তুমি কি কেবলি ছবি?

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৬/০৯/২০১৩ - ৬:৫৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছোটবেলায় শীতল যুদ্ধের সময় দেখতাম বামপন্থীদের একটি বৈশ্বিক অবস্থান ছিল। নিকারাগুয়ার সান্দানিস্তা সরকারের সাথে কন্ট্রা বিদ্রোহীদের সংঘাতে কিংবা পেরুর পিনোচে বা ফিলিপাইনের মারকোসের বিরুদ্ধে গনঅভ্যুত্থানে এদেশের বামপন্থীরা একটি পক্ষ নিতেন। ভিয়েতনামে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঢাকার রাস্তায় প্রতিবাদের সময় পুলিশের গুলিতে দু’জন ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী নিহত হবার ঘটনা সবার জানা। কালের বিবর্তনে এখন বামপন্থীদের কথা আর কেউ শোনে না। রামপাল বা ফুলবাড়ীর আন্দোলন আমরা সমর্থন করলেও সযতনে এইসব আন্দোলনের underlying philosophy-কে এড়িয়ে যাই। Global neo-liberalism-এর বিষয়ে আমাদের কোন অবস্থান থাকে না, বক্তব্য থাকে না।

কিন্তু, ডানপন্থী চক্র ক্রমেই বিশ্বে নিজেদের সংগঠিত করে চলেছে। মৌলবাদী - সে যে ধর্মের-ই হোক যে দেশের-ই হোক ক্রমেই শক্তি সঞ্চয় করেছে। বুশ-সাদ্দাম-লাদেনের তৈরী করা প্রতিক্রিয়াশীল বিশ্বে মোদি আর মোরসিদের আজ জয়জয়কার। এরই মধ্যে পাশ্চাত্যের global capitalism-এর বিপক্ষে সালাফি/ওয়াহাবি ভাবধারার global Islamism-এর একটি বিকাশ ঘটেছে। যদিও সিরিয়া আর লিবিয়াতে এই ভাবধারার অনুসারীদের যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের স্বার্থকেই সুরক্ষা করতে দেখা গেছে, যদিও আফগান মুজাহিদ এবং পরবর্তী সময়ের তালেবানদের লালন পালনে তথাকথিত পাশ্চাত্য ঘরানার আতিথেয়তার কোন কমতি ঘটেনি, যদিও পাকিস্তানের বিষয়ে এত কিছুর পরেও পাশ্চাত্য কেমন যেন একটা প্রাক্তন প্রেমিকসুলভ সলজ্জ সহানুভূতি নিয়ে থাকে তারপরেও বিশ্বের এবং বাংলাদেশের অনেকেই মনে করেন যে দুই পক্ষের এই বিরোধ একালের জিহাদ, একালের ক্রুসেড।

আল কায়েদার হিংস্র সন্ত্রাসী রূপ থেকে বেরিয়ে এসে global Islamism এখন ভর করেছে অপেক্ষাকৃত নিয়মতান্ত্রিক মুসলিম ব্রাদারহুডের উপর। এরা অনেক আগে থেকেই পারস্য, উত্তর আফ্রিকা আর সাবেক অঠোমান সাম্রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। এদের রাজনৈতিক বিস্তার যে আধুনিক রাষ্ট্র বিনির্মানে অন্তরায় হতে পারে সেটা বিগত শতাব্দীর এই অঞ্চলের দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়করা (কামাল আতাতুর্ক, নাসের, আনোয়ার সাদাত) উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তাই তাঁরা কেউ এই ধর্মোন্মাদ রাজনৈতিক শক্তিকে প্রস্রয় দেন নি।

