অমিতাভ রেজার নাটক

কনফুসিয়াস এর ছবি
লিখেছেন কনফুসিয়াস (তারিখ: শুক্র, ০৪/১২/২০০৯ - ১২:১৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাংলাদেশি নাটকে পরিচালকের নাম দেখে নাটক বাছাই করার অভ্যেসের শুরু মোস্তফা সারওয়ার ফারুকীর কল্যাণে। কিন্তু সেই ঊষা লগ্ন এখন গত-প্রায়, এখনও তার নাটক দেখি, কেবল যদি পর্যাপ্ত সময় থাকে হাতে। তারপরেও কিছুটা একঘেয়েমিতে ভুগি, ফারুকীর নাটকের পাত্র-পাত্রীরা সবাইই কেন জানি খুব উচ্চ স্বরে কথা বলে। আর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অবিরাম ঝগড়া করতে থাকে কেউ কেউ, এবং নাটকে মোবাইলের ব্যবহার দৃষ্টিকটু রকমের বেশি, বাংলাদেশে মোবাইলের প্রথম যুগের মত অনেকটা। যেন সবাইই গত পরশু মোবাইল ফোন কিনে গতকাল সারাদিন ব্যাটারি চার্জ দিয়ে আজ নাটকের শ্যুটিং করতে চলে এসেছে।

তারপরেও নাটক দেখার অভ্যাস এখনও পাকাপোক্ত আছে অল্প কজন পরিচালকের গুণে, তাঁদের একজন অমিতাভ রেজা।

সম্ভবত গত ঈদেই দেখেছিলাম ইকুয়াল টু। ছিমছাম একটা নাটক, আরজে নওশীন ছিলো অভিনয়ে, নাটকেও আরজেরই ভুমিকা তার। গল্পটা চমৎকার, এবং দেখতে দেখতে বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্নালু সময়টায় ফিরে যাচ্ছিলাম।

অবশ্য, অমিতাভ রেজার ভক্ত হয়েছি তারও আগে, গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের গল্প অবলম্বনে বানানো নাটক 'একটা ফোন করা যাবে প্লিজ?' দেখার সময়। (অবশ্য ধন্যবাদ প্রাপ্য কমরেড ইউটিউব, তোমাকে লালসালাম।) হাসি

মার্কেজের মূল গল্পটা বহুবার পড়া। আমার খুবই 'অপ্রিয়' গল্প এটা। হুমায়ুন আজাদের উপন্যাসগুলোর কিছু কিছু লাইন আছে এমন, পড়ার সময় মনের ওপর খুব চাপ পড়ে, হাসফাঁস লাগে, দম বন্ধ করা একটা অনুভুতি কাজ করতে থাকে মনে। মার্কেজের, বিশেষ করে এই গল্পটা তেমনি। যতক্ষণ পড়তে থাকি চারপাশের সবকিছুর ওপর অবিশ্বাস চলে আসে। প্রকৃতির নিষ্ঠুরতায় হত বিহবল হয়ে পড়তে হয়। গল্পটা এরকম- রাতের অন্ধকারে পথ ভুল করে বসে একটা মেয়ে। বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে যে বাসে চড়ে বসে, সেটা ছিলো আসলে একটা মানসিক হাসপাতালের বাস। ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ে মেয়েটি, সকালে যখন উঠে, দেখতে পায়, হাসপাতালে নেমেছে সে, ডাক্তার ও নার্স পরিবেষ্টিত, এবং সবাই ভাবছে, সে-ও একজন মানসিক রোগী। মেয়েটা কোনভাবেই বিশ্বাস করাতে পারে না যে সে রোগী নয়, বারবার শুধু সে তার স্বামীকে ফোন করতে চায়, শুধুই আকুতি করে, একটা ফোন করা যাবে প্লিজ?

