ট্রেনে শেষমেশ ঊঠতে পেরে মতিন মিয়া হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। কাঁধের দুটো ঝোলা আর হাতে ধরা শাড়ির প্যাকেটটা নিয়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে সে তাল সামালাতে পারছিল না ভীড়ের মধ্যে । ট্রেন যখন চলতে শুরু করল তখন মরিয়া হয়ে সে দরজার হাতল লক্ষ্য করে ঝাঁপ দিল। একমুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিল হাত ফসকে সে বুঝি পড়েই যাবে ট্রেনের চাকার নীচে। এমনকি মৃত্যুভয়ে কেঁপেও উঠেছিল সে। ভাগ্য ভাল যে কিছু হয়নি আর ঝোলাও অক্ষত আছে। এগুলো নষ্ট হলে কেলেঙ্কারি হয়ে যেত একদম।
মতিন মিয়া প্রায় ছয়মাস পরে বাড়ি যাচ্ছে। তবে ছুটি নিতে অনেক ঝুলোঝুলি করা লেগেছে। সিকিউরিটি গার্ডদের ছুটি পাওয়া বেশ কঠিন।
“স্যার, বাচ্চার মুখ দেইখাই চইলা আসব। একটুও দেরী করব না। আমারে যাইতে দ্যান।”
“বাচ্চা তো হয়েই গেছে। এখন আর ঝামেলা কী? এখন গিয়ে কী লাভ?”
“স্যার, আর কেউ তেমন নাই দেখনের। পরিবারে নতুন মানুষ আসছে, আমি গ্যালে আমার পরিবার একটু ভরসা পায়। শুনছি পোলা হইছে।” মুখে হাসি রেখেই সে অনুরোধ করে যাচ্ছিল। তবে ভিতরে ভিতরে বুক যে দুরুদুরু করছিল না তা নয়। মালিক না বললে তার আর কিছুই করার নেই। আরও কিছুক্ষণ কাতর অনুরোধের পর অবশেষে অনুমতি মিলেছিল শর্ত সাপেক্ষে।
“ঠিক আছে যাও, শখ যখন হইছে। তবে এই কয়দিনের বেতন পাবা না। আর ফিরে এসে নেক্সট তিন-চার মাসে কোনও ছুটি নেই। ফিরতে দেরী হলে আর এখানে ফেরার দরকার নেই।”
মতিন মনে বেশ দুঃখ পেলেও, এর সবকিছুতেই সে রাজি। ছেলে হবার আনন্দে সে পাগল হয়ে গেছে। এবার আর তার চিন্তা কী। তাছাড়া কলিজার টুকরা মেয়েটাকেও কতদিন দেখে না সে। টুনটুনি এবার চার বছরে পা দিল। কতদিন মেয়েটাকে কোলে নেওয়া হয়নি। গতবার যেবার বিদায় নিয়ে আসল, তখনও পরীর বাচ্চাটা ছোট্ট ছোট্ট পায়ে কী সুন্দর দৌড়ে এসে ঝাঁপ দিত কোলে। এখন নিশ্চয়ই আরও একটু বড় হয়েছে। মুখে হয়ত আরও কিছু কথা ফুটেছে। এবার গেলে হয়ত আরও মধুর করে আব্বা বলে ডাকবে। সারাদিন টুনটুনি আর ফরিদার কথা চিন্তা করেই মতিনের সময় কেটে যায়। এখন এসেছে ছেলে। মতিন ভবিষ্যৎ ছুটির চিন্তা না করে বর্তমানের ছুটিকেই গুরুত্ব দিল বেশী। বাড়ি যাওয়ার জন্য ঝোলা গোছাতে গোছাতে তার নিজেকে মনে হয়েছিল পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ।
