বিষয়টা মেটাল,কিঞ্চিৎ মেন্টালও

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ১৭/০৪/২০১২ - ৫:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

“মেটাল মিউজিক”-বাংলায় অর্থ করলে দাঁড়ায় ধাতব সংগীত।অনেকের কাছেই যার সংজ্ঞা শব্দ দূষণ,অহেতুক চেঁচামেচি।কেউ বলেন,এসব নেহায়েত কিছু অপরিপক্ক বাউন্ডুলে ছোঁড়ার ছেলেমানুষী গান,বয়স বাড়ার সাথে সাথে যার আবেদন কমে যায়।কিন্তু দুনিয়াজোড়া অগণিত মেটালহেডের(মেটাল সংগীত অনুরাগী এই আর কি) কাছে মেটাল বা ধাতব সংগীত অসীম অনুপ্রেরণার উৎস,সকল বিরুদ্ধ শক্তিকে পদদলিত করে মেটাল দেয় সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা।বলাবাহুল্য,আমিও একজন মেটালহেড আর লেখার এতটুকু পড়ে অনেকের কাছেই এসব স্রেফ পাগলের পাগলামিই মনে হবে।তবে সদ্য স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজ জীবনে প্রবেশের ঠিক পরেই আয়রন মেইডেন আর মেটালিকার কিছু গান শুনে যে মেটাল উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল,সময়ের বিবর্তনে তা বেড়েছে বৈকি!!!কমে নি কোনমতেই।সেই তাগিদ থেকেই এই বহুল নিন্দিত,নন্দিত মেটাল নিয়ে কিছু লেখার প্রয়াস।

কোন ধরাবাঁধা সংজ্ঞা বা কোন বেষ্টনীর মধ্যে মেটাল মিউজিককে ফেলতে যাওয়া হয়ত বোকামি-ই হবে।এটা যেমন ঠিক,লাউড ভয়েস,ফাস্ট গিটার সলো এবং রিফ,দ্রুতলয়ের ড্রামিং-মেটালের আদি বৈশিষ্ট্য ঠিক তেমনি একথাও ঠিক, খুব সফট ট্র্যাকও হতে পারে মেটাল ট্র্যাক।তবে কোমল কিছুই মনে হয় যায় না মেটালের সাথে।সংগীতের যে ধারার মূল পরিচায়ক ই ডেভিলস হর্ন,তার সাথে কোমল কিছু যায়ই বা কেমনে?

মেটালের আদিপিতাদের খুজতে যাওয়াও অবশ্য একটু কষ্টসাধ্য ব্যাপার।সর্বসম্মতিক্রমে যে তিনটি ব্যান্ডের নাম সর্বাগ্রে আসে সেগুলো হল ডিপ পার্পল (DEEP PUPRLE), লেডজ্যাপলিন(LED ZEPPELIN) এবং ব্ল্যাক সাবাথ (BLACK SABBATH)।তবে সত্যিকার অর্থে ,ব্ল্যাক সাবাথ(১৯৬৯-২০০৬,২০১১-বর্তমান)ই মেটালের শ্রেষ্ঠ আদিপিতা এবং সত্যিকার অর্থেই প্রথম মেটাল গড।ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে জন্ম নেওয়া এই ব্যান্ডের হাত ধরেই আসে মিউজিকাল ট্রি-টোন যার অপর নাম ডেভিল’স ইন্টারভাল।ওজি অজবর্নের ডার্ক,ডুমি ভয়েস,টনি আইওমির ডেভিলিশ গিটার সলো আর রিফ,গিজার বাটলারের লিরিক্স সব মিলিয়ে সাবাথ অনবদ্য,যুগে যুগে সকল মেটাল ব্যান্ডের জন্য শ্রেষ্ঠ অনুপ্রেরনাদানকারী ব্যান্ড।তাইতো রোলিং স্টোন ম্যাগাজিনের মতে,ব্ল্যাক সাবাথ “মেটালের বিটলস”।টাইম ম্যাগাজিন সাবাথ ট্র্যাক “প্যারানয়েড”কে উল্লেখ করেছে মেটালের জন্মভূমি হিসেবে।

