হেরে যাচ্ছি

মির্জা এর ছবি
লিখেছেন মির্জা (তারিখ: শনি, ২২/০৩/২০০৮ - ৭:৪২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বয়ঃ ৫৭
পেশাঃ ধর্ম যাজক
স্থানঃ পূর্ব লন্ডন
ঘটনাঃ St. George in the East Church-এর ধর্ম যাজক Canon Michael Ainsworth-কে কিছু এশিয়ান তরুন (খুব সম্ভবত দুইজন বাঙ্গালি) প্রচণ্ড মারধর করে এবং তার অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে তাকে দ্রুত হাস্পাতালে ভর্তি করা হয়।
এটা গত সপ্তাহের কথা।
এর দুই মাস আগে একই চার্চকে শাষানো হয় এখানে কোন চার্চ থাকতে পারবে না, এই চার্চ ভেঙ্গে মসজিদ বানাতে হবে! আর সেই ‘’ইসলামি’’ জোশের ধারাবাহিকতায়ই Michael Ainsworth -এর উপর এই পশুর মত আক্রমণ।

ঘটনা প্রকাশের সাথে প্রায় প্রতিটি স্থানীয় ইসলামি সংস্থাগুলো এর তীব্র প্রতিবাদ করে এবং সত্যিকার অর্থেই হোক আর সত্যিকার অর্থে নিজেদের Goodwill রাখার জন্যেই হোক তারা এই প্রতিবাদের সাথে সাথে পুলিশের প্রতি সর্বাত্নক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। খবর নিয়ে জানা গেল এইখানে কিছু ড্রাগ এ্যাডিক্টেড ছেলে আছে যারা সারাদিনই কোন না কোন ধরনের ঝামেলা করে বেড়ায়। মারামারি, ভাংচুর আর নিরীহ মানুষদেরকে হেনস্থা করা এদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার! ঘটনার পর থেকে ঐ ছেলেগুলোকে আর দেখা যাচ্ছে না।
কি কারনে লিখছিঃ ধর্ম যাদের পূজি তাদের কথা বলেতো লাভ নেই, কিন্তু আমাদের মত তথাকথিত যারা ধর্ম নিরপেক্ষ, যারা মনে করি মনুষত্যই পূজ্য, তাদের কয়েকজনকে আমি ব্যাক্তিগতভাবে অনুরোধ করলাম ধর্মের নামে এই ঘৃন্য আক্রনের প্রতিবাদ করতে, আমরা যে যেভাবে পারি, তারা আমাকে বললেন, এইটা না-কি মসজিদ আর চার্চের ব্যাপার!!! আমার অনুনয় ছিল, Mainstream Media`র কাছে জামাত-ননজামাত বা সেক্যুলার বাঙ্গালি পরিচয়টা এখনও খুব একটা পরিচিত না ওদের কাছে আমরা সবাই সমান অন্তত সেই কথা ভেবে আমারা কিছু করতে পারি, আর কিছু না হোক সম্মিলিত বা ব্যাক্তিগতভাবে St. George in the East Church-এ ফোন বা ইমেইল করে বলতে পারি সব বাঙ্গালি এমন না, আমরা বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই এটাকে বর্বরোচিত একটি কাজ হিসেবেই মনে করি! কিন্তু না এটাত মসজিদের দায়িত্ব!!!
ক’দিন আগে পরপর বেশ কিছু ফোন পাই (হয়ত আরিফের তাকে ডেকেছিল ধুলিমাখা চাদ লন্ডনে পৌছানোর পরই এটা শুরু হয়েছিল) পহেলা বৈশাখের দিনে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্যে। কিন্তু বিলেতে যখনই এধরনের কিছু করতে চাই তখনই যারা রবীন্দ্র নজরুল বলতে অজ্ঞান, যারা বাঙ্গালী কৃষ্টির হোলসেল নিয়ে বসেছেন, যারা প্রায় প্রতিটি উইকএন্ডে ঘরোয়া ‘‘লিমিটেড এ্যাডমিশন ওনলি’’ টাইপ বাংলার ইজ্জত রক্ষাকারী অনুষ্ঠান করে থাকেন, আমি তাদেরকে খুজে পাইনা। ফেইসবুক, টেক্সট ম্যাসেজ, ফোন- কি করে যেন সব কিছুতেই আমি তাদেরকে যোগাযোগ করতে ব্যার্থ হই (অবশ্যই প্রথমবার খবরটা শোনার আগে তারা কেউ হাওয়া হন না)
আর পারছিনা......ভাল লাগে না ...হেরে যাচ্ছি......পিছিয়ে যাচ্ছি...সাহস পাচ্ছি না.........প্লিজ...... একটু সাহায্য চাই মধ্যবিত্ত স্বার্থপরতার বাইরে...প্লিজ


