পুরাণের ধর্ম দায় ১: গ্রিক পুরাণের দায়মুক্তি

মাহবুব লীলেন এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব লীলেন (তারিখ: শুক্র, ০২/০৯/২০১৬ - ১২:৪৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নিজেরাই উস্কানি দিয়া রোমানগো হাতে মাইরা ফালানো নিজ গোত্রের এক পিতৃপরিচয়হীন পোলারে গ্রিসে দত্তক দিয়া দুইটা মারাত্মক কাম কইরা গেছে প্রাচীন ইহুদি সম্প্রদায়; যার পয়লাটা হইল ধর্মের দায় থাইকা গ্রিক পুরাণের মুক্তি আর দ্বিতীয়টা হইল পৌরাণিক আচরণের দায়মুক্ত খ্রিস্টান ধর্মের উদ্ভাবন। ইতিহাসে এই দুই ঘটনা না ঘটলে ইউরোপ আম্রিকার মাইনসেরে আইজ পর্যন্ত যেমন ধর্মের নামে শত শত গ্রিক পুরাণ কাহিনির ভার টানতে হইত তেমনি মুসা আর মোহাম্মদের চিপায় ভূয়া মসিহি কিংবা ক্ষুদ্র নাসারা হইয়া অনুল্লেখযোগ্যভাবে পইড়া থাকত নাসারি কিংবা নাজারতের মইরমপুত্র যীশু...

যীশু খ্রিস্টের তথাকথিত জন্মের দুই আড়াইশ বছর আগেই ইহুদিরা কোন উদ্দেশ্যে হিব্রু তাওরাত কিংবা আদি ওল্ড টেস্টামেন্টখান গ্রিক ভাষায় অনুবাদ করছিল তার ইতিহাস আইজ আর পাওয়া সম্ভব না। হইলে হইতে পারে যে পুরাণ নির্ভর গ্রিস আর গ্রিসের নকলা সোসাইটি রোমানগো পৌরাণিক ধর্ম-সমাজে থাকতে থাকতে নির্বাসিত ইহুদিগো মনে হইছিল গ্রেকো-রোমানদের নিজেগো পুরাণকথা শোনাইয়া দিবার মতো সাধারণ বাসনা। অথবা হইলে হইতে পারে যে গ্রেকো-রোমান আউলাঝাড়া পৌরাণিক কাহিনি আর অগোছালো ধর্মের সামনে নিজেগো লিনিয়ার পৌরাণিক ইতিহাস আর বিধিবদ্ধ ধর্ম আচরণ উপস্থাপন করার লোভ। অথবা অন্য কিছু। কিন্তু সেইটা যাই হউক; যদ্দুর জানা যায় ইহুদীগো এই অবদান গ্রিসে কিংবা ইউরোপে ততদিন পর্যন্ত তেমন প্রভাব ফেলতে পারে নাই যতদিন পর্যন্ত না তারা গ্রিক ভাষায় নিউ টেস্টামেন্টখানা রচনা কইরা উপস্থাপন আর প্রচার শুরু কইরা দিলো...

দুনিয়ার পয়লা খ্রিস্টিয় বাইবেল বা নিউ টেস্টামেন্ট লেখা হইল গ্রিস ভাষায়। লিখল ইহুদিরাই; যেইটা মূলত যীশুর জীবনী। কিন্তু এই যীশু নাসারীর আরব যীশু না। এক্কেবারে খাঁটি এক গ্রিক। পরিশুদ্ধবাদী গ্রিকগো লাইগা গ্রিক পুরাণের হারকিউলিসের জীবনী ভাইঙা লেখা হইল যীশুর জীবনী। মর্ত্য মানবীর ঘরে জন্মানো জিউসপুত্র হারকিউলিস দুনিয়াতে কতগুলা কঠিন কাম কইরা আবার পুরা দেবতা হইয়া ফিরা গেছেন পিতার কাছে। পিতায় স্বাগত কইরা নিয়া গেছেন কর্মবীর পুত্ররে। কিন্তু হারকিউলিসের কামকাজগুলা আছিল অতিরিক্ত গতরকামলা টাইপের; বুদ্ধি কিংবা দয়া মায়ার প্রায় কোনো চিহ্ন নাই তার পেশীবহুল গতরে; শইলে কোনো পোশাক আশাকেরও বালাইও আছিল বইলা মনে হয় না তার। কিন্তু যেহেতু মরুময় ইহুদি কিংবা হিব্রু পুরাণে শরীরে জোব্বা না পরা ন্যাংটা মানুষের কোনো অস্তিত্ব নাই। তাই গ্রিসে দত্তক যাইবার সময় আরবি জোব্বার কোমরে ফিতা আর গলায় কুচি দেওয়া এক নতুন পোশাক পাইলেন যীশু। এ্যাপোলোর জীবনী থাইকা দুঃখ আইনা ছিটায়া দেওয়া হইল যীশুর সুসমাচারে। আর সর্বশেষ; মানবজাতির উপকার করার অপরাধে শিকল বান্ধা অবস্থায় শকুনে-চিলে মগজ ঠুকরাইয়া খাওয়ার যে যন্ত্রণা প্রমিথিউসের; সেইটা রূপান্তরিত হইয়া পরিণত হইল ক্রশবিদ্ধ যীশুর যন্ত্রণায়; জন্ম হইল ইউরোপের যীশু। নামে খালি নাজারতের; চরিত্রে আর আচরণে একশোভাগ গ্রিক...

