কলোনি কাহিনী

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ০৯/০৪/২০১২ - ১০:১৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যারা জীবনের একটা উল্লেখযোগ্য সময় কোন না কোন কলোনিতে কাটিয়েছেন তাদের এই লেখাটা না পড়ার জন্য অনুরোধ করছি, কারণ ‘কলোনি’ শব্দটা শোনার সাথে সাথে তাদের মনে এতো বেশী স্মৃতি ভীর করা শুরু করবে, যে সেই স্মৃতির ঢেউ বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আমার এই সামান্য লেখাটা খড়কুটোর মতো ভাসিয়ে নিতে পারে। আর যাদের জীবনে কখনো কলোনিতে থাকার সুযোগ হয় নি তাদেরকেও এই লেখাটি না পড়ার জন্য অনুরোধ করব কারণ এটা তাদের ‘জীবনে কি কি মিস করেছি’ সেই তালিকাটা প্রলম্বিতই করবে কেবল। আমার জীবনের প্রায় আঠারো বছর কেটেছে খুলনা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আবাসিক এলাকায়। আঠারো বছর মানে তো সুস্থ সবল বাঙ্গালি জীবনের প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ। আর জীবনের প্রথম আঠারো বছরের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় আর কি হতে পারে। মানুষ হিসেবে আমি কেমন হব, আমার চিন্তা-ভাবনা কেমন হবে সবই তো ঐ সময়টায় সচেতন বা অচেতন ভাবে শিখেছি। একটা মৃত টিকটিকির চারিদিকে যেমন অসংখ্য পিঁপড়ে ভীর করে তেমনি ঐ অদ্ভুত সময়, ঐ অদ্ভুত মানুষগুলো, ঐ অদ্ভুত কলোনি মাঝে মাঝেই আমার সমস্ত চৈতন্য দখল করে নেয়। বাংলাদেশের প্রায় সব কলোনির কাহিনী, জীবন-চিত্র প্রায় একই রকম বড়জোর উনত্রিশ-ত্রিশ পার্থক্য (‘বদলে যাও বদলে দাও’ মৌসুম চলছে বলে বহুল প্রচলিত উনিশ-বিশ বাগধারাটা বদলে দিলাম!) তাই সবার সাথে সেই অভিজ্ঞতাগুলো ভাগাভাগি করার লোভ সামলাতে পারলাম না!

বাড়ি অনেক কিন্তু ঘর একটাই...

কলোনির প্রধান বৈশিষ্ট্য হল শিশু কিশোরদের জন্য কলোনিতে আসলে নির্দিষ্ট কোন বাসা নেই। সকালে হয়তো নিজের বাসায় খাওয়া-দাওয়া সারা হল, দুপুরে আরেক বাসায়, রাতে আরেক বাসায় এমনকি অন্য বাসায় ঘুমানো খুব একটা অস্বাভাবিক ব্যাপার ছিল না। ঢাকায় এপার্টমেন্ট সংস্কৃতিতে বেড়ে ওঠা শিশু কিশোররা স্বপ্নেও হয়তো এতোটা আশা করবে না। নিজ বিল্ডিং তো অবশ্যই এমনকি মোটামুটি আশেপাশের কয়েকটা বিল্ডিং এর সবাই সবার কুশলাদি জানত। কারও বাসায় ভালো খাবার রান্না হলে প্রতিবেশীর অনুজদের দাওয়াত প্রাপ্তি নিশ্চিত ছিল। বিকালে অথবা রাতে হাটতে বের হলে সবার সাথেই সবার দেখা সাক্ষাৎ হত। তখন আমার কাছে এসবই খুব স্বাভাবিক দৃশ্য ছিল, আমি ধরেই নিয়েছিলাম এমনই তো হওয়ার কথা। কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সমানুপাতিক হারে আমি বুঝতে পেরেছি কি অদ্ভুত সুন্দর মায়ায় জড়ানো, অদ্ভুত সুন্দর সময়ই না ছিল সেটা।

খেলার মাঠে ধুলা...