মার্কেজের মূল গল্পটা শেষ হয় বুকের ভেতরটা একদম দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে। গল্পে আছে, মেয়েটা ওই হাসপাতালেই থেকে যায় চিরকাল, ওর স্বামী বহুদিন পরে ওকে খুঁজে পায় সেখানে। কিন্তু কে জানে কার উপর অভিমানে সে আর ফিরে আসতে চায় না, ওখানেই থেকে যায় বাকি জীবন।

অমিতাভ রেজা গল্পটাকে নাটক বানানোর সময় আমাদের দেশীয় প্রেক্ষাপট দেখিয়েছেন। মেয়েটির ভূমিকায় ছিল সম্ভবত তাঁরই স্ত্রী, জেনি। ডাক্তার ছিলেন ইরেশ যাকের। প্রত্যেকের অভিনয়ই অনবদ্য ছিলো। প্রথমবার নাটকটি দেখার সময় মার্কেজের গল্প পড়ার সময়কার চাপটা টের পাচ্ছিলাম বেশ। নাটকের শেষটুকু দেখতে চাইছিলাম না একদম, জানিই তো কী হবে, আবারও মন খারাপে ডুবে যাবো। কিন্তু দেখি, অমিতাভ রেজা কাহিনি বদলেছেন ওখানে, নাটকের মেয়েটি শেষমেষ খুঁজে পায় ওর প্রেমিককে, এবং নাটকের শেষ পরিণতি হয় মিলনাত্মক।

আমি রীতিমত খুশি হয়ে গেছিলাম এই বদলে, মনে মনেই অনেক ধন্যবাদ জানিয়েছি তাঁকে, মুগ্ধ হয়েছি তাঁর এডাপশানের মুন্সীয়ানায়।
*

গতকাল দেখলাম তাঁর বানানো এবারের ঈদের নাটক, এ সময়
নাটকের মূল গল্পটি নেয়া হয়েছে আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের গল্প 'মিলির হাতে স্টেনগান' থেকে। আশ্চর্য এ-ই যে, এ গল্পটিও আমার বহু বহুবার পড়া। আমার সবচেয়ে প্রিয় গল্পগুলোর একটি এটি। গল্প হিসেবে এটি অসম্ভব শক্তিশালী। কিছু কিছু গল্পের প্লট আছে, যেগুলো বেয়াড়া ঘোড়ার মতন, কেবলই তেড়ে ফুঁড়ে আসে, এগুলোকে লাগাম পড়ানো শক্ত কাজ। ইলিয়াস ছাড়া আর কেউ এই গল্পটি সামলাতে পারতেন কিনা, সে নিয়ে আমার ব্যাপক সন্দেহ।
তো, এই অসম্ভব প্রিয় গল্পের নাট্যরূপ দেখতে পাবো আরেকজন প্রিয় পরিচালকের হাতে, এই আশা নিয়েই নাটক দেখতে বসা।
নাটক খারাপ লাগেনি, নাটক হিসেবে এটি ভালই হয়েছে। কিন্তু গল্পটা জানা থাকায় খানিকটা হতাশ হয়েছি আমি।

গল্পটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালীন সময়ের। তরুণ যোদ্ধারা ফিরে এসে সবাই ঠিক পথে হাঁটেননি। কেউ কেউ বেছে নিয়েছিলেন অন্ধকার জগত, গল্পের মূলভাবটা সেরকমই। কিন্তু নাটকে, এটাকে একদম এই সময়ের গল্প বানিয়ে ফেলা হয়েছে। নাটকের অন্যতম মূল চরিত্র আব্বাস পাগলা। এই চরিত্রটি অবিকল ছিল অবশ্য, এবং বলা চলে গল্প আর নাটকের একমাত্র যোগসূত্রও ছিলো আব্বাস পাগলাই। গল্পে অন্ধাকার জগতের ব্যাপারটা ছিলো আবছায়ার মত, তার ফলাফল অবশ্য ছিল সামনেই। নাটকের প্রয়োজনেই হয়তো আবছায়াগুলোকে শরীর দেয়া হয়েছে, নতুন চরিত্র আনা হয়েছে অনেক, স্পষ্ট হয়েছে মিলির ভাই রানার কর্মকান্ড।