মতিন বেশ কিছুদিন ধরেই প্রস্তুতি নিয়েছে বাড়ি ফেরার। টুকিটাকি বিভিন্ন জিনিস কিনে এনে জমিয়ে রেখেছে ঝোলার ভেতর। বউয়ের জন্য সুন্দর একটা কমলা রঙের শাড়িও কিনেছে সে। ছেলেটাকে কোলে নিয়ে তার উনিশ বছরের বউটাকে কেমন দেখাবে তা এর মাঝেই বহুবার কল্পনা করা হয়ে গেছে মতিনের। টুনটুনির জন্য সে খুব সুন্দর একটা খেলনা পুতুল কিনেছে। চাবি দিয়ে ছেড়ে দিলে সেটা শব্দ করে নাচতে থাকে আর লাইট জ্বলতে থাকে। খেলনাটা প্রথমবার দেখেই মতিনের এত ভাল লেগেছিল যে কেনার পর নিজেও কয়েকবার একা একা চালিয়ে দেখেছে। টুনটুনি এটা দেখলে আনন্দে নেচে উঠবে।
স্টেশনে এত ভীড় হবে মতিন আগে বুঝতে পারেনি। কীসের জানি ছুটি পড়ে গেছে একসাথে, মানুষের ঢল নেমেছিল যেন শহরের বাইরে যেতে। তাই সাথের মালপত্র নিয়ে ট্রেনে উঠতে গিয়ে ভীড়ের মধ্যে তার বেশ কসরৎ করা লেগেছে। রাত না হলে আর সাথে কিছু না থাকলে সে অনায়াসেই ট্রেনের ছাদে উঠে যেতে পারত। তবে সে কয়দিন ধরেই একটু খুঁড়িয়ে হাটছে। বাসার মালিকের নতুন ডাইনিং টেবিল চারতলায় তুলতে গিয়ে সে চোট পেয়েছে। পায়ের এই ব্যথার জন্যও ট্রেনে ওঠা তার জন্য কঠিন হল।
ট্রেনে উঠে প্রথমেই মতিন একটা ফাঁকা জায়গা খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে লাগল। সীট পাবার তো প্রশ্নই আসে না। কোনমতে একটু পিঠ ঠেক দেওয়ার জায়গা পেলেই নিশ্চিন্তে দু’চোখ বন্ধ করে রাতটা পার করে দেওয়া যায়। মতিন লাফ দিয়ে চলন্ত ট্রেনে উঠেছিল, কিন্তু এখন আবার কেন জানি ট্রেনটা থামিয়েছে। চারিদিকে মানুষের চিৎকার আরও বেশী করে শোনা যাচ্ছে। মতিন আমলে নিল না। সে কোথাও একটু বসতে পারলেই খুশী।
ট্রেনের এই কামরাটা কেমন জানি বেশী অন্ধকার। কোথাও কোনও লাইট জ্বলছে না। সবকিছু অন্ধকারে ছায়ার মত দেখাচ্ছে। মতিনের বেশ রাগ হল, কিচ্ছু ঠিকমত দেখার উপায় নেই। সবগুলো লাইট কি একসাথে নষ্ট হয়ে গেছে? কিংবা লাইনে কি কোনও সমস্যা হয়েছে? অন্ধকার কামরায় মতিন নিজের হাতের ঝোলাগুলোও ঠিকমত দেখতে পারছিল না। তবে অনুভবে বুঝতে পারছিল যে সেগুলো ঠিক আছে। অন্ধকারে মতিন ঠিকমত এগোতেও পারছিল না। মনে হচ্ছিল কেউ না কেউ তার পথ রোধ করছে।
