অবশেষে বঙ্গবন্ধুর নবুওয়ত লাভ, আর দলে দলে লোকের শান্তির পতাকাতলে প্রবেশ

জ্বিনের বাদশা এর ছবি
লিখেছেন জ্বিনের বাদশা (তারিখ: মঙ্গল, ২৪/০২/২০০৯ - ৭:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্যাটায়ার করে কবিতা লিখেছেন জনৈক বড় আমলা, সম্ভবতঃ তথ্যসচিব, মিঃ ফজলুল করিম। কবিতার বইটি সম্ভবতঃ এবারের একুশের গ্রন্থমেলাতেই প্রকাশিত হয়েছে, যার একটি কবিতায় তিনি "লতিফুর রহমান" নামের একব্যক্তির "আলুবোখারা" উপাধিপ্রাপ্তি নিয়ে কিছু হাস্যরস বা স্যাটায়ার সৃষ্টির চেষ্টা করেছেন। কবিতাটি আমি পড়িনি, তাও সরল বিশ্বাসে প্রথম আলোর বক্তব্যকে মেনে নিচ্ছি। এই স্যাটায়ারটাকে অনেকেই "শেখ মুজিবুর রহমানের বঙ্গবন্ধু উপাধিপ্রাপ্তিকে কটাক্ষ" করা বলে মনে করেছেন। যদিও উপরোক্ত কবি এর সত্যতা অস্বীকার করেছেন। শুধু তাইনা, তারপরও যদি কেউ এতে কষ্ট বা আঘাত পেয়ে থাকেন, তারজন্য তাদের কাছে কবি ক্ষমাও চেয়ে নিয়েছেন। যদিও ক্ষমা মহৎ গুণ, তবে এতকিছুতেও সব থেমে থাকেনি, কবির লাভ হয়নি, শাস্তি তাঁকে পেতে হয়েছে ঠিকই; মানে, বাধ্যতামূলক অবসর নিতে হয়েছে। আর বইটির যে ভবিষ্যৎ কি, তা নিয়ে নিশ্চয়ই কোন ভবিষ্যদ্বাণীরও দরকার নেই।

দাউদ হায়দার থেকে শুরু করে তসলিমা নাসরীন, হুমায়ূন আজাদ, কার্টুনিস্ট আরিফুর রহমান পর্যন্ত সবাই উপরের মতো ভাগ্য বরণ করেছেন, হয়তো শাস্তির স্কেল ভিন্ন ছিলো। কাউকে হয়তো দেশ ছাড়তে হয়েছে, কারো জীবন হুমকির সম্মুখীন হয়েছে, কাউকে কিছুদিন জেলে কাটিয়ে লোকচক্ষুর অগোচরে মুক্তি পেতে হয়েছে, যেমনটি হয়েছে ফজলুল করিমের বেলায় বাধ্যতামূলক অবসর গ্রহনের মাধ্যমে। উপরন্তু এদের সবার আরেকটি মিল হলো, সংশ্লিষ্ট প্রকাশনাটি নিষিদ্ধ হয়েছে। তবে অমিল একটা আছে, সেটা শুধু এখানেই যে ফজলুল করিম ছাড়া বাকী সবার ক্ষেত্রে কটাক্ষের অভিযোগ এসেছে মুসলিমদের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) বা ইসলাম ধর্মকে নিয়ে। ধর্মীয় মহাপুরুষদের নিয়ে কটাক্ষের অভিযোগের ক্ষেত্রে মাঠগরম, এবং তার ফলাফল হিসেবে অভিযুক্ত কটাক্ষকারীর শাস্তি আমরা প্রত্যক্ষ করে এসেছি এতদিন, আর এবার প্রত্যক্ষ করলাম রাজনৈতিক নেতাকে নিয়ে কটাক্ষ করার শাস্তি।

মহাপুরুষই হোক, রাজনৈতিক নেতাই হোক, কটাক্ষ করা নিয়ে বাদানুবাদ, বিতর্ক, কটাক্ষ করাটা উচিত কি অনুচিত হয়েছে সেটা নিয়ে মতামত প্রদান, আলোচনা -- এসব হতেই পারে। তবে সেটা শাস্তি পর্যন্ত গড়ালে বা তারজন্য সাহিত্যের উপর প্রতিবন্ধকতা আসলে, মুখে টেপ মেরে দিলে সেটাকে মেনে নিতে পারিনা। একটা বাজে অনুভূতি হয়। যেমনটা এঘটনাটি পড়েও হচ্ছে, যেন মনে হচ্ছে, আওয়ামী লীগের ভূমিধ্বস বিজয় বঙ্গবন্ধুকে নবুওয়তই এনে দিলো নাকি!!

তবে এখানে সবচেয়ে আশ্চর্য ব্যাপারটা হচ্ছে আমাদের সাহিত্য-অঙ্গনের সুশীলদের, মানে প্রগতিশীলতার ধ্বজাধারীদের ভূমিকা। কেউ টুঁ শব্দটি পর্যন্ত করছেননা! সবাই কি তাহলে দলে দলে শান্তির পতাকাতলে অবস্থান গ্রহন করতে চাচ্ছেন রাতারাতি?এঁদের কারুর কি মেরুদন্ডতে সে পরিমাণ জোর নেই যে তারা একবার জনাব ফজলুল করিমের মুক্ত মনে সাহিত্য করার অধিকারের পক্ষে, মুক্তচিন্তার অধিকারের পক্ষে দাঁড়াবেন?এরা এরপর কোনমুখে আরিফুর বা তসলিমার জন্য মিছিল করবেন?

তবে সবচেয়ে মজার ঘটনাটা ঘটিয়েছে আওয়ামী লীগ নিজেই। এতদিন এধরনের নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে আওয়ামী লীগও আবছাভাবে হলেও মোটামুটি সুশীল অবস্থানই নিয়েছে, অন্ততঃ এর মূলধারাটি তাই করেছে। তাই ফজলুল করিমের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগটি তারা মূলধারার মাধ্যমে আনাতে শরম পেয়েছেন, আনিয়েছেন ঠিকই মার্কামারা লোকদের দিয়ে, মানে আওয়ামী উলামা লীগের মাধ্যমে।

বিঃ দ্রঃ লেখাটা লিখে টিখে মনে হলো, এটার জন্য আমাকেও কি বাধ্যতামূলক অবসর নিতে হবে?
মুছে ফেলতে হলে মডুরা আগেভাগেই বলে দিয়েন, বিয়ে করেছি দুবছর হলো মাত্র, এখনই অবসর নিতে হলে মহাসাগরে পড়বো।


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

অনেকের কাছেই নবীর গুরুত্ব বঙ্গবন্ধুর চেয়ে বেশি। অন্তত সেদিকে থেকে এটা দিয়ে আগেরগুলা জাস্টিফাইড হলো। চোখ টিপি

লেখাটার শিরোনামের কারণে কারো কিছু দাঁড়িয়ে যেতে পারে এবং আপনাকে মুর্তাদ ঘোষণা-সহ ফাঁসির দাবী ওঠাও বিচিত্র নয় খাইছে

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

বলেন কি ভাই? আমি তো আল্লাহ-রসুলরে অস্বীকার করিনাই!! মন খারাপ
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

অপব্যাখ্যা করার লোকের তো অভাব নাই রে ভাই (রসিকতা করেছিলাম আরকি)।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

আমিও রসিকতা করেই বলেছি চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

রাগিব এর ছবি

আজকে পেপারে পড়লাম, ফজলুল করিমের চাকুরি গেছে ... বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে তাকে আওয়ামী লীগ।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

বাংলাদেশে বসে কেউ এটার সমালোচনা করার অধিকার কি তাহলে হারিয়েছে?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

আপনার এই দীর্ঘ পোস্টকে পন্ডশ্রম করে দিয়েছেন আবু করিম নিজেই।
আপনি হয়তো খেয়াল করেননি যে মামলা হওয়ার পর এবং সমালোচনা শুরু হওয়ায় আবু করিম নিজেই বলেছেন যে এই কবিতায় তিনি বঙ্গবন্ধু বা তার পরিবারকে সমালোচনা করেননি।
সেইসাথে তিনি এও বলেছেন যদি কেউ তারপরও এই কবিতা পড়ে মনে দু:খ পেয়ে থাকেন তবে তার জন্য তিনি নি:শর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করছেন।

অর্থাৎ তার অবস্থানটা তসলিমা নাসরিন বা হুমায়ূন আজাদের মত নয়। যারা তাদের বিশ্বাস বা চেতনার একটা অবস্থান থেকে লেখাগুলো লিখেছিলেন। এবং সেই অবস্থান থেকে তারা ফিরে আসেননি বা তার জন্য ক্ষমাও চাননি। বা তারা বলেননি আমার লেখাকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

আবু করিমের দুর্ভাগ্য যে তিনি কবি হিসেবে দৈনিক পত্রিকার সংবাদ হলেন চাকুরি হারানো পর এবং অতি দুর্বল একটি রচনার জন্য।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

আবু করিমের স্বীকোরক্তিটি কিন্তু আমি পোস্টে দিয়েছি, এবং তারপরও যে তিনি ক্ষমা পাননি (হায়রে ক্ষমা!!) সেটা নিয়ে কিছুটা আক্ষেপও প্রকাশ করেছি।

এখানে বরং আমি আরেকটি নতুন ডাইমেনশনের যোগ দেখতে পাই ... আরিফুরও ক্ষমা চেয়েছিলো, এবং সেটা যে সরকারী চাপে সেটা নিশ্চয়ই আমরা ভুলিনি ... আবু করিমের বেলাতেও যে একই ঘটনা ঘটেনি তার নিশ্চয়তা কি?... অন্ততঃ বাধ্যতামূলক অবসর তো সেরকম ইঙ্গিতই করে

তসলিমা নাসরিন বা হুমায়ূন আজাদের পক্ষে দাঁড়ানোর লোক ছিলো (অন্ততঃ যেযময় প্রগতিশীল ব্লকের ভূমিকা তো তাই বলে), অথবা তাঁরা হয়তো বেশী সাহসী .... তাই বলে কি যার পক্ষে দাঁড়ানোর লোক নেই বা যার অত সাহস নেই, তাঁর বাকস্বাধীনতায় আঘাত হানা যায়?

