হেফাজতে ইসলামের নতুন কর্মসূচীর প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ

হাসিব এর ছবি
লিখেছেন হাসিব (তারিখ: সোম, ২৫/১১/২০১৩ - ২:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সংবিধানে মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপন ও মহানবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর শানে কটূক্তিকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রেখে আইন পাসসহ ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। গতকাল ২৪শে নভেম্বর সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী। সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি আদায়ের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব হাফেজ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী।

সংবাদ সম্মেলনে হেফাজতের পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণার পাশাপাশি রুহী ও বাবুনগরী এর প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে বক্তব্য রেখেছেন। এ পোস্ট লেখা পর্যন্ত কোন পত্রিকাই একদম হুবহু বক্তব্যগুলো প্রকাশ করেনি। নয়া দিগন্তে সভার সবচাইতে বিস্তারিত চেহারাটা পাওয়া যায়। প্রকাশিত নিউজগুলো পড়লে দেখা যায় হেফাজতে ইসলাম ধর্মীয় দল হলেও এদের বক্তব্যের বেশিরভাগই মিথ্যা কথা ও অতিরঞ্জন ও ভিত্তিহীন অভিযোগ/অনুযোগ দিয়ে ভর্তি। কিছু উদাহরণ দেখা যাক।

জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন,

হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব হাফেজ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরের একপর্যায়ে বলেন, আপনারা আমার বিরুদ্ধে লিখেন তাতে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু যাহা লিখবেন বাস্তবতার ভিত্তিতে লিখবেন। পত্রিকায় লিখা হয়েছে আমি আফগান ফেরত যোদ্ধা। তালেবান পতনের পর এ দেশে এসে তালেবানি রাষ্ট্র কায়েমের চেষ্টা করছি। এগুলা ডাহা মিথ্যা। কোনো প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না। আমি একবারের জন্যও আফগানিস্তান যাইনি। আমি রিমান্ডেও এগুলোর জবাব দিয়েছি।

আমি হেফাজতের খবর যেগুলো পত্রিকায় প্রকাশিত হয় সেগুলো মন দিয়ে পড়ার চেষ্টা করি। আমি নিকট অতীতে এধরণের কোন কিছু প্রকাশ হয়েছে বলে মনে করতে পারি না। গুগল সার্চও কোন সহায়তা করলো না। জুনায়েদ বাবুনগরীর এই অভিযোগের তাহলে ভিত্তি কী?

বাবুনগরী এর পরপরই বলেছেন,

আমরা মাদরাসা, মসজিদ, খানকাহর মানুষ। কিন্তু ইসলামবিরোধীরা, নবীর দুশমন ও শত্রু নাস্তিকরা যখন ইসলামের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলবে, কথা বলবে তখন আমরা মাদরাসা খানকাহ ছেড়ে রাজপথে নামতে বাধ্য হই। আমরা রাজপথে গেলে আজান দিই, নামাজ পড়ি। আর শাহবাগী ও বামপন্থীরা রাজপথে এলে নাশকতা করে।

বাঙ্গালির স্মৃতি খারাপ হলেও হেফাজতের তান্ডবের কথা সহজে ভুলবে বলে মনে হয় না। হেফাজতের সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা শহর যেরকম রণক্ষেত্রে পরিণত করা হয়েছিলো সেটা সহজে ভোলার নয়।

আমরা রাজপথে গেলে আজান দিই, নামাজ পড়ি।

প্রাসঙ্গিক খবর,

রাজপথে নামাজ পড়া আর আজান দেবার নমুনা জনগণ ভালোই দেখেছে। আর শাহবাগী ও বামপন্থীদের নাম নিয়ে বাবুনগরী আরেকটা মিথ্যার আশ্রয় নিলেন। এদের কারোরই পুলিশ হত্যা, জনগণের জানমালের ওপর হামলা, কোন রাজনৈতিক দলের কার্যালয় বিস্ফোরক দিয়ে ওড়ানোর চেষ্টা, নারীদের উপর হামলা করেছে এরকম কোন দৃষ্টান্ত নেই। এই অভিযোগ প্রমানসহ হেফাজতের বিরুদ্ধে আছে।

হেফাজতে ইসলাম কাদের নিয়ে গঠিত সে প্রসঙ্গে রুহী বলেছেন,

লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব বলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এ দেশের দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মুসলমানদের একটি সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক ঈমানী আন্দোলন। এই সংগঠন প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ অবধি মুসলমানদের ঈমান-আকিদা সংরণ, মহান আল্লাহ, তার প্রিয় রাসূল (সালালাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও ইসলামের বিধানগুলোর মর্যাদা ও মূল্যবোধ রক্ষার ইস্যুতে বিভিন্ন সময় নানা রকম আন্দোলন-কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছে।

প্রথমত, হেফাজতের আন্দোলন কোন অরাজনৈতিক আন্দোলন নয়। কারণ অরাজনৈতিক আন্দোলন কাঠালের আমসত্ত্বের মতো বিষয়। এর কোন বাস্তব কোন অস্তিত্ব নেই। দ্বিতীয়ত, "হেফাজতে ইসলাম দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মুসলমানদের" দল একটা অতিরঞ্জন। আলিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রিক গ্রুপসহ ছোট বড় অনেক গ্রুপই এদের সাথে নেই। আর রুহী সাহেবকে উপরের ছবিটার দিকে তাকিয়ে ঈমানী আন্দোলন কথাটা বলতে অনুরোধ করি। ঈমানী আন্দোলনের চেহারা এরকম হলে সেটা তাদের দলের প্রচারণার জন্য এসব ছবি খুব কাজে আসবে বলে মনে হয় না।

রুহী আরোও বলছেন,

অন্য দিকে আবারো কিছু নাস্তিক-মুরতাদ নতুনভাবে ব্লগে মহান আল্লাহ, বিশ্বনবী মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সা: সম্পর্কে জঘন্য ভাষায় নানা রকম লেখালেখি শুরু করেছে। সরকার তথ্য-প্রযুক্তি আইন করে সেই আইন একচেটিয়া ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রয়োগ করে চলেছে অথচ এসব নাস্তিক-মুরতাদ অহরহ সেই আইন লঙ্ঘন করলেও তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। লিখিত বক্তব্যে মাওলানা রুহী আরো বলেন, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান, ধর্মপ্রাণ এবং শান্তিপ্রিয়। হাতেগোনা, জনবিচ্ছিন্ন কিছু বুদ্ধিজীবী, তথাকথিত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বামপন্থী রাজনীতিকদের মনোরঞ্জনের জন্য সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর বিপে অবস্থান নিয়েছে।