ইংল্যাণ্ডই যে মেটালের সূতিকাগার তা বলার অপেক্ষা রাখে না।ব্ল্যাক সাবাথের উদ্ভাবিত হেভি মেটাল যা ছিল অনেকটুকুই ব্লুজ রক দ্বারা অনুপ্রাণিত তাকে আরো গতিদান করতেই যেন নিউ ওয়েভ ওফ বৃটিশ হেভি মেটালের(N.W.O.B.H.M) উদ্ভব। আর নিউ ওয়েভ ওফ বৃটিশ হেভি মেটাল বললেই আমাদের চোখের সামনে ভাসে তিনটি নাম জুডাস প্রিস্ট(JUDAS PRIEST),আয়রন মেইডেন(IRON MAIDEN) আর মটরহেড(MOTORHEAD)। তিনটি ব্যান্ডের মধ্যে বড়ভাই বলা যায় জুডাস প্রিস্ট(১৯৬৯-বর্তমান)কেই।প্রিস্টই সম্ভবত সেই মেটাল ব্যান্ড যারা টুইন লিড গিটার বা গিটার ডুয়ো(গ্লেন টিপটন আর কে.কে. ডাউনিং) এর প্রবর্তন করে,সাথে পেইনকিলার মিঃ রব হ্যালফোর্ডের নারকীয় ভয়েস প্রিস্টকে দেয় মেটাল গডের মর্যাদা।সিম্পলি জুডাস প্রিস্ট ইজ জাস্ট “ব্রেকিং দ্য ল”।লন্ডনের লেইটনে ফর্ম হওয়া “দ্য বিস্ট” খ্যাত আয়রন মেইডেন (১৯৭৫-বর্তমান) অনেকের মতেই শ্রেষ্ঠ মেটাল ব্যান্ড। সিগনেচার অপেরাটিক ভয়েসের ব্রুস ডিকিন্সন,গিটার ট্রায়ো ডেইভ মারে,এড্রিয়ান স্মিথ,জেনিক জারস,অসাধারণ ব্যাসিস্ট একই সাথে মেইডেনের মূল গীতিকার স্টিভ হ্যারিস আর ড্রামে নিকো ম্যাকব্রায়ান-এই হল মেইডেনের ক্লাসিক লাইন আপ।এই ক্লাসিক লাইন আপ আর সাথে মাস্কট “এডি” নিয়ে মেইডেন দিয়েছে অসংখ্য,অজস্র কালোত্তীর্ণ গান যার কারণে আজও মেইডেনের আবেদন অটুট।মটরহেড(১৯৭৫-বর্তমান) ব্যান্ডটার নাম শুনলেই যেই মুখটা সবার আগে মনে পড়ে তা হল লেমি।সূচনার পর থেকে আজ পর্যন্ত মটরহেডের মূল লাইন আপটা কিন্তু পাওয়ার ট্রায়ো এবং লেমিই এই ব্যান্ডের সর্বেসর্বা।ফাস্ট মিউজিকের সাথে মটরহেডের গানে,এলবাম কাভারে,গেট আপে উঠে এসেছে বুনো পশ্চিম,কখনো বা গ্যাম্বলিং,কখনো যুদ্ধ,ক্ষমতার অপব্যবহার।

