নগর দর্শনঃ পাগল সমাচার

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ২৬/০৮/২০১১ - ১০:৪১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পুরান পাগলের ভাত পায় না , নতুন পাগলের আমদানি। এই কথাটা এখন ব্যাকডেটেড হয়ে গেছে। বাংলাদেশে নতুন পাগলদের অত্যাচারে পুরাতন সব পাগল সাইড নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে অথবা হারিয়ে যাচ্ছে। নিরন্তর সংগ্রামরত যে কয়জন পুরাতন পাগল এখনও টিকে আছেন তাদের অভিযোজন ক্ষমতা হারানেরা পথে। এইদিকে নতুন পাগলদের জয়জয়কার চলছে। সববিছুর ডিজুসিকিরন প্রকৃয়ার চুড়ান্ত এই সময়টাতে সব বিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে। ডিজুস পাগলরা পথ ঘাট মাঠে চরম রাজত্ব স্থাপন করে চরম আরাম আয়েশে দিনাতিপাত করছেন। কত কিছিমের পাগল আছে এখন তা বলে শেষ করা যাবেনা। তাই আমি আমার দেখা পাগলদের সম্পর্কে দুচার লাইন করে বয়ান দিয়ে খান্ত হবো।

ছোটবেলায় একটা পাগলা আসতো। পোলাপান সবাই তারে বলত ভাতের পাগল। আর এই কথা তার কানে যাওয়া মাত্র লুঙ্গিটা খুলে নিজেকে যখনই প্রদর্শন করত, বালকের দল আরো আনন্দিত হয়ে দুগুন উৎসাহে ভাতের ’পাগল বলে’ চিৎকারে পাড়া মতিয়ে তুলত। একসময় পাগলা রনে ভঙ্গ দিয়ে জগতের সমস্ত গালাগাল মুখ থেকে বর্ষন করে কেটে পড়ত। একদিন মুরুব্বীদের সালিসের ফলশ্রুতিতে বাপেদের ঘাঢ় খেয়ে পাগলার পিছু ছাড়ে বালকরা।

মনা পাগলা ছিল পাড়ারই পাগল। রাস্তায় তারে দেখলেই চিৎকার করে ‘পাগলা তোর পাগলি কই?’ বলে বালকোচিত আনন্দ আহরন বরতাম। মনা পাগলা কথা শুনে দেয় ধাওয়া। এক দৌড়ে আমি পিন্ডি পার হই। ফন্দি ফিকির বহুত করে সে আমাকে ধরতে। কিন্তু আমি থাকতাম তারচেয়ে একধাপ তৎপর। আমার সকল তৎপরতাকে ব্যর্থ করে দিয়ে একদিন গাছের আড়াল দিয়ে এসে আমাকে ধরে ফেলল। ‘তোরে দিয়াই আজকের খানা শুরু’ বলেই এমন আছাড় মারলো যে আমার প্রকাশ্যে মলত্যাগ করার উপক্রম হলো। এরপর বহুদিন পাগল উত্ত্যাক্ত করা তো দুরে থাক পাগল দেখলে বিপরিত রাস্তায় ভদ্র লোকের মত হন্টন দেয়াই ছিল আমার তাৎখনিক কাজ। জানে বেঁচে গিয়েছিলাম সেবারের মত।

এরও বহুদিন পরে একদা ইউনিভার্সিটিতে আমার পদচারনা পড়ার পর আরো বহু বহু পাগলের সাক্ষাৎ পেয়ে গেলাম। কাউরে পাইলাম বন্ধ পাগল, কাউরে পাইলাম জ্ঞানী পাগল, কাউরে পাইলাম তারছিঁড়া, কেউ আবার পাগল সেজে সন্দেশ খায় ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের পাগল। আজকে এত কিছিমের পাগল নিয়ে বলা সম্ভব না। তাই শুধুমাত্র বিশেষ বিশেষ ক্যাটেগরির পাগল নিয়েই আরো কিছুক্ষন বগর বগর করব।

