একবার এক গল্পে পড়েছিলাম- ‘মেয়েটা মন খারাপ করিয়ে দেয়ার মতো সুন্দর।’ সেই কলেজপড়ুয়া আমি সারাদিন এর অর্থ খুঁজে ফিরি চারদিকে, কোনভাবেই ধরতে পারি না। সুন্দর কিছু দেখলে মন খারাপ হবে কেন? তারপর,একদিন, নাদের আলীর দাদাঠাকুরের মতো যখন আরেকটু বড়ো হয়ে উঠি, তখন বুঝে যাই এর অর্থ। এই খুব ছোট ছোট ডিটেইলসগুলো দুর্দান্তভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারতেন তিনি।
তিনি হুমায়ূন আহমেদ, বাংলাদেশের জনপ্রিয়তম লেখক। গল্পের জাদুকর।
আমরা,'৮০-৯০ দশকের বালক- কিশোরের দল, বড্ড একা হতে শুরু করেছি... প্রিয় বন্ধুরা সব এক আলোকবর্ষ দূরে, প্রিয়মুখেরা রাতের আকাশের তারা, প্রিয় খেলোয়াড়েরা অবসরে, প্রিয় নায়কেরা পর্দায় আসেননা তেমন, প্রিয় গায়কেরা গিটারের ছয় তারে টুংটাং করেন না .. আমাদের ছোটবেলা শেষ হয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যেবেলায় মাঝেমাঝে বড্ড বিষন্ন লাগে!
এমন এক বিষন্ন বর্ষার দিনে আমাদের আরো একা করে তিনি চলে গিয়েছিলেন।
হুমায়ূনকে নিয়ে আমার বাড়াবাড়ি উচ্ছ্বাস নেই। যারা বলেন, তিনি বিশাল পাঠকশ্রেণী তৈরি করেছেন- এই বক্তব্যে দ্বিমত থাকলেও তর্কে যাইনা আমি। কিন্তু হুমায়ূনকে আমি মনে রাখব, দুপুরের ভাতঘুমের বদলে একটা বই নিয়ে কাটিয়ে দেয়া অলস দুপুর কিংবা বৃষ্টিভেজা বিকেল আর মনখারাপের রাতের সঙ্গী হিসেবে।
আমাদের মত শহুরে তরুণদের তিনি বৃষ্টিতে ভিজতে শিখিয়েছিলেন,জ্যোৎস্না দেখতে শিখিয়েছিলেন। কত কিশোরী চুপচাপ চোখের জল ফেলেছে তাঁর বই পড়ে অভিমানে। নীল হাতিটার জন্য নীলুর গাল ফুলিয়ে কান্না ছুঁয়ে যায় আমাদেরও। কেউবা ভাবে জোছনারাতে ফুলের মালা গলায় দিয়ে মনে মনে ডাকলে সত্যিই হয়তো আকাশপরী নেমে আসে জানালা দিয়ে।
আমাদের অস্বচ্ছল সংসারের ‘এইসব দিনরাত্রি’র ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র টানাপোড়েন আর মৃদু অনুচ্চার অনুভূতি ফুল হয়ে ফুটেছে তাঁর হাতে। আমাদের মধ্যবিত্ত জীবনের মায়াকে আমাদের ভাষাতে আমাদের মতো করে ভাষা দিয়েছিলেন।
আজ বলতে দ্বিধা নেই, হুমায়ূন স্টাইলে বাক্য লেখার একটা সচেতন বা অবচেতন প্রকাশ সবসময়ই থাকত। একদম সহজ সরল ঘরোয়া ভাষায় গল্প বলে যাওয়ার যে স্টাইল হুমায়ূন জনপ্রিয় করেছেন, এর প্রভাব কাটানো মোটামুটি অসম্ভব। আমার নীলরঙা ডায়েরির বহু পৃষ্ঠা ভরে আছে তাঁর বই থেকে টুকে নেওয়া প্রিয় লাইন দিয়ে।
আমাদের সবচে প্রিয় মানুষদের একজন ছিলেন বলে হুমায়ুন আহমেদের কাছে প্রত্যাশা ছিল অনেক, আর প্রিয় মানুষের প্রতি অভিমানটাও সবচে বেশি হয়।
