হাসপাতাল কি সংকটাপন্ন রোগীকে ভর্তিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারে?

হিমু এর ছবি
লিখেছেন হিমু (তারিখ: সোম, ০৬/০৯/২০১০ - ১১:২৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কথাটা ন্যাকা শোনাচ্ছে, আমি জানি। অবশ্যই হাসপাতাল পারে, এবং উঠতে বসতে পেরে দেখায়, যে দ্যাখো, আমি সংকটাপন্ন রোগী ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানাতে পারি। তবে আমার প্রশ্ন হচ্ছে, নৈতিক এবং আইনী দৃষ্টিতে হাসপাতালের এই অস্বীকৃতি জ্ঞাপন সমর্থনযোগ্য কি না।

নিকট অতীতে খবরের কাগজে পড়া দু'টি সংবাদ ব্যবহার করছি এই পোস্টে।

একটি ৩১ আগস্ট, ২০১০ তারিখে দৈনিক কালের কণ্ঠে প্রকাশিত একটি সংবাদ।

যুবলীগকর্মী ইব্রাহীমের মৃত্যু: শাওন ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন, রিমান্ডে কালার তথ্য

...

গোয়েন্দা পুলিশ এর আগে বলেছিল, শাওনের নির্দেশেই গুলিবিদ্ধ ইব্রাহীমকে সদরঘাটের সুমনা ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ হওয়ায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগী ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপরই ইব্রাহীমকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

...

পরের ঘটনা আমরা জানি। ডিএমসিএইচ ইব্রাহীমকে মৃত ঘোষণা করে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১০ তারিখে কালের কণ্ঠে আরেকটি খবর প্রকাশিত হয়েছিলো নায়ক সালমান শাহের ওপর। কালের কণ্ঠের খবর আর্কাইভিং পদ্ধতি জঘন্য, পুরনো খবর পড়া যায় না, তাই হুবহু উদ্ধৃত করতে পারছি না। খবরটা ছিলো এমন, নিজের ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহকে পাওয়া যায়, নামানো হয়, এবং হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানায়।

আমাদের নিজেদের জীবনেও নিশ্চয়ই এমন উদাহরণ কম নেই। পাঠকের কাছে অনুরোধ থাকবে সে উদাহরণগুলোকে মন্তব্যের খাতায় যোগ করতে।

ধরা যাক আপনি একজন পথচারী, আচমকা আপনার পথরোধ করে দাঁড়ালো কোনো দুর্বৃত্ত। গুলি করলো আপনাকে, কিংবা চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করলো। সর্বনিকটস্থ হাসপাতালটিতে নিয়ে গেলে আপনার প্রাণরক্ষা করা সম্ভব। কিন্তু হাসপাতালটি আপনার আহত হবার প্রকৃতি দেখে অস্বীকৃতি জানালো চিকিৎসা দিতে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বললো। ঢাকার রাস্তাঘাটের যা পরিস্থিতি, হয়তো ট্রাফিক জ্যামেই আপনি মৃত্যুবরণ করবেন।

আমার জিজ্ঞাসা, এ ধরনের কিছু ঘটলে সেই অস্বীকৃতি জানানো হাসপাতালটির বিরুদ্ধে কোনো আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব কি না। কারণ হাসপাতালের লাইসেন্স দেয়া হয় মানুষের চিকিৎসার জন্যে। সেই মানুষ কি গুলি খেয়ে ভর্তি হতে এলো, নাকি সেফটিপিনের খোঁচা খেয়ে, সে জিজ্ঞাসা অবান্তর, যখন সে মৃত্যুসংকটের মুখোমুখি হয়। হাসপাতাল একজন সংকটাপন্ন রোগীকে ভর্তিতে অস্বীকৃতি জানানোর মানে তার মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করা। হাসপাতাল কোনো মুদি দোকান নয়, কোনো ফাস্ট ফুডের দোকানও নয় যে কাস্টোমারকে পছন্দ না হলে রাস্তা দেখতে বলবে।

যদি কোনো অপরাধের আলামত রোগীর সাথে জড়িত থাকে, হাসপাতাল তৎক্ষণাৎ পুলিশ ডাকতে পারে, সেই রোগী এবং তাকে ভর্তি করাতে নিয়ে আসা মানুষদের আটকে রাখতে পারে, কিন্তু চোখের সামনে একজন মানুষকে মরার জন্যে রাস্তার ওপর ঠেলে দিতে পারে না। অন্তত আমার নৈতিকতার বিচারে এটি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার মতো অপরাধ। দেশের আইন কী বলে, আমি জানতে আগ্রহী। যদি আইন হাসপাতালের অস্বীকৃতি জানানোর অধিকারকে সমর্থন করে, তাহলে আইনটি পাল্টে ফেলা হোক।


