ক্ষয়িষ্ণু অগ্রজের জন্য বিষণ্ন অক্ষর

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: বুধ, ০১/১০/২০০৮ - ৩:৫২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কবি শোয়েব শাদাবকবি শোয়েব শাদাব
তখনও তার একটা অক্ষরও পড়িনি। দেখিওনি তাকে। তখনই তাকে আমি স্বপ্নে দেখলাম। জটাজুট চেহারার সন্ন্যাসী বটগাছের গোড়ায় পায়ে শেকল দিয়ে বাঁধা। আমাকে দেখেই এক টানে গাছ থেকে শেকল ছিঁড়ে আমার গলায় ফাঁস লাগিয়ে উল্টোমুখে হাঁটতে থাকে। শেকলের এক মাথা তার পায়ে তালা দেয়া। এক মাথায় প্যাঁচানো আমার গলা। আমাকে হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে ধানক্ষেত- বিল- হাওর- পাহাড় পার হয়ে সে হাঁটে আর বিড়বিড় করে- আয় তোরে কবিতা শেখাই

কবি শোয়েব শাদাব। আমাদের কাছে ক্ষয়ের মূর্তিমান আতঙ্ক কবি কিশওয়ার ইবনে দিলওয়ার মুখস্থ করিয়ে ফেলেছিল শোয়েব শাদাবের কাহিনী। কবিতার আলাপে কিশওয়ার ক্ষেপে উঠলেই চলে আসতো শোয়েব শাদাবের নাম- আশির উজ্জ্বলতম কবি কিন্তু বহুদিন থেকে শেকলবন্দী

কবিদের জেলখাটার কাহিনী শুনে অভ্যস্ত আমাদের কানে পায়ে শেকল বাঁধা কবি আলাদা এক মাত্রা তৈরি করে। কেন তাকে বেঁধে রাখা হয়। সে কী করে?

এসব উত্তর কিশওয়ারের কাছে নেই। নব্বই সালেই কিশওয়ারের মুখে শুনেছি বহুদিন তার কোনো খবর জানে না কেউ। আর কিশওয়ারের নিজের খবরইতো তখন অন্যকে নিতে হয়

আর কেউই জানে না শোয়েবের খবর। তাকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় এই খবরটাই ঘুরে ফিরে সবাই সবাইকে দেয়। শোয়েবের লেখার হদিসও জানে না কেউ। তার বই বেরিয়েছে জানে কিন্তু কোথায় সে বই তার কোনো ঠিকানা জানে না কেউ

একদিন শাদাবকে দেখতে যাব আমরা। জানামতে শাদাবের ঠিকানা জানেন গাণ্ডীব সম্পাদক তপন বড়–য়া। কিন্তু অন্য অসংখ্য পরিকল্পনার সাথে এই দেখতে যাওয়াও পড়ে থাকে অন্য অনেক কিছুর মতো অনেক বছর। সবার সময় মিলে না এক বিন্দুতে। তাই হঠাৎ করেই দু হাজার আটের ১৫ জুলাই একা একাই ত্রিশাল নেমে বাকি পথের ঠিকানার জন্য ফোনে ধরি গাণ্ডীব সম্পাদক তপন বড়–য়াকে

ত্রিশাল থেকে রামপুরা। রামপুরা গিয়ে জানতে হয় শামসু ফকির চেয়ারম্যানের বাড়ি কোনদিকে আর বাড়িতে গিয়ে বলতে হয় কিবরিয়া কোন ঘরে?

কিবরিয়া শোয়েব শাদাবের পারিবারিক নাম

পরিচ্ছন্ন শেভ করা। চমৎকার স্বাস্থ্যের গোঁফ ওয়ালা শ্যামলা এক দীর্ঘদেহী বিছানার উপর স্যান্ডেল তুলে দেয়ালে হেলান দিয়ে আধশোয়া। বাম পায়ে শেকল আর পেছনের জানালায় ছোট ছোট লোহার জালি...

কবি শোয়েব শাদাব

- আমার নাম লীলেন। আপনাকে দেখতে এসছি আমি

ঝনঝন করে উঠে শেকল। হেলান আরেকটু উঁচু করে বিছানায় আমাকে জায়গা ছেড়ে দেন- বসেন
আমি দাঁড়িয়ে থাকি- আপনার কথা অনেক শুনেছি। লেখাও পড়েছি কয়েকটা
- ভালো

একেবারে স্থির চোখ। স্থির চেহারা

সিজোফ্রেনিকদের একেকজনের আচরণ একেক রকম হয়। কিশওয়ারের ক্ষেপে ওঠা এবং ভেঙে পড়া দুটোই দেখেছি খুব কাছে থেকে। শোয়েব সম্পর্কে শুনেছি তার স্মৃতি নেই

