - এই জিনিষের কথা বলছেন ? আমি তো এটা দুই জায়গাতেই দেখতে পাচ্ছি। শুধু তাই না, বাংলাদেশের রিপোর্টে মন্তব্যও দেখতে পাচ্ছি।

তুষার কাওসার এর ছবি

দয়া করে নিচে সাই দ-এর মন্তব্য দেখুন।

Shazzad এর ছবি

ওদের ফেসবুক পেজে এখনো কোন আপডেট দেয় নি। অ্যাঁ ক্রিক ইনফো নির্লজ্জভাবে তাদের পক্ষপাতী মনোভাব দেখিয়ে চলেছে।

তুষার কাওসার এর ছবি

রেগে টং

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

Bangladesh reach historic final

এটাই এই মুহূর্তে ছবিসহ প্রধান খবর হিসেবে সাইটে আছে ।

তুষার কাওসার এর ছবি

হ্যাঁ, এই খবরটা বাংলাদেশের জয়ের পর থেকেই আছে। এটাকে অবজ্ঞা করলে লঙ্কাকাণ্ড বেঁধে যেত, কারণ এশিয়া কাপ এই মুহূর্তে ক্রিকইনফোর সার্চলিস্টের শীর্ষে অবস্থান করছে।

Shazzad এর ছবি

শচীনের ১০০তম ১০০ করার সাথে সাথে স্ট্যটাস আপডেট দিতে পারে,বিরাট কোহলির ১৮৩ রানের আপডেট দিতে ১ মিনিট দেরি হয় না এমনকি অস্ট্রেলিয়া আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর টাইয়ের খবরও দিতে দেরি করেনা।কিন্তু বাংলাদেশের এমন অবিস্মরণীয় কীর্তির ১৩ ঘন্টা পরেও কোন আপডেট নাই।এই হচ্ছে বা* ইনফোর 'অফিশিয়াল' ফেসবুক পেজ। এরপরও যাদের কাছে মনে হবে ক্রিক ইনফো unbiased তাদের সম্পর্কে কিছু বলার নাই।

তুষার কাওসার এর ছবি

আজকে সকালেই ক্রিকইনফোর ফেইসবুক পেইজ আনলাইক করেছি।

সাই দ এর ছবি

জিএমটি টাইম রাত ৮টার দিকে মন্তব্যের অপশনটা খোলা হয়েছে। সম্ভবত আমার মত অনেকেই কামপ্লেইন্ট জানানোর পর।
কেউ কেউ এখনো বাংলাদেশ কেন ফাইনালে জিজ্ঞেস করছে। ইন্ডিয়ার রান রেট বেশি হওয়া সত্ত্বেও।

তুষার কাওসার এর ছবি

আজ সকালে উঠে দেখলাম, মন্তব্যের সংখ্যা ২০০তে পৌঁছেছে। আরো আগে খুললে নিশ্চয়ই মন্তব্য আরো অনেক বেশি হোত। এমন একটা সময়ে খোলা হয়েছে যখন বাংলাদেশে গভীর রাত, আর আজ সকালে উঠে অনেকেই খবরের কাগজ দেখে ফেলে ক্রিকইনফোর রিপোর্ট পড়ার আগ্রহ হারাবেন; ফলে মন্তব্য স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম হবে।

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

মন্তব্য সমৃদ্ধ পোষ্ট এর আগা গোড়া পুরোই খুবই মজা নিয়ে পড়লাম।
আজ ফাইনাল খেলা। আমি কাজ করি ইন্ডিয়ান ম্যানেজমেণ্টের আণ্ডারে। কাল থেকেই আমার গ্রুপের সবাইকে বেলা একটার পরে ছুটি দিয়ে দিয়েছিলাম। আজ সকাল থেকেই ইন্ডিয়ান কান্ট্রিম্যানেজার সেই হেরে যাওয়ার ঝালে জলছেন বিধায় সরাসরি কিছু বলতে না পেরে বাকী সবা ছাড়া পেলেও আমাকে আটকে দিয়ে অফিস থেকে সরে পড়েছেন। খালি অফিস রেখে যেতেও পারছিনা আবার ফোন করে চলে যেতে পারি বলে কেবলা আমার ফোনটাই ধরছেন না।

হায়রে জাতীয় স্বভাব। তবুও মোর্শেদ ভাই এর মতো বলি -
তবে শেষ কথা হলো, আমরা আসল জায়গায় জবাব দিয়ে দিয়েছি। আর সেই আসল জায়গাটা হচ্ছে মাঠ । হাসি
জিতুক আর নাই জিতুক ওদের দেশে ফেরত পাঠানোর আনন্দেই উব্দেলিত আমি -

তুষার কাওসার এর ছবি

মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ। হাসি

তুষার কাওসার এর ছবি

ফাইনাল খেলার আপডেইট-১:

যথারীতি আজকের রিপোর্টেও ক্রিকইনফো মন্তব্য নিচ্ছে না। আমি জানি না এদের আচরণ কবে শুধরোবে।

তুষার কাওসার এর ছবি

ফাইনাল খেলার আপডেইট-২:

খেলার নয়-দশমাংশ হয়ে যাবার পরেও মন্তব্য করার অপশন খুলে দেয়া হয়নি। ব্রাভো ক্রিকইনফো!

আবদুল কাওসার তুষার এর ছবি

ফাইনাল খেলার আপডেইট-৩:

এবং এখনো পর্যন্ত রিপোর্ট মন্তব্যবিহীন! দেখার কি কেউ নেই?!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।