"নতুনভাবে" কে কোথায় কী লিখছে? রুহী সাহেব কি নিজে ব্লগ পড়েন? আর সরকার তথ্য প্রযুক্তি আইন করে "একচেটিয়া"ভাবে ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রয়োগ করে চলেছে এটা তো একটা ডাহা মিথ্যা কথা হলো। নাকি রুহী সাহেব বলতে চান ব্লগার রাসেল, আসিফ মহিউদ্দিন, সুব্রত শুভ, মশিউর রহমান এরা ইসলামপন্থী ব্লগার? এক ফারাবি ছাড়া তো হেফাজতি মনোভাবাপন্ন কোন ব্লগার আটক হয়নি। সম্প্রতি আটক হওয়া এ্যাপোলো বিএনপিপন্থী বলে পরিচিত। বিএনপি হলো সেই দল যে দলের সাথে হেফাজতকে মিলিয়ে ফেলায় দেশে বিস্ফোরণন্মুখ অবস্থা সৃষ্টির হুমকি এই রুহী সাহেবই দিয়েছেন।

হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত সংশ্লিষ্টতার ধুয়া তুলে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার সর্বপ্রকার অপচেষ্টা চালিয়েছে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, বক্তৃতা-বিবৃতিতে বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত বলে সরকারপ্রধানসহ ক্ষমতাসীন জোটের মন্ত্রী-এমপিরা ঢালাওভাবে তিরস্কার ও তির্যক ভাষায় আক্রমণ করে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, সরকার অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে হেফাজতে ইসলামকে বিএনপি-জামায়াতের তকমা লাগিয়ে আবারো দেশে একটি বিস্ফোরন্মুখ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে সরকার ইসলামপন্থীদের ওপর তথ্য প্রযুক্তি আইনের অপপ্রয়োগ করছে এটাও একটা ডাহা মিথ্যা কথা।

নিজেদের সমর্থন প্রমান করতে রুহী বলেছেন,

দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান, ধর্মপ্রাণ এবং শান্তিপ্রিয়। হাতেগোনা, জনবিচ্ছিন্ন কিছু বুদ্ধিজীবী, তথাকথিত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বামপন্থী রাজনীতিকদের মনোরঞ্জনের জন্য সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সরকারের জন্য এটা বড় ধরনের অদূরদর্শিতা ও আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হিসেবেই ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন, এসব ধর্মবিদ্বেষীর সংখ্যা কত? এবং নবীপ্রেমিক মুসলমানের সংখ্যা কত? সরকার কেন গুটিয়েক লোকের কথায় রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত নেবে তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। আমরা সরকারের প্রতিপক্ষ নই। কোনো রাজনৈতিক অভিলাষও আমাদের নেই। কিন্তু সরকারি দলের কিছু নেতা ও সরকারের কয়েকজন প্রভাবশালী মন্ত্রী হেফাজতে ইসলামের রাজনৈতিক চরিত্র আবিষ্কারের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। হেফাজতে ইসলাম ও নবীপ্রেমিক জনতার প্রাণের দাবি ১৩ দফা সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়ানোর পাশাপাশি প্রতিনিয়ত নানাভাবে মিথ্যা, ভিত্তিহীন কথাবার্তা বলে সরকার আমাদের তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে বাধ্য করছে, যা কারও কাম্য নয়।

রুহী সাহেব আগেই হেফাজতে ইসলামকে দেশের সকল মুসলমানদের প্রতিনিধি ধরে নিয়েছেন। উনি নিজেও ভালো করে জানেন এটা সত্য নয়। আর উনি এটাও জানেন উনাদের ব্যাখ্যা করা ইসলাম সম্পর্কেও দ্বিমত করার মতো যথেষ্ট লোকজন আছে। হেফাজত আন্দোলন করছে ১৩ দফা নিয়ে। এই ১৩ দফা মানলে মেয়েরা ঘর থেকে বের হতে পারবে না, মুক্তমত মুক্তচিন্তা বন্ধ হয়ে যাবে। এই ১৩ দফা নিয়ে ভোটে দাড়ানোর সাহস কি রুহী সাহেবদের হবে? আত্মবিশ্বাস থাকলে সাহসটা করে ফেলাই ভালো। পরিস্কার হোক কে কোনটা কীভাবে চায়। স্মৃতি ঝালাই করতে পাঠক হেফাজতের ১৩ দফার ওপর আরেকবার নজর বোলাতে পারেন। আর ১৩ দফা সম্পর্কে বিভ্রান্তি, মিথ্যা, ভিত্তিহীন কথা কে কোথায় বলেছে সেটা জানানোর জন্য রুহী সাহেবের প্রতি আহবান রইলো।

রুহী লিখিত বক্তব্য শেষ করেছেন আল্লামা শফীর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে। সেখানে তিনি বলছেন,

দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় শীর্ষ মুরুব্বি, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীর বিরুদ্ধে অব্যাহত কুৎসা রটনা, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও অপপ্রচারে ব্যর্থ হয়ে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ১৮ দলের নেত্রীর ছবির সাথে তার ছবি জুড়ে দিয়ে ব্যঙ্গচিত্র তৈরি করে পোস্টারিং করা হচ্ছে, যা দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় বুজুর্গ ব্যক্তিত্ব আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীসহ পুরো আলেমসমাজের সাথে চরম বেয়াদবি ও ধৃষ্টতার শামিল।

কোনটা বেয়াদবি, কোনটা অপপ্রচার আর কোনটা ধৃষ্টতা বোঝা মুশকিল। শফী নারীদের তেঁতুলের সাথে তুলনা করার পর সেটা আবার অস্বীকার করেছেন। জনগণ এইসব কোন নাস্তিক ব্লগার মারফত জানেনি। উনি যা বলেছেন সেগুলোর ভিডিও প্রমান রয়েছে। আর ব্যঙ্গচিত্র করে পোস্টারিঙের কথা বলে অনুযোগ করা হচ্ছে। পুরো বক্তব্যে এই একটা ইস্যুই দেখলাম নতুন। ধারণা করা যায় এই পোস্টার ইস্যুতেই মাঠ গরম করতে এতোগুলো মিথ্যা কথা, অতিরঞ্জনের ফিরিস্তি সংবাদ সম্মেলন করে পড়া হয়েছে। শফি-বাবুনগরী জুটির ভাগ্য ভালো ৭১এ হাঁটহাজারিতে মন্দির ভাঙ্গার অপরাধে এদেরকে এখনও বিচারের সম্মুখিন করা হয়নি।

শফি-বাবুনগরী-রুহী পোস্টার ইস্যু ও একগাদা মিথ্যা কথাকে কেন্দ্র করে আবারো রাজনীতির মাঠ গরম করতে চাইছেন। এজন্য আবার বাংলাদেশের ব্যবসাবাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল মতিঝিলকে টার্গেট করেছেন। এরা বড়জোর আবারো হত্যা সহিংসতার মাধ্যমে মানুষের মধ্যে আতংক সৃষ্টি করতে পারবে। এর বেশি কিছু করার ক্ষমতা এদের নেই।

