বুড়িগঙ্গা বাঁচানোর পাগলাটে প্রস্তাব

শামীম এর ছবি
লিখেছেন শামীম (তারিখ: বুধ, ৩০/০৪/২০০৮ - ২:১২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সতর্কীকরণ:
অতীব দীর্ঘ এবং বোরিং পোস্ট। নিজ দায়িত্বে পড়বেন।

ভূমিকা:

বহুদিন যাবৎ-ই ঘটছে, আজ প্রথম আলোর খবরে দেখলাম, দূষণে বুড়িগঙ্গার পানির অবস্থা খুবই খারাপ। দেখে শুনে খারাপ লাগে বৈকি। এই পানি শুদ্ধ না হলে একে তো সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার বন্ধ করে দিতে হবে (ঢাকার ১৫% পানি সরবরাহ করে এটি), তাছাড়া বিভিন্ন জটিল পীড়ায় ভুগে নদীর আশেপাশের লোকজনের কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাবে, যার একটা খারাপ প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে।

এ থেকে পরিত্রানের উপায় কী? সমস্ত বাজার ও কলকারখানা, যেগুলো থেকে নদীর পানি দূষণ হচ্ছে সেগুলোকে এই মূহুর্তে বন্ধ করাটা একটা অবাস্তব চিন্তা। ম্যাজিকের মত বর্জ্য শোধনাগারও বানিয়ে ফেলতে পারবেনা কেউ। তাই, আমাদের পরিস্থিতির সাথে মানানসই কোন সমাধান খুঁজতে হবে -- সেটা হয়তো পৃথিবীর অন্য কোথাও না ও দেখা যেতে পারে।

একজন পরিবেশ প্রকৌশলী হিসেবে সমস্যা সমাধানকল্পে মাথায় কিছু চিন্তা ঘুরঘুর করছে। সেগুলো একটু ঝেড়েই ফেলি। বলা যায় না. ... এখন হয়ত এটাকে মাথা খারাপের সার্টিফিকেট পাওয়ার সার্থকতা বলবে, কিন্তু অদুর ভবিষ্যতে হয়তো এটাকেই পৃথিবীতে একটা গ্রহণযোগ্য সমাধান মনে হবে।

দূষণ-পরিশোধনের সাধারণ জ্ঞান:

যে সকল এলাকায় দূষণ হচ্ছে, সেখানকার পানির মাছ ও অন্যান্য প্রাণীও মারা যায়। পানি যে দূষিত হচ্ছে সেটার একটা সহজ প্রমাণ হল গন্ধ। এই গন্ধের কারণ হল মৃতদেহগুলোর পচন প্রক্রিয়া। আরেকটু বিস্তারিত উপাত্ত সংগ্রহ করলে দেখা যাবে যে, ঐ সকল এলাকায় মাছ মারা যাওয়ার আসল কারণ হল পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের অভাব। এটাকে DO বা ডিজলভ্ড অক্সিজেন বলে। এই অভাবের কারণ বায়োকেমিকেল অক্সিজেন ডিমান্ড (BOD) দিয়ে মাপা হয়।

পানিতে পচনযোগ্য ময়লা পড়লেই সেটাকে পঁচাতে গিয়ে ঐ ময়লা পানির BOD বেড়ে যায়। কারণ, ব্যাকটেরিয়াগুলো ঐ পচনশীল বস্তুগুলোকে সরল অনুতে ভেঙ্গে ফেলে সেখান থেকে নিজেদের শ্বসন ও বংশবৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান গ্রহণ করে। যত বেশি ময়লা থাকবে পানিতে, ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি হবে তত বেশি। কারণ এ যেন, ব্যাকটেরিয়ার লঙ্গরখানা। ব্যাকটেরিয়ার এই বিরাট খানাপিনা কার্যক্রমের কারণেই ময়লাগুলো দ্রুত পরিশোধিত হয়ে যায়। এটা তাই একটা ভাল প্রক্রিয়া। কিন্তু সমস্যা করে অক্সিজেনের অভাব।

ব্যাপারটাকে সহজে এভাবে বলা যায় - ব্যাকটেরিয়া যে খানাপিনা করে, সেটা আবার তারা রান্না করে খায়। এই রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনকে। তাই পানিতে ময়লা বেশি পড়লেই রান্নার ধুম পড়ে যায় আর দ্রবীভূত সমস্ত অক্সিজেন খরচ হয়ে যায় ... ... ফলে বাটে পড়ে মাছ ও অন্যান্য প্রাণী। কারণ মাছ ফুলকার সাহায্যে পানির অক্সিজেন গ্রহণ করে। সেই অক্সিজেনই যদি না থেকে তবে মাছ মারা যাবে সেটা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার হয় না।

এখন এ ধরণের পরিস্থিতি ঠেকাতে হলে কী করণীয়? ......... ...... সকলেই যেটা করে সেটা হল ব্যাকটেরিয়ার খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। ফলে ওদের আর খাদ্য রান্না করার কোন দরকার পড়ে না ... অক্সিজেনও নিঃশেষিত হয় না।

