যুদ্ধদিনের কাহিনী - ২

মুশফিকা মুমু এর ছবি
লিখেছেন মুশফিকা মুমু (তারিখ: শনি, ২৮/০৩/২০০৯ - ৬:০৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এখানে কাহিনীর প্রথম পর্ব

__দ্বিতীয় পর্ব__
মাগরেবের নামাযের পর পরই সবাই আবার নৌকা বোঝাই হয়ে রওনা দিল। যেতে যেতে মাঝিরা বলল ওরা সব নৌকার ওপর সার্চ লাইট দিয়ে দেখে, তারপর যদি সন্দেহ করে তাহলে ওরা স্পিড বোট নিয়ে চেক করতে আসবে। ওরকম অবস্থার জন্য সবাই যেন রেডি থাকে।

কিছুদুর যেতে যেতে হঠাত নৌকায় তীব্র আলো পড়ল। নৌকার ভিতরে বসে সব ছেলেরা আলো দেখতে পেল। এত আলো দেখে নৌকার ছেলেরা ভয় পেয়ে গেল সবর্নাশ ওরা কি সন্দেহ করছে। কয়েকজন মাঝিদের জিজ্ঞেস করছিল "চাচামিয়া আমাদের কি সন্দেহ করল?" মাঝিরা বলল বুঝতে পারছিনা দেখা যাক। লাইট টা কিছুখন নৌকার ওপর থেকে আবার সরে গেল। এরপর আবার নৌকার ওপর আলো পড়ল এবং কিছুখন পর আবার সরে গেল। এভাবে কিছু দূর যাওয়ার পর মাঝিরা বুঝতে পারল যে একটা স্পিডবোট এদিকেই আসছে।

কাছেই ডুবে থাকা একটা চরের মত ছিল, যেখানে লম্বা লম্বা অনেক শোলা বা ধইন্চার গাছ গাদাগাদা হয়ে ছিল। গাছগুলোর মাথা পানির ওপরে উঠে ছিল। মাঝিরা তখন তাড়াতাড়ি ওখানে নৌকা থামিয়ে সবাইকে বলল আপনারা তাড়াতাড়ি পানিতে ঝাপ দেন আর শোলা গাছগুলো ধরে ধরে যত দূর পারেন সরে যান। সব ছেলেরা পানিতে ঝপাঝপ নেমে পড়ল আর এদিকে মাঝিরা রান্না বসিয়ে দিল যেন ভাব করতে পারে রাতের রান্নার জন্য ওরা ওখানে নৌকা থামিয়েছে। সে জায়গার পানির গভীরতা সম্ভবত ২-৩ মিটার ছিল কিন্তু নদীতে স্রোত এত বেশি ছিল যে গাছ ধরে থাকাও অনেক কঠিন ছিল। এভাবে অনেক দূরে দূরে গিয়ে কোন রকমে অন্ধকারে গাছগুলো ধরে ধরে সবাই ডুবে লুকিয়ে ছিল।

দেখা গেল স্পিড বোট একটা নয়, পিছন দিক থেকে আরো একটা আসল। ছেলেরা ছরায়ে ছিটায়ে দূরে দূরে পানির নিচে লুকিয়ে শুনতে পেল আর্মিদের গলায় মাঝিদের দেয়া বকাবকি। তার কিছুখন পর গুলির শব্দ। প্রথমে সবাই ভাবল মাঝিদের বুঝি মেরে ফেলল। কিন্তু পরপরই বুঝতে পারল আর্মিরা পানিতেও অন্ধকারে গুলি ছুরছে, কারণ ওরা বুঝতে পেরেছে এখানে ছেলেরা হয়ত লুকিয়ে আছে।

এরকম বেশ কিছুখন গোলাগোলির পর স্পিড বোট দুটো চলে গেল। সবাই প্রায় এক ঘন্টা এভাবে পানিতে ডুবে থাকার পর আস্তে আস্তে নৌকার কাছে আসল। এমন সময় অন্ধকারে শুনতে পেল কেউ একজন দূরে বলছে "এই ওকে ধর ধর, ও তো ভেসে যাচ্ছে"। কিন্তু কেউ কিছু করতে পারল না, অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। কেউ একজন ভেসে গেল কিন্তু কেউ বাঁচাতে পারল না।