ব্রাদারহুডের হালের রাজনৈতিক উত্থান কাহিনী আমরা সবাই জানি। এর সাথে বাংলাদেশের জামাতের সখ্যতা নতুন কিছু নয়। ব্রাদারহুডের উত্থানের পেছনে কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রের appeasement নীতি বা সৌদি আরবের ভূ-রাজনৈতিক এবং সুন্নিভিত্তিক সালাফি/ওয়াহাবি স্বার্থ নিহিত রয়েছে বলে মনে করেন। মজার বেপার হল ২০১১/১২-র দিকে ওবামা ব্রাদারহুডকে উদার-গনতান্ত্রিক দল বলে অভিহিত করেছিলেন, আর পারস্যভিত্তিক আল-জাজিরার ব্রাদারহুড প্রেম দেখে বুঝে নিতে কষ্ট হয় না যে লোহিত সাগরের উভয় পাড়েই ক্ষমতার বলয়ের কাছের মানুষদের সাথে দলটির ভালই দহরম মহরম রয়েছে। মজার বেপার হল এই প্রত্যেকটি বিষয়ে ব্রাদারহুডের সাথে জামাতের মিল খুঁজে পাওয়া যায়। জামাতের প্রতি পশ্চিমের এবং মধ্যপ্রাচ্যের প্রচ্ছন্ন এবং সরাসরি সমর্থন নতুন নয়। বাংলাদেশের মার্কিন রাষ্ট্রদুত বা তাদের সহকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে জামাতের বোঝাপড়া ভালই বজায় থাকে। মধ্যপ্রাচ্যের শেখরা জামাতকে তাদের উপপত্নীর ঘরে জন্ম নেয়া সন্তানের মতই ব্যাবহার করে। আর হালে তুরকী সরকার সবার সামনে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রমান করে দিল যে জামাত তাদের half brother।

জামাতের সাথে মুসলিম ব্রাদারহুডের organizational & philosophical মিলের সাথে সাথে operational মিলও খুঁজে পাওয়া যায়। দুই দলেই একদিকে যেমন শিক্ষিত সুশীল স্তাবক থাকে, অন্যদিকে তেমনি থাকে একটি কপট, ধুরন্ধর আর মিথ্যাশ্রয়ী ground level activists যারা অশিক্ষিত এবং অর্ধশিক্ষিত মানুষদের টার্গেট করে propaganda চালায়। অনেকটা Toyta কোম্পানির মতঃ বিত্তবানদের জন্য আছে Lexus আর মধ্যবিত্তদের জন্য Yaris. একটির brand image অন্যটিকে ছুঁবে না। ব্রাদারহুডের একদিকে আছে পাশ্চাত্য শিক্ষিত তুখোড় ইংরেজি জানা dedicated PR এবং বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায় যারা BBC, CNN, Al-Jazeera তে দিন রাত কথা বলে যাচ্ছে সুশীল ভাষায়, অন্যদিকে আছে uncouth আম জনতার জন্য বিশেষভাবে তৈরি propaganda machine. এধরনের একটি গোষ্ঠী ইদানিং জর্ডানে মোরসিকে চাঁদে দেখার কাহিনী প্রচার করেছে। ছবিটির লিঙ্ক নীচে দেয়া হল। Google Translation থেকে বোঝা যায় “যে মোরসিকে NASA-র তোলা ছবি থেকে চাঁদে দেখা গেছে। কিন্তু ইসলামের বিরুদ্ধে চক্রান্তকারীরা এই ছবি দ্রুতই মুছে ফেলে” এভাবে এই ছবিটি social networking site-এর মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আমার মিশরীয় বন্ধুর কাছে থেকে আরো জানতে পারলাম ব্রাদারহুডের মিথ্যাচারের কাহিনী যা আমাদের জামাত/হেফাজতের মিথ্যাচারের সাথে সংগতিপূর্ণ। বাংলাদেশী পাঠকদের এর পরেও বলে দেবার প্রয়োজন নেই যে সাঈদি, মোরসি আর তাদের সমর্থকদের রাজনৈতিক সংস্কৃতির মিল কতটা প্রকট।

