মোবাইল যখন ক্যামেরা

ফোনে কথা বলাটা কেন জানি কখনোই আমার পছন্দের কাজ গুলির মধ্যে পড়ে না। নিতান্তই প্রয়োজনীয় কথাবার্তা ছাড়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে প্যাচাল পারাটা আমার কাছে মহাবিরক্তিকর ব্যাপার। ভার্সিটিতে যেসব বন্ধু বান্ধবী প্রেম করত সারাদিন ঘুরাঘুরি করার পর দেখতাম (শুনতাম বলিনি কিন্তু) সারারাত ফিশফিশ করে ফোনে কথা বলে। কি যে এত কথা আল্লাহ মালুম!

তবে যেদিন থেকে মোবাইল ফোনের সাথে ক্যামেরা যুক্ত হল আমার কাছে এই যন্ত্রের মাহাত্ম অন্য পর্যায় যুক্ত হল।
কারণ প্রতিদিন কাঁধে ডিএসএলআর ঝুলিয়ে ঘোরাঘোরি করা মোটেও সম্ভবপর না। তাছাড়া এখন আমি যদিও কাক সংখ্যার অধিক সংখ্যক ফটোগফুরদের মত এসএলআরের গর্বিত মালিক, ফিল্মের ক্যামেরা বাতিল হবার পর আমি অনেক বছর ক্যামেরাহীন গরিব মানুষ ছিলাম। ছবি তোলার জন্য হাত নিশপিশ করলে মনে হত দূরে দাঁড়িয়ে মুড়ি খাই। এহেন দারিদ্রতার কালে 3.15mp এর মোবাইলের ক্যামেরাই আমাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল।

এমন কি ক্যামেরা কেনার পরবর্তী যুগেও এই দুর্দিনের বন্ধু পাশে দাঁড়িয়েছে, যখন ওই ডি এস এল আর ব্যাটাকে সাথে নেয়ার সুযোগ হয়নি। সচলের দুর্দান্ত সব ফটোগ্রাফির ভিড়ে তেমন কিছু ছবি বেহায়ার মত শেয়ার করলাম এখানে।

১

পদ্মপাতার জল

জলজ ফুলগুলির মধ্যে আলাদা একটা আকর্ষণীয় ব্যাপার আছে কেন জানি মনে হয়। এইটা কি ফুল ঠিক জানি না।

২

কুয়াশা

প্রচণ্ড শীতের এক সকাল, সিলেটের পথে যাচ্ছিলাম কিছু বন্ধুবান্ধব মিলে।

৩

সাতরঙা চা

সিলেটের কিছু অঞ্চলে সাতরঙা চা নামে খ্যাত এই চা পাওয়া যায়, খেতে মোটামোটি খারাপ না। তবে এর রাসায়নিক উপকরণ জানা না থাকলেও খুব একটা স্বাস্থ্যকর বলে মনে হয় না।

৪

চাফুল

চা ছাড়া আমার একটা দিনও কাটানো সম্ভব না। সে গাছের ফুল খুব কাছে থেকে এর আগে দেখার সুযোগ হয়নি, সেদিনের গন্তব্যহীন যাত্রায় চা বাগানে নেমে খুব কাছ থেকে দেখলাম।

৫

গগনে গরজে মেঘ

ইনানিবীচে যাবার পথে একদিন, প্রচন্ড বৃষ্টি পড়ছিল। আমার ঈর্ষান্বিত (!) বন্ধুটা বলল ক্যামেরা নেয়া লাগবে না, দেখা যাবে ওইটার টেনশানে তুই কোথাও না যেয়ে ভাড়া করা টুকটুকির ভিতর বসে থাকবি।

৬

নিঝুম দুপুর

বৃষ্টি থেমে গেলে এইখানে বসে লাঞ্চিত হই আমরা মানে দুপুরের লাঞ্চ সারা হয়।

৭

সাম্পানসারি

ইনানিবীচের পাড়ের জেলেদের এই সাম্পানেই জীবিকা।

৮

রাণী ভবানির প্রাসাদ

৯

নাটোর শুনলেই বনলতার কথা আগে মনে পড়লেও সেখানকার রাণী ভবানি কিন্তু ইম্পরট্যান্ট ফিমেল ক্যারেক্টার হিসেবে কম যান না। এ হল নাটরের রাণী ভবানির প্রাসাদ। ইতিহাস জানতে চাইলে সচলের ঐতিহাসিক ইতিহাসবিদ সত্যপীরকে বলবেন লিখে দিতে, ওইসব আমার কম্ম নয়। একেবারেই প্ল্যান ছাড়া ট্রিপ ছিল। উত্তরে যেতে যেতে এই প্রাসাদে থামলাম। ক্যামেরাটা মিস করছিলাম সেদিন সবচেয়ে বেশী। তাই আবার সেই শেষ সম্বল মোবাইলের ক্যামেরার দ্বারস্থ হতে হল। ওইদিকে গেলে আমার মত এই ভুল করবেন না কেউ দয়া করে।

১০

১১

সদর দরজা

১২

মূল ফটক

১৩

বারান্দা

১৪

ছাঁদ

১৫

বাঁশি

১৬

প্রজাপতিরা যখন তখন উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে রাঙ্গা মেঘের মতন।

১৭

প্রজাপতিরা

সচলে ম্যাক্রো ব্যবহার করে এবং না করে প্রজাপতি ফটুগফুরদের ভয়ানক সুন্দর সব ফটু আছে, তার মধ্যে এইটা দিয়ে ধৃষ্টতার পরিচয় দেই একটু।

এমনি করে ঘুরতে ঘুরতে উড়তে উড়তে কে কখন কোথায় চলে যাই তার ঠিকঠিকানা নাই। ক্যামেরা সঙ্গী না হলেও ফটুকবাজি যেন থেমে না থাকে।

শাব্দিক।