বিগ থ্রী বিষয়ে বিছিন্ন বিশ্লেষণ

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ২৬/০১/২০১৪ - ৮:২৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১।
অনেক দিন আগে এক বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম ভারতের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি আর ক্রিকেট মূল নিয়ন্ত্রক হচ্ছে আন্ডারওয়ার্ল্ডের মাফিয়ারা। তাদের মর্জিমাফিক তুমুল জনপ্রিয় আর অর্থের অবারিত এই দুই সাম্রাজ্যের গতিপ্রকৃতি নিয়ন্ত্রিত হয়।

২।
টি টুয়েন্টি ক্রিকেট রমরমা প্রসারের আগে মূলত ভারতীয় বোর্ডের অনাগ্রহের কারনেই এই ফরম্যাটের ক্রিকেট বিশ্বব্যাপী তেমন প্রচলিত হয়নি। বিসিসিআইয়ের আশঙ্কা ছিল টি টুয়েন্টি ব্যাপকভাবে প্রচলিত হলে স্পন্সররা ৫০ ওভারের ম্যাচ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে। পরবর্তীতে টিভি সত্ত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে আইসিএল নামক “বিদ্রোহী” টি টুয়েন্টি টুর্নামেন্ট নতুন ব্যাবসার আইডিয়া এনে দেয় বিসিসিআইয়ের কর্তাদের। আইসিএলকে কোণঠাসা করে বিশ্ব ক্রিকেটের ভিত নড়িয়ে দেয় ক্রিকেট- বলিউড –রাজনীতি আর চিয়ার গার্লদের এক অভাবনীয় খিচুড়ি যার পোশাকি নাম ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ বা সংক্ষেপে আইপিএল। কয়েক বছর জাতীয় দলে খেলে যা আয় করা সম্ভব তার চেয়ে অনেক অনেক বেশী টাকা পাওয়া যাবে আইপিএল নামক পরশ পাথরের এক মৌসুমের চুক্তিতে। এর ফলে শেন বন্ড, ক্রিস গেইল, লাসিথ মালিঙ্গার মত খেলোয়াড়রা জাতীয় দলকে পাশ কাটিয়ে আইপিএলকেই অগ্রাধিকার দিলে নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কার মত ক্রিকেট বোর্ড গুলো পড়ল এক মহা বিপাকে। মজার (আসলে বিরক্তির) ব্যাপার হচ্ছে আইপিএলের মত ভারতীয় বোর্ডের আবদারের প্রেক্ষিতে ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামে আইপিএলের জন্যও ফাঁকা সময় (উইন্ডো) রাখে আইসিসি।

টাকার গন্ধে সুনীল গাভাস্কার, রবি শাস্ত্রীর মত ক্রিকেট আইকনরাও টি টুয়েন্টির প্রশংসায় একেবারে পঞ্চমুখ। অবশ্য গাভাস্কার-শাস্ত্রীরা ভারতীয় বোর্ডের সাথে একটি বিশেষ চুক্তিতে যুক্ত যে তারা কক্ষনো বোর্ডের নীতিগত সিধান্ত আর পরিকল্পনার বিরুদ্ধে কিছু বলবে না।

৩।

বিশ্ব ক্রিকেটে ভারতীয় দল ভালো করা শুরু করেছে দশ বছরেরও কম সময়। এমনকি ১৯৮৩ সালে অপ্রতাশিতভাবে বিশকাপ চ্যাম্পিয়ান হবার পরও ভারত ছিল মাঝারি মানের একটি দল যারা মুলত দেশের মাটিতে ভাল খেলার যোগ্যতা রাখে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে যে ১৯৯৩ সালে শ্রীলঙ্কার সাথে একটি টেস্ট সিরিজ জয় করার পর দীর্ঘ সাত বছর ভারতকে অপেক্ষা করতে হয়েছে বিদেশের মাটিতে একটা টেস্ট সিরিজ জয় করবার জন্য।

অবশেষে সেই জয় আসে টেস্টের নবীনতম সদস্য বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, ২০০০ সালের নভেম্বরে। ২০০৩ সালের জুলায়ে প্রকাশিত রাঙ্কিংয়ে ভারতের আবস্থান ছিল ৮ নম্বরে। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপে তারা বারমুডা ছাড়া কোন দলের সাথে জিততে পারেনি। সাম্প্রতিক সময়ে রাঙ্কিংয়ে উন্নতি হলেও বিদেশের মাঠে ভারতের পারফম্যান্সে খুব বেশী উন্নতি হয়নি। তারপরও ভারত ক্রিকেটার মহীরুহ হয়ে উঠেছে কেবলমাত্র তাদের লোকসংখ্যার জন্য, ক্রিকেট বিক্রি করে পাওয়া টাকার জন্য। যে দেশে ১০০ কোটি মানুষ যে ক্রিকেটের প্রতি গভীর ভাবে আকৃষ্ট; সেখানে ক্রিকেটকে বিক্রি করার জন্য ক্রেতার অভাব হবার কথা না।