মজার বেপার হল জামাতের propaganda machine-এও দুই ধরনের positioning strategy বিদ্যমান। জামাত একদিকে David Bergman, আসিফ নজরুল বা ফরহাদ মাজহারদের বক্তব্য ব্যাবহার করে (তারা নিজেরা জামাতপন্থী কি না সেই বিতর্কে না-ই গেলাম, পাঠকদের উপর ছেড়ে দিলাম সেই সিদ্ধান্ত)-এরা হল জামাতের Lexus ব্রান্ড – টার্গেট মার্কেট হল শহুরে শিক্ষিত সম্প্রদায়, দেশি-বিদেশি মানবাধিকার ব্যাবসায়ী আর তাদের স্নেহধন্য প্রচার মাধ্যম। অন্যদিকে গ্রাম পর্যায়ে তারা ব্যাবহার করে অর্ধশিক্ষিত বা অশিক্ষি মসজিদের ইমাম/ধর্ম ব্যাবসায়ী। Toyota-র মতই এই দুই brand সমান্তরালে থাকে – একীভূত হয় না। সামাজিক মাধ্যমেও দেখে যায় একদিকে দেশি/প্রবাসী শিক্ষিত লেবাসধারী, অন্যদিকে বাঁশের কেল্লা and co.

যে কথা দিয়ে শুরু করেছিলাম – হ্যাঁ বৈশ্বিক সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন আজ আর নেই। আছে কেবল global capitalism যা কি না Tom and Jerry খেলা খেলছে তথাকথিত global Islamism-এর সাথে। এই খেলা থেকে সচেতন বিবেক বুদ্ধিমান মানুষ বিনোদন পায়, আর নির্বোধরা রোমাঞ্চিত হয়, বিপ্লবের স্বপ্ন দেখে।

Ref: http://www.shorouknews.com/news/view.aspx?cdate=25092013&id=9c7953d2-e08a-42e0-a8ea-28a9c0683ce6

ছবি: 
24/08/2007 - 2:03am

মন্তব্য

মেঘলা মানুষ এর ছবি

চাঁদের বুড়ির দিনকাল এখন বড়ই ব্যস্ত যাচ্ছে, আজ এর ছবি, কাল ওর ছবি এসব টাঙাতে গিয়ে আসল কাজ -চরকা কাটার কোন সময়ই সে পাচ্ছে না। আর, এদিক সেদিকে খালি লেক্সাসই দেখতে পাই আজকাল মন খারাপ

তারেক অণু এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

চাঁদের বুকে মোরসির ছবি দেখে ভাষাহীন হয়ে গেলাম অ্যাঁ । কি যে বলব তাই বুঝতে পারছি না। জামাতের সাথে মুসলিম ব্রাদারহুডের তো দেখি একেবারে আত্মিক সম্পর্ক
ইসরাত

mamun এর ছবি

শেষ প্যারায় যা লিখেছেন, সঠিক। দুঃখ এই, যুগে যুগে তরুন বিপ্লবীরা শুধু ব্যবহৃতই হতে থাকলো।
স্বাধীনতার পর সংবিধানে সমাজতন্ত্র থাকার পরও অনেক সমাজতান্ত্রীক জঙ্গী দলের জন্ম হল , তাদের নেপথ্য পৃষ্ঠপোষক ছিল পশ্চিমা পূঁজিবাদ-তরুন বিপ্লবীরা জানতেও পারল না। তরুনরা জীবন দিল, দেশ অস্হিশীল/গরীব থাকল; জিতল সাম্রাজ্যবাদ।
বিশ্বের দেশে আজ যে ইসলামী বিপ্লবের যোশ, তার পেছনেও আছে সাম্রাজ্যবাদ, জিহাদী তরুনরা জানেও না, বুঝেও না। এরা জীবন দেবে, বিনিময়ে নিজ নিজ দেশকে অস্হিশীল/গরীব বানাবে।
বিশ্বব্যাপী সমাজতান্ত্রীকদের আবারও সংগঠিত করার কাজে হাত দিয়েছে সাম্রাজ্যবাদ। ইসলামী কার্ডের খেলা শেষ হলে এদের আবারও ব্যবহার করা হবে। যুগে যুগে সাম্রাজ্যবাদই জিতে যাবে?!

অতিথি লেখক এর ছবি

ইটা রাইখ্যা গেলাম...

মাসুদ সজীব

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

লেখকের নাম কই?

ইংরেজী যেসব শব্দের সহজবোধ্য বা প্রচলিত বাংলা আছে সেগুলো খামাখা ইংরেজীতে লেখার দরকার কী?

