ফেরা - ০২

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি
লিখেছেন ত্রিমাত্রিক কবি (তারিখ: শনি, ২২/১০/২০১১ - ৬:৫০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


নোট

ঠাণ্ডা বেশ জাঁকিয়ে বসেছে। বরফ পড়া এখনো শুরু হয়নি যদিও, কিন্তু উইন্ডচিল আসলে বরফের চেয়েও খারাপ। বাতাস না থাকলে এখানে মাইনাস পাঁচ-দশেও দিব্যি একটা জ্যাকেট পরে চালিয়ে দেয়া যায়। আর বাংলাদেশের কাঁঠাল-পাকা শীতেও বাতাস আর কুয়াশার জন্যে মাফলার ছাড়া বের হওয়া যায় না। মানুষ যতটা ভাবে এখানে আসার আগে, ব্যাপারটা আসলে অতটা খারাপ না। শীতে একদিকে যেমন কষ্ট আরেকদিকে তেমন আরাম, যদি কাজকর্ম না থাকে আরকি। প্রফেসর এক সপ্তাহের জন্যে আম্রিকা গেছে, কি জানি কনফারেন্সে। সেই সুযোগের প্রথম দিন আজকে, সকালে ইচ্ছে করেই ঘড়ি আর মোবাইলে অ্যালার্ম দিয়ে রাখা যাতে ঘুমটা ভেঙ্গে যায়। শীতের সকালে লেপ কাঁথা মুড়ি দিয়ে জাগা-জাগা ঘুম ঘুমাতে হয়। মরার মত ঘুমালে শীতের ঘুম আসলে পুরাই মাটি।

‘জীবনটা এইভাবে কাইটা গেলে মন্দ হইত না’ ভাবতে ভাবতে আবার জাগা জাগা ঘুমে তলিয়ে যায়। দু-একটা মনোরম আধা-উষ্ণ স্বপ্নও বোধহয় দেখা শুরু করে। প্রচণ্ড উইন্ডচিলের মধ্যেও স্বপ্নের বালিকারা বেশ খোলামেলা, বাতাস তাদের কাপড় উড়িয়ে নিয়ে যায় যায়, শীতে কাঁপতে কাঁপতে বালিকারা লেপের নীচে আশ্রয় নিতে চাইছে বোধহয়, স্বপ্নটা কেবল জমে উঠছে, এমন সময় বেরসিকের মত চুতমারানি মোবাইলটা বেজে ওঠে। ‘থাক ধইরা কাম নাই, এত সক্কালে কোন বালছাল ফোন দিছে!’, কেটে দেয় গালি দিতে দিতে। একটু পরে আবার বেজে ওঠে, ধরে না, কিন্তু আবার বাজে। বেশ কয়েকবার। মেজাজ খারাপ করে ফোন ধরে অবশেষে,

- হ্যালো, হ্যালো

- হ্যালো, হেলাল নাকি? আমি সাঈদ।

- কোন সাঈদ? চিনলাম নাতো ভাই।

কোন সাঈদের কথাই সে খুব সহসা মনে করতে পারে না। তার মস্তিষ্কের কোষগুলো এখনও বোধহয় আধা-উষ্ণ স্বপ্নের স্মৃতি পুরোপুরি হারাতে চাচ্ছে না। অবচেতন মন বোধহয় কোনমতে কথা শেষ করে আবার একই জায়গা থেকে স্বপ্নটা ধরতে চাচ্ছে। এরকম স্বপ্ন তো রোজ রোজ আসে না! নাহলে সাঈদকে ওর চেনারই কথা।

- দোস্ত আমি সাঈদ, আরে বাল আইডিয়াল স্কুলের সাঈদ। খাইছস নাকি কিছু!

- ওহ হো সরি দোস্ত, সরি, হ, হ দোস্ত বল কি অবস্থা, হঠাৎ ফোন দিলি যে? কাহিনী কি, কতো! বিয়া শাদী করতাছস নাকি? নাকি একেবারে পয়দা কইরা ফালাইছস? তোরে দিয়া তো দোস্ত সবই সম্ভব।

একটানে এতগুলা কথা বলে যেতে থাকে, সাঈদকে কিছু বলার সুযোগই দেয় না। আর মনে মনে চিন্তা করার চেষ্টা করে, কি কারণে আসলে ফোন দিতে পারে। ওর বাইরে আসার প্রায় দেড় বছর হয়ে গেল, এর মধ্যে তো একবারও ফোন দেয়নি। অবশ্য ওর ফোন কখনও আশাও করেনি এত খাতির তো কোনদিনই ছিল না ওর সাথে, হঠাৎ কি হল! ও কৌতূহলী হয়ে ওঠে। ঘুম আর স্বপ্নের রেশ ধীরে ধীরে কেটে যায়।

- আচ্ছা দোস্ত বল এইবার, ভাইঙ্গা বল, ফোন দিসস ক্যান?

