প্রকাশক সমীপেষু

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: মঙ্গল, ১৭/০৮/২০১০ - ৫:৪৫পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

Daktars

'চামেলী হাতের নিম্নমানের মানুষ' বাবা আমার রক্তে পড়ার নেশা ধরিয়ে দিয়েছিলেন একেবারেই শৈশবে। নানা ঘটনা-দূর্ঘটনায় আর্থিক অস্বচ্ছলতা তখন আরামসে জাঁকিয়ে বসেছে, অনেক ঈদেই নতুন কাপড় কেনা হয়নি কিন্তু বাবা আমার বই কিনে আনতেন।
রবিনসন্স ক্রুশো, হাকলবেরী ফিন, হাঞ্চবেক অফ নটরডেম পড়া হয়ে গেছে তৃতীয় শ্রেনীতেই। অনুবাদ নয়, একেবারে ইংরেজী। বাবা নিজে অনুবাদ করে করে শুনাতেন। উচ্চবিদ্যালয়ে উঠতে উঠতেই পড়েছিলাম লেডি চ্যাটার্লিজ লাভার।

বাবু চন্ডীদাস ভট্টাচার্য্যের তত্বাবধানে মফস্বলের বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়ের সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার আর বড়মামার ব্যক্তিগত সংগ্রহ বই পড়ার নেশাকে অসীম করে তুলেছিল।
নবম শ্রেনীর আগেই পড়ার সুযোগ পেয়েছি সত্যেন সেন রচনামসগ্র, দুনিয়া কাঁপানো দশদিন, তুর্গেনিভের গল্পভান্ডার।
বাইরে আসার পর কিছুটা আর্থিক স্বস্তি এবং আমাজোনের কল্যানে পৃথিবীর সকল প্রান্তের বই সহজলভ্য হয়ে যাওয়ায় বইপড়া নেশা কাটার কোন সুযোগই হলোনা আর।

সম্প্রতি পড়ছিলাম ভারতীয় কুটনীতিক জ়েএন দীক্ষিত এর বই 'Liberation and Beyond: Indo-Bangladesh relationship'। মুক্তিযুদ্ধকালীন ও পরবর্তী সময়ের অনেক প্রামান্য তথ্য আছে এই বইয়ে যা আমাদের গড়ে উঠা অনেক ধারনাকেই প্রবল ধাক্কা দিতে পারে।

আমাজোনে একদিন উদ্দেশ্যহীন ঘুরতে ঘুরতে সন্ধান পেয়ে গেলাম এক অমুল্য রত্নের । ৬০ এর দশকের মাঝামাঝিতে এক আমেরিকান তরুন চিকিৎসক বাংলাদেশে এসেছিলেন খ্রীষ্টান মিশনারী হিসেবে। চট্রগ্রামের ডুলাহাজরার কাছে তারা স্থাপন করেছিলেন মিশনারী হাসপাতাল। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এক মর্মস্পর্শী স্বাক্ষী এই ডাক্তার ও তার সহকর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শী পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের পাশবিক নির্যাতনের। সহায়তা করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের রসদ ও চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে। পাকিস্তানী জেনারেলকে বাধ্য করেছেন ঐ এলাকার হিন্দুদের উপর নির্যাতন বন্ধ করতে। দেশ স্বাধীন হবার পর যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে চাপ দিয়েছেন বাংলাদেশের স্বীকৃতির জন্য, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিপুল অংকের ত্রান সংগ্রহ করে পুনর্বাসন কার্যক্রম চালিয়েছেন ঐ অঞ্চলে।
দেশে ফিরে গিয়ে বই লিখেছেন' Daktar-Diplomat-Bangladesh' ।

এইসব বই পড়তে পড়তে মনে সাধ জাগে, আহা আমার ভাষায় কেনো এই বইগুলো অনুদিত হয়না? কেনো আলবেয়ার কাম্যুর উপন্যাস সমগ্র পড়তে পারবেনা ইংরেজীতে অদক্ষ বাংলাদেশের কোন তরুন?

