ছবিব্লগঃ আমার উত্তর-বাংলা - ৪

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: রবি, ০৪/০৫/২০১৪ - ৫:১৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

জয়ন্তী। নামটা যেমন মিষ্টি দেখতেও। আমরা তো গেলাম শেষ চৈত্রের ঠাঠা রোদ্দুরে, শরতে, শীতে তার অন্য সাজ। আমার বাড়ী, মানে কোচবিহার থেকে মেরেকেটে পঞ্চাশ কিলোমিটার। অ্যাতো কাছে, অথচ দেখুন, আগে যাওয়া হয়নি। দেশ বিদেশ থেকে টো-টো কোম্পানীর লোকজন এসে বেড়িয়ে যায়, আমার যাওয়া হয়নি এদ্দিন। তবুও হল তো অবশেষে।

আলিপুরদুয়ার শহর থেকে জংশন স্টেশন ছুয়ে গাড়ী ছুটছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পিচঢালা রাস্তা।ঘড়ির কাটা এগোনোর সাথে সাথে জঙ্গল গহন হচ্ছে। গাড়ি থামতেই জঙ্গলের নিজের একটা শব্দ আছে না, অনভ্যস্ত কানে ভয় পাইয়ে দেবার মত শব্দ, মাতাল করা শব্দ, সে আওয়াজে ক্যামেরা বের করার কথা গেলাম বেমালুম ভুলে। আরো কিছুদূর এগোলে জয়ন্তী। ও, মাঝে ব্যাঘ্র প্রকল্পের সংগ্রহশালা আছে, যেটায় গেছিলাম বছর কয়েক আগে, ছবি ছিলো ক’খানা হার্ড-ডিস্কের কোনায় পরে, ধুলো ধূসরিত হয়ে; একটু ঝারপোছ করে দিলাম আপলোড করে।

জয়ন্তী। ভূটান সীমান্ত ঘেষা ছোট্ট জনপদ। বিরাট নদী-খাত। তার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে জয়ন্তী নদী।ওপারে পাহাড়ের হাতছানি। পাহাড় পেরলেই ভুটান। তো প্রথমেই ভাবলাম, যাই একবার ভূটানের মাটিতে পা দিয়ে আসি। নদী পেরিয়ে একটু খাড়াই ডিঙ্গিয়ে গাইড নিয়ে গেল মহাকাল গুহার দোরগোড়ায়। পাহাড়ের খাঁজে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরী চুনাপাথরের গুহায় মহাদেবের উপাসনা করেন এক বৃদ্ধ। আবার গুহা থেকে দড়ি দিয়ে টাঙানো হয়ে টিবেটান ধ্বজা, বৌদ্ধবিহারের কায়দায়। বৌদ্ধ আর শাক্তের এমন সহাবস্থান চোখে পরার মত। পাশেই পাহাড়ী ঝোড়া। একটা ফটো-ম্যাগে পড়েছিলাম ঝড়নার ছবি তোলার কায়দা কসরত। লং শাটারে। প্রয়োগ করতে গিয়ে ছবি গেল ঘোলা হয়ে। দুচ্ছাই বলে চলে এলাম।

এবার যাব চুনিয়াঝোড়া ওয়াচ টাওয়ার। ব্যাঘ্র-প্রকল্পের আওতায় এরকম ক-খানা ওয়াচ টাওয়ার আছে। জঙ্গলের বুক চিরে পাথুরে রাস্তা। মাঝে মাঝে ঐ বুনো শব্দ। আছে কোথাও লুকিয়ে ওত পেতে? গাইড বলল গাড়ী থামাতে। বেশ কিচ্ছুক্ষন চুপচাপ। নিজেদের নিঃশ্বাসের শব্দটাও অচেনা মনে হচ্ছে। নাঃ কপাল খারাপ। আর এই কপাল খারাপের রেশ থেকে গেল ওয়াচটাওয়ারের মাথা অবধি। ওসবের কথা ছেড়েই দিন, হরিণ-বাইসনও এলো না কাছে পিঠে। আসলে যা গরম তখন! তার ওপর ভর দুপুর। খেয়ে দেয়ে কাজ নেই, আমাদের মত টোটো করে ঘুরে বেড়াবে বনে বাদারে। তারচে ভাতঘুম ঢের ভালো।
জয়ন্তীতে চারটি খেয়ে ফেরা। ফেরার পথে সান্তালাবাড়ী(যেখান থেকে বক্সা পাহাড়ের ট্রেক রুট, সে গপ্প আরেকদিন শোনানোর ইচ্ছে রইল) ছুঁয়ে ব্যাঘ্র-প্রকল্পের সংগ্রহশালায় একটু ঢুঁ। তারপর ব্যাক টু প্যাভিলিয়ন।