মতিন অবশেষে বসতে পারল এক কোনায়। ঝোলাগুলো কোলের মধ্যে আঁকড়ে রেখে গুটিসুটি হয়ে বসল সে। ট্রেন আবার চলতে শুরু করেছে, সেই দুলুনিতে আরামে মতিন দুই হাঁটুর মাঝে মাথা গলিয়ে দিল। আধো ঘুমে তার চোখে যেন নিজের পুরো জীবনের দৃশ্যগুলো খেলা করে যেতে লাগল। ছোটবেলার হাড়ভাঙা খাটুনি, টুকটাক পড়াশোনা, ক্ষেতের কাজকর্ম, ঢাকায় প্রথম পা রাখা অবাক বিস্ময়ে, এখানে সেখানে লাথি খেয়ে বেড়ানো, গার্ডের রাতজাগা জীবন, ফরিদার সাথে বিয়ে, আরও কতকিছু। ফরিদার কথা মনে পড়ায় মতিনের বয়স যেন কমে গেল আরও কয়েকবছর। তার জীবনের সব কষ্টগুলো সার্থক মনে হয় যখন তার মনে হয় যে ফরিদার মত বউ তার সংসার সামলাচ্ছে। তার কলিজার টুকরা টুনটুনিকে তো বলতে গেলে ফরিদা একাই মানুষ করছে। সে নিজে ছুটি পায় না বেশী। মতিনের জীবনে এখন একটাই স্বপ্ন, হাতে কিছু টাকা জমিয়ে গ্রামে ফিরে যাওয়া। জমি কিনবে সে কিছু। ক্ষেত থেকে ক্লান্ত হয়ে ফিরে যখন সে দাওয়ায় বসবে, ফরিদা তখন পাকঘরে ব্যস্ত। মেয়েটা তখন ডাগর হয়েছে, আব্বাজান আব্বাজান করে ছুটে এসে হাতমুখ ধোওয়ার পানি এগিয়ে দেবে। মতিন তার সদ্যজাত ছেলের মুখ দেখেনি এখনও। তবে কল্পনায় সে যেন এখনই দেখতে পারছে ছেলেটা বুঝি বই বুকে জড়িয়ে স্কুল থেকে ফিরছে। এইসব সুখচিন্তায় মতিনের বুক ভরে যায়। সে আরও শক্ত করে ঝোলাগুলো আর শাড়ির প্যাকেট আঁকড়ে ধরে ।
গতবার ঢাকায় আসার সময় ফরিদা কান্নাকাটি করে অস্থির করেছিল। পোয়াতি ছিল তো, মন ছিল বেশী নরম। মতিনেরও একদম পা সরছিল না যেতে। তার নিজের বুকও ভেঙে আসছিল। বউটা বাচ্চা পেটে নিয়ে একা একা কতদিক দেখবে? সে কাছে থাকলে তাও টুকটাক কাজ এগিয়ে দিতে পারত। সে নিজের কান্না গিলে বলেছিল,
“ও টুনটুনির মা, কান্দো ক্যান এত? পথে নামতাছি, এখন কান্নাকাটি করন ঠিক না। কী আনমু তোমার লাইগা সেইডা কও দেখি।”
ফরিদা আঁচলে কান্না ঢাকতে ঢাকতে বলেছিল,
“আমার কিছু লাগব না, আপনি তাড়াতাড়ি ফিইরা আইসেন।”
মতিন আর কিছু বলতে পারে না। তার ভয় হয়, বেশী কিছু বলতে গেলে তার নিজের গলাই ভেঙে যাবে। তার আদরের ধন টুনটুনি তার কোলে চড়ে ছোট্ট দুই হাত দিয়ে গলা জড়িয়ে রাখে। ওই একরত্তি মেয়েটাকে কোল থেকে নামাতে গিয়ে মনে হয়েছিল যেন পৃথিবীর সবচেয়ে ভারী জিনিস সে নামাচ্ছে। তবু বুকের পাথর বুকে চেপেই মেয়েটাকে নামাতে হয় কোল থেকে। দুই পা এগোতেই সে ‘আপ-পা’ বলে ছুটে আসে। ঢাকায় ফিরে মতিন ঠিকমত খেতেও পারে না বেশ কয়েকদিন, খেতে বসলেই তার মন খারাপ হয়ে যায়। তার পাত থেকে মেয়েটা এটা সেটা নিয়ে মুখে দিত, সেই দৃশ্য মনে পড়তেই তার গলা দিয়ে আর খাবার নামে না।
