ক্রেডিট কার্ড ও আন্তর্জাতিক নেপো’চক্র

কৌস্তুভ এর ছবি
লিখেছেন কৌস্তুভ (তারিখ: বিষ্যুদ, ১১/০৮/২০১১ - ১:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ইশকুলে পাটিগণিত করতে যাঁদের পায়ের ঘাম মাথায় ফেলতে হত না, তাঁদের জন্য একটা ছোট্ট অঙ্ক:

গোপালগঞ্জের হাটে বছিরুদ্দি শেখ ঝুড়ি ভরে জামরুল বেচতে আসে ফি-সোমবার। একটা জামরুল তিন টাকা দরে হলে তার ঠিক-ঠিক হয়। কিন্তু সবার আয়ের পাঁচ পারসেন্ট ভাগ আবার দিতে হয় ওই হাটের ব্যবসায়ী-সমিতির মাতব্বর নেপো’কে। আর নিজের পেট চালাতেও তো হবে? সেজন্য সে বিক্রিতে ১০% হারে লাভ রাখতে চায়। তাহলে, কুড়িখানা জামরুল’ওয়ালা একটা ঝুড়ি যদি রামবাবু কেনেন, তাহলে তাঁর কেনা দর কত পড়েছে?

উত্তরটা হল, ৬৯ টাকা ৪৭ পয়সা।

আর এর মধ্যে, রামবাবুর অজান্তেই তাঁর পকেট থেকে সাড়ে তিন টাকা চলে গিয়েছে নেপো’র গেঁজেতে। ওই পরিমাণটা, বছিরুদ্দির করা একটা কৃত্তিম মূল্যবৃদ্ধি বলেও ধরতে পারেন।

(১)

এই প্রসঙ্গ কেন তুললাম? কারণ, দেশেই হোক বা আমেরিকায়, আপনি যখনই কোনো দোকানে টাকা দিয়ে এমন কিছু কিনছেন, যা রামবাবু এসে ক্রেডিট কার্ড দিয়েও কিনতে পারেন, তার অর্থ – আপনি একরকম কৃত্তিম মূল্যবৃদ্ধির শিকার হচ্ছেন।

খুব সহজ ভাষায়ই বুঝিয়ে বলছি। কিন্তু তার আগে ধরে নিন, বছিরুদ্দি শেখ এখন আর হাটে বসে না, তার নিজের একটা ঝাঁ-চকচকে দোকান হয়েছে, নূরজাহান ব্যাঙ্কে সে টাকা রাখে। আর রামবাবু সব কেনাকাটাই করেন তাঁর ব্যাঙ্ক অফ কচুবাগান-এর ক্রেডিট কার্ড দিয়ে। আর সেটার উপর জেস্টারকার্ড-এর ছাপ্পা মারা।

তাহলে, যখনই রামবাবু ওই কার্ড দিয়ে কিছু কেনার জন্য বছিরুদ্দিকে টাকা দিচ্ছেন, তার একটা অংশ চলে যাচ্ছে ওই দুই ব্যাঙ্ক আর জেস্টারকার্ডের হাতে। সেই জন্য, জিনিসের মুদ্রিত মূল্য বছিরুদ্দিকে বাড়িয়ে রাখতে হচ্ছে, যাতে ওইগুলো বাদ দেওয়ার পর তার হাতে আসল মূল্যের সমান টাকা আসে।

তাই আপনি যখন বছিরুদ্দির দোকানে গিয়ে ওই একই জিনিস কিনছেন মুদ্রিত মূল্যে, কিন্তু রোক্কা নোট দিয়ে, তখন ওই বাড়তি টাকাটা পুরোটাই বছিরুদ্দির লাভ হয়ে যাচ্ছে!

(২)

আপনার দুরাবস্থার আলোচনায় পরে আসব। তার আগে, ক্রেডিট কার্ডের দইটা কোন নেপোয় কীভাবে মারে তা দেখে নিই।

এই যে ব্যবস্থাটা, যাতে বছিরুদ্দির দোকানে বসানো কার্ড-রীডার মেশিনের মাধ্যমে বিক্রির টাকাটা সরাসরি তার নূরজাহান ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে গিয়ে জমা পড়ছে, এর জন্য তার ব্যাঙ্ক তার থেকে একটা কমিশন পায়। সেটা ধরুন ২%। এই ফী-টা হচ্ছে তাকে দেওয়া ব্যাঙ্কের সুবিধাগুলোর দাম। তাকে টাকা নিয়ে গিয়ে ব্যাঙ্কে জমা করতে হচ্ছে না, সরাসরিই গায়েবি টাকা তার অ্যাকাউন্টে জমা পড়ছে। আর সে যে গ্রাহকদের কার্ড ব্যবহারের আরামটা দিতে পারছে, এর জন্য সে গ্রাহক পাচ্ছেও বেশি।

কিন্তু এরও আগে, রামবাবুর ব্যাঙ্ক থেকে টাকাটা বেরোবার সময়ই, কেটে নেওয়া হচ্ছে একটা অংশ। সেটাকে বলে ইন্টারচেঞ্জ ফী। যেহেতু ব্যাঙ্ক অফ কচুবাগান থেকে ওই টাকাটা বেরোচ্ছে, তাদেরকে টাকাটা অন্য এক ব্যাঙ্কে পাঠাতে হচ্ছে, তাই একটা ২% ট্রান্সফার ফী কেটে নেয় তারা। আর সেই সাথেই, যেহেতু এই কার্ডের কাজটা হচ্ছে জেস্টারকার্ড-এর নেটওয়ার্কের মাধ্যমে, কার্ডে তাদের ছাপ্পা যেটার প্রমাণ, তাই তারাও একটা ১% হিস্যা পায়।

মানে এইরকম – ১০০ টাকা বিলের জন্য কার্ড দিলে, ১০০ টাকাই তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে কাটলো, কিন্তু ৯৭ টাকা বেরোলো রামবাবুর ব্যাঙ্ক থেকে, তার থেকে আবার বছিরুদ্দির ব্যাঙ্ক কেটে নিয়ে ৯৫ টাকা দিল তার অ্যাকাউন্টে।

(৩)

তা এতগুলো ফী দিলে তো বছিরুদ্দির অনেক লস। তাই অনেক দোকানে দেখবেন, একটা সর্বনিম্ন দামের কম বিল হলে (প্রায়শই ১০ ডলার) ক্যাশ দিয়েই কিনতে হয়। নইলে এতগুলো উপরি ফী দিয়ে তাদের পড়তায় পোষায় না।