ক্যাম্পাসে হাজার পাগলের ভীড়ে পেলাম নান্নু ভাইকে। নান্নু পাগলা ক্যাম্পাসের বিখ্যাত পাগলা। সব সময়ই কোট পেন্ট জুতা তার পরনে আছে। লাল, হলুদ, সবুজ ইত্যাদি রংয়ের টাই সব সময়ই তার গলায় ঝুলে। মাথায় ক্যাপও বিভিন্ন বংয়ের। জীবনে বদ ছাড়া কোন ভাল বন্ধু পেলামনা। ইউনিভার্সিটিতেও হলো তাই। আর ফলাফল স্বরুপ সব খাইষ্টা কামই হয় আগে রপ্ত। নান্নু পাগলারে দেখলেই কই, ‘নান্নুভাই পাগল সাইজা সন্দেশ খায়’। সাথে সাথেই নান্নুভাই পুরো টিএসসি আর রোকেয়া হলের সামনের রাস্তায় লাফিয়ে লাফিয়ে, দৌড়ে দৌড়ে তার বিখ্যাত খিস্তিগুলো আওড়ানো শুরু করত। সেই কোলাহল চলত কমপক্ষে তিন ঘন্টা। পগলা ক্রমাগত ইংরেজী বাংলা মিলিয়ে জ্বালাময়ী রজনৈতিক বক্তৃতা চলাত যতক্ষন না কোন ফাইল খুজে পেত। নান্নু ভাইয়ের ফাইল হলো ছাত্র সংগঠনের নেতা কর্মীরা। এদেরকে তিনি কোপনাল বানান। কোপনাল হলো যারে কোপ দিলে মাল বাহির হয়। নান্নু ভাইয়ের বিরক্তিকর আর সিকোয়েন্স ছাড়া বক্তৃতা শোনার ভয়ে পরিচিত পাবলিক তারে বিশ-পঞ্চশটাকা দিয়ে বিদায় করতে বাধ্য হতো। নান্নু ভাইয়ের আয় রোজগারটা ভালই ছিল সে সমসয়। নান্নু ভাইরে নিয়ে নানা কথা প্রচলিত ছিল মার্কেটে। কেউ বলত তারে সিআইএ’র এজেন্ট, কেউ বলত ‘র’ এর এজেন্ট, কেউ বলত পাগল আবার কেউ বলত ভন্ড পাগল। কেউ বলে নান্নু বহুত টাকার মালিক। শোনা যায় নান্নুভাই রাজশাহী ভার্সিটির ছাত্র ছিলেন। প্রানী বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন। নব্বইয়ে ছাত্র আন্দোলনে তার ব্যাপক অংশগ্রহন ছিল। তার পাগল হবার সঠিক ইতিহাস জানা নেই। মাঝে মঝে নান্নুভাই কয়েক মাসের জন্য হারিয়ে যান, পরে এসে বিভিন্ন জেলায় ভ্রমনের বয়ান দিতে থাকেন। একসময় নান্নুভাইয়ের সাথে সখ্যতা গড়ে ওঠে আর আমিও তার একজন কোপনাল হয়ে উঠি। নান্নু ভাই এখনও আছেন। শাহবাগে মাঝে মাঝে দেখি। দেখলেই লুকানোর চেষ্টা করি। কিন্তু লাভ হয় না। নান্নু ভাই ঠিকই দেখে ফেলেন। পঞ্চাশ টাকার কম তার কোনমতেই হয়না।

এক ঘরে দুই পীর থাকলে যা হয় আরকি। ক্যাম্পাস আর শাহবাগ এলাকাতে নান্ন ভাইয়ের প্রধান প্রতিদ্বদ্ধী হলো সরু ভাই। সরু ভাইও একটা ছাত্র সংগঠনের কর্মী ছিলেন। জহুরুল হক হলের ছাত্র ছিলেন। অজ্ঞাত কারনে পাগল হয়েছেন। ঘটনা হচ্ছে এরা পরস্পর কেউ কারো ছায়া মাড়ান না। সরুকে দেখলে নান্নু আর নান্নুকে দেখলে সরু বাধায় লঙ্কা কান্ড। রনক্ষেত্র তৈরী হয়। এদের একজনের কাছে অন্যের কথা বলা মাত্র বর্ষিত হতে থাকে ইংরেজী আর বাংলায় খিস্তিমালা।