এই খবরটি গোচরে আনলেন অনিন্দ্য রহমান।


মন্তব্য

মাসকাওয়াথ আহসান এর ছবি

এইটা সাদাচোখে থানায় পুলিশের কেস না নেওয়া অপরাধের একটি হাসপাতাল পুনরাবৃত্তি।একি কারণ, পার্টি ইন পাওয়ার বা ওপর মহল না চাইলে থানা কেস নেবেনা,হাসপাতাল রোগী নেবেনা। অনেক ধন্যবাদ এই জরুরী মানবিক ইস্যুটি সামনে নিয়ে আসার জন্য।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এখনি,নইলে কোন দিন নয়।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

এটা অহরহ হয়। আমি নিজে অসংখ্যবার এর ভুক্তভোগী।
শুধুমাত্র সরকারী হাসপাতালে রোগী ফেরত দিতে পারে না।
এজন্যই ঢাকা মেডিকেলে রোগী উপচে বারান্দা টু বাগান সয়লাব করে ফেলে।

শান্ত [অতিথি] এর ছবি

লক্ষ্য করলে দেখা যাবে রোগী ভর্তির ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানায় সব প্রাইভেট মেডিক্যাল হাসপাতাল। এখানে বাণিজ্য একটা বড় ইস্যু। যদি কোন রোগী এই হাসপাতালে মারা যায় এবং এই খবরটা সংবাদপত্রে আসে তাহলে হাসপাতার বা ক্লিনিকটির বদনাম রটে যাবে, সেক্ষেত্রে হাসপাতাল বা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বেশী সংকটাপন্ন রোগীকে ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানায়।

ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানানো ব্যাপারটা অমানবিক। রোগীর অবস্থা যতই খারাপ হউক তাকে ভর্তি করা দরকার। হয়তোবা সেই রোগীকে বাচানোও সম্ভব।

অদ্রোহ এর ছবি

এবার তাহলে বলি। বেশ কমাস আগেকার কথা।বুয়েটে আমাদের ব্যাচের নেভাল আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের ট্রেনিং হওয়ার কথা খুলনায়। নির্ধারিত সময়ে তারা ৩০ জন খুলনাগামী ট্রেনে চেপে বসল। এতক্ষণ সব ঠিকঠাক। কিন্তু এরপরই বাঁধল গোল। জয়দেবপুরে ট্রেনটির সাময়িক বিরতির সময় স্থানীয় বখাটেদের সাথে ওই ট্রেনের কয়েকজনের সাথে বচসা বাঁধে(কীভাবে সেই কাসুন্দিতে আর না যাই, সেটার জন্য আলাদা পোস্টই দেওয়া লাগবে)। এরপর তাদের মধ্যে চারজন আহত হয়, একজনের পিঠে ও আরেকজনের পেটে ধারালো পোচ দেওয়া হয়। আরেকজনের কলার বোনে আঘাত করা হয়, এবং হাড়ে ফাটল ধরে। চতুর্থজনের আঘাত সামান্য। এই অবস্থায় তাদের তড়িঘড়ি করে নিয়ে যাওয়া হয় জয়দেবপুর থেকে টাঙ্গাইল কুমুদিনী হাসপাতালে। সেখানে তাদের ইনজুরিকে পুলিশি কেস বলে হাসপাতাল কতৃপক্ষ ভর্তি করতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে কুমুদিনী মেডিকেলের পরিচিত ছাত্রীদের সহায়তায় তাদের কিছু প্রাথমিক সেবা দেওয়া হয় (হাসপাতাল কতৃপক্ষ তখনো তাদের সিদ্ধান্তে অনড়)। পরে তাদের তখনই অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। পরের কাহিনি আরো ঘোরালো, এখানে অপ্রাসঙ্গিক বিবেচনায় বললামনা। যাই হোক, সেদিন তাদের জখম শেষ পর্যন্ত জীবনসংহারী না হওয়ায় জল বেশিদূর গড়ায়নি,আজকে ফের সব মনে পড়ল।

-----------------------------------------

আজি দুঃখের রাতে, সুখের স্রোতে ভাসাও তরণী
তোমার অভয় বাজে হৃদয় মাঝে হৃদয় হরণী।

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

বাংলাদেশে ভালো চিকিৎসা পাবার পূর্বশর্তই হল সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে আপনার পরিচিত কেউ থাকতে হবে হোক সে ডাক্তার, ওয়ার্ডবয় কিংবা ঝাড়ুদার।