আর, আবু করিম কিন্তু চাকুরী হারানোর আগেই সংবাদ শিরোনাম হয়েছেন, গতকালও তাঁর খবর বেরিয়েছে, এ্যাকশন নিতে সময় লেগেছে একদিনেরও কম ... সেহিসেবে ব্যাপারটার গভীরতা নবী আউলিয়াদেরও ছাড়িয়ে গেছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

অনিকেত এর ছবি

আচ্ছা,এখন শেখ মুজিবর রহমান কে কি তাহলে "হযরত হুযুরে কেবলা বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা শেখ মুজিবর রহমান (রাঃ)" হিসেবে ডাকাডাকি করতে হবে নাকি?

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

না রে ভাই, আমার মাঝেমাঝে বঙ্গবন্ধুরে বেচারা মনে হয় ... বেঁচে থাকলে উনি হয়তো ফজলুল করিমকে একবেলা চা খাওয়ার জন্যই ডাকতেন ...
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

ভাঙ্গা মানুষ [অতিথি] এর ছবি

আমি একমত

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আবু করিম দাবি করেছেন, তিনি বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করেননি। বরং তার লেখাকে অপব্যাখা করা হয়েছে। আচ্ছা, তিনি যদি বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করে কবিতা লিখেও থাকেন, তাহলেও কি তার চাকরি যেতে পারে! হায়রে আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা!

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

হুমমম
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হিমু এর ছবি

আমি সাবেক তথ্যসচিব আবু করিমের কবিতাটি দৈনিক প্রথম আলোর বরাতে পড়েছি। সেখানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষে আমার কিছু এসে যায়নি। কিন্তু লক্ষ্য করেছি, কবিসাহেব অবলীলাক্রমে কটাক্ষ করেছেন শহীদদের সংখ্যা নিয়ে। তিনি বলতে চেয়েছেন, "আলুবোখারা"র নেতৃত্বাধীন লোকজন ঠিকমতো গুণতে জানতো না, ত্রিশ হাজার বলতে গিয়ে ত্রিশ লক্ষ বলে ফেলতো।

আমি মনে করি, সরকারী কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে যাদের এ সংখ্যা নিয়ে সংশয় আছে, তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া উচিত অবিলম্বে। এ প্রসঙ্গে আরেক সাবেক সচিব, জামাতের চিন্তারথ [থিঙ্কট্যাঙ্কের বাংলা করলাম] শাহ হান্নানের কথা মনে পড়লো। সেদিন সে আবারও একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেছে, বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের কোন যুদ্ধ হয়নি, সে নাকি বইপুস্তকে পড়েছে যুদ্ধ হয়েছিলো ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে। যুদ্ধের নয়মাস রিপ ভ্যান উইঙ্কলের মতো নিদ্রিত না থাকলে এ নিয়ে কোন বাংলাদেশীর সংশয় থাকা উচিত না।

আমরা বঙ্গবন্ধুর কটাক্ষ মেনে নিতে পারি হাসিমুখে, কবির অধিকার নিয়ে কথা বলতে পারি, কিন্তু কিছুতেই কেন যেন বলতে পারি না, বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে কর্মরত যে লোকটি শহীদদের সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে হামুদুর রহমান কমিশনের সঙ্গে সহমত পোষণ করে, সে একটি অন্যায় করে। এবং এই অন্যায়ের শাস্তিও আমরা চাইতে পারি না।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

হযবরল এর ছবি

হিমুর মন্তব্যে একটা ফুটনোট দিই, শাহ হান্নান বলেছিলেন "তিনি বিভিন্ন তথ্যসূত্র এবং বই-পুস্তক ঘেঁটে জেনেছেন এটা ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধ "।

আমার বক্ত্যে, "একটা দেশের সম সাময়িক নাগরিক হয়ে যুদ্ধের পক্ষ-প্রতিপক্ষ জানবার জন্য এবং যুদ্ধের প্রকৃতি বুঝবার জন্য যদি বই-পুস্তক দরকার হয়; তবে আমি শাহ হান্নানের মানবিকবোধ আছে সে বিষয়ে সন্দেহ পোষন করি। আমার মনে হয়েছে লোকটা একটা ঢাঁহা মিথ্যুক। "

হযবরল এর ছবি

আর একটা কথা, কিছুদিন আগেই আমেরিকায় একটা আইন পাশ হয়েছে সেটা হচ্ছে; তার্কিশ কতৃর্ক আর্মেনিয়দের গণহত্যা বিষয়ে। তার্কিশরা, আর্মেনিয়দের হত্যা করেছে এবং এটা একটা গণহত্যা, এই বক্তব্য অস্বীকার করাটাও একটা শাস্তি। আমাদের যুদ্ধের শহীদের সংখ্যা অস্বীকার করাটা, শহীদদের অসম্মান করবার শামিল।

নদী এর ছবি

অবসরে যাবার পর মি: ফজলুল করিম "বোখারায়" আলু বেচতেন কিনা জানি না, তবে এখন তিনি "বোখারায়" মুকুট নিয়েই আসবেন নি:সন্দেহে। তবে কালের মাপে তা কতটুকু টেকসই কাল-ই তা বলে দেবে।
"দাউদ হায়দার থেকে শুরু করে তসলিমা নাসরীন, হুমায়ূন আজাদ, কার্টুনিস্ট আরিফুর রহমান" এদের সাথে ভোটের রাজনীতি যুক্ত ছিল; কমন অপজিশন টু অল রাইটিষ্টস। এটা সেদিক দিয়ে আলাদা।
তবে এই একই কাব্য সাকাচৌ লিখলে মুক্তচিন্তা করা সহজ হতো কি? ৭১ কে "গন্ডগোলের বছর" বললে মুক্তচিন্তা করা সহজ হয় কি? (পুরা কবিতাটি পড়ার পর এটাও বুঝা যায়, কবির ৭১ নিয়েও এলার্জি আছে)।

যাইহোক, মানুষকে গালি দেবার স্বাধীনতা দেওয়া উচিৎ। রাশিয়ানরা এখানে ভুল করেছিল। মানুষকে খাবার না দিলেও কথা বলার সুযোগ দেওয়া দরকার। আমেরিকানরা সেই ভুল করে নাই। তাই তারা এখন ব্যবসাগুলোকে "ন্যাশনালাইজ" করার সুযোগ পেয়েছে! (রাশিয়ানরা মন্দ কিন্তু সোশালিজম ভাল!)

অন্যদিকে আমি কতটা ভালো বা মন্দ তার জন্য একটা মাপকাঠিও দরকার। এরজন্য কবিতাটি রেফারেন্স হিসাবে থাকতে পারে। কাঁটা না থাকলে গোলাপকে কচুরিপানা মনে হতেই পারে!

নদী

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

হ্যাঁ ঠিক বলেছেন, গালি দেবার স্বাধীনতাই যথেষ্ট।
আরেকটি ব্লগে জামাতী ছাগুদল বাকস্বাধীনতা চায়, আমি তাদেরকে কয়েক কমেন্টে বলেছি, তোমাদের বাকস্বাধীনতায় আমার আপত্তি নেই, তবে সেটার বিপরীতে লোকে যে তোমাকে গালিগালাজ করতে পারবে, সে স্বাধীনতাটুকুও থাকা জরূরী। সেখানেই শোধবোধ।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হিমু এর ছবি

আর, যদিও বঙ্গবন্ধুর অনেক কীর্তি আমার পছন্দ নয়, তারপরও তাঁকে স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে মেনে নিয়ে বলতে চাই, তিনি পথপ্রদর্শক ছিলেন, ঈশ্বরের নয়, স্বাধীনতার। তিনি সাড়ে সাত কোটি লোকের নেতা ছিলেন। তাঁর রাজনৈতিক জীবন নিয়ে প্রশ্ন তোলা সমীচীন, কিন্তু সপরিবারে তাঁর নৃশংস হত্যাকান্ড নিয়ে "স্যাটায়ার" করা কোন ভদ্রলোকের কাজ হতে পারে না। জেনারেল জিয়াকে আমি পছন্দ করি না, কিন্তু কখনো মনে হয়নি, এই লোকের মৃত্যু নিয়ে স্যাটায়ার করা উচিত। ভূট্টোর মতো পিশাচকে ফাঁসির দড়িতে ঝোলানো হয়েছে, আজ পর্যন্ত এ মৃত্যু নিয়ে কাউকে তো স্যাটায়ার করতে শুনিনি।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

অনিশ্চিত এর ছবি

এই কথাগুলো আমিও লিখতে চেয়েছিলাম। যে ব্যক্তি শহীদদের সংখ্যা নিয়ে এমন লাইন লিখতে পারে, তাকে কী বলা উচিত বুঝতে পারছি না।
‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

‌‌-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!