সাধ কিছুটা তিক্ত হয়ে যায় প্রাক্তন অভিজ্ঞতায়।
২০০৮ এ প্রকাশিত অরুন্ধতী রায়ের সাক্ষাৎকার সংকলন The Shape of The Beast হাতে আসার পর, পড়তে পড়তে মনের খেয়ালে অনুবাদ শুরু করেছিলাম। সচলবন্ধু প্রকাশক আহমেদুর রশীদ খুব আগ্রহ করে পান্ডূলিপি নিয়েছিলেন বই হিসেবে প্রকাশের জন্য ২০০৯ এর বইমেলায়। মেলার শেষদিন অথবা মেলার পরে বই প্রকাশিত হয়েছিলো, প্রকাশক কষ্ট করে বই আমাকে পাঠিয়েছেন ও ।
এরপর আরো এক বইমেলা গেলো,কিন্তু অরুন্ধতী রায়ের অনুবাদ কতো কপি বিক্রী হলো অথবা আদৌ বিক্রী হয়েছে কিনা সেটা শেষপর্যন্ত আমার আর জানা হয়নি। কোন এক বিচিত্র কারনে সেসময় প্রকাশক বন্ধু খুব অগোছালো হয়ে পড়েছিলেন, তার সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক হৃদ্যতার। অগোছালো সময়ে বিক্রীর সংখ্যা জানতে চেয়ে আমি তাকে বিব্রত করতে চাইনি।

তবে এই জানাটা জরুরী। জরুরী অনুবাদের ভবিষ্যত জানার জন্য।
নিজের একটা মৌলিক উপন্যাস ও প্রকাশিত আছে আমার। সে হিসেবে মৌলিক কাজ ও অনুবাদের মধ্যে যদি তুলনা করি- অনুবাদ অনেক কষ্টের। রীতিমত শারীরিক শ্রমের মতো। মৌলিক কাজে সৃষ্টির আনন্দ থাকে, অনুবাদে তাও থাকেনা। তাহলে কেউ বিনাপয়সায় কেনো এই শ্রম দিতে যাবে? কষ্ট করে কাম্যুর অনুবাদ না করে, কাম্যু পড়ে ঘুম দেওয়াই তো ভালো।

একজন নতুন লেখক নিজের বই প্রকাশের জন্য প্রকাশনা ব্যায় মিটাতেও প্রস্তুত থাকে, কিন্তু অনুবাদের মতো ধন্যবাদহীন কাজ গাঁটের পয়সা খরচ করে করার মতো প্রস্তুতি অধিকাংশেরই নেই( উল্লেখ্য অরুন্ধতী রায়ের অনুবাদ প্রকাশক তার নিজের খরচেই করেছেন)। এটা গেলো লেখকের দিক।
প্রকাশকই বা কেনো নিজের আর্থিক লাভ নিশ্চিত না হলে অনুবাদগ্রন্থ( কিংবা অন্য যে কোন গ্রন্থ) প্রকাশ করতে যাবেন?

এই কারনে হিসেব-নিকেশটা জরুরী, জরুরী একটা পেশাদার বুঝাপড়া।

সিরিয়াসলি যদি কেউ অনুবাদ করতে চায় তাহলে তাকে 'উপযুক্ত' পারিশ্রমিক দেবার পর বই বিক্রী করে কোন প্রকাশক কি লাভ করতে পারবেন? যদি পারেন সে ক্ষেত্রে 'উপযুক্ত পারিশ্রমিক' কেমন হতে পারে? যদি না পারেন তাহলে ভিন্নভাষার বইগুলো বাংলায় অনুবাদের বিকল্প কি?

আমি খুব বেশী প্রকাশককে ব্যক্তিগতভাবে চিনিনা। দুই সচল প্রকাশক আহমেদুর রশীদ আর নজমুল আলবাব যদি সময় করে এই পোষ্টে তাদের মতামত ব্যক্ত করতেন ভালো হতো।
কিংবা সচলদের মধ্যে চেনাজানা প্রকাশক থাকলে তাদের মতামত জেনে ও এখানে জানাতে পারেন।


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

বস, এই ডাক্তার সাহেবের ওপর একটা পোস্ট সচলে দিয়েন। উনি যদি বেঁচে না-ও থাকেন, তাঁর পরিবারের সদস্যদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ইচ্ছে তো করছে পুরোটা অনুবাদ করে ফেলি।
ওটা সময়সাপেক্ষ। তবে একটা রিভিউ করবো অবশ্যই।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

তাসনীম এর ছবি

হিমুর সাথে সহমত, পারলে আমেরিকান ডাক্তারের উপরে একটা পোস্টসহ বইটার একটা রিভিউ দিয়েন।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

দ্রোহী এর ছবি

অপেক্ষায় থাকলাম। প্রকাশকদের মন্তব্যের, অনুবাদের, ও বুক রিভিউয়ের।


কি মাঝি, ডরাইলা?