- দোস্ত, একটা খারাপ খবর দেওয়ার জন্যে ফোন দিছি। অনিরে চিনতি তো? মনে আছে? আমগো স্কুলের অনি।

- অনি? মানে কোন অনি? ভাল নাম ক তো? কোন সেকশানে আছিল?

- আরে নবম ছয় এ আছিল। আমগো লগেই থাকত। পোলাপান কম চিনে একটু। ইন্ট্রোভার্ট টাইপ আছিল তো। ভাল নাম হইল গিয়া, তানভীর হাসনাইন।

- ও আচ্ছা আচ্ছা, হ হ চিনছি দোস্ত। অনেকদিন যোগাযোগ নাইতো মাথা থিকা আউট হইয়া গেছিল। ও তো মনে হয় ফেসবুকেও নাই। তো শালার খবর কি? কাহিনী কি এইডা ক।

- দোস্ত অনি মারা গেছে।

- ইন্নালিল্লাহ, কী কস দোস্ত, মারা গেছে মানে? ক্যামনে মারা গেছে? অ্যাক্সিডেন্ট নাকি? অসুখ-বিসুখ হইলে তো শুনতাম মনে হয়। স্কুলের বেশীরভাগ পোলাপানের লগেই তো যোগাযোগ আছে।

- না দোস্ত, অ্যাক্সিডেন্ট না। একটু অন্যরকম ব্যাপার আরকি। খুইলা কই তাইলে কি কস?

ঘুম এবার চটে গেছে। এমন না যে খুব ক্লোজ ফ্রেন্ড। দেশে থাকতেও গত পাঁচ বছরে একবারও দেখা হয়েছে কিনা মনে করতে পারে না। কিন্তু তারপরেও খারাপই লাগে, বেশ খারাপ লাগে। এই বয়সী একটা ছেলে মারা যাবে এটা কেমন কথা!

- হ দোস্ত খুইলাই ক।

- ও যে আম্রিকা গেছিল এইটা কি জানতি?

- না তো, আমার লগে ওর গত পাঁচ ছয় বছরে দেখা হইছে বইলা মনে হয় না।

- তোর অবশ্য জানারও কথা না। গেছে এই রিসেন্টলি। গত জুলাই এ আরকি। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, রিভারসাইড না কি জানি। পি এইচ ডি তে গেছে।

- আচ্ছা, বুঝলাম, কিন্তু সেখানে কি হইল?

- এইটাই দোস্ত কাহিনী, আসলে কি হইছে কেউ জানেনা ঠিকমত। ওখানকার বাঙ্গালী কমিউনিটির সাথে নাকি তেমন মিশত না। খাতির তো দূরের কথা, কথা বার্তাও নাকি বিশেষ হইত না। ওর সাথে আমার গত শুক্রবারে জিমেইলে চ্যাট হইছে। নরমালি বাংলাদেশীরা নাকি একসাথে বাসা ভাড়া কইরা থাকে, ওই কইল। কিন্তু অর নাকি একসাথে থাকতে ভাল্লাগে না। ও ডর্মে থাকত আরকি, একাই।

- তারপর?

- তারপর আরকি? দুইদিন ধইরা ওরে খোঁজাখুঁজি কইরা কেউ পায় না। পরে ডর্মের রুমে গিয়া নাকি দেখা গেছে দরজা ভিতর থিকা লক। পরে দরজা ভাঙ্গা হইছে। তারপর তো বুঝস ই।

- দোস্ত, খারাপ লাগল খুবই শুইনা, কিন্তু এইটা তো ক্লিয়ার সুইসাইড কেস। বোঝাই যাইতেছে। ইন্ট্রোভার্ট আছিল, কারো লগে হয়ত শেয়ার করতে পারে নাই। বাট ভেরি স্যাড, দোস্ত।

- দোস্ত কাহিনী তো সেখানে না, তুই বাল না শুইনাই ডিসিশান দিয়া দিলি? তুই বাল আগের মতই আছস।

- সরি দোস্ত, ক ক, সরি।

- সমস্যা হইল দোস্ত, ডেডবডিতে নাকি কোন চিহ্ন পাওয়া যায় নাই। মানে কিভাবে মারা গেল কেউ বুঝতেছে না। কোন কাটা-ছিঁড়া নাকি নাই, কিছু টেস্ট ফেস্টও নাকি করা হইছে। কোন ড্রাগ বা ঘুমের ওষুধ কোন কিছুরই আলামত নাকি পায় নাই। সব শোনা কথা যদিও আমার।

- হার্ট অ্যাটাক বা এই টাইপ কিছু হইছে নাকি? স্বাভাবিক মৃত্যুও তো হইতে পারে, তুই খালি খালি রহস্য বানাইতেছস ক্যান এইডা বুঝলাম না।

- দোস্ত, রহস্য আমি বানাই না। ওখানে নাকি সব চেকআপই হইছে, তোরতো ভাল বুঝার কথা। বাংলাদেশ তো আর না, অইডা আম্রিকা।