প্রস্তাবনা:

বর্তমান পরিস্থিতিতে যেহেতু (ব্যাকটেরিয়ার) খাদ্য সরবরাহ বন্ধ করা সম্ভব নয় তাই অতিরিক্ত এই খাদ্য (আবর্জনা) রান্না করার জন্য ওদেরকে জ্বালানী সরবরাহ বাড়িয়ে দেয়া যেতে পারে। In fact, বর্জ্য পানি শোধনাগারে এই প্রক্রিয়াটাই প্রধাণতঃ ব্যবহার করা হয়। অর্থাৎ স্বাভাবিক উপায়ে পানির উপরিতল বা সারফেস থেকে যেহেতু যথেষ্ট জ্বালানী (অক্সিজেন) যোগান দেয়া যাচ্ছে না, তাই কৃত্রিম উপায়ে সেই জ্বালানী (অক্সিজেন) যোগানোর ব্যবস্থা করতে হবে। নদীতে নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর পানিকে ওলটপালট করার জন্য ঘূর্ণয়মান পাখা বা খাঁজকাটা ড্রাম ভাসিয়ে রাখতে হবে। এগুলোকে সারফেস এয়ারেটর (surface aerator) বলে। ড্রামগুলো ঘোরানোর জন্য অবশ্য বৈদ্যূতিক শক্তি লাগবে। এই শক্তি সরবরাহের জন্যও কিছু উন্মাদীয় পরিকল্পনা আছে

  • সেই শক্তি সৌরশক্তিসংগ্রাহক থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে। প্রতিটি ড্রামের কিছু উপরে একটা করে সোলার প্যানেল থাকবে। এতে রাত্রে না হলেও দিনে- ওগুলো ঘুরবে।
  • মানুষের শক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে। অর্থাৎ আমার মত - মেদ ভুড়ি কী করি - গোষ্ঠীর লোকজন চর্বি গলানোর জন্য বিদ্যূৎ উৎপন্ন করে এমন সাইক্লিং যন্ত্র ঘুরায় চর্বি গলাতে পারে। নদীর পাড়ে এমন যন্ত্রগুলো সুন্দর পার্কের মধ্যে থাকবে। এটা ঘুরালে যে বিদ্যূৎ উৎপন্ন হবে সেগুলো দিয়ে মটর ঘুরানো যাবে।
  • অথবা সাইক্লিং প্যাডেল যুক্ত যন্ত্রগুলো সরাসরি গিয়ার চাকার সাহায্যে এয়ারেটরের সাথে যুক্ত থাকবে। যারা ঘুরাবে তাঁদের ব্যায়ামও হবে, পরিবেশের উন্নয়নের জন্য কাজও হবে।
  • আপাতত দূষণকারী কারখানা, বাজার, জলযান ইত্যাদি উৎস থেকে এগুলো চালানো ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ চাঁদা/জরিমানা হিসেবে তোলার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
  • বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখানে স্পন্সর করতে পারে। ড্রাম এয়ারেটরগুলোর উপরে প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন থাকবে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর এনভায়রনমেন্টাল কম্প্লায়েন্সের জন্য সার্টিফিকেট পেতে সুবিধা হবে। বিশেষত ISO 14000 সিরিজের সনদ পাওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরণের খরচ সহায়তা করবে।

উপসংহার:

লাভ হচ্ছে, এরকম করলে আর নদীর মাছের মৃত্যূ বা অন্য ক্ষতিগুলো হবে না; গন্ধ কমে যাবে। তবে, প্রতি বছর নদীর তলা ড্রেজিং করার ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকে। কারণ এই ময়লাগুলো ব্যাকটেরিয়া খাওয়ার পর সেগুলোর সরলিকৃত এবং নিষ্ক্রিয় অবশেষগুলো অধক্ষেপ হিসেবে নদীর তলাতেই জমা হবে। (বর্তমানেও সেটা হচ্ছে)

মোদ্দা কথা হল, পুরা নদীটাকেই একটা শোধনাগার হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।


মন্তব্য

ইরতেজা এর ছবি

শামীম ভাই কেমন আছেন? ট্যাকনিকাল লেখা। ধন্যবাদ

_____________________________
টুইটার

শামীম এর ছবি

ভাল আছি।
ডুবসাঁতার শেষ হল (কাজের চাপ কমল)? অন্যান্য খবর কী? হাসি
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

দারুণ পোস্ট। মেদ-ভুঁড়ির চিকিৎসার আইডিয়াটা পছন্দ হয়েছে। বাংলা সিনেমার নায়িকাদেরকে রেগুলার ৩ ঘন্টা করে সাইক্লিং বাধ্যতামূলক করতে হবে।

সমাধানগুলো পছন্দ হয়েছে, তবে বাস্তবায়নের জন্য যে সচেতনতা দরকার, তা আমাদের নগর পরিকল্পকদের না থাকারই কথা। মন খারাপ

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

শামীম এর ছবি

হেঃ হেঃ ... ভবিষ্যত পরিকল্পকদের মাথায় পোকা ঢুকানোর জন্য লেখা।

মাত্র ১০ বছর আগেও মাসিক চাঁদার বিনিময়ে বাসা থেকে ময়লা সংগ্রহ করে নিয়ে যাওয়ার যে সিস্টেম এখন চলছে সেটা চিন্তা করতেই অবাস্তব মনে হত। সুতরাং ... ...

