ধীরে ধীরে সব পাল্টে যায়

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ২৯/০৬/২০১২ - ২:১৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এক.
:"কীরে সজীব, ক্লাসে যাবি না।"
:"মামা, আকাশের রং দেখছোস, "পুরা আকাশ কালো, মেঘ কালো"-অবস্থা। ঝুম বৃষ্টি নামবো। লহ্ বৃষ্টিতে ভিজি।
:" আর ক্লাস করবো কে?
: "ধুর ব্যাট্যা মফিজ। ক্লাস কইরা কী আর জজ-ব‌্যারিস্টার হবি। হবি তো ঘুসখোর আমলা আর নাইলে বিদেশে ডি.সি। লহ্ ।"

দুই.
"দুস শালা! আবার বৃষ্টি নামলো।" সজীব মনে মনে ভাবে। ১০টায় অফিসে মিটিং। বাজে ৯.২০। বৃষ্টির জন্য কোন সি.এন.জি ও নাই। দেরি হলে কপালে বসের ঝাড়ি নিশ্চিত। বাসে কোনরকমে উঠে, টেনশন ভোলার জন্য মোবাইলে ফেসবুকিং শুরু করে দেয়।
"লোকজন আরামে আছে, বৃষ্টি নিয়া কত আল্লাদ..." ভাবতে ভাবতে চিন্তার মোড় ঘুরে চলে আসে ব্যাক্তিগত সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে, একটা গাড়ি থাকলে সেও বৃষ্টিটা উপভোগ করতে করতে অফিস যেতে পারতো।আর কিছুদিন, তার সবই হয়ে যাবে- ভাবতেই সুখীবোধ করে সজীব।

তিন.
আজ ৯.০ টায় মিটিং। নতুন ছেলেটা কে মিটিং-এর প্রি-রিড গুলো রেডি করতে বলে গিয়েছিলো গতকাল। ৮.২০ ছেলেটার কোন খোজ নেই। টেনশনে মোবাইলটা খামখাই চাপাচাপি চলে কিছুক্ষন। মোবাইলটা হাতে থাকতেই টেক্সটা চলে আসে। "আহসান ভাই, বৃষ্টিতে আটকা পড়েছি। ৮.৪৫ এর মধ‌্যে চলে আসবো।"

"বৃষ্টি হচ্ছে নাকি!" ভাবে, ল্যাপটপে চোখ রেখে পুরোটা রাস্তা আসা, সৈয়দ আহসান যাকে আমাদের হিসেবে ৩০ সেকেন্ড আগে আমরা চিনতাম সজীব হিসেবে। আর ইতিমধ্যে সজীব পাড়ি দিয়েছে দুই-তৃতীয়াংশ জীবন।

_________________________
আইলসা


মন্তব্য

ক্রেসিডা এর ছবি

আপনার লেখা ফলো করছি। এটাও সুন্দর অনেক। শুধু বেশি ছোট মন খারাপ পড়তে ভালো লেগেছে, গল্প ভালো, কিন্তু আরো পড়তে চেয়েছি, হঠাৎ শেষ অল্পতে শেষ হওয়ায় একটা অতৃপ্তি থেকে গেল।

ভালো থাকবেন।

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

বন্দনা এর ছবি

লেখার ধরনটা বেশ ভালো লাগ্লো। আমি দুমাস হল মাত্র জবে ঢুকেছি, এখন ও বৃষ্টি হলে আগের মতই আপ্লুত হই। আর ও বেশ কবছর পাড়ি দিলে হয়তো অবস্থাটা এমনি দাঁড়াবে কে জানে।

আইলসা এর ছবি

জব যখন জীবনের সাথে জড়িয়ে যায়, যখন একটা প্রমোশন মানে হয় ফ্যামিলির কিছু চাহিদা পূরন, তখন সবকিছু পাল্টে যেতে থাকে। আশাকরি আপনার জীবনে তা হবেনা বরং আপনি উপভোগ করুন প্রতিটি বৃষ্টি।
ধন্যবাদ

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আফনে আসলেই আইলসা? একটু টানলেও তো পারেন।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

দেঁতো হাসি
সহমত

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

ভাল লাগল রূপান্তরটা - যদিও অণুগল্প ট্যাগ না দিয়ে পরমাণু গল্প দিলে মিলে যেত দেঁতো হাসি

গল্প পড়ে অভিমত: প্যাকেট খুলতে খুলতে চিপস শ্যাষ অ্যাঁ

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

আমার কিন্তু মনে হয়েছে আর না টেনে ভালই করেছেন।

চমৎকার লাগল।
খুবই ভাল।
পরের পরমাণু গল্পের প্রতীক্ষায় থাকলাম।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

খানদানী আইলসা বটে। ভাল লেগেছে। চলুক

সুরঞ্জনা এর ছবি

আসলেই, এমনই ঘটে।
আরো লিখুন
হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালৈতো... হাসি

কড়িকাঠুরে

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

ধীরে ধীরে আসলেই সব বদলে যায়। খারাপ লাগে নি গল্পটা। আমাদের জীবন তো অনেকটা এরকমই।

আইলসা এর ছবি

গল্পটা পড়ার এবং কষ্ট করে মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

ক্রেসিডা, বাপ্পী হায়াত (আপনে কী আবুল হায়াতের জ্ঞাতি?) এবং কবি ভাইগন: আমি আসলেই ভীষণ অলস, ভীষণ। গল্পটা লিখছিলাম এক বৃষ্টির দিন অফিসে বসে, মাত্র তিন বা চার লাইনে। ওইটা ঘ্যাচং হওয়ায় গতকাল রাতে আবার লিখলাম। রাতে টাইম একটু বেশী ছিল, তাই আরো চার-পাচটা লাইন আসলো। আসলে বড় গল্প লেখায় টাইপিং-এর কষ্ট ছাড়াও বাক্য গঠন, কাহিনীর সামণ্জ্ঞস্য রাখা আর বানান ভুল না করা বাংলায় টিটি (টাইন্যা-টুইন্যা) পাস ছাত্রের জন্য একটু কষ্টসাধ্যই। তবে চেষ্টা করবো সময় এবং সুযোগ পেলে বড় কিছু লেখার।
_______
আইলসা

বাপ্পীহায়াত এর ছবি

জ্বি'না - আমি আবুল হায়াতের কেউ না, তবে ছুডো কালে বিপাশার উপর ক্রাশ ছিল দেঁতো হাসি

আশা করি নিয়মিত লিখবেন

তাপস শর্মা এর ছবি

গল্পটা ভালো লাগছে। চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ

জাদুকর এর ছবি

লেখাটা বেশ ছোট হলেও ভালো লাগলো। আরো লিখুন সময় করে।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

সত্যিই! ধীরে ধীরে সব পাল্টে যায়...
ভালো লাগলো খুব। হাসি

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।