বিপ্র  এর ছবি

উনাকে 'জনস্বার্থে' অবসর দেয়া হয়েছে... খেয়াল কৈরা! আসলে সরকার ভেবেছে এতোবড় কবি কেন শুধু শুধু আমলাগিরি করে তার কাব্য প্রতিভার অপচয় করবেন। বরং উনাকে অবসর দেয়া হলে জনগন অনেক সুপাঠ্য কবিতা পেতে পারে। দিন বদলাচ্ছে না...এখন মৌলিক চাহিদা পূরণের পাশপাশি সরকারকে এসব ব্যাপারেও চিন্তাভাবনা করতে হয়। কবিকে অবসর দেয়ার আইডিয়া এরশাদচাচার কিনা কে জানে...মহাজোটে তো আর কোন কবি চোখে পড়ে না...

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

আসলেই তো! মহাজোটে কবি তো দেখিনা!
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হিমু এর ছবি

আপনার লেখাটিতে আরেকটি জিনিস খটকা লাগলো, সেটি হচ্ছে আপনি কার্টুনিস্ট আরিফুর রহমানকে রাসূল (সাঃ) এর কটাক্ষকারী হিসেবে চিহ্নিত করেছেন দেখে। আমি অত্যন্ত বিস্মিত আপনার পর্যবেক্ষণ দেখে। আপনি যা লিখলেন, তা কি আপনি বিশ্বাস করেন? আপনার কি মনে হয় ঐ গ্রাম্য কৌতুকটি, যেটিকে আরিফ কার্টুনরূপ দিয়েছিলো, সেখানে মুহাম্মদের প্রতি কোন কটাক্ষ আছে?

হুমায়ূন আজাদ স্বাধীনতাবিরোধীদের বিরাগভাজন হয়েছিলেন "পাক সার জমিন সাদ বাদ" লিখে। সেখানে মুহাম্মদের প্রতি কটাক্ষ কোথায় খুঁজে পেলেন আপনি?

তসলিমা নাসরিন মৌলবাদীদের বিরাগভাজন হয়েছিলেন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নিপীড়ন নিয়ে একটি উপন্যাস লিখে। এখানে মুহাম্মদের প্রতি কটাক্ষ কোথায় খুঁজে পেলেন আপনি?

আপনার লেখার শিরোনামের সাথে সামঞ্জস্য দেবার জন্যেই কি এমনটা বললেন? আরিফকে যারা নবীর অবমাননাকারী বলে হল্লা করেছে, তাদের কাতারে দাঁড়ালেন?



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

আপনি সম্ভবতঃ খানিকটা উত্তেজিত, যেজন্য সবকিছু ঠিকমতো ধরতে পারছেননা
আমি বলছিনা তারা নবীকে অবমাননা করেছেন, আমি বলছি তাদের সবার বিরুদ্ধে একই রকম অভিযোগ এসেছে ... আচ্ছা আপনার তেমন সমস্যা হলে নবী শব্দের সাথে ইসলাম শব্দটাও জুড়ে দিতে পারেন ... মূল সমস্যাটা কিন্তু কে কাকে অপমান করেছে তা নিয়ে নয় ... কার বিরুদ্ধে কাকে অপমানের অভিযোগে কি ঘটেছে সেটা নিয়ে

আপনাকে প্রশ্ন করা যেতে পারে, আরিফুর/হুমায়ূন আজাদ/তসলিমা এরা যদি সরাসরি মুহম্মদকে কটাক্ষ করতেন, আর সেটারে জন্য যদি তাদের শাস্তি হতো, বই বাতিল হতো -- আপনি মানতেন?

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হিমু এর ছবি

আমি আসলে একদমই উত্তেজিত নই। আমার কোন বাক্যে উত্তেজনা প্রকাশ পেয়ে থাকলে দুঃখিত।

তবে অমিল একটা আছে, সেটা শুধু এখানেই যে ফজলুল করিম ছাড়া বাকী সবার কটাক্ষের ব্যক্তিটি হচ্ছেন মুসলিমদের নবী মুহাম্মদ (সাঃ)।

আমার মনে হয় আপনি যা বোঝাতে চেয়েছিলেন, তা এ বাক্যে একদমই ফুটে ওঠেনি।

সরাসরি মুহম্মদকে কটাক্ষ করা হলে আমি আহত হতাম। আমি নিজে তার অনুসারী নই কোন অর্থেই, কিন্তু তার মানে এ-ই নয় যে তাকে কটাক্ষ করাকে শোভন বলবো। আমি বই বাতিল করার বিপক্ষে। আর শাস্তি কে দিচ্ছে, কী নিয়ম অনুসারে দিচ্ছে, কী শাস্তি দিচ্ছে, সেটা তো একটা প্রশ্ন। বুলবুলি মওলানা শাস্তি দিতে চাইলে আমি মেনে নেবো না। যদি এ আচরণ কটাক্ষকারীর কর্মরত প্রতিষ্ঠানের রুলস অব বিজনেস ভঙ্গ করে, এবং তার ফলে তার চাকরি যায়, তাহলে কিছু বলবো না। রাস্তাঘাট থেকে কোন এক অশিক্ষিত লোক তাকে শাস্তি দিতে এলে প্রতিবাদ জানাবো।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

আমি খেয়াল করিনি যে বাক্যটি আমি এভাবে লিখেছি .... যাহোক এটাকে যদি বদলে এভাবে বলি যে "বাকী সবার বিরুদ্ধে মুহম্মদ(সাঃ)কে কটাক্ষ করার অভিযোগ এসেছে" তাতেও আমার বক্তব্যের কোন হেরফের হয়না ...ঠিক করে দিচ্ছি।

ইনফ্যাক্ট আমি উনাদের কাউকেই দোষ দিতে চাইনি যে তারা মুহম্মদকে কটাক্ষ করেছেন ... বক্তব্যটার মূল সুরটা আশা করি ধরতে পেরেছেন, যে এতদিন এসব হট্টগোল/শাস্তি/নিষেধাজ্ঞা হতো নবী-রাসুল-ধর্মের অবমাননা নিয়ে, জনগনের অনুভূতির আঘাতের কথা বলে, এখন দেখা যাচ্ছে যেটা রাজনৈতিক নেতাদের বেলায়ও প্রয়োগ হতে শুরু করেছে।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

হিমুর দুটো কমেন্টের জবাব একসাথে দিচ্ছি:

আমি সম্ভবতঃ উল্লেখ করেছি যে আমার তথ্যের সোর্স প্রথম আলো, এবং সেখানে অভিযোগের কারণ হিসেবে উল্লেখ আছে "শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর ছেলেদের নামে কটুক্তি" ... সম্ভবতঃ উলামা লীগও একই অভিযোগ দায়ের করেছে ...এবং সম্ভবতঃ ত্রিশ লক্ষকে ত্রিশ হাজার বলা না, "আলু বোখারা"সংক্রান্ত কটাক্ষের কারণেই তাঁকে অবসর দেয়া হয়েছে

এখন আসি ৩০ লাখ/হাজার -এর প্রসঙ্গে ... অবশ্যই আমরা এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ করতে পারি ... প্রতিবাদই কি এর একমাত্র দাওয়া নয়? ... নাকি আপনি আইন করতে বলছেন যে, "৭১ এর শহীদদের সংখ্যা ৩০ লক্ষ" এই তথ্যটাকে অস্বীকার করে কেউ কোন বক্তব্য দিতে পারবেনা, দিলে চাকরী যাবে, বা অন্যান্য শাস্তি হবে... তাহলে কোনমুখে ব্লাসফেমী আইনের নিন্দা করা যায়?
আমার মতে এগুলোর জবাব তথ্য এবং বিশ্লেষণে দেয়াই ভালো ...

আপনি কি নিশ্চিত বঙ্গবন্ধুর আর তাঁর পরিবারের মৃত্যুকে কটাক্ষ করেছেন আবু করিম ... তাহলে সে একটা নোংরাতম লোক ...তবে তারপরও তার গলা টিপে ধরার বা লেখার স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপকে সমর্থন করতে পারিনা

আমাদের পয়েন্টটা অন্যখানে ... আপনি কি মনে করেন লেখকের স্বাধীনতা খর্ব হতে দেয়া উচিত? ... যদি বলেন সেটা কেইস ডিপেন্ডেন্ট, তাহলে নানান লোক কি নানান কেইস নিয়ে আসবেনা?

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হিমু এর ছবি

আমি পরিষ্কারভাবে আবু করিমের বই নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে। কিন্তু সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে তাকে যে শাস্তি দেয়া হয়েছে, তা তার জন্যে যথাযথ মনে করি ঐ একটি কারণে। ত্রিশ লক্ষ না ত্রিশ হাজার, এই বক্তব্য কাদের, সেটা আমি খুব ভালোই জানি। আমি মনে করি না, বাংলাদেশ সরকারে কোন দায়িত্ব পালনরত ব্যক্তির এই সংশয় থাকা উচিত। সম্ভব হলে তা রুলস অব বিজনেসে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। কারণ এই সংশয়টি পরাজিত হানাদারপক্ষের সৃষ্ট। যারা এর দিকে ঝোল টানে, তারাও হানাদারের সমর্থক এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী। কোন উত্তরাধুনিক বিতর্ক এখানে নেই। ইটস প্লেইন অ্যান্ড সিম্পল। সংশয় থাকলে সরকারী চাকরি ছেড়ে দিয়ে সংশয়চর্চা ও গবেষণা করা যেতে পারে।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

এখানে কিন্তুএ কটা রেড হেরিং হচ্ছে হিমু ... কোনভাবেই এটা বলা যাচ্ছেনা যে তাকে সরকারী চাকুরী থেকে অব্যহতি দেয়া হচ্ছে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে মিথ্যাচারের কারণে ... এই দেশে ইনকিলাব গং বিশ বছর আগের থেকে এই প্রচারণা শুরু করছে... শতশত জামাতী/আধাজামাতী/ছুপাজামাতীরা (হয়ত এই আবু করিমও এগুলোর কোন একটা, কে জানে?) হাজার হাজার আর্টিকেল লিখছে শহীদদের সংখ্যা নিয়া -- কোনদিন কোন সরকারকে কিছু করতে দেখলামনা !!!