৪।
শচীন টেন্ডুলকারের অবসরের পর স্পনশরশিপ থেকে ভারতীয় দলের আয় যথেষ্ট পরিমাণ বেশী হয়নি এই উছিলায় এক নাক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিল বিসিসিআই।
ভারত তাদের “ন্যায্য” পাওনা আদায়ের দাবীতে নিলজ্জ এক প্রস্তাব এনেছে, সঙ্গী হিশাবে আছে বর্ণবাদী আর নাক উঁচু দুই দেশ অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ড। ভারতের দাবী সমুহের সারসংক্ষেপ নিম্নরূপ

১) আইসিসি-র আয় থেকে ভারতকে আরও বেশি ভাগ দিতে হবে।
২) আইসিসি প্রেসিডেন্ট পদের পাশাপাশি চেয়ারম্যানের (ভারতীয়) পদ তৈরি করতে হবে।
৩) তিন বছর অন্তর ভারতে কোনও আইসিসি টুর্নামেন্ট দিতে হবে।
৪) ভারত-অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডকে অনেক বেশি ক্ষমতা দিতে হবে বাকিদের তুলনায়।
(সুত্রঃ দৈনিক আনন্দাবাজার)

৫।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের এক সাম্প্রতিক সভায় ২০-৩ ভোটে ভারতের বিরুদ্ধে কোন অবস্থান না নেবার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আইসিসি সভায় ভারতের মূল প্রস্তাব পাশ না হলেও টু টীয়ার সিস্টেমের ফলে বাংলাদেশ আর বড় কোন দলের সাথে টেস্ট খেলার সুযোগ নাও পেতে পারে। কিন্তু বিসিবির সভাপতির ভাষায় “টাকা এখনকার চাইতে বেশী পাওয়া যাবে।“

ভারত গত ১৪ বছরে বাংলাদেশকে তাদের দেশে খেলতে আমন্ত্রন জানায়নি। এটা নিয়ে বাংলাদেশ সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও বিসিবি ভারতকে অতিথি হিসেবেই বেশী পছন্দ করে কারণ ভারতে গিয়ে খেলার চেয়ে ওরা বাংলাদেশে আসলেই আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যাবে।

বিসিবির আগের সভাপতি আইসিসি সভাপতি হবার জন্য পাকিস্তানের ভোটের আশায় জোর করে জাতীয় দলকে পাকিস্তান সফরে রাজি করাতে চেয়েছিলেন। এই সভাপতির চান আগে ভারতের সুনজর, আরও টাকা পাবার নিশ্চয়তা তারপর সময় সুযোগ পেলে কিছুটা ক্রিকেট হতেও পারে।

৬।

আমরা চাই বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট খেলা অব্যাহত রাখুক, সাম্প্রতিক কালে আমরা সব ধরণের ক্রিকেতেই ভালো খেলার প্রমাণ রাখছি। পঞ্চাশের দশকে টেস্ট খেলা শুরু করা ভারত কয়েক মাসের জন্য টেস্টে এক নম্বর হয়েছিল প্রায় ষাট বছর পর। বহু বছর রাজত্ব করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা গত দুই দশকের অস্ট্রেলিয়া কক্ষনো এই ধরণের উদ্ভট প্রস্তাব করেনি। অহংকারী ভারতের হাতে ক্রিকেটের পতন না দেখতে হলে এই হঠকারী প্রস্তাব বাতিল করাই একমাত্র উপায়।

-পিয়াল
আমার আগের লেখা : বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবেন কে?


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

গুছিয়ে লিখেছেন, তবে 'বিগ থ্রি' শিরোনাম দেখে আশা করেছিলাম বাকি 'টু' সম্পর্কে কিছুটা লেখা থাকবে। যেখানে যাই পড়ছি বেশিরভাগই কেবল বিসিসিআই সম্পর্কে, সত্য বলতে কি এই লেখাটায় আমি নতুন কিছু আশা করেছিলাম ইন্ডিয়া বাদেও অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ড নিয়েও বেশ কিছু কথা থাকবে।

আমি নিজে অবশ‌্যই বিসিসিআই এর ভন্ডামিতে বিরক্ত। যখন, কপিল টি২০ করল, তখন তাতে অংশ নেয়া সকল খেলোয়াড় অছ্যুত হয়ে যায়, আর যখন নিজের আইপিএল করে তখন তাতে খেললে কিছু হয় না।

প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন: বাংলাদেশ থেকেও কিছু ক্রিকেটার ( অলক কাপলির নাম মনে পড়ে) আইসিএলে (কপিলেরটায়) খেলে জাতীয় দলে অপাংক্তেয় হয়েছিলেন। (কয়েকজন মনে হয় অবসরপ্রাপ্ত খেলোয়ার ছিলেন, তাদের কথা বাদ)।
এর কারণ কি? তখন বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোন খেলা ফেলে তারা চলে গিয়েছিলেন কি? তা না হলে বিসিসিআই এর অপছন্দের টুর্নামেন্টে খেলার কারণে বিসিবি তাদের বিরুদ্ধে কেন পদক্ষেপ নিয়েছিল?

