ষষ্ঠ পাণ্ডবের জন্য ফুলের বাগান

মন মাঝি এর ছবি
লিখেছেন মন মাঝি [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০১/০২/২০১৪ - ৬:০৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সচল ষষ্ঠ পাণ্ডবের "তুই ফুটিবি সখী কবে!" শিরোনামের পোস্টটা আর সেইসাথে সেখানে আরেক সচল আয়নামতি দিদির দারুন মন্তব্যগুলি পড়তে পড়তে, উৎসাহ পেয়ে আমিও ফুল নিয়ে একটু নেট ঘাটাঘাটি শুরু করে দিলাম। সংকোচের সাথেই বলি - ফুলের ব্যাপারে আমার আলাদা কোন উচ্ছাস বা সচেতনতা নেই। মন্দ লাগে না। ব্যস্‌! সত্যি বলতে কি, দু-চারটার বেশি ফুলের নাম পর্যন্ত জানি না! ভীষণ গদ্যময়, বেরসিক, এমনকি খুউব হৃদয়হীণও মনে হতে পারে। কি আর করা! কিন্তু সচল পাণ্ডবের লেখা পড়ে নেট ঘাটতে গিয়ে সেখানে এমন চমকপ্রদ কিছু ফুলের দেখা পেলাম যে আমার পুস্পরসহীণ হৃদয় বিশাল একটা ধাক্কা খেল। সেইসাথে আমার অপ্রস্ফুটিত পুস্পাগ্রহ বা পুস্পনাগ্রহ একটু একটু মনে হয় ফুটতে শুরু করল। তো সেই ধাক্কার ঠ্যালায় নবজাগ্রত আগ্রহের উপর ভিত্তি করে মনে হল, যার পোস্টের প্রেরণায় এই দুর্দান্ত ফুলগুলি দেখার সৌভাগ্য হল, কৃতজ্ঞতাস্বরূপ এই ফুলগুলির ছবি দিয়ে তার জন্যে একটা ভার্চুয়াল বাগান (ছবি পোস্ট) সাজিয়ে দিলে কেমন হয়? এই সুবাদে অন্যরাও সেটা উপভোগ করতে পারবেন। আর আমার ভাল লাগাটাও শেয়ার করা হল। বলাই বাহুল্য, একটি ছবিও আমার তোলা নয়। তাই সমস্যা হল, এইরকম একটা পুরোপুরি নেটসূত্র-নির্ভর আপাদমস্তক অমৌলিক পোস্ট কি সচলায়তনে গ্রহণযোগ্য হবে? সচলেই প্রকাশিত আরেকটি পোস্টের 'প্রতিক্রিয়ায়' প্রকাশিত এরকম একটা পোস্ট কি চূড়ান্ত মেটা-ব্লগিং বলে বিবেচিত হবে? তার উপর শিরোনামেই যদি ঐ সচল-সদস্যের নাম থাকে? জানি না। তবে আসল কথা হল আমি ছবিগুলি শেয়ার করতে চাচ্ছি, বাকি বিচার-বিবেচনার দায়দায়িত্ব মডুরামদের! তাঁদের ঘাড়েই বন্দুক রেখে পোস্ট করে দিলাম। এখন এটা প্রকাশিত হবে কিনা সেটা তাদের বিবেচনা। প্রকাশিত না হলে সমস্যা নাই। কিন্তু প্রকাশিত হলে এবং পাঠকরা গোলাগুলি করতে চাইলে তাদের দিকেই দয়া করে তাক করবেন, আর ভাল লাগলে বা ধন্যবাদ দিতে চাইলে আমাকে। কেমন? চোখ টিপি

তো কোন্‌ সেই ফুল যেগুলি আমার এত ভাল লেগেছে?