- আচ্ছা তাও বুঝলাম, ধরলাম মৃত্যুর কারণ ডাক্তার ধরতে পারে নাই। বাট হয়ত পারবে, কিন্তু রহস্য বানাইতেছিস ক্যান? আমার মনে হয় কিছু কইতে চাস তুই। এমনে এই কথা কওয়ার জন্যে ফোন দিস নাই আমি শিওর। এই নিউজ নেটেও দিতে পারতি।

- দোস্ত বলতে কেমন জানি লাগতেছে, তারপরেও বলি, ওরে রুমে নাকি পুরা ন্যাংটা পাওয়া গেছে। আর তার চেয়েও বড় কথা হইল গিয়া ওর রুমেই একটা সাদা মাইয়ারও ডেডবডি পাওয়া গেছে। একই অবস্থা নাকি; কাপড়-চোপড় ছাড়া। কিন্তু কোন রকম ইন্টারকোর্সের নাকি কোন আলামত পাওয়া যায় নাই। দোস্ত এত প্যাচাইয়া বলতেছি, কারণ অনি তো আমার ভাল ফ্রেন্ডই আছিল, একেবারে বজম ফ্রেন্ড না ঠিক, কিন্তু অরে তো আমি মোটামুটি চিনি। ও তো এরকম পোলা না। আমি আসলে কনফিউজড। ওর তো এরকম করার কথা না। ওর বাসায় এখন কি কমু ক।

- দোস্ত, আমিও কিছু বুঝলাম না। কিন্তু স্টিল দোস্ত একটা জিনিস ক্লিয়ার না, তুই এই নিউজটা তুই আমারেই এত গুরুত্ব দিয়া জানাইলি ক্যান? আমি তো ওর একেবারেই ক্লোজ না। স্কুলে থাকতেও হাই হ্যালো রিলেশান ছিল। এইটা দোস্ত বুঝতেছি না। আর তোর টোন শুইনা মনে হইতেছে তুই আরও কিছু বলবি। দোস্ত, বলতে চাইলে বইলা ফেল। চাপিস না।

- দোস্ত শোন, হাসবি হয়ত। তোর যা স্বভাব এগুলাতো তুই বিশ্বাস করিস না। অবশ্য আমিও ঠিক বিশ্বাস করতে পারতেছিনা। কিন্তু ওখানে আমার এক কাজিন আছে দূরসম্পর্কের, লতায় পাতায় আরকি। ওখানে আন্ডারগ্র্যাড করে। ওর কাছে সব শোনা। তোর কোন ফ্রেন্ড থাকলে তুই ভেরিফাই করিস দোস্ত। এইসব কথা তো ছড়াইতে ছড়াইতে আর অর্জিনাল থাকে না, পুরা ওয়ান এইটি ডিগ্রী ফেজশিফটও হইয়া যাইতে পারে।

- বালের প্যাঁচাল পারস ক্যান দোস্ত। আসল কথা ক। শালার আধা ঘণ্টা ধইরা ত্যানা প্যাচাইতেছস। ত্যানা বেশী থাকলে জায়গা মত প্যাঁচায়ে রাখ।

- সরি দোস্ত, আসতেছি আসল কথায়। আচ্ছা আমগো স্কুলে যে কামালি আছিল, সে কি ইউবিসিতে না? তোগো ওই ক্যাম্পাসেই তো মনে হয় নাকি? ফেসবুকে মনে হয় তোগো লগেই ছবি দেখছিলাম।

মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে হেলালের। কিসের সাথে কী! এই কথার মধ্যে কামালি কিভাবে আসল কিছুতেই ভেবে পায় না। কামালিকে তো কালকে সারাদিন খুঁজে পাওয়া যায়নি। তারপর এক রাতও গেল। এখনও পাওয়া যায়নি নাকি? অনেক চিন্তা এসে ভর করে মাথায়। মানুষের মস্তিষ্ক এক আজব জিনিস। এই কথোপকথনের মধ্যেই এতকিছু ভাবা হয়ে যায়। আকাশ পাতাল চিন্তা হয়ে যায়। কিন্তু দুই হাজার মাইল দূরে অন্য একটা দেশের অন্য একটা শহরের দুইটা ডেডবডির সাথে কামালির কি যোগসূত্র থাকতে পারে এটা কিছুতেই মাথায় আসে না ওর। কিন্তু যোগসূত্র তো কিছু একটা থাকতেই হবে, না হলে দুই-দুইটা চরম আনলাইকলি ঘটনা একই সময়ে, কিছুতেই কিছু মাথায় আসে না। কিন্তু এত কিছু বলে না আপাতত সাঈদকে। কামালির নিখোঁজ হবার ঘটনা বেমালুম চেপে যায় আপাতত। নাহলে হয়ত সাঈদ যা বলতে চাচ্ছিল সেটা অন্যরকম হয়ে যেতে পারে কাহিনীর চাপে পড়ে। বিস্ময়, উত্তেজনা সব লুকিয়ে স্বাভাবিকভাবে বলার চেষ্টা করে,