মাঝিদের কোনো সারা শব্দ না পেয়ে সবাই যখন নৌকায় ওঠে আসল তখন দেখল মাঝিদের অবস্থা। না ওনাদের গুলি করে মেরে ফেলেনি। কিন্তু কি যে নির্মম অত্যাচার করেছে, মেরে হাত পা তো ভেংগেছেই, তার ওপর বন্দুকের মাথায় যে ছুরির মত থাকে সেগুলো দিয়ে পায়ের মাঝে, গায়ে এখানে সেখানে খুঁচিয়েছে। মাঝিদের কথা বলার মত অবস্থা ছিলনা, রক্তে ভেসে যাচ্ছিল। প্রথমে সবাই এ ওর ভেজা কাপর দিয়েই মাঝিদের ব্যান্ডেজ করে দিল। পরে ভেবে দেখল যে যদি এ থেকে ওনারা আরো অসুস্থ হয়ে যান, তখন নৌকায় শুকনা কাপর খুঁজে, কাথা থেকে ছিরে মাঝিদের ব্যান্ডেজ করে দিল।

এদিকে দেখা গেল ৫জন ছেলে কম, ৫জন কে পাওয়া যাচ্ছেনা। একজন ভেসে গিয়েছে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। বাকি ৪ জনের কি হল কেউ বলতে পারল না। ওদের নাম ধরে অনেক ডাকাডাকি করা হল কিন্তু কেউ সারা দিল না।

এভাবে ওরা যদি আসে এই আশায় আর মাঝিদের সেবায় আরো ১ঘন্টার মত ওখানে নৌকা রাখা হল। এরপর ঠিক হল আবার রওনা দেয়া উচিত কিন্তু বৈঠা ধরবে কে? ছেলেরা বৈঠা ধরলে আর্মিরা আবার আলো ফেলে যদি দেখে ফেলে। মাঝিরা তখন এমন করুন অবস্থা নিয়েও বলল আপনারা কোনো চিন্তা করবেন না, এক দুইজন নিচে লুকিয়ে একটু সাহায্য করেন তাহলেই হবে। নদীর এমন স্রোতের মাঝেও অসুস্থ মাঝিরা নৌকা চালালো। এভাবে ১/২ কিমি যাওয়ার পর মাঝিরা বলল এবার আর বিপদ নেই। তখন ছেলেরা বৈঠা তুলে নিল।

এভাবে যেতে যেতে এক জায়গায় জেলেদের খরা দেখা গেল। জেলেরা খরা দিয়ে মাছ ধরে। মাঝিরা এদের চিনতো তাই বলল এখানে নৌকা থামিয়ে এদের কাছ থেকে কিছু ঔষধ আনা যাবে। জেলেদের কাছ থেকে মহাশংকর তেল, কাঁদাকাঁদা করা হলুদের গুড়া আর তেল মেশানো পেস্ট আনা হল। এগুলো পেস্ট আর তেল মাঝিদের কাটা ঘায়ে দিয়ে ভালো কাপড় দিয়ে আবার ওদের ব্যান্ডেজ করে দেয়া হল। ওখান থেকে রওনা দিয়ে পরদিন বিকালের দিকে নৌকা মাইনকার চরে এসে পৌছাল।

************ আসাম পৌছানোর পরের কাহিনী **********
গনি সাহেব ওনার ফ্যামিলি নিয়ে আসামের মাইনকার চরে এক বাসায় থাকতেন যার দায়িত্ব হল যেসব ছেলেরা মুক্তিযুদ্ধের জন্য আসে তাদের দেখা শোনা করা আর বিএসএফ বাসে ভারা সহ তুলে দেয়া ট্রেনিং এ যাওয়ার জন্য। আব্বু সহ ৩০-৩১ জন ছেলে নৌকা থেকে নেমেই ইন্সট্রাকশন অনুযায়ী ওখানে গেল। কিন্তু গনি সাহেব দেখা করল না, ওনার লোক এসে জানালো উনি নাকি তখন মহা ব্যাস্ত, কিছু করতে পারবেন না। ৩০-৩১টা ছেলে ২দিন না খাওয়া, এদের কি হবে, কই যাবে, কিভাবে কোথায় থাকবে সে মাথা ব্যাথা ওনার নয়। ওনার লোক বলল তোমরা যেভাবে পার যা পার তাই কর। আমাদের এখানে কোনো ব্যবস্থা হবেনা।