আমার অবশ্য মনে হয়েছে, এটার দরকার ছিলো না। এইটুকু স্পষ্টতা না দেখালেও চলতো। মূল গল্পকে অনুসরণ করে নাটকটা নির্মিত হলে আরও বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠত সেটা।

মিলির হাতে স্টেনগান গল্পের আসল অংশ হচ্ছে এর শেষটুকু। যেখানে দেখায়, আব্বাস পাগলা ভাল হয়ে যায় ঠিকই, কিন্তু তাঁর কষ্টটুকু পাগলামি হয়ে ঢুকে পড়ে মিলির মাথায়, সে তখন ছাদের উপরে উঠে গিয়ে আকাশে উড়াল দেবার জন্যে পা ঝাপটায়।

আমার তীব্র আগ্রহ হচ্ছিলো, এটাকে চিত্রায়ন করা হয় কীভাবে তা দেখার। নাটকে ইলিয়াসের লেখার এই অনুভুতি নিয়ে আসা সহজ নয়। তো, এ সময় নাটকটির শেষটুকু দেখেও আবারও খানিকটা হতাশই হতে হলো। ওরকম আবেদন আসেনি। নাটকটা হয়ে গেছে বিপথগামী কোন যুবকের বোনের গল্প, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের টানাপোড়া সেখানে অনুপস্থিত।

আগের বার খুশি হয়েছিলাম, কিন্তু এইবার, এই বদলে মন খারাপ হলো।
জানি সম্ভব নয়, তবু যদি পারতাম, আমি অমিতাভ রেজাকেই অনুরোধ করতাম নাটকটা আরেকবার বানাতে, আর কাউকে নয়।


মন্তব্য

মুস্তাফিজ এর ছবি

এবং নাটকে মোবাইলের ব্যবহার দৃষ্টিকটু রকমের বেশি

নাটকে মোবাইলের ব্যবহার ব্যবসায়ীক। নাট্যপরিচালক এজন্য টাকা পায়।
.........................................
I think what I think because that's how I am. You think what you think because that's how you are.

...........................
Every Picture Tells a Story

কনফুসিয়াস এর ছবি

তাই নাকি, এটা জানা ছিলো না। তার মানে বলতেই হবে পরিচালকদের মধ্যে ফারুকীই সবচে পয়সাওয়ালা। হাসি

-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

হিমু এর ছবি

আচ্ছা, আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের গল্পগুলি কি ইংরেজিতে অনূদিত হয়েছে? আমার মনে হয় তাঁর গল্পগুলির ঝরঝরে অনুবাদ সারা পৃথিবীর সামনে আসা উচিত। বাংলা ছোটগল্প নিয়ে শুধু বাঙালি একা একা মুগ্ধতা লালন করে চলছে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

কনফুসিয়াস এর ছবি

আবারও দীর্ঘশ্বাস হিমু ভাই। এই দুঃখ আমারও।

-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অমিতাভের কাজ ভালো লাগে... আপনাকে অনুরোধ করবো মেজবাউর রহমান সুমনের কিছু কাজ দেখতে। ভালো বানায়।
অমিতাভের সবচেয়ে যেটা ভালো লাগে, ওর পড়াশোনাটা প্রচুর। ও পড়ে আর দেখে। এটা অনেকেই করে না।

এই নাটকটা দেখা হয় নাই এবার। তাই কিছু বলতে পারছি না।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

কনফুসিয়াস এর ছবি

মেজবাউর রহমান সুমনের কাজ দেখিনি। এখানে তো ইউটিউবই ভরসা, তবু দুয়েকটা নাটকের নাম বলেন, খুঁজে দেখি পাই কিনা।

-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ওর নাটকের নামগুলা সব বড় বড় হয়, মনে থাকেনা। এবার ঈদে গেছে 'জোৎস্না নদী অথবা রশীদের কিছু কল্পদৃশ্য' এর আগের ঈদে গেছে সুনীলের গল্পাবলম্বনে 'গরম ভাত ও ভূতের গল্প'

সুমন কিন্তু মেঘদলের... গিটারিস্ট, গানও গায়...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হিমু এর ছবি

সুনীলের "গরম ভাত ও ভূতের গল্প" আমি সাদাকালো সিনেমাটা দেখেছি। এক কথায় দারুণ!