প্রায় সব কলোনির মতো আমাদের কলোনিতেও খুব সুন্দর একটা মাঠ ছিল। মাঠটা ছিল সবুজে মোড়ানো এবং খুবই সমান। শরৎকালে মাঠের কোনার দিকে ঘাসের মধ্যে কাশফুল ফুটে থাকত, কি সুন্দর লাগত দেখতে! আমাদের মাঠে ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবল আর এক কোনায় হাই-জাম্প,লংজাম্প দেয়ার ব্যবস্থা ছিল। আমরা সবাই মৌসুমি খেলোয়াড় ছিলাম। শীতকালে ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, বর্ষাকালে ফুটবল এভাবেই চলত। দেখা যেত সবাই কম বেশী সব খেলাই পারত এই জন্যেই বোধ হয় পরবর্তীতে কেউ আর কিছুই পারত না। খেলার মাঠে মারামারি, মন কষাকষি একটা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার ছিল। বিশেষ করে ক্রিকেটে কে আগে ব্যাটিংয়ে নামবে তা নিয়ে প্রায়শই গোল বাধত। এইসব হাতাহাতি, মারামারি আর মন কষাকষি করতে করতেই ঐ মাঠ যে কত বন্ধু উপহার দিয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। ক্লাস এইটে ভালো ছাত্র হওয়ার ইঁদুর দৌড়ে যোগ দেয়ার আগ পর্যন্ত মাঠটার সাথে ভালোই ঘনিষ্ঠতা ছিল। তারপর বয়োবৃদ্ধির সাথে ব্যস্তানুপাতিক-হারে সেই সম্পর্কে দূরত্ব বেড়েছে। যদিও কফি হাউসের মতো মাঠটাও কখনো খালি থাকে নি।

জুম্মাবার...

শুক্রবার মানেই কলোনির সাপ্তাহিক ঈদ। ঐদিন পড়াশোনার চাপ কম এবং খেলাধুলার চাপ বেশী ছিল। সবার ছুটি বিধায় নানান ধরনের চ্যালেঞ্জের খেলা অনুষ্ঠিত হত, এক মেডেল থেকে শুরু করে পাঁচশ টাকার খেলাও হত। তবে সবচেয়ে বেশী মজাটা হত মসজিদে। বাসা থেকে তাড়াতাড়ি বের হতাম ঠিকই তবে সেটা হুজুরের খুতবা শোনার জন্য নয়। আমরা মসজিদের অদূরেই খুতবা উপেক্ষা করে রাজা উজির মারতাম আর কান খাড়া করে রাখতাম কখন ভেসে আসবে ‘আস্কুরুনি ওলা তাকফুরুন’। এইটা শোনার সাথে সাথেই মসজিদের দিকে দে দৌড়। কোনোমতে শেষ কাতারে দাঁড়াতাম এবং সবসময়ই সব মসজিদে একজন ইমানদার মুমিন লোক পাওয়া যায় কাজ হচ্ছে ছোটদের উপর হম্বি তম্বি করা, তার ঝাড়ি শুনতাম। যেহেতু শরিয়তে আছে রুকুতে যাওয়া পর্যন্ত নামাজ ধরা যাবে তাই আমরা এই সর্বোচ্চ সুবিধাটা আনন্দ-চিত্তে গ্রহণ করতাম এবং বিভিন্ন ফাতরামি করে নামাজে দাঁড়ানো অন্যান্য মুমিন মুসলমানদের ঈমানের শক্ত পরীক্ষা নিতাম। নামাজে দাঁড়ানোর পরও আমাদের ঘাড়ের শয়তানের দম ফেলার ফুরসত ছিল না। বেশিরভাগ সময়েই সেজদায় যাওয়ার পর কারও পশ্চাতদেশে নির্মমভাবে আঘাতের দুমদাম আওয়াজ পাওয়া যেত এবং সালাম ফেরানোর পরে দেখা যেত কয়েকজন ঘটনা ঘটিয়ে নামাজ শেষ হওয়ার আগেই জীবনহানির আশঙ্কায় ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছে। শুক্রবার কম বেশী সবার বাসায়ই ভালো খাবার তৈরি হতো বলে পুরো কলোনি খাবারের ঘ্রাণে মো মো করত সুতরাং নামাজের পর বাইরে আর সময় নষ্ট করার মানেই হয় না।

কলোনিয়াল ক্যাপ্টেন হ্যাডকেরা...