একদিন আবিস্কার করলাম আমার বন্ধু লতিফও একটা পাগল। হলে কিছুদিন লতিফের রুমে থাকা হয়েছিল। একদিন শুনি লতিফ বয়ান দেয় ভিন্ন ধরনের। আগে যেইসব কথা বলত তা আর বলেনা। লতিফ রাত তিনটায় ঘুম ভাঙ্গায়া দাবী করতে থাকে তার জনৈক পেমিকা আছে। অনেক কসরত করেও আর সেই পেমিকার বাস্তব দর্শন পেলাম না। এদিকে লতিফের অবস্থা দিনকে দিন আরো খারাপের পথে। মাঝরাত আর শেষরাতের ঘুম কপাল থেকে উঠে গেল। এরপর সে দাবী করতে থাকে যে সে তার বাবা মার আসল সন্তান না। কোন এক হিন্দু পরিবারে তার জন্ম। একদিন অতিষ্ট হয়ে লতিফের এলাকার এক বন্ধুর সাথে পরামর্শ করলাম। তার বন্ধু সব শুনে আমাকে খারিজ করে দিলো। বলল, ভরং ধরছে। কিন্তু ভরং না, বুঝতে পারলাম যখন লতিফ দাবী করতে লাগল তারে কে যেন ফলো করে প্রতিনিয়ত। তার ধারনা কোন বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার লোক তারে ফলো করে। খালি বলতে থাকে ‘আমারে কে যেন ফলো করে, আমারে খাইয়া দিতে চায় ওরা’। সে দাবী করতে থাকে সে বুঝতে পারে কেউ ফলো করে, ফলোয়ারকে কিন্তু দেখা যায়না। এরপর সবাইরে লতিফ অবিশ্বাস করতে থাকল। সবাইরেই তার সন্দেহ হয়। বুঝতে পারলাম লতিফ পাগল হয়েছে। বন্ধুরা অনেক গবেষনা করে বের করলাম লতিফের সিজোফ্রেনিয়া হয়েছে। একদিন তার বাড়ীতে খবর দেয়া হলো। পরদিন তার ভাই এসে নিয়ে গেল তাকে রাজশাহী। এরপর প্রতি তিন-চার মাস পরপর লতিফ ফিরে আসত আর একমাস ঢাকায় থেকে আবার পাগল হয়ে বাড়ী ফিরে যেত। তারপরও লতিফ মাস্টার্স শেষ করেছিল। লতিফ সহ আমরা বন্ধুরা পূর্ব রাজাবাজারে একটা বাসা নেই। কিছুদিন পর লতিফ নিজেকে আধ্যাত্বিক ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষ দাবী করতে থাকল। তারও কিছুদিন পর সে গোপনে একটা বড় ছুরি কিনে আনল এবং সেই ছুরি শিহরে রেখে ঘুমাতে লাগল। একদিন ঘনিষ্ট সূত্রে জনতে পারলাম লতিফ আমারে হত্যার পরিকল্পনা করছে। কি ভয়ংকর কথা! আমি কিনা আমার হত্যাকারীর সাথে একই বিছানায় ঘুমাই। তার ছুরিটি কৌশলে চুরি করা হল। আনেক অনুনয় বিনয়ের পরও সে তার ছুরি ফেরত পেল না এবং সেই সাথে লতিফ আবার পাগল হয়েছে এই মর্মে তার বাড়ীতে পূর্বের মত খরর দেয়া হলো। আমাদের শোবার খাট এবং সিলিং ফ্যানের মালিক ছিল লতিফ। আমাকে কষ্টের সাগরে ভাসিয়ে, চলে যাবার সময় লতিফ তার খাট আর ফ্যান উপহার দিয়ে গেল আমাদের বুয়াকে। কি আর করা, শক্ত মেঝেতে ফ্যানহীন অবস্থায় বেশ কিছুদিন কাটাতে হয়েছিল আমাকে। এর এক বছর লতিফ হাজির হয় মধুর কেন্টিনে বউসহ। তার নব্য বিবাহিত স্ত্রীর সাথে বন্ধুদের পরিচয় করিয়ে দিতে এনেছিল। গ্রামের মেয়ে। চারদিকে এতো সিগারেটের ধোঁয়া, এত চায়ের কাপ আর আমাদের কিম্ভুত কিমাকার চেহারা দেখে সম্ভবত লতিফের বউ ভিমরি খেয়েছিল এবং তার বার বার পাগল হবার কারনটি পরিবেশ থেকে মেয়েটি আঁচ করতে পেরেছিল হয়ত। তিন মিনিটের মধ্যে বউ লতিফকে আচমকা হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গিয়েছিল। এরপর লতিফের সাথে কেবল ফোনেই কথা হয়েছে, কয়েক বছর হলো তারে দেখিনা।

এরপর পাগল হলো বিল্টু। কেমন যেন ফাউল করে শুধু মানুষের সাথে। বড় ভাই বেরাদাররে মারতে যায়। মানুষ দেখলেই গালিগালাজ করতে থাকে। একদিন বিল্টু প্রকাশ করে তার এক পেমিকা ছিল যার সাথে মধুর কেন্টিনে আড্ডা দেয়া কোন এক সুন্দরীর চেহারার নাকি দারুন মিল। এর কিছুদিন পর দাবি করল যে এটাই সেই মেয়ে। একদিন গিয়ে মেয়েরে দাবী করে তার পেমিকা। সে সুন্দরীতো আগামাথা কিছুই না বুঝে ভয়ে অস্থির। আর আমাদের ইজ্জত যায় যায় অবস্থা। প্রত্যেকদিন বিল্টুর নামে নালিস আসে। একদিন সবাই মিলে গবেষনা করে বের করলাম বিল্টুরও সিজোফ্রেনিয়া হইছে। এই কথা বিল্টুর কানে যাওয়ামাত্র বিল্টু এইটাকেই পুঁজি করে বসে। নিজেই চারদিকে প্রচার চালাতে থাকে যে তার সিজোফ্রেনিয়া। এই কথা বলেই হুদাই মানুষরে প্রহার করে। বিশ-পঞ্চাশ টাকা পকেট থেকে কেড় নেয়। কেউ প্রতিবাদ করলেই উত্তর দেয়, ‘ওই কথা কবিনা, আমি কিন্তু সিজো’। এইভাবে একসময় বিল্টুর আশপাশের সব বন্ধু একে একে ফাইটা গেল। মধুর কেন্টিনে যাওয়াটাও বন্ধ হলো। গেলেইতো বিল্টুর অত্যাচার। তাও দেখা হয়ে যায় বিল্টুর সাথে। দেখা হলেই ইজ্জতটা এবেবারেই পাংচার হয় ক্ষনিকের মাঝে।