গ্রিসের নকল করা ছাড়া প্রাচীন রোমানগো আর কোনো কাম আছিল না। রোমানগো মূল কৃতিত্বই আছিল গ্রিক পুরাণের দেবদেবী আর ঘটনার স্থানকালের নাম পাল্টাইয়া নিজেগো নকলা ঐতিহ্য রচনা। ঘটনাটা এমনই দুর্গত আছিল যে যীশুর কথিত জন্মের মাত্র পনেরো বিশ বছর আগেও যখন অজ্ঞাতকূলশীল রোমান সম্রাট অক্টাভিয়ান কিংবা অগস্টাস সিজারের মা আতিয়া বালবা পোলার একখানা যুতসই সম্ভ্রান্ত খান্দানের কাহিনি রচনা কইরা দিতে ভার্জিলের মতো কবিরে নিয়োগ করলেন; তখন ভার্জিলেরেও হাবুডুবু খাইতে হইছিল দাপুটে রোমান সম্রাটের লাইগা খাঁটি রোমান খান্দান খুঁইজা বাইর করতে। অগত্যা তিনি গ্রিক পুরান হাতড়াইয়া বাইর করলেন এক অখ্যাত ট্রোজান পলাতক যোদ্ধা ঈনিয়াসরে। তারপর ট্রোজান রাজ পরিবারে তার খান্দানের শিকড় বসাইয়া কাব্য করতে করতে তারে বানাইলেন রোমান জাতির প্রতিষ্ঠাতা; তারপর আরো কাব্য কইরা কইয়া দিলেন যে আতিয়াপুত্র অক্টাভিয়ন মূলত সেই মহান ঈনিয়াসেরই বংশধর...

ঈনিডের মাত্র শ’খানেক বছর পরেই নকলাবাজ রোমানরা পাইল গ্রিসের নতুন হাইব্রিড দেবতা যীশুর সন্ধান। ব্যাস শুরু হইয়া গেলো কাহিনির অদল বদল কইরা গ্রিক কাহিনির মইদ্যে নিজেগো ঐতিহ্য স্থাপন। আর এই প্রক্রিয়ায় রোমানরা দাবি কইরা বসল যীশু খ্রিস্ট নিজের হাতে যে ধর্মশালাটা স্থাপন করছিলেন; সেইটাই হইল রোমান ক্যাথলিক চার্চ। ক্যাথলিক মানে বিশ্বজনীন জাতীয় কিছু। আজকের দুনিয়ায় যীশুর সব থিকা বড়ো মালিক বোধহয় সেই হন্তারক রোমানরাই। যীশুর লগে রোমানগো সম্পর্ক মাত্র চাইরখান লাইনে বড়ো চমৎকারভাবে বয়ান কইরা দিছেন রবীন্দ্রনাথ তার একটা গানে:

একদিন যারা মেরেছিল তাঁরে গিয়ে
রাজার দোহাই দিয়ে
এ যুগে তারাই জন্ম নিয়েছে আজি
মন্দিরে তারা এসেছে ভক্ত সাজি

এর পরে চলতে থাকলো নিজস্ব গতিতে ইউরোপিয়ান যীশুর নির্মাণ প্রক্রিয়া; যেহেতু যীশুর গোত্রের আর কেউ এখন যুক্ত নাই; তাই নিজের মতো কইরা যীশুর জীবনী বনাইতেও বাধা দিলো না কেউ। কেউ বানায় কহিনি তো কেউ বানায় ছবি; তো কেউ বানায় মূর্তি। সব যার যার মতো কিন্তু মূল সোর্স সেই গ্রিক মিথলজি। এমনকি এই প্রক্রিয়ায় মাইকেল এঞ্জেলো যখন নিহত যুবক যীশুরে যুবতী মেরির কোলে শোয়াইয়া দিলেন তার পিয়েতা ভাস্কর্যে; এবং সেইটা নিয়া যখন মাইনসে কেমনে কী কইয়াপ্রশ্ন করল তখন তিনি অতি সরলভাবে ইউরোপিয় পুরাণ স্মরণ কইরা উত্তর দিলেন- মহাত্মারা সর্বদা চিরযৌবনাই হন; সুতরাং মহাত্মা মাতা আর পুত্রের মধ্যে একই সময়ে যৌবন চিত্রায়ন অযৌক্তিক কিছু না...

কথাটা বিশ্বজনীন না। সেমেটিক পুরাণে চিরযৌবনের কোনো অস্তিত্ব নাই। ভারতীয় পুরাণে দীর্ঘ যৌবনের অস্তিত্ব থাকলেও জরা সেইখানে বড়ো ভয়ানক চিজ; যদিও মাঝে মাঝে উর্বশী-অপ্সরার মতো কিছু স্বর্গীয় সার্ভিসগার্লদের অমর যৌবনের কিছু কথা পাওয়া যায়। কিন্তু বড়ো চরিত্ররা সর্বদাই জরা আর ক্ষয়ের ডরে জর্জরিত। চিরকালীন চির যৌবন আছে শুধু গ্রিক দেবদেবীর। অবশ্য মাইকেল এঞ্জেলোরে দোষ দিয়া লাভ নাই; কারণ অতদিনে যীশুর বহুত মূর্তি আর ছবি পরিচিত হইয়া গেছে। যার একটাও সেমেটিক না। এমনকি ক্রুশে উঠার সময় খালিগায়ের যীশুর কোমরে যে নেংটি সেইটাও মূলত গ্রিক কৃতদাসগো নেংটি; ক্রুশে ঝুলন্ত তার শরীরের দৃশ্যমান পেশীগুলাও গ্রিক গ্ল্যাডিয়েটরগো মাসল। কারণ মরু অঞ্চলে তৈরি হওয়া সেমেটিক পুরাণে খালিগায়ের কোনো ক্রিতদাসও যেমন নাই; তেমনি নেংটিরও কোনো অস্তিত্ব নাই। যা আছে সব জোব্বা। কারো মাসল দেখার কোনো সুযোগ নাই সেমেটিক পুরাণে...