অনেক দেশেই যেমন সেনাবাহিনী বা অন্য কোন সমাজসেবামূলক কাজে বছরে নির্দিষ্ট সময় বাধ্যতামূলক সময় দিতে হয় .... এটাকেও সেরকম করা যেতে পারে। কোন স্বেচ্ছাসেবক প্রতিষ্ঠান (যেমন: লিও/লায়নস ক্লাব চোখ টিপি) সীমিত আকারে এটার উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে।

সিঙ্গাপুরের মত, স্কুলের পরিবেশ বিজ্ঞান প্রজেক্ট হিসেবে নদীর ময়লা পরিষ্কারের ক্যাম্পেইন করা যেতে পারে। এতে নির্দিষ্ট সময়ে নদী থেকে ভাসমান বোতল, প্লাস্টিক ইত্যাদি ময়লা ছাকনী দিয়ে তুলবে ছাত্ররা। ফলে

  • নদীর কিছু উপকার হবে;
  • খেলাচ্ছলে ছাত্রদের সচেতনতা বাড়বে;
  • ভবিষ্যতের সচেতন নাগরিকের বীজ রোপিত হবে;
  • ছাত্রদের মাধ্যমে ঐ পরিবারে সচেতনতা ...
  • এবং সেখান থেকে দূষণকারীদের বিরূদ্ধে জনসচেতনতা গড়ে উঠবে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

গতমাসে স্ত্রী কন্যাসহ চাঁদপুর গেছিলাম... ফেরার পথে হঠাত্ খায়েশ হলো নদীপথে ফিরলে কেমন হয়? পিচ্চিটা আমোদ পাইতে পারে... সেই মোতাবেক উঠলাম এক লঞ্চে... কিন্তু তারপর যা দেখলাম তা ভয়াবহ... ডাস্টবিনও যে এরচেয়ে পরিষ্কার থাকে!!!
তখনই এইটা নিয়া ব্লগানের চিন্তা মাথায় আসছিলো... কিন্তু সেই যে সময়াভাব... আজকে প্রথম আলো দেখে আরো একবার মাথাচাড়া দিলো চিন্তাটা... কিন্তু একই সমস্যা... তবে এখন মনে হইতেছে আমার না লেখাটাই ভালো হইছে... আপনার লেখাটায় অনেক কার্যকর উপাদান আছে।

কিন্তু আমার মনে হয় আসলে সবার আগে আমাদেরকেই আরেক্টু সচেতন হইতে হবে। বুড়িগঙ্গাসহ বেশিরভাগ নদী দূষণের অন্যতম প্রধান কারন কিছু মানুষের লোভ আর বাকি সবগুলা মানুষের অসচেতনতা। নদীরে সর্বংসহা ভাবার ফলে পৃথিবীর সকল বর্জ্য আমরা সেইখানেই ফেলি... কোন বর্জ্য নদীতে ফেলা যাবে এবং কোন বর্জ্য ফেলা যাবে না এইরকম কোনও নীতিমালা কি করা যায়?(আছে কি না জানি না) তাইলে কারখানা বর্জ্য কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রন করা যেতো মনে হয়। আর নদী ব্যবহারেরও একটা নীতিমালা দরকার (যদি থাকেও লাভ কি? বাস্তবায়ন তো হইতেছে না)পুরো নদীরে শোধনাগার বানানো মনে হয় ব্যয়সাপেক্ষ হবে বেশি। আর যেইহারে বর্জ্য আসে... কত শোধন করা যাবে? তারচেয়ে বর্জ্য নির্গমনটাই বন্ধ করা ভালো না? তারচেয়ে একটু যদি সচেতন করা যাইতো। সরকারের সবকয়জন উপদেষ্টারে একবার লঞ্চে কইরা ঘুরায়া আনতে পারলে ভালো হইতো... সাথে মইন ইউরেও... অবশ্য জানি না... আমার যেমন কষ্ট হইছিলো তাদের দিলে সেইরম কষ্ট হইবো কি না!
তবে এইটা সত্যি খুব কষ্টকর... একটা নদী... যেখানে মানুষ যাবে নির্মল বায়ূ সেবন করতে... সেইখানে যাইতে হয় নাকে মুখে রুমাল চাপা দিয়া!!! বুড়িগঙ্গা এমন এক নদী... যেইখানে এখন আর সাঁতার কাটা যায় না...
মাছ তো মইরা সাফ... মানুষই বাঁচে না...
তবে এতদিনে অনেক দেরি হয়া গেছে... এখনই ব্যবস্থা না নিলে অবস্থা ভয়াবহ হবে...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