ইংলিশরা সমানে ব্যান্ডের জন্ম দিয়ে যাচ্ছে আর আমেরিকানরা চুপচাপ বসে থাকবে তা কি হয়? হেভি মেটালকে আরো আগ্রাসী,আরো ফাস্ট করতে তারা জন্ম দিল থ্র্যাশ মেটাল-মেটালের অন্যতম জনপ্রিয় জনরা(genre)। মেটালিকা (METALLICA),স্লেয়ার (SLAYER),মেগাডেথ (MEGADETH),এনথ্রাক্স (ANTHRAX)-থ্র্যাশ মেটালের স্তম্ভ,বিগ ফোর অফ থ্র্যাশ। মেটালিকা(১৯৮১-বর্তমান)কে নিঃসন্দেহে বলা যায় সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় মেটাল ব্যান্ড যার জন্ম ফ্রন্টম্যান জেমস হেইটফিল্ড আর ড্রামার আলরিখের হাতে ধরে।প্রথম এলবামের পরপরই ডেইভ মাস্টেইন(মেগাডেথ ফ্রন্টম্যান)কে বিতাড়ণ করে হেমেটের অন্তর্ভুক্তি,সড়ক দুর্ঘটনায় ব্যাসিস্ট ক্লিফ বার্টনের(অনেকের মতেই সর্বকালের সেরা ব্যাসিস্ট) মৃত্যু-মেটালিকা গিয়েছে হাজারো চড়াই উতড়াইয়ের মধ্য দিয়ে।তারউপর, ৯০ দশকের মাঝে এসে ক্লাসিক থ্র্যাোশ থেকে হেভি মেটাল,হার্ড রকের দিকে সরে যাওয়ায় হতে হয়েছে সমালোচিত।কিন্তু হেইটফিল্ডের নিখুত নেতৃত্বে মেটালিকার জনপ্রিয়তার চির ধরেনি এতটুকু।মেটালিকা হয়ত সবচেয়ে জনপ্রিয় হতে পারে ,কিন্তু পিউর থ্র্যাশ বলতে যা বোঝায় তার সবটুকু উপাদান রয়েছে স্লেয়ারে(১৯৮১-বর্তমান)।সমসাময়িক সব থ্র্যাশ মেটাল ব্যান্ড থেকে স্লেয়ার অনেক বেশি আক্রমণাত্মক,অনেক বেশি এগ্রেসিভ এবং অনেক বেশি প্রভাব বিস্তারকারী।কেরি কিং আর জেফ হেনাম্যানের গিটার ডুয়ো ,ভয়েসে টম আরায়া আর ড্রামে “গডফাদার অফ ডাবল ব্যাজ” ডেইভ লম্বার্ডো-স্লেয়ার যেন এক অগ্নিস্ফুলিং।মেটালিকা থেকে বিতাড়িত ডেইভ মাস্টেইন ১৯৮৩ এর দিকে গড়ে তোলেন মেগাডেথ।সেই তখন থেকে আজ পর্যন্ত মাস্টেইন(অনেকের মতেই সেরা মেটাল গিটারিস্ট) পুরো ব্যান্ডটিকে টেনেছেন একা,তাইতো শুরু থেকে আজ পর্যন্ত মেগাডেথের মধ্যে ছিল মেটালিকাকে পেছনে ফেলার তাগিদ।তা মেগাডেথ পেরেছে না পারেনি-তা বিচার করার দায়ভার শ্রোতাদের উপর ছেড়ে দিলাম।তবে মেটালিকা মেগাডেথের এ সুদীর্ঘ শত্রুতার অবসান ঘটিয়ে “বিগ ফোর অফ থ্র্যাশ” এখন পুরোদমে কন্সার্ট করছে একসাথে ।থ্র্যাশ যে কেবল আমেরিকানদের সম্পত্তি তা বলাও ভুল হবে।জার্মানিতে জন্ম হল টিউটোনিক থ্র্যাশের যার মূল স্তম্ভ –ক্রিয়েটর(KREATOR),সডম(SODOM) আর ডেস্ট্রাকশন(DESTRUCTION)।আবার ব্রাজিলে রয়েছে সেপালচুরা SEPULTURA) র মত আগ্রাসী থ্র্যাশ মেটাল ব্যান্ড।