আবার বছিরুদ্দি ভাবতেই পারে, এতসব ফী কেন সে নিজের পকেট থেকে দেবে? সে হয়ত শুরুর অঙ্কটার মত সব জিনিসেরই দাম একটু করে বাড়িয়ে রাখল। সেক্ষেত্রে কেউ ক্যাশে কিনলে ওই পরিমাণটা তারই লাভ।

বা সে যদি হিসাবে আরও দড় হয়, সে যদি দেখে, যে তার দোকানে অর্ধেক ক্রেতা ক্যাশ দেয় আর অর্ধেক কার্ড, তাহলে সে হয়ত পুরোটা না বাড়িয়ে অর্ধেকটা দাম বাড়াল। তাহলে, যাঁরা ক্যাশে কিনছেন, তাঁরা কার্ড-ধারীদের ভর্তুকি দিচ্ছেন, এভাবে ভাবা যেতে পারে।

অধিকাংশ বিক্রেতাই এমনটা করে থাকেন। তাহলেই দেখুন, কার্ড-ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্য ক্যাশ-দাতাদের বেশি পয়সা দিতে হচ্ছে আখেরে।

(কার্ড-ব্যবহারকারীরা আরও একটা পরোক্ষ সুবিধা পান। এই যে ২% তাঁর ব্যাঙ্কের পকেটে যাচ্ছে, তাঁর ব্যাঙ্ক তো হিসাব রাখছে যে তিনি কতবার কার্ডটা ব্যবহার করছেন। তারপর ওই থেকে তাঁদের কিছু রিওয়ার্ড দেওয়া হয়, নিয়মিত ব্যবহারকারী হিসাবে। এই যেমন হোটেল বুকিংয়ে বা রেস্তোরাঁয় ছাড়।)

(৪)

এর প্রতিকার হচ্ছে, যাঁরা কার্ড দিয়ে কিনছেন, সরাসরি তাঁদের কাছেই এই আরামের জন্য ফী দাবি করা। আমি লন্ডনে যখন ছিলাম, যতদূর মনে পড়ে, ছোট ছোট দোকানগুলো হয়ত পঞ্চাশ পেন্স বেশি চার্জ করত কার্ড ব্যবহারের জন্য। অস্ট্রেলিয়াতেও শুনেছি বিক্রেতাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে কার্ড-ব্যবহারকারীদের থেকে একটা সারচার্জ নেওয়ার। এর ফলে সেখানে ক্রেডিট কার্ডের ব্যবহার কমেছে, পিন-ওয়ালা ডেবিট কার্ড বা ক্যাশ ব্যবহারের চল বেড়েছে।

(ডেবিট কার্ড যেমন প্রায়শই সোয়াইপ করে তারপর পিন এনট্রি করে ব্যবহার করা যায়, তাতে ফী সবচেয়ে কম হয়। ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড শুধু সোয়াইপ করলে, তারপর কাগজে সই করলে, সেটায় ফী খানিক বেশি লাগে। আর যখন কার্ডের নম্বর দেখে দেখে বিক্রেতা মেশিনে এনট্রি করে, যেমন অনেক রেস্তোরাঁয় করা হয়, তখন ফী লাগে সবচেয়ে বেশি। ব্যাঙ্কের তরফে কার্ডের প্রসেসিং-এর ধাপ তখন বেড়ে যায় বলেই এইরকম।)

কিন্তু এতেও একটা সমস্যা আছে। একজন বিক্রেতা হিসাবে ভিসা বা মাস্টারকার্ড এর মাধ্যমে টাকা নিতে গেলে, মানে তাদের কার্ড পড়তে পারে এমন মেশিন ব্যবহার করতে গেলে, যে কাগজে সই করতে হয় তাতে বলা আছে, তুমি আমাদের কার্ড-ধারীদের থেকে বেশি টাকা নিতে পারবে না। তাই ইউকে বা অস্ট্রেলিয়ায় যে ওই ব্যবস্থা করা গেছে, তা কেবল সরকার বিশেষ আইন করে ওই ‘নো-সারচার্জ পলিসি’ তুলে দেওয়ার ফলে। কানাডা সরকারও একই আইন করায় ওরা আবার তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমেরিকার কিছু স্টেট আবার অনুমতি দিয়েছে যে, কার্ড-ধারীদের থেকে বেশি টাকা না নিলেও তুমি ক্যাশ-দাতাদের কিছু ছাড় দিতে পারো।

(৫)

কার্ড কোম্পানিদের এমন জবরদস্তি নিয়ে আরো একটা গল্প শোনাই। ভিসা এবং মাস্টারকার্ডের মতই আরেকটা বড় নেটওয়ার্ক চালায় আমেরিকান এক্সপ্রেস, কিন্তু বস্টনের অনেক দোকানেই দেখবেন তাদের লোগো-ওয়ালা কার্ড নেয় না। আমেরিকার অনেক জায়গাতেই। এর পেছনে একটা গল্প আছে, যেটা বস্টন ফী পার্টি (বস্টন টি পার্টি-র অনুকরণে) বলে খ্যাত।

একটা সময়, আমেরিকান এক্সপ্রেসের নিয়ম ছিল, যেসব বিক্রেতা কেবলমাত্র তাদের কার্ডই গ্রহণ করে, তাদের জন্য ফী-তে বিশেষ ছাড় দেওয়া। এমনিতে তাদের ফী ছিল ৪%, আর বাকিদের ছিল ১%-এর মত; কিন্তু শুধুমাত্র তাদের কার্ড নেয় যারা তাদের থেকে হয়ত কেবল ০.৫% ফী নিত। এর ফলে অনেক দোকানই তাদের সঙ্গে এমন চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল, আর বাকি কোম্পানিগুলো খুব চটে যেত।

কিন্তু ১৯৯১ সালে বস্টনের অনেকগুলো রেস্তোরাঁ মিলে ঠিক করে, যে তারা উলটে আমেরিকান এক্সপ্রেসেরই কোনো কার্ড নেবে না, বরং বাকিদের কার্ডই নেবে। দ্রুত এই কাজ দেশের অন্যান্য জায়গার রেস্তোরাঁগুলোও শুরু করে। ফ্যাসাদে পড়ে তারা তখন তাদের ফী অনেকটাই কমিয়ে নিয়ে আসতে বাধ্য হয়, আর ওইরকম নিয়মও চুক্তিপত্র থেকে তুলে ফেলে।

(৬)