আর যীশুর স্বর্গগমন কিংবা পুনরুত্থানে যে আলোকের ছটা; তাও গ্রিক পুরাণে এ্যাপেলো-জিউসের আলো। মরুভূমির সেমেটিক মানুষেরা সূর্যের তাপে জ্বলতে জ্বলতে এতই ত্যাক্ত আছিল যে তারা তাগো নরকের প্রধান উপাদান বানাইছে আগুন দিয়া। সূর্য মানেই তাগো কাছে সাক্ষাত নরক। কিন্তু গ্রিসের মানুষেরা বরফে ঢাকা পর্বতের উল্টা দিক থাইকা যখন সূর্য উঠে তখন সূর্যের আলোকছটারে তারা আশীর্বাদ আর স্বর্গীয় হিসাবে গ্রহণ করে। অবশ্য গ্রিক পুরাণে নরক প্রায় অনুপস্থিত দেইখা বাইবেলেও সেইটা তেমন যুইতমতো বসে নাই। একইভাবে খোলামেলা এলাকার গ্রিসের মানুষ যৌবনবতীগো প্রকাশ্যে অল্প পোশাকে দেইখা অভ্যস্ত বইলা জোব্বায় ঢাকা আরবিয়গো মতো স্বর্গেও কোনো খোলামেলা যৌবনবতীর লোভ তারা দেখায় নাই। সেমেটিক মিথে ঘরের ভিতর প্রাইভেট হুরির ধারণা সম্ভবত আসছে প্রকাশ্যে নারীদের জোব্বায় ঢাকা দেখার কারণে। কারণটা ভৌগলিক; মরুভূমির রইদ-বালু আর গরমের মইদ্যে আগাগোড়া না ঢাইকা চলা মুশকিল; তা হউক বীর হারকিউলিস আর হউক দেবী আফ্রোদিতি...

ধর্ম হিসাবে অধিক কার্যকর হইবার ক্ষেত্রে সেমেটিক পুরাণের সুবিধা হইল এইটা সরলরৈখিক। আদম থাইকা শুরু হইয়া এখন পর্যন্ত মোটামুটি একটা মানবগোত্রের ছয় হাজার বছরের কিছু ভাঙাচোরাসহ ধারাবাহিক ইতিহাস। গল্পগুলার ভিন্ন ভার্সন প্রায় নাই বললেই চলে। এমনকি ইহুদি আর মুসলমানগো মাঝে অত ঝামেলার পরও ইহুদি কাহিনি আর মুসলমান কাহিনিগুলার মাঝে ইব্রাহিম বড়োপোলা ইসমাইলরে নাকি ছোটপোলা ইসাকরে কোরবানি দিতে গেছিলেন; এই রকম ছোট দুয়েকটা ছাড়া ফারাক প্রায় নাই। তাছাড়া আদম থাইকা মুসা পর্যন্ত নবী বা বা রাজাদের নামগুলার পাশাপাশি এক ধরনের ধারবাহিক কর্মকাণ্ডের ইতিহাসও পাওয়া যায়...

যাউক গা। এতে লাভ হইছে গ্রিক পুরাণের। মুক্তি পাইছে ধর্মের দায় থাইকা। না হইলে হয়ত খালি সক্রেটিস না; গ্রিক ধর্ম অবমাননার দায়ে একালের শেক্সপীয়রও ফাইসা যাইতেন হেমলেট নাটক লিখার দোষে। অথবা জুতার মইদ্যে দেবীর নাম আর প্রতীক লাগানোর অপরাধে মুরতাদ ঘোষিত হইত আজকের নাইকি কোম্পানি...
২০১৬.০৮.২৯ সোমবার


মন্তব্য

হাসিব এর ছবি

গ্রিক পুরাণ প্রতিযোগিতায় মার্কেটে টিকে থাকতে পারে নাই। ধর্মের দায় থেকে মুক্তি পাইছে বলার থেকে ধর্ম পরিচয়টাই খোয়াইয়া বসছে এইটা বলা ভালো মনে হয়।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এইখানে দ্বিমত করা লাগে যে। বরং গ্রিক পুরাণের মতো এত বিস্তারি অন্য পুরাণ এখনো হইতে পারে নাই। আজকের যুগের লর্ড অব দা রিংসেও যেমন সেই পুরান আছে তেমনি দুনিয়াজোড়া ডাক্তারগো প্রেসক্রিপশনেও দিব্যি ব্যবহারিক হইয়া আছে গ্রিক পুরাণ