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

রাফি এর ছবি

নজরুল ভাই কি "গরম ভাত অথবা নিছক ভূতের গল্প" এর কথা বলছেন। এটা তো অনিমেষ আইচ এর নির্মাণ বলে জানতাম।
---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ধূরো, গুলায়া ফেলছি... খাড়ান, সুমনের নাটকের আস্ত লিস্ট দিতেছি...

অনিমেষও খুব ভালো বানায়... আর আতিক ভাই হইলো আমার সবচেয়ে পছন্দের... হালায় একটা মাল...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ফাহিম হাসান এর ছবি

কেউ কি একটু কষ্ট করে লিংক দিতে পারেন?

yokel এর ছবি

ভাইয়া আপনার সাজেশনে জোছনা, নদী অথবা রশীদের কিছু কল্পদৃশ্য নাটকটি দেখলাম। ক্যামেরার কাজ, এডিটিং, সবকিছু মিলিয়ে এত অসাধারণ লাগল, কি আর বলব- পুরো নাটকটাই আমার কাছে কল্পদৃশ্য মনে হল, এত দারুণ মেকিং। আপনাকে থ্যাঙ্কস। লিস্টের অপেক্ষায় থাকলাম।

ভ্রম এর ছবি

গত ঈদে মেজবাউর রহমান সুমনের "তারপরও আঙ্গুরলতা নন্দকে ভালোবাসে" দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম... দেখতে পারেন। আমার জয়া আহসানকে ভীষন ভালো লাগে সেজন্যেও নাটকটা এতো ভালো লেগে থাকতে পারে।
আমারনাটক ডট কমে আছে মনে হয়।

শেখ নজরুল এর ছবি

আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত। নাটকে তারুন্য সৃষ্টির জন্য ফারুকীর একটি বিশেষ অবস্থান আছে। তবে তাতে একঘেয়েমি ভর করেছে। তবে অমিতাভ রেজার মেধা প্রশংসনীয়। ধন্যবাদ আপনাকে।

শেখ নজরুল

শেখ নজরুল

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

ফারকী'কে তাঁর অনেক গুণের কারণে ভাল লাগে, কিন্তু নাটক নির্মতা হিসেবে না। আমার মনে হয় ছবি, ভাস্কর্য, সিনেমা, নাটক সবই খুব স্পর্শকাতর শিল্প। সামান্য কারণেই এসব শিল্প তার সৌন্দর্য হারায়। এরকম একটা শিল্প সৃস্টির চাইতে একা একটা পিরামিড বানানো সোজা। আমার মনে হয় এমন শিল্পকে অনেকেই বাজারের সস্তা পণ্য বানিয়েছেন...(একান্তই ব্যক্তিগত মতামত)

আমার কেন জানি পড়া গল্পের নাট্য/সিনেমা রূপ দেখতে ভালো লাগেনা। গল্প পড়ে মনে যে ছবি আঁকি তা কখনোই নাটক/সিনেমার সঙ্গে মেলেনা বলে।

শেষ মন্তব্যটি আপনার লেখাকে উদ্দেশ্য করে: লেখাটি অনেক ভালো লেগেছে। হাসি
____________________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ !

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কনফুসিয়াস এর ছবি

পড়া গল্পের নাট্য/সিনেমা রূপ দেখতে আমার মন্দ লাগে না, তবে একটু সাবধানে থাকি। গল্পে অনেক পরিবর্তন আসবে, এটা মেনে নিয়েই দেখি।
এই নাটক দেখার আগেও প্রস্তুতি ছিলো, তবু মনে হলো, নাটকের মূল থিমটাই যেন বদলে গেলো একটু, এ কারণে হতাশ হয়েছি।

আপনার মন্তব্যের জন্যে অনেক ধন্যবাদ।

-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

রাফি এর ছবি

গত কয়েক বছর ধরে নাটকের অভিনেতা অভিনেত্রীদের চেয়ে নির্মাতা বেশি মনোযোগ দাবি করছেন। আমি নিজেও ইদানিং নাটক দেখতে বসার আগে নির্মাতার নামটা দেখে বসি।
ঈদে সাধারণত আমি প্রচুর নাটক বা নাটকাংশ দেখি, এই নাটকটা চোখ এড়িয়ে গেছে। তবে নজরুল ভাই এর সাথে সুর মিলিয়ে বলতে চাই মেজবাউর রহমান সুমন কিন্তু উল্লেখযোগ্য একজন। নূরুল আলম আতিক নামে আছেন একজন, উনার কাজও ভাল লাগে। অনিমেষ আইচ তো অবশ্যই।

লেখা ভাল হয়েছে; অন্তত লেখাটার জন্য জানলাম যে "একটা ফোন করা যাবে প্লীজ" মার্কেজের গল্প নিয়ে বানানো। আর "এ সময়" দেখব সময় করে..

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

---------------------------------------
আমি সব দেবতারে ছেড়ে
আমার প্রাণের কাছে চলে আসি,
বলি আমি এই হৃদয়েরে;
সে কেন জলের মতন ঘুরে ঘুরে একা কথা কয়!

কনফুসিয়াস এর ছবি

মেজবাউর রহমান সুমন বাদে বাকিদের নাটক দেখেছি, আমারও ভাল লেগেছে।

পোস্টে বলতে ভুলে গেছি, এ সময় নাটকটায় আব্বাস পাগলার চরিত্রে যে অভিনয় করেছে, জাস্ট অসাধারণ। এই অভিনয় দেখার জন্যেও নাটকটা আরেকবার দেখাই যায়।

-----------------------------------
আমার জানলা দিয়ে একটু খানি আকাশ দেখা যায়-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

ভ্রম এর ছবি

শুরু দিকে অবশ্য নাট্যনির্মাতা অমিতাভ রেজার চেয়ে বিজ্ঞাপন নির্মাতা অমিতাভ রেজার কাজ বেশি ভালো লাগতো। তবে "একটা ফোন করা যাবে প্লিজ" দেখার পর থেকে তার নাটকও খুব ভালো লাগে।
এখন "ছবিয়াল পরিবার" এর কাজ খুব বিরক্ত লাগে। তবে মনে করি "রঙ মিস্ত্রির দল" আস্তে আস্তে অনেক ভালো করছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

ঈদে গ্রামের বাড়িতে থাকায় কোন নাটকই দেখা হয়নি। অমিতাভ রেজার এই নাটকটির ব্যপারে একটি জাতীয় দৈনিকে পড়েছিলাম। মিস হয়ে গেছে।
ঈদের তৃতীয় দিন দেশ টিভিতে অমিতাভ রেজার আরো একটি নাটক প্রচার হবার কথা। নাটকের নাম 'মায়েশা'। পত্রিকায় যতটুকু পড়েছিলাম তাতে মনে হয়েছিল নাটকটির গল্প অনেক শক্তিশালি। এটাও আমার দেখা হয়নি। আন্তর্জালে খুঁজে দেখি মেলে কিনা।
আলোচনা ভালো লাগলো।

---- মনজুর এলাহী ----

তাহসিন আহমেদ গালিব এর ছবি

"এ সময়" দেখা হয়েছে। বেশ ভাল ছিল...
আপনার লেখা পড়ে কিছু ব্যাপারে নতুন করে ভাবতে শুরু করলাম।