প্রতিভার অপচয় দেখে হতাশ ছিলাম, তিনিই একদিন ‘নন্দিত নরকে’ লিখে আমাকে একটা পুরো বিকেল অবশ করে রেখেছিলেন মুগ্ধতায়; কি যেন নেই, কি যেন নেই একটা অনুভূতিতে আচ্ছন্ন ছিলাম কয়েকদিন। ‘দেবী’ পড়ে ছমছম করেছিল কলেজপড়ুয়া তখনকার আমার সেইরাতটা। তিনিই কিভাবে টিভি নাটক- উপন্যাসের মান নিচে নামিয়ে এনেছেন! হিমুর বই পড়ে একদিন শহরের রাস্তায় ময়ূরাক্ষী নদীটা খুঁজতে যেতো কোন কিশোর, হাতে পাঁচটি নীলপদ্ম নিয়ে রূপালী রাত্রিতে রূপার বারান্দার সামনে হেঁটে যেতো কোন প্রেমিক, সেই হিমুর শেষদিককার বইগুলো দ্বিতীয়বার উল্টাতে পারিনা। 'এইসব দিনরাত্রি'র টুনির মৃত্যুতে শোকাহত দর্শক মিছিল করেছিল একদিন, শেষদিককার নাটকগুলোতে অতিরিক্ত ভাঁড়ামি দেখে বিমর্ষ হতাম।
জনপ্রিয়তার পিচ্ছিল পথ আর বিত্তবৈভব হয়তো তাঁকে করে দিয়েছিল বহুদূরের মানুষ, আমাদের অচেনা কেউ। শেষভাগে এসে কেবল বাণিজ্যিক স্বার্থেই বইপ্রসব করে গিয়েছিলেন। তবে এককালে যেমন 'বঙ্গদেশে রবিবাবুকে তুচ্ছজ্ঞান না করিলে বিজ্ঞ হওয়া যায় না' কথাটি প্রচলিত ছিল, একালে একশ্রেণীর সমালোচক হুমায়ূনকে নাকচ করে দিতে চাইতেন সস্তা লেখক বলে, যার লেখায় কিনা কোন গভীর জীবনবোধ নেই ইত্যাদি বলে। ডঃ আনিসুজ্জামান একবার এক গল্প বলেছিলেন। হুমায়ূন আহমেদ একবার বাংলা সাহিত্যের এক অধ্যাপককে একটা গল্প পড়তে দেন তাঁর মতামত জানার জন্যে। অধ্যাপক স্বীকার করেন, গল্পটা মন্দ নয়। তবে, তাঁর মতে, এতে গভীরতা কম। পাণ্ডুলিপিটা পকেটে ভরতে ভরতে হুমায়ূন আহমেদ তাকে বলেছিলেন, গল্পটা মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আমি চরিত্রের নাম পালটে কপি করে দিয়েছি। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখায় যখন গভীরতার অভাব, তখন আমার লেখা অগভীর হলে আমার দুঃখ নেই।’
অথচ, ঈদের রাতগুলোতে তাঁর নাটক না দেখলে তখন ঈদের আনন্দ পরিপূর্ণতা পেতোনা; ঈদসংখ্যাতেও তাঁর লেখা থাকতেই হবে। আবার, তাঁকে একনজর দেখতে, একটা অটোগ্রাফ নিতে বইমেলার স্টলে হাজার পাঠক ভিড় জমাতো।
হূমায়ুনের লেখায় কেন জানি পুরোপুরি খারাপ কোন চরিত্র নাই; দুর্ধর্ষ খুনীও হঠাৎ কোন এক সময় মানবিক আচরণ করে ফেলতো। রাস্তায় কোন ছিনতাইকারী-চোর পেলে আমরা হাতসুখ করে নিই পিটিয়ে,অথচ ‘নিমফুল’-র চোরের জন্যে আমাদের মন আর্দ্র হয়ে উঠে। তাঁর প্রিয় লেখক জন স্টেইনবেকের মতো তিনিও মানুষের ত্রুটিগুলো এঁকেছেন মমতার তুলি দিয়ে।
রাজনৈতিক ঝাঁঝ তাঁর লেখায় প্রায় নেই বললেই চলে; আশির দশকে যখন বাংলাদেশের রাজনীতি ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ, উত্তাল, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসেই লিখে যাচ্ছিলেন মধ্যবিত্ত পরিবারের দিনলিপি, অথচ সেই টানাপোড়েনের পরিবারে সেসময়কার রাজনীতির উত্তাপ টের পাওয়া যায়না। শেষদিকে এসে এইবিষয় নিয়ে ‘জোছনা-জননীর গল্প’, ‘মধ্যাহ্ন’, ‘দেয়াল’ লিখতে চেয়েছেন; ততোটা সফল হননি।