প্রতিনিয়ত মেটালকে আরো আগ্রাসীরুপে পাওয়ার মধ্যেই যেন মেটালহেডরা আনন্দ খুজে পাচ্ছিল।এ থেকেই জন্ম হল ডেথ মেটালের যা মেটালের সবচেয়ে এক্সট্রিম আর এগ্রেসিভ জনরা হিসাবে সর্বজনবিদিত।ডেথ গ্রাউল ভয়েস,ডিসটর্টেড গিটার,দ্রুত ব্লাস্ট বিট ড্রামিং-ডেথ মেটালের সুপ্রধান বৈশিষ্ট্য এবং এই জনরা স্লেয়ার,ক্রিয়েটর,ভেনম এসব ব্যাণ্ড দ্বারা অনুপ্রাণিত।ডেথ মেটালের জন্মস্থান আমেরিকার ফ্লোরিডা বলাই শ্রেয় আর ডেথ মেটালের আদিপিতা বলতে যা বুঝায় তা অবশ্যই ডেথ(DEATH) । অনেকের মতেই ডেথের(১৯৯৩-২০০১) প্রথম এলবাম “স্ক্রিম ব্লাডি গোর” ডেথ মেটালের প্রথম রেপ্লিকা আর ডেথের ফ্রন্টম্যান চাক শাডনার “ডেথ মেটালের পিতা”।ডেথ মেটাল বললে আরো যে দুইটি ব্যান্ডের নাম চলে আসে সেগুলো হল মরবিড এঞ্জেল(MORBID ANGEL) আর ডিয়েসাইড(DEICIDE)।ডেথ এই সাব-জনরার আদি পিতা হতে পারে কিন্তু সত্যিকার যে ডেথ মেটাল তা মরবিড এঞ্জেলের (১৯৮৪-বর্তমান)হাতে ধরেই।পিট স্যান্ডোভালের বিধ্বংসী ড্রামিং,সাথে ট্রে এর সিগনেচার গিটার সলো আর রিফ মরবিড এঞ্জেলকে করেছে অনন্য।আরেকটি ডেথ মেটাল ব্যান্ড যার কথা না বললেই নয়,তা হল বহুল বিতর্কিত কানিবাল করপ্স(CANNIBAL CORPSE)।কানিবাল করপ্স বিতর্কিত তাদের ভয়াবহ লিরিক্স আর এলবাম কভারের জন্য কিন্তু তা সত্বেও তারাই সর্বাধিক-বিক্রিত ডেথ মেটাল গ্রুপ।ডেথ মেটালেরও রয়েছে অনেক সাব-জনরা যেমন মেলোডিক ডেথ মেটাল,প্রগ্রেসিভ ডেথ মেটাল,টেকনিকাল ডেথ মেটাল,ডেথ-কোর।পিউর ডেথ মেটালকে আরো শ্রুতিমধুর করতেই মেলো ডেথের উদ্ভব আর এর উদ্ভাবনের পেছনে মূল কৃতিত্বটা কিন্তু সুইডিশদের।গোথেনবার্গ বা মেলো ডেথের জনক ইন ফ্লেইমস(IN FLAMES),ডার্ক ট্রাঙ্কুয়ালিটি(DARK TRANQUILITY) আর এট দ্য গেইটস(AT THE GATES)।

আমেরিকাতে যখন একের পর এক ডেথ মেটাল ব্যান্ড তৈরি হচ্ছে,ঠিক একই সময়ে ইউরোপে সূচনা হচ্ছে মেটালের এক নতুন জনরার,ব্ল্যাক মেটাল তার নাম।ব্ল্যাক মেটালই মেটালের সবচেয়ে বিতর্কিত ধারা,সবচেয়ে কদর্যও (অনেকের মতে) সম্ভবত।হবে নাই বা কেন? ব্ল্যাক মেটাল মানেই যেন ক্রিশ্চিয়ানিটির বিপরীত কিছু, স্যাটানের উপাসনা ক্ষেত্রবিশেষে।ভেনম,বাথোরি প্রভৃতি ব্যান্ড দ্বারা গভীরভাবে অনুপ্রাণিত ব্ল্যাক মেটালের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটে নরওয়েতে।প্রথম দিকের নরওয়েজিয়ান ব্ল্যাক মেটাল ব্যান্ডগুলো হল মেইহেম(MAYHEM),ডার্ক থ্রোন(DARK THRONE),এম্পেরর(EMPEROR) আর ইমোর্টাল(IMMORTAL)।এসব ব্যান্ডের অনেকগুলোই নরওয়েতে চার্চ পোড়ানো,খুন,আত্মহত্যা প্রভৃতি কর্মকান্ডে জড়িত।ব্ল্যাক মেটালের মূল বৈশিষ্ট্য যা একে ডেথ থেকে আলাদা করে তা হল ভয়েস,অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই ধরনের ভয়েসকে বলা যায় শ্রিকিং(shrieking),এছাড়াও রয়েছে ডিসটর্টেড গিটার ওয়ার্ক,ব্লাস্ট বিট ড্রামিং।শুরুর দিকে ব্ল্যাক মেটাল ব্যান্ডগুলো এলবাম বের করত অত্যন্ত স্বল্পমূল্যে আর এসবের রেকর্ডিং হত বাড়ির নিচের বেইসমেন্টে,পরে জনপ্রিয় হওয়ার পর এ ধারা থেকে অধিকাংশ ব্যান্ডই বের হয়ে আসে।তবে ব্ল্যাক মেটালের প্রকৃত সৌন্দর্য হয়তবা কদর্যতা বের হয়ে আসে তাদের কন্সার্টে।ব্ল্যাক মেটাল আর্টিস্টরা নিজেদের মুখে ব্যবহার করে মৃতদেহের রঙ (সাদার আধিক্যে কালো ডোরা),কোমরে বুলেট বেল্ট,হাতে এবং পায়ে স্পাইক,ক্ষেত্রবিশেষে গলায় উলটা ক্রুশ অথবা পেন্টাগ্রাম।মেইহেম অথবা গরগরাথের মত বিতর্কিত ব্যান্ডগুলো কন্সার্টে পশুর রক্ত,মাথা,নগ্ন ক্রুশ-বিদ্ধদেহ ব্যবহারের দায়ে বহুল সমালোচিত।তবে অনেক ব্ল্যাক মেটাল ব্যান্ডের থিম কিন্তু প্রকৃতি,মিথ,বিষন্নতা।ব্ল্যাক মেটালের কিছু সাব-জনরা সিম্ফোনিক ব্ল্যাক মেটাল,ব্ল্যাকেনড ডেথ মেটাল,ভাইকিং মেটাল।