কেউ একজন আমার পেছনে একটা চেয়ার এনে রাখে। শোয়েব স্থির। কী বললে ক্ষেপে যাবে আর কী বললে স্থির থাকবে জানি না। আমি অনেক পজ নিয়ে কথা বলি- তপন দার কাছ থেকে আপনার ঠিকানা নিলাম
- আচ্ছা
- গাণ্ডীব সম্পাদক তপন বড়–য়া
- আচ্ছা
- ফোনে কথা বলবেন তার সাথে?
- আচ্ছা বলি

তপন দার সাথে শোয়েব কথা বললেন স্বাভাবিক। তপন দা কথা বলতে চাইলেন শোয়েবের বাবার সাথে। তাকে খুঁজে ফোনটা দিয়ে ফিরে এসে বসলাম চেয়ারে- আমি টুকটাক লিখি
- কী লিখেন?
- কবিতা আর গল্প... আপনার চিকিৎসার কী অবস্থা
- চলছে

তারপর আবার নীরব। শোয়েবও। আমিও
- উনি কিসের জন্য আসছে বুঝছস?

দরজায় দাঁড়িয়ে পেছন থেকে কথা বলে উঠলেন শোয়েবের মা
- আমাকে দেখতে
শোয়েবের নির্লিপ্ত উত্তর
- তোকে দেখতে আসছে কেন?
- আমি লিখতাম এইজন্য

কোথাও শুনেছিলাম বাড়ির লোকজন তাকে বেঁধে রাখে সম্পত্তির কারণে। মোগল হেরেমে মা ছেলেকে বিষ খাওয়ানোর ইতিহাস আছে। বাবা গুপ্ত হত্যা করেছে ছেলেকে। কিন্তু বাঙালি না রাজার বংশ না মোগলের। এই চেহারা ব্রান্ডেড বাঙালি জননীর। বাঙালি সব মায়ের আহাজারি একই রকম হয়। শোয়েবের মা ফিরলেন আমার দিকে - আমার বড়ো ছেলেটারে বাবা...

পাশে দাঁড়িয়ে আছেন বাবা। চুয়াল্লিশ বছরের উন্মাদ পুত্র কিশওয়ারের বাবা দিলওয়ারের চেহারা আমি দেখেছি দীর্ঘদিন। সেই চেহারা এখন ৪৫ বছরের শোয়েব শাদাবের বাবার মুখে। বোকা বোকা মুখে শূন্য দৃষ্টি...

- এখন মূলত কী সমস্যা হয় তার?
- ডাক্তার বলেছে আর এক বছর পরে তাকে ছেড়ে দেয়া যাবে
চোখ দুটো জ্বলে উঠে মায়ের। বোকা একটা হাসি বের হয়ে আসে বাবার মুখ থেকে- যদি হয়...

আমি জানি এই বাবা কী ভাবছেন। এই ভাবনা কিশওয়ারের বাবা প্রকাশ্যে বলেছিলেন তার চুয়াল্লিশ বছরের ছেলেকে। সেই ভয়াবহ কথাটি দিলওয়ার বলতে পেরেছিলেন কারণ দিলওয়ার কবি। মুখোমুখি বসিয়ে ছেলেকে বলেছিলেন- আমার আগে তুমি মারা যাও পুত্র। এই বৃদ্ধ পিতা যেন নিজের কাঁপা কাঁপা হাতে তোমাকে শুইয়ে যেতে পারে কবরে

কিশওয়ার মরার খবর শুনে যখন দিলওয়ারকে ফোন করি। কোনো আহাজারি না। কোনো শোক না। ভারমুক্ত দিলওয়ারের উৎফুল্ল কণ্ঠ ভেসে এলো আমি কিছু বলার আগেই- আমার পুত্র আমার কথা রেখেছে লীলেন। তাকে একা ফেলে রেখে যাবার অভিশাপ থেকে আমাকে মুক্ত করে দিয়ে গেছে আমার পুত্র। এখন মৃত্যুকে আমি সানন্দে বলতে পারি- এসো সুন্দরী অবগাহন করি তোমার ভেতর...

দিলওয়ার যা বলেছিলেন ঠিক তাই ভাবছেন এই সাবেক চেয়ারম্যান। কিন্তু তার চেয়ারম্যানিতে তিনি আয়ত্ব করতে পারেননি নিজের ছেলেকে এত বড়ো কথা বলার কৌশল। তাই তিনি শুধু বলেন- যদি হয়...

- বিড়ি খান?
- খাই
ইচ্ছা করেই পুরো প্যাকেটটা তার দিকে বাড়িয়ে দিলাম। একটা বিড়ি বের করে আমার দিকে ফিরিয়ে দিলেন- আপনি খাবেন না?
আমি আস্তে আস্তে নিজের জন্য বের করি তার দিকে চোখ রেখে। লাইটার বের করে দেই
- কার কার সাথে আপনার যোগাযোগ আছে এখন?
- এখন কারো সাথে নেই
- আপনার এখানে আর কেউ এসছিল?
- তপন আর শান্তনু এসছিল একবার
- শান্তনু তো এখন কলকাতায়
- শান্তনু কলকাতায় কী করে?