১। প্যাশন ফ্লাওয়ার

এটা ৫০০টি প্রজাতি নিয়ে গঠিত Passiflora বর্গের একটা ফুল। এই সুনির্দিষ্ট ফুলটার প্রজাতির নাম জানা নেই, তবে দেখতে অনেকটা 'ব্লু প্যাশন ফ্লাওয়ারের' মত লাগছে। সেক্ষেত্রে এটা মূলত দক্ষিণ আমেরিকার ফুল (আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে, ব্রাজিল)।



২। উইংগ্‌ড-স্টেম প্যাশন ফ্লাওয়ার

বৈজ্ঞানিক নাম Passiflora alata। আমাজন অঞ্চলের ফুল - পেরু থেকে ব্রাজিল পর্যন্ত পাওয়া যায়। 'ডানার-মত-কাণ্ড প্যাশন ফ্লাওয়ার' ছাড়াও স্থানীয় লোকের কাছে এই অপূর্ব ফুলটা 'লাল তারা' ফুল নামেও পরিচিত।


৩। অনামিকা

এটার নাম-ধাম কিছুই জানি না। কিন্তু নামে কিবা আসে যায়? এমন চোখের-পলক-ফেলতে-ভুলিয়ে-দেয়া সৌন্দর্যের দিকে তাকালে কি আর নাম-ধাম জিজ্ঞেস করার কথা মনে থাকে কারও?!!


বৈজ্ঞানিক নাম Amorphophallus titanum। সুমাত্রার রেইনফরেস্টে জন্মানো এই উদ্ভূতুড়ে দৈত্যাকৃতির বুনো ফুল দশ ফুট পর্যন্ত উঁচু হতে পারে। তবে এই ফুল বাগানে সহজে জন্মায় না।


৫। কালো বাদুড় ফুল

বৈজ্ঞানিক নামঃ Tacca chantrieri। এই বিদঘুটে সুন্দর বুনো ফুলটির মূল নিবাস চীনের ইউনান প্রদেশের ট্রপিকাল জঙ্গল। কালো বাদুড় ফুল ১ ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত আর ডাঁটিটা ৩ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। "গোঁফ"-গুলি হতে পারে ২৮ ইঞ্চি পর্যন্ত।


৬। আবারও প্যাশন ফ্লাওয়ার


৭। আইসক্রীম টিউলিপ

গাঢ় গোলাপি লোভনীয় পাপড়ির স্তবকের মাঝে থরে থরে সাজানো দুগ্ধফেননিভ ক্রীমের মত সাদা পাপড়ির দল। অপূর্ব, লোভনীয়, সেন্সুয়াস।


৮। ড্রাকুলা বেনেডিক্টি

'মাঙ্কি ফেইস' বা বাঁদরমুখী নামেও পরিচিত এই ভুতুড়ে-সুন্দর অর্কিড গোত্রের ফুল। তবে আমার কাছে ড্রাকুলার মতই গা-শিরিশিরানো মনে হচ্ছে। কলম্বিয়ায় পাওয়া যায়।


৯। আরেকটি অ-নামিকা

এটারও নাম-টাম জানি না।


১০। স্টারফিশ ফ্লাওয়ার

বৈজ্ঞানিক নামঃ Stapelia gigantea। দক্ষিন পূর্ব আফ্রিকার ফুল। এই বলিকুঞ্চিত সিল্কি টেক্সচারের রোমশ ফুলগুলির পাপড়ির ব্যাস ১৪ ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে।


১১। স্টিংকিং কর্পস্‌ লিলি

বৈজ্ঞানিক নামঃ Rafflesia arnoldii। নাহ্‌, এটা সচল পাণ্ডবের বাগানের জন্য সুপারিশ করা যাচ্ছে না। তবে অভূতপূর্ব বিধায় এখানে দিলাম। এই ফুল নামে যেমন, কামেও অনেকটা নাকি তেমনই - পচা লাশের কড়া গন্ধ ছড়ায়। তবে কিনা, এটা বিশ্বের বৃহত্তম একক ফুল। এর চেয়েও বড় ফুল আছে দুয়েকটা, তবে সেগুলি টেকনিকালি গুচ্ছ ফুল (অনেক ফুলের ক্লাস্টার) - এটার মত স্বয়ংসম্পূর্ণ একক ফুল না। সে হিসাবে এটাই পৃথিবীর বৃহত্তম। ৩ ফুট ব্যাস আর ১১ কিলোগ্রাম ওজনের এই দুর্লভ ফুলটা ইন্দোনেশিয়ার বোর্নিও আর সুমাত্রার জঙ্গলে জন্মায়। এটা ইন্দোনেশিয়ার অন্যতম জাতীয় ফুলও বটে।