০২
ধর্মের দায়মুক্ত কথাটাই আমি বলব। যদিও কেউ ইচ্ছা কইরা তারে ধমের্র দায় থাইকা মুক্তি দিতে যায় নাই। মূলত ধর্ম ভিন্ন পুরাণে ভিত্তি স্থাপন করায় (কিছু মাল মসলা নিয়া) গ্রিক পুরাণটা সাইডলাইনে চলে গেছে

অন্য দিকে সেমেটিক পুরাণ ধর্মের মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে আর আর্য-ভারতীয় পুরাণ ধর্মের দায় টানতে টানতে গরুর গোবরে আর চেনায় মাখামাখি হইতাছে এখন

হাসিব এর ছবি

বরং গ্রিক পুরাণের মতো এত বিস্তারি অন্য পুরাণ এখনো হইতে পারে নাই।

আমার ধারণা ছিল ভারতীয় পুরাণ কালেকশন সবচাইতে চওড়া ওর গভীর।

তেমনি দুনিয়াজোড়া ডাক্তারগো প্রেসক্রিপশনেও দিব্যি ব্যবহারিক হইয়া আছে গ্রিক পুরাণ

এইটাও মার্কেটিং। একদল মার্কেট করছেন আরেকদল স্ট্যাটাস কো ফলো করতেছেন। আরবরা সবকিছু খোয়ায় না বসলে হয়তো আমরা আরও বহু কিছু আরব দের থেকে নিতাম যেটা আরবি ওরিজিনের।

অন্য দিকে সেমেটিক পুরাণ ধর্মের মধ্যে বিলীন হয়ে গেছে আর আর্য-ভারতীয় পুরাণ ধর্মের দায় টানতে টানতে গরুর গোবরে আর চেনায় মাখামাখি হইতাছে এখন

আচ্ছে দিন

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আচ্ছে দিন। সত্য

তবে আরবি পুরাণরে ফালায়া দিবার মতো না। দুনিয়ায় তিনখান ঝামেলাপূর্ণ ধর্ম খাড়ায়া আছে আরবি পুরাণের উপর এইটা যেমন একটা ফ্যাক্ট তেমনি ইরান-তুর্কি-মিশর-আফ্রিকান আর ভারতীয় পুরাণ/সংস্কৃতির উপর আরবদের প্রভাবের বিষয়টাও বিশাল ফ‌্যাক্ট

অতিথি লেখক এর ছবি

দুনিয়ায় তিনখান ঝামেলাপূর্ণ ধর্ম খাড়ায়া আছে আরবি পুরাণের উপর

হিব্রু পুরাণ কন, আরবি পুরাণ না।

ইরান-তুর্কি-মিশর-আফ্রিকান আর ভারতীয় পুরাণ/সংস্কৃতির উপর আরবদের প্রভাবের বিষয়টাও বিশাল ফ‌্যাক্ট

জি না, জিনিসটা আপনে যা কইলেন তার ঠিক উল্টাটা। ঘাসানিড-লাখামিডগো সব কিচুর উপ্রে তাগো প্রভুগো আর লুটেরা পাটনারগো মানে পূবের পারসি, উত্তরের তুররকি আর রোমান, পশ্চিমের মিশরী, দখিনের ইয়েমেন আর আফ্রিকানগো ব্য়াপক প্রভাব বিদ্য়্মান। এগো কোন জিনিসটা যে নিজস্ব সেইটা ব্য়াপক গবেষণার বিষয়।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমার সংক্ষিপ্ত কথায় গোল পাকাইতাছে বুঝতে পারতাছি। আপনের কথা ঠিকাছে। একশোভাগ সমর্থন না করলেও অস্বীকার করি না। আমি একটা টাইমলাইনের পরের সময়টা নিয়া কথা কইতে গেছিলাম; মূলত যীশু পুরাণ; সকলের আলোচনা বিষয়টারে এক্কেবারে উন্মুক্ত কইরা দিছে; এখন মনে হইতাছে আরো পেছন থাইকা শুরু করা দরকার

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

চলুক
একদিন যারা মেরেছিল তাঁরে গিয়ে
রাজার দোহাই দিয়ে
এ যুগে তারাই জন্ম নিয়েছে আজি
মন্দিরে তারা এসেছে ভক্ত সাজি

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

মাহবুব লীলেন এর ছবি

হ। রবীন্দ্রনাথ ছাইড়া যান নি কোনো কিছু

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ইন্টারস্টিং আলোচনা। লেখায় যে উপসংহার বা অনুসিদ্ধান্তগুলো এনেছেন সেগুলো কি আপনার নিজস্ব চিন্তার ফসল নাকি এই ধরণের অনুসিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই প্রচলিত?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দুই হাজারের বেশি বছর ধরে চলা জিনিস হঠাৎ করে আমিই আবিষ্কার করে ফেললাম- এই দাবি কেমনে করি?