ফরিদা নিজে মুখ ফুটে কিছু না চাইলেও মতিন বোঝে, হাতে করে কিছু এনে দিলে সে কত খুশী হয়। কতই বা বয়স হয়েছে ফরিদার? কতটুকুই বা সে দিতে পেরেছে তার তিল তিল করে জমানো কষ্টের টাকায়। ভাল একটা শাড়িও কখনও দেওয়া হয়ে ওঠেনি। তবে এবারের কমলা শাড়িটা মতিন খুব শখ করে কিনেছে। কেনার সময় অবশ্য বুকটা খচখচ করছিল এতগুলো টাকা গুনে দিতে। তবে ব্যাপার না, ফরিদা এতদিন কষ্ট করে তাকে ছেলের বাপ বানিয়েছে, এই শাড়ি তার পাওনা। মতিনের ক্ষমতা থাকলে নিশ্চয়ই সে রাজরানীর মত করে ফরিদাকে রাখত।
মতিনের কেন জানি ঘুম আসছে না আজকে। সাধারণত ট্রেনে উঠে কোথাও কাত হতে পারলেই তার ঘুম আসতে সময় লাগে না। আজকে কেমন জানি একটা অস্বস্তি লাগছে। একটা কারণ কি কামরার এই অস্বাভাবিক অন্ধকার? মতিন কি ভুল কোনও কামরায় উঠেছে? কিন্তু ওঠার সময় তো ঠিকই দেখেছে মানুষ হুড়মুড়িয়ে এই কামরায় ওঠারই চেষ্টা করছে। সে নিজেও উঠতে গিয়ে পড়তে পড়তে বেঁচে গেছে।
অন্য যাত্রীদের কথা কানে আসছে এখন কিছু কিছু। মতিন এবার ঘুমানোর চেষ্টা করল। তার হিসাবে আরও প্রায় ছয়ঘন্টা বাকি রাতের। নিশ্চিন্তে এক ঘুম দেওয়া যায়।
মতিন অবশ্য ঘুমাতে পারল না। তার খুব কাছেই এক যাত্রী ফোনে আলাপ শুরু করেছে। যে ভঙ্গীতে কথা শুরু হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে না সহজে এই ফোনালাপ শেষ হবে। সাধারণত এইসবে মতিনের ঘুমের কোনও সমস্যা হয় না। এর চেয়ে অনেক বাজে পরিবেশেও তাকে ঘুমানোর অভ্যাস করে নিতে হয়েছে। কিন্তু আজকে কেন জানি পারছে না। নৈঃশব্দের মাঝে মতিন ফোনের অপর প্রান্তের কথাও যেন পরিষ্কার শুনতে পারছিল। একটা মেয়ে মিষ্টি গলায় গান শোনাচ্ছে। মতিনের ফরিদার কথা মনে পড়ল, ফরিদা খুব সুন্দর গান গায়। কিন্তু লজ্জায় মুখ খুলতেই চায় না। বিয়ের পর পর মতিনকে কত কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে ফরিদার গলা খোলার জন্য। এখন অবশ্য ফরিদা নিজেই নিজের খেয়ালে গেয়ে ওঠে ঘরের কাজ বা রান্না করতে করতে। রাতে টুনটুনিকে কোলে শুইয়ে ফরিদা যখন ঘুম পাড়ানি গান গাইত,
“মা এসেছে, মা বসেছে আঁচল ছুঁয়ে থাকি
দূর হয়ে যাক, দূর হয়ে যাক অন্ধকারের পাখি।”
তখন নিজের ঘরকে যেন স্বর্গ মনে হত মতিনের। এক জীবনে কি খুব বেশী কিছু লাগে? মতিনের মনে হচ্ছে ফরিদা এখন গান গাইলে ট্রেনের কামরার এই অন্ধকারও কেটে যেত।
ফোনের মেয়েটা গান শেষ করেছে। এখন এ প্রান্তের যাত্রীর গলা পাওয়া যাচ্ছে। মতিনের মনযোগ সেদিকে সরে গেল।
“আচ্ছা, তুমি এত ভাল গান গাও কেন?”