মরণাপন্ন রোগী (যাকে দেখেই বোঝা যায় মৃত্যুপথযাত্রী) ভর্তিতে সব হাসপাতালই আপত্তি/অনিচ্ছা জানায়। কারণ রোগী তাদের হাসপাতালে মারা গেলে অনেক ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয়। বিনা চিকিৎসায় ঐ ব্যক্তি মারা গেলে তা নিঃসন্দেহে নৈতিক বিচারে হত্যাকাণ্ড কিন্তু আমি যতদূর জানি এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোন আইন নেই।

হাসিব এর ছবি

আলোচনার টেবিলে কিছু প্রশ্ন যোগ করি।

প্রথমত: শিরোনামে ভর্তি কথাটা ব্যবহৃত হয়েছে। ভর্তি করাটা এক বিষয় আর জরুরী বিভাগে জরুরী চিকিৎসা দেয়া আরেকটা বিষয়। যেমন, সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সংকটাপন্ন ব্যক্তি কী রিহ্যাবিলিটেশন হাসপাতালে ভর্তি হতে পারবে কীনা। ওখানে জরুরী ওয়ার্ড থাকলে হয়তো জরুরী চিকিৎসা পাবে। কিন্তু ভর্তি করাটা? আগুনে পোড়া রোগির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। জরুরী চিকিৎসার পর যে সুবিধা দরকার তাদের সেটা সব হাসপাতালে থাকে না। এক্ষেত্রে ডাক্তার/হাসপাতাল তাদের অন্য হাসপাতালে রেফার করতে পারলে সেটা কি অন্যায় হবে?

দ্বিতীয়ত: চিকিৎসার সুযোগ আছে কিন্তু পর্যাপ্ত নয় এরকম ক্ষেত্র। যেমন বাংলাদেশে নিওরোলজির জটিল চিকিৎসা। এক্ষেত্রে ডাক্তার যদি বলে রোগীকে পিজিতে নিয়ে যেতে সেক্ষেত্রে সে ডাক্তার কি অন্যায় করছেন?

ডাক্তারী পেশায় কোন সচল বা পাঠক থাকলে এই পোস্টে আলোচনা আরো ভালোভাবে আগানো যায়।

________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

কাদামাটি [অতিথি] এর ছবি

মোটর গাড়ীর ধাক্কায় আহত বন্ধুকে নিকটস্থ কোন ক্লিনিকে ভর্তি করাতে পারিনি, পুলিশ কেইসের দোহাই দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে। এ সবের আসলেই আইন থাকা উচিত।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

এমনকি মুদি দোকান ও ফাস্ট ফুডের দোকানেরও কাস্টোমারকে পছন্দ না করার সুযোগ সীমিত বলে মনে করি।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

নাশতারান এর ছবি

আমিও ঠিক এ কথাটাই বলতে যাচ্ছিলাম। তবে সীমিত না, আমার মতে কাস্টোমার নির্বাচনের কোনো অবকাশ থাকার কথা না। দোকানদারের কাজ পণ্য বা সেবা দেওয়া। ক্রেতার কাজ কড়ি দিয়ে সেটা কেনা। বেসরকারি হাসপাতালের সংস্কৃতিও যেহেতু মুদির দোকানদারির চেয়ে কোনো অংশে কম যায় না, তাই প্রয়োজনে ঘাড়ে ধরে এদেরকে বোঝানো দরকার।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

হাসিব এর ছবি

কিছু মন্তব্য থেকে বোঝা গেল বাস্তবে পুলিশ কেইস এরকম ঘটনায় বেসরকারি হাসপাতালগুলো রোগীর সেবা দিতে গররাজী/নিমরাজি থাকে। ক্যাপাসিটি থাকা সত্ত্বেও সেটা জরুরী প্রয়োজনে দিতে অস্বীকার করা অনৈতিক এবং এর জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থাকা উচিৎ।

আমি আরো একটা জিনিস বুঝতে আগ্রহী। পুলিশ হাসপাতালে কতটুকু ঝামেলা করে? তারা রোগী বা রোগীর আত্মীয়স্বজন বন্ধুবান্ধবকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে বড়জোর। সন্দেহজনক কেইস হলে এটা পৃথিবীর সব দেশেই করে। আইনশৃঙ্খলার স্বার্থেই এটা করা দরকার। ডাক্তাররা এটুকু ঝামেলা সহ্য না করতে পারলে মুশকিল।

________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

ওডিন এর ছবি
প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

সাংঘাতিক!