১২। অনামিকা - ৩

এটারও নাম-ধাম জানি না। তবে ফুল মাত্রই যে নরোম, পেলব, তুলতুলে আর হাওয়ায় উড়ে যাওয়ার মত কিছু নয় - তা এই ফুলটাকে দেখলেই বোঝা যায়। দারুন সৌন্দর্যের সাথে সাথে যেন জমাট শক্তির প্রাবল্যে আর দার্ঢ্যে গমগম করছে।


১৩। হট লিপ্‌স ফ্লাওয়ার

বৈজ্ঞানিক নামঃ Psychotria Elata। এই চুম্বন-ব্যগ্র লোভনীয় রক্তিম ওষ্ঠযুগলের আরেকটি জনপ্রিয় অভিধাঃ The Most Kissable Plant! অনেকে একে "Hooker’s Lips"-ও ডাকেন। এই অদ্ভূত সুন্দর ফুলটির দেখা মেলে মধ্য ও দক্ষিন আমেরিকায়


১৪। লোটাস

কিছু বলার দরকার আছে?


১৫। গ্লোরিওসা সুপার্বা

এটা লিলি জাতীয় ফুল। ফ্লেইম লিলি নামেও পরিচিত। হিন্দিতে 'কালিহারি'। এশিয়া ও আফ্রিকার ফুল।


১৬। গোল্ড অফ কিনাবালু অর্কিড

বৈজ্ঞানিক নামঃ Paphiopedilum rothschildianum। বোধহয় পৃথিবীর সবচেয়ে দামী অর্কিড। এর একটা ফুলের দামই ৬০০০ ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। অপূর্ব ও ভীষণ দুর্লভ এই ফুলটা কেবল মাত্র বোর্নিও দ্বীপের মালয়শিয়া অংশে মাউন্ট কিনাবালুর আশেপাশের রেইনফরেস্টে দেড় থেকে সাড়ে তিন হাজার ফুট উচ্চতায় পাওয়া যায়।


১৭। পৃথিবীর সবচেয়ে দামী ফুল!

"জুলিয়েট রোজ" নামের এই গোলাপটার আরেকটা নাম হল "৩ মিলিওন পাঊন্ডের গোলাপ"। ৩ মিলিওন পাউন্ড মানে ৩৯ কোটি টাকা! তবে এটা ফুলের নাম বা অভিধাই হবে মনে হয়, সত্যি সত্যি কত দামে বিক্রি হয়েছিল জানি না। কোথাও দামের পাশে 'বিক্রি' কথাটার উল্লেখ নেই, বরং দামটাকে নামের মত উল্লেখ করা হয়েছে। তবে দামটা যদি সত্যি ৩ মিলিওন পাউন্ড না হয়, তবে নামটা অমন হতে যাবে কেন - সেটাও একটা প্রশ্ন বটে। বৃটিশ গোলাপ চাষী ডেভিড অস্টিনের এই ফুল ২০০৬ সালে বৃটেনের 'চেলসি ফ্লাওয়ার শো'-তে প্রথম অবমুক্ত হয়। এটা 'সৃষ্টি' করতে তার নাকি ১৫ বছর সময় লেগেছিল।