আর যে কথা বললেই নয়, হুমায়ূন নিজের প্রতি সুবিচার করেননি তাঁর ছোটগল্পে; বাছাই করে নিলে তাঁর দশ-পনেরোটা জাদুকরী ছোটগল্প বিশ্বসাহিত্যেই স্থান নিবে অনায়াসেই। রবিবুড়োর ‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’ এর আদর্শ উদাহরণে, সহজিয়া ভাষায় গল্পের মধ্যে মিশিয়ে দিতে পারতেন পাঠকদের। সাদা গাড়ি, বকপাখি শিকার, একটি নীল বোতাম এর দৈনন্দিনকার খুব সাধারণ কিছু কাহিনী অসাধারণ লেখনীগুণেই চিরস্থায়ী ছাপ ফেলে দিয়েছে আমাদের মনে।
তিনি বলতে শিখিয়েছিলেন-- 'তুই রাজাকার'; বিলিয়ে দিয়েছিলেন 'তোমাদের জন্য ভালবাসা'। 'কবি'-তে আতাহার-নীতুর ভালোবাসা, অয়োময়ের ছোট মির্জা কিংবা হানিফের খুকখুক কাশি,'আজ রবিবার’ নাটকে আনিসের ''তিতলী ভাইয়া,কঙ্কা ভাইয়া'' ডাক এখনো কানে আসে।
অল্প বেতনের একটা চাকরি পাবার আনন্দ, হঠাৎ একদিন বাসার সবাইকে চমকে দিয়ে একটা বড় মাছ নিয়ে ঘরে ফেরার মধ্যবিত্ত আনন্দটুকু অনুভব করবার সামর্থ্য যুগিয়েছেন তিনি পাঠককে।
পাঠককে আকৃষ্ট করার ভয়াবহ ক্ষমতা খুব বেশি লেখকের থাকে না। হুমায়ূন আহমেদের তা ছিলো। নিজেদেরই বারেবারে খুঁজে পাই চরিত্রগুলোতে! ‘সেদিন চৈত্রমাস’-র শফিক, ‘কৃষ্ণপক্ষ’-র মুহিব, ‘মেঘ বলেছে যাবো যাবো’-র হাসান, 'অপেক্ষা' গল্পের ইমন কিংবা ‘চৈত্রের দ্বিতীয় দিবস’-র ফরহাদ, ‘কবি’-র আতাহারেরা তো আমাদেরই বন্ধু, নাম হয়তোবা ভিন্ন। জরী কিংবা মীরার অভিমান, নীতু-চিত্রা-মীরা-পারুল-জরী-মৃন্ময়ী-নবনীর না বলা ভালোবাসার দুঃখটা থেকে যায় আজও। চাঁদের আলোয় কয়েকজন যুবক হঠাৎ বেপরোয়া হয়ে উঠে। বোতল ভূতের দল কিংবা এলেবেলে সব ভবঘুরে বহুব্রীহি রূপে ঘুরে বেড়াবে আমাদের আশেপাশে। একজন পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা বুঝে যায়- ‘একটি স্বাধীনতার কাছে এই ক্ষতি খুব সামান্য।’ শুভ্রেরা জেনে যাবে জীবনের জটিলতা। রুপারা জেনে যাবে হিমুরা সত্যিই কখনও কারো হাত ধরেনা।
গৃহত্যাগী জোছনার জন্য কেউ অপেক্ষা করে, যে জোছনা দেখলে সমস্ত দরজা খুলে ঘরের মধ্যেই ঢুকে পড়বে বিস্তৃত প্রান্তর। আকাশে একশো ফানুস ওড়ানোর আজন্ম সলজ্জ সাধ নিয়ে ঘুরে কেউবা।
যে মানুষটা খামখেয়ালী হিমু হতে চায় খালি পায়ে, সে যুক্তির সৈন্যসামন্ত সাজিয়ে মিসির আলীও হতে চায়। এই অদ্ভূত বৈপরীত্য তৈরি করা তাঁর পক্ষেই সম্ভব ছিল।
চার দশক ধরে বাঙালি মধ্যবিত্ত পাঠকদের একই দক্ষতায় হাসিয়েছেন তিনি; কাঁদিয়েছেন তিনি; হয়তোবা তেমন করে ভাবাননি...