এদিকে তখন শুরু হল বৃষ্টি আর সন্ধা থেকে আবার কারফিউ শুরু। ২ দিন না খাওয়া এসব ছোট ছোট ছেলেরা তখন ভিজতে ভিজতে একটা স্কুলের মত তালাদেয়া ঘর দেখে ওখানে বারান্দায় গিয়ে আস্রয় নিল। ঘরের সামনে ছোটখাটো মাঠ, চারপাশে ছিল কাটাতারের বেরা যার নিচে দিয়ে সবাই ঢুকেছে। বারান্দায় বসে থাকতে থাকতে অনেকে শুয়ে পরল, ঘুমিয়ে পরল।

১ ঘন্টার মত পর কিছু সিপাহিরা এসে মোটা এক লাঠি দিয়ে ঘুমন্ত এসব ছেলেদের পেটানো শুরু করল। "এখানে কি" এসব বলে সবাই কে বের করে দিল, কাটা তারের নিচে দিয়ে তাড়াতাড়ি আসার সময় অনেকের অনেক জায়গায় কেটে গেল, কাপর ছিরে গেল।

এই বৃষ্টি আর কারফিউ এর মাঝে ছেলেরা কোথায় যাবে ভাবতে ভাবতে তখন রাস্তার পাশে পানিতে দেখল সো-মিলের কাঠের কিছু কিছু বড় টুকরো পরে আছে। সেই পানিতে নেমে বুঝতে পারল পানিতে ৬ ইনচির মত কাঁদাও। সেখানেই কোমর পর্যন্ত পানি আর কাঁদায় একজন আরেক জনের কাধে হেলান দিয়ে বৃষ্টিতে ঘুমিয়ে পড়ল। প্রায় ৩ দিন না খাওয়া দুর্বল এইসব ছোট ছেলেরা এভাবে নিশ্চিন্তে, নির্ভয়ে সেখানে রাতটা কাটাল।

*********** অবশেষে ***************
১। পরদিন সকালে সেখানে আসে পাশের দোকান থেকে সবাই কিছু কিনে খেল, যার টাকা ছিলনা তাকে আরেকজন কিনে দিল। দোকানে আর এলাকার মানুষের কাছ থেকে জানতে পারল কোথায় কিভাবে বাস ধরতে হবে।

২। বাসস্টপে আব্বু তার পরিচিত একটা ছেলের দেখা পেল। হিন্দু ছেলেটি আব্বুর সাথে এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটিতে ফার্সট ইয়ারে পড়ত, ইউনিভার্সিটির ছাত্রলীগের পার্টি অফিসে মাঝে মাঝে দেখা হয়েছিল। কিন্তু যুদ্ধশেষে নাকি আব্বু ওনাকে আর ইউনিভার্সিটিতে দেখেনি। কারো কাছে জানতেও পারেনি ওনার খবর।

৩। তোজাম চাচা কয়েকবছর আগে মারা গিয়েছেন। ছোটবেলায় ওনাকে দেখেছি কয়েকবার যখন দাদা বাড়ি বেড়াতে যেতাম। খুব আফসোস হয়, এখন সব কিছু বুঝি কিন্তু ওনাকে পায়ে ছুয়ে সালাম করার কোন উপায় নেই।

৪। কয়েকদিন আগে খবরে ইসরাইলদের হোয়াইট ফসফরাস বম ব্যবহার দেখে আর গাজায় মানুষের অবস্থা দেখে এত খারাপ লাগল, আর বিডিআর দের নির্মম হত্যার কথা যখন মনেহয় তখন নিজেকে বলি নাহ মানুষের মত খারাপ, নিষ্ঠুর জীব আর নেই, শয়তানকে অবশ্যই হার মানাবে।

আবার যখন মনেহয় নৌকার মাঝিদের মত ফেরেস্তাহও আল্লাহ পৃথিবীতে পাঠিয়েছিল তখন মনেহয় না মানুষ আসলেই শ্রেষ্ঠ জীব। সেদিনের মাঝিরা বন্দুক হাতে যুদ্ধ না করলেও ওনাদের মত মুক্তিযোদ্ধাদের সালাম, সালাম, হাজার সালাম।


