কেন গড়ে ওঠে শহর?
কে গড়ে তোলে শহর?
কে বা কি গড়ে দেয় শহরের মূল কাঠামো আর অবয়ব?
প্রশ্নগুলো বহু শতাব্দি প্রাচীন। তবে উত্তরগুলো আর আগের মতো ক’রে দেওয়ার উপায় নেই। ইতিহাসের পুরাতন শহরগুলো গড়ে ওঠার কারণ ছিলো নানাবিধ। প্রাচীন মিশরের থিবস, মেমফিস কিংবা আলেকজান্ড্রিয়ার বড় শহর হ’য়ে ওঠার কারণ একই ছিলো না। সিন্ধু সভ্যতার হরপ্পা কিংবা মহেনজোদারো শহরগুলোর গড়ে ওঠা আর বিলুপ্তির কারণও বেশ ইউনিক বা অনন্য বৈশিষ্ট্যযুক্ত। বল্লাল সেনের আর প্রতাপাদিত্বের শহরও বলে ভিন্ন ভিন্ন গল্প, একই বাংলার অংশ হ’য়েও।
একসময় সংকর-ধাতু ব্রোঞ্জের উপর নির্ভর ক’রে মানুষ বেশ কার্যকর অস্ত্রশস্ত্র বানাতে শুরু করে। একই সময়ে চাষাবাদের কাঠের উপকরণে ধাতুর প্রলেপ যুক্ত হ’তে শুরু করে। তাতে মাটি খোড়া সহজতর হয়। ফলে ফসলের উৎপাদন বাড়ে। বাড়তে থাকে মানুষের আবাদ আর আবাস দুইই। ততদিনে পৃথিবীর নানা প্রান্তের মানুষ প্ল্যান্ট ডমেস্টিকেশন বা গাছের গৃহপালিত-করণে বেশ সফল হ’য়েও উঠেছে। মনে রাখা দরকার আবাদ শুরুর আগে স্থায়ী আবাস তৈরী করা মানুষের পক্ষে একরকম অসম্ভবই ছিলো। আবাদ শুরু করার আগে মানুষকে নিতে হ’য়েছে হাজার হাজার বছরের প্রস্তুতি আর পর্যবেক্ষনজাত সিদ্ধান্ত। মানুষ দেখেছে শর্করা বা কর্বোহাইড্রেটের উপর মানুষের বেঁচে থাকাটা কতটা নির্ভর করে। কিন্তু যেসব গাছ থেকে শর্করা পাওয়া যায় তারা বড্ড অদ্ভুত। কিছু ঘাস জাতীয় উদ্ভিদের বীজ আর মাটির নিচে হওয়া আলুতে একে পাওয়া যায় বেশ ভালো পরিমাণে। বাংলাদেশের সিলেট, ভারতের আসাম কিংবা চীনের ইউনানের মানুষেরা এক ধরণের ঘাসের সন্ধান পায় মোটামুটি হাজার বিশের বছর আগে। নাম দেয় ধান। বিজ্ঞানীরা বলেন সেই সময় ধানের শীষে ২/৩ টার মতো ধান হ’তো। সেই ধানগাছকে দীর্ঘ সময় ধরে সিলেকটিভ ব্রিডিং ক’রে ক’রে মানুষের তাকে আবাদযোগ্য ক’রে তোলার পরেই সম্ভব হয়েছে এই সব অঞ্চলে চাষবাসের গোড়াপত্তন করার। কাছাকাছি সময়ে মধ্য এশিয়া আর য়ুরোপের মানুষেরা যব আর গমকে বাগে এনেছিলো। উত্তর আমেরিকার মানুষেরা ভুট্টা বা কর্ন আর দক্ষিণ আমেরিকার মানুষেরা নানা ধরণের আলুকে চাষযোগ্য ক’রে তুলেছিলো ইতিহাসের নানা পর্যায়ে। এখনো পর্যন্ত পৃথিবীর মানুষের কাছে এই ধান, গম, যব, ভুট্টা আর আলুই শর্করা জাতীয় খাদ্যের মূল উৎস।