আমার নিজের ভুলটা ধরা পড়ে। আর শোয়েবের ব্যাপারে আমি নিশ্চিত হয়ে যাই শোয়েব শাদাব হয় পুরোপুরি না হয় প্রায় সুস্থ

আমি বিষ্ণু বিশ্বাসের সাথে শান্তনুকে গুলিয়ে ফেলেছিলাম। কলকাতায় বিষ্ণু বিশ্বাস। একই পথের যাত্রী। শুনেছি বিষ্ণু শুধু ট্রেন থেকে ট্রেনে ঘোরে- শান্তনু না। কলকাতায় বিষ্ণু

কথাটা শুনে আবার দীর্ঘক্ষণ চুপ হয়ে থাকেন শোয়েব শাদাব
- কিশওয়ারের কথা মনে আছে আপনার?
- কিশওয়ার ইবনে দিলওয়ার?
- হ্যাঁ
- আছে
- কিশওয়ার মারা গেছে জানেন?
- না
- বছর দেড়েক হলো মারা গেছে কিশওয়ার
- সেকি গডে মরল?
- মানে?
- কিশওয়ার কি গডতত্ত্বে মারা গেলো নাকি নির্গড? ও তো একবার নাস্তিক একবার আস্তিক থাকতো

পুরোটাই খেয়াল আছে তার। বললাম- না গড না নির্গড। ঝুলন্ত
- বুজছি। নিজেই গড হয়ে মারা গেছে তাইলে

বাম পায়ে তালা মারা শেকল খাটের পায়ার সঙ্গে বাঁধা। ঘরের ফ্লোরেই একটা কমোড বসানো খাটের কাছে। আমি শেকলের দিকে তাকাই না। ক্ষেপে যেতে পারে। বিছানায় একটা ডায়রি
- ইদানীং কিছু লিখছেন?
- নাহ
- মোটেই লেখেন না?
- মাঝেমাঝে লিখি

ডায়রিটার দিকে আমার চোখ যায়- দুয়েকটা পড়তে পারব?
- এখানে নাই তো
- কোথায় সেগুলো?
- এখানে নাই
- এই ডায়রিতে কিছু লেখেন না?
- না

আবার অনেকক্ষণ চুপ। ঠায় আমার মুখের উপর চোখ গেঁথে বসে আছেন শাদাব
- ডাক্তার কী বলেছে
- বলেছে ওষুধ খেতে

এবার তাকে জানিয়েই তার শেকলের দিকে তাকাই
- শেকল কেন?
- শেকল হলো চেইন
- কেন এটা?
- চেইন থাকতে হয়
- না থাকলে কী হয়
- থাকতে হয়। এটা হলো চেইন

- আপনার কয়টা ছবি তুলি? আমাদের অনেকেই আপনাকে দেখেনি

আমি ইচ্ছা করেই সময় নিয়ে মোবাইলে ছবি তুলি। স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক কিছুই বুঝতে পারছি না। এখন পর্যন্ত তার চেহারায় কোনো কিছুর কোনো রিয়েকশন নেই। কোনো হাসি নেই। ইচ্ছা করেই চেনওয়ালা পায়ের ছবি তুলি না

- সিগারেট খাবেন আরেকটা?
- এখন খাবো না। চা খেয়ে খাবো

মা আরেকবা উঁকি দেন
- উনাকে বেঁধে রাখেন কেন?

শোয়েব শাদাব হারিয়ে যান। কিছুদিন আগে মামার বাড়ি গিয়ে ওখান থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন প্রায় দেড় মাস

মা নিজেই টেবিলের ড্রয়ার টান দিলেন। দলামচা করা কাগজের বান্ডিল। একটা অক্ষরও বাংলা নেই। ইংরেজিতে লেখা কবিতা
- আপনি কি এখন ইংরেজিতে লেখেন?
- হ্যাঁ
- বাংলায় লিখেন না?
- লিখি
- বই করার কোনো প্লান আছে সামনে?
- আছে?
- পাণ্ডুলিপি রেডি?
- পলাশ নিয়ে গেছে

এই নামটা আগেও দুয়েকবার বলেছেন। তার সব লেখা এই পলাশের কাছে। পলাশ কোথায় যেন গেছেন। এলেই বই বের হবে তার

- বইয়ের নাম কী?
- হেরা?
- গ্রিক হেরা?
- হ্যাঁ। গডেস হেরা
- হেরা কেন?
- গডেস হেরা
- সবাইতো আফ্রোদিতি কিংবা অ্যাথেনাকে নিয়ে লেখে। হঠাৎ হেরা কেন?
- গডেস হেরা
- গ্রিক এক দেবতাকেও দীর্ঘদিন বেঁধে রাখা হয়েছিল শেকলে
- প্রমিথিউস
- আপনিওতো বহুদিন থেকে শেকলে আটকানো
- আমি প্রমিথিউস না। শোয়েব শাদাব

