নারীর প্রতি যৌন নিপীড়ন, এই "স্বাভাবিকতা"র শেষ কোথায়?

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ০৪/০৫/২০১৫ - ২:৫৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি বিশ্বাস করি না বাংলাদেশের এমন কোন নারী আছেন যিনি ঘরে বা রাস্তায় যৌন নিপীড়নের শিকার হন নাই। কেউ হয়তো আমার সাথে দ্বিমত জানাবেন। কিন্তু আমার কথা হলো, নিজেকে প্রশ্ন করুন, আমাকে উত্তর দেয়া জরুরী না।

এই দেশ একটা অদ্ভুত দেশ! এখানে প্রেমিক প্রেমিকা, স্বামী স্ত্রী রিকশায় হুড তুলে কেন যাচ্ছে, পার্কে বসে বাদাম কেন খাচ্ছে, সমুদ্রের পারে ছবি কেন তুলছে, তা নিয়ে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হয়রানি, জরিমানার শেষ নেই। কারণ, এদের হাতে চাপাতি থাকে না, এদের পিছে ক্ষমতাবান দলের থাবা থাকে না। এদের হয়রানি করে এক ধরনের বিকৃত আনন্দ আর টাকা খাওয়া, দুটাই সহজ। কিন্তু যখন প্রশ্ন যৌন হয়রানির, তখন এদের চোখ, কান , মস্তিষ্ক একই সাথে পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে যায়।

মাঝে মাঝে আমার মনে হয়, এই দেশে প্রেম করা নিষিদ্ধ আর ধর্ষণ স্বাভাবিক।

টিএসসির যৌন নিপীড়নের ঘটনা নিয়ে প্রতিদিন নতুন নতুন তথ্য প্রমাণ সামনে আসছে, আর আমার মনে হচ্ছে, এই পরিমাণ ক্রাইম বাংলাদেশে ঘটেছে আর এ নিয়ে সরকারের কোন বিবৃতিই নেই। লিটন নন্দীর কথাই বলতে ইচ্ছে করে, ট্যাক্সের টাকায় এতো পুলিশ রেখে কি লাভ? ১৯ টা সি সি ক্যাম রেখে কি লাভ, প্রক্টরকে কি দাবা খেলার দায়িত্বে টেকাটুকা দিয়ে রাখা হয়েছে?

[b]তোমার সমস্যা, খাঁচায় তুমি বন্দী থাকোঃ[/b]

আমি কি পরবো না পরবো সেটা আমার ব্যক্তিগত ইচ্ছা! জিন্স পরলে পাশ দিয়ে যাবার সময় খারাপ কথা বলবা, বোরখা পরলে কাছে এসে জিজ্ঞেস করবে,রেট কত? এতো নোংরা মগজ নিয়ে মানুষ কিভাবে বাঁচে! সোভিয়েত ইউনিয়নের একটা ঘটনা পড়েছিলাম, সেখানে রাতারাতি পতিতাপল্লী তুলে দেয়া হয়েছিল! কিভাবে! অসম্ভব তাই না? মোটেই না! সেখানে রাতের বেলা একদিন রেইড দেয়া হয়, যে লোকগুলোকে পাওয়া যায়, তাদের ছবি তুলে ছেড়ে দেয়া হয়। পরদিন শহরবাসী ঘুম থেকে উঠে দেখে দেয়াল পোস্টারে ছেয়ে গেছে, তাতে সেই লোকগুলোর ছবি আর নিচে লেখা, "এই ভদ্রলোকেরা টাকার বিনিময়ে পতিতাপল্লীতে নারীদেহ কিনতে গিয়েছিলেন।" ব্যস! পতিতাপল্লী বন্ধ করা সহজ হয়ে গেলো। এখন আজব কিছু যুক্তি আসতে পারে,

“পতিতাপল্লী না থাকলে সমাজে রেপ বেড়ে যাবে!”
- এখনো কি কম হচ্ছে নাকি?