আর একটা খুব দরকারী জিনিস ছিলো লবণ। উষ্ঞ রক্তের প্রাণী হওয়ায় লবণ ছাড়া মানুষের পক্ষে শরীর গরম রাখা সম্ভব হয় না। সে লবণ নানা ধরণের হ’তে পারে। হ’তে পারে খনিজ লবণ, হ’তে পারে সমুদ্রের পানি থেকে পাওয়া লবণ কিংবা অন্য কোনো উষ্ঞ রক্তের প্রাণীর রক্ত আর মাংসে থাকা লবণ। ফলে আবাদ আর আবাস এমন জায়গাতে গড়ে তুলতে হ’তো যেখানে লবণের নিশ্চয়তাও পাওয়া যায়। ফলে শুধু নদী থাকলেই বসতি গড়ে তোলা সম্ভব হ’তো না মানুষের পক্ষে। বসতি গড়ে তোলার জন্য চাই নেভিগেবল বা নৌকা-চলার-উপযোগী নদী। যে নদীর মাধ্যমে প্রয়োজনীয় লবণ সারাবছর আনা-নেওয়া করা যেতো। মানুষের গৃহপালিত বেশির ভাগ প্রাণীর জন্যও লবণের এই ব্যাপারটা সত্য। লবণের সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে গরু-ছাগল-মুরগী কাউকেই হয়তো গৃহপালিত করা যেতো না। গরু ঠিক কতটা বুদ্ধিমান প্রাণী জানি না, তবে লবণ যোগাড় করার পরিশ্রমসাধ্য কাজটা যে মানুষের ঘাড়ে সেই প্রাচীন কালেই তারা চাপিয়ে দিয়েছিলো তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তাতে তাদের বেশ কিছু স্বাধীনতা স্যাক্রিফাইস করতে হ’লেও গড়পড়তা গরুদের দৈনন্দিন জীবন যে সহজতর হয়েছিলো তা মানতেই হবে, এমনকি গরুদেরকেও।
এখন বলা যায় যে দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর আমরা মোটামুটি জানি। যেসব মানুষ শর্করা আর লবণের উৎস নিশ্চত করতে পেরেছে তারাই প্রথমে গড়ে তোলে আবাস, পরবর্তীতে গ্রাম; আরো আরো পরবর্তীতে শহর। কিন্তু নিশ্চিত ভাবেই তাদের সবাই নয়। ইতিহাসের সব গ্রাম শহরে রূপান্তরিত হয়নি। বা সব গ্রামের মানুষ তাদের গ্রামকে শহর বানিয়ে ফেলেনি বা ফেলতে চায়নি বা হয়তো পারেওনি। এখানে এসেই উত্তরটা আবার যেন একটু ধোঁয়াটে হ’য়ে ওঠে। যদি জানা যায় কেন গড়ে ওঠে শহর তাহ’লে হয়তো সেই ধোঁয়ার খানিকটা সরিয়ে দেওয়া যায়।
সহজ ক’রে ব’লতে গেলে ব’লতে হয়, শহর গড়ে ওঠে বাড়তি কিছু সুবিধা তৈরীর জন্য, বাড়তি কিছু নিশ্চয়তা গড়ে তোলার জন্য, বাড়তি কিছু সেবা পাওয়ার জন্য; যে সুবিধা, নিশ্চয়তা কিংবা সেবা শুধু বসতি বা গ্রাম থেকে পাওয়া যায় না। পাওয়া যায় না কারণ অল্প মানুষের বসতি কিংবা আয়োজন দিয়ে এমনতরো সুবিধা, নিশ্চয়তা কিংবা সেবাকে টেকসই বা ভবিষ্যসহ করা যায় না। অনেকগুলো বসতির মানুষ মিলে তাই গড়ে তুলতে হয় কোনো একটা শহর। শহর তাই মূলগত ভাবে সেবা আর সুযোগের উৎপাদক। সেই সাথে তার চারপাশের গ্রামগুলোতে উৎপাদিত প্রাথমিক পণ্যের বড়সড় ভোক্তা। সেই অর্থে গ্রামের প্রয়োজনেই শহরের গোড়াপত্তন। আবার গ্রামের প্রয়োজনেই শহরের রূপান্তর।
যে ধরণের প্রয়োজন মেটানোর তাগিতে কোনো শহর গড়ে ওঠে তার চরিত্রে বা বৈশিষ্ট্যে সেসব প্রয়োজনের বেশ কিছু ছাপ তাই থেকে যায়। আবার শহর বা শহরের মানুষের কোনো কিছু ভোগ করার ধরণও এক্ষেত্রে কম ভূমিকা রাখে না। শহরের মানুষের প্রধান খাবার কি, পোশাকের ধরণ কেমন, বাড়িঘরের উপকরণ কেমন (মাটি, কাঠ, বাঁশ, ইট, পাথর ইত্যাদি) তা মোটামুটি নির্দিষ্ট করে দেয় শহরকে ঘিরে রাখা গ্রামগুলোই; তাদের সরবরাহ করা উৎপাদিত পণ্যগুলোর মাধ্যমে।
