লিখতে ইচ্ছা হলো তাই

অপ বাক এর ছবি
লিখেছেন অপ বাক (তারিখ: বুধ, ০৮/০৮/২০০৭ - ৮:১০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অনেক দিন ধরেই দুর্নীতি নিয়ে কথা চলছে, বিশেষত বিশ্বব্যাপী দুর্নীতির প্রাদুর্ভাব মাপার জন্য একটা সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল যখন বাংলাদেশকে শীর্ষ পর্যায়ের দুর্নীতিগ্রস্থ দেশগুলোর অন্যতম হিসেবে স্বীকৃতি দিলো তখন থেকেই আমাদের টনক নড়লো।

দুর্নীতির শেকড় আসলে কোথায়? আমাদের ক্ষমতাবানদের ভেতরের দুর্নীতিপ্রবনতার উৎস কোনটা? এসব প্রাথমিক পর্যায়ের প্রশ্নে পূর্বের সুশীল সমাজীয় উত্তর ছিলো রাজনৈতিক অঙ্গনই আসলে দুর্নীতির প্রসুতিগার। রাজনৈতিক নেতারাই মূলত দুর্নীতিকে বাস্তবায়নে সহায়তা করছে- আমি এই মতের সাথে একমত হতে পারি নি- এখনও পারছি না-।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, কিংবা সেই পুরোনো যুগে যখন বাংলাদেশের ভূখন্ডের মানুষ রাজনীতি আর নির্বাচন শিখলো সেই ব্রিটিশ আমলের নির্বাচনের সময় থেকে পাকিস্তান পর্যায়ের নির্বাচন কিংবা স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের নির্বাচন এবং এখানে নির্বাচিত জননেতাদের ভেতরে রাজনৈতিক কৌশলের অভাবটা সব সময়ই প্রকট ছিলো- খুব কম দুরদর্শী এবং বুদ্ধিমান নেতা আমরা পেয়েছি- এবং যেহেতু এদের নিজস্ব বুদ্ধি কম তাই তারা সফল ভাবে দুর্নীতিনামক বিষয়টাকে বাংলাদেশের সমাজে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হবে এমনটা আমি মনে করি না।

কয়েক দিন আগে এক বন্ধুর সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে একটা কথা মনে হলো আমার- বাংলাদেশে ঠিক সেই রকম বিবেচনায় আদতে এরিস্ট্রোকেট পরিবার কয়টা আছে- অভিজাত পরিবারে জন্ম নেওয়া কাজী নজরুল ইসলাম কিংবা মীর মোশাররফ হোসেনের মতো অভিজাত পরিবার না- এরিস্ট্রোকেট ইন রিয়েল সেন্স- যেখানে সামন্তবাদী ক্ষমতার চর্চা আছে- যেখানে সামন্তবাদী ক্ষমতা চলে যাওয়ার পরেও একটা বুদ্ধিবৃত্তিক শোষণের পন্থা পারিবারিক ভাবে তৈরি করতে তারা সক্ষম হয়েছে- এবং যাদের শিক্ষা এবং রুচির প্রশংসা করা যায়- এবং যারা দেশের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ন্ত্রনে নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে পারে - এমন একটা সম্মিলন যেখানে সুশীল সমাজের রুচি এবং নিয়মতান্ত্ড়িকতার ঝোঁকের সাথে মিলেছে অর্থনৈতিক শোষণ ক্ষমতা এবং সেই সাথেই তারা একই সাথে শিল্পসেবক এবং শিল্পনির্মাতা- মূলত এরিস্ট্রোকেট ফ্যামিলিগুলো পরিচয়ে তাদের বংশলতিকায় এমন সব মানুষের দেখা পাওয়া যায় যারা পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণেই এইসব বিষয়ে একটু অগ্রসর ভুমিকা পালন করতে পারে-