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

ধন্যবাদ মোরশেদ। হাসান মোরশেদ সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে থাকে। এটিও সেরকমই।

আমাদের ফেব্রুয়ারির মেলায় বই প্রকাশের যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে তা এমনই আগ্রাসী যে - বইটি মেলায় না বেরুলে অনেকেই মনে করেন এটি প্রকাশের আর কোনো মানেই থাকেনা। অথচ দেশের একমাত্র পেশাদার প্রকাশনা সংস্থা ইউপিএল ফেব্রূয়ারি মাসে কোনো বইই প্রকাশ করেনা।

আমাদের দেশের প্রকাশকরা এখনো পেশাদারি বুঝাপরার বাইরে। এর একটি প্রধান কারণ হলো পেশাদার হওয়ার সুযোগ না থাকার কারণে। অতি জনসংথ্যার ভারে ন্যূব্জ কর্মহীন এইদেশে যেন তেন ভাবে একটি কাজের সাথে যুক্ত হতে পারার আগ্রহ থেকেও অনেকে প্রকাশক হয়েছেন। আবার সৃজনশীল বইয়ের সংকুচিত বাজারের কারণেও অনেকে ইচ্ছে থাকা সত্বেও পুরাপুরি পেশাদার হতে পারেন না।
প্রিয় মোরশেদ, ২০০৯ এ আমি বিচিত্র কারণে নয়, নির্দিষ্ট কিছু কারণেই আগোছালো হয়ে গিয়েছিলাম। কারণগুলো ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজনকে ছাড়া কখনোই কাউকে জানাইনি। এখনো জানাতে চাইনা। তবে আপাত সুখের কথা, সেই কথিত বিচিত্র পরিস্থিতি এরই মধ্যে উতরে যেতে পেরেছি। এবং এর মধ্যেই মিথুন কায়সারের খোকাবাবু, শোমচৌ’র প্রকৃতি কণ্যার দোলনা ঘর, হাসান মোরশেদের শমন শেকল ডানা- মানসম্পন্ন ছাপায় পূণ:প্রকাশ করা হয়েছে। প্রিয় মোরশেদ, আমি তোমাকে এরই মধ্যে দানবের রূপরেখা বিষয়ে একটি মেইলও করেছিলাম। বইটি আবারো প্রকাশ করতে চাই এবং এবিষয়ে কোনো সংযোজন-বিয়োজন আছে কি-না জানতে চেয়ে। এই মেইলের কোনো উত্তর আজো পাইনি। এই বিষয়গুলি পাবলিকলি শেয়ার করা আমার কাছে যুক্তিযুক্ত মনে হয়না যদিও, তবু জানিয়ে রাখি এইখানেই- দানবের রুপরেখা আবারো প্রকাশের প্রস্ততি চলছে। ইনার ছাপা শেষ। নতুন প্রচ্ছদ ডিজাইন হচ্ছে। এবং এবাবদ অনুবাদকের রয়েলিটি তোমার অক্টোবর সফরের সময় যথাযথ ভাবে পৌঁছে দেয়া হবে।
মোরশেদ এবং অন্য বন্ধুরা, আমি এখন যে বইটি ছাপার উপযুক্ত মনে করি-সেটার জন্য লেখেকর সাথে চুক্তি সম্পন্ন করি এবং চুক্তি মোতাবেক যথাসময়ে রয়েলিটি প্রদান করি। তবে যেসব আলোচনা, অভিযোগ ব্যক্তিগতভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব সেগুলো ব্যক্তিগত পর্যায়েই করা উচিত বলে আমি মনে করি।