আর আজকে আবু করিম বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করায় তার চাকরী গেলো এবং রেড হেরিংয়ে সেটার দায় দিচ্ছেন তার শহীদের সংখ্যা নিয়ে মিথ্যাচারে ... এটা কিন্তু বাঘ-মোষের গল্প মনে করিয়ে দেয়

আপনি কোনটা মনে করেন? তার চাকরী যাবার কারণ কি?
শহীদদের সংখ্যা নিয়ে মিথ্যাচারের কারণে, নাকি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষের কারণে?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হিমু এর ছবি

কী কারণে তাঁকে সরকারি চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে, তা আমি পড়িনি। খবরের কাগজে শুধু বলেছে, এরকম অবসর দেয়ার এখতিয়ার সরকারের আছে। আমার মনে কোন সন্দেহ নেই, যে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তির্যক মন্তব্য করার কারণেই তার এই পরিণতি। আমি বলেছি, আমার কাছে তার এই শাস্তি যথাযথ বলে মনে হয়েছে, এবং ব্যাখ্যা করেছি কী কারণে মনে হয়েছে। যদি এমন হতো, তিনি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় সম্পর্কে কোন কটূক্তি করেননি, কেবল বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে "স্যাটায়ার" করার কারণেই তার ওপর খড়্গ নেমে এসেছে, আমার প্রতিক্রিয়া নিশ্চয়ই ভিন্ন হতো।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ভাই, একমত হইতে পারলামনা। চাকুরীর বাইরের জীবনে নিজের লেখালেখিতে দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়া মিথ্যাচারের জন্য যদি রাষ্ট্র কারো চাকুরী খায়, তাহলে সেটা ক্রমে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র হইতে বাধ্য (অবশ্য আমাদের রাষ্ট্র অলরেডী ফ্যাসিস্টই চোখ টিপি)

এখানে মূল পয়েন্টটা কি? দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস, নাকি মিথ্যাচার? স্বাধীনতার ইতিহাস হলে সার্বভৌমত্বকেই বা গুরুত্ব দিবোনা কেন, এই বলে রাষ্ট্র কিন্তু পাহাড়ের অপরাধ ঢাকার কাজেও এরকম ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে, ধরুন একজন কিছু নিয়ে বাড়িয়ে বললো, সেক্ষেত্রে। ধরুন পাহাড়ে আর্মির আক্রমণে ১০ হাজার মারা গেছে, কেউ তাঁর বইয়ে লিখলেন ১ লাখ মারা গেছে। দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে মিথ্যাচারের কারণে তার চাকুরী চলে যাবে!!

তার চেয়েও বড় কথা, একলোক লিখলো ৭১ এ ৩০ হাজার বাঙালী নিহত হয়েছে, তাকে যথাযথভাবে কন্টেস্ট করা না তার চাকুরী খাওয়া -- কোন কাজটায় তাকে মিথ্যা প্রমাণ করাটা বেশী সম্ভব?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হাসান মোরশেদ এর ছবি

দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়া মিথ্যাচারের জন্য যদি রাষ্ট্র কারো চাকুরী খায়, তাহলে সেটা ক্রমে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র হইতে বাধ্য

বুঝলাম না । দেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচারের শাস্তি দিলে রাষ্ট্র ফ্যাসিষ্ট হয়ে যায়! কেমনে?
তাহলে ফ্যাসিষ্ট না হওয়ার জন্য রাষ্ট্র কোন মিথ্যাচারীকে শাস্তি দিতে পারবেনা?
-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

প্রথমতঃ, মিথ্যাচারটা সে তার প্রশাসনিক কাজে করে নি যে রাষ্ট্র তাকে শাস্তি দিতে পারবে। যদি তথ্যসচিব হিসেবে রাষ্ট্রীয় কোন তথ্যবিজ্ঞপ্তিতে আবু করিম এই কাজ করতেন, হ্যাঁ, তার শাস্তি জরূরী হয়ে পড়ে।
কিন্তু সাহিত্যকর্মে/প্রবন্ধে মিথ্যাচার তো অহরহ হচ্ছে!! সেটার জন্য কি শাস্তি প্রযোজ্য? ৩০ লাখ শহীদ নিয়ে কন্সপিরেসী থিওরী তো আবু করিম শুরু করেননি, কত সাহিত্যিক/প্রাবন্ধিকই গত বিশ-পঁচিশ বছর ধরে করে আসছে --কারুর তো শাস্তি হলোনা! নাকি সরকারী চাকুরী করলে সাহিত্যকর্ম রয়েসয়ে করতে হবে বলে কথা আছে?

রাষ্ট্র যদি নাগরিকদের সাহিত্যাচারে এইভাবে বাঁধা দেয়, তাহলে তো নাগরিককে মুখ বন্ধ করে ফেলতে হবে। কারণ, আজ অভ্যুদয়ের ইতিহাসকে কোর ফ্যাক্টসের আওতায় মিথ্যাচার করা যাবেনা বলা হলো, "কাল যে দেশের নিরাপত্তার খাতিরে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা যাবেনা" টাইপের যুক্তির ভিত্তিতে নতুন থাবা বসবেনা তার কিন্তু কোন নিশ্চয়তা পাইনা। কারণ, রাষ্ট্রে একবার এরকম বলপ্রয়োগের টেন্ডেন্সী চালু হলে সেটা যে সবসময় একেবারে সত্যকে পুরোপুরি ধারন করবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই, বরং রাষ্ট্রযন্ত্র এসব অনুশীলনের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে দানবেই যে বিবর্তিত হয় সেটা হরহামেশা দেখা যায়। আমার মনে হয়, এধরনের কাজ জাতিকে খুব উগ্র ন্যাশনালিজমের দিকে ধাবিত করবে।
তাই, এসব বিষয় নিয়ে "কলমের জবাবে কলম" রাখাটাই আমি সঠিক মনে করি।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হাসান মোরশেদ এর ছবি

রাষ্ট্র যদি নাগরিকদের সাহিত্যাচারে এইভাবে বাঁধা দেয়, তাহলে তো নাগরিককে মুখ বন্ধ করে ফেলতে হবে। কারণ, আজ অভ্যুদয়ের ইতিহাসকে কোর ফ্যাক্টসের আওতায় মিথ্যাচার করা যাবেনা বলা হলো, "কাল যে দেশের নিরাপত্তার খাতিরে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করা যাবেনা" টাইপের যুক্তির ভিত্তিতে নতুন থাবা বসবেনা তার কিন্তু কোন নিশ্চয়তা পাইনা।

আপনি কি বলতে চাইছেন- একটা রাষ্ট্রের জন্মইতিহাসকে বিকৃত করা এবং মিথ্যাচার ও সাহিত্যাচার?
যদি উত্তর হ্যাঁ হয়- তাহলে আপনার সাথে কথা বাড়ানোর দরকার দেখিনা আর ।

যদি উত্তর 'না' হয় তাহলে পরবর্তী কথা হোক ।
ইতিহাস বিকৃতি ও মিথ্যাচার কি শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়? অতীতে অন্যদের একই অপরাধে শাস্তি হয়নি- এই যুক্তি কি শাস্তিপ্রাপ্য কারো শাস্তিকে ভয়েড করতে পারে? তাহলে আমরা খামোকা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী তুলছিনা কেনো? ৩৭ বছর হয়নি, এখন আর করে কি হবে?

আবু করিমের লেখাটা আপনি পড়েছেন । সরকারী চাকুরীরত অবস্থায় এরকম রাজনৈতিক মতাদর্শিক লেখা লিখে কি তিনি চাকরীর শর্ত ভংগ করেননি? লেখক হিসেবে তো তিনি তার তথ্য সচিব পরিচয় গোপন করেননি ।

আর লেখার জবাবে লেখা- এ প্রসংগে নিজের পোষ্টে লিখেছি । আপনি কি আবু করিমের অশ্লীল স্যাটায়ারকে আরেকটি অশ্লীল স্যাটায়ার লিখে জবার দিতে চান? জামাতী হান্নানের মিথ্যাচারকে আরেকটি টকশোতে আলোচনা করে প্রতিবাদ জানাতে চান?

