সামুদ্রিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার হোক

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০৩/০৫/২০১৩ - ৩:০৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশের দেক্ষিনে বঙ্গপসাগর অবস্থিত। ভারত ও মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সমূদ্র সীমানা আছে। আর এ নিয়ে বাংলাদেশের বিরোধ ছিল দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমারের সাথে। ভারত চাইতো তারা যেন বেশি সংখ্যক জায়গা তাদের নিয়ন্ত্রনে থাকে। অপর দিকে মিয়ানমার চাইতো তারা যেন বেশি জায়গা পায়। আর এ নিয়ে দুদেশের সাথে বাংলাদেশের বিরোধ লেগে ছিল। স্বাধীনতার পর যে বিরোধের সূচনা তার কিছুটা হয়তো নিস্পত্তি হয়েছে। বাংলাদেশ যে দাবি তুলেছিল তার সবটুকুই পূরন হয়েছে। কিছু দিন আগে মিয়ানমার বাংলাদেশের সমূদ্র সীমানায় এসে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান চালায়। নৌবাহিনীর একটি জাহাজ গিয়ে তাদের বাধা দিলে তারা সেখান থেকে চলে যায়। বাংলাদেশ ও মায়ানমারের মধ্যে সমূদ্র সীমানা নির্ধারনে অনেক আলোচনা হয়েছে কিন্ত কোন ফল হয়নি। ফলে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক আদালতের সরনাপন্ন হতে হয়েছে। বাংলাদেশ সমূদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনালে মামলা করে। সমূদ্র সীমানা নির্ধারনে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়া যে ফলপ্রসু হয়েছে তার ফলাফল এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি। সমূদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল (ইটলস) বাংলাদেশের পে রায় দিয়েছে। যার ফলে মায়নমারের সাথে সমূদ্র সীমা নিয়ে বাংলাদেশের কোন বিরোধ থাকলনা।
ভারতের সাথেও বাংলাদেশের সমূদ্র সীমানা নিয়ে বিরোধ আছে। কিছু দিন আগে বাংলাদেশের সমূদ্র সীমানার মধ্যে একটি ছোট দ্বীপ জেগে ওঠে। দক্ষিন তালপট্টি নামের এই দ্বীপটি সমূদ্রে জেগে উঠেছিল ১৯৭৪ সালে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এ দ্বীপকে ভারত তাদের বলে দাবি করে। দক্ষিন তালপট্টি কে কেন্দ্র করে সেসময় এই একাত্তরের মিত্র রাষ্ট্র ভারতের সাথে বাংলাদেশের শীতলতা শুরু হয়। কিন্ত কিছুদিনের মধ্যে দ্বীপটি আবার সমূদ্রে হারিয়ে যায়। ভারতের সাথে সমূদ্র সীমানা নিধারনের জন্য বাংলাদেশের আবার আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়া উচিত। আমরা যদি এখন ইটলস এ যাই তাহলে ভারতের সাথে সমূদ্র সীমা নির্ধারনে কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব আমাদের পদক্ষেপ গ্রহন করা উচিত। স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের সাথে কম আলোচনা হয়নি। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। ভারত বাংলাদেশের সমূদ্র সীমানা নির্ধারনে আমাদের ন্যায্য পাওনা আদায় করতে হবে। ভারতের সাথে আমরা কোন ভাবেই বিরোধে জড়াতে চাই না। প্রতিবেশী দেশের সাথে বিরোধে জড়ানো কারো জন্যই ভাল হবেনা। তাছাড়া বাংলাদেশের সাথে ভারতের বিশাল বানিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। সমূদ্র সীমা নিস্পত্তির জন্য তাই বাংলাদেশকে যেতে হবে ইটলস এ।
বঙ্গোপসাগর তেল ও গ্যাসের আধার। তাই দু দেশরই নজর ছিল সমূদ্র সীমানা বাড়ানো দিকে। তাছাড়া নানা প্রকৃতিক সম্পদে বঙ্গোপসাগর ভরপুর। বাংলাদেশকে তার নিজস্ব উপায়ে তেল গ্যাস অনুসন্ধান করতে হবে। বর্তমানে সারা দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের বিরাট সংকট দেখা দিয়েছে। গ্যাসের অভাবে অনেক গ্যাস ও স্টেশন কারখানা বন্ধ করতে হয়েছে। এই পরিস্থিথিতে নতুন করে গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধান করা অতীব জরুরী। বঙ্গোপসাগরই হবে পারে সব সমস্যার সমাধান। বঙ্গোপসাগরে তেল গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য বিদেশী কোম্পানীর উপর নির্ভর করা উচিত হবেনা। বাড়াতে হবে নিজেদের সক্ষমতা। তাছাড়া গ্যাস অনুসন্ধানের অনুমোদন দেয়ার ব্যাপারে বিরাট দূর্নীতি হয় তা আমরা আগেই দেখেছি। অযোগ্য কোম্পানীকে গ্যাস উত্তলনের জন্য দিলে সেখানে দূর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। তার নজীর দেশে আছে। তেল গ্যাস ছাড়াও বঙ্গোপসাগর মাছের বিরাট আধার। আমরা যদি সেখান থেকে মৎস আহরন করি তাহলে দেশের আমিষের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানী করতে পারব। অনেক উন্নত দেশে দেখা যায় তারা অনেক উন্নত ধরনের নৌযানের সাহায্যে মৎস আহরন করে।সেই তুলনায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। আমাদের জেলে সম্প্রদায় কাঠের ট্রলারে করে মাছ ধরে। তাই তাদের জীবনের যেমন ঝুকি থাকে মাছও পায় তুলনামুলক কম। এছাড়াও সমূদ্র গবেষনায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। নানা ধরনের প্রাণী আর উদ্ভিদের আছে আমাদের বঙ্গোপসাগরে। তার কতটুকুই বা আমরা জানি। তাই এখনই উচিত আমাদের সমূদ্রকে কাজে লাগানোর। হোক সেটা প্রাকৃতিক সম্পদ আহরন বা গবেষনার কাজে।
-------------------------------------------------------
মুহাম্ম্দ আসাদুজ্জামান


মন্তব্য

দিগন্ত এর ছবি

ভারত-বাংলাদেশ সমুদ্রসীমা বিষয়ক মামলা ২০০৯ সাল থেকে বিচারাধীন। তবে ইটলসের অধীনে এই মামলা নেই - এটা আছে পার্মানেন্ট কোর্ট অব আর্বিট্রেশনে। আপনার লেখার আগে একটু গুগল সার্চ করে নিলে লেখাটা আরেকটু ভাল হত।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

তারেক অণু এর ছবি

বাংলাদেশের দেক্ষিনে বঙ্গপসাগর অবস্থিত। ভারত ও মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সমূদ্র সীমানা আছে। ১ম লাইনেই কতগুলা বানান ভুল দেখেছেন কি? বেশী দৃষ্টিকটু লাগছে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।