প্রবাসের টাকা, দেশের জঙ্গি...

মূর্তালা রামাত এর ছবি
লিখেছেন মূর্তালা রামাত (তারিখ: বুধ, ২৫/০৩/২০০৯ - ১২:৩১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.
আমার খালা সম্প্রতি দুবাই থেকে কয়েক মাসের ছুটিতে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরেই তিনি কাছে ধারের ইসলামী ব্যাংকের ঠিকানা জানতে চাইলেন। তিন ওখানে টাকা রাখবেন। কারণ ওরা সুদ ছাড়াই লেনদেন করে। ব্যাংকের টাকা ইসলামের পথে ব্যয় হয়। আমি তাকে বোঝালাম যে ওটাতো মৌলবাদীরা চালায়। জামাতের নেতাদের সুপারিশ ছাড়া ওখানে চাকরির দরখাস্তই করা যায় না। এসব ইসলামী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই জঙ্গিদের টাকা লেনদেন হচ্ছে। আপনি এখানে টাকা রাখে মানে জঙ্গিবাদকেই উৎসাহিত করা। আমার অনুরোধ আপনি জেনেশুনে এ কাজটি করবেন না। কে শোনে কার কথা। উনি বললেন দুবাইয়ে বেশির ভাগ বাংলাদেশীরাই ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করে। উনিও করবেন, ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ইসলামী শরিয়ার মধ্যে জীবনযাপন করবেন!

২.
আমার এক বন্ধুর বড় ভাই লন্ডন থেকে এসেছেন। তাকে কে যেন বুঝিয়েছে উপার্জিত অর্থের কিছুটা ধর্মের পথে ব্যয় করা মুসলমান হিসেবে তার একান্ত কর্তব্য। তিন মোটা অংকের পাউন্ড স্থানীয় মাদ্রাসায় অকাতরে দান করলেন যেনো মাদ্রাসায় দান করলেই তা ইসলামের পথে ব্যয় হবে। এই ভদ্রলোকও সুদ খাবেন না বিধায় তার সব টাকা এনে ইসলামী ব্যাংকে জমা করেছেন।

৩.
আমার বাবার এক বন্ধু অনেক বছর পর আমেরিকা থেকে দেশে ফিরেই এলাকার বেশ কিছু মাদ্রাসায় ডলার দান করলেন। তার কথা সারাজীবনতো পাপের পথেই কাটালাম, এবার ধর্মের জন্য কিছু করি। তাকে আমার বাবা বোঝালেন ধর্মের জন্য করবা ভালো কথা কিন্তু মাদ্রাসায় দেয়া তোমার টাকা দিয়ে যে জঙ্গিট্রেনিং হবে না তার নিশ্চয়তা কী? তিনি বললেন ওসব জঙ্গিফঙ্গি ইহুদী কাফেরদের প্রচারণা। আমেরিকার প্ররোচনায় সারা বিশ্ব থেকে ইসলাম ধ্বংস করতে তার উঠে পড়ে লেগেছে!

অতঃপর

গতকাল ভোলার এক মাদ্রাসার আড়াল থেকে জঙ্গি প্রশিক্ষণের এক বিশাল কেন্দ্র আবিষ্কৃত হয়েছে। এখানে কোমলমতী বালকদের সহি কোরান শিক্ষার আড়ালে একে ৪৭ চালানো শেখানো হতো, জিহাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করা হতো। র‌্যাব এখান থেকে প্রশিক্ষণ সরঞ্জামাদী সহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। জঙ্গিবাদী অনেক বইয়ের পাশাপাশি এখানে পাওয়া গেছে ইসলামী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট বই। লন্ডন প্রবাসীদের পাঠানো টাকায় এই মাদ্রাসাটি চলতো। http://www.prothom-alo.com/index.news.details.php?nid=MjI3NTI=

খোঁজ নিলে এরকম অসংখ্য মাদ্রাসার সন্ধান মিলবে যেখানে পবিত্র কোরানের বদলে শিশুদের হাতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে গ্রেনেড, লাকুম দ্বিনু কুমালিয়া দ্বিনের বদলে শেখানো হচ্ছে-আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান। তিলে তিলে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ অফগান হোক তা আমরা চাই না। আপনার নিষ্পাপ টাকা যেনো আপনার মা-দেশটির ধ্বংস ডেকে না আনে- প্রবাসীরা প্লিজ, খোঁজ খবর নিয়ে নিশ্চিত হয়ে বাংলাদেশের ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে টাকা ব্যয় করুন, ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে ব্যবসা করা প্রতিষ্ঠানগুলো সচেতনভাবে এড়িয়ে চলুন।

murtala31@gmail.com
মহাখালি, বাংলাদেশ।


মন্তব্য

এনকিদু এর ছবি

উত্তম জাঝা!