- হ, হ কামালি, মানে হাসিম কামালি তো। হ এখানেই তো। অর বাসা এই আমার বাসা থিকা দশ মিনিট হাঁটা। কিন্তু দোস্ত তুই আইজকা বেশী ত্যানা প্যাচাইতেছস আসলেই। এর মধ্যে তুই কামালিরে আনলি কই থিকা? যেই কাহিনীতে আছস এইডা আগে শেষ কর, তারপর কামালি, জামালি যার খবর চাস দিমুনে।

- দোস্ত উত্তেজিত হইস না। ত্যানা আমি প্যাঁচাই না। এই কাহিনীতে ত্যানা এমনেই প্যাঁচায়ে গেছে। শুধু প্যাঁচায় নাই, এক্কেরে গিট্টু লাগছে। আমি খালি এট্টু খুলার চেষ্টা করতেছি।

- বাল, আছস খালি খুলাখুলির মধ্যে, হে হে, স্বভাব তোর গেল না! আচ্ছা ক।

- দোস্ত অনি একটা নোট রাইখা গেছে। মানে সুইসাইড নোট টাইপ আরকি, মানে যদি এইডা সুইসাইড কস, ইন দ্যাট কেস আরকি। নোটটা অদ্ভুত। আমি তো আর দেখি নাই, আমার ওই কাজিন কইল। একটা সাদা কাগজের উপ্রে নাকি রক্ত দিয়ে লেখা। ছয়টা নাকি সার্কেল আঁকা। একটার নীচে আরেকটা। প্রথম সার্কেলটাতে নাম লেখা ‘ইভানা’, ওই সাদা মাইয়ার নাম আরকি।

- আচ্ছা আমারে কইতে দে এবার। পরেরটাতে লেখা ‘অনি’ এইতো? আর তার পরেরটাতে ‘কামালি’? আর আর ... ...

থামিয়ে দিল সাঈদ।

- ‘কামালি’ আছে চাইর নাম্বারে, তার আগে একটা মাইয়ার নাম, ‘ইলেন’ মনে হয়।

- আচ্ছা দোস্ত একটা কথা ক আমারে, কামালি তো পৃথিবীতে আরও পঞ্চাশটা কেন পাঁচশোটাও থাকতে পারে, তাছাড়া পুরা নাম তো লেখে নাই মনে হয়। সেই নাম দেইখা তুই এই কামালিরে ক্যামনে মনের মধ্যে আনলি। এইটা দোস্ত বুঝলাম না। লজিক পাইলাম না।

উল্টা কথা বললেও মনে মনে ওর প্রশংসাই করল হেলাল। আর কেউ না জানুক ও তো এখন বুঝতে পারছে যে সাঈদের সন্দেহটা হয়ত মিথ্যা না। কিন্তু কামালির কাহিনী এখনই বলে না ওকে আর। ওর পার্সপেক্টিভটাও জানা দরকার। আলোচনায় মাথা খোলে, আর আলোচনার আগেই যদি ডিসিশান দেয়া হয় সেই আলোচনা আর আলোচনা থাকে না, আলু-চোনা হয়ে যায়।

- দোস্ত লজিক লাগবে না, ছয় নাম্বার নামটা শুনলে তোর মাথায়ই ঢুকবে। ‘শামনুন’রে মনে পড়ে?

- কোন শামনুন দোস্ত? ওই যে প্রফেসরের মাইয়ারে যে বিয়া করল, বাংলাদেশে নিয়া আইসা? দোস্ত আমি বুঝলাম না, হাউ কাম, এইডা আমগো শামনুনই হইতে হইব ক্যান। কোন ইরানী হইতে পারে, ইন্ডিয়ান হইতে পারে, ব্লাডি পাকিস্তানী হইতে পারে, তুই এত ক্লোজ হইতেছিস ক্যামনে?

- দোস্ত পাঁচ নম্বর নামটা হইল শামনুনের বউ এর, ‘ম্যালেনা’, মনে পড়ছে দোস্ত? এখন আমারে বল এইগুলা সব ফাইজলামি, কেউ ওখানে এগুলা বানাইয়া মজা লইতাছে। তুমি তো আবার শালার ব্লাডি অতি লজিক্যাল। এগুলা তো মানবা না।

- দোস্ত আমি হয়ত তাই বলতাম, অবশ্যই তাই বলতাম। কিন্তু দোস্ত কামালিকে কাল সকাল থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। তুই য্যামনে বলতেছিস ত্যামনে হয়ত মানতে পারতেছিনা। তবে কিছু একটা তো ডেফিনিটলি আছে, কানেকশান।

আজকে দিনে মনে হয় হেলালের কোন কাজে শান্তি হবে না। সকালে কাঁচা গরম ঘুম ভেঙ্গে দিল অন্যরকম এক ফোনকল আর এরকম জটিল আলোচনা যখন চলছে তখন হঠাৎ মনে হল তার তো ক্যাম্পাসে যেতে হবে। এগারোটা থেকে একটা ল্যাব টিএ আছে। অনিচ্ছা সত্ত্বেও বলল,