একটা সহজ জিনিস আপনারা জটিল করছেন কেনো বুঝতে পারছিনা । সংবিধানের মুখবন্ধটা পড়ে দেখবেন । ২৫ মার্চ রাতে গনহত্যা শুরু, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস, শেখ মুজিব রাষ্ট্রের স্থপতি, ৩০ লক্ষ শহীদ - এগুলো সংবিধানের অংশ । মুসলমান হতে হলে যেমন ৫টি মুল ভিত্তিতে ইমান আনতে হবে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নাগরিক হতে হলে ও এই বিষয়গুলো মানতে হবে । এটা দুনিয়ার সব রাষ্ট্রেই আছে । মত প্রকাশের চুড়ান্ত স্বাধীনতার দেশগুলোতে ও আপনি নাৎসীজম কিংবা বর্ণবাদের পক্ষে প্রকাশ্যে কথা বলতে পারবেন না ।
বললে তারা আপনার কথিত 'লেখার জবাব লেখা' জাতীয় কাউন্সিলিং এর বদলে আইনগত শাস্তির ব্যবস্থাই করবে ।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

সবুজ বাঘ এর ছবি

বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় নিয়া কটূক্তি করলে অসুবিদা কনে? আইজক্যাও দেকলাম এক লুক রাস্তায় পইড়া রইছে। এই রকম হাজার হাজার লুক দৈনিকি রাস্তায় পইড়া থাহে। তো, এমুন একটা রাষ্ট্রর অভ্যুদয় হইলেই কি না হইলেই কি? যারা গুয়া মারার তারা ঠিকই গুয়া মারতাছে। আমরা যারা গুয়া মারা খাউয়ার তারা ভারত আমলেউ খাইছি, পাকিস্তান আমলেউ খাইছি এহনো খাই। কুনো হেরফের নাই। বরং এহন আরো বাড়ছে গুয়ামারার পরিমাণ। একই সিন, একই বঞ্চনা। গরিব মানুষ মানুষ না। আমরা কুনোদিন মানুষ আছিলাম না। আমাগো রেশনের ডাইল ভাতের গন্ধ শুকায়, নিজেরা দৈনিকি হরিংয়ের মাংস দিয়া পুলাউ মাংসা চুদায়। আমাগো পড়বার দিব না, আমাগো খাইবার দিব না, আমাগো থাকবার দিব না, আমাগো ট্রলারে তুইলা দিয়া সুমুদ্রে মারব, আমাগো বিমানের পুটকিতে চড়াইয়া দমবন্দ কইরা মারব, তারপরো আমরা বঙ্গবন্দু জিয়া চুদামু, স্বাধীনতা চুদামু?

এইসব চুদাচুদির মইদ্যে তুমরা থাকো, আমি নাই। ফলে এ দেশ আমার না। ভারতো আমার দাদার আছিল না, পাকিস্তানো আমার বাফের আছিল না। দাদার পিঠে যেমুন চাবুকের দাগ আছিল, বাফের প্যাটে আছে বেউনেটের দাগ আর আমার সর্বাঙ্গে আছে পরাজিত হওয়ার দাগ।

এহন কই, আবু করিম প্রসঙ্গে। কী এক আবু করিম কী এক বাল লেকল, তাইতে বঙ্গবন্দু নাজেহাল হইয়া গেল? এতই কমজোরি বঙ্গবন্দু? ৩০ হাজার না ৩০ লাখ? সংখ্যা দিয়া যে মুত্যু গণনা সে আহাম্মক ছাড়া আর কিছুই না।
ফালতু কবিতা লেইকা ভাত রুটি রুজির অধিকার হারানি খুব হাস্যকর। যারা শাস্তিডা দেয় তারা আরো বেশি হাস্যকর। এইহানে যে শাস্তি পাইছে তার কুনো হার নাই, যে শাস্তি দিছে পরাজয়ডা তারই।

জিজ্ঞাসু এর ছবি

চলুক

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

এহন কই, আবু করিম প্রসঙ্গে। কী এক আবু করিম কী এক বাল লেকল, তাইতে বঙ্গবন্দু নাজেহাল হইয়া গেল? এতই কমজোরি বঙ্গবন্দু? ৩০ হাজার না ৩০ লাখ? সংখ্যা দিয়া যে মুত্যু গণনা সে আহাম্মক ছাড়া আর কিছুই না।

আবু করিমকে লক্ষ্য করে আপনার এই কথাগুলো বললেই চলে। মুখ বন্ধ হয়ে যাবে, নাইলে জনসমক্ষে তাকে "ম্যা ম্যা" করতে হবে।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

প্রথম আলোর নিউজ আপনার লেখার সুত্র কিন্তু প্রতিবেদনটি পুরোপুরি বো্ধ হয় পড়েন নি । ঐ প্রতিবেদনেই উল্লেখ আছে
"বাদী তাঁর আজির্ত উল্লেখ করেন, ওই বইেয়র মাধ্যমে শহীদেদর রক্তের বিনিময়ে অজির্ত স্বাধীনতা এবং দেশবাসীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন, যা কোটি টাকার বিনিময়ে পূরণ হবে না৷ "

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

মানিক ভাই,
এই লাইনটার আগেই কিন্তু (যদিও ভিন্ন প্যারায়) বলা আছে বঙ্গবন্ধু আর তাঁর পুত্রদেরকে নিয়ে কটাক্ষ করেছেন আবু করিম। তাই সাধারণ পাঠক হিসেবে আমি ধরে নিয়েছি বঙ্গবন্ধুকে কটাক্ষ করে তিনি "স্বাধীনতা এবং দেশবাসীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন" ... সংখ্যাতাত্ত্বিক যে ডাহা মিথ্যাচারের কথা হিমু উল্লেখ করেছে সেটা কি রিপোর্টে আসা উচিত ছিলোনা? তা নাহলে কিভাবে বোঝা সম্ভব?

ভালো কথা, কবিতাটি আপনার কাছে আছে? আপনার সংগ্রহ তো মাশাল্লাহ সেরকম চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

অতিথি লেখক এর ছবি

বেচারা বঙ্গবন্ধু !!!!! দুঃখ হয় !!! ওরে নিয়া যে আরও কত খেলা চলবে!!!!

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

মুক্ত চিন্তা মুক্ত বুদ্ধির দেশে যার যা ইচ্ছা বলার স্বাধীনতা থাকা উচিত। সেটা আল্লাহ- রসূল হোক, মুক্তিযুদ্ধ হোক আর বঙ্গবন্ধু হোক। সেটাকে কন্টেস্ট করার দায়িত্ব অন্যদের, ব্যান করার দায়িত্ব নয়।

এই বিষয়ে আমাদের নয়া ক্যাবিনেটের বিদেশ-শিক্ষিত মন্ত্রী অথবা পার্মানেন্ট বিদেশবাসী ফার্স্ট প্রিন্সের কি মতামত, জান্তে মঞ্চায়।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

সেইটাই ...কন্টেস্ট করার যথেষ্ট রসদ তো আছেই ...আর এই প্রাচীন বয়ান (ত্রিশ লক্ষ নিয়ে কন্সপিরেসী থিওরী) সেই ছোটবেলা থেকে নানান জায়গায় পড়ে আসছি ... আজ এতদিন পর একজনের তাতে চাকুরী গেলে সেটাকে কারণ হিসেবে দাঁড় করানোটা কেমন যেন লাগে?
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

মতপ্রকাশের মূল কথাটা আমার কাছে খুবই সহজ। এইখানে বাছাবাছির কোন অবকাশ নাই। এক পক্ষের মতপ্রকাশের অধিকারের জন্যে আকাশ-বাতাস কাঁপাবো, আবার আরেক সময় আরেক পক্ষের মতপ্রকাশের অধিকার নিয়ে মিনমিন করবো - এতে আমার অবস্থান আমি নিজেই নড়বড়ে করি। যেই স্বাধীনতা এতো সিলেক্টিভ সেইটা আসলে কোন স্বাধীনতা না। একদিন কেউ যখন আমারই গলা টিপে ধরতে আসবে, হোক যে কোন কারনে, তখন আমার ব্যাপারে কেউ যদি সিলেক্টিভ মিনমিন করে, কেউ যদি বলে "না আসলে তো ওর গলা টিপ দেওয়ার দরকারই ছিলো দেশ/জাতি/ধর্মীয় অনুভূতি/আগডুম বাগডুমের স্বার্থে", তখন আমার কিচ্ছু বলার থাকবে না। কারন আমি নিজেই অতীতে ভন্ডামির দায়ে দুষ্ট।

মতপ্রকাশের স্বাধীনতা তাই পুরোপুরি absolute এবং non-negotiable হিসাবে দেখতে চাই। যেই অবস্থান যুক্তি-তর্ক দিয়ে ডিফেন্ড করা যায় না, বরং তার বিরুদ্ধ-মত ব্যান করা লাগে, সেই অবস্থানের দরকার নাই।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

উত্তম জাঝা!
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

চাকরিচ্যুত করা খুবই ঠিক হয়েছে।

স্যাটায়ারের স্বাধীনতা যে-কারো আছে। মহৎ মনের মানুষ হলে তা মেনে নেওয়া খুবই সহজ। আমিও একমত যে বঙ্গবন্ধু হয়তো এই ব্যক্তিকে চায়ের দাওয়াত (আর্মি আমলের চায়ের দাওয়াত নয়) দিতেন। শুধু স্যাটায়ার হলে এটুকু স্বাভাবিক।

তবে যারা মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিকৃত বক্তব্য প্রচার করে, তাদের কোন ক্ষমা নেই। এটা রাষ্ট্রদ্রোহিতার সমতুল্য অপরাধ। স্যাটায়ারের স্বাধীনতা আর তথ্য বিকৃতির ব্যাপারে ইমিউনিটি এক নয়।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