মন্তব্য

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

সেদিনের মাঝিরা বন্দুক হাতে যুদ্ধ না করলেও ওনাদের মত মুক্তিযোদ্ধাদের সালাম, সালাম, হাজার সালাম।
আপনার গল্প বলার ধরণ খুবই স্নিগ্ধ, মুমু।
আব্বুর কাছ থেকে আরো গল্প শুনে আমাদের সাথে শেয়ার করবেন, অপেক্ষায় থাকলাম।

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

মুশফিকা মুমু এর ছবি

এত লম্বা লেখা আপনি পড়লেন তার জন্য থ্যাংকিউ আপু হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

শেষটা খুবই চমৎকার হয়েছে মুমু। খুব সুন্দর কতগুলো কথা লিখেছ। গল্পটা পড়ে অনেক ভাল লাগল। আঙ্কেলের কাছে থেকে যুদ্ধের শোনা আরো গল্প থাকলে আমাদের কিন্তু অবশ্যই শোনাবে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার আব্বুও ফার্স্ট ইয়ারে পড়তেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছাত্রলীগ করার জন্যে আর্মির হাতে ধরাও পড়েছিলেন কিন্তু কপাল জোরে বেঁচে গেছেন।
----------------------------------

--------------------------------------------------------

মুশফিকা মুমু এর ছবি

ধন্যবাদ টুত হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

অভ্রনীল এর ছবি

১.

খুব আফসোস হয়, এখন সব কিছু বুঝি কিন্তু ওনাকে পায়ে ছুয়ে সালাম করার কোন উপায় নেই।

অসম্ভব সুন্দর লাইন...

২.
প্রথম পর্বটা মিস করেছিলাম... এই চান্সে সেটাও পড়ে ফেললাম... যুদ্ধদিনের ঘটনাগুলো বেশ ঝরঝর করে লিখেছেন... পড়ে ভালো লাগলো...

_______________

এক ছাগলের দুই কান,
তুই আমার জানের জান।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

গৌরীশ রায় এর ছবি

আপনি খুব দ্রুত শেষ করে ফেললেন মনে হচ্ছে, এত দ্রুত তো শেষ হবার কথা ছিল না।
চমৎকার অনুলিখন।
তবে বর্ণনায় কিছু কথা আছে। অন্য কোন লিখায় বলব।

অভিনন্দন সহ

'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর

'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর

মুশফিকা মুমু এর ছবি

গৌরীশ ভাই "বর্ণনায় কিছু কথা আছে" বুঝতে পারলাম না, আমি আসলে আপনাদের মত এত ভাল লিখতে পারিনা তাই জানি অনেক ভুল পাবেন। আর অনেক কিছু আমি না জেনেই লিখেছি, যেমন ধইনচার গাছ কি আমি জানিনা, জেলেদের খরা কি সেটাও জানিনা, যা শুনেছি তাই লিখেছি।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

গৌরীশ রায় এর ছবি

মুমু আপু

আগেই বলেছি আর এখনও বলছি, আপনার লিখা অসাধারন হয়েছে।
আমার উপরের মন্তব্যে দেখবেন অনুলিখন শব্দটা লিখেছি। অনুলিখন সাধারনত দুভাবে হয়,
এক আব্বুর যুদ্ধ দিনের কথা, আব্বু বলে যাচ্চেন, মুমু শুধু লিখছেন।
দুই মুমু নিজের ভাষায় আব্বুর কাহিনী লিখছেন।

আমি প্রথম যখন পড়ি কেন জানি মনে হয়েছিল দুটো রূপের মিশ্রন আছে।
এখন আবার ভাল করে পড়ে দেখলাম আমার চোখে কিছুই পড়ল না।

আপনি শুধু আপনার লিখা চালিয়ে যান।

ও হ্যা, আরও দুটো বিষয় চিন্তা করে দেখতে পারেন

এক আব্বুরা যখন যুদ্ধ করেন নিশ্চই অনেক স্বপ্ন নিয়ে যুদ্ধে গিয়েছিলেন।
নতুন দেশ পাবার স্বপ্ন, ভালভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন। আজ স্বাধীনতার পর
কেটে গেছে দীর্ঘ আটত্রিশ বছর। আব্বু কিভাবে দেখেন প্রত্যাশা এবং প্রাপ্তি
দুটোকে।

দুই আম্মু কিভাবে কাটিয়েছিলেন যুদ্ধের নয় মাস?