অপর প্রান্তে খিলখিল হাসির শব্দ পাওয়া গেল।
“গান না, ছাই।”
“না সত্যিই। আমার ইচ্ছা হয় কি জানো? ইচ্ছা হয় কোনও একদিন তোমার কোলে মাথা রেখে গান শুনতে শুনতে মরে যাই।”
“আমি আর জীবনেও তোমাকে গান শোনাব না!”
“হা হা হা, রাগ করে না লক্ষ্মী মেয়ে। তোমার গান না শুনলে আমি এমনিই মরে যাব!”
“এসব আজে বাজে কথার মানে কী? কে তোমাকে এত মরতে বলেছে?”
“জীবন আর কয়দিনের বল? কার কখন কী হয়ে যায় কেই বা জানে...।”
“তোমার হয়েছেটা কী? কবি ছিলে জানতাম কিন্তু এখন দার্শনিক হয়ে গেছ?”
“না, আসলে মনটা খুব খারাপ হয়ে আছে। তোমাকে তো বলা হয়নি।”
“কী হয়েছে?”
“আজকে ট্রেনে ওঠার সময় খুব খারাপ একটা ঘটনা ঘটেছে। ভীড় ছিল খুব, ধাক্কাধাক্কি করে উঠতে গিয়ে একটা লোক নীচে পড়ে গেছে।”
“ওমা, সে কী! তারপর?”
“গরীব মানুষ, বয়সও খুব বেশী না। সাথে কী সব ব্যাগ আর একটা শাড়ি ছিল। ট্রেন ততক্ষণে ছেড়ে দিয়েছে, ঝাঁপ দিয়ে উঠতে গেল আর হাত ফসকে চোখের পলকে চাকার তলে চলে গেল। তারপর যা হয় আর কী।”
“ইশ! লোকটা কাটা পড়ল?”
“হুম। ট্রেন অবশ্য থামিয়েছিল কিছুক্ষণের জন্য। আমিও নামলাম দেখতে। সে দৃশ্য চোখে দেখা যায় না।”
“থাক ওটা নিয়ে আর ভেব না।”
“কী অদ্ভুত জানো? লোকটা পড়ে আছে ওইভাবে কিন্তু তখনও তার হাতে ধরা সেই ব্যাগগুলো। রক্তে মাখামাখি। একটা খেলনা পুতুল ব্যাগ থেকে বের হয়ে ছিটকে পড়েছে, কোথাও চাপ লেগে সেটা চালু হয়ে গেছে। লোকটার নীথর দেহের পাশে পুতুলটা কাত হয়ে পড়ে কেঁপে কেঁপে উঠছে। আমি কিছুতেই ভুলতে পারছি না।”
“প্লীজ আর বলো না। আমি আরেকটা গান শোনাই তোমাকে?”