প্রতিটা কলোনিতেই কিছু মজার চরিত্র পাওয়া যাবে, হাজারো মানুষের মধ্যে যাদের কথা আলাদা করে মনে থাকে। আমাদের কলোনিতে একজন চিকিৎসক ছিলেন যিনি বাচ্চা দেখলেই ইনজেকশন দেয়ার মিথ্যে ভয় দিতেন তবে মানুষ হিসেবে বেশ ভালো ছিলেন। কাশেম কাকু, শওকত মামা আর বাদল চাচার কথা মনে পড়ছে যারা তাদের বয়সকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে নিয়মিত ছুটে যেতেন মাঠে আর আমরা বুঝতাম বার্ধক্য আসলে একটা মানসিক ধারণা,শারীরিক নয়। আমার মনে পরে এক আংকেল তার যাবতীয় ইহ-লৌকিক রাগ ঝাড়তেন টিভি ভাঙ্গার মধ্য দিয়ে। ছেলে পরীক্ষা খারাপ করছে, অফিসে কোন সহকর্মীর সাথে ঝগড়া হয়েছে, বউয়ের সাথে কিছু নিয়ে বনিবনা হয় নি তাহলে ভাঙো টিভি, ব্যাস। আরেকজন ছিলেন যিনি কিনা লাল পানির ভক্ত ছিলেন, তো প্রায়ই ঐ উত্তেজক তরল পেটে পরার পর তিনি বেশ মজার মজার কাণ্ড ঘটাতেন যা দর্শকদের জন্য মজার হলেও তার পরিবারবর্গের জন্য বেশ অস্বস্তিকর ছিল তো বটেই। আরও অনেকেই ছিলেন যারা অসংখ্য সাদা কালো মানুষের ভীরে রং ছড়ানোর কাজটা করতেন।

কলোনিয়াল প্রেম...

আমাদের কলোনি অনেক উঠতি প্রেমিক-প্রেমিকার বিচরণক্ষেত্র ছিল। তবে তাদের প্রেমের পথ ছিল বন্ধুর। প্রেমিকা যে বিল্ডিংয়ে থাকে প্রয়োজনে, অপ্রয়োজনে সেই বিল্ডিংয়ের সামনে টহল প্রদান, উঁচু গলায় গান পরিবেশন বা শিষ প্রদানের মাধ্যমে প্রেমিকার দৃষ্টি আকর্ষণ এবং প্রেমিকার পিতা বা মাতাকে ভক্তিভরে সালাম প্রদান ইত্যাদি কর্মের মধ্যে প্রেমিক প্রবররা নিযুক্ত থাকত। মাঝে মাঝেই প্রেমে দিওয়ানা প্রেমিক যুগল তাদের পিতামাতার উপর আস্থা হারিয়ে পলায়ন করত এবং প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে দুই একদিনের মধ্যেই ধরা পড়ত বা ফিরে আসত, তারপর কলোনিতে বিশিষ্ট মুরুব্বীদের নিয়ে বসত সালিশ। সালিশের ফলাফল সরূপ অনেকের বিয়েও হয়ে যেত। পালানো থেকে বিয়ে পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটাই বেশ চাঞ্চল্যকর ছিল এবং আমরা সচেতন কিশোর ও যুবসমাজ বেশ উত্তেজনার সাথেই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতাম। বিয়ে হওয়ার মাধ্যমে ঘটনার যবনিকাপাত হলে সবাই সবার অলক্ষ্যে নব বিবাহিত দম্পতির মধ্যে ঘটমান ‘আনন্দ-যজ্ঞের’ কথা চিন্তা করে দীর্ঘশ্বাস ফেলতাম। ভালো ছাত্র ও ভালোমানুষি মুখোশ পরে থাকার কারণে এই বিষয়ে আমি কখনো খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারি নি বরং গ্যালারির দর্শক হিসেবেই আনন্দ লাভ করেছি।

খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার যে আঠারো বছরের সঞ্চিত অভিজ্ঞতা এই ছোট কলেবরে লিখে প্রকাশ করা যাবে না। কিন্তু এই লেখাটি লিখতে গিয়ে আমার একটা অত্যন্ত আনন্দময় মানসভ্রমণ হয়েছে ঐ ফেলে আসা কলোনির রাস্তায়, গলিতে, সবুজ মাঠে। আব্বু বদলি হয়ে যাওয়ায় এখন আর কলোনিতে যাওয়া হয় না কিন্তু চাইলেই কি আর নিজের আঁতুড়ঘরকে ভুলে থাকা সম্ভব না ভুলে থাকা যায়। মাঝে মাঝে চিন্তা করি যে পরিবেশে আমি এবং আমরা বড় হয়েছি আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কি সেই আনন্দময় পরিবেশ পাবে? ভয় হয় এরা হয়তো বড় হবে কবুতরের খোপের মতো এপার্টমেন্টে, কবুতর হিসেবে, মানুষ হিসেবে নয়।

# হিল্লোল


মন্তব্য

হাসান এর ছবি

আমি ও কলোনিতে থাকতাম । আপনার কাহিনী র সাথে পুরা মিল - বিশেষ করে শুক্রবার এর টা । ধন্যবাদ ।

হিল্লোল  এর ছবি

ঐ যে বললাম সব কলোনির কাহিনী প্রায় একই। পড়ার জন্য ধন্যবাদ

ইমতিয়াজ এর ছবি

কলোনি কাহিনী এবং আমার গ্রামের কাহিনী প্রায় একই রকমের । খুব ভাল লেগেছে ।

হিল্লোল  এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আমি ২১ বছর ধরে কলোনিতে থেকেছি, কাজেই কাহিনীর সত্যতা বুঝতে কষ্ট হয় নি হাসি

হিল্লোল  এর ছবি

সুহান ভাই, তার মানে গ্রেট মাইন্ডস নট অনলি থিঙ্কস বাট অলসো লিভস এলাইক!

কর্ণজয় এর ছবি

চিরায়ত...

পথের ক্লান্তি এর ছবি

একজন 'সাবেক' কলোনিবাসী হিসেবে নস্টালজিক হয়ে গেলাম!

হিল্লোল এর ছবি

এইটাই উদ্দেশ্য ছিল। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

সাই দ এর ছবি

সব কলোনিগুলি এক রকম নয়। মতিঝিল টিএন্ডটি কলোনি তে থাকার পরিবেশ ভাল নয়। মাদকের আড্ডা সব সময়

হিল্লোল এর ছবি

আহা! ঐখানকার নিবাসীদের জন্য সমবেদনা।

সাত্যকি. এর ছবি

বাহ, কি যে চমৎকার।
শহুরে ফ্ল্যাটবাড়ির জীবনে "প্রতিবেশী" শব্দটাকেই বিলুপ্ত করে দেয়া দরকার। পাশের ঘরের দরজা আর আমেরিকার দূরত্ব এখানে সমান সমান।

হিল্লোল এর ছবি

একদম ঠিক বলেছেন। কলোনিতে তাও একটা মানবিক পরিবেশ আছে আর ফ্ল্যাটবাড়ির জীবন তো আদিম সমাজ ব্যবস্থার পুনঃমঞ্চায়ন।