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

রাগিব এর ছবি

প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে কোনো কারণে মৌলবাদ ও অতিরিক্ত ধর্মীয় আবেগের ফল্গুধারা একটু বেশিই থাকে। দেশে কখনো আমার পরিচিতদের কাউকে সপ্তাহে মাসে একদিন বিশাল "হালাকা" নামের ধর্ম সভাতে শামিল হতে দেখিনি। অথচ এখানকার বাংলাদেশীরা প্রজেক্টর সহকারে মাসিক সেই ধর্মালোচনাতে লিপ্ত, আর ব্যাংকের বদলে হালাল লোন নেয়ার পদ্ধতির কৌশলের আলোচনাতে ব্যস্ত। মধ্যপ্রাচ্য বা যুক্তরাজ্যই নয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও একই দশা।

সম্ভবত দেশ ছেড়ে আসার অপরাধবোধই এদের ঠেলে দেয় এই পথে।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

এনকিদু এর ছবি

দেশ আর ধর্ম এক হল ? পরিচয়টা এখনো মনে হয় ঠিক পরিষ্কার না । মুসলিম নাকি বাংলাদেশি ?

দেশ ছেড়ে আসার অপরাধবোধ যদি থেকেই থাকে, তাহলে তো দেশের জন্য কল্যানকর কিছুতে মনোনিবেশ করা উচিত ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

রাগিব এর ছবি

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

রাগিব, এই ব্যাপারে আমার একটা নিজস্ব থিওরী আছে। একটু সরলীকরণ দোষে দুষ্ট হলেও বলা যায়, যারা প্রবাসে আসে, তারা মোটামুটি শতভাগ ক্যারিয়ারিস্ট। ক্যারিয়ারিস্ট হওয়ার কারণে সুবিধাবাদ জিনিসটা অটোমেটিক্যালি চলে আসে। এটা হলো একটা দিক।

সুবিধাবাদী ছাড়াও যাদের মধ্যে সুবিধাবাদ জিনিসটা ঢুকতে পারে না বা কম ঢোকে, তাদের মধ্যে কাজ করে পরিচয় সংকট। উন্নত বিশ্বের কালচারে আমরা অভ্যস্ত নই। তাদের সাথে সহজে মিশতে পারা খুবই ডিফিকাল্ট মনে হয়। আমি যাতে অভ্যস্ত না, তাকে সরাসরি না বলার জন্য যে স্মার্টনেস বা চারিত্রিক দৃঢ়তা লাগে, তা আমাদের অধিকাংশেরই থাকে না। এর বাইরে অনুঘটক হিসেবে একটা ফ্যাক্ট কাজ করে, তাহলো আমাদের কালচারের অনেক কিছুই ধর্মদ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এজন্য আরববিশ্ব বা পাকিস্তানীদের সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে। হালাল-হারাম নিয়ে অতিরিক্ত স্পর্শকাতরতা দেখা দেয়।

দেশপ্রেম জিনিসটা ক্যারিয়ারিস্টদের জন্য সেকেন্ড চয়েস। আপাত একটা নিরাপত্তার আড়ালে থেকে দেশের জন্য কিছু করার প্রয়াস অনেকেই নেয়। অনেকে আবার সেটাও করে না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সৌরভ এর ছবি

আমিও ব্যাপারটাকে এইভাবে দেখি। দেশের বাইরে এসে বাইরের সংস্কৃতির সাথে একাত্ম হতে না পারা, দেশের জন্যে টান - এই টানাপোড়েন মানুষকে ধর্মের আরো কাছে ঠেলে দেয়।


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সংস্কৃতির নির্ধারক হিসেবে ধর্ম কি জৈবিক নিয়মে ভাষার উর্ধে অবস্থান করে? নাকি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সংস্কৃতিবোধের দৈন্যের এবং সুবিধাবাদের কারণে সংস্কৃতির মুখ্য নির্ধারক হয়ে ওঠে?