অতিথি লেখক এর ছবি

যথেষ্ট দূর্বল লেখা। শিরোনামের সাথে লেখার মিল খুঁজে পেলাম না। বিগ থ্রীর কথা বললেন শিরোনামে কিন্তু আলোচনায় শুধু ভারত কেন?
প্রথমেই বলে নেই, ভারত সহ ওই তিন জমিদারের এই প্রস্তাব শুদু নিন্দনীয় নয়, ঘৃনা ভরে প্রত্যাখান যোগ্য। কিন্তু সেখানে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন ছিলো, এবং বিসিবি তাই করেছে।

১। শেন বন্ড আইপিএলের জন্যে জাতীয় দল ছেড়েছেন, এই তথ্য ঠিক নয়। কারন শেন্ড বন্ড শুধু প্রথম আইপিএল খেলেছে। ইনজুরির কাছে হার মেনে ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছে শেন বন্ড, আইপিএলের জন্যে নয়।
২। ভারত ক্রিকেটে কতটা শক্তিশালী ছিলো তা প্রমাণের জন্যে ২০০৩ সালের রেফারেন্স টানার দরকার ছিলো না। শুধু ভারত নয় এশিয়ার কোন দেশে-রি(পাপিস্থান-শ্রীলংকা) অষ্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ডের মাঠে টেষ্ট সিরিজ জয়ের খুব বেশি সুখকর স্মৃতি নেই।
৩। ভারত বাংলাদেশকে কখনো তাদের দেশে খেলতে আমন্ত্রন দেয়নি এটা অবশ্যই নিন্দনীয়। কিন্তু টেষ্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর ইংল্যান্ড/অষ্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশ সর্বমোট ৬ টি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছে? গত ৫-৭ বছরে বাংলাদেশে কয়টি টেষ্ট খেলার সুযোগ পেয়েছে বলতে পারেন?

৪। কিছুদিন আগেও এশিয়া কাপ/টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ বাংলাদেশ থেকে সরিয়ে নিতে পাপিস্থান উঠে পড়ে লেগেছিলো মনে আছে নিশ্চয়, শ্রীলংকাও আয়োজনে রাজি ছিলো। কিন্তু শুধু ভারত সাপোর্ট দিয়েছে বলে খেলাগুলো বাংলাদেশে হচ্ছে। সুতরাং ভারত ক্রিকেটে বাংলাদেশের নি:স্বার্থ বন্ধু না হলেও শত্রু না এটি নিশ্চিত হয়ে বলা যায়।

৫। আপিএলে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের চান্স দেওয়া হয়না এটা ঠিক। বিগ ব্যাশে কয়েকজন বাংলাদেশী খেলার চান্স পেয়েছে কবে বলেন তো? কাউন্টিতে কয়জন? সব দোষ কি শুধু ভারতের গাড়ে চাপালে শান্তি মেলে?

৬। পাপনের সমালোচনা করেছেন আপনি কিছু না ‍বুঝে। একটা প্রস্তাব আসছে আর তাতে সঙ্গে সঙ্গে না বলে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। পাপন কিংবা বোর্ড তাই একটু সময় নিয়েছে। আফ্রিকা আর শ্রীলংকা ছাড়াও কেউই সরাসরি এটাকে বাতিল করে দেয়নি প্রথম দর্শনেই। সবার অবস্থান বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া টা বুদ্ধিমানের কাজ, এবং শেষ পর্যন্ত বোর্ড সেটাই নিয়েছে।

মাসুদ সজীব

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ভালো মন্তব্য। অ্যাপ্রেশিয়েটেড।

প্রস্তাবটা শ্রীলংকাও বাতিল করে নাই, তারা আলোচনা মূলতবি করতে বলেছে মাত্র।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

মোটামুটি গুছিয়ে লিখেছেন। আমিও আশা করেছিলাম, বিগথ্রির বাকি দুই থ্রি সম্পর্কেও কিছু তথ্য পাবো।

কিছু কিছু বিষয়ে যোগ করি।

এর ফলে শেন বন্ড, ক্রিস গেইল, লাসিথ মালিঙ্গার মত খেলোয়াড়রা জাতীয় দলকে পাশ কাটিয়ে আইপিএলকেই অগ্রাধিকার দিলে নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কার মত ক্রিকেট বোর্ড গুলো পড়ল এক মহা বিপাকে।