- দোস্ত, ক্যাম্পাসে যাইতে হইতেছে। ক্লাস নেওন লাগব। দোস্ত চিন্তা ভাবনা কর। আমি ধর আইজ রাইতেই তোরে ফোন দিমু অর স্কাইপে তে অ্যাড দিমুনে। বাই দোস্ত।


প্রফেসর বিটলার

তিনটা ছায়ামূর্তি। বেশ অনেকখানি দূরেই। কিন্তু বেশ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। হাঁটার গতি স্বাভাবিকের চেয়ে খানিকটা বেশী। কামালিরও জেদ চেপে গেছে। তলপেটের দূষিত পানির সাথে ভয়ের সব অনুভূতিও গাছের আড়ালে রেখে এসেছে যেন। অন্ধকার করিডোরে পরিচিত ক্যাম্পাসের বিল্ডিংএ হাটতে যে ভয় পাচ্ছিল, এখন সে পুরো আধিভৌতিক এক জংলা পথে হেঁটে যাচ্ছে, অচেনা তিন ছায়ামূর্তিকে তাড়া করে।

নিয়মিত জিম আর দৌড়াদৌড়ি করে শরীরটা যথেষ্ট ফিট কামালির। এই রাস্তা ধরে দিনের বেলা সামনের পাহাড়ের ওই সাইনবোর্ড পর্যন্ত গেছে অনেকবারই। কিন্তু তারপরেও তিন মূর্তির সাথে তাল রাখতে হিমসিম খেতে হচ্ছে তাকে। দূরত্ব কমাতে পারছে না মূর্তিদের সাথে। চাইলেই সে ফিরে যেতে পারে উল্টাপথে। কিন্তু কোথা থেকে আজ তার মনে রাজ্যের কৌতূহল এসে ভিড় করে। একদম নিঃশব্দ জঙ্গল। কেবল কয়েকটি পায়ের দ্রুতলয়ের হেঁটে চলার শব্দ, সেই নিঃশব্দতাকে চিঁড়ে এগিয়ে যায়। ডানে পড়ে থাকে চন্দ্রাহত শান্ত হ্রদ। এক পাশে জংলা গাছ-গাছালি। সরু রাস্তার একপাশে কাঁটাতারের বেড়া। বেড়া ঘেঁষে সামনে আগাতে থাকে চারজন; তিনজন রহস্যময় ছায়ামূর্তি আর হাসিম কামালি।

আরও বেশ খানিকটা দূরে পাহাড়টা। দেখতে মনে হয় খুব কাছে, কিন্তু হাঁটতে গেলে পাহাড় শুধু দূরেই সরে যায়। অদ্ভুত আপেক্ষিকতা। কাছেই এয়ারপোর্ট। দুই একটা বিমান মাঝে মাঝে গর্জন করে উঠছে নামছে, নিঃশব্দ এই জঙ্গলকে ওরাই বোধহয় জীবিত রাখে। এসবে তাদের বিকার নেই, হাঁটতে হাঁটতে পাহাড়ের উপর উঠতে শুরু করে তিন ছায়ামূর্তি। কামালি একবার চিন্তা করে দেখে। ডিসিশান বদলায় না। হাঁটার বেগ বরং বেরে যায়।

অনেকটা কাছাকাছি চলে আসে ওরা। তিন ছায়ামূর্তিকে এবার কিছুটা মানুষ মানুষ মনে হয়। কিন্তু পেছনে ফেরে না ওরা, একবারও। যেন নিশ্চিত জানে পিছে যার আসার কথা, সে আসবেই। আরেকটু হাঁটতেই চোখে পড়ে সেই সাইনবোর্ড – ‘Do not enter’. চাঁদের আলোয় বেশ স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে। দাঁড়িয়ে যায় কামালি। তিন ছায়ামূর্তি হঠাৎই উধাও হয়ে যায় যেন। একটু হতোদ্যম বোধ করে। এখানে উধাও হওয়া যে খুব কঠিন কাজ তাও না, জঙ্গলের আলো আঁধারিতে যেকোনো গাছের আড়ালে হারিয়ে যাওয়া খুবই সম্ভব।

ভাবার সুযোগও পায় না বেশীক্ষণ। ইস্পাতের মত কঠিন কয়েকটি আঙ্গুলের চাপ অনুভব করে দুই হাতের বাহুতে। পেশীবহুল হাতেও বেশ ব্যথা অনুভব করে কামালি। শাল কাঠের মত শক্ত ওর পা। কিন্তু ওর পা শাল-কাঠ হলে পাশের দুইজন নির্ঘাত ভূমিকম্প কোড যথাযথ মেনে বানানো কলাম। এক পা এদিক ওদিক হতে পারে না। হাতে এত শক্ত করে ধরেছে যেন রক্ত জমে যায়। ঘটনার আকস্মিকতায় যেন নিঃশ্বাস নিতে ভুলে যায়। নেশার ঘোর কি কাটে এতক্ষণে! নিজেকে খুব বোকা বোকা লাগে। কি মনে করে ওদের পিছু নিয়েছিল সে?