০২
অনুসিদ্ধান্ত হয়ত সব হুবহু মিল না; তবে এক্কেবারে আনকোরাও না

শিক্ষানবিস এর ছবি


রবীন্দ্রনাথের গানটা এই প্রথম শুনলাম। আর মিকেলাঞ্জেলো'র ভাস্কর্যটা পিটারের বাসিলিকায় দেখার পর এই যৌবন নিয়ে একটা খটকা লেগেছিল, আজ তার সমাধান পেলাম।


রৈখিক আর অরৈখিক পুরাণ কোনটা দিয়ে 'ধর্ম' বানানো বেশি সুবিধা এটা খুবই ইন্টারেস্টিং একটা প্রশ্ন। ধর্মের সংজ্ঞা নিয়ে অবশ‍্য সমস‍্যা আছে। লুক্রেতিউসের বইটা (De rerum natura) পড়তে গিয়ে শুরুতেই দেখেছিলাম ধর্ম নিয়ে তার মহা আপত্তি। সে religio শব্দটা ব‍্যবহার করেছিল। কিন্তু পরে বুঝলাম সেই রেলিজিও এই রিলিজিয়ন না। ধর্মের আধুনিক অর্থটা কিভাবে তৈরি হলো তা বুঝার চেষ্টা করতেসি বহুদিন ধরে। লুক্রেতিউস বেশ কাজের এক্ষেত্রে। কারণ তার সময় (যিশুর ৫০ বছর আগে) আর কেউ বোধহয় এত স্পষ্টভাবে 'রেলিজিও' নামে আলাদা কিছু চিহ্নিত করেনি। 'রেলিজিও' শব্দটার অর্থ তার কাছে ছিল "ভয়ে মাথা নত করা" বা "নিজেকে পুরোপুরি সমর্পণ করা"। গ্রেকো-রোমান পুরাণের মধ‍্যে এই 'রেলিজিও'-র উপাদান যেটুকু ছিল সেটাকেই বোধহয় লুক্রেতিউস একটা আলাদা ট‍্যাগ দিয়েছিলেন।

তাহলে দেখা যাচ্ছে পুরাণের মধ‍্যে ধর্মের উপাদান চিহ্নিত করার পিছনে যারা সে-ধর্ম মানে না তাদের একটা অবদান আছে। বিরুদ্ধপক্ষ ছাড়া শক্ত পক্ষ তৈরি হয় না। দায়মুক্তি'র ধারণাটা খুবই ইন্টারেস্টিং। লুক্রেতিউসও মনে হয় গ্রিক পুরাণকে রেলিজিওর দায় থেকে মুক্ত করতে চাইছিলেন। অবশেষে খ্রিস্টধর্ম গ্রেকো-রোমান পুরাণকে রেলিজিওর দায় থেকে মুক্ত করল নিজেরা একটা ভিন্ন রেলিজিও বানানোর মাধ‍্যমে। পরে মধ‍্যযুগে লুক্রেতিউসকে পুনরায় আবিষ্কার করার পর খ্রিস্টানরা আবার খ্রিস্টধর্মকে রেলিজিওর দায় থেকে মুক্ত করতে চাইল।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

রবীন্দ্রনাথের প্রচুর ছোট ছোট লেখা আছে বিভিন্ন বিষয়ে; মাইকেলেঞ্জেলোর পুরাটাই কিন্তু খ্রিষ্টান আর গ্রিক মিথের মিশেল

০২
খ্রিষ্টপূর্ব সময়ের ইউরোপিয় ধর্ম কনসেপ্টের সাথে খ্রিস্ট পরবর্তী কনসেপ্ট মিলানো কিন্তু কঠিন। যে কারণে সক্রেটিসকে ধর্মবিরুদ্ধ বলা হয়েছে আবার কেউ কেউ ধর্মপক্ষের বলেছেন; সেইগুলা এখন পড়ে কিন্তু বোঝা খুবই মুশকিল যে কোন কারণে তাকে ধর্মবিরুদ্ধ বা ধর্মপক্ষ বলা হচ্ছে

০২
বর্তমানে আমরা ধর্মগুলার যে সাধারণ রূপরেখা পাই; সেগুলা তৈরির পেছনে রাজনৈতিক প্রশাসনিক অবদানটাই বোধহয় সবচে বেশি। পুরাণ যারা মনে রেখে বহন আর সম্প্রচার করেছে/লিখেছে তারা কেউই সার্বজনীন কিছু বানানোর উদ্দেশ্যে করেছিল বলে মনে হয় না আমার। তারার তাদের নিজেদের 'অতীতকে ঐতিহ্যময়' দেখানোর জন‌্যই পুরাণগুলা প্রচার করত। এর মাঝে দরকারি উপাদান পেয়েই পরের রাজনীতিবদরা এগুলোর সার্বিক চেহারাদান করে

নৈষাদ এর ছবি

খুবই ইন্টারস্টিং আলোচনা এবং পুরো ব্যাপারটার পক্ষে শক্ত যুক্তি দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন। ত্রিমাত্রিক কবির মত আমারও জানতে ইচ্ছা হয় যে অনুসিদ্ধান্ত গুলো এনেছেন সেগুলো কি আপনার নিজস্ব চিন্তাভাবনা? এই লাইনে কখনই কিছু আগে দেখিনাই।

হাসিব এর ছবি

গ্রিক মিথোলজি এন্ড ক্রিসচিয়ানিটি গুগল করলে পাবেন।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমার মতো ছুডু মানুষ শক্ত যুক্তি কেমনে দাড় করাইব একলা একলা; ইহারা অস্তিত্বশীল বহু যুগ থেকে

মন মাঝি এর ছবি

আরও আগের প্রাচীণ মিশরীয় মিথলজির অবদানও কম নয়। অনেক ক্ষেত্রে মনে হয় এমনকি গ্রীকদেরও আদি উৎস ওটা। এই ইন্টারেস্টিং ভিডিওটা দেখেন।