বহু শতাব্দির ব্যবধানে হয়তো আস্তে আস্তে কিছু কিছু শহরের ভেতরে যোগাযোগ গড়ে উঠতে থাকে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিই সম্ভবত মূল ভূমিকা রেখেছিলো তাতে। বড়সড় নৌকা বা জাহাজ কিংবা চাকা-বসানো গাড়ি আবিষ্কার করার পর মানুষের পক্ষে আরো দূরের দূরত্বে যোগাযোগ করা সহজ হয়। কিন্তু শুধু প্রয়োজনের নিরিখে হয়তো এই নতুন উপযোগকে বহুল ব্যবহার করার যৌক্তিকতা পাওয়া যাবে না। সে যৌক্তিকতা তৈরীর জন্য চাই নতুন কোনো ভাবনা, নতুন কোনো আইডিয়া। প্রয়োজন নতুন কিছু টুল বা আয়ুধ- ধর্ম, ভাষা, সাম্রাজ্য।
আমাদের আজকের দৃশ্যমান সবগুলো শহরের পেছনে এই পুরাতন ভাবনাগুলো তো ক্রিয়াশীল আছেই, সেই সাথে যোগ হ’য়েছে আরো হাজারো ভাবনা, হাজারো চাহিদা। আর তাই আজকের শহর অতীতের যে কোনো সময়ের বেশিরভাগ শহরের চেয়ে জটিল; অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বিশৃঙ্খল আর অধিক বৈচিত্র্যে ভরপুর। ফলত অনকটাই দুর্বোধ্য।
এই প্রেক্ষাপটে উপরের প্রশ্নগুলো ঢাকার জন্য ক’রলে কেমন হয়?
কেন গড়ে উঠেছে ঢাকা শহর?
কে গড়ে তুলেছে রাজধানী ঢাকা?
কি দিয়ে গড়া ঢাকা শহরের অবয়ব?
খুব সংক্ষেপে এই প্রশ্নগুলোর সর্বজন গ্রহণযোগ্য উত্তর দেওয়া যাবে না ব’ললেই চলে। কিন্তু তাই ব’লে প্রশ্নগুলোকে এড়িয়ে যাওয়াটাও ঠিক হবে না হয়তো, যদি সামনের দিকে আগাতে চাই। উত্তরগুলো হয়তো একই রকম হবে না সব/সবার পরিপ্রেক্ষিত থেকে। কিছু বিতর্ক, কিছু সন্দেহ, কিছু মন-গড়া রোম্যান্টিসিজম থেকেই যাবে। রাজনীতিকের উত্তরের সাথে প্রকৌশলী আর পরিকল্পকের উত্তর মিলবে না। নাগরিকের উত্তরের সাথে মিলবে না শাসকের উত্তর। ব্যবসায়ীর উত্তরের সাথে ভোক্তার উত্তর। উৎপাদকের সাথে মধ্যসত্ত্বভোগীর উত্তরও আলাদাই হবে। আলাদা হবে ঐতিহাসিক আর অর্থনীতিকের উত্তরও। কিন্তু সবার উত্তর নিয়েই গড়ে ওঠে কোনো একটা শহরের সামগ্রিক বয়ান বা ন্যারেটিভ। আজকের দিনের শহরগুলো অন্য শহরগুলোর থেকে আলাদা হ’য়ে ওঠে তার এই বয়ানের পার্থক্যের জন্যই মূলত।
তার কারণও মোটামুটি জানা। সবকিছুর অতিপ্রমিতকরণ। তাতে গঠনপ্রক্রিয়া দ্রুত করা গেলেও বৈচিত্রের প্রশ্নে বেশ বড়সড় একটা ছাড় দিতেই হয়েছে। আবার জাহাজীকরণে কন্টেইনারের ব্যবহার শুরু হওয়ার পর থেকে স্থানীয় নির্মাণ-উপকরণ ব’লে আর যেন কিছু থাকলো না। আজ সহজেই ইটালির মার্বেল দিয়ে ঢাকার ভবনের মেঝে সাজানো যায়। ঢাকায় সেলাই করা কাপড় পৃথিবীর সবখানে সহজেই