এটা সঠিক তথ্য না। এই তিনজন খেলোয়াড়ই তাদের জাতীয় দলের প্রতি ১০০% কমিটেড। শেন বন্ড আইসিএলে খেলতো। এ কারণে বিসিসিআইয়ের অলিখিত চাপে লিউজিল্যান্ড টীম তাকে দলে নেয় নি। একই রকম পরিস্থিতিতে পড়েছিলো আমাদের অলোক, হাবিবুল বাশার, শাহরিয়ার নাফিসরা। এছাড়া তার ক্যারিয়ার জুড়েই ইনজুরি সমস্যা ছিলো। ক্রিসগেইল কেসে দায় মূলত ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ডের। সে একা না, ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাথে ক্রিকেট বোর্ডের দীর্ঘ ক্যাচাল। আইপিএল না খেলা সারোয়ান বা চন্দরপলও একই ঝামেলার শিকার। মালিঙ্গারও সমস্যা ফিটনেস। টেস্ট ম্যাচ বোলার হিসেবে তার ফিটনেস প্রবলেম সবসময়ই ছিলো। সুতরাং সে টেস্ট থেকে অবসর নিতে বাধ্য হয়।

কিন্তু বিসিবির সভাপতির ভাষায় “টাকা এখনকার চাইতে বেশী পাওয়া যাবে।“

টেস্ট ম্যাচ না খেলার বিনিময়ে টাকা বেশি পাওয়ার কথা বিসিবি সভাপতি কোথায় বলেছে, স্পষ্ট রেফারেন্স পাওয়া যাবে?

ভারত গত ১৪ বছরে বাংলাদেশকে তাদের দেশে খেলতে আমন্ত্রন জানায়নি। এটা নিয়ে বাংলাদেশ সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ থাকলেও বিসিবি ভারতকে অতিথি হিসেবেই বেশী পছন্দ করে কারণ ভারতে গিয়ে খেলার চেয়ে ওরা বাংলাদেশে আসলেই আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া যাবে।

বিসিবি ভারতকে অতিথি হিসেবেই বেশি পছন্দ করে, এটা একটা ভুল তথ্য। ভারতই সে দেশে বাংলাদেশের সফরকে অলাভজনক বিবেচনা করায় আমন্ত্রণ জানায় না। এখানে বিসিবির দোষ হতে পারে, বিসিসিআইকে কনভিন্স করে ভারতে খেলতে না যেতে পারার ব্যর্থতা, ভারতে খেলতে যেতে না চাওয়ার কথা সত্য নয়। বাস্তবতা হলো বিসিসিআই না চাইলে বিসিবির হাতে ক্ষমতা নাই ভারতে গিয়ে খেলার। বিগ থ্রির অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ দীর্ঘ ১৩ বছরে ইংল্যান্ডে ৪টি ও অস্ট্রেলিয়ায় ২টি মাত্র টেস্ট খেলেছে।

বিসিবির আগের সভাপতি আইসিসি সভাপতি হবার জন্য পাকিস্তানের ভোটের আশায় জোর করে জাতীয় দলকে পাকিস্তান সফরে রাজি করাতে চেয়েছিলেন। এই সভাপতির চান আগে ভারতের সুনজর, আরও টাকা পাবার নিশ্চয়তা তারপর সময় সুযোগ পেলে কিছুটা ক্রিকেট হতেও পারে।

আগের সভাপতি নিজস্ব আইসিসি সহ-সভাপতি পদের জন্য খেলোয়াড়দেরকে ঝুঁকির মুখে ফেলে তার একক সিদ্ধান্তে পাকিস্তানে দল পাঠাতে চেয়েছিলেন। এই সভাপতি ভারতের সুনজর চান বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য, তার নিজের জন্য না। ভারতের চাপে বাংলাদেশের নির্বাচনে হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হতে পারে, বা ভারতীয় বাহিনী সাতক্ষীরায় গণহত্যা চালিয়ে কর্পূরের মতো গায়েব হওয়া সম্ভব হলেও বিসিবির চেয়ারম্যান পদ ভারত ঠিক করে দেয় না। বর্তমান সভাপতি একক সিদ্ধান্ত না নিয়ে বোর্ড অফ ডিরেক্টরস এর ভোটের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগের সভাপতি চেয়েছিলেন ক্রিকেটাররা ঝুঁকির মুখে পাকিস্তানে যাক। সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার অ্যাবসলিউট রাইট বিসিবির ছিলো। বাংলাদেশ টেস্ট ম্যাচ খেলবে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার অ্যাবসলিউট রাইট বিসিবির নাই। এবং বিসিবি কখনোই বলে নাই, তারা টেস্ট ম্যাচ খেলার বিষয়টা জলাঞ্জলি দিতে চায়। সুতরাং পাপন ইকুয়াল টু লোটাস সমীকরণটা একদম ভুল।

বহু বছর রাজত্ব করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ বা গত দুই দশকের অস্ট্রেলিয়া কক্ষনো এই ধরণের উদ্ভট প্রস্তাব করেনি।