কিন্তু সাধারণ মানুষের প্রিয়তম লেখক হুমায়ূন। এটাই তা বড় গুণ। এরকম ভাবে আর কেউ পারে নি।
শেষদিকে এসে হয়ত আগের মত ক্ষুরধার ছিল না লেখায়, পারিবারিক জীবন-ও টালমাটাল হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু আর কে পারবে এত সহজিয়া ভাষায় আমাদের সবার কথা বলতে? তাঁর কাছে অনেক ঋণ আমার, আমাদের। কত দুপুর,রাত কেটে গেছে তাঁর বই হাতে নিয়ে...
সিনেমা বানিয়েছেন আমাদের জন্য। গান লিখেছেন। সায়েন্স ফিকশন লিখেছেন। ম্যাজিকের প্রতি ঝোঁক ছিল, ছবি আঁকার নেশা ছিল।
এতো কিছু এক নিমিষে কিভাবে হারিয়ে যায় !!
আসলেই কি হারায়? হৃদয়ের নরম ঘরে যাদের স্থান,তারা কি কখনো হারায়?
বলেছিলেন - “চাঁদনী পসর রাতে যেন আমার মরণ হয়।” আপনি মারা গেলেন, দূরদেশের এক হাসপাতালের অন্ধকার কেবিনে... বলেছিলেন, '' বেঁচে থাকার আনন্দ আলাদা। শুধুমাত্র সেই আনন্দের জন্যই দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে হয়। '' পারলেন না আপনি।
কে ভেবেছিল, আপনার এক নাটকের মাস্তান বাকের ভাইয়ের মুক্তির জন্য মিছিল বের করবে সবাই। কে আপনার মত মধ্যবিত্তের টানা-পোড়েন নিয়ে লিখবে 'নন্দিত নরকে', 'শঙ্খনীল কারাগার' ? কে নিয়ে যাবে 'দারুচিনি দ্বীপ'-এ? ‘আগুনের পরশমণি’-র বদির জন্য মনটা উচাটন করে আজও। 'কোথাও কেউ নেই' এর শেষ দৃশ্যে মুনা-কে দেখে নিঃসঙ্গতার সংজ্ঞা জেনেছিলাম একদিন।
আপনি বেঁচে থাকবেন শুভ্রের চশমায়, হিমুর হলুদ পাঞ্জাবীতে, বাকের ভাইয়ের সানগ্লাসে, মিসির আলীর যুক্তিতে, নীল বোতামে, তোমাদের এই নগরে, গৌরিপুর জংশনে, আগুন গরম ঘি ভাতের স্বাদে, তেতুল বনের জোছনায়, সূর্যের দিনে,শ্যামল ছায়ায়, বৃষ্টিবিলাসে, আমাদের ভালোবাসায়, মুগ্ধতায়, আনন্দ-বেদনার কাব্যে, আমাদের গোপন হাহাকারে, আপন আঁধারে, এই নন্দিত নরকে...
জোছনার ফুলটা কি আপনি ধরতে পেরেছিলেন কোনদিন? এই পৃথিবীর কাছে এর চেয়ে যে বেশি কিছু চাইবার ছিল না আপনার...
শ্রাবণ মেঘের দিনটা সেদিন বহু কষ্টে ভরিয়ে দিয়েছিলেন...
না ফেরার দেশে,অচিনপুরে,অনন্ত অম্বরে, ভাল থাকুন,প্রিয় হুমায়ুন আহমেদ...