****************************************

মাহবুব লীলেন এর ছবি

মিশর-গ্রিসের সমীকরণটা প্রাচীনের লগে প্রাচীনের সমীকরণ। সেটা একটু ভিন্ন। তবে গ্রিসের সব মিথের উৎস মিশর; এর সাথে আমার দ্বিমত আছে। মিশর মিথগুলা ব্যক্তি মানুষের দেবত্বকেন্দ্রিক আর গ্রিস মিথগুলা দেবতার ব্যক্তিত্ব/মনুষ্যত্ব কেন্দ্রিক। মিশর মিথে আবছা হলেও ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে; যেইটা গ্রিক মিথে নাই

মন মাঝি এর ছবি

তবে গ্রিসের সব মিথের উৎস মিশর; এর সাথে আমার দ্বিমত আছে।

আমারও আছে! হাসি (তবে,ইতিমধ্যে পড়া না থাকলে মার্টিন বার্নালের সেই বহুল বিতর্কিত আর বিখ্যাত বইটা - ব্লাক আথিনা - পইড়া দেইখেন।)

মিশরের লগে গ্রীসের সমীকরণ করা আমার উদ্দেশ্য ছিল না। আমি শুধু বলতে চাইসি হিব্রুরা (এবং খ্রীশটিয়ানিটিও) তাদের মিথ-টিথ বাবিলন / সুমার আর মিশর থেকেই পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এই দুই জাগাতেই তারা দীর্ঘকাল ছিল - গ্রীসে সেভাবে না বোধহয়। প্রাচীণ ইরাক বাদ দিলে মিশরের লগেও আমি প্রচুর মিল দেখি।ইহুদী-খ্রীশটানিটির বিভিন্ন মিথের। ট্রিনিটি, ক্রুশ, মানবীর গর্ভে মানব-দেহধারী ঈশ্বরসন্তানের জন্ম - এইজাতীয় বহু মিথ-যান-ধারণা ইহুদী-গ্রীক এদের বহু আগে থেকেই মিশরে প্রচলিত ও প্রতিষ্ঠিত ছিল - এবং সেসব তখনকার পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় তীরবর্তী / লেভান্ত অঞ্চলের লোকজন সবাইই জানতো মনে হয়।আপনার বলা সূর্য-আলোকছটার চিত্রকল্পতো মিশরীয় মিথে সয়লাব - আইসিস, আখেনাতেন, হোরাস - কার মাথার উপ্রে এটা নাই! আরও অনেকের ক্ষেত্রেও আছে।। ক্রিশ্চান(আইকোনোগ্রাফির সাথে এসবের সাদৃশ্য অবিশ্বাস্য! ভিডিওটা দেখেন, মজা পাবেন।এর মধ্যে অল্পস্বল্প আছে। মিশরীয় বাস-রিলিফ আর দেয়ালচিত্রগুলার কাহিনি বুঝে অন্য ছবিগুলির সাথে তুলনা করতে পারলে আরও ভালো)।

তবে আপনার দায়মুক্তির আইডিয়াটা সত্যি ইন্টারেস্টিং এবং ইন্ট্রিগিং।

****************************************

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ভিডিওটা দেখলাম। উদ্দেশ্য ভালো হলেও সত্যি কথা হলো জিনিসটা বেশ কাঁচাই মনে হলো। বেশ জোর জবরদস্তি আছে প্রমাণের। কিছু কিছু প্রমাণ যক্তি সঙ্গত। তবে সব কিছুই মিশর থেকে শুরু যারা বলে তারা কিন্তু মানব সভ্যতার প্যরালাল ডেভেলপমেন্ট-এর দিকে তাকায় না। মিলি পেলেই আগেপরে হিসাব বসিয়ে দেয়। মিশর আর গ্রিস দুইটাই কৃষি সভ্যতা। সূর্য এদের কাছে আশীর্বাদ; কিন্তু ঔরনাস-ক্রোনাস থেকে যে গ্রিক মিথের শুরু; সেটা মিশর মিথ থেকে অবশ্যই অনন্য। গ্রিক মিথে মিশর মিথের প্রভাব সম্ভবত স্ফিংস থেকে শুরু। যা গ্রিক মিথের বহু পরবর্তী অধ্যায়

০২
একটা জিনিস পরিষ্কার; যে সমাজে গিলগামেশের জন্ম হয় সে সমাজ থেকে সার্বভৌম একক ঈশ্বর হয়নি। সেমেটিক একেশ্বরবাদী ধারা আর মূর্তিবাদী ধারা কিন্তু আলাদা

০৩
মৌলিক গ্রিক পুরাণ সার্বভৌম ইশ্বরবিহিন। মিশর পুরাণে সার্বভেৌম ইশ্বর অনুপস্থিত; এক্ষেত্রে মিল অবশ্যই আছে। কিন্তু দুইটা একেবারে এক উৎস থেকে শুরু এটা আমার মনে হয় না। মিশর পুরাণটা কৃষিজীবীদের/সাম্রাজ্যের পুরাণ আর আরবি/ইহুদি পুরাণটা যাযাবরদের পুরাণ। প্রথমটা বেশ গর্জিয়াস কিন্তু দ্বিতীয়টা খুবই সরল রৈখিক