“হ্যাঁ, শোনাও। আমার মনটা ভাল করে দাও পারলে।”
মেয়েটা হয়ত আরেকটা গান শুরু করল, তবে মতিন মিয়ার কানে আর সেই গান ঢুকল না। সে খুব ব্যাকুল হয়ে তার হাতের ধরে রাখা শাড়িটা আর ঝোলাগুলো দেখতে চাইল। চারিদিকে তখন ভীষণ অন্ধকার। মতিন মিয়া কিছুই দেখতে পেল না, সে অন্ধকারে ডুবে রইল।
-সীমান্ত রায়
www.facebook.com/shimantars
মন্তব্য
আপনার লেখার হাত ভাল, তবে এটা বেশ পরিচিত এবং গতানুগতিক গল্প। প্রথম অনুচ্ছেদ পড়েই বোঝা যাচ্ছিল গল্পটা কিভাবে শেষ হতে যাচ্ছে। আরও লিখুন।
Emran
অনেক ধন্যবাদ ভাই পড়ার জন্য। আসলে গল্পটা সাধারণই, এমন কাঠামোও খুব বিরল নয় সাহিত্যে। লেখার সময় আমি শুধু ভেবেছি খুব আবেগপ্রবণ আর ছাপোষা একটা মানুষ হারিয়ে গেল নিমেষেই এটা কীভাবে লেখা যায়। প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ পথে হারিয়ে যায়, আর বাড়ি ফেরা হয় না কখনও। সেই অনুভূতিটা ধরতে চেয়েছি, তাদের গল্প তো সচরাচর পাই না। এগুলো যেন আমরা দেখেও দেখি না। প্রতিদিনই গড়ে দশজনের মৃত্যুর খবর পাচ্ছি সংবাদপত্রে, আমরা নির্বিকার। তাই গল্পটা একটু অন্যভাবে সাজাতে চেয়েছি, যদি একটু ধাক্কা লাগে। যাদের পড়ার অভ্যাস কম তাদের জন্য শুরুর দিকে একটু রিলেশন রাখতেই হত, নাহলে একদম অন্যভাবেও শুরু করা যেত। লেখা চলবে।
---সীমান্ত রায়
জীবন তো গতানুগতিকই। উলট পালট করে দেওয়ার মতো কীই বা আর এমন ঘটে। গতানুগতিক জীবনটাকেই লেখকেরা নতুন নতুন রূপে দাঁড় করিয়ে দেন আমাদের সামনে। Emran এর সাথে একটা ব্যাপারে আমি একমত, আপনার লেখার হাত ভালো। লিখে চলুন সীমান্ত রায়। কেন যেন মনে হচ্ছে আপনার লেখা সচলায়তনে এর আগেও পড়েছি!।
---মোখলেস হোসেন।
আপনি কি জানেন আমি আপনার লেখার জন্য কী আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করি? আপনার লেখার সাথে আগে আমার পরিচিতি ছিল না কিছুদিন আগেও, অমিয়র গল্প পড়ার পর থেকে আমি খুঁজে খুঁজে আপনার লেখা সব বের করে পড়েছি। আপনার লেখার যে সাবলীলতা আর গল্পের যা গতি তা আমার মুগ্ধতা শুধু বাড়িয়েই চলে। আমার অফিসে নির্দিষ্ট কিছু সাইট ছাড়া রেস্ট্রিক্টেড বাকি সব। কিন্তু এক অলস সময়ে এমনই ইচ্ছা করছিল আপনার লেখা পড়ার যে গুগল ক্যাশ মেমোরি থেকে নানা কসরৎ করে সার্চ ইনডেক্স থেকে শুধু টেক্সট ফরম্যাটে সচল খুলে আপনার লেখা পড়েছি গোগ্রাসে। আমি একটু মুখচোরা, তাই কমেন্টে গিয়ে কিছু বলা হয়নি এতদিনেও। অন্য অনেকের মত আমিও অনুরোধ করছি, প্লীজ আরেকটু সময় বের করুন, লেখাগুলো শেষ করুন। এবারের বইমেলায় কি কিছু আসবে আপনার?