আরো গুরুত্বপুর্ন প্রশ্ন হচ্ছে কী কারণে তামিল বা দক্ষিণ ভারতীয়দের কাছে, চীনাদের কাছে আত্মপরিচয়ের প্যারামিটার হিসেবে মাতৃভাষা আসে এবং ঐতিহাসিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালীর কাছে প্রবাসী ট্রমার চেহারায় ধর্ম?

বিষয়টা পরিস্কার হওয়া প্রয়োজন।



অজ্ঞাতবাস

নদী এর ছবি

যে পোকা অন্ধকারেও আলোর দিকে আসেনা,
তার জন্য অন্ধকারই আলো নয় কি?

সমাধান: ঈশ্বরও ভয় পায় ভন্ডদের।
নদী

আহমেদুর রশীদ এর ছবি

ভেতরে ভেতরে একটা সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে। বিশেষ করে পোষাক, ব্যাংকিং এবং শিক্ষা ব্যবস্থায়। আমরা কে কতটা খেয়াল করতে পারছি?

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল

---------------------------------------------------------

ঘাস তুমি ঘাসের মতো থাকো মাটি ছুঁয়ে
যে দেখার সে নতজানু হয়ে ছুঁবে তোমার আঙুল
অবরুদ্ধ মাঠ থেকে তুমি লাফিয়ে নেমোনা প্লিজ পাথরের পথে
________________________________________
http://ahmedurrashid.

নীড় সন্ধানী [অতিথি] এর ছবি

সবগুলো মাদ্রাসা হয়তো জঙ্গীবাদ সহায়ক নয়। কিন্তু বিরাট সংখ্যক মাদ্রাসা যে জঙ্গীবাদের লালন ক্ষেত্র এতে কারো সন্দেহ নেই। সাম্প্রতিক অস্ত্র উদ্ধার ঘটনা তারই প্রমান। এই অস্ত্রগুলো সামান্য। হয়তো অনেক বেশী অস্ত্র লুকিয়ে আছে অনেক মাদ্রাসায়। সরকার কী কওমী মাদ্রাসা নামক নিয়ন্ত্রনহীন মাদ্রাসাগুলোকে আইনের আওতায় আনতে পারে না? দুর্বলতা কোথায়? দেশে এমন কিছু থাকবে কেন যা সরকার বা রাষ্ট্র জানবে না? আমি অনেক জায়গায় দেখেছি প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে উঠেছে আধুনিক মাদ্রাসা। অর্থ কে যোগায়? মধ্যপ্রাচ্য।

এসব ট্রয়ের ঘোড়া আর কতদিন লালন করবো আমরা এই দেশে?

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

টুটুল ভাইয়ের সাথে একমত। একটা পরিবর্তন কিন্তু হচ্ছে। নয়তো দেশে ইংলিশ মিডিয়াম মাদ্রাসা, ক্যাডেট মাদ্রাসা এগুলো হয় এবং চলে কী করে? অনেক সাধারণ ব্যাংক "শরীয়া শাখা" খোলে কেন? কিছু কিছু ব্যাংক-ইনস্যুরেন্স কোম্পানী নাম-ধাম পরিবর্তন করে বা না করে "শরীয়া ব্যাংক" বা "তাকাফুল ইনস্যুরেন্স" হয় কেন? সমস্যাটা প্রবাসীদের মধ্যেই শুধু না, দেশে থাকা লোকজনদের মাঝেও আছে। ইসলামী ব্যাংকিং নিয়ে একবার একটা পোস্টও দিয়েছিলাম। ব্যবসাতে আমার আপত্তি নেই। আপত্তি তা ধর্মের নামে করলে।

যে কোন উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বা অফিসে গেলে এখন আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি সংখ্যায় দাড়ি-টুপি-সুন্নতী লেবাসের পুরুষ আর হিজাবধারী নারীর দেখা মেলে। কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডায়নিং-ক্যান্টিন-কমনরুমে গেলে সেটাকে আলীয়া মাদ্রাসা বলে মনে হয়।

একটা বড় অংশ মানুষ ধর্মের সঠিক শিক্ষাটা পায়না বলে মানসিক আশ্রয় লাভের জন্য শরীয়া ব্যাংক, কওমী মাদ্রাসা, পীর ইত্যাদির নামে কিছু জঙ্গী ধরণের প্রতিষ্ঠানের খপ্পরে পড়ে। দোষটা আমাদের শিক্ষার। নৈতিকতা শিক্ষার জন্য-চর্চার জন্য, বিবেককে জাগ্রত করার জন্য, মানবিক ও দেশপ্রেমিক হবার জন্য ধর্মের আশ্রয় যে জরুরী নয় সেই শিক্ষা কোথায়?