১৮। অমূল্য স্বর্গীয় ফুল - কাদুলপুল

শ্রীলঙ্কার 'কাদুলপুল' ফুল আক্ষরিক অর্থেই অমূল্য। কোন পরিমান অর্থ দিয়েই এটা কেনা সম্ভব না। এই প্রায় মীথের মর্যাদা লাভ করা ফুলটি অমূল্য শুধু এর দুর্লভতার কারনেই নয় - এই ফুল এতই ক্ষণস্থায়ী আর নাজুক যে আজ পর্যন্ত কোন পুস্পপ্রেমী বা রাজা-বাদশাও নাকি একে তার কাণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করে অক্ষতরূপে অন্য কাউকে উপহার দিতে পারেননি। তার আগেই এটা ঝরে যায়। ফুলের দোকান তো দূর অস্ত্‌। ফুলটার ফুটন্ত রূপ কদাচিৎ দেখা যায়। আর যখন এটা ফুটে, তখন এটা শুধু রাতেই ফুটে এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যেই ভোর হওয়ার আগেই গুটিয়ে যায়। শ্রীলঙ্কান বৌদ্ধরা বিশ্বাস করেন কাদুলপুল যখন ফুটে তখন 'নাগা'-রা (মীথিকাল একটি শ্রীলঙ্কান গোত্র?) তাদের স্বর্গধামের আবাসস্থল ছেড়ে পৃথিবীতে নেমে আসেন শ্রীপদ পবিত্র পর্বতের উপর গৌতম বুদ্ধকে এই ফুলটা উপহার দেয়ার জন্য। এতই অমূল্য এই পুস্প!



মন্তব্য

এক লহমা এর ছবি

কি অসাধারণ ফুল সব! সংগ্রহে রাখার মত পোস্ট। বুকমার্ক করলাম।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মন মাঝি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

অতিথি লেখক এর ছবি

বাহ!

অনেক ফুল সম্বন্ধে জানলাম। পোস্ট পিডিএফ করে রাখলাম।

হাততালি

ইউক্লিড

মন মাঝি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

অতিথি লেখক এর ছবি

১৩ নাস্বার ছবিটা মানে ঐ মেয়েদের ঠোঁটের মত যে ছবিটা, মনে হলো ফটোশপের এডিট করা যেন! প্রকৃতির কি বিচিত্র খেলা! ভাল লাগলো ফুলের ছবিগুলো দেখে। তবে বলতেই হবে, বাংলার ফুলগুলোর ধারেকাছে কেউ নেই!

-সুষুপ্ত পাঠক

মন মাঝি এর ছবি

হ্যাঁ, প্রকৃতির ফটোশপে এডিট করা বৈকি! হাসি
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

****************************************

মনি শামিম এর ছবি

মন মাঝি ভাই, দি হট লিপ'স ফ্লাওয়ার দেখে তো টাসকিত হয়ে গেলাম!

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

আমি টাসকি খাইছি। অ্যাঁ

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

ড্রাকুলা ফুল দেখে ভয় পাইছি। কেমন জানি ফুলের মাঝে ছোট ছোট কঙ্কালের মত লাগল। ইয়ে, মানে...
অনেক ফুল সম্পর্কে জানলাম, অবাক হলাম, ভাল লাগল। হাসি
সবমিলিয়ে সুন্দর একটা পোস্ট। চলুক

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

মন মাঝি এর ছবি

সহৃদয় মন্তব্যের জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

মন মাঝি এর ছবি

প্রথম যখন দেখি, আমারও একই অনুভূতি হয়েছিল। হাসি

****************************************

পুতুল এর ছবি

পাণ্ডবের বাগান দেইখ্যা পুরাণ কথা মনে পইরা গে্সে। পালার নাম আলমাস গুলরেহান। আলমাস তার সুন্দর ফুল বাগানে ঘুমিয়ে গেছে। তার বাগান এতই সুন্দর যে‌ গুলরেহান পরি দেখতে এসে্ছে সে বাগান। এসসসি পাশের আগ পর্যন্ত মেয়েদের চরিত্রগুলো আবধারিত ভাবে আমাকেই করতে হতো। বলাই বাহুল্য গুলরেহান পরির চরিত্র করতে হয়েছে আমাকেই। পাণ্ডবের জন্য বানানো আপনার বাগানেও গুলরেহান হয়ে আসতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু রাম আর অযোধ্যার কোনটাই নেই।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

মন মাঝি এর ছবি

এইতো, এসেছেনই তো! এই ভার্চুয়াল বাগানে একবিংশ শতাব্দীর ভার্চুয়াল বা সাইবার গুলরেহান হয়ে এসেছেন আরকি। হাসি