মন্তব্য

ধ্রুব হাসান এর ছবি

কোন উদ্যোগ নিলে ডাক দিয়েন। চলেন একদিন সবাই মিলে চার্চে গিয়ে পার্থনা করে আসি জামাতের সাথে! এতো হতাশ হওয়ার কিছু নাই, আমরাইতো এদের চার্চ কিনে মসজিদ বানাতে টিভি পর্দায় জিহাদ করে ষ্টিকারের গায়ে ছাপানো চার্চের জমি টুকরো টুকরো করে কিনে নিয়ে মসজিদে রুপান্তর করি! রাত ৩/৪টা পর্যন্ত ঐ জিহাদি জশবা দেখে দেখে হতাশ হওয়াতো আপনার এতোদিনে ভুলে যাওয়ার কথা! হেরে যাওয়ার প্রশ্নই ওখানে অবান্তর!

বিঃ দ্রঃ ফেসবুকের মেসেজের মাজেজা বুঝলাম এইটা পড়ে।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

(দীর্ঘশ্বাস)

দিগন্ত এর ছবি

আমারও একই প্রতিক্রিয়া।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অমিত আহমেদ এর ছবি

ইন্টারনেট ঘেঁটে ঠিকানা পেলাম, ফোন নাম্বার পেলাম, ইমেইল অ্যাড্রেস পেলাম না। আপনার কাছে থাকলে এখানে দিয়ে দিন। আমি ব্যক্তিগত প্রতিবাদ ও সহানুভূতি জানাবো। যৌথ প্রতিবাদ হওয়া দরকার। উদ্যোগ নিলে জানাবেন। সাথে আছি।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

মির্জা এর ছবি

@ ধ্রুবঃ না রে, ইসলামি জোশওয়ালাদের উপর আমার যতনা রাগ তার চেয়ে বেশি মেজাজা খারাপ বিলেতের শিক্ষিত- সংস্কৃতিমনা আতেল সমাজের উপর...এদেরকে কখনই পাই না পাশে......
@ অমিত St. George in the East Church-এর আলাদা ইমেইল এ্যাড্রেস আমার কাছেও নেই তবে অদের সেন্ট্রাল ইমেল এ্যাড্রেস হলঃ

আরিফ জেবতিক এর ছবি

রনি মির্জার বয়েস হয়েছে বোধহয় । এই পোস্ট দেখে সেটাই মনে হলো । এই হতাশা দেখে আমি শংকিত ।

পুরো লন্ডন শহরে দশজন বাঙালিও কি নেই ? বিশ্বাস করি না । আমার মনে হয় খোঁজার সমস্যা আছে আপনার ।

আপনি আর আপনার স্ত্রী - ২ জন ।
বাকি ৮ জন কি পাওয়া যাবে না ? নিদেন পক্ষে ৪ জন ? অথবা আরো ৩ জন ।

ব্যস , ৫ জন দিয়েই শুরু হোক । ৩ জন দিয়ে শুরু হওয়া উচ্ছ্বাস যদি ৩ হাজারের সংগঠন হয়ে আজ এতো বছর ধরে একটা শিবির অধ্যূষিত কলেজে চলতে পারে , লন্ডন শহরের ভদ্র পরিবেশে সেটা থেমে যাওয়ার কোন কারন নেই ।

কেউ এসে মির্জা সাহেবের কাজ কোনদিন করে দেয় নি ।
যা কিছু অর্জন ( যদি কিছু থেকে থাকে ) সেটা উনি নিজেই করেছেন । প্রত্যেকের বেলাই একথা সত্য ।
নিজের বিশ্বাসের উপর একা দাড়িয়ে থাকা হতাশার নয় ,গৌরবের ।

বিনয়ের সাথে উনাকে এই বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই ।

মির্জা এর ছবি

বোঝাতে পারছি না......আছে মানুষ আছে......কিন্তু যারা এখানে বাংলা সংস্কৃতির ইজারা নিয়ে বসে আছে, যারা এই কথায় সেই কথায় বাংলা কৃষ্টির দৃষ্টি হিসেবে কাজ করে, মাঝে মাঝে দ্রুত একটা কথা বা মতামত ছড়াতে তাদের সাহায্য চেয়ে পাইনা সেই কষ্টের কথাটাই বলতে চেয়েছি.........

মির্জা এর ছবি

@অলৌকিক হাসানঃ আপনি আছেন না...সাহস পাইতো...।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।