অস্ট্রেলিয়া নিজেও বিগ থ্রির এক থ্রি। হাসি
ডেভিড হুকস বলেছিলো বাংলাদেশ ১ দিনের ভেতরেই টেস্ট ম্যাচ হারবে। চোখ টিপি তবে অস্ট্রেলিয়া অফিশিয়ালী বাংলাদেশকে নিয়ে এরকম মন্তব্য করে নি, এবং তারা সুদীর্ঘ ২ টেস্টের একটা সিরিজও হোস্ট করেছে গত ১৩ বছরে।

আর ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিজেদেরই যে নাকানি-চুবানি অবস্থা গত দুই দশকে, তাতে বাংলাদেশ নিয়ে কিছু বলার অবস্থা তাদের নাই।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

দিগন্ত এর ছবি

অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যন্ডের বহুকাল ধরে ভেটো অধিকার ছিল। সেটা বাতিল করার জন্য উপমহাদেশ সহ জিম্বাবোয়ে আর দক্ষিণ আফ্রিকা-কে অনেক ফাইট দিতে হয়েছে। ১৩ ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলার পরে ১৯৯৬ সালে তাদের ভেটো অধিকার তুলে নিতে সম্মত হয়। আরও আগে, ১৯০৯ সালে আইসিসি তৈরি হয়েছিল আমেরিকা-কে ক্রিকেট থেকে বাদ রেখে। আইসিসি র তখন নাম দেওয়া হয়েছিল ইম্পেরিয়াল ক্রিকেট কাউন্সিল আর শর্ত দেওয়া হয়েছিল যে কেবলমাত্র কমনওয়েলথের সদস্যরাই এতে যোগ দিতে পারবে। আমেরিকাতে এর পরে ক্রিকেটের আর প্রসার ঘটে নি।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

২০০৩ এর অগাস্ট সেপ্টেম্বর মাসে ভারতের আট র‍্যাঙ্কিং ছিল, ওয়ানডে-তে। ব্যাপারটা একটু অদ্ভুত, কারণ ওই বছর মার্চেই ভারত বিশ্বকাপে রানার্স হয়েছিল, দক্ষিণ আফ্রিকায় অস্ট্রেলিয়ার কাছে ফাইনালে হেরে। ক্রিকেটে দেশের বাইরে টেস্ট জেতা একটা শক্ত কাজ, ইতিহাসে একমাত্র ১৯৯৯-২০০৭ এর অস্ট্রেলিয়া একমাত্র দল যারা দেশে ও বিদেশে সমানতালে ভাল খেলেছে। তাদের বিশ্বমানের পেস ও স্পিন অ্যাটাক ছিল, সাথে ভাল ব্যাটিং। ১৯৭৫-১৯৮৩ এর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভাল দল ছিল কিন্তু তাও তারা অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার মনে হয় জানা নেই যে ১৯৮০ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ টানা ২৯টি টেস্ট সিরিজে অপরাজিত ছিল - দেশ এবং বিদেশ মিলিয়ে। এই রেকর্ড অস্ট্রেলিয়ার ১৯৯৯-২০০৭ দলেরও নেই। ১৯৭৬ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজ অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে মাত্র একবার সিরিজ হেরেছে - সেটা ছিল ১৯৯৭ সালে। ১৯৯৭-র আগে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সর্বশেষ সিরিজ পরাজয় ছিল ১৯৭৫-৭৬ মৌসুমে।

http://stats.espncricinfo.com/westindies/engine/records/team/series_results.html?class=1;id=4;type=team

Emran

দিগন্ত এর ছবি

ওই সময়ের শেসের দিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পার্ফর্ম্যান্স শুধু টেস্টে সীমাবদ্ধ ছিল, যেটা অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে রানার্স হবার পরে তারা ১৯৮৭ আর ১৯৯২ বিশ্বকাপ্ সেমিতে যায় নি, ১৯৮৫ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপএ সেমিতে পাকিস্তানের কাছে হেরে তারা বিদায় নেয়। ১৯৮৫ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ আমার দেখা প্রথম টূর্নামেন্ট হাসি ফাইনালে ভারত জেতার পরে অনেক মজা করেছিলাম। এর আগে বা পরে অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বমানের কোন টুর্নামেন্ট ভারত জেতে নি।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অতিথি লেখক এর ছবি

সবাইকে ধন্যবাদ পড়া/ মন্তব্য করার জন্য। এই লেখাটা শেষ করার আগেই অছ্যুত বালাইয়ের আরও বিস্তারির ও তথ্যসমৃদ্ধ অনেক ভাল একটি লেখা চলে আসায় শঙ্কা ছিল হয়তো আমার লেখাটি প্রকাশিত হবে না। আপনাদের বেশিরভাগ মন্তব্যের সাথেই একমত, কিছু বিষয়ে আমার ভাবনাগুলো যোগ করে দিলাম।

