ঘাতক-দালালদের বিচার নিয়ে ন্যূনতম কোন হতাশা নয়, চাই একশন-এখনই

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: বুধ, ৩১/১২/২০০৮ - ৭:১৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বহুৎ হতাশ হওয়া গেছে ।
আর হু-হুতাশ করতে ভাল্লাগেনা । জামাত এই হয়ে গেছে, সেই হয়ে গেছে, জামাতের লক্ষ লক্ষ ভোটার, নতুন প্রজন্মের ব্রেইনওয়াশ, মুক্তিযুদ্ধ এদের কাছে কোন ব্যাপার না- এই সব কথাবার্তা শুনতে শুনতে কান পঁচে গেছে ।

সবকথার শেষে ও যে কথা থাকে, সেটা প্রমানিত হয়েছে মাত্র ৪৮ ঘন্টা আগেই । গনতান্ত্রিক কাঠামোতে জনগনের যা করার আছে, যা করার ছিলো জনগন তা করে ফেলেছে- ঘাতক দালালদের ডাষ্টবিনে ছুঁড়ে ফেলেছে ।

ডাষ্টবিনে ছুঁড়ে ফেললে এখনো এদের প্রান আছে আর ডাস্টবিনের ময়লা আবর্জনা খেয়ে খেয়ে এরা যে আরো শক্তিশালী হয়ে উঠে, সদর-অন্দর দখল করতে আসে-বারবার আমরা তাই দেখেছি ।

তাই এখন মোক্ষম সময় ডাস্টবিনের ময়লা-আবর্জনা সুদ্ধ এগুলো সমুলে উপড়ে ফেলা ।

নতুন নির্বাচিত সরকার যদি আন্তরিক হয় ও তার কিছুটা কুটনৈতিক সমস্যা আছেই । মধ্যপ্রাচ্য এবং বড় মুরব্বী আমেরিকা আছে । খেয়াল রাখা জরুরী- যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের জন্য খাবার ব্যবস্থা করতে গিয়ে শেখ মুজিবকে ও মধ্যপ্রাচ্য , আমেরিকার কাছে নতজানু হতে হয়েছিল , এর সাথে ছিলো পাকিস্তানে আটকে পড়া বাঙ্গালীদের হিসাব ।

সময় এখন বদলেছে অনেক । এটা ৭২ নয়, কালকের সূর্যোদয়ে আসবে ২০০৯ ।

হাসিনা কি বললো, আওয়ামী লীগ কি করলো তা নিয়ে খুব একটা ভেবে ভেবে সময় ক্ষেপনের সময় হাতে নেই । এই মুহুর্তের নায়ক জনগন ।
ঘাতক-দালালদের বিচারের দাবীতে রাজপথ এখনই দখল রাখতে হবে । নতুন সরকারকে এই ম্যাসেজ দিতে হবে- আমরা কিন্তু অপেক্ষমান । বিচার শুরু করো নতুবা আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হও ।

এর জন্য জরুরী হলো- নিজেরা সংগঠিত হওয়া, সংগঠিত থাকা ।
সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলোর এখনই সক্রিয় হয়ে উঠা জরুরী । এর বাইরে আমরা যারা আছি তারা ও উদ্যোগী হয়ে উঠা দরকার ।
দেশে যারা আছেন বিভিন্ন প্লাটফর্মে ছড়ানো ছিটানো তারা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলুন,সংগঠিত হোন, সরকারকে ম্যাসেজ পাঠান- এবার কোন টালবাহানা আমরা মানবোনা ।

আমরা প্রবাসী যারা শারীরিক ভাবে উপস্থিত যারা থাকতে পারবোনা- তারা কি করে আপনাদের সাথে থাকতে পারি, কি ভূমিকা রাখতে পারি সেটা ও আমাদেরকে জানান ।

বিজয়ীদের হতাশা মানায়না, বিজয়ীদের এগিয়ে যেতে হবে চুড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্যে ।