ফারুক নামের এক পাগল আছে। সে আবার পুলিশের এএসপি। ছাত্র হিসেবে বেশ ভালই ছিল। সেও একদিন পাগল হয়ে গেল বিসিএস অফিসার হবার কিছুদিন পর। পাগল বিধায় আপাতত চাকরি নাই। আশা করি সেরে উঠার পর সে চাকরি ফিরে পাবে। কিছুদিন আগে কিছু লোককে একটু হালকার উপর ঘষামাজা দিতে হইল। তারা ফারুকরে অকথ্য গালিগালাজ করছিল। কারন ফারুকের অপরাধ ছিল সে তাদের মটরসাইকেলে বসে আরাম করছিল। ছেলেগুলোকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেও লাভ হলনা বরং তারা ফাঁপর দিল ফারুকের সহিত আমাদেরকেও সাইজ করা হবে। তখন কিছু হালকা উত্তম মধ্যম আর দশবার কান ধরে উঠবস করিয়ে মটরসাইকেলের মালিকদের ছাড়া হয়েছিল। গত কয়েক বছর ধরে একটা মটরসাইকেল বাহিনী দেখা যাচ্ছে। এরা বেশীর ভাগই পুরান ঢাকার আর অন্যান্য এলাকার বিভিন্ন গলি ঘুপচির চক্কর বক্কর পোলাপান। পেশায় এরা তরকারী বিক্রেতা, মাছ বিক্রেতা, ভাতের হোটেলের মালিক, খুচরা দোকানদার, ভাঙ্গারীর পাইকারী ব্যবসায়ী , মটর গ্যারেজের মালিক, খুচরা মাদক ব্যবসায়ী অথবা এমএলএম ব্যবসায়ী। হিন্দি ফিল্মের নায়কের স্টাইল ফলো করা এই চক্কর বক্কর তরুনদের দেখলেই চেনা যায় আলাদাভাবে।

যা হোক, মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসাই সমিচিন মনে করি। আসলে কে আসল আর কে নকল পাগল সেটা নির্নয় করা বহুত কঠিন। এই নগরে চলতে গেলে নানা ধরনের পাগলের মুখোমুখি হতে হয়। সেইদিন এক পাগলের দেখা পেলাম যে কিনা নিজেরেই নিজে পাগল দাবী করে। সাথে সাথে তাকে জিজ্ঞেস করলাম কেন সে নিজেরে পাগল মনে করে। উত্তর দেন সাধু বাউলদের কাছে আসলে তিনি পাগল হয়ে যান, কিন্তু কর্মক্ষেত্রে তিনি স্বাভাবিক। বুঝে নিলাম তার পাগলামির পেটের কথা। যে বাউল সাধুর কাছে তিনি আসেন সেও নিজের নামের আগে লাগিয়েছেন ‘পাগলা’ খেতাবটি। কি আজিব দুনিয়া, নিজেরেই নিজে পাগল বলে প্রচার করে পাগল খেতাব নিতে হয় মানুষের! কয়দিন আগে এক লোকরে দেখলাম বেশ উত্তেজিত হয়ে কথা বলছে ফোনে কাউকে। অপর প্রন্তের ব্যক্তির প্রতি বর্ষিত হচ্ছিল উত্তপ্ত সব বাক্য। বার বার একটা কথাই শোনা যাচ্ছিল বেশী, ‘ পাগলরে কিন্তু খেপাইসনা’। আচনক ব্যাপার। একটা সময় ছিল যখন পাগলরে পাগল বলার জন্য মাথায় তুইলা আছাড় দিছিল আমারে। এখন দেখি সব পাগল নিজেরে পাগল বইলা দাবি করতেই ভালবাসে। এরা কি আসল পাগল?

এক পাগল বছর দুই আগে পেয়েছিলাম যিনি গাছের মধ্যে মাচার ঘর তৈরী করে খ্যাতি কুড়িয়েছিলেন। তার হাতে সবমসয়ই দেখেছি একতারা। কিন্তু বাজাতে দেখিনি কোন দিন। একদিন পাগলের সাথে লাগল আমার ধাক্কা রাস্তায়। বেশ শুদ্ধ করে বললেন পাগল, ‘দেখে হাটতে পারেননা? কি আশ্চর্য! কিসব লোকজন’। আমি বললাম, ’জ্বি আজ্ঞে। বুঝতে পারলাম’। এতে পাগল আরো ক্ষিপ্ত হয়ে বলে, ‘এতো দেখি আচরনই জানে না’। আমি আবার বললাম, জি আজ্ঞে। তখন পাগল চুড়ান্ত ক্ষিপ্ত হয়ে বলে,‘ পাগলের সাথে বেয়াদবী , বুঝবি মজা’। কৌতুহলী আমি এরপর থেকে দুর থেকে ফলো করতাম সেই পাগলরে। একদিন দেখি সামনের সুন্দরীর দিকে আড়চোখে খালি দেখে পাগল। আহারে পাগল পাগলামীটাও পারলিনা করতে ঠিকমত। পাগল কি আড়চেখে মাইয়া দেখে? এত টাইম আছে পাগলের?

