বরাহ'রা প্রস্তুত, আমরা আছি তো?

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৪/১২/২০০৯ - ৭:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

..

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্মযুদ্ধে গনহত্যা, শিশু ও নারী ধর্ষন, জাতিগত শোধন সহ মানবতার বিরুদ্ধে সমস্ত অপরাধই সংগঠিত হয়েছে। কিছু মাথাভারী তাত্বিক ও ইন্টেলেকচুয়াল মকাররা ধুসর এলাকা তৈরী করতে চাইলে ও একাত্তুরে শেষপর্যন্ত দুইটা পক্ষই ছিলো। একপক্ষ খুন করেছে আরেকপক্ষ খুন হয়েছে, খুন হতে হতে আত্ন্রক্ষার জন্য যুদ্ধ করেছে। খুনীরা নয়মাস সময়ে কোন বিচার আদালতের ধার ধারেনি, আত্নপক্ষ সমর্থনেরত সুযোগ দেয়নি , স্রেফ খুন করে গেছে। নয়মাস পর বিজয়ীপক্ষের জন্য ও সহজ সমাধান ছিলো পরাজিত খুনীগুলো স্রেফ খুন করে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দেয়া।

ডিসেম্বর ১৭, ১৯৭১ এ বাংলাদেশ শূন্য ছিলো-একেবারেই শূন্য ছিলো। পোড়া বিবর্ণ যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ, ৩০ লক্ষ মানুষ খুন হয়ে গেছে, এক কোটি মানুষ দেশ ছাড়া- সামনে কোন ভবিষ্যত নেই এই অবস্থায় আরো কয়েক হাজার অপরাধীকে মেরে ফেললে কি আর এমন ক্ষতিবৃদ্ধি হতো? চার দশক ধরে একটা আপদ ঝুলতে থাকতোনা। আপদটা অমিমাংসীত থাকতে থাকতে ভয়ংকর শ্বাপদ হয়ে গলা পেঁচিয়ে ধরতো না বাংলাদেশ রাষ্ট্রের। কোন কোন যন্ত্রনা গোড়াতেই মিটিয়ে না ফেললে পরিনতি যে কি দাঁড়ায় আজকের প্রেক্ষাপট তার প্রমান।

এখন পরিস্থিতি অনেক বদলে গেছে। সরকার যতোই আন্তরিক হোক, দেশবাসী যতোই জানুক তবু অপরাধীদের ধরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়া সম্ভব না। খুনীদের অনেক ডেভিল'স গার্ডিয়ান তৈরী হয়ে গেছে। কিন্তু যতো কিছুই হোক এই বিচার এখনই হতে হবে, বছরের পর বছর জাতি একটা দায়ভার বহন করে যেতে পারেনা।
'৭১ এ যেমন দু পক্ষ ছিলো এখনো তেমনি স্পষ্ট দুটো পক্ষই। অপরাধী এবং অপরাধের বিচার প্রার্থী। '৭১ যেমন খুনীরা সংখ্যায় গরিষ্ঠ ছিলোনা, এখনো নেই। কিন্তু সমস্যা হলো সেদিনের মতোই তারা সংঘবদ্ধ, কুটকৌশলী এবং সদা প্রস্তুত যেমন থাকে তারা সবসময়।
এই ঘাতক দালালদের অনেকগুলো উইংস আছে। মুক্তিযুদ্ধের পর থেকে তারা নির্দিষ্ট কৌশল পত্র অনুযায়ী ছড়িয়ে গেছে নানা প্রান্তে যেনো চরম মুহুর্তে সব প্রান্ত এক হয়ে বিশাল প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।

সাকা'র মতো ঘাতক কেনো ঠিক এই সময়ে বিএনপি'র স্থায়ী কমিটিতে স্থান পেলো? সাকা'কে স্থায়ী কমিটিতে নেয়ার সাথে সাথেই বিএনপি'র স্পষ্ট ঘোষনা তাদের দলে কোন যুদ্ধাপরাধী নেই। তার মানে সাকা বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল কর্তৃক যুদ্ধাপরাধী নয় বলে সত্যায়িত। এখন সাকা'কে কাঠগড়ায় দাঁড় করালে বিএনপি একে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে সরকার বিরোধী আন্দোলনে নামবে?