এই যে কোম্পানিগুলোর এত বেশি ফী দাবি করা, তাই নিয়ে নানা দেশে অ্যান্টিট্রাস্ট মামলা (মানে মোনোপলির বিরুদ্ধে) হয়েছে। উপরে যেমন বললাম, অস্ট্রেলিয়ার সরকার আইন করে এই ফী-এরও সীমা বেঁধে দিয়েছে।

আজকের ডিজিটাল যুগে এক ব্যাঙ্ক থেকে অন্য ব্যাঙ্কে টাকা ট্রান্সফার করা দুধভাত। তাই এত বেশি ইন্টারচেঞ্জ ফী দাবি করাও অনুচিত। এই যুক্তিতে তাই এই ফী-টাই বিশেষ করে আমেরিকা, ইউরোপ ইত্যাদি অনেক দেশের সরকার কড়া নজরে রেখেছে, অনেক কোম্পানিকে এই ফী-র বিশদ তালিকা দিতে, হার কমাতে নির্দেশ দিয়েছে।

কিন্তু আজব ব্যাপার এই যে, অস্ট্রেলিয়াতে যেমন সরকার ফী-এর সীমা বেঁধে দিয়েছে, কার্ড-ধারীদের বেশি চার্জ করবার অনুমতিও দিয়েছে যাতে ক্যাশ-দাতারা অনায্যভাবে বেশি টাকা দিতে বাধ্য না হয়, তারপরও কিন্তু বিক্রেতারা কোনো জিনিসের দাম কমায় নি! বরং অনুমতি পেয়েই কার্ড-ধারীদের আরও উপরি চার্জ করছে। আর এই ঘটনা দেখে কার্ড কোম্পানিরা টিড্ডিম টিড্ডিম করে নাচতে নাচতে সরকারকে গিয়ে বলেছে, ওই দেখো, আমাদের উপর জোরজবরদস্তি করে ফী কমানো করালে, এই আইন করলে, সেই আইন করলে, তোমার ক্রেতাদের লাভ হল কোন কচু?


*****
যখন মায়ামি'র কনফারেন্সের জন্য (হ্যাঁ হ্যাঁ, কনফারেন্স-ই, কোনো সৈকত-কেলি নয়) কয়দিন অ্যাবসেন্ট ছিলাম, তখন সুরঞ্জনা আর ফাহিম আমায় সচলে দেখতে না পেয়ে গুঁত্তা দিয়েছিল। তাদের আন্তরিকতার জন্য ধন্যবাদ রইল। হাসি


মন্তব্য

অপছন্দনীয় এর ছবি

জেস্টারকার্ড হো হো হো

তবে ফীর মারপ্যাঁচ না বুঝলেও ওই হতচ্ছাড়া ক্রেডিট কার্ড আমার মত মূঢ় সংসারজ্ঞানহীন বেহিসাবী লোকজনের, যাদের কিনা বইয়ের দোকানে আর রেস্টুরেন্টে ঢুকলে ইহকাল এবং পরকালের কোন হিসেব থাকে না, তাদের জন্য দেউলিয়া হওয়ার সরল এবং প্রশস্ততম রাস্তা ছাড়া আর কিচ্ছু না। বাংলাদেশে একখানা ছিলো, সেটা প্রায় দেউলিয়া বানিয়ে ছেড়েছে, আর এখন এখানে আরেকখানা জুটিয়েছি, ঝটপট গ্র্যাড স্টুডেন্টের খালি অ্যাকাউন্টটা আরো খানিকটা খালি করার লক্ষ্যে দেঁতো হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

সে কথা সত্যি। আপনাকে বেহিসাবী খরচ করিয়ে ঋণগ্রস্ত করে ফেলতে পারলেই তাদের লাভ, ঋণের উপর আবার বিশাল হারে সুদ নিতে পারবে...

সুমন_তুরহান এর ছবি

ধন্যবাদ কৌস্তুভ'দা। জানলাম অনেক কিছু। হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

আশালতা এর ছবি

টাকাপয়সাহিসেবনিকেশসংখ্যাদশমিকভগ্নাংশশতকরা মাথায় ঢোকে না। বুই পাই।:S

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

তিথীডোর এর ছবি

টাকাপয়সাহিসেবনিকেশসংখ্যাদশমিকভগ্নাংশশতকরা মাথায় ঢোকে না। বুই পাই

আম্মো তাই। মন খারাপ

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

কৌস্তুভ এর ছবি

আম্মো। তবে গরীব ছাত্রেরা আরো বুই পায় যখন মাঝেমধ্যে নিজের ব্যাঙ্কব্যালেন্সটা চোখে পড়ে যায়...

অপছন্দনীয় এর ছবি

এই জন্যই ব্যাঙ্ককে বলে স্টেটমেন্ট পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছি মন খারাপ ওটা দেখলেই অন্তরাত্মা চমকে ওঠে কিনা... মন খারাপ

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হ!! মন খারাপ

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

হিসাব নিকাশ পারি না। টাকা-পয়সার আরোই পারিনা। নিজের হইলে তো কথাই নাই। হাতে থাকলেই বইটই কিনে ফেলি, তারপর আবার ফকির। পড়তে লেগে প্রথমে মাথা ঘুরায় গেল। তারপর মোটামুটি বুঝলাম আরকি...
বুঝলাম যে, হিসাব-নিকাশ আসলেই আমাকে দিয়ে চলবে না!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ছাইপাঁশ এর ছবি

খুব সহজ করে লিখেছেন। ভালো লাগলো।

কৌস্তুভ এর ছবি

জেনে আমারও ভালো লাগল। হাসি

নৈষাদ এর ছবি

চলুক
আমেরিকাতে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের জন্য গ্রাহককে কি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে কোন বার্ষিক ফি দিতে হয়?

তাসনীম এর ছবি

বেশির ভাগ ক্রেডিট কার্ডই নো ফি। কিন্তু কিছু কিছু কার্ড পারচেসের বিপরীতে এয়ারলাইন্স মাইলেজ দেয়, সেগুলোতে বার্ষিক একটা ফি (৫০-৭৫ ডলার) দিতে হয়।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কৌস্তুভ এর ছবি

কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান কার্ড দিলে তারা ফী নেয় বলেই শুনেছি। যে ব্যাঙ্কে আপনার অ্যাকাউন্ট তাদেরই কার্ড নিলে সচরাচর পয়সা নেয় না। আর হোটেল এয়ারলাইন্স ইত্যাদিরাও কার্ড দিলে ফী নেয়, বিজ্ঞাপনের জন্য প্রথম বছরের ফী-টা ওয়েভ করে দিয়ে...