“পুরুষরা পতিতাপল্লী না পেলে সাধারণ মেয়েদের উত্যক্ত করবে। সমাজের প্রয়োজনেই দরকার!”
- ওহ তাই? মেয়েদের জন্যে বুঝি “পতিত পল্লী” আছে? এই সমাজ কি পুরুষদের বিয়ে করতে নিষেধ করেছে নাকি? সামাজিক ভাবে বিয়ের বৈধতা আছে এবং একেকজন ২/৩ টা করেও বিয়ে করেন। আরো দরকার? আপনের মা বোনরেও এই সমাজ সেবাতে পাঠায়া দেন ভাই! বাপ্রে! এরা মানুষ নাকি যৌনরোগাক্রান্ত? পতিতাপল্লী না, এদের ডাক্তার দেখানোর টাইম হইছে!

আর পতিতাপল্লী কনসেপ্ট টা যদ্দিন না বিদায় হচ্ছে, ততদিন মেয়েদের ভোগ্যপণ্য ভাবা আর যৌন নিপীড়নের ঝুঁকি থেকেই যাবে।

এই দেশ মানুষ যততা খারাপ ভাবে, ততটাও তো না! ভালো বিনোদন এর পথ তো খোলাই আছে। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের গাড়ি আপনার বাসার সামনে এসে বই দিয়ে যাবে। ফেসবুকে নানা পেজ অসম্ভব ভালো কিছু কাজ করছে, অভয়ারণ্য, স্টোরিটেলার বাংলাদেশ এদের সাথে ভালো কিছু কাজ করুন না! আর এসব বাদ দিয়ে যদি নারী শরীর হাতাতেই ভালো লাগে, ইটস টাইম ফর জেইল অর আ স্পেশালাইজড ডক্টর!
তোর সমস্যা তুই সামলা, অন্যের জামাকাপড়ের দোষ কি!

কো এডুকেশন জরুরীঃ

বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকের ক্ষেত্রে আমি খুব অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছি, এরা জীবনে প্রথম কোন মেয়ের সাথে কথা বলছে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর। এবং কিছুতেই তুমি থেকে তুই সম্বোধনে নামতেই পারছে না!একটা মেয়ের হাত ধরতে পারাটাই এদের কাছে অনেক বেশী কিছু। কিন্তু সেখানে যদি রক্ষণশীল পরিবারের মেয়েরা বেশী যায়, তাহলে বিপদ আরো বেশী। তখন কিন্তু মেয়েদের সম্পর্কে এই অবদমিত ধারণার কারণে যৌন নির্যাতন বাড়তেই থাকে।কো এডুকেশনে পড়াশোনা করলে এই সমস্যাটা কম হতো বলে আমার বিশ্বাস।
[b]
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নের বিচার আসলে কি?
[/b]

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যৌন নিপীড়নের ক্ষেত্রে কতখানি সংবেদনশীল? দুঃখজনক হলেও একদমই না! দেশের সর্বোচ্চ পাবলিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে একটিতে পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে আমার। কিন্তু এখানে যতবার যৌন নির্যাতনের ঘটনা হয়েছে ততবারই প্রশাসন নির্যাতঙ্কারীর পক্ষ নিয়েছে। ততবারই বার দলগুলোর নেতৃত্বে সাধারণ ছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে বিচার করতে বাধ্য হয়েছে! কিন্তু ঘটনা তো এর উলটো হবার কথা ছিলো! ছিলো না?

যৌন নিপীড়ন তো শুরুই হয় পারিবারিক আবহেঃ

মামা, চাচা, দুলাভাই, এই টাইপ সম্পর্কগুলোর নিচেই যে হায়েনারা ওত পেতে লুকিয়ে থাকে, তা কোন মেয়েটা না জানে! অভিভাবক মহল থেকে এইসব লোকের যৌন নিরযাতনের বিরুদ্ধে কিছু বলা হয় না। পরিবারে লাই পেয়ে পেয়ে তাই এরা বাইরের মেয়েদেরো লাঞ্ছিত করা শুরু করে। পরিবারে এমন কেউ থাকলে তাকে অন্তত সাহস করে একটা দিন সবার সামনে অপমান করে দিন। কানকথা হোক, তবু আপনি জানবেন, আরো দশটা মেয়ের গায়ে হাত দেবার আগে বদমাইশটা আপনার কথা ভেবে থেমে যাবে।