বাংলাদেশের ভেতরে পুরোনো হিন্দু পরিবারগুলোর ভেতরে কিছুটা এমন অবস্থা বিদ্যমান ছিলো- সেখানে রাজনৈতিক কর্মীরা জন্মেছে- সেখানে সমাজপরিবর্তনের ডাকে সাড়া দিয়ে সামনে এসেছে ধনাঢ্য ব্যক্তিরা- সেখানে সমাজের রুচি আর মানসিকতা গঠনের কাজটাও করেছেন তারা- এইসব জমিদার পরিবার দ্বিজাতি তত্ত্বের ভুতের সাথে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকতে পারে নি- যেসব রাজনৈতিক করমী এবং পরিবার ঢুঁকে ধুঁকে টিকে ছিলো তারাও স্বাধীনতা পূর্ববর্তী ২৪ বছর এবং স্বাধীনতা উত্তর ৩৬ বছরে প্রায় বিলীন হয়ে গেছে- এবং এই ভূখন্ডে একটা সময় যেখানে হিন্দু মুসলিম অনুপাত ছিলো ৫৬- ৪৪ সেখানে এখন সেই অনুপাত কমে দাঁড়িয়েছে ৮৬- ১২ এবং একই সময়ে জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুন--
অর্থ্যাৎ আমাদের স্বাধীনতার সাথে এই দ্বিজাতিত্বত্ত্ব এবং এই অমুসলিম নিষ্পেষণের কাজে প্রশাসনিক সহায়তা সব সময়ই বিদ্যমান ছিলো-

এবং এখনও এই সহয়তা বিদ্যমান- তবে আমার বক্তব্যের মূল প্রসঙ্গে ফিরে আসি- আমাদের লড়কে লেঙ্গে পাকিস্তান উন্মাদনার জন্য একটা পর্যায়ে অনেক দিন ধরেই প্রতিষ্ঠিত এবং ধনাঢ্য হিন্দু পরিবারের সদস্যরা প্রাণভয়ে কিংবা অর্থনৈতিক এবং সামাজিক নিষ্পেষণে দেশত্যাগে বাধ্য হয়- এমন কি স্বাধীনতার সময় হিন্দু মুসলিম অনুপাতটা ২৫- ৭৫ এর বেশী ছিলো-

আমাদের সমাজে কয়েক প্রজন্ম ধরে ধনী তেমন কোনো পরিবার নেই- কিংবা এমন পরিবার হাতে গোনা যাবে- মূলত আমাদের ঐতিহ্যবাহী ধনাঢ্য পরিবার হলো ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে কালোবাজারী করে বড়লোক হওয়া একটা সুবিধালোভী পাষন্ড বনিক শ্রেনী- যারা সে সময়ে বিভিন্ন সাপ্লাইয়ের কাজ নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে- এবং এদের অধিকাংশই মূলত অবস্থাসম্পন্ন কৃষক পরিবারের সন্তান- তবে এরা ধনি হয়েই শিল্পের সমাঝদার কিংবা রুচিবান হয়ে উঠে নি- বরং এক প্রজন্মের হঠাৎ বড়লোক হয়ে যাওয়া মানুষের মতো এদের অনেকেরই রুচির দীনতা ছিলো- এবং প্রথম প্রজন্মের লব্ধ ধনে প্রতিপালিত পরবর্তী প্রজন্ম সামান্য বখে যায়-
পাকিস্তান আন্দোলনে এদের ভুমিকা ছিলো বেশী- মানে এই বাংলাদেশের মুসলীম জাতীয়তাবাদের উন্মেষে এদের ভুমিকাই অগ্রগন্য-

এর পরে পাকিস্তানউত্তর প্রজন্মে আরও কিছু ধনী মুসলিম পরিবার সৃষ্টি হয়- এরাও মূলত সামাজিক নির্যাতন করে বড়লোক হয়ে উঠা প্রজন্ম- এদের কেউ কেউ শত্রু সম্পত্তি আইনের প্রভাবে প্রচুর ভুসম্পত্তি বাগাতে সক্ষম হয়-

এদের পরে আসছে স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের যুদ্ধের ডামাডোলে বড়লোক হয়ে উঠা একটা ধনী গোষ্ঠী এবং মুক্তিযুদ্ধের সুযোগে পাত্তি পাওয়া মানুষজন-
মুলত বাংলাদেশের অধিকাংশ ধনী পরিবারের গল্প এরকমই- এদের কেউই ৪ প্রজন্ম আগেও তেমন ধনাঢ্য ছিলো না-