বিদ্যমান বৈষম্য, অপ্রাপ্তি আর অবিচার কিছু কিছু মানুষকে কখনো কখনো ভুল পথে নিয়ে যায়। এটি ঠেকানোর পথ ভিন্ন। বলাই বাহুল্য এই রাষ্ট্র আর সমাজ কাঠামো সেই ভুল সৃষ্টির মূলকে কখনোই উপড়ে ফেলার চেষ্টা করবে না।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ফকির লালন এর ছবি

বাংলাদেশে জামাতের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং তা থেকে প্রাপ্ত মুনাফা মৌলবাদ
ও জঙ্গীবাদের অর্থায়নে ব্যায়িত হচ্ছে।

এর মধ্যে নিম্নলিখিত প্রতিষ্ঠানগুলো অন্যতমঃ

হেলথ সেক্টরঃ

ইবনে সিনা
একটি ওষুধ কোম্পানী আছে, নাম মনে করতে পারছিনা।

এপার্টমেন্ট সেক্টরঃ

মেট্রো হোমস লিমিটেড, ধানমন্ডি।
মিশন বিল্ডার্স, উত্তরা।

শিক্ষা সেক্টরঃ

মানারাত স্কুল।
একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়।

ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীঃ

একটি কোম্পানী আছে, নামটা সম্ভবত পিপলস/পপুলার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানী।

আরো আছে, আমরা জানিনা। কিন্তু জানা উচিত। জানলে জানান।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

বাংলাদেশে রেমিট্যান্সের ৪ ভাগের একভাগই আসে ইসলামী ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। মোস্ট রিসেন্ট হিসাব অনুযায়ী এ সংখ্যা ২২৩ মিলিয়ন ডলার (২৫.৭%)। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে সোনালী ব্যাঙ্ক ৯৮.৮ মিলিয়ন ডলার। পার্থক্যটা সহজেই অনুমেয়।

তবে এক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাঙ্ককে দোষ দেয়ার আগে বা ইসলামী ব্যাঙ্কে টাকা রাখাদের দোষ দেয়ার আগে সরকারী ব্যাঙ্কগুলোর অযোগ্যতা সামনে আসবে। বিদেশে আসার সময় আমার একটা ব্যাঙ্কচেক করতে লাইফ হালুয়া হয়ে গিয়েছিলো, ৩০০ ইউরো বাড়িভাড়া হিসেবে পাঠাতে দেরি হওয়ায় এক সেমিস্টার ধরে বাসার সমস্যায় ভুগেছি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রধান ব্যাঙ্কগুলোর সাথে ইসলামী ব্যাঙ্কের লিঁয়াজো আছে, সরকারী ব্যাঙ্কগুলা এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে।

আর মাদ্রাসায় বোমা বানায় কেন, সে কথা সরকারকে জিজ্ঞেস করা উচিত। সুযোগ পাইলে মানুষ আকাম করবেই, সেই আকাম প্রতিরোধের দায়িত্ব সরকারের। মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি যত্নের অভাব দূরে থাক, এক একটা সরকার স্কুলশিক্ষারও পাইন মেরে দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও সব হরেদরে ঝাঁকের কই হয়ে গেছে। একটা দেশের মেরুদন্ড ভাঙ্গার জন্য এরচেয়ে বেশি কিছু লাগে না।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

নাজনীন খলিল এর ছবি

আহমেদুর রশীদ বলেছেন,

"ভেতরে ভেতরে একটা সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ঘটে যাচ্ছে। বিশেষ করে পোষাক, ব্যাংকিং এবং শিক্ষা ব্যবস্থায়। আমরা কে কতটা খেয়াল করতে পারছি? "