হাসিব এর ছবি

কারো কাছেই যাবার জায়গা নাই শেষ পর্যন্ত। এই একটা জায়গাতেই ঠেকে যাই বারবার।
________________________________________________
নীড়পাতা.কম ব্লগকুঠি

রাহিন হায়দার এর ছবি

হাচলদের জন্যেও মন্তব্যটি রেস্ট্রিকশনের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন জানাচ্ছি।
________________________________
মা তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো...

আরিফ জেবতিক এর ছবি

এখানে ঝামেলাটা বোধহয় অন্য জায়গায়। যখন মামলা হয় তখন ডাক্তারকে কোর্টে গিয়ে সাক্ষী দিতে হয়। এই আদালতের দরজায় অনেক হ্যাপা। একজন ডাক্তার যদি এরকম ৪টা মামলায় সাক্ষী হয়, তাহলে তার লাইফ হেল হয়ে যেতে পারে।

ওডিন এর ছবি

যদ্দুর খবর পেলাম আমাকে এইটার জন্য কোর্টে যেতে হবে। কাগজপত্র নাকি চলে আসবে। মন খারাপ সাক্ষী দেয়াটা সমস্যা না কিন্তু ক্লাশ-কাজ থেকে ছুটি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করাটা বিরাট সমস্যা। তারপরে সরকারি হাস্পাতালের নানান বুরোক্রেটিক ঝামেলা তো আছেই।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

ওডিন এর ছবি

আমি যা লেখা শুরু করেছিলাম হাসিব ভাই তার দুটো পয়েন্টে আমার অনেকখানি কথাই বলে দিয়েছেন। রেফার অনেক ক্ষেত্রেই করতে হয়- আমি সেইখানে কাজ করি সেইটা বাংলাদেশের একমাত্র ট্রমা-ইমার্জেন্সি হাসপাতাল, কিন্তু সেইখানেও নিউরোসার্জারি বা নিউরোলজির কোন ব্যবস্থা নেই। কোন ইন্টেনসিভ কেয়ারের সুবিধা নেই। তাই কোন সড়ক দুর্ঘটনার রোগি যদি হাত পা ভাঙা ছাড়াও মাথায় গুরুতর একটা আঘাত নিয়ে আসে তাহলে আমাদেরও ঢাকা মেডিকেল বা বিএসএমএমইউতে পাঠানো ছাড়া কোন উপায় থাকে না। যদি কোন ভাসকুলার ইনজুরি মানে বড় কোন শিরা বা ধমনী কাটা থাকে তাহলে কোনরকমে রক্তপাত বন্ধ করে ব্যাগের পর ব্যাগ রক্ত দিয়ে পাশের হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে পাঠানো হয়, কারন সেইখানে ভাসকুলার সার্জন আছেন- তারা সেটা রিপেয়ার করে পাঠালে পরে আমাদের কাজ আবার শুরু হয়। তারপরেও ইন্সটিটিউটগুলা মাঝে কিছু কোঅর্ডিনেশান আছে দেখে এই পর্যন্ত হয়, কিন্তু তারপরেও একটা সম্পূর্ণ ট্রমা হাসপাতাল বাংলাদেশে এখনো নাই।

আর পোস্টের শিরোনামে করা প্রশ্নের উত্তরে বলছি- না পারে না। নৈতিক দৃষ্টিতে হাসপাতালের এই অস্বীকৃতি জ্ঞাপন মোটেও সমর্থনযোগ্য না। আইনী ব্যপারটা সম্বন্ধে আমার ধারণা নাই, তবে যেইসব 'হাসপাতাল' (ক্লিনিক বা নার্সিং হোম না) চব্বিশ ঘন্টা ইমার্জেন্সি সুবিধা দেয়ার কথা বলে তারা এইরকম করলে অবশ্যই আইনত দণ্ডনীয় হয়া উচিত।

হাসপাতাল কোনো মুদি দোকান নয়, কোনো ফাস্ট ফুডের দোকানও নয় যে কাস্টোমারকে পছন্দ না হলে রাস্তা দেখতে বলবে।
কিন্তু আনফরচুনেটলি আমাদের দেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলো বেসিকালি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান- ওরা থাকে ব্যবসা করার ধান্দায়। আর স্বাভাবিকভাবেই ওরা চায়না সঙ্কটাপন্ন কোন রোগিকে ভর্তি করতে- খুব বেশি হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অন্য জায়গায় রেফার করে দেয়। কয়েকটা খুব বড় বড় হাসপাতাল অবশ্য আছে কিন্তু সেইসব জায়গায় এতো বেশি খরচ যে সেই প্রসংগ না তোলাই ভাল।