ওডিন এর ছবি

ভালই লাগছিলো, আরেকটু লিখলে পারতেন কিন্ত। হাসি

আমি স্কুলজীবনের বেশ কয়েক বছর একটা মফস্বল শহরের মেডিকেল কলেজের কোয়ার্টারে কাটিয়েছি। দারুণ মায়াবী সব দিন ছিলো।

একবার কোরবানির আগে এক আঙ্কেল একটা ভীষনভয়ঙ্কর কালো ষাঁড় কিনে আনলেন। ওইটা একটা শক্ত খুঁটির সাথে বাঁধা থাকতো। আমাদের পুলাপানদের কাজ ছিলো নিয়মিত গিয়ে ওইটাকে লাঠি বা লম্বা কিছু দিয়ে নাগালের বাইরে দাঁড়িয়ে টিজ করা। একদিন ওর খুঁটি আলগা হয়ে গেছে- আমরা খেয়াল করি নাই। সেই ব্যাটাও খুব ভাব ধরে আমাদের যন্ত্রণা সহ্য করছে। তার একটু পরেই ঝটকা দিয়ে খুঁটিটুটি উপড়ে ফেলে আমাদের তাড়া করলো। আমরা চোদ্দজন চোদ্দদিকে দৌড়লাম। ঝামেলায় পড়লো আমার বন্ধু আরিফ, সে একটু মোটাসোটা ছিলো, দৌড়াতে গিয়ে পড়লো একটা কাঁটা ঝোপের ওপর। সব ঝামেলা মেটার পরে ওর চেহারা হয়েছিলো সজারু আর জেসাস ক্রাইস্ট মিলেমিশে কিছু একটা! দেঁতো হাসি

হিল্লোল এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
কুরবানি নিয়ে আমারও প্রায় এরকমই একটা মজার অভিজ্ঞতা আছে।

আব্দুর রহমান এর ছবি

‘আস্কুরুনি ওলা তাকফুরুন’। ঝিমাতে ঝিমাতে এই লাইনের অপেক্ষায় থাকতাম।

------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল

হিল্লোল এর ছবি

সবাই দেখি একই গোয়ালের গরু। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

আমার শৈশব কৈশোরের সম্পূর্নটা এবং তারুণ্যের একাংশ কলোনীতে কেটেছে। আপনার অভিজ্ঞতগুলো মর্মে মর্মে মিলে গেছে। কলোনী নিয়ে আমার কতো কিছু লেখার বাকী রয়ে গেছে, এই লেখা পড়ে আবার মনে হলো। সাত সকালে নষ্টালজিক করে দেবার জন্য ধন্যবাদ।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

হিল্লোল এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য।

তাসনীম এর ছবি

চমৎকার লাগলো।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

হিল্লোল এর ছবি

পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

বনের রাজা টারজান এর ছবি

নিষেধ থাকা সত্বেও কলোনীতে না থেকে লেখাটা পড়ে ফেললাম।

আমার ছোট খালা আর বড় বোন যথাক্রমে ৩০ ও ১৫ বছর ধরে ঢাকার ২টা কলনীতে থাকেন, সেই সুবাদে আমার অহরহ যাওয়া আর থাকা।

ছোট বেলায় কুমিল্লা থেকে ছোট খালার বাসায় বেরাতে আসতাম। সমবয়সী ভাই ও তার বন্ধুদের সাথে খেলতাম। তবে সেই ছোট বেলা থেকেই আমার একটা ধারনা হয়েছে যে কলোনির ছেলেরা কিছুতা স্বার্থপর ও সংকীর্ণমনা হয়। আমি দুঃখিত, আমি কাওকে আঘাত দিতে চাই না।

কলনিয়াল প্রেমটা দারুন ব্যাপার, এক রজকিনীকে (১৬) দারুন পছন্দ করেছিলাম, সেও আমাকে(১৭), আহ কি মজা!! কি টেনশন!!! আর ভিলেন ছিল কলোনির পুলাপাইনগুলা। কিছুই করতে পারলাম না।