আর, আমার কৈশোরের হুমায়ূন, আমার খুব কাছেই থাকবেন, সারাজীবন।
-প্রিয়ম
মন্তব্য
তোমাকে নামে একটা বইছিল, ৩ বোনের জীবন নিয়ে। সেটা পড়ে খুব বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হয়েছিলাম। আমার মতে সেটা হুমায়ূন আহমেদের অন্যতম সেরা লেখা, কিন্তু ঐ বইটার উল্লেখ খুব কম দেখি আলোচনায়।
facebook
নীলু, বিলু আর সীতারা নামের তিন বোন। চমৎকার একটা বই। যতবার পড়ি ভাল লাগে। আসলেই এই বইটা তেমন আলোচনায় আসে নি কখনও।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
তারেক ভাই,বইটার নাম 'তোমাকে'
'সূর্যের দিন' আশ্চর্য এক কিশোর উপন্যাস! অথচ এই বইটার নামও আমি কাউকে বলতে শুনি না। অনলাইনে পাওয়া অজস্র 'বেআইনি' পিডিএফ বইয়ের ভীড়েও এই বইটা নেই।
একদম মিলে গেল
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
কেন যেন মনে হয়েছিল, আপনারই লিখা
হুমায়ূন আহমেদের শিশুসাহিত্য একেবারেই আলোচনার বাইরে থাকে কেন কে জানে! মনে না রাখার মত তার একটি শিশুতোষ গল্পও আমি মনে করতে পারি না
নীল হাতি আর বোতল ভূতের কথা অল্প করে বললাম!
তারেক অনু, আপনি কি "আসমানীরা ৩ বোন" এর কথা বলতে চাইছিলেন ?
-মুকুল
লেখাটা চমৎকার লাগলো সব মিলিয়ে
শুকরিয়া, উদাস দাদা!
আমি যা লিখতে যেয়ে বারবার আটকে গেছি আপনি সে সবের কিছুই বাদ দেন নি। চমৎকার করে লিখলেন। খুব ভাল লেগেছে পড়তে। সত্যি কথা আমি জানি না কেন হুমায়ূন আহমেদ মারা গেছে এই কথাটা আমি ভাবতে পারি না। অনেক অনেক বছর আমি হুমায়ূন আহমেদের কোন লেখা পড়ি নি। কিন্তু গত বছর আমার এক ভাই যখন হঠাৎ করে টেক্সট করলো চলে যাবার কথা জানিয়ে। আমার মনে হয়েছিল আমার অতি প্রিয় কেউ আমার কাছ থেকে চলে গেলো হঠাৎ। আমি অঝরে কেঁদেছিলাম। আমি বেশ কিছুদিন মেনে নিতেই পারছিলাম না তাঁর চলে যাওয়া। কত গভীর ছাপ রেখে গেছে আমার মনে সে আমিই জানি! কত কিছু যে বলা যায় এই মানুষটাকে নিয়ে!
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
তিনি ছিলেন জানি, কিন্তু এতোটা জুড়ে ছিলেন বুঝতে পারিনি চলে যাবার আগে...
লিখাটা অনেক ভালো লাগলো ।
যদি আমি লিখতাম হয়তো এভাবেই লিখতাম।
ধন্যবাদ...
ভালো লিখেছেন প্রিয়ম।
---------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
অনেকের মনের কথাগুলোই খুব সুন্দর করে গুছিয়ে বলে দিয়েছেন প্রিয়ম। ভালো থাকবেন।
আপনি অনেক দারুন করে লিখেছেন
পড়াটা যে আনন্দ দায়ক জিনিস তার বই পড়ে প্রথম বুঝেছিলাম , আপনাকে ধন্যবাদ
প্রিয়ম,
আপনার লেখাটা পড়ে বেশ লাগলো। আমিও হুমায়ুনের অভিমানী পাঠকদের দলে, যে কিনা অনেক অ-নে-ক বছর তাঁর লেখা কোন বই পড়িনি। কিন্তু যেদিন চলে গেলেন, আমিও কেঁদেছিলাম।
সুন্দর লেখাটার জন্য ধন্যবাদ।
*****************************************************
Everyone thinks of changing the world,
but no one thinks of changing thyself.
*****************************************************
ঐ যে বলললাম , ''আমার কৈশোরের হুমায়ূন, আমার খুব কাছেই থাকবেন, সারাজীবন''
এজন্যই হয়তো ঐ অভিমান, আমাদের প্রিয় মানুষ ছিলেন বলে।
চমৎকার লাগল লেখাটা পড়ে।
নতুন মন্তব্য করুন