এইসব হাসপাতালকে আইনি ব্যবস্থার আওতায় আনার আগে এইসব হাসপাতালের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। নাহলে এদের নাম বদলাতে নার্সিং হোম বা ক্লিনিক লেখাতে হবে- যাতে এরা সাইনবোর্ডে 'অমুক' হাসপাতাল লিখতে না পারে।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

হিমু এর ছবি

একটা বোকার মতো প্রশ্ন করি। হাসপাতালের সাথে ক্লিনিকের পার্থক্য ঠিক কতটুকু?



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

ওডিন এর ছবি

বোকার মত না- প্রশ্ন ঠিকই করছেন, হাসপাতালে ইমারজেন্সি রোগি চিকিতসা আর ভর্তি দুইটাই করা হবে, কাউকে ফেরানো হবে না। ক্লিনিকে সঙ্কটাপন্ন না এমন রোগি রাখা হয়। (যেমন অল্প কিছু সরকারি হাসপাতালে কিনতু 'ক্লিনিক' বলে আলাদা জিনিস আছে- যেমন আমাদের এইখানে আছে 'হ্যান্ড ক্লিনিক' যেখানে হাতের বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসা দেয়া হয়।)

তবে আমাদের দেশে বেসরকারি হাসপাতাল আর ক্লিনিকের মধ্যে কোন তফাত নাই (অবশ্যই ব্যাতিক্রম আছে কিন্তু খুব অল্প)। এইটাই দুর্ভাগ্যজনক ব্যপার।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

আরিফ জেবতিক এর ছবি

আমার মনে হয় ক্লিনিক হোক আর হাসপাতাল হোক আর স্বাস্থ্যকেন্দ্রই হোক, কিছু বেসিক দুর্ঘটনার ( যেমন সড়ক দুর্ঘটনা, ছিনতাইকারীর হাতে ছুরিকাঘাত, মলম ইত্যাদি) জন্য একটা জরুরি বিভাগ থাকা বাধ্যতামূলক করে দেয়া দরকার।

ওডিন এর ছবি

সরকারিতে আছে। বেসরকারিতে বাধ্যতামূলক করতে হবে।
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার ইন্সপেক্টর গৌতম হত্যাকান্ডের কথাটা মনে আছে? গুলি খাওয়ার পর প্রথমে ন্যাশনাল হসপিটালে নিয়ে আসছিল। ভর্তি নেয়নি। বলেছে মেডিকালে নিয়ে যেতে। মেডিকালে নিতে নিতে তো মারাই গেল।

নুসদিন।

জাহামজেদ এর ছবি

একটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি, ২০০২ সালে সিলেট সরকারী কলেজের এক ছাত্রকে ছাত্রদলের ক্যাডাররা ছুরিকাঘাতে মারাত্মকভাবে আহত করে। তার শরীরে মোটামুটি ১০ টির মতো স্টেপ করা হয়। ছেলেটিকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় কলেজের পাশ্ববর্তী এক ক্লিনিকে, সেখানে ছেলেটিকে তারা রাখেনি। তারপর নিয়ে যাওয়া আরেকটি ক্লিনিকে, সেখানেও ছেলেটিকে কর্তপক্ষ চিকিৎসা দিতে অসীকৃতি জানায়। সর্বশেষ ছেলেটিকে নিয়ে যাওয়া হয় ওসমানী মেডিকেলে, সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তাররা জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ছেলেটির মৃত্যু হয়েছে। তাকে যদি কিছুক্ষণ আগে নিয়ে আসা হতো তাহলে নাকি ছেলেটিকে বাঁচানো সম্ভব হতো। অথচ সেদিন যদি ছেলেটিকে প্রথম যে ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো সেখানে চিকিৎসা দেয়া হতো তাহলে হয়তো সে বেঁচে যেতো, তারপরের ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হলেও হয়তো ছেলেটা বেঁচে যেতো ! কলেজ থেকে ওসমানী হাসপাতালের দুরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার, অন্যদিকে ৩ কিলামিটারের ভিতরেই প্রায় ১০ টি ক্লিনিক আছে !

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

নাশতারান এর ছবি

তার শরীরে মোটামুটি ১০ টির মতো স্টেপ করা হয়

স্টেপ বলতে কী বোঝাচ্ছেন?