এরা শিল্প রেসিক এবং শিল্পের পৃষ্ঠপোষক হয়ে উঠে নি- এখনও তেমন ভাবে-
এরা রাজনীতিতে পরগাছার মতো এসেছে সত্যি তবে এরা ঠিক মাঠপর্যায়ের রাজনীতি করে উপরে উঠে নি- বরং এদের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন সরকারী সংস্থায় কর্মরত ছিলো- এবং এখনও আছে- এবং সরকারী সংস্থার উচ্চপদের আসীন এসব ব্যক্তিরাই ক্ষমতার চর্চা করছে-

যদিও পারিবারিক ভাবে দোষারোপ করা হয়ে যাচ্ছে- তবে এইসব পরগাছারাই তাদের পারিবারিক সম্পর্ক ও নিজস্ব সম্পর্কের জোড়ে বিভিন্ন রকম দুর্নীতিতে সহযোগী হয়েছে- এবং কতিপয় দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষের জন্য একটা পর্যায়ে মনে হয়েছে রাজনৈতিকরাই মূলত দুর্নীতি করছে-
অথচ দুর্নীতির শেকড় সম্পূর্ণ ভাবেই প্রশাসনের ভেতরে লুক্কায়িত- এবং এসব সংস্থা- প্রশাসনিক সংস্থা বলেই এদের সাথে সহযোগী অনেক প্রতিষ্ঠানই দুর্নীতিগ্রস্থা হয়ে পড়েছে- এবং একজন আরেকজনের ঢাল হতে হতে একটা পর্যায়ে অনেকগুলো মানুষই দুর্নীতির জালে আটকা পড়ে আছে- এবং অনেকেই এট শিকাড় হয়েছে-

এবং এই শিকাড় মানুষগুলোর উপাত্ত নিয়ে আমরা বলতে পারছি আজ বাংলাদেশ শীর্ষ পর্যায়ের দুর্নীতিগ্রস্থ দেশ- তবে এই দুর্নীতির সবটুকু দায় আসলে আমাদের রাজনীতি পরগাছা হয়ে আসা কালোবাজারী এবং অসাধু ব্যবসায়ীদের- যাদের সন্তান পিএসসি তে গিয়েেছে- গিয়েছে বিএসসিতে


মন্তব্য

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

ভালো বিশ্লেষণ। রাজনৈতিক দুর্ণীতির অনেকটাই আসলে এই সৈয়দদের দুর্ণীতি থেকেই উদ্ভূত।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

ভাস্কর এর ছবি

পোস্ট পড়ার পর আমার প্রথম যেই কথাটা মনে হইছে রাজনীতিবিদেরা আসলে এই সমাজের মানুষ না বা রাজনীতি হইলো এমন কোন অবস্থা যেইটা মানুষের বৈষয়িক জীবনের সাথে সম্পর্কীত না। কিন্তু আসলেই কি তাই?

খানিক পর মনে হয় দুর্নীতি এমন কোন বস্তু যেইটা আসলে অ্যাচিভ করতে হয়। দুর্নীতিরে বড়'ই আধিবিদ্যক লাগে...কিন্তু আসলেই দুর্নীতি বিষয়টা এইরম?

দ্বিজাতিত্ত্বের সংঘর্ষে ভূখন্ডের জনগোষ্ঠীতে হিন্দুগো সংখ্যা কমতেছে আশংকাজনক হারে...আর এই কমার পিছনে প্রশাসনের সহায়তা আছে...এই হিন্দুরাই এই অঞ্চলের শিল্প সংস্কৃতির ধারক বাহক ছিলো, কিন্তু , নিস্পেষণকারী মুসলিমরা হইলো জবরদখল কইরা ধনী...তারা মাঠ পর্যায়ে কোনদিন রাজনীতি করে নাই...তারা সরকারী সংস্থায় চাকরী করছে বা এখনো করতেছে...এইরম অনেকগুলি যুক্তিবচন আনা হইছে পোস্টে, তারপর যেই সিদ্ধান্তে উপনীত হইলেন লেখক তা হইলো এরা হইলো পরগাছা আর এরাই দুর্নীতি লালন করে...আমি খেই হারাইছি তাই হয়তো ভুল বুঝতে পারি...কিন্তু এমন জোর কইরা হাজির করা যুক্তির প্যাচ আসলেই ফ্যালাসি ছাড়া আর কিছু না।

পোস্ট পড়লে মনে হয় যদি সেই হিন্দু সাম্রাজ্য থাকতো তাইলে এই দেশে দুর্নীতি থাকতো না আর। মুসলিমেরা যেহেতু নির্যাতন কইরা বড়লোক হইছে তাই দুর্নীতিপ্রবন। আসলেই কি তাই?