অচিরেই মুমুর লিখা গুলো আসবে, সেজন্য
অগ্রীম অভিনন্দন সহ

'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর

'''''''''''
তৃপ্তি আমার অতৃপ্তি মোর
মুক্তি আমার বন্ধনডোর

মুশফিকা মুমু এর ছবি

হাহাহা আপনার কমেন্ট পড়ে নতুন কিছু শিখলাম, অনুলিখন শব্দটাই জানতাম না, আর সেটার আবার দুই রকম, আমি আপনাদের মত বাংলায় এতো জ্ঞানী না, নরমাল যেভাবে কথা বলি সেভাবেই লিখি হাসি

যাইহোক আমি আসলে মাঝিদের এমন ভাবে এতগুলো ছেলের জীবন বাঁচানোর কথাই বলতে চাইছিলাম, আমরাতো সবাই জানি সেই সময় যারা যুদ্ধে গিয়েছিল অনেক স্বপ্ন নিয়েই যুদ্ধে গিয়েছিলো, প্রতিশোধ নেয়ার জন্য গিয়েছিল। তাই আর সেকথা রিপিট করিনি, আর করলেও এত সুন্দর করে বলতে পারতাম না। আর এখন প্রাপ্তি কি তা কি আর বলার দরকার আছে, সেটাও আমার মনেহয় সবাই জানে। মন খারাপ

তবে হ্যা আরো কিছু টুকিটাকি কাহিনী লেখার চেষ্টা করব, আম্মুরগুলো এত ইন্টারেসটিং হবে কিনা জানিনা। আপনাকে অনেক অনেক অনেক ধন্যবাদ এত লম্বা লেখাটা পড়ার জন্য আর এত লম্বা কমেন্টের জন্য আর "অনুলিখন" কি শেখানোর জন্য দেঁতো হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আর কই? সিরিজ থেমে গেলো কেন?
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

মুশফিকা মুমু এর ছবি

এই কাহিনী এখানেই শেষ, আরেকবার যদি লিখি তখন আবার কন্টিনিউ হবে হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

মুস্তাফিজ এর ছবি

আরো জানতে চাই, শুনতে চাই

...........................
Every Picture Tells a Story

মুশফিকা মুমু এর ছবি

হাসি দেখা যাক

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

রেনেট এর ছবি

অনেক কিছু বলতে ইচ্ছা করছে। সব বলতে গেলে আলাদা পোস্ট হয়ে যাবে।
পড়তে পড়তে খুবই উত্তেজিত বোধ করছিলাম। অসাধারণ কাহিনী বর্ণনা।
সেইদিনের সেই আকুতোভয় তরুণদের অসামান্য সাহসের কথা শুনেও মুগ্ধ হচ্ছি।
আজকে সত্যিই তোমাকে ঈর্শা হচ্ছে। তুমি গর্ব করে বলতে পারো তুমি মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।
আর তোমার গদ্য দিন দিন আরো শানিত হয়ে উঠছে।
পাঁচ তারা এই পোস্টের জন্য বড্ড কম।
---------------------------------------------------------------------------
If your father is a poor man, it's not your fault ; but If your father-in-Law is a poor man, it's definitely your fault.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

মুশফিকা মুমু এর ছবি

আমি আসলে মাঝিদের অসামান্য সাহসের কথা হাইলাইট করতে চেয়েছিলাম। ওনাদের জন্যইতো আজ আমার বাবা বেঁচে আছেন।
ধন্যবাদ এত লম্বা লেখাটা পড়ার জন্য হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

রানা মেহের এর ছবি

এতো চমতকার করে লিখলেন মুমু।
যুদ্ধের কথা।
মাঝিদের কথা।

এই সিরিজে বোধহয় আরো অনেক কিছু যোগ করা যায়।
বাবা আর কন্যা মিলে দেখুন না
আরো গল্প আমাদের জানাতে পারেন কি না
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

মুশফিকা মুমু এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপু হাসি দেখি সিরিজ কন্টিনিউ করার ইচ্ছে আছে, পরে আরো লিখব হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

লেখা তো থাকলোই, অডিও-ও শুনতে মন চাইছে। মুক্তিযোদ্ধার মুখে যুদ্ধের গল্প। আর ক'বছর পর এটাই অনেক দুষ্প্রাপ্য হয়ে যাবে।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