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

বেনামা এর ছবি

মনে হয় ওটা stab হবে।

বাবুবাংলা এর ছবি

মূল লেখার নিচে অনিন্দ্য রহমানের সুত্রে পাওয়া যে সংবাদের লিঙ্কটি লেখক সেঁটে দিয়েছেন, তা পড়লাম। এরকম সংবাদের মুখোমুখি হলে জীবনের আর সব কিছুই অর্থহীন মনে হতে থাকে। এখনো বেঁচে থাকা একজন মানুষ হিসেবে আমি চরম লজ্জিত ও অপমানিত বোধ করছি। দায়ী যেই হোক কিংবা আমি নিজে যত দূরেই থাকি, এমন মৃত্যুর দায় এখনো জীবিত মানুষ হিসেবে আমি এড়াই কিভাবে? বিস্মৃতি আমাকে বারবার মুক্তি দেয় কিন্তু এই অক্ষমতার ক্ষমা হয় না।

জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

হাসপাতালে খালি সিটের সংখ্যা, চিকিৎসা সুবিধা (কোন বিশেষ সমস্যার চিকিৎসা আছে কি নেই, যেমন আর্টারী কেটে গেলে অনেক জায়গাতেই চিকিৎসা থাকবেনা) আর জরুরী বিভাগের ক্যাপাসিটি (এখানেও লিমিটেশন থাকতে পারে, জরুরী বিভাগে সর্বোচ্চ ১০ জনকে চিকিৎসা দেয়ার মতো ব্যবস্থা থাকলে, একসাথে বিশজন আহত রোগী নিয়ে আসলে ১০ জনকে ফেরত পাঠাতে হতে পারে) -- এসবের কারনে হাসপাতালে রোগী নিয়ে এলে তাকে ভর্তি করা বা চিকিৎসা দেয়া বাধ্যতামূলক এমন আইন করা সম্ভব না।

যেমন ধরা যাক, একটা হসাপাতালে জরুরী বিভাগে ১০ জনকে একসাথে চিকিৎসা দেয়া যায়, ছাত্রনেতাদের মারামারিতে ১৫ জন গুরুতর আহত হলো। এখন আপনি ১৫ জনকে এনে সবচেয়ে কাছের হাসপাতালে এনে জোর করে ভর্তি করবেন, নাকি ৫ জনকে অন্য কোথাও নেয়ার ব্যবস্থা করবেন, এখানে একটা ট্রেডঅফে আসতে হবে। ১০ জনকে চিকিৎসা দিতে দিতে যদি বাকী ৫ জন মারা যায়, তখন কিন্তু আবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপরই দায় চাপবে এই বলে যে, "চিকিৎসা দেয়ার ক্যাপাসিটি না থাকলে ভর্তি করালে কেন?"

এখন আইন এ জায়গাটায় অসহায় হওয়ায় এর সুযোগ নিচ্ছে ক্লিনিক/হাসপাতালগুলো

এই তো গেলো একটা দিক ...দুর্ঘটনার ফলে জরুরী চিকিৎসার ক্ষেত্রে হাসপাতালের অনীহা প্রদর্শন

এর চেয়েও বড় সমস্যা হলো সিরিয়াস রোগী নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় নিরুপায় পড়ে থাকা ...
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

নৈষাদ এর ছবি

কিন্তু প্রায়োরাইটজ করারও তো একটা ব্যাপার আছে। একটা রুগীকে বেসিক লাইফ সাপোর্ট দিয়ে কিছুটা ‘স্ট্যাবেল’ করে দেয়া তো দায়িত্বের মধ্যে থাকা উচিত। আইন না করা গেলেও পারমিশনের শর্ত হিসাবে কিছু বেসিক গাইডলাইন আনা যেতে পারে।