সূত্রঃ

১। ব্লগাররা আবার রাসূল সা:-কে কটাক্ষ করে নৈরাজ্য সৃষ্টির ইন্ধন জোগাচ্ছে - হেফাজতে ইসলামের সংবাদ সম্মেলন
২। হেফাজতের ১৩ দফা


মন্তব্য

সাইদ এর ছবি

এই সব দেওবন্ধী তাবলীগি ধর্মোন্মাদদের কে আমাদের বড় রাজনৈতিক দল সবাই তোষণ করে। বৃহত্তর জামাতীয়তাবাদি দলের বি এন পি শাখা এখন এদের ক্ষমতা আরোহণের সিঁড়ি ভাবছে। কিন্তু আওয়ামী লিগের প্রায় সব সাংসদ তাদের সংসদীয় এলাকায় কওমী মাদ্রাসা নামের এইসব তালিবানি কার্যক্রমকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়। জামাত আর এদের মধ্যে শুধু একটাই পার্থক্য জামাতীরা শিক্ষিত (মুলধারার শিক্ষা মাধ্যম হতে প্রাপ্ত শিক্ষা) ধর্মোন্মাদ আর এরা মূর্খ ধর্মোন্মাদ।

হাসিব এর ছবি

হেফাজতের সমাবেশের আগে আওয়ামী লীগ তাদের বশে আনার চেষ্টা করছে এটা সত্য। তারা তাড়াতাড়ি লাইনে চলে এসেছিলো এটাও সত্য। আওয়ামী লীগের বড় ব্যর্থতা হলো মাঠপর্যায়ে হেফাজতি প্রোপাগান্ডা (বাংলায় মিথ্যা কথা) মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

ঈয়াসীন এর ছবি

সময়োপযোগী পোস্ট। চলুক

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

গুল্লি

শাহরুখ বাবুনগরী এর ছবি

বাংলাদেশ প্রতিদিনের ২১/০৫/২০১৩ তারিখে প্রকাশিত খবরে দেখা যায়, জুনাইদ বাবুনগরী নিজের ছেলেরে মতিঝিলের মহা সমাবেশে আনেন নাই। বলছেন তার পড়ালিখা আছে। জুনাইদ কাকার ছেলে সালমানের বয়স ১৬ বছর, সে ফটিকছড়ির দৌলতপুরের কোন একটি মাদ্রাসায় পড়ালিখা করে ফাটাইয়া ফেলতেছে।

জুনাইদ কাকার প্রতি অনুরোধ, এইবার মতিঝিলে যদি ১৬ বছর বয়সের বাচ্চা বাচ্চা ছেলেগুলিরে নিয়া আসেন, লগে কইরা নিজের পোলারেও নিয়া আইসেন। আর যদি নিজের পোলারে না আনেন, তাইলে মাইনষের পোলাগুলিরে বিপদে ফালায়েন না। মাইনষের পোলারও পড়ালিখা আছে।

খবরের ছবি:

http://i.imgur.com/StEfamv.png

হাসিব এর ছবি

এই ভন্ডদের আয়োজন করা সংবাদ সম্মেলন কতোক্ষণ ধরে চলছিলো সেটা পত্রিকায় আসেনি। আসলে গণনা করে দেখা যেত উনারা মিনিটে কয়টা মিথ্যা বলেছেন।

মৃষৎ এর ছবি

এই পোস্টের হাজার শেয়ার দরকার!

দুর্দান্ত এর ছবি

"খানকাহ" বিষয়টা নতুন মনে হচ্ছে। সালাফি হেফাজতের সাথে চরমোনাই ঘরাণার জাতীয় পার্টীর কোন সমঝোতা হয়েছে কি?

হাসিব এর ছবি

বুঝি নাই। একটু ডিটেইলে ক্লুটা একটু বুঝায় বলেন। এগুলো জানার দরকার আছে সবার।

দুর্দান্ত এর ছবি

খানকাহ (আসলে খান গাহ, যেখানে 'খান সাহেব' থাকেন) হইল পীর সাহেবের আখড়া। সেখানে আশেকান তাদের পীর সাহেবের পুজা করে। হেফাজতের 'আন্দোলন' এর টাইমে চোদ্দদলের পক্ষ থেকা যেসব মোল্লা টকশো গরম কইরা গাইল পাড়ছিল তাদের মধ্য়ে এইসব খানকাহ ভিত্তিক বিবিধ পীরের মুরিদ পীরের শাহজাদারা ছিল অনেক মুখর। দেশের বিভিন্ন বড় বড় খানকার ও খানকা ভিত্তিক রাজনীতি ও দালালির সাথে এরশাদের জাতীয় পার্টির একটা পুরাতন সম্পর্ক আছে। এরশাদের মহাজোট থেইকা বাইর হওয়ার আর বাবুনাগরীর তার বক্তিমায় বার বার "খানকা" বলার মধ্য়ে কোন কানেকশান আছে কিনা, সেইটা হইল প্রশ্ন।

হাসিব এর ছবি

এরশাদের সাথে কানেকশন ছিলো ফরিদপুরের আটরশির পীরের। এই পীর আবার আত্মীয়তাসূত্রে অন্য কয়েক পীরের সাথে সম্পর্কিত। কারা কারা মনে নাই।

আর চেষ্টা সত্ত্বেও এরশাদের সাথে হেফাজতের ডিল হয় নাই। বাবুনগরী সেদিন বলেছে এরশাদ তাদের বদদোয়া নিয়ে গেছে

আর আমার ধারণা এরশাদ জোট থেকে বের হইছে বিএনপি না আসলে সে যাতে বিরোধী দলীয় নেতা হতে পারে সেই সম্ভাবনা মাথায় রেখে। আসম রবের মতো গৃহপালিত নেতা হওয়ার শখ আরকি!