খুবই এলোমেলো স্টেইটমেন্ট নির্ভর লেখা পড়লে যা মনে হওয়ার কথা ঠিক তাই মনে হইলো আমার।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

অপালা এর ছবি

ভাস্কর দা র সাথে এক মত।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ভাস্করের কথা ঠিকাছে । মুসলমানদের বদলে হিন্দুরা নেতৃত্বে থাকলে যে অবস্থা অন্যরকম হতো তা তো নয় । তবে অপবাক আসলে বোঝাতে চেয়েছেন(যদি আমার বোঝতে ভুল না হয়),দেশবিভাগকালীন আপদের সুচনা হলে নেতৃত্বে সেইসব তরুনদের আসার সম্ভাবনা ছিলো যাদের রাজনৈতিক শিক্ষার ভেতর দিয়ে গড়ে উঠছিলেন ।
এ কথা তো ঠিক যে,সে সময়ের প্রগতিশীল নেতৃত্বের বড় অংশই দেশান্তরী হয়েছিলেন কিংবা হতে বাধ্য হয়েছিলেন । তারা থাকলেই যে আসলে বিরাট কিছু ঘটে যেতো,নাকি যেতোনা সেটা আজ কেবল হাইপোথিসিস মাত্র যেমন আমরা আফসোস করতে পারি যে, ৭১ এ আমাদের বুদ্ধিজীবিদের হত্যা না করলে বুদ্ধিবৃত্তিক শুন্যতায় আমরা পড়তাম না ।

যদি ও ঠিক যৌক্তিক নয় তবু আমার মনে হয় এ অঞ্চলের মুসলমানরা ও বিশ্ব মুসলিমের কিছু বৈশিষ্ট ইনহেরিটেড করেছেন- সেই অগোছালো,অযৌক্তিক,বিধ্বংসী আবেগ,মাথা গরম,হঠকারী এই সব ।

গ্রামদেশে একটা কথা চালু আছে- 'মুসলমানের মারামারি মাটি আর বেটি নিয়া' চোখ টিপি

-----------------------------------
'আমি ও অনন্তকাল এইখানে পরস্পর বিস্ময়ে বিঁধে আছি'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

ভাস্কর এর ছবি

দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে খালি পাকিস্তান কিন্তু ভাগ হয় নাই...ভারতও হইছিলো...ভারতে কিন্তু হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠতাই ছিলো। এখন প্রশ্ন হইলো যাগো আমরা প্রগতিশীল নেতৃত্ব ভাবতেছি তারা কি করছিলো...তারা যদি ভারতে দেশান্তরী হয় তাইলে এইটাতো স্পষ্ট যে, তারা নিজেগো হিন্দু পরিচয়টারে গুরুত্ব দিছিলো, বাঙালী পরিচয়ের থেইকা। আমিতো অনেকরোই চিনি যারা ঐ পরিস্থিতিতেও দেশ ছাড়ে নাই। হাজার নির্যাতনের পরেও তারা এইখানেই ছিলো। এখন হিন্দু পরিচয়ের ভয়ে যারা দেশ ছাড়ে তাগো প্রগতিশীলতা নিয়া প্রশ্ন তুলতে আমার কোন দ্বিধা নাই। তাগো অন্য কোন উদ্দেশ্য থাকলে সেইটা আমার কাছে স্পষ্ট না।

নেতৃত্ব শুণ্যতা কখনো অন্য কারো চইলা যাওনে হয় না, আর তা হয় নাই বইলাই এই অঞ্চলে তিন তিনটা জাতীয়তাবাদী আন্দোলন হইছে তৎপরবর্তীকালে। এমনকি সারাবিশ্বে যখন ছাত্র আন্দোলন চলতেছে তখন ভারতের চাইতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে অধিকতর কার্যকরী আন্দোলন হইছিলো। যার ফলশ্রুতি বা ধারাবাহিকতায় ৯০ দশকের ছাত্র আন্দোলনের ১০ দফার উদ্ভব।