তারপর আরো বহুক্ষণ নীরব। বাইরে তুমুল বৃষ্টি। বললাম উঠি। শোয়েব অনড় থেকেই যেন কমান্ড করলেন-বৃষ্টি ধরুক

বৃষ্টি হচ্ছে। বহুক্ষণ নিশ্চুপ আমরা। শোয়েব মুখ খুললেন- বই বেরিয়েছে?
- বেরিয়েছে
- কয়টা?
- দেড় হালি
- কয় কপি বিক্রি হয়?
- বিক্রি হয় বিশ বাইশটা
- হবে। কোটি কোটি কপি বিক্রি হবে
- কীভাবে?
- হবে। না হয়ে উপায় নেই। লোকজন কিনবে

- আচ্ছা বাবা ওর বই কি কোটি কোটি কপি বিক্রি হবে?

পেছন থেকে আবার ঢুকলেন মা। কোনো উত্তর না দিয়ে তাকিয়ে থাকলাম। বললেন- এবার ওর ছেলে এসএসসি পাশ করেছে। বললাম মিষ্টি খাওয়াতে। বলে- এখন তো আমার কোনো টাকা নেই। সুস্থ হয়ে ঢাকা গেলে আমার বই ছাপা হবে। কোটি কোটি কপি বিক্রি হবে। তখন সবাইকে মিষ্টি খাওয়াব। ওর বই কি অত কপি বিক্রি হবে?

কোন কবি নিজের বই কোটি কপি বিক্রির স্বপ্ন দেখেনি? প্রায় সব কবিই বলে প্রকাশক চুরি করে তার হাজার হাজার বই বিক্রি করে ফেলে। আর বহু কবিই প্রকাশককে বলে লাখ খানেক ছাপাতে। এটাতো কবিত্বেরই স্বাভাবিকতা...

আমি এড়িয়ে যাই। উঠে আসার আগে আরেকটা সিগারেট ধরিয়ে যখন দরজায় দাঁড়িয়েছি তখন পেছন থেকে শুনি শোয়েবের গলা- বড়ো কবি অইনজে
- মানে?
- ছোট কবি থেকে লাভ নাই। বড়ো কবি অইনজে
- বড়ো কবি কীভাবে হয়?
- সিরিয়াসলি লিখতে লিখতে হয়

শেকল হলো চেইন
ডাক্তাররা কী বলে জানি না। কিন্তু শোয়েব আগাগোড়া কবিতায়ই আছেন। কবিতার স্বপ্ন এবং কবিতা না লিখতে পারার দুঃখ তার কাছে পায়ের শেকল থেকেও টনটনে বাস্তব। আর তার চেয়েও বাস্তব কবিতা না লিখতে পারার অক্ষমতা। তাই নামগোত্রহীন অচেনা একজনের কাঁধে তুলে দেন নিজের বড়ো কবি হয়ে উঠার বাসনা- বড়ো কবি অইনজে...
২০০৮.০৭.২০ রোববার

.................................................
শোয়েব শাদাবকে নিয়ে আরো একটা পোস্ট এবং কিছু কমেন্ট: কাকতাল


মন্তব্য

অম্লান অভি এর ছবি

মাহাবুব লীলেন!
বিসন্নতায় ভরিয়ে তুললেও এমন সত্য তথ্য উপস্থাপনায় স্বীয়সক্রীয়তায় মুখরিত..........কবি'র জন্য আর্তি কবি তুমি তো বড় কবি.........জীবন যেখানে উৎস্বর্গ করা জীবনের জন্য.............
হয়তো আমরা পেলাম না কালো হরফের কোন লেখা ভাসমান পাতায়
কিন্তু এমন তো অনেকে আছে যারা তোমাকে তুলেছে আমাদের অজ্ঞতার খাতায়।

ধন্যবাদ মাহাবুব লীলেন নাহ্ ধন্যবাদ নয় আপনার জন্য তবে আপনার সক্রিয়তাকে ছোট করা হবে। আর একটু হীনমন্যতায় থাকি যে হীনমন্যতায় শোয়েব শাদাব'কে উত্তরণ দিতে পারিনি আমরা সমাজে।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এগুলো সক্রিয়তা নয় অভি
আমার ভেতরে এক বিস্ময় কাজ করে
আশির দশকের অসংখ্য কবি মানসিক ভারসাম্যহীন
এগুলো নিয়ে কেউ কাজ করেনি কিন্তু আমার মনে হয় এগুলোর সাথে সময়ের একটা যোগ অবশ্যই আছে

একবার এক মনস্তত্ত্ববিদের সাথেও কথা বলেছিলাম
উনি বলেছিলেন তাকে কেসগুলো দিলে তিনি এনালইসিস করতে পারবে

অনেকের সাথে কথা বলতে বলতে কবি মুহাম্মদ রফিকের সাথে কথা বলার সময় তিনি বলেছিলেন- যখন ঘর গোছানোর সময় তখন আশির কবিরা নেমে গিয়েছিল রাস্তায়

হয়তো এটাই প্রজন্ম ধরে তাদের মানসিক ভারসাম্যহীনতার একটা কারণ...