শামীম এর ছবি

সকলে মিলে গলা ফাটিয়ে চিল্লাতে হবে ... নাহলে তো মাথায় গেড়ে বসা কারো কানে এসব ঢুকবে না।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

খুবই ইন্টারেস্টিং এবং দরকারী লেখা। সচলে একজন ওস্তাদ পরিবেশবিজ্ঞানী পাওয়া গেলো। এই জাতীয় লেখা আরো দেন, পলিসি সলিউশন সহ। একদিন না একদিন কোন নীতি নির্ধারকের টনক যদি নড়ে। অনেকগুলা লেখা জমলে একটা গুরুত্বপূর্ণ সংকলনও হতে পারে!
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

শামীম এর ছবি

সংকলন শুনলেই কেমন যেন ভয় লাগে। তবে আইডিয়াটা খারাপ নয়।

প্রাথমিকভাবে, লেখার উদ্দেশ্য সংকলন তৈরী নয় বরং নাপিতকে ডাক্তারি শেখানোর প্রয়াস। (আমার আগের পোস্টে যেমন বলেছি)
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

সিম্পলি অসাধারণ আইডিয়া!!

খুবই ভাল লাগলো।
এরকম কিছু সত্যি সত্যি করতে পারলে দারুণ হত।
আপনার এই আইডিয়া টা আরো অনেকের সামনে তুলে ধরা উচিৎ। হাসি

---
স্পর্শ

শামীম এর ছবি

সচলায়তনের লেখা - এরকম রেফারেন্স দিয়ে আরো অনেকের জন্য কপি-পেস্ট মারতে পারেন নির্দ্বিধায়।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

বিপ্লব রহমান এর ছবি

নদী দুষণের প্রতিকার নিয়ে অনেকদিন পর এ রকম চিন্তাশীল লেখা পড়লাম। শাবাশ!


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

শামীম এর ছবি

ভাগ্যিস আপনি আমার সামনে নাই। তাহলে শাবাশের সাথে পিঠ চাপড়ানিও জুটত ... (আম্মাগো ...)।

Prevention is better than cure.
এটা আপাতত Cure সংক্রান্ত লেখা। এধরণের শেষে পরিশোধনকে End of the pipe technology বলে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি গোড়া থেকেই নিয়ন্ত্রনটা করা যায়।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

তীরন্দাজ এর ছবি

অনেক দরকারী ভাবনাচিন্তা আপনার। আপনার চিন্তাশীলতা ও এই প্রচেষ্টার জন্যে অজস্র ধন্যবাদ জানাই!

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

শামীম এর ছবি

অজস্র থেকে একটা ধন্যবাদ আপনাকে ফেরৎ দিলাম। হাসি
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

পরিবেশ প্রকৌশল বিষয়ে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান বলে পানির প্রবাহ বাড়ানো গেলে DO বাড়বে। এজন্য আপনার অসংখ্য সময়োপযোগী এবং বাস্তবায়নযোগ্য(!) পরামর্শের সঙ্গে একটা যোগ করি......
প্রতিটি নাগরিকের জন্য রোজ় .5 ft3 মাটি কাটা বাধ্যতামুলক করা হোক। তাতে ধলেশ্বরী হতে পানি এনে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার চালু রাখার কাজ অনেক এগিয়ে যাবে।
ধন্যবাদ একটি অভিনব লেখার পাঠক হবার সুযোগ দেয়ার জন্য।

(ক্লান্ত পথিক)

শামীম এর ছবি

সবচেয়ে hit ব্যাপার হল: dilution is the solution to pollution.
ধলেশ্বরীর বেশি DO যুক্ত পানি মিশ্রনের ফলে একক আয়তনে পানিতে DO/বর্জ্য অনুপাতটা বেড়ে যাবে। একই কারণে BOD কমবে। কাজেই ধলেশ্বরীর পানি এলে ভাল হওয়ার কথা।

তবুও আমি খাল কাটার পক্ষপাতি না - এর ফলে উভয় নদীর সাথে সংযুক্ত সমস্ত প্রবাহগুলোর dynamics পরিবর্তন হয়ে যাবে ... ওটার আবার দীর্ঘমেয়াদী কী প্রভাব পড়ে সেটার চিন্তা মাথার আরও কয়েকটা চুল পাকায় দিবে - DO ছাড়াও প্রবাহের নতুন ধরণকে বোঝার জন্য River modeling করতে হবে।

মূল কথা হল .... ভুড়ি কমানোর জন্য সাইক্লিংই ভাল খাইছে
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

গুল্লি!