০৪
আপনার ভিডিওটাতে তো হিন্দু বেৌদ্ধর উপরো মিশরের প্রভাব দাবি করে বসছে। হিন্দু (আর্য পুরাণে) ইব্রাহিম পরবর্তী কোনো মিলের নিদর্শন আমি পাইনি। নূহ এর কিছু মিল যেমন আছে তেমনি সুমের সভ্যতার সাথে বেশ মিল আছে। তবে সুমেরর আত্মীয আর্যরা নয়; হরপ্পা-মহেঞ্জোদারোর মানুষেরা। আর হলে হতে পারে আর্যদের সাথে সেমেটিকদের আত্মীয়তা থাকলেও থাকতে পারে

০৫
আমি মাত্র দুই আড়াই হাজার বছরের কাহিনি দিয়া শেষ করে দিতে চাচ্ছিলাম। আপনি নিয়ে গেলেন বহু পিছনে। এই সিরিজটা টানতে পারলে আশা করি সবগুলাই আসবে; মিশর আরব সুমের ভারত গ্রিক এবং হয়ত চীনও

অতিথি লেখক এর ছবি

কৃষিজীবীদের সমাজ = সৌর ‌উপাসক >বহু দেবতার উপাসক > সীমিত সনং্খ্য়্ক দেবতার উপাসক > সাকার ঈশ্বরের উপাসক
পশুপালকদের সমাজ = চন্দ্র উপাসক > বহু দেবতার উপাসক > এক ঈশ্বরের উপাসক > নিরাকার ঈশ্বরের উপাসক

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

হিন্দু প্রভাবও আছে। দেঁতো হাসি
http://koenraadelst.bharatvani.org/articles/chr/hinduinfl.html

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এইটা নিয়া কথা কমু না ভাইজান। এইগুলা গুজামিল। লেখাটা গোছাতে পারলে হয়ত এই বিষয়গুলাও আসবে। তবে সংক্ষেপে বলি ভারতে বহু কিছু যত সহজে ঢুকছে ভারত থেকে কিন্তু বাইরায় নাই প্রায় কিছুই

অতিথি লেখক এর ছবি

ভারত থেইকা ইন্দোচীন, চম্পা, চীন-জাপান-কোরিয়া, যবদ্বিপ, কালিমন্থন ইত্য়াদি জায়গায় অনেক কিছু গেছে।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

কথাটা লেইখা কম্পু বন্ধ করার সময় মনে হইছিল যে অতি সংক্ষেপে কইতে গিয়া ঘুটু পাকাইয়া ফালাইছি। আপনের কথা ঠিক। আমার কথাটা ইউরোপ আর মধ্য প্রাচ্য/সেমিটিক/সুমের এলাকা নিয়া

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

যীশুখ্রিস্টের আগমনের বেশ কিছু আগে থেকেই হিব্রু আর ইহুদীদের ব্যবহারিক ভাষা ছিল না, তাঁরা কথা বলতেন আরামাইকে। কিন্তু শিক্ষাদীক্ষা, জ্ঞানচর্চা, ব্যবসাবাণিজ্য, আন্তর্জাতিক যোগাযোগ, ইত্যাদি কাজে তাঁদের মধ্যে গ্রীক ভাষারও ব্যাপক প্রচলন ছিল। হিব্রুতে লেখা ওল্ড টেস্টামেন্টও তাঁদের অনেকের কাছে বোধগম্য হত না, ফলে ওল্ড টেস্টামেন্ট গ্রীক ভাষায় অনুবাদের প্রচেষ্টা নেয়া হয় এবং প্রায় একশ বছরের চেষ্টায় সেটা সম্পন্নও করা হয়। এই অনূদিত ওল্ড টেস্টামেন্ট অনেক সিনাগগে, এবং বিশেষত গ্রীকভাষী ইহুদীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায়।

পরে যখন নিউ টেস্টামেন্ট লেখার ব্যাপারটা চলে আসে, তখন সঙ্গত কারনেই সেটা হিব্রু ভাষায় লেখার প্রশ্ন আসে না। আরামাইকে লেখা যেতে পারতো, কিন্তু সে ভাষাটা অতটা কুলীন নয়, বরং সে তুলনায় গ্রীক অনেক কুলীন এবং বিশ্বজনীনও বটে। ততদিনে প্যালেস্টাইনের বাইরে অনেক স্থানে যীশুর বাণী পৌঁছে গেছে, সেসব সকল স্থানের বিবেচনায় গ্রীক হল সবচেয়ে এ্যাপ্রোপ্রিয়েট ভাষা। সে কারনেই নিউ টেস্টামেন্ট লেখা হল গ্রীক ভাষায়।

ইয়ে, দুনিয়ার পয়লা খ্রিস্টীয় বাইবেল বা নিউ টেস্টামেন্ট যে ইহুদিরাই লিখলো বলেছেন, সে ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না। যাঁরা লিখলেন, তাঁরা খ্রিষ্টান না হয়ে ইহুদী হলেন কিভাবে?