পারা যায়। ভারতে উৎপাদিত টিকা নিতে পারে এখন সব মহাদেশের মানুষ। এক কন্টেইনারাইজেশনই সংকুচিত ক’রে এনেছে পৃথিবীর শহরগুলোর হাজারো বৈচিত্রের সুযোগ, যা কিনা পণ্য যোগাযোগের মাত্র একটা মাধ্যম। যখন একসাথে আরো অনেকগুলো মাধ্যমকে বিবেচনা করা হবে তখন দেখা যাবে একুশ শতকের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো যেন খুব কাছাকাছি লয়ে কথা বলে, হয়তো সকলে মিলে একই কথাও বলে। সমস্ত মানুষের স্বার্থগুলো, ভাবনাগুলো যেন সব এক হ’য়ে গিয়েছে একুশ শহকের শহরে এসে। আবার হয়তো যায়ওনি, খুব খেয়াল করলে তা হয়তো বোঝা যায়... ডেভিলস রাইট দেয়ার রাইট দেয়ার ইন দ্য ডিটেইলস... (Fink এর লুকিং ঠু ক্লোজলি থেকে... https://www.youtube.com/watch?v=qoWRs7lXtYE)
তাই শেষ বিচারে প্রতিটা শহরই আলাদা। প্রতিটা শহরের শব্দ আলাদা। প্রতিটা শহরের আকাঙ্ক্ষা আলাদা। প্রতিটা শহরকে একই ভাবে তাই পাঠ করা যায় না। যায় না তার অতীতের কারণে। যায় না শহরের মানুষগুলোর কারণে। যায় না মানুষগুলোর বসবাসের ধরণের বৈচিত্র্যের কারণে। মানুষের বসবাসের ধরণের দৃশ্যমান বৈচিত্র্য শহরের আবাসিক ভবনগুলোর চেহারা গড়ে দেয় অনেকটাই। অনেকেই তাই ব’লতে চান, আবাসিক ভবনগুলোই গড়ে দেয় শহরের অবয়ব। কেউ কেউ অবশ্য শহরের রাস্তাগুলোর কথা প্রথমে বলেন। হয়তো শহরের অবয়ব গড়তে এই দুইয়ের ভূমিকাই সবার আগে আসে। কিন্তু শহর তো সভ্যতার উপযাত আর সভ্যতার জন্য চাই খানিকটা হ’লেও রাখঢাক কিংবা পোশাক। সভ্যতার সবকিছু তো আর প্রকাশ করা যায় না; তার অনেক কিছুই লুকিয়ে রাখতে হয়। একটা ভালো শহর জানে তার কতটা লুকিয়ে রাখতে হবে আর কতটা প্রকাশ করতে হবে আগন্তুকের কাছে।
শহরের তাই ভেতরের কাঠামো আর পোশাকী অবয়বে পার্থক্য অনিবার্য। শহরের আগন্তুকের কাছে সেটা সবসময় ধরা না পড়লেও শহরের নিয়মিত বাসিন্দাদের চোখে তা ধরা পড়তে বাধ্য। আগন্তুক হয়তো দেখে পরিস্কার রাস্তা। শহরবাসী জানে রাস্তা পরিস্কারের কাজ করা গরীব আর নোংরা মানুষগুলোর কথা। আগন্তুক হয়তো দেখে কোনো একটা উদ্যানের গাছ না কাটার জন্য একদল শহরবাসী আন্দোলন করছে। আর শহরবাসীরা জানে তারা নিজেদের বাড়ির সামনের সব গাছ কেছে ফেলেছে এতদিনে, তাই উদ্যানটার গাছগুলো বাঁচিয়ে রাখা তাদের জন্য কতটা দরকারী। আগন্তুক দেখে প্রতিটা ভবনের চারপাশে উঁচুউঁচু দেওয়াল, ফলে নিরাপদ শহর। শহরবাসী জানে এক ভবনের বাসিন্দা পাশের ভবনের বাসিন্দাকে কতটা অবিশ্বাস করে।
দিন শেষে শহরের কিছুই কি আর গোপন থাকে? অন্তত যে বা যারা প্রতিনিয়ত গড়ে চলেছে তাদের নিজেদের শহরটাকে? সব কিছু প্রকাশ হ’য়ে গেলে কি আর সভ্যতা থাকে?