এরকম পাগলাটে প্রস্তাব আরো দেন!



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

শামীম এর ছবি

(পাগলামীর) মাত্রা ছাড়ানো ঠিক না ... ... মুক্ত অবস্থা ভাল লাগে চোখ টিপি । মাঝে কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করা ভাল।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

দুর্দান্ত এর ছবি

খুবই প্রাসংগিক লেখা।
কচুরিপানার মত আপদকে কি এরকম বিষাক্ত পরিস্থিতিতে ব্যাবহার করতে পারি? কারখানাগুলি সরকারকে যেমন গ্যস, পানি, বিদ্যুতের বিল দেয়, অপরিকল্পিত বর্জনিষ্কাশনের জন্য পরিবেশ মন্ত্রনালয় ভি তাগোর কাছ থিকা মাসে মাসে চাঁদা আদায় করুক। আর স্থানীয় লোকজন কারখানা সংলগ্ন ওইসব এলাকায় হাল্কা স্থাপনা বানিয়ে কচুরিপানার আবাদ করুক।

শামীম এর ছবি

ধন্যবাদ।
কচুরিপানাকে দূষণ প্রতিরোধে ব্যবহার সংক্রান্ত গবেষণা হয়েছে বেশ কিছু। ফলাফল আশাব্যাঞ্জক। এধরণের পরিশোধণকে ফাইটোরিমেডিয়েশন বলে। এতে পানিতে ধাতব দূষণজনিত সমস্যার সমাধান করা যায়। BOD/DO সমস্যা নয়। তবে,

  • বুড়িগঙ্গার পরিস্থিতিতে এটা দিলে অচিরেই পুরা নদী দখল করে নৌ চলাচলের বারোটা বাজিয়ে দেবে।
  • এই গবেষণাগুলোর সীমাবদ্ধতা হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী সিমুলেশন। দূষণ গ্রহণকারী এই উদ্ভিদগুলো যখন মরে যাবে, তখন ওগুলোর পচন থেকে আবার কীভাবে দূষকগুলো ছড়াবে এই বিষয়ে তেমন কোন পরিপূরক গবেষণা চোখে পড়ে নাই।
  • দূষক শোষণ করা কচুরিপানাগুলোকে সরিয়ে নিতে হবে পানি থেকে এবং কোথাও এই বর্জ্য নিষ্কাশন করতে হবে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

হিমু এর ছবি

বাঙালি হেগেও কারো উপকার করতে চায় না। নিজের মেদভুঁড়ি কমানোর প্রক্রিয়ায় অন্য আর দশজনের উপকার হচ্ছে জানলে লোকে কোলেস্টেরোল জমিয়েই বরং মরবে বাড়িতে বসে।

নদীতীরবর্তী জনপদের দরিদ্র মানুষদের এ কাজে নিয়োগ করা যেতে পারে। এতে তাদেরও কিছু আয় হবে, বিজ্ঞাপনদাতাদেরও কপচানো হবে। ধানমন্ডি লেকে যেমন শখের বশে প্যাডেলবোটে চড়ে লোকজন, তেমনি সিঙ্গলসীটার প্যাডেলবোটে পুরানো দিনের স্টীমারের মতো করে ড্রাম প্রোপেলার বসিয়ে ছেড়ে দিতে হবে বুড়িগঙ্গায়। এপার থেকে ওপারে যেতে হবে দিনে কয়েকবার। মোবাইলসেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলি নিজেদের মধ্যে নদী ভাগ করে নিতে পারে স্থান বা কাল অনুযায়ী।

আমাদের দেশে রাস্তায় ময়লা ফেললে বা লিটারিং করলে কোন শাস্তি পেতে হয় না কাউকে। এ কাজের শাস্তি হতে পারে বুড়িগঙ্গায় এয়ারেটর প্যাডেলবোট চালিয়ে দুইবার নদী পার হওয়া। আমার ধারণা কয়েক মাসের মধ্যেই বুড়িগঙ্গায় কাইক্যা মাছ খলবল করা শুরু করবে এই পদ্ধতি চালু করলে।


হাঁটুপানির জলদস্যু

শামীম এর ছবি

জরিমানার আইডিয়াটা সেইরম হৈছে। দেঁতো হাসি
কর্মসংস্থানের আইডিয়াটাও দারুন। চলুক
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

অমিত এর ছবি

সেই শক্তি সৌরশক্তিসংগ্রাহক থেকে সরবরাহ করা যেতে পারে। প্রতিটি ড্রামের কিছু উপরে একটা করে সোলার প্যানেল থাকবে। এতে রাত্রে না হলেও দিনে- ওগুলো ঘুরবে।
সোলার প্যানেল জিনিসটা এখনও বেশ ব্যয়বহুল।এক্ষেত্রে উইন্ডমিল বসানো কার্যকর হবে কি না সেটা কস্ট কমপ্যারিসন করে দেখা যেতে পারে। আর আপনি যে পরিমাণ পানির কথা বলছেন তাতে ড্রামের আকার বেশ বড় হতে হবে অথবা বেশ ভাল পরিমাণের ড্রাম ব্যবহার করতে হবে।তবে আপনি যদি সোর্সের ইনফ্লুয়েন্ট কমাতে না পারেন তাহলে কোনই লাভ নাই।