আজকাল পাগল না হইলে নাকি ক্রিয়েটিভ হওয়া যায় না। তাই প্রতিনিয়তই দেখি পাগলের ভান করে মানুষ হতে চান কবি, শিল্পি আর সাংস্কৃতিক কর্মী। একটু উস্কখুস্ক না হলে কি আর মানুষ জ্ঞানী বলে! তাই নগরটা জুড়েই যেখানেই যাই পাগল পাগল ভাব জ্ঞানী লোকের সমাহার। পাগল না হলে নাকি নাট্যকর্মী হওয়া যায় না। পাগল না হলে নাকি এখন আর কেউ গান শুনতে চাচ্ছেনা। কবিদের নাকি একটু পাগলই হতে হয়। পাগল না হলে এখন আর সাংস্কৃতিক অঙ্গনে টিকে থাকা যাচ্ছেনা। পাগল ডিরেক্টর, পাগল ক্যামেরাম্যান, পাগল স্ক্রিপ্ট রাইটার, পাগল ঔপন্যাসিক, পাগল পেইন্টার, পাগল সাংবাদিক, পাগল গবেষক। চারদিকে দেখি সন্দেশ খাচ্ছেন হাজার হাজার পাগল এই নগরে। এত পাগলের ভীড়ে কে আসল পাগল চেনাইতো হয়ে পড়েছে দায়।

একটা ভিডিও ক্লিপ দেখলাম ফেসবুকে। এক মডেল এক অনুষ্ঠানে সুইমিং পুলের চিপায় বানান স্টেজে কেটওয়াক করছিলেন। এক সময় ক্যাট করে ঘুরতে গিয়ে তিনি উস্টা খেয়ে হাইহিল সমেত পাশের পুকুরটায় পতিত হলেন। মনে হলো তিনিও একজন তথাকথিত পাগলের কাছ থেকে প্রশিক্ষিত হয়ে প্রথমে নিজেকে খাওয়ালেন এবং পরে তার মডেল হবার হাউসটাকে খাইয়া দিলেন।

নকল হইতে সাবধান। আসল পাগল চিনে নিন।

সাইফ জুয়েল


মন্তব্য

ফাহিম হাসান এর ছবি

আসল পাগলকে চেনা কেন দরকার?

মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষদের সম্পর্কে আপনার চিন্তা-ভাবনা কী?

যে সব বন্ধুদের কথা বললেন আশা করি তাদের ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন।

আশরাফ মাহমুদ এর ছবি

লেখাটায় কেমন যেনো হাস্য-পরিহাসযুক্ত অবজ্ঞা ফুটে উঠেছে মানসিকভাবে সীমাবদ্ধ লোকজনের প্রতি। ভালো লাগে নি।

ফাহিম হাসান এর ছবি

সহমত

ফাহিম হাসান এর ছবি

ডুপ্লি

কৌস্তুভ এর ছবি

লম্বা লেখাটা পড়ার সময় পাইনি, তবে লাস্ট লাইনটা দেখে রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের এই গানটা মনে পড়ে গেল -

"আমি নকল পাগল সকল দেখি আসল পাগল দেখি না
আমি মনের মত পাগল পেলাম না..."

সাইফ জুয়েল এর ছবি

ধন্যবাদ কৌস্ত্তভ গানটি দেয়া জন্য। লেখাটি মূলত গানটির বক্তব্যকেই প্রতিনিধিত্ব করছে। লেখাটির শেষদিকে বিষয়টি স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

?


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

সাইফ জুয়েল এর ছবি

সবার উদ্দেশ্যে একটা কথা বলতে চাই। প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থা পাগলদের যে অবজ্ঞাসূচক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখে লেখাটি তেমন নয়। বরং, পাগলদের প্রতি প্রচলিত ভাবে আমরা যে দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে থাকি তার স্বরুপ তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে লেখাটিতে। আমার নিজের অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে ছোট থেকে বড় পর্যন্ত আমার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির গুলোর পরিবর্তিত অবস্থানকেও দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। অবশ্যই ছোটবেলা প্রচলিত সমাজ আমাকে যে ধারনা দিয়েছে তার বর্হিপ্রকাশ ঘটেছে সে বয়সে। পরবর্তীতে তাদের সান্নিধ্যের ফলে কিভাবে মনভাব পরিবর্তিত হয়েছে তা কিছুটা বলার চেষ্টা করেছি। তবে লেখাটির মূল উদ্দেশ্য ছিল আসল ও ভন্ড পাগলের পার্থক্য দেখানো।

ফাহিম ভাই এবং আশরাফ ভাই, আমি পাগলদের মানসিক ভাসসাম্যহীন বা ভীন্ন ভাবে সক্ষম কোনটাই বলা সমর্থন কারিনা।এতে করে বরং তাদের মানুষ হিসেবে ছোট করা হয়। বা এলিয়েনাইজেশন করা হয়। পাগল কথাটি প্রচীন কাল থেকেই এদেশে সন্মানজনক একজন মানুষকে বোঝান অর্থেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পাগল হলো ভিন্ন মানসিক অবস্থা ধারনকারী মানুষ যাদের অনেক কোডই কমন বা সাধারন না। এদের কোডগুলোকে আমাদের প্রচলিত কোড দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায়না তাই সংগতিহীন মনে হয় বলে সাধারন দৃষ্টিভঙ্গিতে।