পেরুর পিনোচে

- পেরু নয়, চিলে হবে।

এদের রাজনৈতিক বিস্তার যে আধুনিক রাষ্ট্র বিনির্মানে অন্তরায় হতে পারে সেটা বিগত শতাব্দীর এই অঞ্চলের দেশপ্রেমিক রাষ্ট্রনায়করা (কামাল আতাতুর্ক, নাসের, আনোয়ার সাদাত) উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন।

- এই তিনটা নাম এক ব্রাকেটে কী করে বসতে পারে? এই তিন জনের মধ্যে পার্থক্য কী কী এবং মৌলবাদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান নিয়ে লম্বা, বিরক্তিকর আলোচনা করা যায়। তবে তার দরকার দেখছি না। এগুলো ইতিহাসে আছে, যে কেউ পড়ে নিতে পারেন।

জামায়াত দেশদ্রোহী, দেশের স্বাধীনতার বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়া যুদ্ধাপরাধীদের একটি দল। পক্ষান্তরে ইখওয়ানুল মুসলেমীনের বিরুদ্ধে অমন কোন অভিযোগ নেই। এই পার্থক্যটা কি আপনার চোখ এড়িয়ে গেল?

বিশ্বের সবচে' বড় দুটি ব্যবসা - যুদ্ধ এবং যুদ্ধাস্ত্র। এই ব্যবসাগুলো টিকিয়ে রাখার জন্য অব্যাহত যুদ্ধ জিইয়ে রাখা ছাড়া উপায় নেই। গৃহযুদ্ধ বাঁধাতে পারলে আরো ভালো। তাতে বাইরে থেকে মাতব্বরী করা যায়, অস্ত্র বেচা যায়, যুদ্ধ ও কৌশলগত কনসালটেন্টদের বাণিজ্য হয়, আরো হাজারোটা ব্যবসা করা যায় কিন্তু নিজের গায়ে আঁচ লাগে না।

গত শতাব্দীর ষাটের দশকের আরব-ইসরাইল যুদ্ধ, সত্তর-আশির দশকের ইরান-ইরাক যুদ্ধ, নব্বইয়ের দশকের ইরাক-কুয়েত যুদ্ধ আর আফগানিস্থানের যুদ্ধ, এই শতাব্দীর প্রথম দশকে ইরাক, আফগানিস্থানের যুদ্ধ, দ্বিতীয় দশকে উত্তর আফ্রিকার আটলান্টিকের তীর থেকে পাকিস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত যুদ্ধসমূহ সবগুলোতে যুদ্ধব্যবসায়ীরা উভয় (বা সকল) পক্ষকে মদত দিয়ে যুদ্ধ লাগিয়েছে, টিকিয়ে রেখেছে। এই সরল সত্যটা সবাই জানে। তারপরও যারা আফিম গেলে আর নেশাগ্রস্থ হয়ে নিজেদের বারোটা বাজায় তাদের জন্য করুণা ছাড়া আর কিছু নেই।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাইদ এর ছবি

জামায়াত দেশদ্রোহী, দেশের স্বাধীনতার বিরোধী, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়া যুদ্ধাপরাধীদের একটি দল।

চলুক
এইটাই শেষ কথা।

উচ্চারণটি চিলি না চিলে হবে???

অতিথি লেখক এর ছবি

মুরসীকেও তাহলে চাঁদে দেখা গেছে? ইয়া আল্লাহ, আমাকে কবে দেখা যাবে!

-নিয়াজ

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

ছবি দ্যান... এক্ষণ দেখায় দেই শয়তানী হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সুবোধ অবোধ  এর ছবি

আমারে এক ছুডু ভাই কথা দিছিল যে আমি চাঁদে বইসা মিষ্টি আলু পোড়া দিয়া খাইতেছি এইরকম একটা ফুডু বানায় দিব!!!! কেউ কথা রাখে না! ! মন খারাপ