মন্তব্য

আসাদ [অতিথি] এর ছবি

হাসান ভাই খুবই জরুরী কথা বলেছেন।
এখন বিজয়োল্লাস কিম্বা হতাশা, কোনোটারই সময় নয়। বরং এই সুস্পষ্ট ও বাস্তব ইস্যুতে চুড়ান্ত বিজয়ের জন্য সংঘটিত হবার এখনই মোক্ষম সময়।
মনে রাখা দরকার, বিজয়ের আনন্দক্ষণেই বিজয় ছিনতাই হবার সম্ভাবনা বেশী।

ফাহিম এর ছবি

আপনার সাথে একমত।

তবে আমার ধারনা (শুধুই ধারনা এবং এটা ভুল হলেই আমি বেশি খুশি হব) আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পারবে না। করতে গেলে শেখ হাসিনার বেয়াইকেও বিচার করতে হয়। সেটা অন্তত আমাদের দেশে সম্ভব না।

যাই হোক, তারপরেও আশায় বুক বাধছি, একটা কিছু যদি হয়... অন্তত বুদ্ধিজীবিদের ঘর থেকে ধরে নিয়ে ঠান্ডা মাথায় খুন করা লোকগুলার বিচার আমি দেখতে চাই।

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ক্রমাগত চাপ দিয়ে রাখতে হবে ।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

সহমত ।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

বিজয়ীদের হতাশা মানায়না, বিজয়ীদের এগিয়ে যেতে হবে চুড়ান্ত বিজয়ের লক্ষ্যে ।

লাখ টাকা দামের কথা। সমস্যা হল, বিজয়ী তখনই সংকোচে ভোগে যখন তার নিজের মনে সংশয় থাকে। আশা করি এই বাঁধভাঙা সমর্থন সেই সংশয় দূর করে দিয়েছে।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- প্রবলভাবে একমত।

আওয়ামী লীগ যেদিন সরকার গঠন করবে, সেদিনই যেনো প্রধানমন্ত্রীর টেবিলের উপর একটা দাবীনামা থাকে বাংলাদেশের মানুষের। তাতে বোল্ড অক্ষরে একটাই লাইন লেখা থাকবে-
সর্বাগ্রে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করুন... আমরা কিন্তু অপেক্ষমান (ফুলস্টপ)।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

তো শুরু হোক জনগণের অ্যাকশন।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

একদম যথাযথ

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

প্রবাশী বাঙ্গালি [অতিথি] এর ছবি

আজাইড়া সহমত সহমত করতে চাইনা। কামে কেমনে লাগতে পারি এইটা কন... দালালদেরে শেষ ঠিকানায় দেখতে চাই।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ভাইরে আমি নিজে ও সেই ডাকের অপেক্ষায় আছি । আমারো আর এই বিষয় নিয়া হুদাহুদি চিল্লাচিল্লি করতে ভাল্লাগেনা ।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

s-s এর ছবি

জাতিসংঘ আজ সহযোগিতা দেবে পড়লাম, কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারটা কে নেবেন সেটা জানা খুব জরুরী। নইলে অন্যান্য বিচারগুলোর মত প্রহসন হয়ে যেতে এটার খুব একটা বেশি সময় লাগবে না।

জীবন জীবন্ত হোক, তুচ্ছ অমরতা

হাসান মোরশেদ এর ছবি

যতোটুকু জানি, আন্তর্জাতিক আদালতের শরনাপন্ন হতে হয় ভিনদেশী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য যেমন এখন যদি বাংলাদেশ পাকিস্তানীদের বিচার চায় তাহলে এর দরকার ।

কিন্তু দেশের ভেতরে, যারা দেশের নাগরিক- তাদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক আদালত, জাতিসংঘ এইসবের কি দরকার বুঝলাম না । এদের জন্য তো নিজস্ব আইনই যথেষ্ট ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।