দেখুন, চাকুরীটা তার কেনো গেছে সেটা পিনপয়েন্টে ভাবাটা জরূরী এখানে ... কারণ এরপরের থাবাটাই আমার বা আপনার উপরেও পড়তে পারে ... আজ বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষ করেছে বলে একজনের চাকুরী গেছে, কাল যে সেটা শেখ হাসিনাকে নিয়ে করাতে যাবেনা তার গ্যারান্টি কে দেবে
আর স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে মিথ্যাচারে চাকুরী যাবে -- এরকম আইন কি দেশে আছে, না দেশে থাকা উচিত? প্লাস, আমার কিন্তু মনে হচ্ছেনা আবু করিম জামাতী উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছে, শোহেইল ভাইর পোস্টে দেখতে পারেন, কাছাকাছি মানের ধুনো তিনি জিয়াকেও করেছেন ... হয়তো শোহেইল ভাই ভালো বলতে পারবেন কোন ধরনের লোক এই আবু করিম
তবে যেটাই হোক, তার প্রতি আচরণের প্রতিবাদ আমি জানাবোই

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

কটাক্ষ বা হাস্যরসের জন্য চাকরি যাবার প্রবল বিরোধী আমি। গুড হিউমার করতে পারা এবং তার প্রতি সহনশীলতা একটি সুস্থ সমাজের লক্ষণ।

স্যাটায়ারের অংশটুকুই সব হলে আমিও চাকরি যাওয়ার বিরোধিতা করতাম। আমি সরকারপ্রধান হলে এরকম কাউকে তথ্য সচিব হিসেবেও রাখতাম না, অবশ্যই। অপ্রয়োজনীয় ডিসট্র্যাকশন।

তবে, "তথ্য সচিব" হয়ে কেউ যদি সজ্ঞানে তথ্য বিকৃতি করেন, তাহলে তা অমার্জনীয়। উপরন্তু, সেই বিকৃতি যদি মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যার মত ব্যাপারে হয়, তাহলে তার প্রতি তিল পরিমাণ সহমর্মীতা দেখানোর পক্ষপাতী আমি না। এটা মানবতার অপচয়।

এই ব্যাক্তি সু-কবি না কু-কবি তা আমার বিবেচ্য না। তার হিউমার সফল কি বিফল তা-ও আমার বিবেচ্য না। এর কোন কারণেই কারও চাকরি যেতে পারে না। যেই মুহূর্তে কেউ মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা ৩০,০০০ বলবে, সেই মুহূর্তেই তাকে প্রকাশ্যে না প্যাঁদানোই আমার মতে যথেষ্ট ভদ্রতা।

আওয়ামী লীগ কী কারণে এই লোকের চাকরি খেল তা আমার বিবেচ্য না। এই লোকের চাকরি চলে যাওয়াই উচিত, এটুকুই বুঝি আমি। এরা আকাশ থেকে পড়ে এত শক্ত হয়নি... আমরা এদের রুখবার সময় এলে বিলাই হয়ে যাই দেখে এদের এত বাড় বেড়েছে। বড় জোর এই বান্দাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করে পরমুহূর্তেই বরখাস্ত করা যায় সঠিক কারণে।

বইমেলায় বই প্রকাশকে আমি "ব্যাক্তিগত জীবনে মিথ্যাচার" মনে করি না। এটা অনেক বড় আন্ডার-স্টেটমেন্ট।

শুধুমাত্র ইয়ার্কির কারণে চাকরি চলে যাওয়া অতিরিক্ত, তবে সরকার প্রধানের অধিকার আছে যে-কাউকে অন্য পদে নিয়োগ দেওয়ার কিংবা দূরে সরিয়ে দেওয়ার। এটুকু আমি শুধুমাত্র ঠাট্টার ব্যাপারে সমর্থন করি। কিন্তু এই ছাগুরাম মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা নিয়ে মিথ্যাচারের কারণেই তার ব্যাপারে আমি চরম হার্ডলাইনের মানুষ।

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

"এরা আকাশ থেকে পড়ে এত শক্ত হয়নি... আমরা এদের রুখবার সময় এলে বিলাই হয়ে যাই দেখে এদের এত বাড় বেড়েছে।"

একজন মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে মিথ্যা কথা বললো, তাকে রুখতে হলে কি করতে হবে? ধোলাই দিতে হবে? চাকুরী খেতে হবে? এসব করলে কি তার মিথ্যা কথাটাকেই সত্য বলে সন্দেহ করার একটা উপলক্ষ তৈরী হয়না?

বিলাই হয়ে মিঁউ মিঁউ করতে কেউ বলছেনা। মানুষের মতো দুটো কথা জায়গামতো শুনিয়ে দিতে পারলেই কি যথেষ্ট না? বাঘ-ভালুকের মতো খামচানোটা কি সত্যকে শক্তিশালী করে?

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

প্রতিপক্ষ যখন কামান-বন্দুক নিয়ে তাড়া করে, তখন "অহিংসা পরম ধর্ম, জীবহত্যা মহাপাপ" বলে কোন ফায়দা আছে?

হ্যাঁ, শুধু ভুলটুকু ধরি দেওয়াই যায়, কিন্তু তা কি আদৌ কোন বাস্তবসম্মত সমাধান হবে?

আপনার বিশ্লেষণটা কয়েক জায়গায় দুর্বলঃ

১) যেই ব্যক্তি এই কাজটা করেছেন, তিনি একজন তথ্য সচিব। তার এই অবস্থান (এবং তার সাথে আসা দায়িত্ববোধ) আপনি উপেক্ষা করছেন। রাস্তার কোন ফেরিওয়ালার কথা তো বলা হচ্ছে না। সরকারের শীর্ষপদে এমন ছাগু আসীন রাখার কি কোন যৌক্তিকতা আছে?

২) আপনি বলছেন যে শুধুই বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রসিকতা করায় এমনটা হচ্ছে। এটা খুবই অসম্পূর্ণ বিশ্লেষণ। কবিতা(?)টি অন্য পোস্টে দেওয়া আছে। একটু দেখলেই বুঝবেন কেন বলছি।

৩) আপনি মত প্রকাশের স্বাধীনতার সাথে সত্যকথনের দায়বদ্ধতা মিলিয়ে ফেলছেন। আমি যা-খুশি বলতে পারি, কিন্তু আমি আপনাকে নিয়ে যা-তা কথা বলতে পারি না। এটা চূড়ান্ত রকম উদারপন্থী দেশেও প্রচলিত।

৪) আপনি কি আজ পর্যন্ত একটা ছাগু দেখেছেন যে কিনা "শুদ্ধ" ইতিহাসের শিক্ষা দেওয়ার পর ভাল মানুষ হয়ে গেছে? একটু কি অবাস্তব আশা হয়ে গেল না, ব্রাদার?

তীরন্দাজ এর ছবি

আমি চাকুরীচ্যুত করার সাথে একমত নই। তবে আর আগে পরিস্কার করে একটি কথা বলে নিতে চাই।

আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি। দেখেছি রাস্তায়, পথেঘাটে পড়ে থাকা, নদীতে, খালে ভেসে যাওয়া হাজারো মানুষের লাশ। আমার কাছে 'তিরিশ লাখ' শহীদ সংখ্যাটি একেবারেই অবিশ্বাস্য নয়। এটা যে এক বিভতস গনহত্যা ছিল, তা বলে দেবার অপেক্ষা রাখে না।

আজকাল এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। সেজন্যে আমরাই দায়ী, আমাদের সরকার, দ্বায়িত্বশীল সংস্থাগুলোই দায়ী। আমরা নিজেরাই বিরুদ্ধপক্ষকে এর সুযোগ করে দিয়েছি। এই সুযোগ করে দেয়ার পেছনে রয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি যথাযোগ্য সন্মান প্রদর্শনের ব্যার্থতা, আমাদের সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতা, আমাদের দুর্নীতি, আমাদের দেশের রাজনীতির ব্যার্থ আর কলুষিত চেহারা। তার কি কোন দায়ভার নেই? সে দায়ভার আমাদের বহন করতে হবে না?

সে দায়ভার বহন না করে আমরা যদি নিয়েধাজ্ঞা পথে এগিয়ে যাই, সেটা আমাদের দূর্বলতারই প্রমান। দুর্বলতার পথ ধরে যে সমাজ এগোয়, তার অবস্থানও দুর্বল। আর কতো দুর্বল করবো নিজেদের?

আমরা নিজেরা যদি ঠিক থাকতাম, তাহলে যে এক বিশাল জনজাগরণের পথ ধরে আমাদের স্বাধীনতা, তাকে বিকৃত করার সাহস কোন অশুভ শক্তিরই হতো না।

**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

উপরের মন্তব্যের জবাবে অনেকটাই বলেছি। আমি শহীদের সংখ্যা নিয়ে জেনে-বুঝে মিথ্যাচারের কারণেই এই লোকের ব্যাপারে হার্ডলাইনে।

একজন "তথ্য সচিব" তো দুধের শিশু নন। সাপের জিভ খুব নরম, মাঝখানে আবার ফাড়াও। কিন্তু এটুকু দেখে সাপের বিষদাঁত কিংবা তার শক্ত প্যাঁচকে ভুলে গেলে চলবে না।

যেই বান্দা এমন গণজাগরণের দিনেও বইমেলায় বই প্রকাশ করে শহীদের সংখ্যা ৩০ হাজার বলতে পারে, তার ব্যাপারে আমি বরাবর সন্দেহ পোষন করেই যাবো। হি ইজ কেপেবল অফ মাচ ওয়ার্স।

তীরন্দাজ এর ছবি

সুবিনয় মুস্তফির সাথে পূর্ণ সহমত জ্ঞাপন করছি। ব্যান করা নিজস্ব দূর্বলতার এক অকাট্য দলিল মাত্র।

আর লেখাটির জন্যে জ্বিনের বাদশাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

সেটাই, ব্যান করলে সত্যের চেয়ে পেশীশক্তি প্রদর্শিত হয় বেশী
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

রেজওয়ান এর ছবি

হিমু লিখেছেন:
আরেক সাবেক সচিব, জামাতের চিন্তারথ [থিঙ্কট্যাঙ্কের বাংলা করলাম] শাহ হান্নানের কথা মনে পড়লো। সেদিন সে আবারও একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেছে, বাংলাদেশের সাথে পাকিস্তানের কোন যুদ্ধ হয়নি, সে নাকি বইপুস্তকে পড়েছে যুদ্ধ হয়েছিলো ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে। যুদ্ধের নয়মাস রিপ ভ্যান উইঙ্কলের মতো নিদ্রিত না থাকলে এ নিয়ে কোন বাংলাদেশীর সংশয় থাকা উচিত না।

হান্নান এখনও কল্কি পায়?