হ্যাঁচকা টানে কিছুদূর সামনে নিয়ে যায়। বাঁধা দেয় না কামালি। বুদ্ধিমান ছেলে, জানে অযথা শক্তি খরচ করে লাভ নেই। মাঝখান দিয়ে হয়ত শুধু শুধু মার খেতে হবে। যা করতে হবে ঠাণ্ডা মাথায় করতে হবে। বেশ কিছুদূর নিয়ে যায় আরও ওকে। হাটতে হাটতেই যায় ওই দুজনের সাথে, শুধু হাত দুটো শক্ত করে ধরা। একটু গহীনের দিকে যাচ্ছে বোধহয়। এখানে চাঁদের আলোর ঘনত্ব কম। ছোটখাটো গাছও তেমন দেখা যাচ্ছে না। চারিদিকে শুধু বড় বড় পাইন গাছের কাণ্ড। আর মাথার উপরে ছাতার মত গাছের মাথা। আটকে দিচ্ছে চাঁদের আলো। জায়গাটা আসলে জঙ্গল হিসেবে বেশ পরিষ্কার লাগে ওর কাছে। বুঝতে পারে এই জায়গাটা পরিষ্কার করা হয়েছে বা হয়ত নিয়মিতই হয়।

একটু দূরে চার-পাঁচজন মানুষ দেখতে পায়। পাঁচজনই হবে। দুইজন নারী, যা তাদের অবয়ব আর কণ্ঠে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কয়েকটা ফোল্ডিং চেয়ার এলোমেলোভাবে পাতা আছে। ওখানে বসেই নিজেদের মধ্যে ফিসফিসের চেয়ে একটু জোরে কথা বলছে তারা। এই নিস্তব্ধ জঙ্গলে খুব স্পষ্ট না হলেও বোঝার মত শুনতে পায় কথাগুলো। অবশ্য ওদের কথা বলার ধরণ দেখে মনে হয় না যে, ও শুনে ফেললে ওদের তেমন কোন আপত্তি আছে। হঠাৎ করেই বুঝতে পারে কামালি, এখান থেকে ফেরার আশা তার খুব কম, খুব কম।

একটু খেয়াল করে আবার শোনার চেষ্টা করে,

- ওকে কি আমরা এভাবেই নিয়ে যাব? নাকি ট্রাঙ্কুলাইজার দেব?

- আমার মনে হয় ট্রাঙ্কুলাইজার দেয়াটাই নিরাপদ হবে। হি লুকস প্রিটি স্ট্রং। অ্যান্ড আই নো হি ইজ স্ট্রং।

গলার স্বর শুনে হঠাৎ করেই অনেক কিছু স্পষ্ট হয়ে ওঠে কামালির কাছে। খুব বেশী স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কোন কুল কিনারা করতে পারে না। কোন ভাবেই ভাবতে পারে না, কেন কেন প্রফেসর বিটলার ওকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে? কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। বুঝতে পারে এজন্যেই আজকে সকালের মিটিং প্রফেসরের রুমে না করে কেন ওর রুমে করল। সবই কি তাহলে প্ল্যানড? নিজেকেই প্রশ্ন করে। জবাব পেতেও দেরী হয় না।

- হি ইজ কোয়াইট আ স্ট্রং ম্যান। আমি তো ওর সাথে নিয়মিত জিম করি। ঠিক জিম করার জন্যে না আসলে, ওর ওপর নজর রাখছিলাম আরকি। আই প্ল্যানড আ মিটিং দিস মর্ণিং ইন হিজ রুম, হা হা ইন হিইইজ রুম। হা হা হা। অ্যান্ড আই টুক অরেঞ্জ জুস, হা হা, পিওর অরেঞ্জ জুস ফর হিম। ইউ নো পিওওওর অরেঞ্জ জুস।

সবাই একসাথে হেসে ওঠে। নিঃশব্দ জঙ্গলের নীরবতা খান কান করে ভেঙ্গে দেয়। কামালির কাছে মনে হয়, হায়নার হাসি কি এর চেয়ে ভয়ানক? এর চেয়ে পৈশাচিক?