মাহবুব লীলেন এর ছবি

ইহুদি বলতে ইহুদি ধর্মের যেসব লোক যীশুর ভক্ত হয়ে নতুন ধর্মের দিকে ঝুকেছে। যীশু নিজেও তো ইহুদি ছিলেন। মরছেনো তো ইহুদি হিসাবে। তার অনুসারীরাো তো ইহুদি। আর যারা নিউ টেস্টামেন্ট লিখেছে তারা এগুলো লিখে তবেই না যীশুর ভক্ত জোগারড় করছে। তার বহু পরে না জন্মসূত্রে খ্রিস্টান হইবার সিস্টেম প্রচলিত হইছে

সোহেল ইমাম এর ছবি

যীশুখ্রিষ্টের মৃত্যুর অনেক দিন পরইতো নিউ টেষ্টামেন্ট লেখা শুরু হয়েছিল, সে সূত্রে তকনই কি প্রাথমিক ধরণের একটা খ্রিষ্টীয় সম্প্রদায়ের শুরু হয়ে যায়নি? জন্মসূত্রে খ্রিষ্টান হওয়াটা ঠিক কোন সময় থেকে আরম্ভ হলো, তেমন কি সন তারিখের সাক্ষ্য পাওয়া যায়। এই বিষয় গুলো এখনও ভালো জানিনা লিলেন ভাই, সেই কারণেই আগ্রহ নিয়ে পড়ছি।

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আপাতত গুগলে একটু ঘুইরা আসেন। তথ্যগুলা পেয়ে যাবেন। ছোট লেখাটা অনেকগুলা বিষয়ের পথ উন্মুক্ত করে দেবে কল্পনাও করিনি। তবে সিরিজে আশা করি আপনার প্রশ্নগুলার উত্তরও থাকবে

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

এসব লেখা ঘিরে আলোচনাগুলোই আসল।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

মাহবুব লীলেন এর ছবি

এক লাইন কইয়া সাইড লাইনে খাড়ায়া থাকলে হবে? আলোচনা করেন

অতিথি লেখক এর ছবি

একটা আগ্রহের বিষয় নিয়ে লিখছেন। পুরাণদের নিঃশর্ত দায়মুক্তি ঘটলে অনেক অতিপ্রাকৃত অন্ধত্ব তথা সামাজিক কুসংস্কার দূর হত। কালচার হিসেবে বাঙ্গালির পদ্মপুরান-ভাসানের গান-মনসা পুজো অনন্যসাধারণ। কিন্তু তাতে কী, পুরাণ থেকে শিবকে ধরে এনে তাঁকে কেন্দ্র করে সঙ্ঘবদ্ধ র‍্যাডিক্যাল ইউটোপিয়ান আইডিয়া দেয়ার লোকের অভাব নেই! কেজানে, এসব কবে হারকিউলিসের মত উপকথা হবে!

রাজর্ষি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমরা বোধহয় পুরাণের দায়মুক্তির বিষয়টা অত সহজে দেখতে পাব না। এককালে 'কমধর্মজ্ঞান সম্পন্ন' মানুষেরা কিন্তু সেই চেষ্টা করেছিল। যার উদাহরণ এইসব পদ্মপুরাণ-ভাসান-মনসা এমনকি গ্রামীণ শিব-শিবানির পাচালি। কিন্তু ধর্মধুরন্দরা সেইগুলারে সাইডলাইনে ফালায়া শিবের মহাদেবত্ব প্রমাণে অস্থির

০২
একটা রিপলেসমেন্ট না আসলে বোধহয় পুরোনো পুরাণ সহসা মুক্ত হবে না। মিশরীয়রা রিপলেসমেন্ট পেয়েছে; গ্রিকরা পেয়েছে কিন্তু সেমেটিক আর ভারতীয়রা পায়নি

০৩
নতুন এক ধরনের পুরাণের সৃষ্টি কিন্তু এখন লক্ষ করা যায়। তা হলো সাইনটিফিক পুরাণ। মূলত সিনেমা কার্টুন আর কমিক সিরিজে। বিবর্তন ইতিহাসকে বেজ করে অতিকায় রাক্ষুসে প্রাণীদের উপস্থাপন। কিন্তু চরিত্র হিসেবে এখন পর্যন্ত বোধহয় ডাইনোসোর ছাড়া আর কোনোটা তেমন পপুলার হয়নি। তাও আবার ডাইনোসর এখনো ভিলেন চরিত্র

অতিথি লেখক এর ছবি

এই নেন শিবের আরেক রূপ।

এই সাধু শিবকে দেখেই থেমে থাকেন নাই, তাঁর তান্ডব নৃত্য সবাইকে প্রেক্টিস করতে বলছেন। তাঁর ইউটোপিয়ান আইডিয়াতে কাস্ট সিস্টেম নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা, ধর্মীয় কারণে শাকাহারী হওয়া সবই আছে।শ্রীভূমি শ্রীহট্টেও উনাদের ব্রাঞ্চ আছে!

০২
স্বর্গীয় দ্রাক্ষার লোভ সাথে প্রজন্ম প্রবহমান নাক্ষত্রিক গপ্পো! 'বিপিন বাবুর সুরসাল কারনসুধা'র ঘোর সারমেয়ের বঙ্কিম লাঙ্গুলের ন্যায়, সত্যিই সহজে যে সিধে হবার নয়!

০৩
অয়রোপাতে এসে দেখলুম, সায়েন্টলজি নামে নতুন ধর্মও জর্মন মুলুকে আছে। সিরিযাস এলিয়েনপুরাণে বিশ্বাসীও দুর্লভ নয়।

রাজর্ষি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।