অতঃপর সান্ধ্য আইনঃ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা অতি হাস্যকর আইন আছে। সান্ধ্য আইন। এইতা অনুযায়ী ছাত্রী হলের মেয়েদের সন্ধ্যার আযান দেয়া মাত্র হলে ঢুকে যেতে হবে। যদি কেউ না ঢোকে, তাহলে তার কপালে জুটবে, “পতিতা” সহ নানা বাজে টাইপ তকমা! আমরা এর বিপক্ষে অনেক বার অন্দোলন করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু দেশ কাঁপানো নারীবাদী বা প্রগতিশীল চবির শিক্ষকরা সব সময়েই আমাদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। আমি জানি না, তাদের এই অবস্থান সত্ত্বেও তারা কি করে ক্লাসে নারীবাদ পড়াইতে আসেন বা চেরাগীর মোড়ে বসে সাম্যবাদ আর সমাজতন্ত্রের বিদ্যা বিতরণ করেন। সেই কাজে মিল না থাকা সেই কথার বিদ্যা তখন পরীক্ষা পাশের নিমিত্তে আনার পেটে কাগজের মত গজ গজ করলেও মাথায় ঢোকে না।

চবি প্রশাসনের বক্তব্য হল, মেয়েরা সন্ধ্যায় বাইরে থাকলে তাদের পাহাড়ে টেনে নিয়ে রেপ করা হবে। আর আমাদের বক্তব্য হলো, বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে সরব, সন্ধ্যার পরেও কোথাও উন্মুক্ত মঞ্চে নাটক হবে, কোথাও ছেলে মেয়ের দল গান গাইবে, কোথাও হবে পাঠচক্র! বিশ্বের নামী দামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তো আমাদের শিক্ষকেরা পড়াশোনা করে আসেন, তাহলে দেশে ফিরেই এই কূপমন্ডুকতা তাদের গ্রাস করে ফেলে কেন! স্বরস্বতী পূজা, পহেলা বৈশাখ সহ নানা ইভেন্টে যখন হলের মেয়েরা রাত ১২ টা অব্দি বাইরে থাকে, আজ পর্যন্ত আমি কিন্তু কোন হয়রানির কথা শুনিনি। বরং হলে মুরগীর মত ঢুকিয়ে দেয়ার পরই নির্জন রাস্তায় সমস্যাগুলো হয়েছে। কেননা সব নিরাপত্তাগুলো থাকে শিক্ষকদের আবাসিক এলাকা কেন্দ্রিক!

ওহে নারী, নিজের নামটুকু পুরুষতন্ত্রের পায়ে সমর্পণ কইরেন নাঃ

বিয়ের পর আচমকা অনেক প্রগতিশীল বন্ধু বান্ধবই তাদের স্বামীর নাম টাইটেলে বসিয়ে ফেলেন। এর নাম ভালোবাসা? বলতেই পারেন! কিন্তু খুব ভালো ভাবে জেনে রাখুন, এটি আপনার মস্তিস্কে হাজার বছরের পুরুষতন্ত্রের রয়ে যাওয়া একটি ভাইরাস। আপনার স্বামীও কি কম ভালোবাসেন আপনাকে? কম প্রগতিশীল? বলে দেখুন তো আপনার নামের ছোট্ট অংশ ধারনের কথা! ভাবতেই পারছেন না তো? আপনি যে ভাইরাস আক্রান্ত! এবং আমি হলফ করে বলতে পারি, আপনার বাচ্চাদের নামের শেষেও আপনার স্বামীর নামই যাবে। আপনা নয়, কস্মিন কালেও নয়। এই ভাইরাস না ঝেড়ে ফেলে পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধের দামামাই বাজিয়ে যাবেন কেবল। আর সমাজের কানে তা শোনাবে নুপূরের নিক্কনের মতন!