১।জয়ন্তী জয়ন্তীঃ

২।একলা পাগল

৩।ডাকছে ভূটানঃ

৪।মহাকালের পথেঃ

৫। সহাবস্থানঃ

৬। ওমঃ

৭।গুহা-মন্দিরঃ

৮। উপাসকঃ

৯। ঝোরা -

১০। সরাইখানাঃ

১১। বিকিকিনি ১ঃ

১২। বিকিকিনি ২ঃ

১৩। চুনিয়াঝোরাঃ

১৪। অন্তহীনঃ

১৫। সারিঃ

১৬। পৃথিবীটা নাকি ছোট হতে হতে ঃ

১৭। বিদায় জয়ন্তীঃ

১৮। হালুম (ব্যাঘ্র প্রকল্পের সংগ্রহশালা)-

১৯। হালুম ২ (ব্যাঘ্র প্রকল্পের সংগ্রহশালা)-

২০। অর্কিড ভবনঃ

২১। অর্কিডঃ

*****************************
# দীপালোক
# ই-মেলঃ

*****************************

আগের পর্বঃ
১।

২।

৩।


মন্তব্য

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

জায়গার নামটা শুনেই তো যেতে ইচ্ছে করছে মন খারাপ
ভিসা সিস্টেম যে কবে উঠবে...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

চলে আসুন।
জয়ন্তীর জন্য নাহয় পোয়ালেন একটু ঝক্কি, তাই না? চোখ টিপি
- দীপালোক

দীনহিন এর ছবি

মহাকাল গুহার দোরগোড়ায়।

মহাকালের গুহা? নাকি মহাদেবের গুহা?

ঝড়নার ছবি

উহ্‌! প্লিজ ঠিক করুন।

ছবিগুলো ভাল লাগল, বিশেষ করে, বৃদ্ধ উপাসককে যেমন কল্পণা করেছিলাম, ঠিক তেমনটাই দেখতে পেলাম ছবিতে!

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
১। ওটা কিন্তু মহাকাল গুহা নামেই পরিচিত। আমরা যেখানে গেছি, ওটা ছোট মহাকাল , সঙ্গী গাইডের কথামত। ওখান থেকে কিছুটা ট্রেক করে অনেকটা খাড়াইয়ে দ্বিতীয় মহাকাল গুহা তথা মন্দির।
২। ভুল শুধরে দেবার জন্য আবারো ধন্যবাদ।
পুনশ্চঃ আচ্ছা, অতিথি লেখকদের লেখা সম্পাদনা করার সুযোগ রয়েছে কি, জানেন কেউ?

- দীপালোক

তারেক অণু এর ছবি

যাইতে হবে-

অতিথি লেখক এর ছবি

চলে আসেন। এদিকটায় পায়ের ধুলো পরুক।

- দীপালোক

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

লেখা এবং ছবি মিলে ভালই লাগলো, চলুক
অনেকদিন থেকে একটা প্রশ্ন মাথায় ঘোরে- আলিপুরদুয়ারের দুয়ার এবং ডুয়ারস কি একই উৎসজাত?

বৌদ্ধ আর শাক্তের এমন সহাবস্থান চোখে পরার মত।

এটা কি শাক্ত? নাকি শৈব হবে? শাক্ত মানে কি কালীর উপাসক নয়?

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

হিন্দু ধর্মমতে চারটি প্রধান সম্প্রদায় > ১) বৈষ্ণব (বিষ্ণু - কৃষ্ণ), ২) শৈব (শিব) ৩) শাক্ত (কালী) ৪) স্মার্ত ( সৌর)।
ওটা শৈবই হবে। শাক্ত হচ্ছে শক্তির পূজারী।আদ্যাশক্তি মহামায়া - সেই হিসাবে কালীকেই বুঝানো হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- , মন্তব্যে উৎসাহিত হলাম।
১।'দুয়ার' থেকে এসেছে ডুয়ার্স। মানে নেপাল, ভূটান, উঃ পূঃ ভারতের প্রবেশদ্বার। মূলত অরণ্যভূমি আর চা-বাগান। আলিপুরদুয়ার ডূয়ার্সেই পরে, জলপাইগুড়ি জেলার অন্তর্গত একটা মহকুমা শহর।
২। আপনি ঠিক ধরেছেন, 'শৈব'ই হবে। মহাদেব শিবের উপাসক। দুঃখিত, ভুলের জন্য।

-দীপালোক

অতিথি লেখক এর ছবি

পালামৌ এর কথা মনে পড়ে গেল। জয়ন্তী কী সুন্দর নাম। যদি কখনও ওসব সবথানে যেতে পারি তবে পালামৌ এর দ্বিতীয় খণ্ড আমিই লিখব! সরকারি চাকরি পায়ে দড়ি বাঁধা। এর চেয় ভাল জয়ন্তী তীরের ওই সব ব্যঘ্র হওয়া। অন্ত দেখা দিতুম, হতাশ হতেন না লেখক।
চার্বাক সুমন

অতিথি লেখক এর ছবি

পালামৌ যাওয়া হয়নি। তবে যেটুকু জেনেছি, এদিককার, মানে ডুয়ার্সের জঙ্গল কিন্তু আরো সতেজ, সবুজ। পারলে চলে আসেন।
আর, হতাশ হইনি। জানি, দেখা মিলবেই। হাসি
- দীপালোক

অতিথি লেখক এর ছবি

বাহ দারুন তো ছবিগুলো।

______________রয়

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
-দীপালোক

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

সব মিলিয়ে ভাল লাগল। চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
মন্তব্য ও ভুল সংশোধন করে দেওয়ার জন্য
- দীপালোক

এক লহমা এর ছবি

ভাল লাগল।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।