মানুষের শক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে। অর্থাৎ আমার মত - মেদ ভুড়ি কী করি - গোষ্ঠীর লোকজন চর্বি গলানোর জন্য বিদ্যূৎ উৎপন্ন করে এমন সাইক্লিং যন্ত্র ঘুরায় চর্বি গলাতে পারে। নদীর পাড়ে এমন যন্ত্রগুলো সুন্দর পার্কের মধ্যে থাকবে। এটা ঘুরালে যে বিদ্যূৎ উৎপন্ন হবে সেগুলো দিয়ে মটর ঘুরানো যাবে।
কাজের কিছু না। এই পদ্ধতিতে বিদ্যুৎউৎপন্ন হবে খুবই কম। আর আমাদের দেশের মানুষজন সেরকম কিছু স্বাস্থ্যসচেতন না। যারা একটু হাটাহাটি করে বাসার আশেপাশের পার্কেই করে।আর পার্কের জন্য তেমন জায়গা বাকি আছে কি ?

আপাতত দূষণকারী কারখানা, বাজার, জলযান ইত্যাদি উৎস থেকে এগুলো চালানো ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ চাঁদা/জরিমানা হিসেবে তোলার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
আইন তো আমার মনে হয় আছে।কিন্তু সেই আইনের প্রয়োগ আছে কি ?

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এখানে স্পন্সর করতে পারে। ড্রাম এয়ারেটরগুলোর উপরে প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন থাকবে। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর এনভায়রনমেন্টাল কম্প্লায়েন্সের জন্য সার্টিফিকেট পেতে সুবিধা হবে।
অ্যাসথেটিকালি ব্যাপারটা খুব একটা সুবিধার মনে হচ্ছে না। তবে ডিজাইনার হয়ত কিছু একটা বের করতে পারবে।

দুর্দান্ত এর ছবি

বড় ভাইয়ের পয়েন্টগুলি ওজনদার আর খাপের খাপ, কিন্তু গেলাশটা মনে হৈল আধা খালি....গেলাশটা আধা ভর্তি বুইঝা কিছু পয়েন্ট মারেন।

শামীম এর ছবি

চিন্তাশীল মতামতের জন্য ধন্যবাদ। আমার প্রস্তাবগুলো হঠাৎ করেই মাথায় আসা ঝোঁকের লিখিত রূপ। আপনাদের সুচিন্তিত মতামতগুলো সেজন্য খুব প্রয়োজনীয়।

  • বুয়েটের EME ভবনের ছাদে একটা ছোট উইন্ডমিল বসানো আছে, ওটার বিদ্যূৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্ভবত ৪০০ ওয়াট। নদীতে ঐ ছয়তলা ভবনের ছাদের সমান বাতাস থাকবে বলেই মনে হয় .... চলুক
  • ইনফ্লুয়েন্ট/নিষ্কাশিত বর্জ্যের গুণগত মান ভাল করা বা পরিমানে কমিয়ে দেয়াটাই প্রচলিত পদ্ধতি (খাদ্য সরবরাহ কমিয়ে দেয়া হিসেবে লেখাতে বলেছি)। যত বেশি খাদ্য (জৈব ময়লা) তত বেশি জ্বালানী (অক্সিজেন) .... সমীকরণের যে কোন দিক দিয়েই সমাধানের প্রয়াস নেয়া যায়।
  • মটর যে বেগে ঘুরবে ড্রামও সেই বেগে ঘুরবে না। বরং গিয়ার চাকা দিয়ে কিছু মেকানিকাল সুবিধা আদায় করা হবে। সুতরাং কমক্ষমতাসম্পন্ন মটরদিয়েও কাজ হতে পারে। একটা সর্বনিম্ন ঘূর্ণনমাত্রা অবশ্য লাগবে।
  • কম বিদ্যূৎ দিয়ে একোরিয়ামের বুদবুদ পাম্প চালানো যাবে মনে হয়। ড্রাম বেশি বড় হয়ে গেলে বুদবুদ পাম্পের কথা চিন্তা করা যায়। যে কোন উপায়ে দ্রবীভূত অক্সিজেনে পরিমান বাড়ানোটাই আসল কথা।
  • এটা সত্য যে হাঁটাহাঁটি করার জন্য মোহাম্মদপুরের লোক পুরান ঢাকায় যাবে না। তবে কোন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এ ধরণের ক্যাম্পেইনের আয়োজন করতে পারে - "ভোরে ব্যায়াম করুন, পরিবেশ বাঁচান ... আমরা আপনাদের বুড়িগঙ্গার তীরে যাওয়া আসার ব্যবস্থা করবো।"
  • আইন ... দীর্ঘশ্বাস। আপনার কথা সত্য।
  • পাশাপাশি দুই/তিনটা ঘূর্ণয়মাণ ড্রাম একসাথে ভাল একটা ভাসমান প্লাটফর্ম তৈরী করতে পারে (ড্রাম দিয়ে তৈরী ভাসমান ব্রীজ আছে দেশে) .... ঘূর্ণন অক্ষগুলো সমান্তরাল হবে এক্ষেত্রে। ঐ ফ্রেমের উপরে বিলবোর্ড বসানোর মত ওজন দেয়া যেতে পারে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