তাসনীম এর ছবি

ব্যাপারগুলো মোটামুটি জানতাম। মার্কিন মুল্লুকে সিরিজে বলেছি যে পাটিগণিতে কাঁচা হলে এই দেশে আসা উচিত নয়।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ নৈষাদদা।

ঞঁ এর ছবি

কস্কী মমিন!! দুনিয়া এত জটিল কেন?!?

কৌস্তুভ এর ছবি

কারণ আমরা যে জটিল চিন্তা-ক্ষমতা সম্পন্ন মস্তিষ্কের অধিকারী মানবজাতি...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আন্তঃব্যাংক এবং অন্তঃব্যাংক ফি আর চার্জ যে কী রকম হতে পারে তার একটা উদাহরন দেই। ইতালী থেকে একটা কনসাইনমেন্ট আনার জন্য বাংলাদেশের এক ব্যাংক থেকে এলসি খুলেছিলাম। সাপ্লায়ারের ব্যাংকের সাথে (ইতালীর ব্যাংক) আমাদের ব্যাংকের সরাসরি লেনদেন না থাকায় একটা জার্মান ব্যাংককে ধরা হয়েছিলো মধ্যস্থতার জন্য। মধ্যস্থতাকারী ব্যাংক এর জন্য যে ফি দাবী করেছিলো সেই টাকায় অনায়াসে ঐ আমলে প্লেনের বিজনেস ক্লাসে ঢাকা থেকে মিলান গিয়ে দু'দিন থেকে আবার ফিরে আসা যেতো। আমরা শেষমেশ এলসিটা ক্যানসেল করে দিয়েছিলাম।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

কৌস্তুভ এর ছবি

মন খারাপ

ব্যাপারটা সরল রাখতে আর মধ্যস্থতাকারী ব্যাঙ্কের প্রসঙ্গ আনি নি। তাদেরও একটা অংশ ফী দিতে হলে তো একেবারে সোনায় সোহাগা...

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

আজকালতো সব ব্যাঙ্কের সাথেই সব ব্যাঙ্কের কোনো না কোনো ভাবে রিলেশন পাওয়া যায় হাসি

---------------------
আমার ফ্লিকার

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

রিলেশন পাওয়া যায় সেটা ঠিক - সরাসরি না হলে একটু ঘুরিয়ে। তবে তাতে আন্তঃব্যাংক চার্জের হার খুব একটা কমে না। এলসি ওপেনার বা বেনেফিশিয়ারী যার উপর দিয়ে এটা যায় সে হাড় হাড়ে টের পায়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

তারেক অণু এর ছবি

হুমম ,আর কয়টা দিন, তারপরতো আর ক্যাশ টাকা চোখে দেখব না, থাকবে শুধু কার্ড, আর বাঙ্কের ইউনিট। ভালা লিখেছেন দাদা চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

হেহে, সেই ভালো, দুনিয়াতে নোট ছাপানোর প্রয়োজনই উঠে যাবে তখন, জাল নোট নিয়ে ভাবনা করাও লাগবে না... খাইছে

দুর্দান্ত এর ছবি

নেপো কর্য দেবে, কিন্তু সুদ কাটবেনা, এটা কেমন কথা?

কৌস্তুভ এর ছবি

এইটা ভালো বলেছেন। কার্ডগুলো এমনভাবে বিজ্ঞাপিত হয় যেন প্রথম এক মাসের মধ্যে পুরো টাকাটা মিটিয়ে দিলে আপনার উপরি কোনো খরচাই নেই। নাহলে মাসের হিসাবে সুদ। প্রত্যক্ষভাবে সেটা সত্যি, কিন্তু তাহলেও তো সব কটা খরচই অগ্রিম, ধার। তাই কি এই ফী-গুলোকে সেই অগ্রিমের উপর সুদ হিসাবে দেখতে বলছেন? তবে ডেবিট কার্ড তো ধার নয়, তাতেও কিন্তু একটা ফী কাটাই হয়...

দুর্দান্ত এর ছবি

এতক্ষণ ক্রেডিট কার্ড নিয়েই কথা হচ্ছিল, তাই সুদের কথা তুললাম। তবে ফি' এর বিষয়টা নগদের বদলে কার্ড ব্যাবহারের সাথে সম্পৃক্ত। এখানে ট্রান্সফার বা ইন্টেরচেঞ্জ ফি কার্ড বাণিজ্যে মৌলিক কিছু তো নয়। যেকোনো ক্রেতা-বিক্রেতার মাঝের দালাল তার পাওনা বুঝে নেবে। ক্রেডিট কার্ডে টাকাপয়সার খুচরা বাণিজ্যে যেটা দেখা যায়, সেটা স্টক বাজার বা বীমার ক্ষেত্রে টাকার পাইকারি বাজারেও দেখা যায়। শেয়ার বেচার কেনার লাভলোকসান আপনার, কিন্তু লস খেয়েছেন বলে এক্সচেঞ্জের পাণ্ডার ফি এড়িয়ে যাবেন? একবার চেষ্টা করেই দেখুন। পাণ্ডব দা আরেক ধরনের একটা উদাহরণ দিয়েছেন। শেষমেশ কনভিনিয়েন্স বা ভোক্তা-সুবিধার একটা খরচ তো থাকবেই। একটা সুবিধা নেবেন, কিন্তু দাম চাইলে গাঁইগুঁই করবেন, এক কেমনধারা কথা মশয়? নীতিপ্রনয়কের চোখ খোলার আগেই মাস্টার-কার্ড-ভিসা এরা একক মাধ্যম গড়ে নিয়েছে, তারা এখন স্থানীয় এমপি'র চেলারা যেভাবে সরকারি সেতুর মাথায় বাঁশ ঠেকিয়ে ট্রাক-বাস থেকে চাঁদা তোলে ঠিক সেই কায়দায় টাকা তুলে নিচ্ছে। নীতিপ্রনয়ক সবে ঘুম থেকে জেগে উঠেছে - এখনে সেখানে নতুন আইন হচ্ছে। কার্ড থেকে এই বাণিজ্য সরে মোবাইল ফোনে ঢুকছে। ব্যাঙ্ক তো দাতব্য সংস্থা নয় আর যেখানে আইন নেই, সেখানে চাঁদাবাজ ই তো ত্রাতা। মাইক্রোসফট, গুগল, ফেসবুক, কার্গিল, মনসান্টো, আওয়ামীলীগ - উদাহরণ অনেক।

ঠিক, সবাই করে বলে সেটা কোশার হয়ে যায়না। তবে টুথপেস্টের দাম বেড়ে যাচ্ছে বলে তো আর দাঁতকে খারাপ বলা যায় না। এভাবে ভাবুন তো, ক্রেডিট কার্ড না থাকলে দুনিয়াটা কেমন হত?