টুটুলের বক্তব্যের সাথে একমত।এটা এখন অনেক স্পষ্টভাবে নজরে পড়ে।

অবশ্যই শংকার কথা।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

ভোলার এই এতিমখানা বা মাদ্রাসাটি গ্রিন ক্রিসেন্ট নামের একটি ইসলামিক চ্যারিটির প্রজেক্ট।
ওদের ওয়েবসাইটে ঢুকলেই এসব প্রজেক্টের ছবি দেখতে পাবেন।
ব্রিটেনের বাঙালি বংশোদ্ভুত ছাত্রছাত্রীদের অনুদানেই এই চ্যারিটি গড়ে উঠেছে।
বিদেশ থেকে টাকা আসলেই আমরা খুশি হই। ইট-কাঠ-সিমেন্ট বিক্রি হয়। নানা শিল্পের মালিকরাও খুশি হন। এলাকায় চাকুরি-বাকুরি সৃষ্টি হয়। জনগণও চোখ বুঁজে থাকেন।

কিন্তু এসব মাদ্রাসার ভেতর থেকে যদি অস্ত্র পাওয়া যায়। কোমলমতি শিশুদের যদি প্লাজমা টেলিভিশন দেখিয়ে তাক লাগিয়ে হাতে তথাকথিত জেহাদের বই ধরিয়ে দেয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় তবে অন্তরাত্মা পর্যন্ত কেঁপে ওঠে।

বিদেশে যারা গদগদ হয়ে কষ্টার্জিত পাউন্ড-ডলারটি এরকম চ্যারিটিতে দান করেন তারা আরেকবার ভাববেন যে কাদের হাতে আপনার সাহায্য যাচ্ছে।

আর যারা মনে করেন এই রাস্তায় আপনারা আপনাদের সংজ্ঞা মাফিক ইসলামী বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলবেন, তাদেরকে অসীম করুণা। আপনারা শুধু মানবতা, বিশ্বসভ্যতার শত্রু নন, আপনারা ইসলামেরও গোরখোদক।

যে ভবন থেকে অস্ত্র-শস্ত্র পাওয়া গেছে তার ছবি দেখুন এই ওয়েবসাইটে
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

এনকিদু এর ছবি

আর যারা মনে করেন এই রাস্তায় আপনারা আপনাদের সংজ্ঞা মাফিক ইসলামী বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলবেন, তাদেরকে অসীম করুণা। আপনারা শুধু মানবতা, বিশ্বসভ্যতার শত্রু নন, আপনারা ইসলামেরও গোরখোদক।

সহমত ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

হিমু এর ছবি

হাস্যকর ব্যাপার হচ্ছে, এই জঙ্গিরা যে দেশ জিহাদের মাধ্যমে পত্তন করতে চায়, তাদের ধর্মকাতর স্পন্সররা সেই দেশে বসবাস কখনো করবে কি? তারা তো সবাই থাকে প্রথম বিশ্বে। সেইখানে একটা ধর্মীয় কোকুনের মধ্যে গুটিপোকা হয়ে তারা ধর্মের লেবেনচুশ চাটছেন সমানে। ফরজ বাদ দিয়ে মাদ্রাসা-মসজিদে দান করে সোয়াব কামানোর শর্টকাট রাস্তা কি আল্লাহ দেখিয়ে দিয়েছেন কোথাও?

টাকাপয়সা যদি নিতান্তই চুলকাতে থাকে, তাহলে যে যার গ্রামে একটা রাস্তা সংস্কার করে দিন। একটা মজা পুকুর পরিষ্কার করে দিন। একটা কালভার্ট বানিয়ে দিন। সকলে উপকৃত হবে। মাদ্রাসায় দান করা পয়সা মাদ্রাসার ছাত্রদের উপকারে লাগে না। তাদেরকে হুজুররা সেই আগের মতোই বাড়ি বাড়ি ভিক্ষা করতে পাঠায় কেতাব কেনার জন্য। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটতে পারে সাধারণ শিক্ষার আওতায়, মাদ্রাসা শিক্ষার আওতায় নয়।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

মন্তব্যটা পড়ে যেটা মনে আসলো,
লোকে মনে হয় দান করার সময় ভাবে, গ্রামের রাস্তা/স্কুল/হাসপাতাল/লাইব্রেরী -= এসব জায়গায় দান করলে অন্যরা বলবে, "আহা কত দানশীল!", কিন্তু মাদ্রাসায় দিলে ভাববে "আহা কত ধার্মিক এবং দানশীল"
ফাও ফাও বাড়তি বিশেষণের লোভ মনে হয় এরা ছাড়তে পারেনা
লম্বা প্রবাস জীবনে কত রকমের কুতুবকে যে বুক ফুলিয়ে নিজের দানখয়রাতের গল্প বলতে দেখেছি যে আমার মনে হয় এই মনস্তত্বটাই কাজ করছে
আর কেউ কেউ তো শোহেইল ভাইর মন্তব্যের "স্বপ্ন" দেখছেই!
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হিমু এর ছবি

ইসলামী কালভার্ট, ইসলামী পুকুর সংস্কার, ইসলামী রাস্তা নির্মাণ চালু করা অতি অতি জরুরি এখন হাসি !