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

হাসান মোরশেদ এর ছবি

টুটুল ভাই,
আপনার মন্তব্য ছাড়া এই পোষ্টের কোন কার্যকারীতা থাকতোনা। অপেক্ষায় ছিলাম।
ঐ সময়টাকে আমি ব্যতিক্রম হিসেবেই দেখেছি। প্রকাশ্যে তো দূরে থাক, ব্যক্তিগত ভাবে ও কোনদিন আপনার কাছে কোন ধরনের অভিযোগ করেছি বলে মনে হচ্ছেনা। বরং বইমেলা চলে যাচ্ছে,বই আসছেনা, শুভার্থীরা বন্ধুরা রীতিমত গালি দিয়ে মেইল করছে তবু সেই সময়টাতে ও আমি আপনার সাথে যোগাযোগ করিনি, কেন বই আসছে ঘ্যান ঘ্যান করিনি। এর একমাত্র কারন ছিলো আপনাকে বিব্রত না করা। যে কোন মানুষেরই খারাপ সময় আসে, আমার নিজেরও আসে। পেশাগত সম্পর্কের বাইরে থেকে এটা অনুভব করতে চেয়েছি।
দেখুন এখানেও আমি শমন শেকল ডানার পরিনতি কোন কথা বলিনি। একেবারেই না। দানবের রূপরেখা নিয়ে ঠিক ততোটুকুই বলেছি যতোটুকু না বললে পরিস্থিতিটা বুঝা যেতোনা।
আমার যদি ভুল না হয়, আপনার মেইলের উত্তর দিয়েছিলাম, জানিয়েছিলাম আমার কোন আপত্তি নেই, আপনি চাইলে অবশ্যই পুনঃ প্রকাশ করতে পারেন।

আপনার যদি মনে হয় যেসব আলোচনা, অভিযোগ ব্যক্তিগতভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব সেগুলো ব্যক্তিগত পর্যায়ে না করে আমি পাবলিকলি করেছি তাহলে দুঃখিত। যা আগে করিনি, তা এখন ও করছিনা। ব্যক্তিগতভাবে ও না, পাবলিকলি ও না।

পুরনো কথা বাদ দেই।
আপনি যদি এই আলোচনাটা জারি রাখেন তাহলে ভালো হয়। অনুবাদের বাজার আসলে কেমন? একজন অনুবাদকের পক্ষে প্রফেশনালি এই পরিশ্রমসাধ্য কাজ সম্ভব কিনা? একজন প্রকাশকের পক্ষে অনুবাদকে লাভজনক বিনিয়োগ হিসেবে দেখা সম্ভব কিনা?
বাজার বাড়ানো বিষয়ে কিছু করা সম্ভব কিনা?
আপনার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে যদি কিছু জানান তাহলে বুঝতে সুবিধে হয়।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

ঐ বিশেষ সময়ে এবং তার পরপর আমার উপর অনেকের অনেক ক্ষোভ নানান ভাবে প্রকাশ হয়েছিলো। সে জন্যই তোমার কথার সূত্র ধরে কিছু কথার জবাব দিতে হয়েছে। এগুলো ব্যক্তিগতভাবে না নিলেই সুবিধা হয়।

আমাদের পাঠকদের অনুবাদ পাঠে আগ্রহ এখন তুঙ্গে। তবে ভালো বইয়ের ভালো অনুবাদের জবর আকাল। একটা অভিজ্ঞতা শেয়ার করি এখানে। এ বছর বার্টান্ড রাসেলের 'রোড টু ফ্রিডম' এর অনুবাদ প্রকাশের ঘোষণা আমরা দিয়েছিলাম। অনুবাদক একজন অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক। ঐতিহ্য থেকে আরো দুই-তিনটি অনুবাদ বই এর মধ্যেই বের হয়ে গেছে। অনুবাদক অনুবাদ কর্মটি পাঠিয়ে দিলেন আমার কাছে। আমি কম্পোজ-প্রুফ ইত্যাদি সেরে প্রেসে পাঠানোর অপেক্ষায়। মূল বইটি আমি তখনো দেখিনি। কভার ডিজাইনের প্রয়োজনে অনুবাদককে বললাম মূল বইটি পাঠাতে। তারপর একজনকে দিয়ে মূল বইয়ের সাথে অনুবাদ মিলাতে গিয়ে ধরা পরলো গড়বর। ভদ্রলোককে আমি বইটি না ছাপানোর কারণ ব্যাখ্যা করে চিঠি পাঠিয়েছি। হয়তো বড় কোনো প্রকাশনা থেকে এটি বের হয়ে যেতে পারে যেকোনোদিন।

এছাড়া অনুবাদ এর অনুমতি নিয়ে আছে ব্যাপক জটিলতা। আইন অনুযায়ি মূল লেখকের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এটি সরাসরি বা এজেন্টের মাধ্যমে হতে পারে। এই বিষয়ে সরকারি আইন-কানুন সংগ্রহ করে পড়ছি। কিন্তু আইন-কানুন এমন সব জটিল ভাষায় লেখা- মর্ম উদ্ধার করতে ত্রাহি অবস্থা।

তবে যত যাই বলি, বইয়ের ব্যবসায় লাভ একটা আপেক্ষিক শব্দ। তার চেয়ে love কিছুটা পাওয়া যায় বৈকি।