- ওকে ওভাবে দাড়া করিয়ে রেখ না, স্ট্রেচারটার সাথে বেঁধে ফেলতে বল।

অ্যাকসেন্ট আর পরিচিত কণ্ঠ শুনে বুঝতে পারে এ বাংলাদেশী। প্রফেসর জুবায়ের। ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টে নতুন জয়েন করেছেন। হার্ভার্ড গ্রাজুয়েট। পিএইচডি করে কয়েকদিন আগেই ক্যাম্পাসে পা রেখেছে। এখনও অফিসও নাকি পায়নি। কামালির সাথে বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে। খুবই অমায়িক মনে হয়েছে তখন। কিন্তু এরা তো বহুরূপী গিরগিটি থেকেও বহুরূপী।
বিটলার খেঁকিয়ে ওঠে। তাড়া দেয় হাত ধরে রাখা দুই কলামকে,

- স্ট্রেচারের সাথে বেঁধে ফেল, হাতদুটো আলাদাভাবে বাঁধবে। আর মুখে টেপ মেরে দেবে। গ্রাজুয়েট স্টুডেন্টগুলা কিন্তু চরম বিটলা। এদের মাথায় কুবুদ্ধি ঘোরাফেরা করে। সুতরাং সাবধান।

শক্ত করে বেঁধে ফেলা হয়। কামালি বুঝতে পারে এরা প্রফেশনাল। এমনভাবে বেঁধেছে হাতে রক্ত জমবে না কিন্তু ছাড়াতে পারে, কারও বাপের সাধ্য নেই। সে চেষ্টাও করে না ও।

বিটলার আবার সতর্ক করে দেয় দুই কলামকে,

- ইফ হি গেটস আউট অফ হিয়ার, আই উইল জাস্ট ফায়ার ইউ। নট ফ্রম ইওর জব, আই উইল লিটারালি ফায়ার ইউ। ইউ নো মি ভেরি ওয়েল আই থিঙ্ক। নাউ ফাক অফ অ্যান্ড টেইক হিম টু হিজ ডেস্টিনি।

কামালি অবাক হয়ে দেখে। একটা রিমোট কন্ট্রোলের মত কিছু একটা টিপতে দেখে বিটলারকে। একটা শব্দ হয়ে পাহাড়ের উপরের একটা অংশ ফাঁকা হয়ে সরে আসে। একটা সিঁড়ি দিয়ে সবাই নীচে নেমে যায়।

এরপর একটা ইনজেকশন পুশ করা হয় ওকে। ঘুম চলে আসে খুব দ্রুত। শুধু বুঝতে পারে ওকে স্ট্রেচারে করে টেনে নিয়ে যাচ্ছে সেই পাতাল সিঁড়ি দিয়ে। ঘুমে দুচোখ জড়িয়ে আসে। অসীমের দিকে নামতে থাকে কামালি।

(চলবে)

ফেরা - ০১


মন্তব্য

সজল এর ছবি

পড়লাম। জমে উঠছে বেশ!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সাথে থাকার জন্যে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

sd এর ছবি

বাহ

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই। এটা কি সুমন ধ্রুব ভাই নাকি??

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

sd এর ছবি

হুম

চরম উদাস এর ছবি

বাহ, দ্বিতীয় পর্ব বেশ দ্রুত চলে আসলো। কাহিনী জমে উঠেছে বেশ হাততালি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
আপনার 'সাহিত্যিক'-এর জন্যেও অপেক্ষায় আছি বেশী উদাস হইয়া বইসা না থাইকা নামায় দেন।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

সাফি এর ছবি

প্রথম পর্ব মোবাইলে পড়েছিলাম, তাই মন্তব্য করা হয়নি। খুবই জমজমাট লাগছে গল্প। এরকম দ্রুততার সাথে পরবর্তী পর্বগুলো চাই।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি
চেষ্টা করছি অবসর যতটুকু পাই, পুরোটার সদ্ব্যবহার করতে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

দ্যা রিডার এর ছবি

বেশ বেশ ... চলতে থাকুক , আগ্রহ পাচ্ছি হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

কল্যাণF এর ছবি

হাততালি আসতে থাকুক চলুক , তাড়তাড়ি...

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সময় পেলেই নামবে আশা করছি ... আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অরিত্র অরিত্র এর ছবি

চলুক

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

আশালতা এর ছবি

চমৎকার। চলুক। পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

সাথে লেখা -গুড়- হয়েছে খান আর ফ্রেশ আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- বোনাস হিসেবে লাঞ্চ বা ডিনারের সাথে সালাদ করে খাওয়ার জন্যে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

বন্দনা কবীর এর ছবি

কি ব্যাপার?! দুপুরে লাঞ্চ ব্রেকে শ্বাস বন্ধ করে পড়ে টড়ে জম্পেশ একখানা মন্তব্য করে গেলাম। সেটা কে খেল?!!