হিল্লোল এর ছবি

পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

খুব ভাল লাগল আপনার লেখা। হাততালি

আমি কলোনীতে থাকতাম না, বাংলাদেশেও না।
তবু, আমাদের মফস্বল আর পাড়ার গল্পও একই রকম।
আপনার লেখা সেই হারিয়ে যাওয়া সময়ে নিয়ে গেল।

কে জানে এভাবেই জেনারেশন গ্যাপ জন্ম নেয় কিনা।
অবশ্য তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। দেঁতো হাসি

হিল্লোল এর ছবি

ভাল লেগেছে যেনে খুব ভাল লাগল। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

নিবিড় এর ছবি

কতশত পুরাতন কথা মনে পড়ে গেল। জীবনের পুরো পচিশ বছর সাতখান কলোনীতে কাটিয়েছি। সাদা চুনকাম বা হলুদ রঙের এই বিল্ডিং গুলোতে কতশত স্মৃতি রয়ে গেল।

আমি অবশ্য এখনো কলোনীতে থাকি। হাসি

হিল্লোল এর ছবি

কলোনির স্মৃতি আসলে ফুরোবার নয়। পড়ার জন্য ধন্যবাদ!

নিবিড় এর ছবি

কতশত পুরাতন কথা মনে পড়ে গেল। জীবনের পুরো পচিশ বছর সাতখান কলোনীতে কাটিয়েছি। সাদা চুনকাম বা হলুদ রঙের এই বিল্ডিং গুলোতে কতশত স্মৃতি রয়ে গেল।

আমি অবশ্য এখনো কলোনীতে থাকি। হাসি

হিল্লোল এর ছবি

তাহলে তো আপনাকে ভাগ্যবানই বলতে হবে। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

হিল্লোল এর ছবি

তাহলে তো আপনাকে ভাগ্যবানই বলতে হবে। পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

সাবেকা এর ছবি

চমৎকার একটা লেখা ।

হিল্লোল এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ।

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

বেশ!

হিল্লোল এর ছবি

ধন্যবাদ।

হিল্লোল এর ছবি

ধন্যবাদ।

অন্ত আফ্রাদ এর ছবি

সেই সবুজ খেলার মাঠটিকে এখনো অনেক মিস করি। লিটার-বাজি ম্যাচগুলো এখনো খেলা হয়, তবুও বাসা থেকে আসরের আজানের সময় বের হয়ে সবার আগে মাঠে মনে ফুর্তি নিয়ে যেই মিডল স্ট্যাম্পটা পুঁততাম, সেই আনন্দটা অনেকটাই হারিয়ে গেছে। মন খারাপ

হিল্লোল এর ছবি

দিলেন তো মনটা আবার উদাস কইরা। যাই হোক পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

কলোনিতে আমি কাটিয়েছি নয় বছর।
কি যে দারুণ সময় ছিলো সেগুলো!
বিকেল শুরুর আগে থেকেই একদঙ্গল পোলাপাইনের খেলাধুলা আর দৌড়ঝাপ, খেলার সেই মাঠ, কোনোকিছুর সাথেই তুলনা চলে না সেই দিনগুলোর, সেই অনুভূতিগুলোর।
নস্টালজিক করে দিলেন, হিল্লোল! চলুক

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

হিল্লোল এর ছবি

পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ।

সাফি এর ছবি

কলনীর প্রেমিকারা এখন কে কোথায় আছে (দীর্ঘ্যশ্বাস)

হিল্লোল এর ছবি

হীরে আর জহরতে আগা গোরা মোড়া অবস্থায় আছে কোথাও । পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