কৌস্তুভ এর ছবি

বেশ বলেছেন। হাসি

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

দারুণ লিখেছেন তো। এক কাজ করুন না, উইকিপিডিয়ায় মানি ট্রানজেকশন আর খুঁটিনাটি নিয়ে যত্তগুলো পেইজ আছে, সব বাংলা করে ফেলুন। আংরেজী আর পড়তে মন চায়না।

কৌস্তুভ এর ছবি

ভাই পাগল পাইছেননি? পরিসংখ্যান এর অ্যাপ্লিকেশন হিসাবে এক-দু ফোঁটা অর্থনীতি পড়েছি হয়ত কখনও, ওইসবের মত যথেষ্ট বিদ্যা আমার পেটে নাইকো...

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অঙ্ক দেখেই পোস্ট পড়া বাদ্দিছি মন খারাপ

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কৌস্তুভ এর ছবি

খাইছে

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ভাসাভাসা ধারনা ছিলো। এবারে অনেক কিছু পরিষ্কার হলো। অসংখ্য ধন্যবাদ!

কৌস্তুভ এর ছবি

লইজ্জা লাগে

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

অতি চমৎকার লেখা! পাঁচ তারা চলুক

---------------------
আমার ফ্লিকার

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- ভাই

রু (অতিথি) এর ছবি

খুব সহজ ভাষায় লিখেছেন। অনেক কিছু জানতে পারলাম।

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ, রু।

Onirudha Biswas এর ছবি

বছিরুদ্দি শেখের যদি মোট বিক্রির উপর ৫% উসুল দিতে হয় ও ১০% লাভ করতে চায়, তাহলে রামবাবুর (৬০+৭.০৬ (৭০.৫৯ এর ১০%) + ৩.৫৩ (৭০.৫৯ এর ৫%) = ৭০.৫৯ টাকায় কিনতে হবে।

আর, বছিরুদ্দি শেখ যদি বিক্রির উপর ৫% উসুল দিয়ে তারপর ১০% লাভ করতে চায়, তাহলে রামবাবুর (৬০+৬.৬৭ (৬৬.৬৭ এর ১০%) + ৩.৫১ (৭০.১৮ এর ৫%)= ৭০.১৮ টাকায় কিনতে হবে। এখানে উসুল দেওয়ার পর বিক্রি দাঁড়ায় ৬৬.৬৭ টাকা।

আপনার ৬৯.৪৭ এর হিসাবটা বুঝলাম না।

সজল এর ছবি

বিক্রয় মূল্য = ক্রয়মূল্য(৬০) + বিক্রেতার নিজস্ব লাভ (ক্রয় মূল্যের ১০% = ৬) + নেপো'র খাজনা (মোট বিক্রয় মূল্যের ৫% = ৩.৪৭৩৬... ) = ৬৯.৪৭৩৬...

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কৌস্তুভ এর ছবি

এই তো, Onirudha Biswas, সজল আপনার হোমওয়ার্কটা দেখে দিয়েছেন। ১০-এ ঘ্যাচাং করে গোল্লা দিয়েছেন, না কত দিয়েছেন, তা উনিই বলতে পারবেন। দেঁতো হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

এতদিনে না একটা কাজের পোস্ট এলো! বালিকাভোলানো হাওয়াই মেঠাই পোস্ট দিয়ে দিয়ে বালিকামোহন হতে চেষ্টা করে করে ব্যর্থ নাকি! চিন্তিত
বালিকামোহন পোস্টের ভেতর নিয়মিত এরকম বিষয়ভিত্তিক পোস্টও চাই! হাসি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

বালিকাভোলানোর ইজারা তো আপনিই নিয়ে রেখেছেন ভাই, আমার আর প্রবন্ধ-পোস্ট ছাড়া গত্যন্তর কী? তবে বিষয়-আশয় নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা কিন্তু ভালো না... বিষয়-বিষে ক্রমেই নিমজ্জিত হয়ে যেতে হয়...

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

ফাঁকি গুলো বুঝলাম!!!!

সবকিছুর ভুক্তভোগী হল ক্রেতা-আমজনতা, আর সবসময়ের লাভবান হল ব্যবসায়ী!!!

লেখা খুব ভালো হয়েছে ভাইয়া, তুমি সবসময়ই গুছিয়ে চমৎকার লেখ!! চলুক


_____________________
Give Her Freedom!

কৌস্তুভ এর ছবি

ব্যবসায়ীরা তো লাভ করার জন্যই ব্যবসা খুলে বসেছে, দানছত্র তো খোলেনি। তবে লাভ করবার প্রকার-পদ্ধতিগুলো গোলমেলে হতে শুরু করলেই... মন খারাপ

নজ্জা পেলুম হাসি

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

না লাভ করবে তো অবশ্যই কৌস্তুভদা কিন্তু আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা আবার চড়ামূল্যে কেবলি লাভ করেন কী না তাই বলছিলাম, আমার মনে হয় লাভ শতকরা কত করবে তার একটা আইনত মার্জিন থাকা উচিৎ। ১০০% ২০০% লাভ করলে তো ক্রেতাসাধারণের মাথায় বাড়ি!!! মন খারাপ

যাহা সত্য তাহাতে লজ্জা কীসের!!! হাসি

অটঃ খোমাখাতার মত সচলও দেখছি প্রায়শই ভোল পাল্টাতে শুরু করেছে, তবে এবার একটা জিনিস ভালো হয়েছে তাহল মন্তব্য আশা করছি আর লাফ দিচ্ছে না কখনই। তবে একেবারে নতুন পেইজে না গিয়ে বর্তমান পোস্টে থেকেই পপ আপ উইন্ডোতে কাজটা সারা গেলে ভালো হত কীনা চিন্তা করছি!!!! দেঁতো হাসি


_____________________
Give Her Freedom!

রেজওয়ান এর ছবি

হ। এই ঝামেলায় কিছুদিন আগেই পড়ছি। ঢাকার বসুন্ধরা হাটের বছিরুদ্দির কাছ থিকা মোবাইল কিনলাম একটা সে কয় ২% বেশী দাও। আমি কইলাম জানতাম ভিসা কার্ডে বেশী নেয় না - সে কয় খাতির নাই সব মোবাইল বেপারী নাকি ২% লয় কার্ডে। ডেবিট কার্ড চলবে? - ২% দিয়া কথা কন। আমি কইলাম তাইলে খেলুম না - যাই এটিএম থিকা টাকা নিয়া আসি। সে কয় রোজার মাস তো, একটু পরই দোকান বন্ধ হইয়া যাইব - তাইলে কাউলকা আহেন। চিন্তা কইরা দেখলাম কাইলকা আইলে টেক্সি ভাড়া বেশী পড়ব। কইলাম আল্লাহ ভরসা। কিন্তু বাস্তব হইল আল্লাহ টাকাটা আমার পকেট থিকা নেপোরে দিয়া দিল।

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

ব্যাটারে ভিসা'র কাছে রিপোর্ট কইরা দেন...