পূর্বে পাগলদের সন্মানজনক অবস্থান ছিল। সাধুগুরু ও ফকির দরবেশদের সাধারন মানুষ পাগল বলত এবং ভক্তি শ্রদ্ধা করত। কলেক্রমে সমাজ ভিন্নমতবিলম্বী বা পৃথক চিন্তার মানুষদের সমাজ মানসিক ভারসাম্যহীন পাগলে পরিনত করেছে।

পাগল সাধুগুরুদের জায়গা দখল করেছে ভন্ড জ্ঞানীরা। এদেরকেই বলেছি পাগল সেজে স্বন্দেশ খায়।

ফাহিম ভাই এখানে আমি চোর ডাকাতদের কথা বলিনি যে আমাকে ছদ্মনাম ব্যবহার করতে হবে। আমি পাগল বলতে আমার চেয়ে ভিন্ন চিন্তার মানুষকে বুঝি। এবং তাকে বেশ গুরুত্বপূন্য মানুষই মনে করি।

ফাহিম হাসান এর ছবি

আপনার বিস্তারিত বক্তব্য শুনলাম। আমার মতামত -

১। আপনার লেখায় "পাগলদের" প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ পায় নি। বরং অবজ্ঞার প্রকাশ ঘটেছে। আপনি যা বলতে চেয়েছেন তা ঠিক ভাবে বলতে পারেন নি। যেহেতু আপনাকে চিনি না সেহেতু আপনার মনোভাব লেখার মাধ্যমেই যাচাই করা হয়েছে।

২। আপনি "মানসিক ভারসাম্যহীন" শব্দ ব্যবহারের বিপক্ষে অথচ "পাগল" বলার পক্ষে। অথচ আপনার লেখাতেই পরিষ্কার যে "পাগল" শব্দটা অবজ্ঞার্থেও ব্যবহৃত হয়। এমন অবস্থায় আপনার অবস্থান অযৌক্তিক।

৩। আপনি সিজোফ্রেনিক রোগিদের নিয়ে ঠাট্টা করেছেন। এ দরনের রসিকতায় আমি কোন মজা খুঁজে পায় নি।

৪। কারো যদি সিজোফ্রেনিয়ার বা মানসিক ভারসাম্যতার ইতিহাস থাকে, সে যদি আপনার আত্মীয় বা বন্ধুও হয়, আপনার উচিত তার কথা উল্লেখ করার আগে অনুমতি নেওয়া। আপনি পাবলিক ফোরামে আরেকজন মানুষের মানসিক ভারসাম্যহীনতার গল্প করবেন, ঠাট্টা করবেন এ বিষয়ে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন আছে বৈকি! অনেক মানুষ সচলায়তন পড়েন এবং সোশাল নেটওয়ার্কিং এর যুগে কারো সম্পর্কে এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে গল্প করার সময় আমাদের সচতন থাকা জরুরী।

----------------------------------------------------------------------------------------------

আপনার পোস্টের টোন ও মানসিক রোগিদের আসল নাম ব্যবহারের বিষয়ে আমি আপত্তি জানাচ্ছি।
আমার এই পোস্ট ভাল লাগে নি।

অপছন্দনীয় এর ছবি

আমি ফাহিমের সাথে সম্পূর্ণভাবে একমত।

সাইফ জুয়েল এর ছবি

এটা হচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গি ও উপলব্ধির ব্যাপার। একজন মানুষ কোন দৃষ্টিভঙ্গি পোষন করে প্রচলিত ধারার চেয়ে ভীন্ন ধরনের মানুষকে দেখার ক্ষেত্রে। ব্যক্তিগতভাবে আমার চেতনা প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার নির্মিত ধারনাকেই আমার ছোটবেলা থেকে পোষন করলেও এটা যে ভ্রান্ত অন্তত নিজের দেখা থেকে এখানে বোঝাতে চেয়েছি। তবে একটা কথা আমি যদি কাউকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলি তা হবে বরং ওই মানুষটাকে ছোট করা। কারন এক্ষেত্রে আমরা নিজেকে তার চেয়ে উন্নততর মানসিক অবস্থা সম্পন্ন মানূষ হিসেবে দেখার মানসিকতা লাভ করি। পাগল শব্দটি কোন প্রকৃতপক্ষে কোন হীন মানসিক অবস্থাসম্পন্ন মানুষকে বোঝায় না। এটা হচ্ছে নগরকেন্দ্রীক জটিল সামজের তৈরী একটা কনসেপ্ট যে পাগল হলো মানসিক ভারসাম্যহীন আর সাধারনের চেয়ে নিন্মতর মানুষ। এই বোধ থেকে দেখলে স্বাভাবিকভাবেই আমার লেখাকে মনে হবে পাগলদের পরিহাস করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এটা সে ধরনের লেখা না।