দেশব্যাপি অন্তর্ঘাতমুলক কর্মকান্ড চালানোর মতো শক্তি ও সামর্থ্য এদের আছে। কিন্তু তা ঠেকানোর মতো প্রস্তুতি সরকারের কি আছে? অথবা বিচারপ্রার্থী দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ কি এদের প্রতিরোধে ততোটা সংঘবদ্ধ?

এই রিপোর্ট জানাচ্ছে জামাতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানোর জন্য আন্তর্জাতিক লবিং শুরু করে দিয়েছে, জাতিসংঘে ও তাদের আবেদন নিবেদন শুরু হয়ে গেছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে অভিবাসী জামাত সমর্থক শতাধিক আইনজীবি বাংলাদেশে এসে আইনি লড়াইয়ে অংশ নেয়ার ও প্রস্তুতি নিচ্ছে।

আমার একটা ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষন হচ্ছে- ১৬ ডিসেম্বরের পর পর রাজাকারদের একটা বড় অংশ আমেরিকা ও বৃটেনে পালিয়ে এসেছিলো। আমি নিশ্চিত করেই বলতে পারি সিলেট অঞ্চলের বড় বড় ঘাতকরা প্রায় সবাই লন্ডনে এসে ঘাঁটি গেড়েছিল( যেমন মাওলানা আবু সাইদ)- বুদ্ধিজীবি হত্যাকারীদের প্রধান চৌধুরী মইনউদ্দীন ও এদের একজন। এরা এদের সন্তান ও পরবর্তী প্রজন্মকে শুধু জামাতী করেই গড়ে তুলেনি বরং শেষ না হওয়া যুদ্ধের জন্য ও তৈরী করেছে। এই উইংস টা ও এখন কাজে লাগাবে এরা।

বিপরীতে আমাদের প্রস্তুতি কতোটুকু? অনলাইনে অনেক কার্যক্রম চলছে, চলবে। এগুলোর দরকার আছে। সচলায়তনে আমরা প্রতিনিয়ত লিখে যাচ্ছি। নিউজ বাংলা একটা ফ্রন্ট খুলেছে। http://www.wcsf.info/ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটা দলিল হয়ে উঠছে।
আমি সরকারের উপর ও এখনই ভরসা হারাতে চাচ্ছিনা। সময় নিক তবু পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েই কাজ শুরু করুক।

সবই ঠিকাছে তবু কেনো জানি সংশয় জাগে বরাহ'দের প্রস্তুতির বিপরীতে আমরা আসলেই কতোটুকু তৈরী আছি। কৌশলগত, আইনগত এবং শেষপর্যন্ত সম্মুখ লড়াইয়ের প্রস্তুতি আছে তো বিচারপ্রার্থী সংখ্যাগরিষ্ঠের? নাকি সরকারের ভরসায় সবাই অস্ত্র নামিয়ে রাখছে?

৩৮ বছর ধরে শিয়রে দাঁড়িয়ে থাকা ঘাতকেরা এবার চুড়ান্ত আঘাত করবে। এই চুড়ান্ত সময়ে কি আমাদের ঘুম পাচ্ছে?