হেফাজত বুঝতে হলে ধর্মীয় গ্রুপগুলোরে আগে বুঝে নেয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ন।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

বাংলাদেশে প্রচলিত ত্বরিকাগুলোর মধ্যে (ক্বাদেরিয়া, চিশ্‌তিয়া, নকশ্‌বন্দিয়া, মুজাদ্দেদিয়া, সুহরাওয়ার্দিয়া) কারো সাথে দেওবন্দী/ক্বওমী/খারেজী/আলিয়া মাদ্রাসা গ্রুপগুলোর সরাসরি কোন সম্পর্ক নাই।

মা'আরেফাতের এই ত্বরিকাগুলোর চর্চা যেসব পীরদের মাধ্যমে হয় তারা কোন মাধ্যমে (আলিয়া নাকি দেওবন্দী) পড়াশোনা করেছেন সেটা খুব ধর্তব্য কিছু নয়। সাধারণ লাইনে পড়া, এমনকি ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া পীরও আছেন। কেউ পীর হতে পারবেন কিনা সেটা তার মা'আরেফাতের চর্চা ও গুরু পীরের সাথে তার সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে। তাই এক পীরের সব ছেলে বা পছন্দের সব মুরীদ পীর হতে পারেন না। বাংলাদেশে সবচে' শক্তিশালী হলো চিশ্‌তিয়া ত্বরিকা। তবে তারা নিজেদেরকে কাদেরিয়া-চিশ্‌তিয়া বলে পরিচয় দেন। আবার বাংলাদেশের মুজাদ্দেদিয়ারা নিজেদেরকে নক্‌শবন্দিয়া-মুজাদ্দেদিয়া বলে পরিচয় দেন। একই ত্বরিকার বা ভিন্ন ভিন্ন ত্বরিকার বিভিন্ন পীর ও তাদের মুরীদদের মধ্যে কোন সদ্ভাব বা অসদ্ভাব নেই। তারা পরস্পরকে অঘোষিতভাবে স্রেফ এড়িয়ে চলেন। এই ব্যাপারে তারা কোন দলাদলি করেন না। তবে কখনো স্বার্থের সংঘাত হলে সেটা দেওয়ানবাগ ভার্সেস চর মোনাইয়ের মতো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে। বস্তুতঃ বাংলাদেশে পীরদের কোন সংগঠন নেই।

জেনারেল জিয়ার আমলে তার সাথে আটরশীর পীর হাশমত উল্লাহের সংশ্লিষ্টতা বাংলাদেশে সর্বপ্রথম পীরদের রাজনৈতিক গুরুত্ব তৈরি করে। এর পর পতিত সামরিক স্বৈরাচার এরশাদের আটরশীর পীরের সাথে সংশ্লিষ্টতা তাকে আরো গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে। নিজের এই গুরুত্ব বৃদ্ধি আটরশীর পীরের মধ্যে রাজনৈতিক অভিলাষ সৃষ্টি করে। ফলে সে নিজের ভক্তদের নিয়ে 'জাকের পার্টি' গঠন করে। ১৯৯১-এর জাতীয় নির্বাচনে জাকের পার্টির ভরাডুবি তার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষের সমাধি রচনা করে। হাশমত উল্লাহের মৃত্যুর পর তার পুত্র ফয়সাল জাকের পার্টির হাল ধরার চেষ্টা করেছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত জাকের পার্টি গোনাগুনতিতে ধরার মতো কিছু হয়নি।

জেনারেল জিয়ার আমলে মোহাম্মদ উল্লাহ (হাফেজ্জী হুজুর নামে পরিচিত) কিছু সেনসেশন তৈরি করার চেষ্টা করেছিল। যেটার রেশ তার জামাতা ফজলুল হক আমিনী পর্যন্ত গেছে। তবে আমিনী শ্বশুরের ইমেজ বেচার চেয়ে নিজের ইমেজ তৈরিতে বেশি মনোযোগ দিয়েছে। তার রাজনৈতিক তৎপরতা দেওবন্দী/ক্বওমী/খারেজী মাদ্রাসাকেন্দ্রিক, মা'আরেফাতের ত্বরিকাভিত্তিক গ্রুপগুলো সেখানে অনুপস্থিত। একই কথা সত্য, কুখ্যাত রাজাকার আবু জাফর মোহাম্মদ ছালেহের শর্ষীনা গ্রুপ ও আজিজুল হকের চর মোনাই গ্রুপের ক্ষেত্রেও।

চট্টগ্রামের মাইজভান্ডারীরা কখনোই রাজনীতিসংশ্লিষ্ট ছিলো না। নজিবুল বশর পীর হিসাবে নিজ পরিবারের অন্যদের তুলনায় (সফিউল বশর, মুজিবুল বশর) একটু পিছিয়ে থাকায় নিজের একটা রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গড়ে তোলার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তার গঠিত ত্বরিকত ফেডারেশনের সাথে খোদ মাইজভান্ডারের সাধারণ অনুসারীদের কোন সম্পর্ক নেই।

বাংলাদেশের নোটেবল পীর, যেমন, দেওয়ানবাগ, সুরেশ্বর, চন্দ্রপাড়া, বেলতলী, ফুরফুরা, আজানগাছী'র মতো পীরদের অনুসারীদের ত্বরীকাভিত্তিক কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই। কিছু কিছু পীর গ্রুপ, যেমন, ফুরফুরারা নিজেরা ক্বওমী মাদ্রাসা স্থাপন করলেও এই মাদ্রাসাগুলো ক্বওমী মাদ্রাসাভিত্তিক রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট নয়।

দেওবন্দী/ক্বওমী/খারেজী/আলিয়া মাদ্রাসা গ্রুপগুলোর নেতাদের মধ্যে কেউ একটু বেশি জনপ্রিয়তা পেলে তার ওপর অলৌকিকত্ব আরোপের চেষ্টা করা হয়। এবং সে মারা গেলে তাকে কেন্দ্র করে একটা মাজার/দরগাহ্‌ গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আজতক এমন পীররা কয়েক জেনারেশন ধরে বিশেষ জনপ্রিয় হতে পারেননি।

জীবিত পীরদের আস্তানা/শিক্ষাকেন্দ্র যা খানক্বাহ্‌ নামে পরিচিত, এবং মৃত পীরদের সমাধী যা মাজার/দরগাহ্‌ নামে বেশি পরিচিত বাংলাদেশে সেগুলোতে এখনো রাজনীতির চর্চা শুরু হয়নি। দেওবন্দী/ক্বওমী/খারেজী/আলিয়া মাদ্রাসা গ্রুপগুলো নিজেদের মিটিং প্লেসকে যদি খানক্বাহ্‌ বলে বর্ণনা করে থাকে তাহলে সেটা ভিন্ন কথা।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

হাসিব এর ছবি

একটা আলাদা পোস্ট হোক ষষ্ঠ পান্ডব।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

লম্বা মন্তব্যও কী করে যেন করা হয়ে যায়। পোস্ট লিখতে গেলেই আলস্য চেপে ধরে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