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

হুমমম, রাস্তায় কিছুক্ষণ পরপর চান-তারা খচিত মাইলস্টোন থাকবে চোখ টিপি
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

s-s এর ছবি

সাউথইস্ট ব্যঙ্কের কথা শুনেছিলাম। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিও কি জামাত পরিচালিত? অথবা অধ্যুষিত? কেউ জানেন? খুব ইন্টারেস্টিং, এরা পূর্ব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণ সব দিক কভার করে নামকরণ করে, হয়তো আধুনিক বা আন্তর্জাতিক লেবেল লাগানোটা জরুরি এদের ব্র্যান্ডিং এর জন্য।

আদৌ কি পরিপাটি হয় কোনো ক্লেদ?ঋণ শুধু শরীরেরই, মন ঋণহীন??

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

প্রথম আলোর খবরের বিবরণে কিন্তু মনে হচ্ছেনা যে গ্রীণ ক্রিসেন্টের প্রবাসী দাতারা এর কার;যক্রম সম্পর্কে জানতেননা ... কারণ, মাদ্রাসার যে ফিজিক্যাল বর্ণনা দেয়া হয়েছে সেটাতেই তো এটাকে সন্দেহ হয় ... পরিখা/টরিখা খনন করা আর এলাকাবাসীরাও বলেছে যে এই মাদ্রাসাটা রহস্যময় ছিলো

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

হিমু এর ছবি

অর্থাৎ তাঁরা পয়সা দিয়ে নগদে সোয়াব কিনেই দায় ঝেড়ে ফেলছেন কাঁধ থেকে, নাকি? সেই পয়সা কী কাজে লাগছে খোঁজ নেবার গরজ নেই।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

জ্বিনের বাদশা এর ছবি

নাহ, আপনি ভুল বুঝছেন

আমার ধারণা, অন্ততঃ এই মাদ্রাসার ক্ষেত্রে দাতারা ভালোমতোই জানে কি হচ্ছে ... প্রবাসী এরকম দাতাদের একটা বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আমি নিশ্চিত,যেটা হলো, দান-টান করে সেটার একটা রিপোর্ট তারা পেতে চান ... এই মাদ্রাসার যে ফিজিক্যাল বিবরণ পেলাম, সেটার ক্ষেত্রে যেকোন দাতা ছবি দেখেই বুঝবেন যে ডালমে কুছ কালা হ্যায়
========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

========================
যার ঘড়ি সে তৈয়ার করে,ঘড়ির ভিতর লুকাইছে

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

ব্যক্তিগত বিশ্বাসের পর্যায় ছাড়িয়ে ধর্মকে কেন যে সামাজিক, প্রাতিষ্ঠানিক, ব্যবসায়িক বা রাষ্ট্রীয় আকার দেয়া হয়!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
যৌনদুর্বলতায় ভুগছি দীর্ঘকাল। দুর্বল হয়ে পড়ি রূপময়ী নারী দেখলেই...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

বিপ্রতীপ এর ছবি

একমত...
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
খুঁজে যাই শেকড়ের সন্ধান...

রাগিব এর ছবি

গ্রিন ক্রিসেন্টের ওয়েবসাইটে তাদের "প্রজেক্ট এরিয়া" (ওরফে জঙ্গী ক্যাম্প) এর মানচিত্র।

auto

অবধারিতভাবেই, পাকিস্তানেও এদের ক্যাম্প আছে।

auto

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

হিমু এর ছবি

ফয়সাল মোস্তফার রওশন অতীত নিয়ে টাইমসঅনলাইনে দেখুন। তিনি পোড় খাওয়া মাল, আগেও বিস্তর ঘাটের পানি খেয়ে তবেই ...।



হাঁটুপানির জলদস্যু আলো দিয়ে লিখি

তানবীরা এর ছবি

মাদ্রাসায় দান করলে এক ঢিলে তিন পাখি, দুনিয়াদারী, আখেরাত প্লাস মানসিক শান্তি

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।