অতিথি লেখক এর ছবি

জামাত আর ব্রাদারহুড়কে আপনি ঠিক কিসের ভিত্তিতে এক করলেন সেটা ঠিক বুঝলাম না।শুধু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে বলে?ধর্ম নিয়ে পৃথিবীতে অনেক দেশে রাজনীতি দল আছে কিন্তু তাই বলে তাদের সকলের আদর্শ এক নয়।জামাত বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র হোক চায়নি,তৎকালীন জামাত নিজ ধর্মের মানুষ সহ যেভাবে আপন দেশের মানুষকে যেভাবে হত্যা করেছে সেটা কি আপনি ভুলে গেছেনে?এখনো তারা যেভাবে রাজনীতি করে সেটা কি ব্রাদারহুড়ের সাথে যায়?ব্রাদারহুড় ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে এটা ছাড়া জামাতের সাথে আর কি কি মিল আছে?ইসলামিক দলগুলোকে আরব রাষ্ট্রগুলো পৃষ্ঠপোষক করে আসছে বহুকাল থেকে এটা নতুন নয়।কিন্তু মূল বিষয় সেটা নয়,কারো সমর্থন পাওয়া এক বিষয় আর রাজনৈতিক আদর্শ আরেক বিষয়।জামাতের মতো মিথ্যাচার(বাশের কেল্লা),অপপ্রচার(দিগন্ত,ইসলামিক),ভন্ডামো(মেশিন ম্যান),কি বাদ্রারহুড় করেছে?তাদের দলে কি কেউ আছে যারা নিজ দেশের স্বাধীনতার বিরোধীতা শুধু করেনি,হত্যায় ধর্ষনে লুটপাটে মেতেছিলো?

আর আপনার অকারনে বাংলার মাঝে ইংরেজি শব্দ পড়তে বেশ বিরক্ত লেগেছে।প্রচলিত শব্দগুলোর বাংলা ব্যবহার করা যেত।

মাসুদ সজীব

হিমু এর ছবি

জামাত আর ব্রাদারহুডকে ঠিক কীসের ভিত্তিতে আপনি পৃথক করছেন?

অতিথি লেখক এর ছবি

৭১ কে দিয়ে, জামাত দেশোদ্রোহী,যুদ্ধাপরাধী একটা দল।যারা স্বাধীনতার বিরোধীতা করেছে শুধু এমন না তারা ৭১ এ সব বর্বতার সাথে জড়িত।বাদ্রারহুড় এর বিপক্ষে দেশোদ্রোহী,স্বাধীনতার বিরোধী এমন কোন অভিযোগ আছে কি?

মাসুদ সজীব

হিমু এর ছবি

তাহলে পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামী আর বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর মধ্যেও তো বিরাট তফাত থাকার কথা। তাই না?

অতিথি লেখক এর ছবি

পাপিস্তানী জামায়াত কি বর্তমান পাপিস্তানের স্বাধীনতার সাথে বেঈমানী করেছে , দেশের মানুষ গনহত্যায় মেতেছে? যদি তাই করে থাকে তাহলে কোন তফাত নেই। কিন্তু পাপিস্তানি জামায়াত বর্তমান পাপিস্তান নামক রাষ্ট্রের সাথে এমনটা করেনি। তাই দুই দেশ ভেদে দুই দেশের মানুষের কাছে দুই জামায়তের অবস্থান টা ভিন্ন। আমি আমার দেশের ক্ষেত্রে জামাতের কথা বলতে পারি, আমার দেশের মানুষের সাথে বেঈমানী করেছে বলে,হত্যা করেছে বলে আমি জামায়াত কে ঘৃনা করি। এরপর আসবে তাদের মিথ্যাচার,গুজব,ধর্মকে ব্যবহার । ৭১ এর কৃর্তকলাপ এর জন্যে বাংলাদেশের বেশি ভাগ মানুষ জামায়াতকে ঘৃনা করে।৭১ টাই মূল ব্যবধান।