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

জিজ্ঞাসু এর ছবি

আমি যদ্দুর জানি শাহ আব্দুল হান্নান জামাতের অনেক বড় মাপের নেতা। প্রাক্তন সচিব হওয়া তথা প্রশাসনিক জ্ঞানের জন্য জামাতে তার অনেক কদর। একসময় ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের ব্যাপারে অনেক কটু মন্তব্য করেছেন, অতি সম্প্রতিও করেছেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে পত্রিকান্তরে সাংবাদিকরা দু'চার কথা লিখলেও আওয়ামী লীগ মিনমিন করেই ক্ষান্ত। আওয়ামী লীগ জামাতের সাথে আঁতাত করেছে, একসাথে আন্দোলন করেছে। জামাতের বড় বড় নেতার (যাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা বিরোধিতাসহ যুদ্ধাপরাধের অনেক প্রকাশ্য অভিযোগ আছে) সাথে ঘরোয়া বৈঠক করেছেন আওয়ামী লীগের নেত্রী।
দেশের সবার জন্য বস্তুনিষ্ঠ পরিসংখ্যান না থাকার জন্য নতুন যে শিশুটি জন্ম নিচ্ছে তাকে দোষারোপ করতে পারব কি? যে শিশুটি প্রথমেই ইনকিলাবীয় তথ্য হাতে পেল তার কোমল মনে কি গেঁথে যাবে না ভুল তথ্য? আমাদের সঠিক পরিসংখ্যান সরবরাহ করার দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রের। স্বাধীনতার পরপর ক্ষমতায় আসা আওয়ামী লীগ সরকারের। তাদের ভুল সমস্ত জাতির উপর কতবড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে এখনও তারা জানে না। জানে না বলেই তারা সামান্য বিষয় নিয়ে, সংসদে বিরোধী দলের আসন নিয়ে দ্বন্দ্ব করে। দেশের জন্য না নিজেদের স্বেচ্ছাচারিতাকে তুষ্ট করতে তারা রাজনীতি করে। দেশের জন্য করলে শুল্কমুক্ত গাড়ি আনার জন্য মরিয়া হয়ে উঠত না তারা, উপজেলার কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপের জন্যও মরিয়া হয়ে উঠত না তারা।
এখন আসে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে কী কারণে বাধ্যতামূলক অবসরে যেতে হল। লেখার জন্য!? সে যদি সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তার রুলস্ অব বিজনেসের ব্যত্যয় ঘটানোর কারণে চাকরি হারায় তাহলে কিছু বলার নাই। রুলস্ অব বিজনেসে এমন কিছু বর্ণিত আছে কি না তা জানি না। তবে যদি সে চাকুরীচ্যুত হয় লেখার জন্য তাহলে সেটা অবশ্যই মেনে নেয়া যায় না। এতে সরকারের প্রতিহিংসাপরায়ণতা প্রকাশ পায়। বিরুদ্ধ মতকে টুটি টিপে না ধরে তার মতকে ভুল প্রমাণ করাই আমার কাছে সবচেয়ে শ্রেয় মনে হয়। এ ব্যাপারে সুবিনয় মুস্তফী ও তীরুদার সাথে সহমত। হিমু বলেছেন কারো মৃত্যুকে নিয়ে স্যাটায়ার ভদ্রতার মধে পড়ে না। একদম ঠিক কথা। তবে তাকে সমুচিত জবাব দিতে হবে ভদ্রতা দেখিয়েই। অভদ্রতাকে অভদ্রতা দিয়ে জবাব দেয়াটা দুর্বলতার মধ্যেই পড়ে।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

সবজান্তা এর ছবি

যে লোক তাজউদ্দিন আহমেদের স্ত্রী-সন্তানদের একাত্তর সালে আশ্রয় না দিয়ে, কৌশলে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন- দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেই লোকের পদোন্নতিপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন তাজউদ্দিন আহমেদ, অতীতের ঘটনা জানা সত্বেও।

শহীদের সংখ্যা নিয়ে নয়-ছয় কিংবা বঙ্গবন্ধুকে বিদ্রুপের জন্য চাকরি নেওয়াটা সমর্থন করি না, তবে এর জন্য ভদ্রলোককে জবাবদিহি করানো উচিত কোনভাবে - এই মুহূর্তে এ'টাই মনে হচ্ছে।


অলমিতি বিস্তারেণ

গৃহান্তরী এর ছবি

লেখা এবং মন্তব্য গুলা পড়লাম। আসল কবিতা টা পড়ার চান্স হৈল না (মন খারাপ)

কি কমু বুঝতাসিনা। আমি আসলে গলা চিপ্যা ধরার চাইতে ল্যাংটা করার পক্ষে। ল্যাংটা পাগলে যতই চিল্লাক, লোকে এক সময় পাত্তা দিব না। যেমন জাকির নায়েকেরে আমরা কয়দিন আগে ল্যাংটা করলাম। গলাচিপ্যা ধরলে বরং লোকজন তার লাইগা আরো বেশি মায়াকান্না করে।

তাই এই লেখায় জ্বীনের এবং মন্তব্যে সুবিনয় মুস্তফী, তীরন্দাজের আর সবজান্তারও সপক্ষে।

আরেকটা কথা হৈল, পাগলে যদি চিল্লায় যে তিরিশ লাখ না তিরিশ হাজার, সেইটা বরং ইনভেস্টিগেশনরেই তো উতসাহিত করে, তাতে যদি তিরিশ লাখের জায়গায় বত্রিশ লাখ প্রমাণ হয় সমস্যা কি? পাগল-ফকিরের চিল্লানিতেও মাঝে মাঝে মারফতি কথা থাকে কিনা! হুনন লাগে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

পাগলে যদি চিল্লায় যে তিরিশ লাখ না তিরিশ হাজার, সেইটা বরং ইনভেস্টিগেশনরেই তো উতসাহিত করে, তাতে যদি তিরিশ লাখের জায়গায় বত্রিশ লাখ প্রমাণ হয় সমস্যা কি?

পথ-ঘাটের পাগল চিল্লালে উপেক্ষা করে হেঁটে চলে যাওয়া যায়, কিন্তু এধরনের বুঝের পাগলকে কি 'তথ্য সচিব'এর মত একটা গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা যায়? এই মৌলিক ব্যাপারটাই সবাই ইগনোর করছেন। এই ব্যক্তি কোন ৪র্থ শ্রেনীর কর্মকর্তা না যে তার পেটে লাথি মারার জন্য কাঁদতে হবে। তার অবস্থান বিচারে এই পদক্ষেপ অবশ্যই যথোপযুক্ত। নিজের জায়গায় বসে এই লোক এমন আরও ভুল আর বিকৃতি ছড়িয়ে যেত নাহলে।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ইনভেষ্টেগেশন? ৩০ লক্ষ প্রমানের জন্য? বাহ!

৩০ লক্ষ সংখ্যাটা সংবিধানের মুখবন্ধে আছে । বাংলাদেশের রাষ্ট্রের কোন নাগরিকের এতে আপত্তি কিংবা সংশয় জানানো আইনসিদ্ধভাবেই অপরাধ ।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

আলমগীর এর ছবি

৩০ লক্ষ সংখ্যাটা সংবিধানের মুখবন্ধে আছে । বাংলাদেশের রাষ্ট্রের কোন নাগরিকের এতে আপত্তি কিংবা সংশয় জানানো আইনসিদ্ধভাবেই অপরাধ ।
সংবিধানের কিছু না মানা কি "আইনসিদ্ধভাবেই অপরাধ"? আমার পতাকা নিয়ে লেখাতে আমি একই যুক্তিতে কিছু কথা বলেছিলাম। কেউ আমার মতকে সমর্থন করেনি, বরং বিরোধিতা করেছে।

আলমগীর এর ছবি

চাকরি যাওয়া ঠিক আছে।
জেল হলে সমর্থন করব না। সেটা ফ্যাসিজম হয়ে যাবে।

ব্রিটিশ ঐতিহাসিক ২০ বছর আগে হলোকাস্ট অস্বীকার করেছিল, আর সে অভিযোগে অস্ট্রিয়া তাকে কারাবাস দিবে, সেটা সমর্থনযোগ্য নয়। বিচারকালে, তিনি তার অতীত মত থেকে সরে এসেছেন এমন কথা বলেও রেহাই পান নি।

তসলিমা বা দাউদ যেসব (সভ্য) দেশে থাকছে তাদের দেশে অসভ্য আইন নাই একথা কে বিশ্বাস করে?