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

আমি কয়েকদিন আগে মোবাইল কিনলাম তারা অবশ্য অতিরিক্ত ২% নেয় নাই। কোথাও কেনার আগে জিগায় নেই অতিরিক্ত চার্জ আছে নাকি! তবে নকিয়ার মোবাইলে সব জায়গায় দাম একই তো ২% অতিরিক্ত কার্ডে কাটলে সেইটা অবশ্যই কমপ্লেন করা উচিত।

---------------------
আমার ফ্লিকার

আয়নামতি এর ছবি

খামোখাই কিছু বুঝিনা বলাটা বোকামী হয়ে যাবে খাইছে সব বুঝেছি, খুব বুঝেছি রে দেঁতো হাসি ইয়ে, মায়ামী সৈকতে যেন কী হয়েছিলো চিন্তিত

অপছন্দনীয় এর ছবি

মায়ামি সৈকতে নতুন আর কী হবে আর পরিসংখ্যানবিদও বা নিজের কাজ বাদ দিয়ে নতুন কী করবে? কৌস্তুভ ওখানেও বরাবরের মত স্ট্যাটিস্টিক্স-ই মাপছিলো, এটা নিয়ে আবার কথা বলার কী আছে?

আয়নামতি এর ছবি

কৌস্ত্তভ যখন তাই করছিলেন আপনি তখন করছিলেনটা কী! চিন্তিত

কৌস্তুভ এর ছবি

হো হো হো

মায়ামী সৈকতে আবার কী হবে, কনফারেন্স-লেকচার-পোস্টার-ই হচ্ছিল - পিপিদা সাক্ষী!

অপছন্দনীয় এর ছবি

পিপিদা সম্মানিত এবং (সম্ভবত খানিকটা) বয়স্ক মানুষ, চোখের সামনে ছেলেছোকরাদের চিত্তচাঞ্চল্য দেখলেও কি উনি হাটে হাঁড়ি ভাঙবেন নাকি?

অপছন্দনীয় এর ছবি

আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলছিলাম, কবে এরকম বিচে বসে স্ট্যাটিস্টিক্স মাপার ভাগ্য হবে!

নিত্যানন্দ রায়  এর ছবি

হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

হাসি

The Reader এর ছবি

কস্কি মমিন!

কৌস্তুভ এর ছবি

খাইছে

সজল এর ছবি

ক্রেডিট কার্ডের উপরই চলি। ক্যাশে কিনলেও যেহেতু কম দাম রাখছে না, সুতরাং ঋণ করে ঘি খাওয়ার স্বর্গসুখ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করা কেন চোখ টিপি

নেপো'র হিসাবটা ভালো বুঝিয়েছেন চলুক । তবে পাটিগণিতের যে অংক দিয়ে শুরু করেছেন, তার বক্তব্য বুঝতে আমার বেশ সময় লেগেছে (যেমন কিসের উপর ১০% ইত্যাদি)। আর আমার তো রীতিমত ধরি X দিয়ে অংকটা করতে হলো খাইছে

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

অঙ্কটাতো দিব্যি সহজেই করে ওনাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন... হাসি

আম্মো তাই কার্ডের উপরেই চলি...

উদ্ভ্রান্ত পথিক এর ছবি

আমি কার্ড ফালায় দেওয়ার প্ল্যানে আছি! চাকরিতে ঢুইকা কার্ড নিছি। এখন কিছু হইলে কার্ড পাঞ্চ! আর মাস শেষে বিল দেইখা ইয়া হাবিবি করি ওঁয়া ওঁয়া

---------------------
আমার ফ্লিকার

অপছন্দনীয় এর ছবি

আমার এক এক্স কলিগ কাঁচি নিয়ে ব্যাঙ্কে গিয়ে ওখানকার লোকজনের সামনে নিজের কার্ড কেটে কুচি কুচি করে ফেলে দিয়ে এসেছিলেন। কয়েকদিন পরে আবার ওই ব্যাঙ্ক থেকে ফোন করে, "স্যার আপনার ক্রেডিট রেকর্ড তো ভালো, আপনি কি আরেকটা কার্ড নেবেন?" উনি উত্তরে বলেন ওনার আরো কিছু কার্ড আছে এবং সেগুলো কুচি কুচি করতে উনি বিমলানন্দ অনুভব করেন দেঁতো হাসি

সজল এর ছবি

আমিতো বুয়েট লাইফ থেকেই ডেবিট কার্ড নিয়া চলতাম। মাঝে মাঝেই রিকশা ভাড়া দিতে গিয়া ঝামেলায় পড়তাম, এটিএম বুথ খুঁজতে খুঁজতে মনে মনে রিকশাওয়ালারে গালি দিতাম, "ব্যাটা সাথে একটা কার্ড রিডার রাখবি না" দেঁতো হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

এই কারণেই আমার এখনো কোন ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড নাই জানেন? এটিএম কার্ড থাকাতেই আমি হাতে টেকাটুকা নিয়া বইয়ের দোকান, রেস্টুরেন্ট এইসবে ঢুকে পড়ি, আশেপাশে বন্ধুবান্ধব যে যা চায় বইটই কিনে দেই, সবাই মিলে খাওয়া দাওয়া করি। ক্রেডিট কার্ড থাকলে আর দেখা লাগবে না, বইয়ের দোকান সব সাফ হয়ে যাবে... আমার অ্যাকাউন্টে স্যালারি জমা পড়তে না পড়তেই গায়েব হয়ে যাবে ... মন খারাপ

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কৌস্তুভ এর ছবি

হ, আইতাছি, এটিএম-কার্ড-ধারিণী তোমার সাথে বইয়ের আর খাবারের দোকানে অভিযান করতে... দেঁতো হাসি

দিগন্ত মুদি এর ছবি

লেখাটা বেশ কাজে আসবে যে ভাই দেঁতো হাসি

আপনার লেখাগুলো একখানা বই করার প্রস্তাবও সবিনয়ে জানিয়ে গেলাম উত্তম জাঝা!