এই অঞ্চলের মুসলিমরা হটহেডেড কইয়া আসলে ধর্মভিত্তিকতারেই পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়...পৃথিবীর তাবৎ ধর্মভিত্তিক মানুষই হটহেডেড বিশেষ পরিস্থিতিতে। মুসলিমগো উপরে একচেটিয়া দোষ চাপানিটা অন্য ধর্মগুলির অবস্থানরে লুকাইয়া ফেলে।

দুর্নীতির মূল সমস্যা আমার কাছে মনে হয় অন্য যে কোন সামাজিক সমস্যার মতোই ক্ষমতাকেন্দ্রীক লড়াই থেইকা উদ্ভুত। পুঁজিবাদের এই কালে আইসা পুঁজিপতিরা ক্ষমতায় প্রকাশ্যই থাকতে চায়...সারা পৃথিবীর চিত্রই এক হয় এই ক্ষেত্রে।

পুঁজিবাদের অবক্ষয়ের কাল শুরু হয়...দ্বিতীয়বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বে...আর সেই বিশ্বে যেই কয়টা দেশ স্বাধীনতা পাইছে, তাগো অবস্থা পরখ কইরা দেখেন...পুঁজির নির্ভরতাই হইছে ট্যাক্স ফাঁকি দেওনে, চোরাকারবারীতে, ভেজাল মিশানোতে, ড্রাগ আর অস্ত্র ব্যবসায়। দুর্নীতিতো এইসবরে আশ্রয় দিতেই তৈরী হয়...আবার তা প্রশ্রয়ও পায়...পারস্পরিক নির্ভরতা আছে এইসবে।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

অচেনা এর ছবি

পোস্টের বক্তব্যের সাথে একমত। মননশীল, প্রগতিশীল মানুষদের দেশ ত্যাগের ফলে সমাজ ও রাজনীতিতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়। আর সেই স্থান দখল করে আধা শিক্ষিত অসংস্কৃত লোকজন।

আর যে দুই একজন রয়ে যায় তাঁদেরও আমরা ফলো করতে পারিনাই । ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত না হয়ে সোরওয়ার্দি হয় আমাদের জাতীয় নেতা!

-------------------------------------------------
আমি ভালবাসি বিজ্ঞান
আমি ঘৃণা করি জামাত॥

অতিথি এর ছবি

ভাস্কর, আমারও মনে হল পোস্টে বিষয়টার অতিসরলিকরন হয়ে গেছে। তবে আপনার দ্বিতীয় মন্তব্যের সঙ্গে একটু ভিন্নমত। (১) "দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে খালি পাকিস্তান কিন্তু ভাগ হয় নাই...ভারতও হইছিলো..." --জিন্নার দ্বিজাতিতত্ব মেনে ভারতই ভাগ হয়েছিল, পাকিস্তান নয়। বাংলাদেশ গঠন এই তত্বের অসাড়তাকেই প্রমান করে। (২)"তারা যদি ভারতে দেশান্তরী হয় তাইলে এইটাতো স্পষ্ট যে, তারা নিজেগো হিন্দু পরিচয়টারে গুরুত্ব দিছিলো, বাঙালী পরিচয়ের থেইকা।" দিতে বাধ্য হয়েছিল? অন্য কোনও কিছুর চেয়ে প্রানের ভয়ই বোধহয় তখন বেশিরভাগ হিন্দুদের কাছে প্রায়োরিটি পেয়েছিল; এখন ২০০৭-এ এসে আপনি তাদের প্রগতিশীল না-ও মনে করতে পারেন। আমি বলব তাঁরা আপনার দেখা অনেকের মত সাহসী ছিলেন না।
-- সনাতনপাঠক