সাইফ জুয়েল এর ছবি

ফাহিম ভাই,

১. আমার লেখায় পাগলদের প্রতি কেন সহানুভুতি দেখাতে যাব। পাগল আমার চেয়ে মানসিকভাবে দুর্বল কেউনা যে আমি তাকে সহানুভুতি দেখাতে যাব। আমি এদের ব্যঙ্গও করিনি। কোনটিই করার সাধ্য আমার নেই। আমি দেখাতে চেয়েছি ভিন্ন ধরনের ও ভিন্ন কোড ধারনকারী ব্যক্তির প্রতি নাগরিক সমাজ যে আচরন প্রকাশ করে তা।

২. আমি আগেই বলেছি পাগল বলতে আপনি যা বোঝেন বটা প্রচলিত সমাজের ধারনা। পাগল প্রকৃতপক্ষে কোন মানহানিকর শব্দনা। প্রচলিত নাগরিক সমাজ এই শব্দটিকে মানহানিকর হিসেবে দেখানোর দেখতে চায় সব সময়। প্রকৃতপক্ষে সাধু সন্ন্যাসী, বাউল, ফকির ও দরবেশদের ও ভীন্ন মতাবলম্বীদের পাগল বলে বলে অভিহিত করা হয় গ্রামীন সাধারন সমাজে। আমি শহুরে সমাজে এদের যেভবে বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়। আমার লেখায় আমি তা দেখাতে করতে চেয়েছি।

৩. আর সিজোফ্রেনিয়া সম্পর্কে বলেছি যে আমার বন্ধুদের যে সিজোফ্রোনিয়া হয়েছিল সেটা আমাদের দ্বারাই নির্মিত হয়েছিল। আমরাই ঠিক করেছিলাম যে তাদের সিজোফ্রেনিয়া হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে দেখাতে চেয়েছি কিভাবে সমান মানসিক ভিন্নতাকে স্টিগমাটাইজড করে। আশা করেছিলাম লেখা পড়ে বুঝবেন যে দুজন সিজোফ্রেনিকের কথা বলা হয়েছে আরা প্রকৃত পক্ষে ছিল ভাবের পাগল বা খেয়ালের পাগল। এরা যে ইউনিভার্সিটি থেকে মাষ্টার্স পাশ করেছে তা কিন্তু লেখায় বলেছি এবং বউ নিয়ে সংসার করছে।

জহির  আহমাদ এর ছবি

ব্যাখ্যায় পরিষ্কার বক্তব্য রাখার জন্য ধন্যবাদ । ইউনিভার্সিটির শেষ বয়সে অনেকরেই এরকম ভাবের পাগলামী প্রত্যক্ষ করার সৌভাগ্য হয়েছে । লেখালেখি জারি থাকুক ।

সাইফ জুয়েল এর ছবি

ধন্যবাদ জহির ভাই লেখটার ভাব ধরতে পারার জন্য।

খালেদ এর ছবি

এখন আপনি যতই সাফাই গান না কেন লেখাটি পড়ে কিন্তু কোথাও মনে হয়নি যে আপনি 'পাগল'দের ব্যাঙ্গ করেননি, আর "কিভাবে......ষ্টিগমাটাইজড করে" সেটাও দেখাতে চেয়েছেন বলে মনে হয়নি। ইউনিভার্সিটি থেকে বা মাদ্রাসা থেকে বা মসজিদ থেকেই হোক পাশ দিয়ে বউ নিয়ে সংসার করলেই তাদের সিজোফ্রোনিয়া হয়না, বা ভবের পাগল হতে হবে সে তথ্যই বা আপনি কোথায় পেলেন? এধরণের রোগী সত্যিই যদি আপনার নিকটটজন কেউ থাকতো তাহলে পাগলদের নিয়ে আপনি কিছুতেই এমন অবমাননাকর কিছু লিখতে পারতেন না।

সাইফ জুয়েল এর ছবি

জ্বি। বেশ। বেশ বুঝতে পারলেন!!! আপনাকে ধন্যবাদ। মন খারাপ

তিথীডোর এর ছবি

লেখক কী বোঝাতে চাইছিলেন, ঠিক ধরতে পারলাম না। ইয়ে, মানে...
মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন এবং সিজোফ্রেনিক রোগিদের নিয়ে রসিকতার চেষ্টা ভাল লাগে নি।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সাইফ জুয়েল এর ছবি

বুঝাতে না পারলে আর কি করা? সেটা আমার ব্যর্থতা। তবে কষ্ট করে পরার জন্য মন্তব্য ও করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। খাইছে

যুমার এর ছবি

মনোরোগ অন‌্য অনেক রোগের মতই একটা রোগ।দুঃখের বিষয় এই যে-এ ধরনের রোগিরা সুচিকিৎসা তো দূরে থাক সহানুভূতিও পায় না। লেখায় সংবেদনশীলতা খুঁজে পাই নি।