****************************************

টিউলিপ এর ছবি

চমৎকার সব ফুলের ছবি দিয়ে মন ভালো করিয়ে দেওয়া পোস্ট।

কয়েকটা অবজারভেশন, ১২ নাম্বারে এটা কী ফুল? আমার তো দেখে পাথরকুঁচি টাইপ মনে হচ্ছে। ক্যাকটাস জাতীয় গাছ।

১৫ তে ফ্লেম লিলির বাংলা নাম মনে হয় উলটচন্ডাল।

আর সব শেষে কাদুলপুলকে নাইটকুইন নামে খুঁজে পাওয়া সহজ হবে। এটাও ক্যাকটাস/পাথরকুঁচি টাইপের গাছ। পাতা নিয়ে লাগিয়ে দিলে হয়ে যাবে। বড় টবে লাগালে ঝেঁপে ফুল আসবে। (আমাদের বাসায় একবার এক গাছে ষোলটা হয়েছিল।) একমাসের মত সময় নিয়ে কলি বড় হয়, তারপর একরাতে ফোটে, অসম্ভব সুন্দর গন্ধ। তবে কথা সেটাই, রাত পোহালেই ঝরে যাবে।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

মন মাঝি এর ছবি

১২ নম্বরেরটা কি ফুল আমিও জানি না! ১৫ নম্বরের বাংলা নামের ব্যাপারে নীচে ষষ্ঠ পাণ্ডবও একই মত দিয়েছেন। তবে তার মতে এর আরেকটা বাংলা নামও আছে - 'বিশালাঙ্গুলী'।
মন্তব্যের জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

গান্ধর্বী এর ছবি

চমৎকার সব ফুল হাততালি
ইয়ে ৭নম্বর ছবিটা দেখে লোভ সামলানো মুশকিল ইয়ে, মানে...

------------------------------------------

'আমি এখন উদয় এবং অস্তের মাঝামাঝি এক দিগন্তে।
হাতে রুপোলী ডট পেন
বুকে লেবুপাতার বাগান।' (পূর্ণেন্দু পত্রী)

মন মাঝি এর ছবি

হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

সেরাম!!!

____________________________

মন মাঝি এর ছবি

হ।

****************************************

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আপনি ফুল ভালোবাসুন আর না-ই বাসুন, অথবা ফুলের ব্যাপারে আপনার আগে আগ্রহ থাকুক বা না-ই থাকুক আমার লেখা পড়ে আপনি নেট ঘাঁটাঘাটি করে কতগুলো অসাধারণ ফুলের ছবি যে আমাদের উপহার দিলেন তাতে আমি ধন্য। আমার নিজের এক বর্গ মিলিমিটার জমিও নেই। নেই বাগান করার মতো ছাদ বা বারান্দা। তাই আমার ফুলের বাগান কল্পনায় আর এমন ভার্চুয়াল।