০২

দেখা যাক
একটা প্লান আছে আশির দশককে নিয়ে একটা কাজ করার
দেখি কতটুকু কী করতে পারি

সবজান্তা এর ছবি

০১

একটা অদ্ভুত ব্যাপার জানেন লীলেন ভাই ? আজ সকালেই বসে বসে আপনার পুরানো লেখাগুলি পড়ছিলাম। প্রথমদিকের কবিতা, বই মেলার কথা,মনিহাজরা - সব। শোয়েব শাদাবের লেখাটায় এসে আবার আটকে গেলাম।ভাবছিলাম আপনাকে একটা মেইল করি, লেখাটা দেওয়ার জন্য।

০২

এরকম একজন মানুষ কিংবা কবির জন্য বিষণ্ণ হওয়া ছাড়া কি ই বা করার আছে আমাদের ?


অলমিতি বিস্তারেণ

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বৃষ্টির সিজন তো প্রায় শেষ
অত বিষণ্ন হবার কারণ কী?

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ছবিটা ছোট করেন লীলেন ভাই ।
পাতা ভচকাইয়া যাচ্ছে ।

সবজান্তা এর ছবি

হ, এইটা আমিও কইতে গেছিলাম। আরিফ ভাইয়ের কথা শুইনা মনে পড়লো। ছবিটারে একটু রিসাইজ করেন।


অলমিতি বিস্তারেণ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

বড় কবি অইনজে , ছোট কবি হয়ে লাভ নেই ....কী দূর্দান্ত কথা ।

শোয়েব শাদাবের কোন কবিতা আছে নাকি ?
পড়তে আগ্রহী ।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

শোয়েবের একটা বই আমার কাছে আছে
কিন্তু বইটার নাম কী জানি না
বহু কষ্ট করে একজনের কাছ থেকে একটা ফটোকপি নিয়েছি

কিন্তু ভদ্রলোক আমাকে বইযের নামের অংশগুলোর ফটোকপি দেননি

আরিফ জেবতিক এর ছবি

তপনদা জানতে পারেন হয়তো । উনার জানার কথা । উনাকে জিজ্ঞেস করলেই চলে ।

অথব একটা ইবুক হয়ে যেতে পারে এই সচলায়তনেই ,
শোয়েব শাদাবের নাম না জানা কাব্যগ্রন্থ

মুজিব মেহদী এর ছবি

শোয়েব শাদাবের একটিই বই। নাম 'অশেষ প্রস্তরযুগ'। গাণ্ডীব সম্পাদক তপন বড়ুয়া ও শাদাবের অন্য বন্ধুদের যত্নে বইটি প্রকাশিত হয় সম্ভবত ১৯৯৮-এ। প্রকাশনাটির তত্ত্বাবধানে ছিলেন নিত্য উপহারের বাহার ভাই। প্রকাশকের ব্যানার হিসেবে 'গাণ্ডীব' নাকি 'নিত্য উপহার' ব্যবহৃত হয়েছিল ঠিক মনে নেই।

লীলেনের এই পোস্টে বিষ্ণু বিশ্বাসের কথাও উঠেছে। বিষ্ণু ভারতে আছেন নিশ্চিত করে বলা যায় না। সম্ভবত আছেন অথবা নেই। তাঁর নিখোঁজ হবার পর বিষ্ণু বিশ্বাস নামে পশ্চিমবঙ্গের কোনো কোনো কাগজে যে দুয়েকটি কবিতা দেখা গেছে, শোনা যায় তিনি অন্য বিষ্ণু, আমাদের বিষ্ণু বিশ্বাস নন। বিষ্ণু বিশ্বাসেরও একটিই মাত্র কাব্যগ্রন্থ, বেরিয়েছে তাঁরই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের বন্ধু নিশাত জাহান রানার তত্ত্বাবধানে তাঁর যুক্ত প্রকাশনী থেকে। 'ভোরের মন্দির' নামের এই বইটি বেরোয় সম্ভবত ২০০২-এ।
................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ইনফরমেশনগুলোর জন্য ধন্যবাদ মুজিব ভাই
তপন দাই আমাকে চার বছর ঘুরিয়ে শোয়েবের বইয়ের ফটোকপি দিয়েছে মলাট ছাড়া
যার ফলে নামটা জানতে পারিনি

০২

আরেকজন বিষ্ণুর কথা জানতাম না
আমার ধারণা ছিল সেই বিষ্ণুই
তবে একবার একজনের কাছ থেকে তার এক মামার ঠিকানা পেয়েছিলাম
যিনি কলকাতায় থাকেন