ফারুক হাসান এর ছবি

কিছুটা 'স্ট্যাবল'য়ের সংজ্ঞা কি হবে? এর মধ্যে ফাঁকফোকর এরা ঠিকই বের করবে।

হিমু এর ছবি

সেক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণসহ একটা মেমো চিকিৎসার্থীকে দিতে হবে। সেখানে লেখা থাকতে হবে, ঠিক কী কারণে তারা রোগীকে ভর্তি করতে অপারগ। এখানে লক্ষণীয় যে রোগীকে পরীক্ষা না করে কোনো কারণ দর্শানো হাসপাতালের পক্ষে সম্ভব নয়। এ ধরনের একটি ব্যবস্থা রাখলে রোগী অন্তত একজন ডাক্তারের এগজামিনেশনের ভেতর দিয়ে যাবেন।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটা পড়ে একটা জিনিস মনে পড়লো।
২০০৯ এক বড় ভাই আত্মহত্যার চেষ্টা করছিলেন।
তাকে নিয়ে যখন আমরা ল্যাব এইডে যাই তখনও ভর্তি নেওয়া হয়নি। ঢাকা মেডিক্যালে নেওয়া হলেও তারা ভর্তি করে ঠিকই, কিন্তু তার সাথে ব্যবহার বিশেষ সুবিধার ছিল না। পরে স্কয়ারে সিফট করা হয়।
পরে অনেকের কাছ থেকে শুনেছি আত্মহত্যার রোগীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করা হয়, কারণ বলা হয় "এরা তো এমনিতেই বাঁচতে চায় না, এদের চিকিৎসা দিয়ে কি হবে!"
এই ধরনের ব্যবহারও কি গ্রহণযোগ্য???

পলাশ রঞ্জন সান্যাল

নাশতারান এর ছবি

শৈশবে নানাবিধ রোগের সূত্রে দেশে-বিদেশে অনেক ডাক্তার দেখার সৌভাগ্য(!) হয়েছে। আমার মনে হয়েছে বাংলাদেশের ডাক্তাররা সবচেয়ে বেশি খাইষ্টা। দুয়েকটা ব্যতিক্রম যে নাই তা না। কিন্তু অধিকাংশই ডাক্তারির সার্টিফিকেটটা পেয়ে আমি কী হনু রে ভাব ধরে রোগীদের ধমকের উপর রাখতে ভালোবাসে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

ফারুক হাসান এর ছবি

প্রথমত, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ক্লিনিক কিংবা হাসপাতাল- এদের সবার জন্য সার্বক্ষণিক ডাক্তার সমেত একটা জরুরী বিভাগ থাকাটা আইন করে বাধ্যতামূলক করতে হবে, সরকারী কিংবা প্রাইভেট দুই ক্ষেত্রেই।

দ্বিতীয়ত, জরুরী বিভাগে নিয়ে আসা রোগীর নূন্যতম চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা বাধ্যতামূলক করতে হবে। এখানে হয়ত কেউ বলতে পারেন যে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ক্লিনিকগুলোতে পর্যাপ্ত চিকিৎসাব্যবস্থা থাকে না, তাহলে জরুরী সেবা নিশ্চিত হবে কীভাবে? সঙ্কটাপন্ন রোগীর অন্য যে কোন কিছুর চেয়ে প্রথম দরকার একজন ডাক্তার, হয়ত ডাক্তারের হাতের কাছে পর্যাপ্ত সুবিধাদি না থাকতে পারে, কিন্তু তবু সঙ্কটময় মুহূর্তে একজন ডাক্তারের নেয়া দ্রুত কয়েকটা স্টেপ রোগীর জন্য অমূল্য হতে পারে। অনেক সময় বোঝা যায় না যে আসলে কোন হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যাওয়া উচিত। সেক্ষেত্রে, যে নূন্যতম চেক আপের প্রয়োজন সেটা বাধ্যতামূলকভাবে করা উচিত। অপারেশনের ব্যবস্থা না করতে পারলে তার জন্য দূরবর্তী হাসপাতালে নিতে নিতে যাতে রক্তক্ষরণ কিংবা অক্সিজেনের অভাব না হয় সেই ব্যবস্থা সে করতে হবে, প্রয়োজনে এম্বুলেন্সের আয়োজন করতে হবে।

তৃতীয়ত, রাষ্ট্রের দায়িত্ব নাগরিকের চিকিৎসা পাবার মত মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা। সরকারি হাসপাতালে তো সবাইকেই ভর্তি করা হয় - এই কথা বলে রাষ্ট্রের পিছলে যাওয়া যাবে না। প্রাইভেট মানেই এই না যে চিকিৎসা সেবা একটা পণ্য। বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালের লাইসেন্স পাবার আগে তাদের এটা নিশ্চিত করতে হবে যে সেখানকার জরুরী বিভাগ ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সব সঙ্কটাপন্ন রোগীর জন্য উন্মুক্ত। এবং রাষ্ট্র বেধে দিবে যে একটা জরুরী বিভাগে নূন্যতম কি কি সুযোগ সুবিধা থাকতে হবে। সেগুলো না থাকলে লাইসেন্স বাতিল করতে হবে।

দ্রোহী এর ছবি

"see no evil, hear no evil, speak no evil"

"চিকিৎসা না পেয়ে প্রসব বেদনায় আত্মহনন!" টাইপ খবর দুষ্টুলোকদের অপপ্রচার। আমরা খুব ভালো আছি। মন খারাপ


কি মাঝি, ডরাইলা?