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

আমি আগে "ফোন করা যাবে, প্লিজ ?? " নাটকটা দেখি। পরে পড়েছিলাম মার্কেজের গল্পটা। কনফু ভাই ঠিকই বলেছেন। মার্কেজের গল্পটা মনের উপর ক্যামন একটা চাপ সৃষ্টি করে। ... নাটক দেখতে বসে অবশ্য ওটা বোধ হয়নি।

আবার "মিলির হাতে স্টেনগান" গল্পটা একটু অন্যরকম। ধীরে শুরু হয়ে গল্পটা হঠাৎ করেই গতি বাড়িয়ে দিয়েছিলো। ...'এ সময়' দেখা হয়নি।

সমস্যা হলো ফারুকীর নাটকের নামটা শুনে তারপর দেখতে বসতে হয়। মোবাইল ফোন- পরকীয়া প্রেম- অস্থির যুব সমাজ নিয়ে নাটক করার যেই খাপছাড়া ধারা তিনি গড়ে তুলেছেন; সেটা আমার সহ্য হয় না। 'চড়ুইভাতি' / 'স্পার্টাকাস' এর মতো নাটক আসলে তার 'ফ্লুক'- ঐটাই আমার ধারণা।

... অমিতাভ রেজাকেই বরং ভালো লাগে। অনিমেষ আইচও দারুণ।

_________________________________________

সেরিওজা

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথমদিকের কথা গুলোর সাথে একমত...
অমিতাভ রেজার পরিচালনা ভাল...

"ইকুয়াল টু" নাটকটা দেখা হয়েছে.. তাই এটা সম্পর্কে কিছু বলতে পারব...
নাটকের সবই ঠিক আছে কিন্তু বিয়ের আগে একসাথে থাকাটা কেন যেন দৃষ্টি কটু লাগল.....

নাটক এখন আর আগের মত দেখা হয়না...
কেন হয়না তার অনেক কারন....

(জয়িতা)

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

হুউম। বিজ্ঞাপনের চে' নাটকনির্মাতা হিসেবে অমিতাভ রেজা অপেক্ষাকৃত সফল বলতে হবে। হাসি

___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

বস্‌, ফাঁকি মার্ছেন।

কনফুসিয়াস এর ছবি
দ্রোহী এর ছবি

নাটক দেখি না বহু বছর। টিভি দেখতে ভালো লাগে না।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

এঁদের নাটক খ্রাপ না। তবে বেশিক্ষণ মাথায় থাকে না। আর ফারুকির পাছায় একখান লাথি দিবার মঞ্চায়।

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখা পছন্দ হয়েছে।
রিভিউ এর প্যাটার্নটা হচ্ছে লেখকের মতে কি হতে পারত, কেমন হয়েছে এই রকম। শুধু কেমন হয়েছে নিয়ে নয় ।
তবে গল্প জানা থাকলে এই ব্যাপার বোধহয় প্রায় সবার হয়।
কারণ আমরা নিজের মনেই দৃশ্য গুলো কল্পনা করে নেই ।

ফারুকীর মুভির ব্যাপারে মন্তব্য কি?

বোহেমিয়ান

নাদিম এর ছবি

আপনারা যাই বলেন মোস্তফা ফারুকির নাটক আমার খুব ভাল লাগে।আমি যদি তার নাটকে অভিনয় করতে
পারতাম,আমার খুব ইচ্ছা দোয়া করবেন আমার জন্য।

অতিথি লেখক এর ছবি

অমিতাভ রেজা নাটকের একটা প্যাটার্ন থাকে। একটা প্রথা ভাঙার প্রচেষ্টা। পরিচিত কোন একটা লেখার নিয়ে নিরীক্ষা করার প্রয়াশ। এর "একটা ফোন করা যাবে, প্লিজ" নাটক দেখে পুরা ভক্ত। পরেরটা আর দেখা হয় নাই।
ফারুকীর কথা বলে লাভ নাই। অযথাই চিল্লাচিল্লার ৪০ মিনিট। মন খারাপ

- মু্ক্ত বয়ান

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।