কিন্তু ঠিকানাটা প্রপার ছিল না মনে হয়
চিঠি লিখে কোনো রিপ্লাই পাইনি

নিশাত জাহান রানা যদি প্রকাশ করে থাকেন তাহলে বোধহয় বইটা সংগ্রহ করা যাবে

অম্লান অভি এর ছবি

মাহাবুব লীলেন!
বিসন্নতায় ভরিয়ে তুললেও এমন সত্য তথ্য উপস্থাপনায় স্বীয়সক্রীয়তায় মুখরিত..........কবি'র জন্য আর্তি কবি তুমি তো বড় কবি.........জীবন যেখানে উৎস্বর্গ করা জীবনের জন্য.............
হয়তো আমরা পেলাম না কালো হরফের কোন লেখা ভাসমান পাতায়
কিন্তু এমন তো অনেকে আছে যারা তোমাকে তুলেছে আমাদের অজ্ঞতার খাতায়।

ধন্যবাদ মাহাবুব লীলেন নাহ্ ধন্যবাদ নয় আপনার জন্য তবে আপনার সক্রিয়তাকে ছোট করা হবে। আর একটু হীনমন্যতায় থাকি যে হীনমন্যতায় শোয়েব শাদাব'কে উত্তরণ দিতে পারিনি আমরা সমাজে।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

আরিফ জেবতিক এর ছবি

নাহ , পোস্ট পড়ার পরে মনে হচ্ছে থাকুক বড় ছবিই ,হোক কিছু ভচকানো । সবকিছুকে শেকলে বেঁধে লাভ কী ?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

তোমার সিদ্ধান্ত বদলাতে বদলাতে বহু যুদ্ধ করে আমি যে ছবি ছোট করে ফেললাম...

তানবীরা এর ছবি

মুখোমুখি বসিয়ে ছেলেকে বলেছিলেন- আমার আগে তুমি মারা যাও পুত্র। এই বৃদ্ধ পিতা যেন নিজের কাঁপা কাঁপা হাতে তোমাকে শুইয়ে যেতে পারে কবরে

এরকম দু একটা ঘটনা আমিও শুনেছি। কতো ভয়াবহ এই বাস্তবতা। অথচ এই সব দেশে যখন এ ধরনের মানুষদের জন্য সব আলাদা উন্নত ব্যবস্থা দেখি, তখন মনে হয়, মানুষে মানুষে এতো পার্থক্য কেনো?

কবির জন্য শ্রদ্ধা।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

...................
...................
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

বিপ্লব রহমান এর ছবি

দীর্ঘশ্বাস!

--
কিশওয়ারকে নিয়ে কিছু লিখবেন? তার সম্পর্কে ব্যপক কৌতুহল রয়েছে।


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

মাহবুব লীলেন এর ছবি
পুতুল এর ছবি

ধন্যবাদ গুরু, আর কিছু বলার নেই।
**********************
কাঁশ বনের বাঘ

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

হাসান মোরশেদ এর ছবি

শোয়েব শাদাবের কথায় মনে পড়লো - শোয়েব জিব্রান নামে তোমাদের সময়ে আরেকজন লিখতেন না?

এই একটা সময়ের বেশ ক'জনের মধ্যে একসাথে সিজোফ্রেনিয়ার প্রকোপ এতো বেশী ছিলো কেন? তাদের সংবেদনশীলতার স্বরূপটা কেমন ছিলো?
-------------------------------------
সমুহ শোকেরা এলো ঝাঁক বেঁধে;
বিদায় জুবায়ের ভাই...

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সুমন সুপান্থ এর ছবি

মোরশেদ মনে হয় , শোয়েইব জিবরান'র কথা বলতে চাইছিস । শোয়েইব ভাই, শোয়েব সাদাবদের পরের প্রজন্মের কবি । লেখালেখি তে নেই এখন । জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আছেন । থাকেন মনে হয় গাজীপুরেই ।
তাঁর একমাত্র কাব্যগ্রন্থ- কাঠ চেরাইয়ের শব্দ ।
---------------------------------------------------------

'...এইসব লিখি আর নাই লিখি অধিক
পাতার তবু তো প্রবাহেরই প্রতিক...'

---------------------------------------------------------
তুমি এসো অন্যদিন,অন্য লোক লিখবে সব
আমি তো সংসারবদ্ধ, আমি তো জীবিকাবদ্ধ শব !

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বেশ কাকতালীয় ঘটনা
ঘণ্টা দুয়েক আগে ইদের অসংখ্য এসএমএসের ভিড়ে দেখি একটা আননোন নম্বর

খুলে ইদের মেসেজের নিচে লেখা ড.শোয়েইব জিবরান...

পিএইচডি করার জন্য জিবরান দেশের বাইরে জানতাম
আর কোনো যোগাযোগ নেই

তারপর আজকেই তার সাথে যোগাযোগ
আর আর সচল খুলে দেখি তুমি তুলে বসে আছো তার প্রসঙ্গ

হাসান মোরশেদ এর ছবি

নামের বানানটা ওরকমই ।
বইটা সম্ভবতঃ বাংলা একাডেমীর লেখক প্রকল্পের প্রকাশনা ।
ইয়াপ- শোয়েইব জিবরান , সাদাবদের পরেরই ।
অনেকবছর আগে বিটিভিতে সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলাল একটা অনুষ্ঠান করতেন কবিতার । সম্ভবতঃ ঐ অনুষ্ঠানে শোয়েইব জিবরান তার একটা কবিতা পাঠ করেছিলেন । পুরোটা মনে নেই। শুধু একটা লাইন

মানুষের চোখের জলে শৈবাল জমেনা...