বিগ থ্রীর নামে শুধু ভারতকে নিয়ে আলোচনা কারণ হচ্ছে লেখাটা কিছুটা তাড়াহুড়া করে শেষ করা হয়ছে আর ইসিবি আর সিএ এই প্রস্তাবে রাজী এটা ছাড়া তেমন কোন তথ্য খুঁজে পাইনি। আমার ধারণা এই আইডিয়ার উৎপত্তি ভারতে, তারা বাকি দুই দেশকে রাজী করিয়েছে। কোন রেফারেন্স দিতে পারবোনা ।

ভারতের সমর্থন না থাকলে এশিয়া কাপ আর টি২০ বিশ্বকাপ হওয়াটা বেশ অনিশ্চিত ছিল। তারপরও ভারতের সুনজরে থাকলেও আমারা তাদেরকে সমর্থনের বিনিময়ে যথেষ্ট সুবিধা পাচ্ছি কিনা সেটা প্রশ্ন সাপেক্ষ। সৈয়দ আশরাফুল হকের এই সাক্ষাৎকার পড়ে জানতে পারলাম ১৯৯৯ সালের মিনি বিশ্বকাপ ডালমিয়া কলকাতা নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করেছিল। আই সিসি র পূর্ণাঙ্গ সদস্য না হয়েও বিসিবির তৎপরতায় সেটা শেষপর্যন্ত ঢাকাতেই অনুষ্ঠিত হয়।

অস্ট্রেলিয়া – ইংল্যান্ডের সাথে আমাদের ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক ভারতের তুলনায় কিছুই নয় তারপরও বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অন্তত দুইবার এই দুই দেশে খেলতে গিয়েছে (অস্ট্রেলিয়ায় দ্বিতীয়বার শুধু ওয়ানডে)। কিন্তু সেই তুলনায় ভারত যতবার বাংলাদেশে এসেছে, তার বিনিময়ে একবারও ফিরতি সফর না হওয়াটা হতাশাজনক।

আই পি এলে বাংলাদেশীর নেয়া হয়না এটা সত্যি। মাসুদ সজীব এই বিষয়ে বিগ ব্যাস বা কাউন্টির তুলনা করেছেন। কিন্তু আমি এই প্রসঙ্গে কিছু লিখিনি, কাজেই এটা অন্য প্রসঙ্গ। তবে আইপিএল নামক লোভনীয় বিকল্প থাকার কারনেই গেইল বা মালিঙ্গা টেস্ট ক্রিকেটকে উপেক্ষা করেতে পেরেছিল, সেটা ফিটনেস বা কন্ট্রাক্ট সংক্রান্ত যেই ঝামেলা থেকেই হোক না কেন।

আমি বলতে চেয়েছি ওয়েস্ট ইন্ডিজ- অস্ট্রেলিয়া যখন প্রবল প্রতাপশালী ছিল তখনো এমন কোনো উদ্ভট প্রস্তাব করেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বর্তমান ফর্ম এখানে বিবেচ্য নয়।

২০০৩ সালে ভারত ৮ নম্বরে থাকার রেফারেন্স পাওয়া যাবে এখানে। সম্ভবত বিসশকাপের আগে।

পাপন ইজ ইকুয়াল টু লোটা এই কথা আমি বলিনি, বলতে চাইনি। পাপনকে আমার লোটার চাইতে বেশী আন্তরিক মনে হয়; তারপরও বোর্ডের কোন কাজ পছন্দ না হলে দায়টা পাপনের উপর আসবে।

বিসিবি বাস্তব সিধান্ত নিয়েছে এই বিষয়ে মোটামুটি একমত। আমি সর্বশেষ শুক্রবারের পত্রিকা পড়ে (কিছুটা কনফিউসডও) এই লেখা শুরু করি। সচলের কলরবে “ডেইলি স্টারে লিখছে বিসিবি ২০-৩ ভোটে এই প্রস্তাবে সমর্থন দিতে যাচ্ছে।“ পড়ে যথেষ্ট বিরক্ত হছিলাম। অছ্যুত বালাইয়ের লেখাটা আগে আসলে হয়তো আমার লেখাটা অন্যভাবে সাজাতাম।

ভুল স্বীকার
শেন বন্ডের সাথে আই পি এল টা গুলিয়ে ফেলা ভুল ছিল।
পাপন বলেছে, “টাকা বেশী পাওয়া যাবে” এটা কোন খবরে আসেনি।

-পিয়াল

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আমাদের টেস্ট স্ট্যাটাস নিয়ে বিগথ্রির কার কনসার্ন কেমন, এটা খুব চমৎকারভাবে ব্যাখ্যা করেছেন বাবুবাংলা ভাই। (আমরা অনেকে যখন ক্রিকেট কি সেটাই ভালো করে বুঝি না, তখন থেকেই এই লোকটা ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ।)