১. এটা ব্লু প্যাশন-ই বটে। বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, এই লাতিন আমেরিকান ফুলটার একটা বাংলা নাম আছে - ঝুমকা লতা।
২. এই লাল তারা’র ফুলের একটা ইয়ে গুণ আছে। এই ফুলের রস বানিয়ে খেলে নাকি সেটা ট্রাঙ্কুলাইজারের কাজ করে। ডোজ বেশি হলে কী হবে তার জন্য আমি দায়ী না।
৩. এর পরিচয় বের করতে ফেল মারলাম। আগে কখনো দেখিনি।
৪. Amorphophallus গণটি আমাদের দেশী কচুর কাছাকাছি জিনিস। এই গণের অন্য প্রজাতিগুলো যেগুলো এদেশী, তাদের সবার ফুলই কচুফুলের মতো।
৫. বাদুর ফুল উত্তর-পূর্ব ভারতেও জন্মায়। ইউনানে এতোবার গিয়েও এই ফুলটা দেখার সৌভাগ্য কখনো হয়নি। খুব পরিবেশসংবেদী উদ্ভিদ। একটু ঊনিশ-বিশ হলে পটল তোলে।
৬. এই প্যাশন ফ্লাওয়ারটা চিনতে পারলাম না। যে ১২ প্রজাতির প্যাশন ফ্লাওয়ার সচরাচর মেলে এটা তার বাইরে।
৭. চাষটাষ করলে কী হবে জানি না, তবে বাংলাদেশে টিউলিপ হয় না বলেই আমরা জানি। একটা দেশী গাছ আছে যার নামে টিউলিপ আছে। এটা ইন্ডিয়ান টিউলিপ ট্রী বা পলাশপিপুল বা Thespesia populnea। ঢাকায় গণপূর্ত ভবনের কম্পাউন্ডের ভেতরে উত্তর-পশ্চিম কোনের দিকে একটা ব্লু জ্যাকারান্ডা গাছের পাশে একটা একলা পলাশপিপুল আছে। ঢাকার আর কোথাও আছে কিনা জানি না।
৮. এই ফুলের ছবি আগে দেখেছি, তবে বাস্তবে দেখা পেতে হলে কর্ডিলেরা যেতে হবে — অর্থাৎ কপালে নাই।
৯. এরও পরিচয় বের করতে ফেল মারলাম। আগে কখনো দেখিনি।
১০. Stapelia গণের কোন উদ্ভিদই আমাদের দেশে জন্মায় না। সুতরাং একে দেখতে পাবার কোন প্রশ্নই নেই।
১১. Rafflesia arnoldiiদেখার খুব ইচ্ছে আছে। এর জন্য কালীমন্থন যেতেও আপত্তি নেই।
১২. একে আগে দেখিনি। এটা সম্ভবত কোন ফুল নয়। পাথরকুঁচি’র মতো কোন পাতা।
১৩. Psychotria গণের যে দুই/তিনটা প্রজাতি দক্ষিণ-পশ্চিম ভারতে মেলে তাদের কারো চেহারা এতো ইয়ে টাইপ নয়।
১৪. এই ফুলটা উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে পাঠ্য হওয়া উচিত। তাহলে প্রাকটিক্যাল ক্লাসে শিক্ষার্থীরা ঘ্যাঁচাঘ্যাঁচ ডিসেকশন করে ফেলতে পারবে।
১৫. এটা উলটচণ্ডাল। আরেক নাম বিশালাঙ্গুলী।
১৬. Paphiopedilum গণের এক-আধটা প্রজাতি উত্তর-পূর্ব ভারতে মেলে। বাংলাদেশে এটা জন্মানোর প্রাকৃতিক পরিবেশ নেই।
১৭. বামন হয়ে চাঁদের দিকে আর হাত বাড়ালাম না।
১৮. কাদুলপুল না কাদুপুল। বৈজ্ঞানিক নাম Epiphyllum oxypetalum। আপনার দেয়া ছবিটা বেশ চিকনী-চামেলী টাইপ। এর পাঁপড়ি বেশ চওড়াও হয়। নাইট কুইন নামে পরিচিত হলেও এর একটা অপ্রচলিত বাংলা নাম আছে — ব্রহ্মকমল।

পোস্টের জন্য কৃতজ্ঞতা।

পুনশ্চঃ উস্টার সস্‌ আর টাবাস্‌কো সস্‌ দিয়ে কী একটা জিনিস যেন আগুনছাড়া রান্না করে খাবার কথা ছিল। সে ব্যাপারে তো আর কোন অগ্রগতি হলো না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

মন মাঝি এর ছবি

বিস্তারিত মন্তব্যের জন্য অজস্র ধন্যবাদ। মূল ধন্যবাদও আসলে আপনারই প্রাপ্য - আপনার পোস্টের জন্যই না আমি এতগুলি অসামান্য ফুলের সন্ধান পেলাম, ভার্চুয়ালি হলেও উপভোগ করতে পারলাম!

রান্নাবান্নার ব্যাপারটা হয়ে যাবে কোন একদিন - one of these days....