রাজনীতির মাঠে, আলোচনা সভায়, টক শোতে, অনলাইনে হেফাজতের কর্মকাণ্ডের অ্যাপোলজিস্টদের বড় অংশের মধ্যে ব্যক্তিপর্যায়ে ইসলামী অনুশাসন (শরিয়াহ্‌) চর্চা নেই। এটা বোঝার জন্য বিস্তারিত পরিসংখ্যানের দরকার নেই, নিজেদের চারপাশে তাকালেই দেখতে পাওয়া যায়। নিজেরা কেন শরিয়াহ্‌-এর চর্চা করছে না - এমন প্রশ্ন করলে তারা নানা আবজাব কথা বলা শুরু করে। দেশে হেফাজতটাইপ শাসন চালু হলে তাদের এই বেশরিয়তী কর্মকাণ্ড-চলাফেরা যে বন্ধ হয়ে যাবে - এমন প্রশ্ন করলে তারা ইসলাম কতো আধুনিক, সেখানে এমন কোন রেসট্রিকশন নেই এমন কথা বলে। তাদের নিজেদের মধ্যকার এই কনট্রাডিকশনগুলো এমনি এমনি তৈরি হয়নি। তারা যাদের অনুসারী, তাদের বাক্যে ও কাজে এরচেয়ে বড় বড় কনট্রাডিকশন আছে। ক্রমাগত মিথ্যাচার সেই কনট্রাডিকশনগুলোর একটা। এই মিথ্যাচারের ব্যাপারটা অ্যাপোলজিস্ট দলগুলোর মধ্যেও আছে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

দিগন্ত বাহার এর ছবি

এ ব্যাপারে আলাদ পোস্ট দাবি করে গেলাম পান্ডবদা।।

হাসিব এর ছবি

দেওবন্দী/ক্বওমী/খারেজী/আলিয়া মাদ্রাসা গ্রুপগুলোর নেতাদের মধ্যে কেউ একটু বেশি জনপ্রিয়তা পেলে তার ওপর অলৌকিকত্ব আরোপের চেষ্টা করা হয়। এবং সে মারা গেলে তাকে কেন্দ্র করে একটা মাজার/দরগাহ্‌ গড়ে তোলার চেষ্টা করা হয়।

আমি যদ্দুর জানি কওমীরা (তাবলীগ জামাতও) মাজার কেন্দ্রিক সেটেলমেন্টের বিরোধীতা করে। এদের সাথে সিলেট ও চিটাগাঙের মাজার ব্যবসা যারা করে তাদের বিরোধ আছে। তবে এই বিরোধীতা সম্পর্কে আপনি উপরে যেভাবে বললেন

তারা পরস্পরকে অঘোষিতভাবে স্রেফ এড়িয়ে চলেন। এই ব্যাপারে তারা কোন দলাদলি করেন না।

এটা সত্য। হেফাজতিদের সমাবেশে আলিয়াকেন্দ্রিক জামাত/শিবিরের লোকজন ছিলো। এদের বিরোধীপক্ষ ক্বওমীগ্রুপের হাতে নেতৃত্ব থাকলেও এরা জামাতশিবিরের কর্মীদের দেখেও না দেখার ভান করেছে।

এটা দেখেও না দেখার ভান করাটা এরকম একটা ইঙ্গিত দেয় যে ভবিষ্যতে ক্বওমীরা আনুষ্ঠানিক রাজনীতিতে আসলে তারা জামাতশিবির-বিএনপি ব্লকের সহযোগি দল হিসেবে আবির্ভূত হবে।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

দুর্দান্ত এর ছবি

ষষ্ঠদা, ধন্যবাদ।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

চলুক চমৎকার বলেছেন পাণ্ডবদা। বিস্তারিত পোষ্ট আসলে আমজনতা উপকৃত হতো।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

একবার যে ভুল করেছিলো সরকার সেই ভুল কি আবারও করবে এই হেফাজতে জামায়েতকে সমাবেশ করতে দিয়ে? কি হলো বাবুনগরীর বিরুদ্ধে সেই মামলার? বিরোধী দলের সাথে রাজনৈতিক খেলা খেলতে খেলতে সরকার বোধহয় এই উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীটার কথা ভুলে গেছে? এরাই স্মরনকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অরজকতা দেখিয়েছে আমাদেরকে ঢাকার শাপলা চত্বরে। এইসব কাঠমোল্লাদের সাথে কোন আপোষতত্ত্ব প্রয়োজন নেই, শক্ত হাতে দমন করা উচিত এইসব ধর্ম ব্যবসায়ীদের কে।

মাসুদ সজীব

হাসিব এর ছবি

এদের ফিন্যান্সিঙের গোড়া কেটে দিতে হবে। তাহলেই সব ঠিকঠাক।

অতিথি লেখক এর ছবি

সেটা বন্ধ করা বেশ কঠিন তবে অসম্ভব নয়। সরকার যদি আন্তরিক হয় তবে ঠিকি সম্ভব। ওদের আরব ভাইরা তো একপায়ে খাঁড়া তাদেরকে টাকা পয়সা দিয়ে বেহেস্তের টিকেট কাটতে। গুল্লি

মাসুদ সজীব

জি.এম.তানিম এর ছবি

গুরু গুরু

-----------------------------------------------------------------
কাচের জগে, বালতি-মগে, চায়ের কাপে ছাই,
অন্ধকারে ভূতের কোরাস, “মুন্ডু কেটে খাই” ।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

হেফাযতে ইসলামের প্রত্যেকটা কাজই ইসলামবহির্ভূত।

১) মিথ্যার পর মিথ্যা
২) দেশ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি
৩) টেকাটুকা

এই কাজগুলো জামায়াত ও অন্যান্য ধর্মব্যবসায়ী 'রাজনৈতিক' দলগুলো করে। হেফাযত কোনো ব্যতিক্রম না।

মানুষ হেফাযতের যে তাণ্ডব দেখেছে, তারপর তাদেরকে আবার সমাবেশের অনুমতি দেয়া উচিত হবে না। বরং আগের আকামের জন্য হেফাযত নেতাকর্মীদেরকে দৌঁড়ের ওপর রাখা দরকার। সরকার সাময়িক সমাধান হিসেবে হেফাযতকে বৈধতা দিয়ে একটা দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির রিস্ক সৃষ্টি করছে। হেফাযতের বিরুদ্ধে 'সুশীল শিক্ষত সমাজ'-এর যে ভূমিকা নেয়া উচিত ছিলো, তারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার উলটা ভূমিকা নিয়েছে। হেফাযতের দিনভর তাণ্ডবের পরদিন সুশীল শিক্ষিত ফ্রেন্ডদের ফেসবুক ভরে শুধু হেফাযতের গণহত্যার জন্য আহাজারি, কুরআন পোঁড়ানো অনুপস্থিত!