ভাস্কর এর ছবি

দ্বিজাতি তত্ত্ব বিষয়টার অসারতা নিয়া আমারও কোন সন্দেহ নাই...তয় আমি ভারতরেও একটা হিন্দু সংস্কৃতি প্রধান রাষ্ট্র হিসাবেই দেখি। ভাগ হওয়া বলতে পাকিস্তান বা ভারত ভাগ আমি বুঝাইতে চাই নাই, বাক্যে ভুল ছিলো বিধায় আপনি ভুল বুঝতে বাধ্য হইছেন। আমি বলতে চাইছি এই ভাগের কারনে যেই দুই রাষ্ট্রের উদ্ভব হইলো তারা উভয়েই ধর্মভিত্তিকতারে লালন করে। এই দোষে হয়তো জিন্নাহই দুষ্ট হইবেন বেশি, কারন তিনিই এই তত্ত্বের প্রবক্তা, কিন্তু ভারতীয় রাজনৈতিক নেতারাও তার থেইকা খুব দূরের মানুষ ছিলেন না। বিভেদটা মূলতঃ গান্ধী সাহেবের হিন্দুত্ব লালনের মধ্য দিয়াই সূচীত হইছিলো...

আর এইখানে আমি হাসান মোরশেদের দেয়া হাইপোথিসিসের যুক্তি নিয়া কথা বলছি, তিনি যখন আস্থা রাখেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নেতৃত্বে তখন আমার মনে হয় তাদের প্রস্থান খুব প্রগতিশীল ছিলো না। প্রাণের ভয়ে চিরতরে সমরক্ষেত্র ছাইড়া পালানোটা খুব যৌক্তিক কারন হয় না। সাহস এইখানে বড় ব্যাপার না...আন্দোলনে অংশগ্রহণের মানসিক চাহিদাটা আমার কাছে বেশি প্রণিতব্য এই ক্ষেত্রে।


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

অপ বাক এর ছবি

ভাস্কর সাহেব, আপনার মনোজ্ঞ বক্তব্যের জন্য ধন্যবাদ, তবে আমি যে জায়গাটাতে আলোচনাটাকে রাখতে চেয়েছিলাম সেখানে দ্বিজাতিতত্ত্ব মূল আলোচ্য বিষয় ছিলো না, ছিলো একদল দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষ যারা এই তত্ত্বকে ভিত্তি হিসেবে ধরে সামাজিক ক্ষমতা বলয়ে উপরে উঠেছে- তাদের অর্থলিপ্সুতা তাদের এমন ভাবে আইনের অপব্যবহারে তাদের প্রলুব্ধ করেছে যে আমাদের আইনের ফাঁক ফোকর এবং এদের ভেতরে ২য় বিশ্বযুদ্ধ উত্তর যে ক্ষমতাধর শ্রেনী ছিলো তাদের অতীত এবং তাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলে আসবার জায়গাটাতেও একটা গলদের জায়গা ছিলো-

আপনি অনেক বিজ্ঞ মানুষ, চোপায় জোরও আছে- তবে এই একটা বিষয় খেয়াল করলেই দেখবেন মুসলিম লীগার আসলে কারা ছিলো- মানে মুসলীম লীগের নেতৃত্ব এবং আদর্শবাদীতার প্রসার হয়েছে কাদের দিয়ে- কারা এই জিগির তুলেছে- এবং কারা এই অব্যবস্থার সুবিধাভোগী-

আপনার কাছে আমার বক্তব্যের বিষয় মনে হয়েছে হিন্দুরা থাকলে আমরা হয়তো দুর্নীতিগ্রস্থতা থেকে মুক্ত থাকতে পারতাম- এই সব প্যারাডাইম বাদ দিয়ে আলোচনাটা করলে ভালো হতো- হিন্দু নিষ্পেষন একটা সামাজিক ইস্যু না- এটা একটা রাজনৈতিক নিষ্পেষনের জায়গা, এর আই রাজনৈতিক নিষ্পেষণে যারা সহায়তা করেছে তারা সবাই ব্যক্তিস্বার্থ থেকেই এই কাজটাতে সহায়তা করেছে-

যাই হোক যে চোখ খুলে ঘুমায় তাকে কিছু বলতে নেই- বরং আপনার নিজস্ব মন্তব্য যেটা আপনার অনেক বিবেচনার সাক্ষর বহন করছে সেটাকে একটু পড়ে আবার এই লেখাটা পড়লে বুঝতে পারবেন এটা নেহায়েত আপনার অলীক একটা সিদ্ধান্ত গ্রহনের জায়গা- আপনি আলোচনাটাকে প্রথমেই এমন একটা খাতে নিয়ে যেতে চাইছেন যেটা আসলে এই লেখার আলোচিত হওয়ার বিষয় না- এই ধরনের আচরণ আসলে রাজনৈতিক ভাবে কিছুটা বাড়তি সুবিধা দিতে পারে তবে আমার বক্তব্যটাকে খন্ডন করে না বা এটার উপরে নতুন কোন আলো ফেলে না।