****************************************

মন মাঝি এর ছবি

ও হ্যাঁ, কাদুপুলের ব্যাপারে আমার একটু ধন্দ রয়েই গেল এখনও। এমনকি এখন সন্দেহ হচ্ছে আমি যেটার ছবি দিয়েছি সেটা আসল কাদুপুল কিনা। প্রায় কাদুপুলের মত দেখতে ও আচরণের (নিশিথিণী) মনে হয় আরও কিছু ফুল আছে। আবার নাইটকুইনও মনে হচ্ছে একাধিক ফুলকে ডাকা হয়। উইকিও সেরকম ইঙ্গিত দেয়।

যদিও নেটে অনেক জায়গাতেই কাদুপুলকে Epiphyllum oxypetalum বলা হচ্ছে, কিন্তু উইকির Epiphyllum oxypetalum-এর এন্ট্রিতে না বরং Selenicereus grandiflorus-এর এন্ট্রিতে কাদুপুলকে Selenicereus grandiflorus-এরই প্রচলিত সাধারণ নাম ("Common names") বলা হয়েছে। এবং এটা সারা বছরে নাকি একটি মাত্র রাতেই ফুটে। দুটি ফুলের ছবিতেও প্রচুর মিল। পার্থক্যও আছে - তবে সেটা কতটুকু আসলেই পার্থক্য আর কতটুকু প্রস্ফুটনের ভিন্ন ভিন্ন পর্যায়ে তোলা ছবি বলে - সেটা আমি বুঝতে পারছি না। Epiphyllum oxypetalum-কে এখানে একরকম দেখছি - পিছনের পাতাগুলি বেশ চওড়া, আর Selenicereus grandiflorus-কে এখানে বা এখানে দেখলে পিছনের পাতা (?) গুলিকে 'শুঁড়ের' মত মনে হয় -- এবং এই দুই ফুলের মধ্যে এই দিক থেকে পার্থক্য বিশাল মনে হবে, কিন্তু আবার এখানে দেখলে সেটা অতটা মনে নাও হতে পারে। বেশ কনফিউসিং লাগছে।

Epiphyllum oxypetalum (Dutchman's pipe or queen of the night)-এর এন্ট্রিতে বলা হচ্ছে "It is not a variety of nightblooming Cereus and shouldn't be confused with species of Selenicereus. All Cereus bloom at night and are terrestrial plants, all Epiphyllum are epiphytic"। আবার Selenicereus grandiflorus-এর এন্ট্রিতে বলা হচ্ছে "The species is commonly referred to as Nightblooming Cereus, Queen of the Night (though these two terms are also used for other species), .... The true species is extremely rare in cultivation. Most of the plants under this name belong to other species or hybrids. Often confused with the species of Epiphyllum." আবার পোস্টে আমি যে ছবি দিয়েছি, এখানে একটা ছবি দেখে মনে হচ্ছে উপ্রে পোস্টের কাদুপুলের বা কাদুপুল হিসেবে উপস্থাপিত ফুলটার বৈঃ নাম - Selenicereus wercklei। অনেকগুলি ভিন্ন ফুলই দেখা যাচ্ছে আসলে খুব কাছাকাছি দেখতে। শুধু ছবি দেখে এর মধ্যে কোনটা যে কোনটা তা তালগোল পাকিয়ে ফেলার সমূহ সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে! হাসি

****************************************

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

দূর্দান্ত!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

মন মাঝি এর ছবি

হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

সংশপ্তক  এর ছবি

শত শত ফুলসমেত ১টা প্যাশন গাছ আসলেই অসম্ভব সুন্দর।

মন মাঝি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক দারুণ!
ছবিগুলি সহ ফুলের পরিচয়ের কথা বলছি তার মানে গোটা রচনার কথাই বলছি।
অতিথিলেখকঃ মনোবর

তাহসিন রেজা এর ছবি

কি অসাধারণ ফুল সব!

------------------------------------------------------------------------------------------------------------
“We sit in the mud, my friend, and reach for the stars.”

অলীক জানালা _________

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

হট লিপ্‌স ফ্লাওয়ার আর কালো বাদুড় ফুল তো দারুণ! অসাধারণ ফুলের বাগান।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

মন মাঝি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

****************************************

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

দারুণ একটা পোস্ট হাততালি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।