ধর্মব্যবসায় একটি চরম লাভজনক ব্যবসায়। আর কাস্টোমার যদি হয় ধর্মমূর্খ, তাইলে পুরা লালে লাল। এক্ষেত্রেও ঘটনা একই। প্রকৃতপক্ষে হেফাযতে ইসলাম যে 'কুরআনের আইন' প্রতিষ্ঠার 'আন্দোলন' স্বরূপ ১৩ দফা পেশ করেছে, তার একটিও কুরআন সাপোর্টেড না; বরং পুরা উলটা।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

হাসিব এর ছবি

ধর্মব্যবসা লাভজনক ব্যবসা এবং এটা কোনরকম প্রশ্নছাড়াই বেড়ে উঠতে পারে। এদের বিরুদ্ধে কিছু বললেই কল্লা হারানোর রিস্ক থাকে।
হেফাজতকে মতিঝিলের ধারেকাছে ঘেষতে দেয়া উচিৎ হবে না।

হাসিব এর ছবি

পোস্টটার কমেন্ট সেকশনে একটা ইন্টারেস্টিং জিনিস দেখলাম। অনেকেই ক্ষিপ্ত। কারণ জিনিসপাতি দেখা গেছে তারা যা জানে বলে ভাবতো সেইটা না। কিন্তু সেই মমিনেরা নতুন জানাটারে গ্রহণও করতে পারতেছে না। আপনি কী করছেন, বেশি বুজেন ইত্যাদি আশপাশের ঝোপঝাড় পিটাইতেছে।

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

হেফাজতের উত্থানের জন্য সাধারন মানুষ বহুলাংশে দায়ী। বেশিরভাগেরই ধর্ম সম্বন্ধে পরিষ্কার ধারণা নেই, কিন্তু ধর্মানুভূতি আছে ষোল দুগুনে বত্রিশ আনা। হেফাজত যখন 'ইসলাম গেল ইসলাম গেল' বলে ধুয়া তোলে, তাতে গলা মেলায় এইসব নির্বোধেরা। এদেরকে তের দফা দাবীর বিস্তারিত জিজ্ঞেস করেন, দেখবেন একটাও ভালো করে বলতে পারছে না, পরিণতি বোঝা তো অনেক দূরের ব্যাপার।

খুব সাধারন মানুষের কথা বাদ দিই, পুলিশের জনৈক পদস্থ কর্মকর্তার মুখে যখন শুনি (ইনি আমার হাইস্কুলের সহপাঠী), এই সরকারের পতন অনিবার্য কারন তারা হেফাজতের গায়ে হাত দিয়েছে, তখন আসলে হেফাজতের শক্তির জায়গাটা পরিষ্কার হয়ে যায়। বাংলাদেশের শতকরা কতজন ব্যক্তি নির্বোধ, তার একটা অফিশিয়াল জরিপ হওয়া দরকার।

হাসিব এর ছবি

ধর্ম সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা থাকলেও লাভ নাই। ধর্মে মোটা দাগে নতুন কিছু গ্রহণ করতে না করা আছে। নতুন কিছু গ্রহণ করতে না শিখলে আগানো যাবে না।

হাসান এর ছবি

বাংলাদেশের মানুষ নির্বোধ না, বরং খুবই বুদ্ধিমান। ঘুষ খাওয়া, নকল করা, চুরি করা ইসলামের দৃষ্টিতে মানা, কিন্তু না করলে বড়োলোক হওয়া যায় না, তাই ওইসব অন্যায় খুব করে করে নিয়ে তারপর ভোট, হিন্দু, নারী আর রাজনীতির বেলায় "ইসলাম ইসলাম" বলে চ্যাঁচায়- যাতে আল্লাপাক পাপ কম দেয়। প্যাস্কেলের বাজী।

চরম উদাস এর ছবি

চলুক
দারুণ প্রয়োজনীয় লেখা। আপাতত আঙ্গুল দেখায়ে কেটে পড়লাম, পড়ে এসে আবার জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিবো নে শয়তানী হাসি

হাসিব এর ছবি

আঙ্গুলেরই বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়!

অতিথি লেখক এর ছবি

হেফাজতের কর্মসূচির মূল প্রভাবক ফান্ডিং। এক্সটার্নাল ফান্ডিং ছাড়া তারা এক পাও নড়ার ইচ্ছা রাখেনা। চট্টগ্রামে হেফাজতের ঘাঁটি, এটা একটা বড় ইস্যু। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা, জামাত নেতা এবং মীর কাশেম এখানে ভূমিকায়।

সামনে নির্বাচন এবং একই সাথে কাদের মোল্লা এবং সাইদীর সম্ভাব্য ফাঁসি, এগুলোকে সামনে রেখেই হেফাজতকে আবার ঢাকায় আনার পায়তারা।

ফান্ডিং এর ক্ষেত্রে নজরদারি না বাড়ালে এই গুল্মই একদিন বৃক্ষ হয়ে উঠবে।

শব্দ পথিক
নভেম্বর ২৫, ২০১৩

হাসিব এর ছবি

দেশের আর সবার সাথে হেফাজতিদেরও আর্থিক সামর্থ্য বেড়েছে। একারণেই তারা ঢাকায় এসে সমাবেশ করার ক্ষমতা রাখে এখন।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

শফি হুজুরের বয়স ৯০ বছর। হিসেব করে দেখলাম তার জন্ম ১৯২৩ এর কাছাকাছি সময়ে। ১৯২৩ সাল! ১৯২৩ সাল!!

রবীন্দ্রনাথ, আইনস্টাইটন তখনও বেঁচে ছিলেন। তখন সবেমাত্র প্রথম বিশ্ব যুদ্ধ (১৯১৮) শেষ হয়েছে। হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য নড়াচড়া শুরু করেছে। গুগল সার্চ করে পেলাম সে বছর আমেরিকার সাদাদের রেসিস্ট দল ক্লু ক্ল্যাক্স ক্ল্যান এক রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দীকে গুম করে ফেলে। সে বছর জানুয়ারীতে প্রথম টেলিগ্রাফ মেসেজ আদান প্রদান করা হয়। ডিসেম্বরে টিভির প্যাটেন্টের জন্য প্রথম দরখাস্ত করা হয়।

১৯৪৭ এর দেশ বিভাগের সময় শফি হুজুরের বয়স ২৪, '৫২র ভাষা আন্দোলনের সময় ২৯ আর মুক্তিযুদ্ধের সময় ৪৮।

এইসব কিছু চিন্তা করলে উনার তেতুলে মন্তব্যের উৎস ধরতে পারা যায়। উনি বয়স্ক মানুষ হিসেবে অবশ্যই সম্মানের যোগ্য। কিন্তু এ যুগের হিসেবে তিনি ভীষণ পিছিয়ে আছেন। আর গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়ে পিছিয়ে দিতে চাইছেন পুরো দেশটাকে। উনার উচিৎ সম্মানের সাথে রিটায়ার করা।

হাসিব এর ছবি

সমস্যা হলো শফির উত্তরসুরিরাও শফি কোয়ালিটি। যেমন বাবুনগরী। এই লোক শফির সাথে ৭১এ মন্দিন ভেঙ্গে মসজিদ বানিয়েছে বলে অভিযোগ আছে। শফি বা বাবুনগরী দ্বারা নির্বাচিত নেতারাও এই মানের হবে সেটা নির্দ্বিধায় বলে দেয়া যায়। অতএব অবস্থার পরিবর্তনের কোন সম্ভাবনা নেই এটা ধরে নিতে পারেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবীগুলোর সাথে ইসলামের দূরতম সম্পর্ক নেই।

--
কচু পাতা

অতিথি লেখক এর ছবি

তেতুল শফি-আর বাবু নগরীরা মুখস্থ বুলির মতো যেই ডায়লগটা উগড়ায় সেটা হলো ৯০% মুসলমানের দেশে এটা চইলত ন..!