(রাজীব রহমান)
মন্তব্য
ডোমেস্টিকেশনের বেশ লাগসই বাংলা বিকল্প দেখেছিলাম, নিবশন। গৃহপালিত শব্দটা ডোমেস্টিকেইটেডের (নিবশিত) বিকল্প হিসেবে ছোটবেলা থেকে পড়ে আসছি, জ্যারেড ডায়মণ্ডের "গানস, জার্মস অ্যাণ্ড স্টিল" পড়ে টের পেয়েছি দুয়ের মাঝে বিস্তর ফারাক আছে।
বাহ! দারুন শব্দ। বশ করার ব্যাপারটা বেশ যুক্তিযুক্ত। তবে পশু (গরু, ছাগল ইত্যাদি) এর ক্ষেত্রে বশ করার ব্যাপারটা অনেকটা তাদের আচরণ বা স্বভাবগত সম্ভবত। তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্যের তারতম্য তাতে হয় না। হয়েছে হয়তো অনেক পরে এসে। বা প্রায় সাম্প্রতিক কালে এসে। কিন্তু ধান,গম, যব, ভুট্টা আর আলুর ক্ষেত্রে তাদের শারীরিক অনেক বৈশিষ্ট্যকে পরিবর্তন করার পরই তাকে চাষযোগ্য ব'লে বিবেচনা করা শুরু হয়েছে। এটাকে ঠিক কি বলা যায় জানি না। দুইয়ের ভেতরে যে খানিকটা পার্থক্য আছেই।
পড়ার জন্য আরো একটা বই যোগ ক'রে দিলেন দেখি। ধন্যবাদ। কলাপ্স এখনো পড়ে শেষ করতে পারিনি। পড়ার জন্য এখনো প্রিন্টেড ভার্সনই আমার জন্য স্বস্তির। নতুন প্রজন্ম দেখি আবার উল্টো।
(রাজীব)
গরু-ছাগলের শারীরিক বৈশিষ্ট্যও নিবশনের পর অনেকখানি পাল্টেছে (যেমন গরুর পূর্বসূরী জ়িবু আর উর (অরোক্স)-এর শিং চোখা আর সম্মুখমুখী, কিন্তু নিবশিত গরুর শিং ক্রমশ ভোঁতা আর বাঁকা হয়ে উঠেছে)। নিবশনের মূল কথাই হচ্ছে কোনো প্রজাতির প্রজননের ওপর এমন নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা, যাতে তাদের এক বা একাধিক বৈশিষ্ট্য নিয়ন্তা প্রজাতির (মানুষ) চাহিদামাফিক হয়। এ কারণে হাতি এখনও অনিবশিত (হাতির ছানার খোরাক যোগানো খরুচে বলে প্রাপ্তবয়স্ক হাতি বরাবর বন থেকে ধরা হয়, তাই এর প্রজননের ওপর মানুষের নিয়ন্ত্রণ নেই), যদিও ক্ষেত্রবিশেষে গৃহপালিত।
"গানস, জার্মস অ্যাণ্ড স্টিল" খুবই উপভোগ্য বই, সময় পেলে পড়ে ফেলুন।
"গানস, জার্মস অ্যাণ্ড স্টিল" দারুন উপভোগ্য লেগেছে হিমু ভাই। পড়ার পরপরই মন্তব্য করার ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু সময় ক'রে উঠতে পারিনি। বইটা পড়ার পরামর্শ দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
কিছু ফসল আর প্রাণীর নিবশনের তারিখ প্রসঙ্গে লেখকের কথাকে বেশ যুক্তিযুক্তই মনে হয়েছে। ফসল নিবশনের ক্ষেত্রে উনি সর্বশেষ আইসএজের আগে যেতে চান না। আমি এই বিষয়ের দক্ষ লোক নই। ফলে ওনাদের তথ্যকেই প্রামাণ্য মানতে বাধ্য।
হাতি যে টেমড, নিবশিত নয় সেটা আগে জানতাম না। ফসলের চাষবাসের সাথে সভ্যতার শুরু আর বেড়ে ওঠার সম্পর্ক নিয়ে লেখকের বক্তব্যও বেশ গোছানো। তবে সভ্যতা গড়ে ওঠার প্রাথমিক আয়োজন পর্যন্ত বোঝার জন্য এই বইটা ব'লে মনে হ'লো।
-রাজীব
বইটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো। কোল্যাপ্স-ও পড়ে দেখুন সময় পেলে; যদিও একেবারেই উল্টো সুরে বাঁধা, কিন্তু ডায়মন্ডের মন্থর-আর-ধারালো পর্যবেক্ষণের গুণে উপভোগ্য।
খুব ভাল লাগল।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ, পড়ার জন্য।
-রাজীব
ভালো লেখা। ধন্যবাদ।
-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’
নতুন মন্তব্য করুন