মেটালের আরো কিছু জনরা হল প্রগ্রেসিভ মেটাল,গ্রুভ মেটাল,পাওয়ার মেটাল,গোথিক মেটাল,ডুম মেটাল প্রভৃতি।কিছু ব্যান্ডের কথা না বললেই নয়।যেমন প্রগ্রেসিভ মেটাল ব্যান্ড ড্রিম থিয়েটার (DREAM THEATER) ।ড্রিম থিয়েটার(১৯৮৫-বর্তমান)এর প্রতিটি সদস্যই নিজ নিজ ক্ষেত্রে সেরা বা অন্যতম সেরার দাবিদার।যে ব্যান্ডের গিটারে জন পেত্রুচ্চি আর ড্রামে মার্ক পোর্টনয় (বর্তমানে সাবেক) সে ব্যান্ডের মান নিয়ে কখনো সন্দেহ থাকার কথা নয় ।ঠিক একইভাবে সন্দেহ নেই প্যান্টেরা(PANTERA)এর মান নিয়ে।২০০৪ সালে কন্সার্টে গুলিতে নিহত হন এই ব্যান্ডের গিটারিস্ট দ্য গ্রেট ডিমেবাগ ড্যারেল আর তার কিছু পরে প্যান্টেরারও মৃত্যু ঘটে।

এইত মেটাল আর তার সব অতিপরিচিত জনরা।প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে মেটালের নতুন সব সাব-জনরা,অথবা এক জনরার সাথে আরেক জনরা মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে নতুন ফিউশান জনরা।অনেকের কাছেই মেটাল হল সংগীতের বিরক্তি উদ্রেককারী ধারা।কিন্তু দৈনন্দিন চলার পথে ,মেটাল যদি একটু হলেও আনন্দ দিয়ে থাকে,দূর করে মানসিক অবসাদ তবে তা শুনতে তো ক্ষতি নেই।

তথ্যসূত্রঃ
ডকুমেন্টারিঃমেটাল-আ হেডবেংগার’স জার্নি (২০০৫)
উইকিপিডিয়া
(তথ্যে সামান্য ভুল থাকতে পারে,বানানেও ভুলচুক হতে পারে,উপস্থাপনা বা লেখনী পছন্দ না হতে পারে,ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টি কাম্য)