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ঘাতকেরা এবার বেঁচে থাকার শেষ কামড় দেবে। সেবিচারে দেরী অথচ পূর্ণ প্রস্ততি নিয়ে মাঠে নামার যুক্তিটা গ্রহণযোগ্য। সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। সরকার আশা করি পাবলিক মাইন্ড রিড করতে পারবে। একটা ধারনা বদ্ধমূল হয়ে গিয়েছে যে সরকার যেভাবেই হোক বিচার কাজ শুরু করতে অনেক দেরী করবে এবং ক্ষমতার শেষভাগে এসে "পুনরায় নির্বাচিত হলে এটা করবো সেটা করবো" ধরনের বক্তব্য দিবে। এমনটা করলে যুদ্ধাপরাধীদেরই সবচেয়ে বেশী সুবিধা হবে। অতএব সময় থাকতেই সরকারের সাবধান হওয়া উচিত।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

যদি সরকার টালবাহানা করে?
সরকারের অংশ নয় এমন যারা দীর্ঘদিন ধরে এই দাবীকে উচ্চারিত রেখেছেন আমি তাদের প্রস্তুতির দৃশ্যতঃ কিছু না পেয়ে শংকিত।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ব্যাপারটা আসলেই চিন্তার। যদিও দুর্জনেরা বলবে এ আর নতুন কী, আমার মনে হয় তাঁরা মনে করছেন তাঁদের কাজ শেষ; বল এখন সরকারের কোর্টে।

ওডিন এর ছবি

৩৮ বছর ধরে শিয়রে দাঁড়িয়ে থাকা ঘাতকেরা এবার চুড়ান্ত আঘাত করবে। এই চুড়ান্ত সময়ে কি আমাদের ঘুম পাচ্ছে?

না! কেউ না কেউ মরণকামড় দেবে- হয় আমরা- নাহলে ওরা। যেটাই হোক- এবারের যুদ্ধই হবে শেষ যুদ্ধ।

______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

হাসান মোরশেদ এর ছবি

শুরু থেকে শেষপর্যন্ত- একেবারে শেষপর্যন্ত, যুদ্ধপরাধীদের বিচারের রায় কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত একটা জোরালো নাগরিক আন্দোলন কার্যকর থাকা জরুরী ছিলো।
সরকারকে চাপে রাখা, সরকারের উদ্যোগের প্রতি চোখ রাখা-সব রকমের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকা এই বিষয়গুলোর একটা সামগ্রিক উদ্যোগের অভাব থেকে যাচ্ছে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

অতিথি লেখক এর ছবি

এই রিপোর্ট জানাচ্ছে জামাতে ইসলামী যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানোর জন্য আন্তর্জাতিক লবিং শুরু করে দিয়েছে, জাতিসংঘে ও তাদের আবেদন নিবেদন শুরু হয়ে গেছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে অভিবাসী জামাত সমর্থক শতাধিক আইনজীবি বাংলাদেশে এসে আইনি লড়াইয়ে অংশ নেয়ার ও প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ থেকেই বুঝা যায় ওরা এ সব ব্যাপারে কতটা সিরিয়াস ।

নিজেরা ঘুমুব না ।
সরকারকেও ঘুমুতে দেব না ।
বিচার করে তবেই ক্ষান্ত হব ।

বোহেমিয়ান

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আমি আশংকা করছি শেষ পর্যন্ত লড়াইটা ঘাতক আর মানুষের মধ্যে হবে না।
এটা হবে আওয়ামীলীগ আর মানুষের মাঝে।

আওয়ামীলীগ ধুনফুন করবে, আর মানুষ তখন তাদের ক্রোধটা রাজাকারকে বাদ দিয়ে আওয়ামীলীগের উপর ফেলবে। আওয়ামীলীগ বলবে, আগামীবার নিশ্চিত বিচার করব, এইবার তো কোর্ট ভবন রঙটঙ করলাম, লনের ঘাস কাটলাম (হিমুর পোস্ট দ্রষ্টব্য)।

মানুষ তখন খেপে গিয়ে আওয়ামীলীগকে ৪০টা গছিয়ে দেবে, ২৬০টা নিয়ে বিএনপি জামাত জোট আবার ক্ষমতায়।

লাগ ভেলকি লাগ।

তানবীরা এর ছবি

আশাকরি আওয়ামী লীগ এমন আত্মঘাতী খেলা খেলবে না

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

চলুক

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

সরকার - অর্থাৎ এই সময়ে যারা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে তাদের পরও বোধহয় জনগণের আরো কিছু দায়িত্ব রয়ে যায়।
সরকারের ওপর একটা চাপ এবং একইসাথে যুদ্ধাপরাধীদের জন্য সতর্কতা হিসেবে মাঠে-ময়দানে কিছু মানুষকে জোরে-শোরেই দাবী-দাওয়াগুলোর বিষয়ে সর্বক্ষণ সোচ্চার থাকতে হবে...

