প্রথম আলো বিরোধী সাম্প্রতিক আন্দোলন: ফলাফল কি এর?

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ২২/০৯/২০০৭ - ২:৪০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হতাশ হয়ে লিখতে বসলাম এই লিখা। বড় গলায় লোকজন বলছেন, "কেউ ভুল করলে ক্ষমা হয়, কিন্তু অন্যায় করলে তার শাস্তি পেতেই হবে"। ভুল আর অন্যায়ের পার্থক্য নির্ধারণ করবে কে? এই অন্দোলনকারীরা?

আরো এক কাঠি ওপরে আরেকজন বলেছেন, "ক্ষমা চাইতে হলে নবীজি(সা)র কাছে চাইতে হবে।" তো তার কাছে ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ না পাওয়া পর্যন্ত আপনারা আন্দোলন করতে থাকবেন, কেয়ামত পর্যন্ত আন্দোলন চালাবেন?

"ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মুফতি ফজলুল হক আমিনী গতকাল চকবাজারের বড় কাটারা জামে মসজিদে বলেছেন, নবীজীর সঙ্গে বেয়াদবির কোন ক্ষমা ইসলামে নেই। "(আজকের ইত্তেফাক)

আমিনী সাহেব ভুলে গেছেন, বৃদ্ধা ইহুদী নারীর প্রতিদিন পথে কাঁটা বিছিয়ে রাখার কথা। নবী (সা) তাঁকে কি শাস্তি দিয়েছিলেন, আমিনী সাহেবকে সেটা একবার জিজ্ঞেস করা উচিৎ।

আমিনী সাহেব আরো ভুলে গেছেন, মোহাম্মদকে দাওয়াত দিয়ে বিষ মেশানো মাংস খাওয়ানোর কথা। সেই মাংস মুখে দিয়েই মোহাম্মদ ফেলে দেন। কি শাস্তি দিতে চেয়েছিলেন তিনি সেই ইহুদী নারীকে?

তায়েফবাসীর অত্যাচার, মক্কাবাসীর অত্যাচার, কৌতুক কিছুরই প্রতিশোধ তো তিনি নেন নি। তাহলে আজ কেন তাঁর অনুসারীরা তাঁর অপমানের প্রতিশোধ নেবে? এটা কি নিজেদের ভালবাসার মানুষকে অপমানের প্রতিশোধ নেয়া? নাকি স্বার্থ? যে ঘটনাটা তাঁকে অপমানের উদ্দেশ্যে ঘটানো হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়না, সেই ঘটনা নিয়ে এতদূর বাড়াবাড়ির কি অর্থ?

এমনিতেই দেশের বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায় ইসলাম নিয়ে বিরক্ত। তার উপর এবার প্রথম আলোর মত নামজাদা পত্রিকার উপর আঘাত। চার্চের কাছে গ্যালিলিওর ক্ষমা চাওয়ার প্রতিশোধ আজ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা নিয়ে যাচ্ছেন বিবর্তনবাদের শিক্ষা সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করে। নতজানু মতিউর রহমানের ক্ষমা চাওয়ার প্রতিশোধ বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায় কিভাবে নেবেন? সেই প্রতিশোধের আঘাত সইতে পারবে তো ইসলামপন্থীরা? আরও কিছু তসলিমার জন্ম নেয়ার সুযোগ কি তৈরি করে দেওয়া হলো না? সময়ই বলে দেবে, এই অন্দোলনকারীরা কি ক্ষতি করে গেলো ইসলামের।


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

অন্য একটি ব্লগে পূর্বপ্রকাশিত বলে এ লেখাটি প্রথম পাতায় প্রকাশ করা হলো না।

প্রিয় লেখক, আমরা আপনার কাছ থেকে আরো পোস্ট প্রত্যাশা করি। পোস্টের মৌলিকতাও আমাদের কাম্য।

ধন্যবাদ।


হাঁটুপানির জলদস্যু

বরফ এর ছবি

দুঃখ পেলাম।

দুটো অভিযোগ:

১। অন্য ব্লগে প্রকাশ
একই লেখা একাধিক ব্লগে প্রকাশের ব্যাপারে বিধিনিষেধ আছে, এরকমটা আমি জানতাম না।

আরও দুঃখিত আমার নাম উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছিলাম এবং লেখাটা একটু আগেই অন্য একটা ব্লগে দিয়েছি, সেটা বলতেও ভুলে গিয়েছিলাম।

২। মৌলিকতা
তবে লেখাটা সম্পূর্ণ মৌলিক।

লেখা প্রথম পাতায় না প্রকাশের কারণ কি প্রথম অভিযোগটা নাকি দ্বিতীয়টা? দয়া করে বলবেন?

হিমু এর ছবি

নিষেধ বা বিধি নেই, তবে একটা চর্চা আছে।

পোস্টের মৌলিকতা শব্দযুগল সংশয়ের সৃষ্টি করেছে বলে দুঃখিত। বলতে চাইছিলাম অনন্যতা। যদি কোন লেখা অন্য ব্লগে দিয়ে থাকেন, তাহলে সচলের জন্য নতুন আরেকটি পোস্ট দিতে পারেন।

প্রথম পাতায় প্রকাশ না করার ব্যাপারটি আশা করি এখন আপনার কাছে স্পষ্ট।

আপনার পরবর্তী পোস্ট ও কমেন্টের প্রত্যাশা করছি। সচলে আপনার লেখালেখি আনন্দময় হোক।


হাঁটুপানির জলদস্যু

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

চার্চের কাছে গ্যালিলিওর ক্ষমা চাওয়ার প্রতিশোধ আজ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা নিয়ে যাচ্ছেন বিবর্তনবাদের শিক্ষা সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করে।

হে অতিথি লেখক! উপরের এই বাক্য দিয়ে আপনি কী বুঝাতে চাইছেন। বিবর্তনবাদ একটি প্রতিশোধমূলক তত্ত্ব? স্পষ্ট করুন।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন ---- সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

বরফ এর ছবি

সুপ্রিয় সোহেইল মোতাহের চৌধুরী,
প্রতিশোধের জন্য এই তত্ত্বের জন্ম, তা বলিনি। বলতে চেয়েছিলাম, ধর্ম আর বিজ্ঞান এই বিবর্তনবাদের ক্ষেত্রেটাতেই অনেকটা মুখমুখি অবস্থানে। গ্যালিলিওর অপমানটা এখানে হয়তো সরাসরি সম্পর্কিত নয়। আজ থেকে শুরু করে পেছন দিকে তাকালে হয়তো সম্পর্কিত মনে হয় না; কিন্তু অতীত থেকে চেয়ে ভবিষ্যতের দিকে দেখুন, বিজ্ঞান সেই ঘটনার প্রতিশোধ নিয়ে যাচ্ছে বলেই কিন্তু মনে হয়। স্পষ্ট করে বলতে পারলাম কি?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।