মন্তব্য

দ্রোহী এর ছবি

লাইনে আসলাম।

শারেক শহিদ এর ছবি

এ বড়দের 'জিনিস', সহজপাচ্য শিশুখাদ্য নয় । অল্পকিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে বেশির ভাগ মেটার ব্যান্ডদের গান শোনার জন্য 'শক্ত' কানের সাথে, মজবুত হৃদয় থাকাও বাধ্যতামূলক ।

লেখা ভাল হয়েছে, তবে কিনা এ গান আমার 'চলে না' । হাসি

তাপস শর্মা এর ছবি
দুর্দান্ত এর ছবি

"মেটালের আগে ব্লুজ শুনা দরকার। আয়রন মেইডেনের আগে বি বি কিং" - আল-কবির।

খেকশিয়াল এর ছবি

যারা আগে শুনে নাই, তারা পরে শুনুক, অসুবিধা নাই। কিন্তু দরকার হাসি

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

কর্ণজয় এর ছবি

হাসি

কর্ণজয় এর ছবি

হাসি

ধুসর জলছবি এর ছবি

ডকুমেন্টারিটা দেখেছিলাম , আপনার লেখাটাও ভাল লাগল চলুক

প্রীনন এর ছবি

কিছু নিয়ে লেখার ইচ্ছে ছিল,সেজন্যই প্রিয় টপিক মেটালকে বেছে নিলাম।আর গানের ব্যাপারে সবারই ব্যক্তিগত পছন্দ বা অপছন্দ থাকতে পারে এবং এই পছন্দকে আমিও শ্রদ্ধা করি।মজার ব্যাপার,মেটাল যেমন ভালো লাগে,ঠিক একই সাথে ভালো লাগে রবীন্দ্র,নজরুল কিংবা হেমন্ত।হৃদয়টা আমার মজবুত না সবসময় খাইছে কষ্ট করে পড়া আর মন্তব্য পোস্টানোর জন্য সবাইকে ধইন্যা হাসি
আর অবশ্যই মেটালের আগে ব্লুজ/ক্লাসিক রক শোনা উচিত,পুরোপুরি সহমত

উচ্ছলা এর ছবি

চমৎকার লিখেছেন। খুবই তথ্যসমৃদ্‍ধ কোলাকুলি

Metal Evolution সিরিজটি দেখেছেন? এটি আরও ডিটেল, আরও বেশি ইনফরমেটিভ।

আপনি হেভি মেটাল নিয়ে লিখলেন আর 'Metal God' রনি জেমস ডিও-র নাম নিলেন না যে?! 'ডেভিল্‍স হর্‍ন' তো উনিই দুনিয়াময় ছড়িয়ে দিলেন! সবচেয়ে পাওয়ারফুল ভোকালের মেটাল সিংগারকে আলোচনা থেকে বাদ দিয়ে আপনি কত্ত বড় পাপ করেছেন, জানেন?! রেগে টং

আপনি সারা বিশ্‍বের হেডব্যাঙারদের মেটাল-অনুভুতিতে আঘাত করেছেন, জনাব!

(যদিও আপনি মেটাল ইভলিউশনে কেবল বিভিন্‍ন ব্যান্‍ডের উথ্‍থান ও প্রসার নিয়েই আলোকপাত করেছেন 'মেটাল-আ হেডবেংগার’স জার্নি' অবলম্‍বনে, Black Sabbath নিয়েও বলেছেন; তবে ঐ ডকুমেন্টারিতে ডিও-র ইন্‍টারভিউ ছিল, ডিও সম্‍পর্‍কে বিশদ আলোচনা ছিল। আপনিও ডিওকে নিয়ে আরেকটু বললে আরেকটু ভাল লাগত আরকি হাসি )

আর্য এর ছবি

আমিও ঠিক মেটাল শোনা ধরনের মানুষ নই (শুনলে মাথা ধরে হাসি ), কিন্তু আপনার দেয়া stargazer গানটা শুনলাম। মিউজিক অসাধারন লাগলো। যদিও একবারের বেশী দুবার হয়তো টানা শুনতে পারবো না, কিন্তু মাঝে মাঝেই ফেরত আসব শুনতে, এটা ঠিক।

উচ্ছলা এর ছবি

Black Sabbath-এ যখন ডিও ছিলেন, সেই সময় রিলিজড হওয়া ‘Heaven and Hell’ এ্যালবাম থেকে একটা গান শুনুন। মাথা ধরবে না, গ্যারানটিড হাসি