যা কিছু করা যেতে পারেঃ

পুলিশ প্রশাসনকে এই ব্যাপারে আরো সংবেদনশীল হবার নির্দেশ দেয়া হোক। কোন নারী রাস্তায় নির্যাতনের শিকার হলে যাতে নিকটস্থ পুলিশের সাহায্য পেতে পারে।
• ছবি তুলে প্রচার করা হোক, আনা হোক আইনের আওতায়, শাস্তি হোক দৃষ্টান্ত মূলক।
• নারীর ক্ষমতায়ন কেবল সংরক্ষিত আসলে সংসদ সদস্য হওয়া নয়, বরং প্রতিটি ক্ষেত্রে নিরাপত্তা আর সম অধিকার বাস্তবায়ন।
• পতিতাপল্লী নামক যৌন নিপীড়নের স্থানটির সমাজ কর্ত্রিক বৈধতা বাতিল করা হোক। কিছু বিকৃত যৌন রুচির পুরুষের জন্যে এই অমানবিক, পাশবিক ব্যবসা টিকিয়ে রাখার মানে হয় না। এই ব্যবসা টিকে আছে বলেই প্রতিনিয়ত অসংখ্য নারীকে এই অন্ধকার জগতে নির্বাসিত হতে হচ্ছে। সম্মানজন পূনর্বাসন হোক তাদের।
• যৌন হয়রানির সংজ্ঞা ও শাস্তি পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হোক। এ নিয়ে সরকারী ঈ বেসরকারীভাবে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো হোক। মানসিকতা না বদলালে আইন করে কিছু করা যাবে না।
• সর্বোপরি, টিএসসির এই বর্বর ঘটনার দ্রুত দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি হোক। নইলে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আরো ভয়াবহ আকারে ঘটবার দিন বেশি দূরে নয়।

ঊর্মী রুবিনা


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

নিপীড়কের ছবি পোস্টার করে প্রচারের কথাটা বলছিলাম। কেউ গা করে না। নিজেরও এতো সঙ্গতি নাই যে একাই শুরু করে দেবো। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে এটা খুবই জরুরি। একইসাথে, নির্যাতক, দুর্বৃত্ত, বখাটে এসবের আড়ালে লুকিয়ে রাখার বদলে, নাম পরিচয়, পিতা-মাতা, ঠিকানাসহ প্রকাশ করাটাও দরকার। আইন ঘুমাচ্ছে তা আমরা দেখতেই পাচ্ছি, তাই প্রতিরোধটা সামাজিকভাবে করতে হবে। নইলে ওই যে বোরখা থিওরি আরো আগ্রাসি হয়ে উঠবে, উঠছেও।

স্বয়ম

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

পতিতাবৃত্তিঃ এই পেশাটার গোড়াতেই অন্যায় আছে। একটা মেয়েকে জোর করে ধরে এনে এই পেশায় লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে, অথবা পতিতাপল্লীতে একটা মেয়েকে এমনভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে যে সে বড় হয়ে পতিতা হওয়া ছাড়া আর কিছু ভাবতে পারছে না। এবং এই অন্যায়গুলো বিদ্যমান আইনেরও বিরোধী। যুগের পর যুগ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আইনবিরোধী কাজ চলবে আর আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা সেটা দেখেও না দেখার ভাণ করবে এটা প্রশাসনের ভন্ডামী ছাড়া আর কিছু নয়। পতিতাবৃত্তির লাইসেন্সের জন্য যে মেয়েরা আদালতে দাঁড়ায়, আদালত তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কি নিরীক্ষা করে দেখে?

সহশিক্ষাঃ স্বতন্ত্র শিক্ষার দুর্বুদ্ধি যে শ্রেণীর মাথা থেকে এসেছে বৈষম্যগুলোর সূচনাও তারাই করেছে। নারী যে একজন পুরুষের মতোই মানুষ এই বোধ ছোটবেলা থেকে দিতে না পারলে নারীর প্রতি আগ্রহের দৃষ্টিটা আগ্রাসণে রূপান্তরিত হতে পারে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়নঃ এখানে প্রশাসন নিপীড়কের পক্ষ নেয় গোষ্ঠী চিন্তা থেকে। লক্ষ করলে দেখবেন, সামাজিক পরিমণ্ডলে আমরা যতোটা না মানুষ তারচেয়ে বেশি গোষ্ঠীজীব। যৌন নিপীড়ন একটি ফৌজদারী অপরাধ - তা সেটা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে করা হোক আর রাস্তাঘাটে করা হোক। সুতরাং বিভাগীয় তদন্ত/বিচারের 'আই ওয়াশ'-এর মাধ্যমে অপরাধীকে পার করে না দিয়ে তাকে ফৌজদারী আদালতে হাজির করা উচিত।