অ. ট: আমি শমন শেকল ডানা বিষয়ে তোমাকে প্রথম মেইল করেছিলাম। এর উত্তর আমি পেয়েছি। কিন্তু দানবের রূপরেখা নিয়ে মতামত জানাতে বোধহয় ভুলে গিয়েছিলে।

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

হাসান মোরশেদ এর ছবি

না। ব্যক্তিগত ভাবে নেইনি। ক্ষোভ নেই। সুতরাং তখন কিংবা এখন প্রকাশের ও কিছু নেই হাসি

চাহিদা আছে অথচ অনুবাদ হয়নি এরকম একটা তালিকা দেন আমাকে। আমার নিজের তালিকার সাথে মিলিয়ে দেখি।

অনুবাদ-দক্ষতা সম্ভবতঃ অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে। আমি অনুবাদকে মৌলিক লেখার চেয়ে শ্রমসাধ্য মনে করি। মৌলিক লেখায় অনেক স্বাধীনতা থাকে। অনুবাদে দুই তরফা খাটুনী। পুরো জিনিস তৈরী করতে হয়, আবার লাইনলেংথ ও ঠিক রাখতে হয়।
পাঠের অভিজ্ঞতা এবং ভাষাব্যবহার ও বিবেচ্য।

আইনের বিষয়টা দেখেন- একটা মাঝামাঝি পথ বের হওয়া দরকার। কাম্যুর পরিবারকে ইউরোতে রয়্যালিটি দিতে গেলে বাঙ্গাল পাঠককে কোনদিনই কাম্যু পড়তে হবেনা।

অটঃ আসলেই মনে হয় ভুলে গিয়েছিলাম। দুঃখিত। এটার ক্ষেত্রে ও মতামত ঐটার মতই

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সবজান্তা এর ছবি

চাহিদা আছে অথচ অনুবাদ হয়নি এরকম একটা তালিকা দেন আমাকে। আমার নিজের তালিকার সাথে মিলিয়ে দেখি।

একটু নাক গলাই। একটা নাম বলার জন্য মুখ নিশপিশ করছে, মিলান কুন্ডেরা- আমার জীবনে এ যাবতকালে পড়া সর্বশ্রেষ্ঠ লেখকদের একজন। কিন্তু কুন্ডেরা অনুবাদের ভয়টুকুও একদম নগন্য না। কুন্ডেরা অনুবাদ করতে গেলে ঠিক কী পরিমাণ ভাষার উপর দখল থাকতে হবে, এবং অন্তঃস্থিত দর্শনটুকুকে অনুবাদ করতে হবে, সেটা ভাবলেই মাথায় তালগোল লেগে যায়... তবু আপনার উপর ভরসা আছে... একবার চেষ্টা করে দেখতে পারেন।

আমার মনে হয় আপনি পারবেন।


অলমিতি বিস্তারেণ

গৌতম এর ছবি

একটা অফটপিক প্রশ্ন করি। আপনি যেহেতু অনুবাদ করেছেন, তাই উত্তরটা আপনি হয়তো ভালো জানবেন। অন্য কেউ জানলেও দয়া করে উত্তর দিবেন। কারণ এটা আমার জানা দরকার।

বিদেশি বই অনুবাদের ক্ষেত্রে অনুমতির নিয়মকানুনটা আসলে কী? আমি গত এক বছরে একটি বই ও কিছু বক্তৃতা অনুবাদ করেছি। ইচ্ছে আছে সেগুলো প্রকাশ করার। বই ও বক্তৃতাগুলোর স্বত্ত্বাধিকারীদের কাছে আমি ইতোমধ্যে বাংলা অনুবাদ প্রকাশের অনুমতি চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি, কিন্তু এখনো কোনো উত্তর পাই নি। অন্য অনেকের কাছ থেকে জেনেছি, প্রকাশনী সংস্থাগুলো সাধারণত এসব চিঠি বা ইমেইলের উত্তর দেয় না; ফলে তাদের অনেকেই ইমেইলের উত্তর না পেয়ে পরে বই ছাপিয়ে ফেলেছেন। যারা উত্তর দেয়, তারা এমন পরিমাণ অর্থ দাবি করেন, যা দিতে গেলে বইয়ের দাম এমন দাড়াবে যা দিয়ে পাঠক বই কিনবে না। এ অবস্থায় করণীয় কী? কেউ কেউ এমনও বলে থাকেন, বইয়ের বিষয়বস্তু যদি এমন থাকে যা শুধু ব্যবসায়িক কাজেই নয়; বরং ব্যবসায়িক কাজের চেয়েও পাঠকের নানা উপকারে আসবে (যেমন- রেফারেন্স বই) তাহলে অনুমতি না পেলেও ছাপিয়ে ফেলা যায়। আসলেই কি তাই?