আর্য এর ছবি

ঠিক বলেছেন, মাথা ধরেনি হাসি তবে কিনা, আমার নিজস্ব যে মেটালের সংগা তার মধ্যে এটা পড়ে না। আমি আবার এধরনের মেটাল ব্যান্ডের নন-মেটাল গানগুলি শুনি যখন মেটাল শুনতে ইচ্ছা করে। ইদানিং কালের guns and roses বা metalica দের ও এরকম কিছু গান আছে, তাই না? যেগুলো শুনলে মাথা ধরে না। স্লো এবং সুন্দর। আমি দেখলাম কি এই হেভি মেটাল ব্যান্ড গুলো যখনি স্লো গান গায় তখনি সেই গান টা হিট করে। আমার প্রশ্ন হলো তাইলে এরা বেশিরভাগ সময় হাড়ি পাতিল পিটানোর মত গান করে কেন?

আর গায়ক ভদ্রলোককে চিনিনা (মেটাল জগতের মানুষ নই তো, তাই মনে হয়), তবে গলাটা কেন জানি খুব পরিচিত মনে হলো। হয়ত না জেনেই আগে ওনার গান শুনেছি।

উচ্ছলা এর ছবি

আমার প্রশ্ন হলো তাইলে এরা বেশিরভাগ সময় হাড়ি পাতিল পিটানোর মত গান করে কেন?

দাড়ান একটু হেসে নেই গড়াগড়ি দিয়া হাসি

একেক ধরনের গানের একেক এ্যাটিটিউড; একেক মেজাজ, গায়কী এবং প্রকাশভংগী।

কেউ ভালবাসে ধীর লয়, আবার আমার মত অনেকের পছন্‍দ Loud, fast, powerful, explosive, wild, raw, growling, howling, brutally honest, badass নাচা-গানা দেঁতো হাসি

দেখেন এটা ভাল লাগে কি না হাসি

আর্য এর ছবি

এই গানটা শুনেছি আগে। আরও বেশ কয়েকটাই শুনেছি মেটালিকা আর গান্স এন্ড রোজেসের। কিন্তু পছন্দের সব্গুলোই ধীর লয়ের। powerful, explosive, raw, glowling, howling হলেই আমার কেন জানি খালি বোম টোমের কথাই মনে হয়, গানের কথা আর মনে হয় না হাসি এটা মনে হয় আমার অভ্যাসের কারনে। আমি সাধারনত শুধু গান শোনার জন্য গান শুনি না, background এ শুনি। আর background এ হাড়ি পাতিল পেটাতে থাকলে foreground এর কাজটা পুরা গান্জাম লেগে যায়।

খেকশিয়াল এর ছবি

খাইসে! আপ্নে ধাতবমস্তক নাকি! জোশ \m/

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

প্রীনন এর ছবি

ডিও এর ব্যাপারটা সবসময় মাথায় ছিল,কি কারণে যে বাদ পড়ে গেল তা ঠিক আমিও বুঝে ঊঠতে পারলাম না।যাহোক,ডিও এর ব্যাপারটা মিস করার জন্য অত্যন্ত দুঃখিত এবং এ মিস করাটা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। মেটাল ইভোলিউশন দেখা হয়নি।স্যাম ডানের 'মেটাল-আ হেডবেংগার’স জার্নি' আর 'গ্লোবাল মেটাল' দেখা হয়েছে।

উচ্ছলা এর ছবি

আরে আপনি দেখি সিরিয়াস হয়ে গেলেন ইয়ে, মানে...
আমি তো মজা করছিলাম।আসল ব্যাপার হল, আপনার লেখাটি খুবই উপভোগ করেছি।

একটি Grunge Metal উপহার আপনার জন্য হাসি

প্রীনন এর ছবি

ইমো দিয়ে ভাব প্রকাশ করলেই বুঝি সিরিয়াস কম লাগে ? হাহা,ওকে,আমিও কিছু ইমো দিলাম হো হো হো অ্যাঁ