এরকম কিছু একটা ।
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

মুজিব মেহদী এর ছবি

নামটা হবে শোয়াইব জিবরান। আমাদের সমসাময়িক। সুমনের দেয়া বাকি তথ্য ঠিক আছে।
তবে শোয়াইব এখন শিক্ষা বিষয়ে লেখালেখি করে বলে জানি।

................................................................
তোমার হাতে রয়েছি যেটুকু আমি, আমার পকেটে আমি আছি যতটা, একদিন মনে হবে এটুকুই আমি, বাকি কিছু আমি নই আমার করুণ ছায়া

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

মন খারাপ

রূপক কর্মকার এর ছবি

লীলেন ভাই, শোয়েব শাদাবকে নিয়ে নিয়ে এত সুন্দর একটি লেখায় তার একটি দুটি কবিতাও থাকলে আরও ভালো লাগত। সে কথা ভেবেই তাঁর 'স্বগতোক্তি' কবিতা থেকে ৫টি পংক্তি মন্তব্যে তুলে দিলাম :
বুকের ভিতর যেন অহরহ টমটমের শব্দ
শুনতে পাই।
প্রাগৈতিহাসিক অন্ধকূপে পড়ে থাকি
বিকল জন্তুর মতো পঙ্গুতায়-- আর
স্তব্ধ পরাধীনতায়।
____________________________
আষাঢ়ে ভাসানে গেলে আমি খুঁজি ভাটিয়ালি প্রেম
কৃষ্ণ খোঁজে আড়বাঁশি, মূর্খ খোঁজে সাউন্ড সিস্টেম
[আবু হাসান শাহরিয়ার]

____________________________
বন্ধুত্ব মানেই তুমি বিচ্ছেদের চুক্তি মেনে নিলে
[আবু হাসান শাহরিয়ার]

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কবিতা দেবার জন্য ধন্যবাদ
এই মুহূর্তে আমার হাতের কাছে তার কোনো লেখা নেই
না হলে আরো দুয়েকটা তুলে দিতাম

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

শেকলমুক্ত কবি শোয়েব শাদাবকে নিয়ে লীলেনের লেখা পড়তে চাই।
জানিনা সেটা কবে.....।

কিশওয়ার ইবনে দিলওয়ারকে চিনতাম।ওর কিছু উৎপাতকে সহাস্যে মেনেও নিয়েছিলাম তখন।তারপর একদিন শুনি-সে তার বাবার কথা রেখেছে।
আহারে দিলওয়ার ভাই!

শোয়েব শাদাবকেও চিনতাম।ঘনিষ্ঠতা ছিলোনা কিন্তু দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে।তার বর্তমান অবস্থা জেনে এবং দেখে বিষণ্ণ বোধ করছি।
শুভকামনা কবি শোয়েব শাদাব।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এই ধরনের পেশেন্টের জন্য সঙ্গ এবং সঙ্গী বোধহয় খুব জরুরি রিটন ভাই
কিশওয়ার ভাগ্যবান
শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তেমন সঙ্গ পেয়েছে
সে এমন কোনো জায়গায় যায়নি যেখানে তার ছোট ভাই কামরান তাকে সঙ্গ দেয়নি
এমনকি কিশওয়ার মন খারপ করতে পারে বলে কামরান বিয়ে করেনি কিশওয়ার মরার আগ পর্যন্ত

কিন্তু শোয়েবের বাড়িতে তাকে দেখার কেউ নেই
সঙ্গ দেয়া তো দূরের কথা

আমার ধারণা তার শেকল এখন তার অসুস্থতাকে বাড়াচ্ছে
এখানে কী করার আছে কিছুই বুঝতে পারছি না

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

একজন কবি নিরন্তর দগ্ধীভূত হতে থাকে তাঁর অন্তর্গত হোমআনলে। আর তাই বুঝি স্পষ্ট হয়ে উঠতে দেখি কবি শোয়েব শাদাবের মাঝে।

ধন্যবাদ মাহবুব লীলেন।
____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

অনিন্দিতা এর ছবি

কবি শোয়েব শাদাবকে নিয়ে আপনার আগের লেখাটা পড়েছিলাম।
এটাও পড়লাম।
কৃতজ্ঞতা জানাই এমন একজন কবিকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য।
আশা করি উনার Follow up গুলো আপনি সময়মতো আমাদের জন্য নিয়ে আসবেন।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এর মধ্যে আরেকবার যাবো তাকে দেখতে
আরো অনেকেই যাবে বলেছে