যাগগে, কাহিনীর কুলপি জমতে শুরু করেছে। চলুক... চলুক

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- সালাদের সাথে মিশিয়ে খাওয়ার জন্যে।
জম্পেশ একটা মন্তব্য কল্পনা করে নিলামঃ দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

guest_writer এর ছবি

ভালইতো লাগছে। তবে বয়সের কারনে ডাক্তার রেডমিট আর মসলাযুক্ত খাবার থেকে দুরে থাকতে বলেছেন। তারপরও চালিয়ে যাচ্ছি। আপনার লেখায় স্ল্যাং গুলোর বিষয়েও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

প্রৌঢ়ভাবনা

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে।
আসলে ফ্রেন্ডদের মধ্যে কথোপকথনের সময় এই টাইপ স্ল্যাং খুব নরমালি চলে আসে, অ্যাটলিস্ট আমার ফ্রেন্ড সার্কেল বা আমার দেখা আশেপাশের লোকদের মধ্যে এটাই দেখেছি। চাইলেই হয়ত অ্যাভয়েড করতে পারতাম, তাতে কোন তথ্য ঘাটতি হত না, কিন্তু দুই ফ্রেন্ডের মধ্যে স্বাভাবিক কথপোকথন কিছুটা গতি হারাত বলে আমার ধারণা। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্যে। ভালো থাকবেন। হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

তানিম এহসান এর ছবি

অগ্রসরমানতা দেখতে ভালো লেগেছে, আরো জমেছে .... হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

কাজি মামুন এর ছবি

সাসপেন্স তৈরি করার ভাল ক্ষমতা রয়েছে আপনার! পাঠককে আগাগোড়া উৎকণ্ঠিত রেখেছেন! তবে কিছু শব্দের বাহুল্য চোখে পড়েছে, যা লেখার সৌন্দর্য খানিক ম্লান করে দেয়। অবশ্য সামান্য এডিটিংয়েই এগুলো দূর করা যায়! যাই হোক, আপনাকে ধন্যবাদ একটি ভাল গল্প উপহার দেয়ার জন্য! পাশাপাশি 'আইডিয়াল' স্কুলকে গল্পে নিয়ে আসার জন্যও ধন্যবাদ!

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ধন্যবাদ মামুন ভাই।

শব্দের বাহুল্য বলতে কি স্ল্যাংগুলোকে বুঝিয়েছেন? যদি স্ল্যাংগুলোকে বুঝিয়ে থাকেন তাহলে বলব, স্বাভাবিক কথোপকথনে যে স্ল্যাংগুলো আমার ব্যবহার করি, বিশেষ করে বন্ধুদের সাথে, সেগুলোকে জোর করে বাদ দিতে চাইনি। তবে পাঠকের কাছে কেমন লাগছে সেটা একটা বড় ব্যাপার তো বটেই।

আর এমনিতে অবশ্যই এডিটিংএর সুযোগ আছে অনেক। তৃতীয় বা চতুর্থবার পড়তে গিয়ে আমার কাছে অনেক জায়গা একটু অন্যকরার কথা মনে হয়েছে। পুরোটা শেষ করতে পারলে হয়ত সে কথা মাথায় রাখব। আপাতত তাড়াতাড়ি পরের পর্বগুলো নামানোর ধান্ধায় আছি।

আর আসলে কাহিনীতে পরিচিত জায়গাগুলো নিয়ে আসার চেষ্টা করছি। আপনি তাহলে আইডিয়াল অ্যালাম্নাই? কোন ব্যাচ আপনি?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

তারেক অণু এর ছবি
ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
ভাই পপকর্ণ খাইতে খাইতে কয়টা কাহিনী নামানোর প্ল্যান??

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

পপেল এর ছবি

ভাল হয়েছে। জমে উঠছে। চালিয়ে যা।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আরে আমাদের পপেল নাকি? তুই ব্লগ টগে ঢুকিস নাকি? যাইহোক, থ্যাঙ্কু দোস্ত।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

পপেল এর ছবি

হা দোস্ত, ঢুকি। তবে রেজিষ্ট্রেশন করিনি এখনো।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

করে ফেল, তোর লাইনেই লেখা টেখা দে, এখানে বিজ্ঞানের লেখার লেখক থাকলেও নিয়মিত লেখে না কেউ, তুই কিন্তু শুরু করতে পারিস।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

বন্দনা এর ছবি

এই পর্ব বেশ জমে উঠেছে কবি।পরের পর্ব দেন জলদি।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ। লেখা শুরু করেছি। কাল বা পরশুর মধ্যে পেয়ে যাবেন আশা করি।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

পাঠক এর ছবি

শয়তানী হাসি ভয় পাইতাছি কিন্তু.....

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

শয়তানী হাসি ম্যাঁও

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

উচ্ছলা এর ছবি
ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

জুবাঈর সাঈদ এর ছবি

এইটা আবার কোন সাঈদ?

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

আরে জুবাঈর সাঈদ! এটা তো কাল্পনিক কাহিনী বস, তাই কোন সাঈদকে যদি পাওয়াও যায় সেটা কিন্তু কাকতাল মাত্র, বাস্তব কোন সাঈদের সাথে এই সাঈদের চেহারা বা চরিত্রে কোন মিল নাই। কিন্তু খুঁজে দেখলে সাঈদ পেয়ে যাবা কিন্তু। আর যাইহোক আবারও কংগ্রাটস ফর ইওর লিটল অ্যাঞ্জেল।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নসাহা লরুমকা এর ছবি

চলুক যাই পরের পর্ব পড়ি গিয়া হাসি

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই কামরুল হাসান হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।