এ বিষয়ে কেউ আলোকপাত করলে খুশি হবো।

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

মোটেও অফটপিক না গৌতম। এই বিষয়টা পরিস্কার না হলে গায়েগতরের খাটুনীর পেছনে চৌর্যবৃত্তির ছাপ লেগে যাবে।
অরুন্ধতীর অনুবাদে হাত দেয়ার আগে আমি প্রকাশক টুটুল ভাইকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি ও বাস্তবতাটা জানিয়েছিলেন। পরে আমি ব্যক্তিগত স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য অরুন্ধতী রায়কে মেইল করেছিলাম। অরুন্ধতী উত্তর দিয়েছিলেন।
তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন আমার অনুবাদ আগ্রহের জন্য কিন্তু সেই সাথে জানিয়েছিলেন অনুমতি সংক্রান্ত বিষয়টি সুরাহা করবে তার প্রকাশক।
প্রকাশককে ও মেইল করেছিলাম। পরিনতি সেই থোড়বড়ি খাড়া।

যেসব বইয়ের মেধাস্বত পরিনত( এক্সপায়ার্ড এর বাংলা কি?) হয়ে গেছে সেগুলোর ক্ষেত্রে সম্ভবতঃ সমস্যা নয়। কতোবছর হলে মেধাস্বত্ব এক্সপায়ার্ড হয়? ৬০ নাকি?

আরো কিছু বিষয় আছে। যেমন আলবেয়ার কাম্যু অনুবাদে আমার আগ্রহ আছে। এখন কাম্যুর বইগুলো পৃথিবীর বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে। আমি পড়ছি ইংরেজী অনুবাদ। ইংরেজীতে ও আবার অনূবাদ করেছে অনেক প্রকাশক। এখন আমি অনুমতি নিতে গেলে কার অনুমতি নেবো?

এতোসব হ্যাপা সামলাতে গেলে শেষপর্যন্ত আর আসল কাজই করা হবেনা।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

গৌতম এর ছবি

এই বিষয়টা নিয়ে আমিও টুটুল ভাইসহ অনেকের সাথেই কথা বলেছি, বলছি। ইচ্ছা আছে একদিন কপিরাইট অফিসে গিয়ে সরাসরি কথা বলার।

বইয়ের মেধাস্বত্ত্ব এক্সপায়ার্ড হয় একেক দেশে একেক রকম। তবে মোটামুটি ৬০ বছর ধরে নেয়া যায়।

আমি যে বইটা অনুবাদ করেছি, সেটার মূল পর্তুগিজ ভাষায় প্রথম প্রকাশিত হয় এবং পরে বেশ কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থা এটিকে ইংরেজিতে অনুবাদ করে। আমি এরকম তিনটি সংস্থার কাছেই ইমেইল করেছি। কেউ কোনো রেসপন্স করছে না। আবার একটি বইতে লেখা আছে এই বইয়ের কপিরাইট লেখকের পরিবারের। কিন্তু অনেক গুগলিং করেও লেখকের পরিবারের ঠিকুজি বের করতে পারলাম না যে, তাদেরকে একটা ইমেইল করবো। এ অবস্থায় করণীয় কী?

আমার অনুবাদ দেখে একজন বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক বলেছিলেন, এটি প্রকাশ করলে অনেকেই উপকৃত হবে। কোনো উত্তর না আসলে তুমি প্রকাশ করে দাও। চৌর্যবৃত্তির একটা ছাপ লাগবে ঠিকই, কিন্তু এর বেনিফিশিয়ারির সংখ্যাটা চিন্তা করলে ওটা গায়ে নাও মাখতে পারো। অন্যদিকে আমি অনুমতি না নিয়ে কিংবা একটা যথাযোগ্য সমাধান বের না করে ওটা ছাপতে চাই না।

সব মিলিয়ে ধন্দে আছি। মন খারাপ
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