কৌস্তুভ এর ছবি

ডরাইলাম!

অথি এর ছবি

আমিও ক্রেডিট কার্ডের উপরই চলি, তারা তবু একটা কিছু ক‌্যাশ উপহার হিসেবে ব্যাক করে!!তবে ইনডিয়ান দুকানে সবজি কিনে ক‌্যাশ দেই, কারণ ওরা ক‌্যাশ দিলে কিছু কম রাখে। আর সব সময় খেয়াল রাখি কখ্ন কোন কার্ড কোথায় বেশি ক‌্যাশ ব্যাক দেয়, যেমন জুলাই ,আগষট, সেপটেমবর এই তিন মাস গ্যাস কিনলেই ডিসকভার ব্যাবহার করছি কারণ ওরা ৫% ক‌্যাশ ব্যাক করছে এই তিন মাস!!!

কৌস্তুভ এর ছবি

হাসি

অপছন্দনীয় এর ছবি

ক'খানা কার্ড নিয়ে ঘোরেন ভাই? অ্যাঁ

অথি এর ছবি

আমার কার্ড আছে ৫ খানা, একটা জরিপে দেখলাম আমেরিকার মানুষের গরপড়তায় কার্ড ১০ খানা করে! সময় মত বিল পরিশুধ করলে বেশি কার্ড থাকা খারাপ কিছু না।

Udash এর ছবি

চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

দ্রোহী এর ছবি

আমি হর্ষবর্ধন-গোবর্ধন সিস্টেমের লোক।

ছয় মাস পর পর ভাল অফার পেলে জেস্টারকার্ড থেকে ভিজা কার্ডে অথবা ভিজা থেকে জেস্টারকার্ডে পুরো ব্যালান্স ট্রান্সফার করি।

হো হো হো

তারাপ কোয়াস এর ছবি


love the life you live. live the life you love.

অপছন্দনীয় এর ছবি

মনে পড়ে গেলো দেঁতো হাসি আমার পরিচিত এক ব্যক্তি ছিলেন, বাংলাদেশে, উনি "বেওসা" করতেন। ব্যবসার অন্যতম সমস্যা, মূলধন কালেকশনটা করে নিতেন ক্রেডিট কার্ড থেকে। কোন কোন ব্যাঙ্ক যেন বিনা সুদে ক্যাশ অ্যাডভান্সের সুবিধা দিয়েছিলো, উনি সেইগুলোর সবক'টা একটা করে জোগাড় করেছিলেন এবং বিল সাইকেল সেট করেছিলেন এমনভাবে যে প্রথমটার পেমেন্ট ডেডলাইন এক তারিখে, দ্বিতীয়টার দশ, তৃতীয়টার কুড়ি এরকম। এক নম্বর দিয়ে অ্যাডভান্স নিয়ে "বেওসা", দুই নম্বর দিয়ে অ্যাডভান্স তুলে এক নম্বরের দেনা শোধ, তিন নম্বর দিয়ে দুই নম্বরের শোধ আবার এক নম্বর দিয়ে তিন নম্বরেরটা শোধ...

দেঁতো হাসি

তারাপ কোয়াস এর ছবি

টাকা পয়সা ভালু ভাই, তাই লিখাও ভালু লাগছে। উত্তম জাঝা!


love the life you live. live the life you love.

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

ফরিদ এর ছবি

প্লাস্টিক মানি নিয়ে চমৎকার আলোচনা পেলাম বহুদিন পরে। এখানে মোটামুটি সবাইই ক্রেতা, তাই বিক্রেতা হিসেবে দু’লাইন আমি যোগ করি।
রামবাবু আর বছিরুদ্দি শেখের মাঝখানের লেনদেনের মাঝে জেস্টারকার্ডের মাধ্যমে ভোজবাজির মত টাকা চালাচালি হচ্ছে, সেখানে ভাগের বখরাটা সবসময় এক না। দু-রকম উদাহরণ দিচ্ছি।

আমার বইমেলায় পেপ্যালের মাধ্যমে ট্যাকা কাটি। এর মধ্যে আমাকে ফী দেয়া লাগে বেচাপ্রতি ৩০ সেন্ট আর ২.৯%। আপনারা নিষ্ঠুরতা করে সস্তাদরের একপিস বই কিনলে দেখা যায় আমার খর্চা ১০% এর ওপরে পড়ে যায়। কিন্তু কোন পুস্তকপ্রেমিক অনলাইন বইয়ের বিশাল সমারোহ দেখে বেহুঁশের মত রে-রে করে অর্ডার করলে তখন তেমন গায়ে লাগার মত পড়ে না। আমার মত শখের বিক্রেতা যার মাসে হালি দুহালির বেশী ক্রেতা হয়না তার থেকে যেমন ২.৯% কাটছে, কিন্তু বছিরুদ্দিন শেখের কাছে আবার সে তোয়াজ করে ১.৪% কেটেই সালাম করে চলে আসবে। কারণ শেখ সাহেব দিনেই হয়ত কয়েকশো খরিদ্দারের পকেট কাটেন।

তাই ফ্ল্যাট ৫% এর হিসেবটা সবসময় খাটে না। একই সাথে খেয়াল রাখতে হবে, এই কার্ড ব্যাবহারের ফলে আপনার ট্যাকের জোর অনেক বেড়ে যাচ্ছে। আপনার দেশী টাকা দিয়েই আপনি পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের যেকোন পণ্য কিনতে পারছেন। এই বিশাল আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক নিরাপদে পরিচালনার খরচ কম না। এছাড়া নাইজেরিয়ার বিভিন্ন রাজপরিবারের একমাত্র সন্তানদের সম্পত্তির বিষয়গুলোও নজর দিতে হয়।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত অনলাইনে টাকা কাটার প্রতিষ্ঠান ভিজার জন্য ৫% আর দিশি ব্যাঙ্ক এটিএম এর জন্য ১.৮% করে কাটছে। আর যেমন আরেক মন্তব্যে উঠে এসেছে, গুগল থেকে শুরু করে গ্রামীণ পর্যন্ত সব্বাই এখন টাকা চালাচালির ধান্দায় ঢুকার জন্য হন্যে হয়ে পড়েছে। আমার কাছে স্কয়ারের উদ্যোগ বেশ ভাল লেগেছে।

কৌস্তুভ এর ছবি

বিক্রেতার দিকের গোপন খাইছে তথ্যের জন্য ধন্যবাদ।

৫% টা সহজ করে বোঝাবার জন্য। ফী যেরকম জটিল ভাবে লাফঝাঁপ করে, তা বুঝতে আমারই মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়... আপনি বিক্রেতা তাই আপনাকে সেসব মুখস্ত করে রাখতেই হয় দেঁতো হাসি

অপছন্দনীয় এর ছবি

এছাড়া নাইজেরিয়ার বিভিন্ন রাজপরিবারের একমাত্র সন্তানদের সম্পত্তির বিষয়গুলোও নজর দিতে হয়।

ওনারা তো প্রায়ই আমাকে সম্পত্তির ভাগ নেয়ার জন্য বলে থাকেন। নেহায়েৎ সাংসারিক বাস্তববুদ্ধি নেই, নইলে কবেই তো কত্ত বড়লোক হয়ে যেতে পারতাম!