কেমিকেল আলী এর ছবি

আমার মতে সবচাইতে ইফিসিয়েন্ট পদ্ধতি হল একুরিয়ামের মত নিয়মিত বায়ু প্রবাহ। আর এই কাজটা অনেক সহজ ও সরল ভাবেই করা যায় এবং তা অল্প খরচেই।

দুর্দান্ত এর ছবি

কেম্নে?

শামীম এর ছবি

দারুন বুদ্ধি! বাতাসের বুদবুদ দেয়া প্রচন্ড রকম দক্ষ একটা পদ্ধতি। চলুক

এই ধরণের পাম্পগুলো সম্পর্কে একটু জানতে চাই। ... কত বড়, কত বাতাস পাম্প করতে পারে, কত শক্তি লাগে, কত গভীরতা পর্যন্ত বাতাস দিতে পারে ইত্যাদি।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

সচেতনতা তৈরি ও তার বিস্তার হচ্ছে এ বিষয়ে প্রথম জরুরি বিষয়। আপনার লেখায় এবং অনেক মন্তব্যে বলাও হয়েছে। এটাও স্বীকার করা দরকার ব্লগের পাঠক এখনো সীমিত। ফলে, আপনার এই প্রস্তাবনাগুলি (পাগলাটে হোক না, ক্ষতি কী!) বৃহত্তর পাঠকের কাছে পৌঁছানো দরকার। এ বিষয়ে আমি একটা প্রস্তাব করি। আপনি লেখাগুলি প্রাথমিকভাবে ব্লগে প্রকাশ করতে পারেন। তারপর পাঠক মন্তব্যের (যেমন এখানেও কিছু মন্তব্য এসেছে যা আপনার লেখায় যুক্ত হতে পারে আপনার বিবেচনাসাপেক্ষে) প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ ঢাকার দৈনিকগুলিতে তা প্রকাশিত হতে পারে। এমনকি টিভিতেও যাওয়া দরকার। জনপ্রিয় মাধ্যমগুলি ব্যবহার না করে এই বিষয়গুলিকে জনপ্রিয় করা অসম্ভব বলেই আমার মনে হয়।

ভেবে দেখবেন। প্রয়োজন হলে ঢাকার মিডিয়ায় কিছু যোগাযোগ ঘটিয়ে দেওয়া অসম্ভব হবে না।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

শামীম এর ছবি

ধন্যবাদ।

দ্রবীভূত অক্সিজেনের সরবরাহ বাড়িয়ে দিলে উপকার হবে এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। কিন্ত কার্যক্ষেত্রে ওটা কতটুকু কার্যকর ভাবে প্রয়োগ করা যায় সেটার পরীক্ষালব্ধ ফলাফল দরকার। মূল্যবান যন্ত্রপাতি বাইরে ফেলে রাখলে সেটার নিরাপত্তার বিষয়টাও এতে জড়িত।

প্রাথমিকভাবে ছোট পরিসরে এটার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা যেতে পারে। গুলশানের যে জলাধার নিকেতনের পাশ দিয়ে বেগুনবাড়ী খালে গিয়ে লেগেছে ওটারও একই অবস্থা। গাড়ী দিয়ে ঐ ব্রীজ পার হতে গিয়ে প্রতিদিন রুমাল দরকার হয়।

আমাদের দেশে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার খুব অভাব। বিশেষত কিছু তথাকথিত টেকনিকেল লেখা পড়লে হাসি পায়। মনে মধ্যে সুপ্ত ইচ্ছা হল, অমন দায়িত্বহীনতার পথে না গিয়ে, বরং পরীক্ষা করে তারপর কিছু প্রচার করতে পারলে ভাল।

আগামী সপ্তাহ থেকেই নতুন সেমিস্টারে ক্লাস শুরু হচ্ছে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে। এবার কিছু থিসিসের ছাত্র পাব, তাঁদের মধ্যে একজন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা। ওদের সাথে অর্থবহ কিছু করার চিন্তায় আছি। (অবশ্য অনেকেই আর্সেনিকের উপরে কাজ করতে চায়)
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

শামীম এর ছবি

জেলখানার সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত বন্দীদের এই কাজে লাগানো যেতে পারে .... (আমার বউয়ের বুদ্ধি)
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