কল্যাণ এর ছবি

তুমি মিয়া আর ভালো হইলা না, তোমার পোলাপাইন তোমারেই ধইরা মাইর দিব একদিন খাইছে

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

একাকী আমি এর ছবি

পড়ার লোভ সামলাতে পারলননা .. নিষিদ্ধ বলেই হয়তো !!! না না না .. কলোনী এর স্মৃতি বলেই পড়ে ফেললাম .. আর আপনার সঠিক ধারণা মত সৃতির স্তূপে চাপা পড়ে গেলাম । বের হয়ে আসতে গিয়ে সাথে চলে এলো কিছু ছোট ছোট সৃতি যা ঝেড়ে ফেলতে পারলাম না মন খারাপ

কলোনীতে কাটিয়েছি জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময় গুলো। বিয়ের পরে কলোনী ছাড়লে ও সম্পর্ক শেষ হয়ে যায় নাই । এখনও কলোনীর অনেক এর সাথে যোগাযোগ আছে টেলিফোনএ অথবা ই-মেল এ। যদিও সবাই কলোনী ছেড়েছে অনেক বছর আগে ।
মনে পরে গেল ....................
প্রতিটা সপ্তাহ শেষ হত ঈদএর আমেজ নিয়ে । দল বেধে, হই হই করে স্কুলএ যাওয়া আর আসা ছিল স্কুল বাস এ করে । পহেলা বৈশাখ, ফাল্গুন, শব-এ-বরাত, একুশ-এ-ফেব্রুয়ারী, বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস ইত্যাদি ছিল জম-জমাট । জন্মদিন তো মিস হত না .. আত্তীয়-স্বজন লাগতনা, কলোনীর সব বন্ধু/ বাচ্চারা মিলে ঘর ভরা । একই ভাবে মিলাদ ও ছিল বিশাল আয়োজন .. আর বিয়ে মানেই পুরো কলোনীর যৌথ আয়োজন ... দুই ঈদ এর আগে নতুন কাপড় কেনা আর তা লুকিয়ে রাখা.... মেহেদী লাগানো .. ঈদ এর দিন ফ্লাটএ ফ্লাটএ ঘুরে বেড়ানো আর খাওয়া .. একটু বড় হওয়ার পরে ছাদে সময় কাটানো.... আর একটা বড় মজার দিন ছিল সশস্ত্র বাহিনী দিবস ই কুচকাওয়াজ ই যাওয়া .. বাবা সামরিক বাহিনী তে ছিলেন বলে এইটা ছিল মহা এক দিবস ... এ ছাড়াও বাত্সরিক পিকনিক আর স্পোর্টস তো ছিল এ ..
আনন্দ-ফুর্তি ছাড়াও বিপদ- আপদ এ কলোনীর সবাই যেন একটা পুরো পরিবার ছিল । অসুস্থতা/ মৃত্যু ইত্যাদি সবাই একসাথে সামলাতো ...
আসলেই বলে শেষ করা যাবে না .. কত শত স্মৃতি.. ধন্যবাদ আপনাকে পুরনো দিনগুলোতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার জন্য ।

হিল্লোল এর ছবি

আপনার কলোনির অভিজ্ঞতাগুলো শুনে খুব ভাল লাগল। পড়ার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।

তারেক অণু এর ছবি

দারুণ হয়েছে, আরো অনেক বড় পরিসরে এমন স্মৃতিময়তা ছড়িয়ে দিন!

হিল্লোল এর ছবি

পড়ার জন্য আর উৎসাহ প্রদানের জন্য অনেক ধন্যবাদ অণুদা।

ক্যাপ্টেন নিমো এর ছবি

মানুষের মদ্ধ্যে একটা ভালো সম্পর্ক তৈরী হয় এমন সব কলোনী তে। আমিও আমার জীবনের প্রথম ১৫ বছর এমনি এক পাড়ায় ছিলাম। ঈদ, পূজা, নববর্ষ কোনটা যে কার অনুষ্ঠান, সেটাই বুঝতে পারিনি। ধন্যবাদ মনে করিয়ে দেয়ার জন্য। ভালো লাগ্লো।

হিল্লোল এর ছবি

ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগল। ধন্যবাদ।

কল্যাণ এর ছবি

চলুক

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।