জাহামজেদ এর ছবি

৬০ এর দশকের মাঝামাঝিতে এক আমেরিকান তরুন চিকিৎসক বাংলাদেশে এসেছিলেন খ্রীষ্টান মিশনারী হিসেবে। চট্রগ্রামের ডুলাহাজরার কাছে তারা স্থাপন করেছিলেন মিশনারী হাসপাতাল। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এক মর্মস্পর্শী স্বাক্ষী এই ডাক্তার ও তার সহকর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শী পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও রাজাকারদের পাশবিক নির্যাতনের। সহায়তা করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের রসদ ও চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে। পাকিস্তানী জেনারেলকে বাধ্য করেছেন ঐ এলাকার হিন্দুদের উপর নির্যাতন বন্ধ করতে। দেশ স্বাধীন হবার পর যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে চাপ দিয়েছেন বাংলাদেশের স্বীকৃতির জন্য, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিপুল অংকের ত্রান সংগ্রহ করে পুনর্বাসন কার্যক্রম চালিয়েছেন ঐ অঞ্চলে।

আপনি এই পোস্ট না দিলে ভদ্রলোকের কথা হয়তো জানাই হতো না। আরো বিস্তারিত জানার অপেক্ষায় থাকলাম।

বাংলাদেশে অনুবাদের পাঠক ভালোই আছে। বিক্রিও অনেক ভালো। অনুবাদ বইগুলোর জন্য এখন সবাই ঐতিহ্যতে ছুটে যায়। বাংলাদেশে এখন যত ভালো অনুবাদ বই পাওয়া যায়, সব ঐতিহ্য থেকেই বের হয়। প্রকাশকের নাম, আরিফুর রহমান নাঈম।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

হাসান মোরশেদ এর ছবি

নিঃ সন্দেহে সুখবর।
ঐতিহ্যের কারো সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ আছে?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

জাহামজেদ এর ছবি

ঐতিহ্যের প্রকাশকের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগ আছে। যতটুকু জানি, কে অনুবাদ করছেন এটা না দেখে উনারা কোন বই অনুবাদ করা হচ্ছে এবং পাঠকের কাছে বইটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে কিনা সেটা দেখেন। কিছুদিন আগে পাঠসূত্রের রাজীব নূর ব্যক্তিগত আলাপে আমাকে ভালো অনুবাদ বই ও অনুবাদ লেখকের অভাবের কথা বলছিলেন, উনি আমাকে প্রস্তাব করেছিলেন কিছু কিশোর ক্লাসিক অনুবাদ করে দেওয়ার জন্য। আমার মনে হয় রাজীব নুরের সাথে এই বিষয়টা নিয়ে আলাপ করা যায়। তবে বইয়ের কপিরাইট সত্বের
( বইটা অন্তত ৬০ বছরের পুরনো হতে হবে ) বিষয়টা লেখককেই খেয়াল রাখতে হবে, তিনি এটাও বলেছিলেন।

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

এ বছর আমার প্রথম বই বের হয়েছে। প্রকাশনা সংস্থার সাথে এ নিয়ে আমার কোনো চুক্তি হয়নি। প্রকাশক পাণ্ডুলিপি দেখে পছন্দ করেছেন, বই বের করেছেন। বই বের হওয়ার পর আমাকে ৫ কপি বই সৌজন্য কপি হিসেবে দিয়েছেন। নতুন লেখক হিসেবে প্রকাশক নিজে বই করেছেন, এতেই আমি খুশি থেকেছি। ভবিষ্যতে হয়তো আরো বই বের করবো, তাই এ নিয়ে কী আলোচনা হয়, তা শুনতে কান পাতলাম!

হাসান মোরশেদ এর ছবি

নিজের বইয়ের ক্ষেত্রে পান্থ যদি কেউ পকেটের পয়সা দিয়েও বই করে সমস্যা নেই। আত্মতৃপ্তি থাকে। এটা আমার। প্রকাশক ও কি বুঝে নতুন একজনের বই তার নিজের টাকায় প্রকাশ করার ঝুঁকি নেবে?