ধন্যবাদ হাসান মোরশেদ
-----------------------------------------------
[i] মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না [i]

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

রায়হান রশিদ এর ছবি

প্রিয় ব্লগার হাসান মোরশেদের প্রতি কৃতজ্ঞতা পোস্টটির জন্য। আপনার সাথে এই বিষয়ে পুরোপুরি একমত যে যুদ্ধাপরাধ বিরোধী উদ্যোগগুলোর আরও কঠিন প্রস্তুতি দরকার, প্রচার দরকার - সঙ্গত কারণেই। তবে সবিনয়ে হাসান ভাইকে অনুরোধ করবো আরেকটা দিকেও সম্ভব হলে একটু লক্ষ্য রাখার। ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা রেফারেন্সগুলো যথাসম্ভব এড়ানোই শ্রেয়, এবং অনুরোধ করবো খুব সমস্যা না হলে আপনার পোস্টেও সেটা সংশোধন করে নেয়ার (নামোল্লেখপূর্বক "রায়হান রশিদদের WCSF" প্রসঙ্গে বলছি)।

এটা ব্যক্তিগত কোন বিষয় না, ব্যক্তিগতভাবে বিবৃতবোধ করারও কোন বিষয় না। যে কারণে লিখছি তা হল: এই কোয়ালিশনের (ওয়ার ক্রাইমস স্ট্র্যাটেজি ফোরাম - WCSF) কাজগুলো আসলে বহু নিবেদতিপ্রাণ এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে যোগ্য/দক্ষ মানুষ মিলে একত্রে পরিচালনা করছেন এবং সে সবে সক্রিয় অবদান রাখছেন। তাই, আমাদের মনে হয় উচিত হবে যতভাবে সম্ভব সমষ্টিকে সামনে নিয়ে আসা এবং ব্যক্তিকে (বা একক সংগঠনকে) যতটা সম্ভব পেছনে/দূরে রাখা। আপনি হয়তো লক্ষ্য করেছেন - উম্মুক্ত ফোরামগুলোতে আমরা ব্যক্তি তো দূরের কথা, নিতান্ত প্রয়োজন না পড়লে মুক্তাঙ্গন-সিসিবি ইত্যাদি একক-সাংগঠনিক নামগুলোও উল্লেখ থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকছি (উল্লেখ করছি কেবল কোয়ালিশন এবং এর উদ্যোগগুলোর কথা)। এক ধরণের সামষ্টিক সংস্কৃতির চর্চা এবং বোধ গড়ে তোলার লক্ষ্য থেকেই।

একটু ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন ঠিক কি কারণে আমাদের এই পথ বেছে নিতে হয়েছে:

প্রথমত: সমষ্টির অংশগ্রহণে সম্পন্ন কাজের উল্লেখে ব্যক্তিকে আলাদাভাবে তুলে আনলে সমষ্টির অবদানের ব্যাপারটিই একটু গৌণ হয়ে যায় হয়তো। আর ১৯৭১ নিয়ে দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়া সময়ের বিপরীতে ছুটন্ত এই সব কাজে we just cannot afford that.