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

মুসলিম ব্রাদারহুড মিথ্যাচার করে না, তাদের প্রপাগান্ডা মেশিন নেই কে বলল আপনাদের?
নীচের লিংকগুলো আপনাদের কিছু ধারনা দিবে।
https://www.facebook.com/pages/Muslim-Brotherhood-Lies-Hate-Speech-in-English/348391815290575
http://ireport.cnn.com/docs/DOC-1012158
মুসলিম ব্রাদারহুডের জংগী কার্যক্রম নিয়ে সন্দেহ থাকলে নীচের লিংকগুলো দেখুনঃ
http://www.middle-east-online.com/english/?id=61020
http://midnightwatcher.wordpress.com/2013/08/27/egypt-muslim-brotherhood-supporters-behead-taxi-driver-in-alexandria-for-being-a-christian/
মুসলিম ব্রাদারহুডের সাম্প্রদায়িক চরিত্র নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। চার্চ পুড়াবার ঘটনা সবাই জানেন নিশ্চয়ই।
মোদি আর মোরসি আপনাদের কাছে ভিন্ন হতে পারে। আমরা যারা অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল রাজনীতিকে সমর্থন করি তাদের কাছে এরা দুজন-ই ধর্ম ব্যবসায়ী। দুজন-ই সুযোগ পেলেই সংখ্যালঘুদের উপর আক্রমণ করে বা করবে। দুজনেই প্রগতিমুখী সমাধিকারের বদলে ধর্মভিত্তিক বিভাজনে বিশ্বাসী।
এবার শেষ কথা কেন জামাত আর ব্রাদারহুড এক! মুসলিম ব্রাদেরহুড যুদ্ধাপরাধী নয়, তারা রাষ্ট্রদ্রোহী নয় – এগুলা falacious logic. তারা এগুলো নয় কারন তারা সেই অবস্থার সম্মখীন হয় নি। নাৎসি পার্টিও তো আপনাদের সংজ্ঞা থেকে রাষ্ট্রদ্রোহী নয়, বিজেপি তো যুদ্ধাপরাধ করে নি। তাহলে? যতদিন না আমরা জামাতকে আদর্শিক জায়গা থেকে প্রত্যাখান না করব ততদিন তারা ফিরে ফিরে আসবে; যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হলেও জামাতের পরিবর্তন হবে না; নতুন নেতৃত্ব যুদ্ধাপরাধের দায় থেকে বেরিয়ে এসে নতুনভাবে পুরানো কাজ চালাবে। দুই! নিচের লিংকগুলা দেখুন। অনেকেই মনে করেন জামাত আর ব্রাদারহুডের মাঝে ঐতিহাসিক এবং আদর্শিক সম্পর্ক রয়েছে।
http://www.themuslimtimes.org/2013/07/asia/the-connection-between-jamaat-e-islami-maududi-and-muslim-brotherhood-banna-ideology
Founded during British control in India, the JI moved its organisation after the Indian partition to the newly created state of Pakistan, initially setting up its organizational mass in West-Pakistan. The members who remained in India regrouped to form an independent organisation called Jamaat-e-Islami Hind. During the Bangladesh Liberation War, the JI opposed the independence of Bangladesh, but established itself there as an independent political party, the Bangladesh Jamaat-e-Islami after 1975. The JI maintains close ties with international Muslim groups such as the Muslim Brotherhood.
http://en.wikipedia.org/wiki/Jamaat-e-Islami_Pakistan
http://tribune.com.pk/story/409788/drawing-parallels-between-jamaat-e-islami-and-muslim-brotherhood/
http://www.pewforum.org/2010/09/15/muslim-networks-and-movements-in-western-europe-muslim-brotherhood-and-jamaat-i-islami/