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- বড় ভাইদের মাঝে আমি পুলাপান মানুষ হুট করে ঢুকে গেলাম।

এই পোস্টের মূল বক্তব্য যেটা ধরা পড়ছে আমার নাদান চোখে সেটা বোধহয়, বেচারা করিম সাহেবের চাকরী না খেয়ে, শাস্তি না দিয়ে তাকে বুঝানোর দিকে ইঙ্গিত করেছেন ভ্রাতঃ কিং অফ জ্বিনস।

এবার তাহলে জনাব আবু করিমের চ্যাপ্টারটা কয়েক সেকেণ্ডের জন্য ক্লোজ করে রাখি আমরা। 'ক্লোজড!'

ওপেন করি, শাহ হান্নান চ্যাপ্টার। এই মহীরথী বলেছে সে নাকি বই পুস্তকে পড়ে জেনেছে একাত্তরে যুদ্ধ হয়েছে ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে। আই রিপিট, বই পুস্তকে পড়ে জেনেছে। বাংলাদেশ এর অংশ ছিলোনা, আবারো আই রিপিট, বাংলাদেশ এর অংশ ছিলোনা

আমি জানি না এই লোকের বয়স একাত্তর সালে ঠিক কতো ছিলো। তবে আমি এইটা মোটামুটি শিউর যে এই লোক বগলের চিপায় আমার বই - প্রথম ভাগ নিয়ে প্রাইমারী ইশকুলে যায়নি। তো এখন এই রকম একটা লোক যখন বই-পুস্তকে পড়ে ভারত আর পাকিস্তানের যুদ্ধ খুঁজে পায় আমার মুক্তিযুদ্ধকে তখন তাকে ভ্রাতঃ কিং অফ জ্বিনস ঠিক কী বুঝানোর কথা বলেন সেইটা আমার নাদান মস্তিষ্কে ঢুকে না।

এইবার আবু করিম সাহেবের চ্যাপ্টারখানা রি-ওপেন করুন। শাহ হান্নানের বক্তব্যের সাথে করিম সাহেবের কোবতে মিলান, তার বক্তব্য মিলান, দুয়ের মাঝের অন্তর্ণিহিত ভাব বের করুন। এবার দেখেন শাহ হান্নানের মতো জনাব আবু করিম সাহেবকেও বুঝানোর কসরত করবেন কীনা!

যদি করতে চান, আপনার জন্য শুভাশীষ। এতো ধৈর্য্য আমার / আমাদের নাইরে ভাই। সামহোয়ারে কচি মাথার বরাহশাবকদের পিছনে যথেষ্ট পরিমান ধৈর্য্য, শ্রম, যুক্তি, দলিল সব দিয়াই দেখছি (আপনিও দেখছেন), কোনো লাভ হয় নাই। আর এইসব পাকনা, বুইড়া, ঝুনা মাথার বুদ্ধিবৃত্তিক তস্করদের ক্ষেত্রে এটেম্প্ট নেয়ারও কোনো আহ্লাদ নাই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

ঠিক করেছইলাম এই প্রসঙ্গে আর আলোচনয়া যাবোনা, কারণ উপরে মোরশেদ ভাইয়ের কমেন্টেই আলোচনার স্কোপ ক্লোজড হয়ে গেছিলো। কিন্তু আপনার কমেন্টটি পড়ে মনে হলো কিছু জিনিস পরিস্কার হয়নাই, তাই বিডিআর-প্রবলেমের এই ক্রান্তিকালেও পুরোনো প্যাঁচালে হাত দিলাম। কেউ বিরক্ত হলে নিজগুনে ক্ষমা করবেন।

হান্নান আর আবু করিমকে যদি মিশিয়ে ফেলতে চান আপনি তাহলে একটু কষ্ট করে শোহেইখ ভাইর পোস্টে জিয়াকে খুনী জেনারেল হিসেবে (স্যাটায়ার না সরাসরি) লেখা তার কবিতাটাও পড়তে পারেন। আমার একে জামাতী ফেউ মনে হয়না কোনভাবেই, রাজনীতিবিদদের ব্যাপারে চরম বিতৃষ্ণ এবং ধরাকে সরাজ্ঞান করা প্রতিভাহীন কবি বলা যায় তারে। আমার মনে হয়নি যে কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের মেনিফেস্টো প্রচারে তিনি কবিতা লিখেছেন, কোন একটা পত্রিকায় পড়লাম, স্বাধীনতা নিয়ে তার অনেক পজিটিভ কবিতাও আছে। হান্নান কি এখানে কোনভাবে আলোচনায় আসার যোগ্যতা রাখে?

তারপরও, সে যাই হোক, আমার লেখার বা মতামতের উদ্দেশ্য কখনই এমন না যে তাকে মিষ্টি কথায় ডেটা/উপাত্ত দিয়ে বুঝিয়ে যাতে সে নিজের ভুল ধরতে পারে সেজন্য কিছু বলা। এজন্য আমরা মিথ্যার প্রতিবাদ করিনা।
আমি মিথ্যার প্রতিবাদ এই জন্যই করি যে, আমি বিশ্বাস করি মিথ্যার প্রতিবাদের একমাত্র উপায় হলো সত্যটা বলা, চড়-থাপ্পড় মারা না।

একটা ঘটনা উল্লেখ করি এই প্রসঙ্গে। ডা ভিঞ্চি কোডের প্রিমিয়ার শোতে প্রচুর সাংবাদিক মুভিটাতে খ্রিস্ট-ধর্মের ইতিহাস নিয়ে অনেক ভুল আর মিথ্যা তথ্যের পরিবেশনা দেখে শুধু হেসেছেন, উপহাসের হাসি, সেই হাসি নিশ্চয়ই সামনের সারিতে বসা ড্যান ব্রাউনের কানে চিনি হয়ে ঢোকেনি। কেউ কিন্তু লাফঝাফ করেনি, ড্যানব্রাউনের শাস্তিও দাবী করেনি, এফিজিও পোড়ায়নি। আমার কাছে এটাকে অসাধারণ একটা প্রতিবাদ মনে হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ বলে রাখি, এই যে ইউরোপে হলোকাস্ট ডিনায়ালের বিরুদ্ধে একটা আইন আছে, এটাকে আমার আত্মঘাতী মনে হয়। আমার মনে হয় হলোকাস্টের ফ্যাক্টগুলোকে যদি কেউ সন্দেহ করে, তার সবচেয়ে বড় কারণ এই আইন। দেখুন, এই আইনের অপব্যবহার কিভাবে হচ্ছে
http://www.dissidentvoice.org/2009/02/holocaust-fundamentalism-and-the-war-on-dissent/
আমার কাছে এটাকে সভ্য আইন মনে হয়না।

কথা/লেখার জবাব কথা/লেখা দিয়েই দেয়া উচিত।

এরপরের প্রসঙ্গে আসি: মূল ব্যাপারটা আলোচনার প্যাঁচে পড়ে এমন অবস্থায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে মনে হচ্ছে ৩০ লক্ষ শহীদ সংক্রান্ত মিথ্যাচারের কারণে আবু করিমের চাকরী গেছে। অথচ হিমুর কমেন্ট পড়ে পরে আমি প্রায় সবগুলো পত্রিকা চেক করেছই, সবখানে বঙ্গবন্ধু আর তাঁর পরিবারকে স্যাটায়ার করার কারণে চাকুরী গেছে বলে বলছে। সম্ভবতঃ অভিযোগকারী হেলালী সাহেব এই "৩০ হাজার ভার্সস ৩০লাখ" সংক্রান্ত মিথ্যাচারটা যে এখহানে সবচেয়ে বড় পাপ কবির,সেটাও ধরতে পারেননি। এব্যাপারটাকে আমরা বারবার এড়াচ্ছি কেন?

আচ্ছা মানলাম, রাষ্ট্রীয় পদে থেকে এরকম কবিতা লেখা চাকুরী আইনে নিষিদ্ধ (যদিও সেরকম আইন থাকলে আমিস সেটার বিরোধিতাই করবো), তার কারণেই তার চাকুরী গেছে (যদিও সেরকম মনে হচ্ছেনা)। তো, বইটা নিষিদ্ধ হবার ব্যাপারে আপনার মতামত কি?

একটা উদাহরণ দিয়ে আমার স্ট্যান্স আমি ক্লিয়ার করি। ধরুন, সেই কুখ্যাত শর্মিলা বোস বাংলাদেশের ভিসার জন্য দাঁড়ালো। আপনি/আমি জানি যে বাংলাদেশে এসে নানান ইন্টারভিউ নিয়ে সে আবার আরেকটা "পাকমন" পেপার লিখবে। আপনি কি মনে করেন? তাকে ভিসা দেয়া উচিত হবেনা?
আমি এই স্টেপের বিরুদ্ধে। আমার কাছে এই কাজটা ফ্যাসিবাদী।
আমার মতে, তাকে ভিসা দেয়া হোক, তার পেপার পড়া হোক, তারপর সেটাকে রিফিউট করে লেখার জন্য প্রয়োজনে সরকারের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে উপযুক্ত লোককে বিশেষ ফান্ড দিয়ে পেপার লেখানো হোক -- এটাই আমি চাইবো।

আশা করি আমার অবস্থান বুঝাতে পেরেছি।
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

বুলু এর ছবি

আমি আইতাছি।।।।।।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।