খেকশিয়াল এর ছবি

আসলে ডিও আমাদের মাথার উপরে সবসময় থাকে তো, তাই তার কথা বলতে হবে এইটা মাঝেমাঝে ভুলে যাই আমরা। ঘটনা না। গুরু অপরাধ নিবে না দেঁতো হাসি

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

প্রীনন এর ছবি

কৌশিকদা,আপনার কথাই যেন ঠিক হয় গুরু গুরু

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

ইয়ে, এসব ফিরিঙ্গি নাম পড়লেই ক্যামন যেন ঘাবড়ে যাই। কী সব আবোলতাবোল বকে গেলি ছোঁড়া, তারপরেও নয়া ক্যানভাসারকে এ পাড়ায় স্বাগতম। হাসি

প্রীনন এর ছবি

সুহানদার মন্তব্য পেয়ে বিশেষ পুলক অনুভব করছি গুরু গুরু বুঝিস ই তো, সৃজনশীল কিছু লেখতে পারি না তেমন একটা,তাই এইরকম কিছু নিয়ে লেখার চেষ্টায় থাকি মাঝে মাঝে হাসি ,অনেক অনেক ধন্যবাদ

খেকশিয়াল এর ছবি

চলুক

*ডাইমব্যাগ ড্যারেল

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

প্রীনন এর ছবি

চলুক

ভেগাবন্ড এর ছবি

প্রথমত, রনি জেমস ডিও কে বাদ দিয়ে মেটাল নিয়ে আলোচনা পাপ বটে!
তবে কষ্ট পেলাম আপনি পাওয়ার মেটাল নিয়ে কিছু বলেননি। কেমলট, স্ট্রাটভেরিয়াস , প্রাইমাল ফেয়ার বা ব্লাইন্ড গার্ডিয়ান নিয়ে কোন আলচনা করেননি বলে কষ্ট পেয়েছি। মন খারাপ :( মন খারাপ
"মেটাল" এর দ্বিতীয় ডকুটা কি দেখেছেন? দেখলে অবশ্যই জানবেন স্লেয়ার'র গান গুলা কতো পর্যন্ত বিস্তৃত!!

বিঃদ্রঃ "রয় খান (কেম'লট)"-এর গান গুলা কি শুনেছেন?
গত ৫ বৎসর ধরে এই এক বেন্ডে মুগ্ধ হয়ে আছি!!

১৫ নম্বর কেবিনের যাত্রী এর ছবি

দারুণ একটা পোস্ট।

আর্য বলেছেন : আমি দেখলাম কি এই হেভি মেটাল ব্যান্ড গুলো যখনি স্লো গান গায় তখনি সেই গান টা হিট করে।

কথা সত্য হো হো হো তবে কিনা এদের মূলধারার গানগুলোও কিন্তু কম জনপ্রিয় না- আমারো প্রথম দিকে চিল্লাফাল্লা হজম হতো না, পরের দিকে এসে একটু খেয়াল করে শুনতে থাকি আসলে কথাগুলো কি , সেই থেকে ভালো লাগা শুরু।

আন্দাজেই কথা খেয়াল না করে হেডব্যাং দেওয়াটা আমার কাছে বাঁদরনাচ মনে হয় দেঁতো হাসি

দারুণ পোস্ট। এতকিছু জানতাম না ।

এক কাজ করেননা- একটা একটা করে বড় ব্যান্ডগুলোকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে আলাদাভাবে পোস্ট দিন পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

প্রীনন এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ পড়ে দেখার জন্য।দারুন লাগল জেনে খুশি হলুম চাল্লু
হুম, হেডব্যাং দিতে হইবেক,মাগার লিরিক্স খেয়াল কইরা চোখ টিপি ,আপনার কথা ভেবে দেখলাম,সামনে পিঙ্ক ফ্লয়েডরে নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে একটু

xubilant saad এর ছবি

(:

প্রীনন এর ছবি

চিন্তিত

দূর্বা জাহান এর ছবি

মাথা পুরা নষ্ট!!! ক্লাস এইট থেকে মেটালফ্রিক হয়েছি সেই টান এখনো কমে নাই । স্লো গান তো শুনিই তবে মেটাল তো মেটাল যার কোন তুলনা হয় না! \m/

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।