আয়নামতি এর ছবি

ওটা মোরসির ফটুক! আমার তো মনে হচ্ছে নাসিরুদ্দীন শাহের চিন্তিত

অতিথি লেখক এর ছবি

ব্রাদারহুড়ের সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, জংঙ্গি কার্যক্রম এগুলো নিয়ে আপনার সাথে আমার কোন দ্বিমত নেই। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে অস্প্রদায়িক চেতনার চর্চা করা যায় না। আপনার সাথে একমত মোদি এবং মুরসির বিষয়ে। তারা ধর্ম ব্যবসায়ী, সুযোগ পেলে তারা ধর্ম বিভাজনে মেতে উঠবে এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু জামাতের এদের চেয়ে ও খারাপ আমার কাছে, আমি সেটাই বলতে চেয়েছি। তারা দেশদ্রোহি,স্বাধীনতা বিরোধী,গণহত্যাকারী, মানুষে মানুষে বিভাজন সৃষ্টিকারী, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং মিথ্যাচার ও গুজব ছড়ানো একটা দল। দেশদ্রোহিতা আর গণহত্যা, এই দুটো বিষয় জামায়াতের সাথে মূল পার্থক্য ব্রাদারহুড়ের। জামায়াত তাদের কৃতকর্মের জন্যে কখনো দু:খ প্রকাশ করেনি,অনুতপ্ত হয়নি।এখন তাদের পরবর্তী প্রজন্মও যদি এমনি দাম্ভিকতার সহিত বলে ৭১ এ কোন মুক্তিযুদ্ধ হয়নি,হয়েছে গৃহযুদ্ধ কিংবা ভারতের ষড়যন্ত্র তাহলে জামাতের প্রতি এই প্রচন্ড ঘৃনা কখনো যাবে না কারো। আদর্শের জন্যে বজর্ন আর প্রচন্ড ঘৃণা নিয়ে প্রত্যাখান দুটোর মাঝে কিছুটা পার্থক্য আছে বোধহয়। ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে এমন একটা দলের কাছে আমি কোন আদর্শ, মানবিকতা আশা করিনা। তাদের কোন পরিবর্তন ও হবে না কোন দিন। ধর্মকে যারা মানুষে মানুষে ব্যবধান গড়ে তুলে তারা কখনো প্রগতিশীল নয়। আপনি যে আদর্শিক জায়গার কথা বলেছেন আমি সেটাতে একমত, কিন্তু শুধু মা্ত্র আদর্শিক জায়গা থেকে আমি জামায়াতকে প্রচন্ড ঘৃণা করিনা এর সাথে ৭১ ও আছে। দেশে অনেক ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতিক দল আছে, তারাও হয়তো জংঙ্গি রাজনীতিতে জড়িত কিন্তু তাদের প্রতি যে ঘৃনা আর জামায়াতের প্রতি যে ঘৃনা তা একনয়। সুযোগ পেলে করতো এটা একটা বিষয় আর করেছে এই দুটোর মাঝে অনেক পার্থক্য।এটা নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা তর্ক করা যায়। বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল, নাৎসি বাহিনীও তাই কিন্তু এরা কোনটাই দেশদ্রোহী নয়। জামায়াত তো ৭১ শুধু এক ধর্মের মানুষ হত্যা করেনি যে আপনি তাদেরকে শুধু সাম্প্রদায়িক দল বলবেন, তারা নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে।হিন্দু মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্ট্রান সবাইকে তারা হত্যায় মেতে ছিলো। এটা সাম্প্রদায়িকতা নয়, দেশদ্রোহিতা। বিজেপি সুযোগ পেলে দেশের সব হিন্দু মুসলিম মারবে,দেশের বিরোধীদের সাথে হাত মিলিয়ে দেশের সব মানুষকে হত্যা করবে এমনটা আমার মনে হয়না।আপনি বলতে পারেন এক ধর্মের মানুষ হত্যা কি ঘৃনিত কাজ নয়? অবশ্যই ঘৃনিত, কিন্তু এর সাথে যদি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হত্যায় নামেন, যে মাটিতে জন্ম নিয়েছে সেই মাটির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেন সেটা আরো অনেক বেশি ঘৃনিত। আমি সেই অবস্থান থেকে বলেছি জামায়াত আর ব্রাদারহুড় এক নয়। ধর্মের মূল কাজ হলো মানুষে মানুষে বিভেদ গড়ে তুলা, দেয়াল গড়ে তুলে দেয়া। সব ধর্মের ইতিহাসি তাই রক্তাত্ত, ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করলে সেই রক্তাত্ত সেই বিভেদ বাড়বেই। আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।ভালোথাকবেন।

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

মাসুদ সজীব, খুব ভালো লাগল আপনার মন্তব্য। ধন্যবাদ। আমাদের মাঝে খুব একটা মতানৈক্য নেই। আপনিও ভালো থাকবেন।
ও আগের বার বলা হয় নি। পেরুতে পিনোচেটা অনেকটা চায়না-তে হায়না গোছের ভুল হয়ে গেছে। ক্ষমাপ্রার্থী।
আর হ্যাঁ আমি মূল লেখক। অপ্রয়োজনীয় ইংরেজী ব্যবহার করার জন্যও মার্জনা চেয়ে নিচ্ছি। সবাইকে ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।