মনেহয়না আব্বু অডিও দিতে রাজি হবে, দেখি যদি হয় তবে পরে কোনো একবার। হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

আজমীর এর ছবি

মজা পেলাম মন্তব্যটি দেখে। কারণ, আমিও audio এর কথাই ভাবছিলাম। তবে বক্তা স্বয়ং রাজি না হলেও আবৃত্তি করার জন্য চমৎকার একটি লেখনি। পীযুষ নামের একজন আছেননা (দুঃখিত, আমার আবার নাম মনে থাকে কম) ওনাকে দিয়ে আবৃত্তি করাতে পারলে দারুন শোনাত।

আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.

আজমীর
Smile costs nothing but gives much, so keep smiling.
Kids are always cute.

মাহবুব লীলেন এর ছবি

দুটো লেখাই একসাথে পড়লাম
দুর্দান্ত

মুশফিকা মুমু এর ছবি

হাসি আসলেই এমন মাঝিদের মতন আরো কত মানুষের দুর্দান্ত কাহিনী যে আছে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার মায়ের বয়স ছিল ৯/১০ বছর। একবার পাক বাহিনী গ্রাম আক্রমণ করলে নানা বাড়ির মেয়ে-বউরা পালিয়ে যায়। সেবার আম্মারা একটি পাটক্ষেতে লুকিয়ে ছিল। ছোটবেলায় মায়ের মুখে এই লুকিয়ে বেড়ানোর গল্প বেশ কয়েকবার শুনেছি। আপনার বাবার যুদ্ধদিনের গল্প শুনে এই মায়ের গল্পটি মনে পড়ে গ্যালো।
আর লেখা খুব সুন্দর হয়েছে মুমু। আংকেলের মুক্তিযুদ্ধের আরো গল্প শেয়ার করুন। আর ইশতি ভাইয়ের প্রস্তাবটা আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে। দেখুন আব্বাকে রাজি করাতে পারেন কী'না। আমার ধারণা, তাকে বললে তিনি রাজি হয়ে যাবেন।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

ধন্যবাদ পান্থ ভাই হাসি আপনিও আপনার মা'র কাছে শোনা গল্পগুলো লিখেন। হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

রায়হান আবীর এর ছবি

সেইটাই। শেষ কইরেন না।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

আচ্ছা হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

নীড় সন্ধানী [অতিথি] এর ছবি

মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি গল্প রোমহর্ষক। চেতনায় আঘাত করে। আপনার বর্ননা খুব ঝরঝরে। পড়ছি, শিহরিত হচ্ছি, উপভোগ করছি। এরকম গল্পের জন্য আজন্ম খিদে আমার, আজীবন অতৃপ্ত আমি। সেই সময় আরেকটু বড় হতাম যদি। অন্ততঃ একটা কার্তুজমালা কাঁধে বহন করার মতোও শক্তি থাকতো যদি.......হায়!

মুশফিকা মুমু এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ আপনার কমেন্টের জন্য। হাসি কার্তুজমালা কি বুঝলাম না ইয়ে, মানে...

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

তানবীরা এর ছবি

মুমু বোরিং লেখা লম্বা হয়, এ ধরনের লেখা না। তুমি কিন্তু চাচার আরো অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারো, আমাদের ভালো লাগবে।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

মুশফিকা মুমু এর ছবি

শেয়ার করব আপু হাসি ধন্যবাদ হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

খুবই চমৎকার লাগল মুমু।
তোমার আব্বুর কাহিনীগুলো লিখে ফেল ধীরে ধীরে। সিরিজটা থামায়ো না।

এমন লেখা পড়লে মনটাই ভাল হয়ে যায় (মন খারাপ না থাকলেও)। হাসি

মুশফিকা মুমু এর ছবি

ধন্যবাদ প্রহরী, দেখি লেখার চেষ্টা করব হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

নজমুল আলবাব এর ছবি

ধন্যবাদ মুমু।
এভাবেই কিন্তু ইতিহাস টিকে থাকে। মুখে মুখে, কলমে কলমে, ওয়েবে ওয়েবে।

ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

মুশফিকা মুমু এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ নাজমুল ভাই হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।