পারিবারিক আবহে যৌন নিপীড়নঃ এটা নিয়ে অন্য পোস্টগুলোতে আলোচনা করেছি।

সান্ধ্য আইনঃ আমাদের শিক্ষকেরা বাইরের দুনিয়ার ভালো, বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে ফেরার সময় কিছু শিক্ষা 'খালের ঐপাড়ে ওয়াজ রাইখা আসার' মতো ঐসব দেশেই রেখে আসেন। তাদের অনেকেই যা পড়ান তা বলেন না, যা বলেন তা বিশ্বাস করেন না, যা বিশ্বাস করেন তা করেন না। মেয়েদের হল/হোস্টেলে সান্ধ্য আইন ছাড়া আরও একটা জিনিস আছে। সেখানে কারাগার বা হাসপাতালের মতো ওয়ার্ডেন/মেট্রন নামে একটি পদ আছে। সেই পদাধিকারীর কী কাজ সেটা আর ব্যাখ্যা করার দরকার পড়ে না।

নাম/পদবী পাল্টানোঃ পশ্চিমা দুনিয়ায় এটা একটা প্রতিষ্ঠিত ব্যাপার। কিন্তু তাতেই ব্যাপারটা জায়েজ হয়ে যায় না। এই ব্যাপারটি যে অবমাননাকর সেটা সারা দুনিয়াতে বোঝানো দরকার আছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তিথীডোর এর ছবি

বিয়ের পর আচমকা অনেক প্রগতিশীল বন্ধু বান্ধবই তাদের স্বামীর নাম টাইটেলে বসিয়ে ফেলেন। এর নাম ভালোবাসা?

নিজের পরিবারে এই ভাইরাস নেই। বন্ধুতালিকায় থাকা অনেকেরই এই ব্যারাম দেখেছি, দেখি। একসময় মাঝেসাঝে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হতো, এই আইডেন্টিটি খুইয়ে বসা ভালুবাসার পেছনের লজিক কী। এখন আর রুচি/ আগ্রহে কুলায় না।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

sajjad এর ছবি

ম‌্যাডাম, বিদেশে নাম বদলানোর পেছনে নগদ নারায়ণ কাজ করে।

রানা মেহের এর ছবি

"সামাজিক ভাবে বিয়ের বৈধতা আছে এবং একেকজন ২/৩ টা করেও বিয়ে করেন। আরো দরকার? আপনের মা বোনরেও এই সমাজ সেবাতে পাঠায়া দেন ভাই!"

এই কথাটা ভাল লাগলো না। অপরাধীর অপরাধের তীব্রতা বোঝাতে মা-বোনকে পতিতালয়ে পাঠানোর যুক্তি দেয়ার দরকান নেই।

সান্ধ্য আইনবা সুর্যাস্ত আইন কোন সভ্য দেশের আইন হতে পারেনা। পাহাড়ে নিয়ে রেইপ করলে সেই রেইপ আটকানোর দায়িত্ব কতৃপক্ষেরই, মেয়েদের আটকানো কোন সমাধান না।

ভালোবাসা দেখানোর জন্য স্বামীর নাম নেয়াটা যে ভালোবাসা না, প্রভুত্ব স্বীকার করে নেয়া এই জিনিসটা বোঝানো কষ্টকর। মজার ব্যাপার হল আমাদের দেশে এই জিনিসটা এসেছে পশ্চিমের দেশ থেকে। তাদের ভালোটা নেইনি, খারাপটা নিয়েছি।

লেখা ভাল লাগলো। আরো লিখবেন।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সুমিমা ইয়াসমিন এর ছবি

চবি প্রশাসনের বক্তব্য হল, মেয়েরা সন্ধ্যায় বাইরে থাকলে তাদের পাহাড়ে টেনে নিয়ে রেপ করা হবে। আর আমাদের বক্তব্য হলো, বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে সরব, সন্ধ্যার পরেও কোথাও উন্মুক্ত মঞ্চে নাটক হবে, কোথাও ছেলে মেয়ের দল গান গাইবে, কোথাও হবে পাঠচক্র!

মেয়েরা বাইরে যত সরব থাকবে, নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা কমবে। সেটা রাত বা দিন, যেটাই হোক।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।