কৌস্তুভ এর ছবি

হো হো হো

মামুন মিয়া এর ছবি

ধন্যবাদ বিষয়টি আমাদের সামনে পরিষ্কার করার জন্য। আমার প্রশ্ন হচ্ছে - হোটেল সালাদিয়া-ইটাদিয়ার মত রেস্টুরেন্টের মালিকরা কি এত কিছুর হিসাব মাথায় রেখে মেনুর দাম নির্ধারণ করেন? ধরেন আমি একটা এক ডলারের ম্যাকচিকেন কিনলাম। সেক্ষেত্রে কি ম্যাকডোনাল্ডের মালিক আগে থেকেই জানে যে, ব্যাঙ্ক অফ কচুবাগান, নূরজাহান ব্যাঙ্ক, আর জেস্টারকার্ড কে কত পার্সেন্ট নিয়ে যাচ্ছে? আপনার উপরের পার্সেন্ট হিসাব অনুযায়ী, ম্যাকডোনাল্ডের মালিকের অই ম্যাকচিকেনের মুনাফাসহ বিক্রয়মূল্য হতে হবে ৯৫ সেন্ট। তাই নয় কি?

কৌস্তুভ এর ছবি

প্রথমেই তো মালিককে একটা ধারণা রাখতে হবে, একটা ম্যাকচিকেনের উৎপাদনমূল্য গড়ে কত হচ্ছে, এবং তার পিছনে ঘরভাড়া-বিজলি-ইনসিওরেন্স ইত্যাদি খরচা কত, মোটমাট কত ব্যয়। আর কার্ডে পেমেন্ট নিলে ফী-বাবদ খরচ কত হবে, সেটা মোটাদাগে জানা মালিকের পক্ষে খুব কঠিন না। সেটা ৫-১০% এর বেশি হয় না সচরাচর। তাই ওনারা সাধারণত ২০-৩০-৫০% এরকম একটা লাভের হার যদি ধরে রাখেন, তাহলে কিন্তু ভালোরকমই পুষিয়ে যাবে। আর শুনতে হয়ত অবাক লাগতে পারে, কিন্তু এরকম একটা লাভের হারই সচরাচর রাখা হয়, যদিবা বেশি হয় তবু কম না।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

এতো খোলাসা করে জানতাম না। বটে। আমি ক্রেডিট কার্ডই বেশি ব্যবহার করি, টাকা বহন করতে চরম বিরক্তি লাগে এবং কেবল হারাই। তবে বাসায় এসে নেটে শোধ করে দিই, সুদ আসে না। তবুও তো ...

কৌস্তুভ এর ছবি

প্লাস্টিক মানি ব্যবহার করা আসলেই সুবিধাজনক। তাই তো...

ফরিদ এর ছবি

জেস্টারকার্ড তাদের কোয়েবসাইটে নিজেদের কাজকম্মের বিষয়ে অফিসিয়াল বিবৃতি দিয়েছে। আগ্রহীরা সম্পুর্ণ প্রক্রিয়াটি ঘেঁটে দেখতে পারেন।

http://www.mastercard.com/us/company/en/docs/The_Anatomy_of_a_Transaction_031309.pdf

কৌস্তুভ এর ছবি

লিঙ্কের জন্য ধন্যবাদ। তবে এটায় টাকা পাওয়ার প্রসেসটাতে কোথায় কোথায় কী এবং কেমন ফী কাটা হয় সে নিয়ে কিছু কওয়া হয় নাই কিন্তু... চোখ টিপি

ফরিদ এর ছবি

যা বলতে চাইছিলাম তা হল, রামবাবুর টাকা শেখের ট্যাঁকে নিরাপদে ঢোকাতে নেপোর খাটুনি একেবারে কম না। এই যে ১০-১৫ টা ধাপ দেখা গেল, এর যেকোনোটি পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে ঘটতে পারে। সবগুলো নিরাপদে সুষ্ঠুভাবে হবার পরেই না নেপো তার ১.৫ থেকে ৫ ভাগ বখরা পায়।

এর ভেতরের ভাগের বখরার নিজেদের ভেতরে ফীর বিলিবন্টন আমরা বাইরের জনতা জানব কেম্বে? গোমর তো সেটুকুই।

কল্যাণF এর ছবি

এহহহ, ক্যাশ দিয়ে কিনাকাটা করে চরম বেকুবি করতেছি তো? ঘাড়ের উপর খামাখা ক্রেডিট ওলাদের চাপ নিয়া ঘুরতেছি। কি বিচিত্র।

কৌস্তুভ এর ছবি

বড়ই বিচিত্র হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

আপডেটঃ

আমেরিকায় ফিনান্সিয়াল রিফর্ম বিলে পরবর্তী একটা সংযুক্তির ফলে ডেবিট কার্ডের ফী-তে একটা ২১ সেন্টের উর্ধ্বসীমা বসানো হয়েছে, যেখানে আগে গড়ে ৪৪ সেন্ট করে চার্জ করা হত।

সেই সীমাটাকে এক বছর পিছিয়ে দেওয়া নিয়ে আবার সেনেটে বিল এসেছিল, যার পেছনে ব্যাঙ্কগুলো মিলিয়ন ডলার খরচা করেছিল লবিং-এ। কিন্তু সেটা পাশ হয় নি, ফলে ওই সীমাই বজায় থাকবে।

এর ফলে সামনের বছর থেকে ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকা নতুন ফী চালু করছে গ্রাহকদের উপর - যারা কার্ডে কেনাকাটা করবেন তাঁদের থেকে মাসে ৫ ডলার ফী কাটা হবে।

কিন্তু কথা হল, এর ফলে কিন্তু বিক্রেতারা দাম কমাবেন এমনটা না, আবার কার্ডধারীরা বেশি টাকাও দেবেন। অনেকে দেখছি ফেসবুকে 'বয়কট ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকা' ক্যাম্পেন চালু করছেন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।