বাংলাদেশের এতো বড় সর্বনাশ করে ইন্ডিয়ার ক্রিকেট বোর্ডের লাভ কি? বাংলাদেশ টেস্ট খেলুক কি না খেলুক তাতে ইন্ডিয়ার কিছু আসে যায় না। বাংলাদেশকে টেস্ট খেলতে দিলে বাংলাদেশের সাথে খেলার প্রশ্ন আসে। বাংলাদেশের সাথে খেলার বাধ্যবাধকতার একটা বিধান হল আইসিসির ১০-বছর মেয়াদী ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম (এফটিপি)। এখন তো নতুন প্রস্তাবনায় এফটিপি উঠিয়ে দেয়ার কথা হয়েছে। তাহলে অন্যদের মতো বাংলাদেশকেও দ্বি-পাক্ষিক সমঝোতার ভিত্তিতে টেস্ট খেলার সুযোগ করে দিতে ইন্ডিয়ার সমস্যা কোথায়?

ইন্ডিয়ার কোন সমস্যা নেই। সমস্যা ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ায়। আইসিসির রাজনীতিতে বাংলাদেশ তাই ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার কাছে এক অনাকাঙ্ক্ষিত শিশু। বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস পাক ক্রিকেট-রাজনীতির সমীকরণের কারণেই তারা শুরুতেই সেটা চায় নি। এরপর যতবারই বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস কেড়ে নেয়ার প্রসঙ্গ উঠেছে সেটা এসেছে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ব্লক থেকেই। এছাড়া রবার্ট মুগাবে সরকারের সাথে রেষারেষির ফল হিসাবে জিম্বাবুয়েকে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া প্রকাশ্য শত্রু হিসাবে ঘোষণা করেছে। জিম্বাবুয়ের সাথে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া অর্থনৈতিক অবরোধ তো আছেই, এই দুই দেশ জিম্বাবুয়ের সাথে ক্রিকেটীয় সংযোগও ছিন্ন করেছে। ইংল্যান্ড এমনকি জিম্বাবুয়েকে আইসিসি থেকে বহিষ্কারের দাবীও তুলেছে। ফলে বাংলাদেশের সাথে জুড়ে দিয়ে জিম্বাবুয়েকে শায়েস্তা করার এই এক বড় সুযোগ।

ইদানীং আবার আয়ারল্যান্ডের ও স্কটল্যান্ডের টেস্ট ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা উঠছে। সেসব দেশের ক্রিকেটের মান,জনপ্রিয়তা, খেলোয়াড়ের সংখ্যা ও ক্রিকেটীয় অবকাঠামো অত ভালো পর্যায়ে নেই বলে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের মতো আরো কিছু টেস্ট শিশু তৈরি করা যাচ্ছে না। ফলে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়েকে তাই আয়ারল্যান্ড-স্কটল্যান্ড-হল্যান্ডের সাথে নামিয়ে দিতে পারলে বরং ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ব্লকের এসব দেশের জন্য কিছু সম্ভাবনা তৈরি করা যায়।

এই পরিকল্পনায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারতো ইন্ডিয়া। কিন্তু ইন্ডিয়া, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার এই যৌথ প্রস্তাবনার মধ্য দিয়ে মূলত: এই ক্রিকেটীয় কোল্ড-ওয়ার এর পরিসমাপ্তি ঘটতে চলেছে। ফলে বিশ্ব রাজনীতির কোল্ড-ওয়ার এর পরিসমাপ্তিতে যেমন বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আফ্রিকার রাজনৈতিক গুরুত্ব করে গিয়েছিল, ক্রিকেটীয় কোল্ড-ওয়ারের অবসানের মধ্য দিয়েও ক্রিকেট রাজনীতিতে ইন্ডিয়ার বাংলাদেশের গুরুত্ব কমে যাচ্ছে। ফলে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ব্লকের সাথে সমঝোতার খাতিরে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেট খেলার ভবিষ্যতকে বলি দিয়ে দিতে ইন্ডিয়ার কোন আপত্তি নেই।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

দিগন্ত এর ছবি

পুরো লেখাটায় ডালমিয়ার সাথে আশরাফুল হকের চমৎকার সম্পর্কের কথা লেখা আছে। পুরোটা পড়লে বাংলাদেশ ক্রিকেটের বিবর্তন বোঝা যায়।
আমি লেখায় দিয়েছি ভারত আট নম্বরে ছিল বিশ্বকাপের পরে, সেটাই হাস্যকর ব্যাপার। বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে মার্চে। পরে র‍্যাঙ্কিং সিস্টেম ঠিক করা হয়েছিল কিনা জানি না, তবে ফুটবলে বিশ্বকাপে রানার্স টিম আটে নেমে যাওয়ার ঘটনা দেখিনি।
ভারতে বাংলাদেশের সফর না হলে ক্রিকেটপ্রেমীদের দিক থেকে দেখলে বাংলাদেশের লোকসান কিন্তু বিসিবির দিক থেকে দেখলে কোন লোকসান নেই। হাসি এখন নিশ্চয় সবাই জেনে গেছেন বিষয়টা।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অতিথি লেখক এর ছবি