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদের ব্যাচমেট একজন একই ভাবে মারা যায়, প্রথম হাসপাতালে চিকিৎসকের চিকিৎসাদানে অসম্মতিপ্রদানে, এবং পরে ডিএমসি.তে নিতে নিতে। মন খারাপ
হাসপাতালে রোগী ভর্তি বাধ্যতামূলক করা উচিত।

- মুক্ত বয়ান

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

এটা কোনো ব্যাপার না, আমরা ছোটবেলায় যে কয়টা বাণী সর্বাগ্রে মুখস্ত করি তার একটা হইতেছে "ডাক্তার আসিবার পূর্বেই রোগী মারা গেলো" শুধু বাংলা শিখি তাই না, ইংরেজীতে তর্জমা কইরাও শিখি।
তারপরেও আমরা ব্যাপারটাতে অভ্যস্ত না হইতে পারলে সেটা আমাদেরই দোষ চোখ টিপি
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

যুধিষ্ঠির এর ছবি

আমাদের পরিচিত একজন গলায় খাবার আটকে চোকিং হয়ে মারা যাচ্ছিলেন, সে অবস্থায় অনেকগুলো হাসপাতাল তাকে নিতে চায়নি, অথচ একটা হাইমলিখশ ম্যানুভার দিয়েই ওনাকে ভালো করে ফেলা যেতো, যেটা মোটামুটি প্রাথমিক চিকিৎসার পর্যায়ে পড়ে। পরিচিত মানুষটি সে যাত্রা কপালগুনে বেঁচে গিয়েছিলেন।

আমেরিকার সব হাসপাতালেই একটা নোটিশ ঝুলানো থাকে। সঠিক ভাষাটা মনে নেই, তবে সারমর্মটা হলো, রোগীর ইন্সুর‌্যান্স বা অর্থের সংস্থান না থাকলে হাসপাতাল তার চিকিৎসা করবে না। তবে, কোন রোগীকে অর্থাভাবে বা ইন্সুরেন্সের অভাবে ফিরিয়ে দেয়ার আগে অবশ্যই তাকে একটা স্থিতিশীল (প্রাণসংশয় বা বড় কোন ক্ষতি না হবার মত) অবস্থায় নিয়ে আসতে যে ন্যূনতম চিকিৎসা দরকার হয়, সেটা যে কোন অবস্থায় দিতে হাসপাতাল বাধ্য থাকবে।

এরকম একটা আইন তো একটা সভ্য দেশে মোটামুটি জরুরী ভিত্তিতে করে ফেলা দরকার।

অতিথি লেখক এর ছবি

বছর ৫ আগে, অনি নামে এক বন্ধুর বাসার ছাঁদে আমরা প্রায় আড্ডা দিতাম। সেদিন আমি আগে গিয়ে ওদের নিচ তলার বাসায়, ওর পিসি তে গেইম খেলতেছি তখন আমকে বললো "তুই বস, ১০ মিনিট পরে ছাঁদে আয়।" আমি বললাম কেন? বললো কাজ আছে। ও পাশের ছাঁদের মেয়েটার সাথে কথা বলত তাই আমি আর কিছু বলিনাই। ১৫-২০মিনিট পর শুনতে পেলাম আন্টি চিৎকার করতেসে। আমি ভাব্লাম ঝগ্রা লাগছে। জানালা দিয়া বাইরে তাকায় দেখি এক লোক অনিরে কোলে নিয়া পেছনের গলি থেকে দৌড় দিলো, আমি এক দৌড়ে বের হয়ে ওরে গেলাম। সামনে গিয়ে দেখি রক্তাক্ত অবস্তা চেহারা চেনা যায়না। কোলে নিয়ে সাথের মনোয়ারা হস্পিটাল এ গেলাম, ওরা রাখতে চাইলো না, মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। ততক্ষনে আমার আরো বন্ধুরা হাজির। সবাই মিলে যখন রেগে গেলাম তখন কোন রকমে ফাস্ট এইড দিয়ে ঢাকা মেডিকেল এ ট্রান্সফার করলো। অনেক কস্টের সময় গেসে। ও বেঁচে গেলেও সবাই এইরকম ভাগ্য পায়না। ইমারজেন্সি ইউনিট গুলো আলাদা ভাবে এক একটা এলাকায় থাকলে আমার মনে হয় অনেক ভাল হত।

হিজিবিজি

r.hasan.artwork@gmail.com

হিমু এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।