বলি ৯০% মুসলমান কি তোদেরকে কানে কানে বলে গেছে যে তোদের সাথে একমত সবাই, দাঁড়ানা ভোটে ১% ভোট পাস কিনা দেখ? ৬০ বছরের পুরানো তোদের বড় ভাই জামায়েত পায় না ৩% এর উপরে ভোট আর কালকে সকালে জন্ম নেওয়া তোরা এসে বলিস ৯০% মুসমান তোদের পক্ষে. সব মুসলমান কি তোদের মত আবাল আর ধর্ম ব্যবসায়ী নাকি যে নিজেরা টাকা খেয়ে মাদ্রাসার অবুঝ পোলপাইন মাঠে নমিয়ে দিয়ে নিজেদেরকে বড় শক্তি হিসাবে জাহির করবে? নির্বাচনে আয়, ৯০% মুসলমান যদি তোদের পক্ষেই থাকে তাদের ভোট নিয়ে জয়লাভ করে সরকার গঠন কর, তখন ১৩ দফা না ১৩০০ দফা দিস, কেউ কিছু বলবে না. তার আগে তোদের ঘেউ ঘেউ শুনতে ভালোলাগে না, হাটহাজারীর অন্ধকার গুহায় আছিস সেখানেই থাক..!

মাসুদ সজীব

হাসিব এর ছবি

কথা সেটাই। তারা ১৩দফা নিয়ে সামনে দাঁড়াক। দেখা যাক কার পকেটে কয় ভোট।

স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক
আমার প্রায় ই মনে হয় ঈশ্বরে অবিশ্বাসীদের চাইতে এরকম বিশ্বাসীরাই বরং তার অস্তিত্বহীণতা নিয়ে বেশি নিশ্চিত, নাহলে এত মিথ্যা কিভাবে বলে!

হাসিব এর ছবি

আমার এক ছোটভাই বছর পাঁচেক বয়সে একটা থিওরী আবিস্কার করেছিলো। তার মত ছিলো এতো নামাজকালাম পড়ে হয় কি! আল্লাহ যেহেতু সব মাফ করে দেবে সেহেতু বুড়ো বয়সে একবারে নামাজ পড়ে মাফ চেয়ে নিলেই হয়। সারাজীবন এতো কষ্ট করার দরকার কি!

শফি হুজুর এ্যান্ড কোং সম্ভবত সারাদিন মিথ্যাটিথ্যা বলে রাতের বেলা মাফ চেয়ে নেয়।

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

কথা সত্য। এটা আমার সবসময়েই মনে হয়। মাঠ পর্যায়ের হেফাজত যতটাই ধর্মভীরু, জয়েস্টিকের পিছনের লোকগুলো ততটাই উল্টা। ধর্মচোরা বলেই বাবুনাগরীর ব্যক্তিত্ব বলে কিছুই নেই। তার কান্নাকাটি আর পুলিশে ধরলে কাপড়ে হেগে দেয়ার বৃত্তান্ত তো তাই বলে।

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

হাসিব এর ছবি

ফেইসবুক কমেন্টের নাজমুস শাকির ভাইটি,
ছাত্রলীগের আলাপ এইখানে হচ্ছে না। পারলে শফি-বাবুনগরী বিষয়ে দুই একটা কথা বলুন। ছাত্রলীগের অপকর্ম দিয়ে হেফাজতিদের হালাল করা যাবে না।

এক লহমা এর ছবি

মূল্যবান বিশ্লেষণ ও মন্তব্যের সমাহার।
অর্থের সরবরাহ ছাড়া এদের এই বিস্তারিত কর্মকান্ড চলা সম্ভব নয়। সেই সরবরাহ বন্ধ হওয়ার মত কোন পরিস্থিতি এখনো নজরে আসছে না।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

নীড় সন্ধানী এর ছবি

দুবছর আগেও হেফাজতে ইসলাম নামে কোন দলের নাম আমরা জানতাম না। হঠাৎ করে এই দলটা বিধ্বংসী একটা শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়ে গেল শাহবাগ আন্দোলনের সময়। এটা কেন হলো সেটা অনেক লম্বা ইতিহাস। আমি যতদূর সংক্ষেপে পারি আমার পর্যবেক্ষনটা শেয়ার করি।

বাংলাদেশের সাধারন মুসলমান কয়েকভাগে বিভক্ত।

১) সাধারন মুসলমান। যারা বিশ্বাসে সুন্নী মুসলমান। কিন্তু ধর্ম নিয়ে তেমন কোন মাথাব্যথা নেই। জুমার নামাজ আর দুই ঈদের জামাত বাদে এরা আর কিছুতে নাই। সংখ্যায় এরাই দেশের সংখ্যাগরিষ্ট।

২) পীরভক্ত, মাজারভক্ত সুন্নী মুসলমান। এরাও সুন্নী মুসলমান, তবে বেশ কড়া। এরা কড়া ধার্মিক হলেও ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহারের বিরোধী। ফলে এরা রাষ্ট্রের জন্য কখনো হুমকি হয়ে দাড়ায়নি। এদের সংখ্যা প্রচুর হলেও এদের কোন সংগঠিত শক্তি নেই। সংখ্যায় এরা দ্বিতীয় স্থানে আছে বলে মনে হয়।