তবে তাকে বলে এসেছিলাম তার ঠিকানায় সাম্প্রতিক কিছু বই আর লিটলাম্যাগ পাঠাবো

সেগুলো পাঠানো হয়নি
ঈদের বন্ধ খুললে পাঠাবো সেগুলো

রানা মেহের এর ছবি

এতো মন খারাপ করা একটা লেখা লীলেন ভাই
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

রণদীপম বসু এর ছবি

যখন কিছু বলার মতো ভাষা খুঁজে পাওয়া যায় না, তখন নীরবতাই..। শতবর্ষীয় প্রবাদটিকেই মাথা পেতে নিলাম।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ইচ্ছাকৃত নির্বাককে বলে মৌন
আর বাধ্যতামূলক নির্বাককে বলে মূক

কবিদের নির্বাকত্বকে কী বলে?

রণদীপম বসু এর ছবি

কবিদের নির্বাকত্বকে বলে বন্ধ্যা...।
যখন সলতেয় তেলের টানাটুনি চলে।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

অতিথি লেখক এর ছবি

পাঠেরই ঘোর কাটেনি। প্রতিক্রিয়া কী জানাব!
-সুপ্তি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সচলে আপনাকে প্রথম দেখছি অথবা আগে থেকেই আছেন কিন্তু আপনার নামটা আজই আমার প্রথম চোখে পড়লো

স্বাগত সচলে

০২

সব ক্ষেত্রে প্রতিক্রিয়া নয়
একটা লেখা একজন পাঠক পুরোটা পড়েছে সেটাই তো লেখকের জন্য একটা আশীর্বাদ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ফেব্রুয়ারি ২০০৬ গাণ্ডীব-এ শোয়েব শাদাব-এর বিরাট একটা গুচ্ছ কবিতা ছাপা হইছিলো... অশেষ প্রস্তর যুগ (দ্বিতীয় পর্ব)।
গাণ্ডীবটা এতদিন খুজেঁ পাচ্ছিলাম না। এখন হাতের সামনে আছে।
কেউ শোয়েব শাদাব পড়তে চাইলে সেটা কম্পোজ করে দিতে পারি।
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কম্পোজের কাজটা করেন না স্যার

সুপ্তি এর ছবি

একটি আত্মাস্পর্শী লেখা। ধন্যবাদ লেখককে। কবি শোয়েব শাদাবের সুচিকিৎসার জন্য সচলায়তনের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগে নেয়া যায় না?
*******************************
'ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত'
-সুভাষ মুখোপাধ্যায়

*******************************
'ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত'
-সুভাষ মুখোপাধ্যায়

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমার ধারণা এই বিষয়ে আপনারও জানাশোনা আছে অনেক

লিখে ফেলেন

পলাশ দত্ত এর ছবি

এই লেখা পড়ে অন্য মন্তব্যগুলিতে চোখ বোলানোর মতো মানসিক অবস্থাও নাই এখন।

লেখার শেষ দিকটা পড়তে-পড়তে চোখে একটু পানি আসলো ক্যানো???

(মনটা খারাপ হচ্ছে- এই লেখায় আমি পৌছিছি মন্তব্যের তালিকা ধরে; আগে দেখি নাই।)

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কে জানে পলাশ
আমরা কেউই কিশওয়ার হতে চাইতাম না বলে সারাক্ষণ কিশওযার হয়ে যাবার আশংকা থেকে কিশওয়ারের খোঁজ রাখতাম

কিশওয়ার এখন আর নেই
না হতে চাওয়ার মডেল নেই আমাদের সামনে
হয়তো এখন ভেতরে অন্য আশংকা- আমিও যদি শোয়েব শাদাব হয়ে যাই?

কে জানে
বাংলাদেশে কত বড়ো বড়ো লেখক আছেন
আর কত বড়ো বড়ো লেখক বেড়াতে আসেন

কোনোদনিও তো কাউকে দেখতে যাইনি
শোয়েব শাদাবকে আমিই বা কেন দেখতে গেলাম?

পলাশ দত্ত এর ছবি

কিছু না। কিছু না। কিছু না। শুধু শরীরের সমস্ত রোম দাড়িয়ে গেলো আপনার এই মন্তব্য পড়ে। কিছু না। কিছু না। কিছু না। লীলেন ভাই কিছুই না।।

তবু আমরা লিখি। আমরা তবু লিখি।। তবু লিখি।।।

==========================
পৃথিবীর তাবৎ গ্রাম আজ বসন্তের মতো ক্ষীণায়ু

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হয়তো আমরা লিখি...

বিপ্লব রহমান এর ছবি

অনেক দেরীতে বলছি, এই লেখাটা অনলাইনে ও সচল প্রকাশে আমি অন্তত: ৫০ বার পড়েছি। এর পরেও লেখাটা হয়তো বার বার পড়বো। নিঃসন্দেহে সচলে পড়া এ পর্যন্ত এটিই সব চেয়ে মনছুঁয়ে যাওয়া লেখা।

অসাধারণ!!


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।