কিন্তু অনুবাদের বিষয়টা একটু আলাদা লাগে আমার কাছে। একেতো কষ্টসাধ্য তারউপর থ্যাংক্সলেস জব। একটা কিছু তো প্রাপ্তি থাকতে হবে।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

অনুবাদের চাহিদা বাজারে সাধারণ মৌলিক বইয়ের তুলনায় বেশি। এখানেই টুটুল ভাইয়ের মন্তব্য থেকে জানা যাচ্ছে যে অরুন্ধতির অনুবাদটি দ্বিতীয় মুদ্রন চলছে। হিসেব করলে দেখা যাবে যে ২০০৯ সালের বইমেলা ধরতে না পারা সত্ত্বেও এই বইটি গত একবছরে একটা সংস্করন শেষ হয়ে গেছে। আমি নিজে বইমেলা পর্যবেক্ষন করে দেখেছি, হাফ-কোয়ার্টার-সেমি শত শত সবিজ্ঞাপিত অপরিচিত লেখকের প্রতি পাঠকের এক ধরনের ভীতি কাজ করে, সে তুলনায় অনূদিত বই কিনে সাধারণ পাঠক স্বস্থি বোধ করেন।

বইয়ের রয়ালিটির হার সাধারণত বইয়ের গাত্রমূল্যের ১৫%। লেখক বিশেষে এই হার কিছুটা বোধহয় উঠানামাও করে; সংবাদপত্রে আমার কলিগ একজন বাজারকাটতি লেখককে ১৮% রয়ালিটিতে চুক্তি করতে দেখেছি গত ফেব্রুয়ারির আগে। অনুবাদের রয়ালিটি মৌলিক লেখার চেয়ে বেশি বোধহয় হয় না। আমি নিশ্চিত না।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

রয়ালিটি বিষয়টা কি রকম কাজ করে?
ধরা গেলো অনুবাদক 'ক' এর একটি অনুবাদ প্রকাশ করলেন প্রকাশক 'খ' ১৫% চুক্তিতে।
একটা নির্দিষ্ট সময় পরে, 'খ' 'ক' কে জানাবেন আপনার বই ১০০ টাকার বিক্রী হয়েছে এই সময়ে। অতএব আমি আপনাকে ১৫ টাকা দিচ্ছি। এরপর আরো নির্দিষ্ট সময়পর যদি 'খ' জানান ৫০ টাকার বই বিক্রী হয়েছে তাহলে 'ক' পাবেন সাড়ে সাত টাকা।

এটা কি এরকম?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

না, এরকম না সবক্ষেত্রে। একবারে নিখুঁত হিসাব রাখা সম্ভব হয় না, প্রয়োজনও পড়ে না।
এখানে নিয়ম যেটা চালু সেটা হচ্ছে, আমি হাসান মোরশেদের বই ১০০০ কপি ছাপার কথা বলে পান্ডুলিপি নিলাম, এখন এ অনুযায়ী রয়ালিটি দিয়ে দেব। লেখক ভেদে কিছুটা আগে দেয়া হয় অথবা পুরোটাই আগে দেয়া হয়। সাধারণত ফেব্রুয়ারি শেষে এই ১ হাজার কপির রয়ালিটি দিয়ে দেয়া হয়। এখন প্রকাশক ১ হাজার ছাপেন নাকি ১শ ছাপেন নাকি বেশি ছাপেন, এটা নিয়ে তেমন কেউ মাথা ঘামায় না।
তবে চাহিদা যদি দেখা যায় খুব বেশি, তখন লেখক সচেতন হন এবং যদি উনার জনপ্রিয়তা ভালো থাকে তখন প্রকাশক দ্বিতীয় মুদ্রনের টাকা তখনই দেন।
নইলে সাধারনত দ্বিতীয় সংস্করনের সময় আবার টাকা দেয়া হয়।

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

রয়েলিটির বিষয়টি মৌলিক, সম্পাদনা এবং অনুবাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন। আবার এখানে বড় লেখক, নতুন লেখক এর ব্যাপার আছে। জনপ্রিয় লেখকদের বেলায় যেমন খুশী তেমন আদায় নীতি।

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

ধুসর গোধূলি এর ছবি

কতো গল্প, কতো কাহিনি ছড়িয়ে আছে আমাদের অজানায়!
মিশনারি সেই ডাক্তার সাহেবকে সশ্রদ্ধ সালাম।
আর যেটা আগেই বললাম, ইচ্ছে করে নেমে পড়ি। কিন্তু সামর্থ নেই যে! মন খারাপ



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

আমাজনে আরেকটা পেলাম। ডাক্তার টু

অফটপিক:

আমার একটু আধটু আব্‌জাব্‌ অনুবাদের ব্যারাম আছে। মন খারাপ

-------------------------------------------------------------
অভ্র আমার ওংকার

পুতুল এর ছবি

জার্মান ভাষা থেকে অনুবাদের জন্য কোন লেখকের কোন বইটি নির্বাচন করা যথাযথ হবে বলে আপনাদের ধারণা।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।