চমৎকার সব আইডিয়া
শামীম ভাই, ছোটখাটো একটা প্রোটোটাইপ বানাইয়া (দশ-বারোমিটার ড্রেন বানিয়ে কি সম্ভব? বুঝতেছিনা) এক্সপেরিমেন্টটা করেই ফেলুন, তারপর রেজাল্টসহ যুবায়ের ভাইর পরামর্শটা কাজে লাগান ,,,
জাঝা (বিপ্লব)
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

শামীম এর ছবি

ইচ্ছা তো আছেই। গুলশান শ্যূটিং ক্লাব আর আড়ং-এর মাঝখানে যে ব্রীজটা আছে ঐটার তলা দিয়ে যে পানি যায় সেই বরাবর টিন দিয়ে দুইটা চ্যানেল ভাগ করে এক দিকে বুদবুদ/ড্রাম দিয়ে দেখতে হবে ঐ চ্যানেল থেকে বের হওয়া পানির গুণাগুণ অন্যটার থেকে ভাল হয় কি না।

প্রাথমিক অবস্থায় অবশ্য শুধু পানি সংগ্রহ করে ল্যাবরেটরিতেই এয়ারেশন করে দেখতে হবে... কতদুর অবস্থা ভাল হয়; কী পরিমান এয়ারেশন লাগে; কতক্ষণ সময় লাগে ইত্যাদি। পরবর্তী স্টেজে ফিল্ড টেস্ট ঐ ব্রীজের তলে হতে পারে। সফল হলে বুড়িগঙ্গার পানি নিয়ে একই রকম ল্যাব টেস্ট করে ... ফলাফল ইন্টারপ্রেট করতে হবে।

তবে এটা বাংলাদেশতো ... চাইলেই যে করতে পারবো সেটা ১০০ ভাগ নিশ্চিত না। তবে আন্তরিক চেষ্টা থাকবে। অন্ততপক্ষে ল্যাবরেটরি ভিত্তিক টেস্ট করার সমর্থ আছে আমার ল্যাবের, আসল জায়গায় প্রোটোটাইপ দিয়ে পরীক্ষা করার আয়োজন নিয়ে একটু চিন্তিত; (যন্ত্রপাতি, খরচ, নিরাপত্তা)।

চারিদেকে সমাধানের অপেক্ষায় এ্যাত সমস্যা থাকা সত্ত্বেও লোকজন(?) কেন জানি থিসিসের জন্য নতুন আইডিয়া/টপিক খুঁজে পায় না। চিন্তিত রেগে টং
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

তারেক এর ছবি

ফাটাফাটি সব আইডিয়া।
আমার একটা প্রশ্ন জাগলো - বুড়িগঙ্গায় সারফেস এয়ারেটর এর ঘণত্ব কিরকম হওয়া উচিত আনুমানিক? বিভিন্ন স্থানে দূষণের মাত্রানুযায়ী তার সংখ্যার হেরফের হবে নিশ্চয়। সেগুলো যান চলাচলে কি অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে না? সদরঘাটে লঞ্চের যে ভিড় দেখি ! কেমিকেল আলী ভাইয়ের পরামর্শটাও মনে ধরেছে।

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

শামীম এর ছবি

প্রথমে লাগে একটা আইডিয়া ও পরিকল্পনা। তারপর সেটা কীভাবে কাজে পরিণত করতে হবে সেটা।

আইডিয়া/পরিকল্পনা হল।

কাজে পরিণত করার জন্য ঐ সব বিস্তারিত হিসাব, লে-আউট প্ল্যান ইত্যাদি করতে হবে (কতগুলো, কত ব্যবধানে, নৌপথে নূন্যতম বাঁধা সৃষ্টি করে তেমন লেআউট) । আর বুদবুদের ব্যাপারটাতো আছেই।

আমার ধারণা, যেসকল স্থান হতে ময়লা পানিতে ফেলা হয় তার কাছাকাছি একটু ভাটিতে ঐ এয়ারেটরগুলো বসাতে হবে।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

তানভীর এর ছবি

শামীম ভাই, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) 'বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন' নামে একটা কর্মসূচী আছে। ওদের কানে আপনার আইডিয়াগুলো ঢুকানোর ব্যবস্থা করেন। এদের কমিটিতে জে আর সি, আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের মত হোমড়া-চোমড়া লোকজনও আছে। ভলান্টিয়ার বাহিনীও আছে সম্ভবত যাদের আপনার এক্সপেরিমেন্টে কাজে লাগাতে পারেন। এদের ওয়েবসাইট হল http://www.bapa.org.bd/

যোগাযোগের ঠিকানাও এখানে দেয়া আছে।

পাগলাটে আইডিয়া আরো আসুক চলুক

=============
"আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম"

শামীম এর ছবি

থ্যাঙ্কু ... মেইল দিচ্ছি এখনই।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

swakkhar এর ছবি

ভালো লাগলো

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।