পাঠক এর ছবি

সাইফ ভাই বৎআবার মুগ্ধ হলাম আপনার লেখাটা পড়ে। নাগরিক সমাজ ভিন্ন চিন্তার মানুষদের নিজের চেয়ে নিন্মতর বলে যেভাবে পৃখক করে দেয় তা দেখাতে চেয়েছেন। আর কিথাবে ভন্ডপাগল সব দখল করে নিচ্ছে তা দেখালেন। আমার মনে হয় আপনার লেখাটিকে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি খেকে দেখলে লেখাটিকে ছোট করা হবে। তবে সাধারন পাঠকের জন্য লেখাটির ভাব বোঝা কঠিন এটাও ঠিক। আপনার লেখা পড়ে মিশেল ফৃকোর ম্যাডনেস এন্ড সিভিলাইজেশন বইটার কথা মনে পড়ে গেল। সেখানে ফুকো দেখাতে চেষ্টা করেছেন কিভাবে আধুনিকতার নাম করে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ পাগলদের টিট্র করে আর তাদের উপর সামাজিক ও রাষ্ট্রিয় নির্য়তনকে অনুমোদন দেয়। এ অসাধারন লেখাটার যেভাবে রস দিয়ে লিখেছেন তার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

সাইফ জুয়েল এর ছবি

পাঠক ধন্যবাদ আপনাকে লেখাটা ভালো লাগার জন্য। আমি কিন্তু কোন পাঠককে সাধারন আবার কোন পাঠককে অসাধারন মনে করিনা। যেকোন বক্তব্যই একেকজনের কাছে একেক রকম মতে হতে পারে। এই ভিন্নতা তৈরী হয় আমাদের জীবন লব্ধ অভিজ্ঞতাগুলোর ভীন্নতা থেকে।

আমি মিশেল ফুকোর মেডনেস এন্ড সিভিলাইজশেন পড়েছি। বইটার বক্তব্য নিয়ে একটা লেখা লিখে ফেলতে পারি।

মাজহার এর ছবি

লেখাটি ভাল হয়েছে।

একজনের অভিজ্ঞতার বর্ণনাকে তার মনোজাগতিক গঠনের চিত্রকল্প হিসেবে ধরে নেয়াই বরং আমার কাছে খাপছাড়া ঠেকল। তাছাড়া, আমার কাছে মনেও হল না যে, সিজোদের নিয়ে কোথাও মার্কেবল ব্যঙ্গ ফুটে উঠেছে।

পরবর্তী ব্যাখ্যাও যুক্তিপূর্ণ হয়েছে।

সাইফ জুয়েল এর ছবি

ধন্যবাদ মাজহার ভাই লখা ভাল লাগার জন্য। আজকাল আসলে বুদ্ধিজীবিদের জয়জয়কার। এনাদের মধ্যে কিছু আবার সংবেদনশীলতা বলতে আসলে যে কি বোঝেন, .মাঝে মাঝে আমার মনে হয় সেটা এনারা নিজেও বোঝেননা।

একজনের অভিজ্ঞতার বর্ণনাকে তার মনোজাগতিক গঠনের চিত্রকল্প হিসেবে ধরে নেয়াই বরং আমার কাছে খাপছাড়া ঠেকল।

চলুক সহমত।

কল্যাণF এর ছবি

লেখকের লেখার হাত আছে। লেখার বিষয়টা নিয়া আমরা যতই তর্ক করি না কেন। আমার মনে হইছে লেখক পাগল বলে এবং পাগল নিয়ে কোন আসুস্থতাকে ব্যাংগ করেনি, বরং কিছু মানুষ যে এটার সুযোগ নেয় এটা বোঝানোর চেষ্টা করেছে। এখন আছ কিনা জানি না, কিন্তু ২০০৪-৫ এর দিকে ঢাকায় শাহবাগ আর আসাদ গেট ট্রাফিক সিগনালে দুই পাগল দেখা যেত। আমি নিজে তাদের পাল্লায় পড়েছি কয়েকবার। ওদের ট্রিকটা ছিল, হাতে মানুষের মল নিয়ে পথচারী বা সিএঞ্জি/মিশুকের যাত্রীদের কাছে যাওয়া এবং গায়ে নোংরা লাগিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়া। যে মানুষ এতোখানি এগিয়ে অন্য মানুষ্কে ব্ল্যাক্মেইল করে টাকা আদায় করতে পারে সেকি আসলেই পাগল নাকি আপরাধ করে বাঁচার জন্য পাগলামির ভান করে?

সাইফ জুয়েল এর ছবি

লেখার প্রশংসা করার জন্য ধন্যবাদ। প্রশংসা শুনতে কার না ভাল লাগে। আপনি ঠিকটাই ধরতে পেরেছেন। আমি আসলে পাগলামীর ভান করে এমন ব্যক্তিদের নেয়েই লেখার চেষ্টা করেছি। কোন ভীন্নতর মানসিক অবস্থা সম্পন্ন মানুষকে বরং মানসিক ভারসাম্যহীন বলে নিজের চেয়ে ছোট করিনি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।