আপনি যে আমার লেখা আগেও পড়েছেন বা এটাও পড়লেন এটা আমার কাছে খুব বড় আনন্দ আর সম্মানের ব্যাপার। আসলে খুব গতানুগতিক একটা গল্পই বলতে চেয়েছি। প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ পথে হারিয়ে যায়, আর বাড়ি ফেরা হয় না কখনও। সেই অনুভূতিটা ধরতে চেয়েছি, তাদের গল্প তো সচরাচর পাই না। এগুলো যেন আমরা দেখেও দেখি না। প্রতিদিনই গড়ে দশজনের মৃত্যুর খবর পাচ্ছি সংবাদপত্রে, আমরা নির্বিকার। তাই গল্পটা একটু অন্যভাবে সাজাতে চেয়েছি, যদি একটু ধাক্কা লাগে।
আমার গল্পে এখনও গতানুগতিক জীবন বেশী স্বাচ্ছন্দ্য পায়, যদিও আমার মূল ভালোবাসা ফ্যান্টাসিতে। এখনও হয়ত অত সাবলীল হতে পারিনি তাই ফ্যান্টাসি কম আসছে। কিন্তু দূরে যেখানে চোখ দিয়ে রেখেছি, সেটা ফ্যান্টাসিনির্ভরই হবে।
---সীমান্ত রায়
আপনার এই মন্তব্যের পর আমি রীতিমত বাক্যহারা। অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ সীমান্ত রায়।
---মোখলেস হোসেন।
Emran এর সাথে সহমত। এন্ডিং ধারণা করা যাচ্ছিল।
লিখে চলুন। পরের গল্পে এন্ডিং লুকিয়ে রাখবেন
..................................................................
#Banshibir.
অনেক ধন্যবাদ ভাই পড়ার জন্য। আসলে গল্পটা সাধারণই, এমন কাঠামোও খুব বিরল নয় সাহিত্যে। লেখার সময় আমি শুধু ভেবেছি খুব আবেগপ্রবণ আর ছাপোষা একটা মানুষ হারিয়ে গেল নিমেষেই এটা কীভাবে লেখা যায়। প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ পথে হারিয়ে যায়, আর বাড়ি ফেরা হয় না কখনও। সেই অনুভূতিটা ধরতে চেয়েছি, তাদের গল্প তো সচরাচর পাই না। এগুলো যেন আমরা দেখেও দেখি না। প্রতিদিনই গড়ে দশজনের মৃত্যুর খবর পাচ্ছি সংবাদপত্রে, আমরা নির্বিকার। তাই গল্পটা একটু অন্যভাবে সাজাতে চেয়েছি, যদি একটু ধাক্কা লাগে। যাদের পড়ার অভ্যাস কম তাদের জন্য শুরুর দিকে একটু রিলেশন রাখতেই হত, নাহলে একদম অন্যভাবেও শুরু করা যেত। লেখা চলবে। এন্ডিং নিয়ে গবেষণাও চলবে!
---সীমান্ত রায়
আসলেই মন খারাপের। এই গল্পটা আমি সচলে দিয়েছিলাম বেশ কিছুদিন আগে, আজ প্রকাশ হল। এর মাঝে যখন ফেসবুকে গল্পটা দিয়েছিলাম তখন কত মানুষ যে আমাকে গালাগাল করেছে যে কেন আমি শেষমেশ মেরে ফেললাম, কেন মানুষটা পৌছাতে পারল না তার পরিবারের কাছে। কিন্তু আমি চাইলেই কি আর বাঁচিয়ে দেওয়া যায়! প্রতিবছর হাজারো মানুষ পথ থেকে হারিয়ে যায় চিরতরে, আর বাড়ি ফেরা হয় না। সেই অনুভূতি নিয়ে কোনও গল্প তেমন দেখিনি, যেন আমরা চোখ বুজে আছি। তাই একটু ধাক্কা দিতে চেয়েছিলাম, আবেগের বিন্যাস ঘটিয়ে তার মৃত্যু।
---সীমান্ত রায়
গল্পের দৃশ্যায়ন পরিষ্কার ছিল। চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিলাম মনে হচ্ছিল। শেষটায় মন খারাপ করে দিলো।
এ্যানি মাসুদ
অবশ্যই প্লট এবং পরিণতি অসাধারণ নয়। তবে সেই দুর্বলতা কেটে যাবে - এই আশা রাখছি। লিখতে থাকুন হাত খুলে।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
নতুন মন্তব্য করুন