বিগ ৩, এর হোতা ৩জন হলেও, মূল হোতা কিন্তু ইন্ডিয়া। খেলার চেয়ে যারা টাকা এবং ক্ষমতা কে বেশি প্রাধান্ন দেয়।

সামুরাই

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি এই প্রস্তাব টা খারাপ না. আমরা এর বিরোধিতা করছি কারন আমরা আমাদের নিজের স্বার্থ দেখছি বলে. বাংলাদেশ গত ৫ বছরে কয়টি টেস্ট খেলেছে? কয়টা টেষ্ট খেলার সুযোগ পায় বছরে বাংলাদেশ? গত ৫ বছরে বাংলাদেশে কি অষ্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, আফ্রিকার সাথে কোন টেষ্ট খেলেছে? খেলেনি, তখন কোথায় ছিলো সবাই? এই প্রস্তাবে নিচের সারির দলগুলোর সাথে বাংলাদেশ নিয়মিত খেলবে. সেখানে চ্যাম্পিয়ন হলে র‌্যাংকিং ৮ নম্বর দলের সাথে খেলবে. তাদেরকে হারাতে পারলেই তো ৮ নাম্বার হয়ে গেল.. হিসেব সহজ. আর টেষ্টের বদলে আর্ন্তজাতিক ওয়ানডে বাড়ে তাতে তো ক্ষতিতো নেই।

বাংলাদেশ কি আসলেই টেষ্টে শক্তিশালী কোন দল? ২-৪ বছরে শক্তিশালী হবে? দুটির উত্তরি হলো ”না”. টেষ্টে জিততে হলে ২০টি উইকেট নেওয়ার মতো বোলার থাকতে হয়, যেটা বাংলাদেশের কোনদিনও ছিলো না আজও নেই. তাই গিলেস্পীর মতো টেলান্ডার ২০০ করে, শ্রীলংকা/পাপিস্থানের খেলোয়াড় যারাই নামে তারাই সেঞ্চুরী করে. বেশিভাগ মধ্যম মানের ক্রিকেটারের টেষ্টে সেরা ইনিংসগুলো বাংলাদেশের বিপক্ষে। আর টেষ্টে বাংলাদেশের অর্জন বলতে তেমন কিছু নেই। টেষ্ট জিততে হলে বিশ্বমানের ফাষ্ট বোলার দরকার, সবচেয়ে বড় সত্য বাংলাদেশে কোন ফাষ্ট বোলার নেই. নেই কোন ক্লাস্যিক স্পিনার. বোলার বলতে এক সাকিব.. বাকি কারোই সামর্থ্য নেই ৫-৭ উইকেট নেওয়ার. একটা বোলার দিয়ে টেষ্ট জয়লাভ করা যায় না. টেষ্টে লম্বা ইনিংস খেলার মতো ব্যাটসম্যান বাংলাদেশে কয়জন আছে? সাকিব যেভাবে খেলে সেটা টেষ্টের সাথে যায় না, নাসিরের ব্যাটিং ও নয়। একমাত্র মুশফিক ছাড়া কারোই ব্যাটিংকে টেষ্ট মানের বলা যাবে না। আর ধারাবাহিকতার অভাব তো আছেই। তাই সহসা বাংলাদেশের টেষ্টে ভালো করার সম্ভাবনা খুবি ক্ষীন. আর বছরে ৪-৬ টা টেষ্ট খেলে র‌্যাংকিং এ উপরে ওঠাও সম্ভব না. সেই বাস্তবতাকে এড়িয়ে আবেগ দিয়ে শুধু ঢোলে বাড়ি দিচ্ছি।

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

ক্রিকেটীয় দিক থেকে তিন মোড়লের এই প্রস্তাব জগন্য। আইনে বলা আছে ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া অবনমিত হবে না। এটা কেমন আইন, ওই তিনজনের জন্যে এক আইন আর বাকীদের জন্যে আরেক আইন এটা কেমন কথা? এই কারনে এটি অতি ঘৃন্য।

কমিটির ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। শুধু ওই তিনদেশ থাকবে কমিটিতে! অর্থাৎ একক আধিপত্য বজায় থাকবে তিন মোড়লের।

ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম (এফটিপি) থাকবে না। দ্বিপক্ষীয় ভিত্তিতে সিরিজ ঠিক হবে। তার মানে বেশি লাভের আশায় ওই তিন দল শুধু নিজেদের দেশে নিজেরা নিজেরা খেলে যাবে।

মাসুদ সজীব

সাফি এর ছবি

কার কত লাভ ক্ষতি এক কথায় -

অতিথি লেখক এর ছবি

লিখা নিয়ে বলার ছিল কিন্তু সবই আলোচনা হয়ে গেছে ।
সাফি চলুক
অছ্যুৎ বলাই'র বাবুবাংলা ভাই চলুক
অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।