দ্বিতীয়ত:
আমাদের যুদ্ধাপরাধবিরোধী মূল/বিখ্যাত খেলোয়াড়দের অনেকের মধ্যেই নিশ্চয়ই কিছু প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন। নিজ নিজ সাংগঠনিক/ব্যক্তি পরিচয়ের ব্যাপারে "অতি সচেতনতার" ফলেই কিন্তু আজ তাদের অনেকেই আর এক সাথে কাজ করতে পারছেন না। অথচ, কত জরুরী ছিল আজ তাদের একসাথে কাজ করতে পারা! এসব পরিণতি দেখেই আমরা WCSF কোয়ালিশনে প্রথম যে কাজটা করেছি তা হল: নিজ নিজ সংগঠন এবং সাংগঠনিক পরিচয়কে গৌণ করে তোলার চেষ্টা করেছি সামষ্টিক সহাবস্থানের প্রয়োজনে। চারপাশে এতো বেশী মানুষ নিজেকে জাহির করতে ব্যস্ত, কিংবা এই ইস্যুকে cash in করতে ব্যস্ত যে খুব সচেতনভাবেই এই কোয়ালিশনের পাত্র পাত্রীরা লো-প্রোফাইলের পথ (ব্যক্তি অর্থে) বেছে নিয়েছেন। তাতে কাজগুলো অন্তত এগুচ্ছে কোন ধরণের উটকো টানাহেঁচড়া ছাড়া; পত্রিকা-টকশো-সেমিনারে সকাল বিকাল বোমা ফাটানো না হলেও।

তৃতীয়ত: এও নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, হাই-প্রোফাইল রক্ষার প্রলোভনে অনেকে আজকাল হুটহাট ভয়ংকর সব ভুল-অবস্থানগত বিবৃতিও দিয়ে বেড়াচ্ছেন। এগুলোর মাশুলও কিন্তু আমাদের গুণতে হবে অচিরেই।

আশা করি বিষয়টা ব্যাখ্যা করতে পেরেছি। আপনার সময়োপযোগী পোস্টকে উপলক্ষ করে হলেও এটা শুধু আপনাকেই কিন্তু লিখছি না, নিজেকেও লিখছি। মাঝে মাঝে এই কথাগুলো নিজেদেরই নিজেদের স্মরণ করিয়ে দেয়ার দরকার আছে মনে হয়; নাহলে আমাদের সবার একই চক্রে ঘুরপাক খাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আপনাকে আবারও ধন্যবাদ।

বিনীত,
রায়হান রশিদ

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

আপনাদের চিন্তাকে চলুক
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

অতিথি লেখক এর ছবি

জেবতিক ভাইয়ের মন্তব্যে পূর্ণ সহমত।

শেখ নজরুল এর ছবি

তথ্যবহুল বিশ্লেষণ। ভালো লাগলো। যুদ্ধাপরাধিদের বিচার হয়তো হবে কিন্তু বাস্তবায়ন করা কষ্টকর হবে বলেই আমার ধারণা।
শেখ নজরুল

শেখ নজরুল

নীড় সন্ধানী এর ছবি

‍‌সরকার যতোই আন্তরিক হোক, দেশবাসী যতোই জানুক তবু অপরাধীদের ধরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দেয়া সম্ভব না। খুনীদের অনেক ডেভিল'স গার্ডিয়ান তৈরী হয়ে গেছে।

ডেভিল'স গার্ডিয়ান যদি কোন ব্যাক্তি বিশেষ হতো ভয়ের কারন ছিল না। কিন্তু ভয়ংকর ব্যাপার হলো গার্ডিয়ান তো সেইসব শক্তিশালী রাষ্ট্রশক্তি যারা আমাদের অর্থনীতিতে আঘাত হানতে সক্ষম।

বর্তমান সরকার সাকাচৌর মতো দাম্ভিক রাজাকারদের প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় শাস্তি দিতে সক্ষম কিনা সে ব্যাপারে সন্দিহান আমি। এইসব ঘাতকের জন্য অপ্রচলিত শাস্তি দেয়া উচিত। দাঁত নখ চোখ উপড়ে, রাক্ষুসে কুমীরের নদীতে ফেলে দিয়ে, কুকুর লেলিয়ে দিয়ে, অনাহারে তিল তিল করে মৃত্যুবরন করার মতো অমানবিক শাস্তি দিতে চাই।

-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।