৩) জামাত-শিবির মুসলমান। এরা আধা সুন্নী আধা ওয়াহাবী। এদের গুরু মওদুদী সারা বিশ্বে সুন্নী হিসেবে পরিচিতি। কারণ সারা বিশ্বে মুসলমানদের সুন্নী আর শিয়া হিসেবে বিভক্ত করা হয়। সেই হিসেবে সুন্নী ক্যাটাগরিতে পড়ে মওদুদী। কিন্তু আসলে মওদুদী ছদ্মবেশী সুন্নী। উপমহাদেশে সুন্নীর হিসেবটা আলাদা। এখানে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত নামে যে ধারাটা আছে সেটাকে সুন্নী বলা হয়, কিন্তু দেওবন্দী মাদ্রাসা শিক্ষিত গ্রুপকে ওয়াহাবী মতবাদ ধরা হয়। জাকির নায়েক হলো সেই দেওবন্দী লাইনের। মওদুদী সরাসরি ওয়াহাবী না হলেও দেওবন্দিদের তারা সমর্থন করে। মওদুদী হলো মূলত তেরো শতকের ইসলামী চিন্তাবিদ ইবনে তাইমিয়ার লাইনের। ইবনে তাইমিয়ার দর্শনকে কয়েকশো বছর পর পুনর্জাগরণ করেন উপমহাদেশের মওলানা আবদুল ওয়াহাব। ফলে তাইমিয়া>ওয়াহাবী>মওদুদী এরা একই লাইনের। মওদুদী নিজেকে সরাসরি ওয়াহাবী লাইনে না রেখে সুন্নী সমর্থন আদায়ের জন্য ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন। কাদিয়ানী বিদ্বেষ ছিল তার অন্যতম কৌশল। কাদিয়ানীরা ছিল সুন্নী ওয়াহাবী দুই পক্ষের কমন শত্রু। সুতরাং কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করে সুন্নী ওয়াহাবী দুই দলেরই বিরাট অংশের সমর্থন লাভ করেন। যখন জামাতে ইসলামী প্রতিষ্ঠা করেন তার সমর্থকের অভাব হয়নি তাই। রাজনৈতিক দল গঠন করে ইসলামকে মার্কেটিং টুল হিসেবে ব্যবহার করে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করে ফেলতে সমস্যা হয়নি। এমনকি রাজনৈতিক মারপ্যাচের খেলায় নিজেদের অবস্থান করে নেয় স্বাধীন বাংলাদেশেও। এরা সংখ্যাগুরু না হয়েও বাংলাদেশে সৌদি মার্কিন সমর্থিত মডারেট মুসলিম রাজনৈতিক দল। এই দলের মুসলমানদের সংখ্যা ৩য় অবস্থানে আছে বলে মনে হয়।

৪) সর্বশেষ গ্রুপ হলো ওয়াহাবী মুসলমান। ওয়াহাবীদের কোন রাজনৈতিক সংগঠন নেই। তবে অরাজনৈতিক সংগঠন আন্তর্জাতিকভাবে সংগঠিত। এদের সংগঠন তাবলিগ জামাত। যদিও আজকাল বিশ্ব ইজতেমায় সকল স্তরের মানুষের যাতায়াত হয়ে গেছে। (কেন জানি রাষ্ট্র এবং প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো এই সমাবেশকে উৎসাহ দিয়ে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত করেছে) কিন্তু এই তাবলিগ জামাতের মুল অংশগ্রহনকারী হলো কওমী/ওয়াহাবী মাদ্রাসার ছাত্র আর মওলানারা। এটাকে বার্ষিক হেফাজতে ইসলাম সমাবেশ বললে খুব বেশী ভুল হবে না। বছর দুয়েক আগে খুব নীরবে হেফাজতে ইসলাম নামে একটা সংগঠনের জন্ম হয়। আজকের তেঁতুল শফি বা বাবুনগরী বাংলাদেশে(চট্টগ্রামে) আছে বহুবছর ধরেই। আমি তাদের আশেপাশে থেকেও কখনো তাদের কোন শব্দ শুনি নাই। এমনকি আমার বাসার কাছে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের মাঠে গত দুবছর আগে যখন হেফাজতে ইসলামী নামের একটা দলের তিনদিন ব্যাপি ইসলামী সম্মেলন দেখি তখন অবাক হয়েছিলাম। এরা কারা? সেই প্রথম ছিল তাদের সমাবেশ। তবে তারা তখন ছিল নিরীহ ভেড়া। এই বছরের গোড়ার দিকে এই ভেড়ার মাথায় শিং লাগানোর কাজ শুরু হয়। শুরু করে জামাত, তবে পরোক্ষভাবে। তখন থেকেই জামাতের পরিকল্পনা ছিল হেফাজতের ভেড়াগুলোকে যথাসময়ে কাজে লাগাতে হবে। জামায়াত ও হেফাজতের মধ্যে যে দূরত্ব ছিল তা ঘুচানোর মহান দায়িত্ব নেয় আমার দেশের মাহমদুর রহমান। আগেই বলেছি এতদিন জামাতের সাথে প্রকাশ্যে কোন সম্পর্ক না থাকলেও পুরোনো সমীকরণের কারণে তাদের সাথে একটা বোঝাপড়া আছে। যে বোঝাপড়ার ফলাফল দেখা গেছে এবছর শাহবাগ আন্দোলনের সময়। শাহবাগের বিরোধীতায় যে দুটি শক্তি মাঠে সক্রিয় ছিল তারা হলো জামাতে ইসলাম ও হেফাজতে ইসলাম। জামাতের গায়ে একাত্তরের কলংক থাকার কারণে জামাত ফ্রন্টলাইন থেকে সরে গিয়ে জায়গা করে দেয় হেফাজতে ইসলামকে। এই ভেড়াগুলোই সহিংসতার চুড়ান্ত করেছে গত মে মাসে ঢাকার শাপলা চত্বরে। এই চতুর্থ নাম্বার মুসলমানগুলো এখন জামাতের পরই বাংলাদেশর সার্বভৌমত্বের জন্য দ্বিতীয় হুমকি।

হেফাজতকে নিয়ন্ত্রণ করার সময়টা কি অনেক দেরী হয়ে গেছে? এখনো বুঝতে পারছি না।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

তীরন্দাজ এর ছবি

বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানাতে হলে হেফাজতীদেরই দরকার। আর আফগানিস্তান হলে পশ্চিমা বিশ্বেরই লাভ। অস্ত্র বিক্রির চাইতে লাভজনক আর কী হতে পারে?

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

শাহবাগ ইনসিডেন্স এবং হেফাজত ইনসিডেন্সের পর আসলে আমি দেশের মেজরিটি মুসলিমরা কি ভাবছে তা নিয়ে কনফিউজড হয়ে গেছি। একজন মানুষ কেবল প্রফেটের এগেইনস্টে কলম ধরার কারণে তাকে হত্যা করা হল সেটা নিয়ে কেউ কিছু বলেনা কিন্তু তারা 'শকড' হেফাজতিদেরকে শাহবাগিদের মত সেইম ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়নি বলে। ৯০ পারসেন্ট মুসলিমের দেশে তাদের ভোটিং অপশন জামায়াতকে সরিয়ে নেওয়াটা যে ঠিক হয়নাই এইটা নিয়া তারা ইংলিশ বাংলিশে গরম গরম বুলি ছাড়তেসে। বিশ্বাসের দিক থেকে মেজরিটি মুসলিমদেরকেই মিলিট্যান্ট মুসলিম মনে হচ্ছে। বাংলাদেশি মুসলিমরা কবে কেন এত অসহনশীল হয়ে গেল তা আমি ঠিক বুঝতে পারিনা।

ওয়াইফাই ক্যানসার

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।