আর প্রশাসনিক দুর্নীতিগ্রস্থতা আমাদের অপরাধগ্রস্থ কলুষিত মানুষেরাই ব্যবসায়ী হিসেবে রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হতে চাইছে- তারা রাজনীতিতে পুনর্বাসিত হলেই আসলে দুর্নীতির সুযোগটা পাবে না- দুর্নীতির সুযোগ পেতে হলে এর জন্য প্রশাসনিক সহায়তা লাগবে-

আমি ভেবেছিলাম আপনি অনেক বুদ্ধিমান তাই এই এরিস্ট্রোকেট না থাকবার যন্ত্রনাটা উপলব্ধি করতে পারবেন- এদের রুচিহীনতা কিংবা কদর্যতা এবং যদিও পারিবারিক ভাবেই দোষারোপের দায় স্বীকার করতে হচ্ছে তবে দুর্নীতি করে ধনী হওয়া মানুষের সন্তানেরাই আসলে অধিকহারে প্রশাসনে কর্মরত- এদের দুর্নীতির পারিবারিক ঐতিহ্য বিদ্যমান- সামরিক এবং বেসামরিক উভয় প্রশাসনেই এই নজীরটা রয়েছে-

আর দুর্নীতি এমন একটা বিষয় যা প্রশাসনের একটা অংশে ছড়িয়ে পড়লে এর সহযোগী অন্যান্য মানুষগুলোকেও আক্রান্ত করে-
অথবা একটা আন্দাজে ঢিল- আপনি নিজেকে এরিস্ট্রোকেট ভাবছেন তাই "

ভাস্কর এর ছবি

অপবাক সাহেব আপনের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দ্বিজাতি তত্ত্ব বিষয়টা আসে নাই সেইটা মন্তব্যের অবস্থান দেখলেই টের পাওয়া যায় মনে হয়। আপনের পোস্ট পড়নের পর আমার ঐ চিন্তা আসে নাই বরং হাসান মোরশেদের বক্তব্য ছিলো ঐ বিভাজনের ইঙ্গিত কেন্দ্রীক, আমি তারে সরাসরি দেইখা নিজের বক্তব্য বলছি মাত্র।

আমি যেইটা কইতে চাইছি সেইটা আপনের অন্ধকারে আলো ফেলছে বইলাই আমার ধারণা। কারন আপনের উল্লেখিত সময়ের আগে থেইকাই এই অঞ্চল ক্যান সারা পৃথিবীতেই দুর্নীতিগ্রস্থ অবস্থান অলরেডি নজীর দেখানো শুরু করছে। সামন্তীয় সংস্কৃতির একটা বড় অংশ তখন বৃটিশ তত্ত্বাবধানেই দুর্নীতির বেড়াজালে আবদ্ধ...ঐটা আদৌ মুসলিম লীগ কিম্বা কংগ্রেসের সম্পত্তি ছিলো না। দুর্নীতি এক্কেরেই ক্ষমতার দ্বন্দ্ব নিয়া প্রকাশমান একটা ফেনোমেনা। সেইটা প্রশাসনে কোন শ্রেণীর পরিবার থেইকা কোন সন্তান গেলো সেইটা দিয়া বিবেচিত হইতে পারে না। ক্ষমতার দ্বন্দ্ব খালি প্রশাসনে থাকে না, ঐটা সামাজিক প্রতিষ্ঠানের যেকোন স্তরেই ঘটে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মোড়লরা যা করছে সেইটাও দুর্নীতি বিষয়ক প্রকাশই ছিলো।

ধর্মভিত্তিকতার লেইগা এই এলাকায় যেমন হিন্দু নিষ্পেষণ চলে, তেমনি ভারতে চলে মুসলিমরে কোনঠাসা করনের প্রক্রিয়া। এইটারে কেবল মুসলিমের অবক্ষয়ী আচরন মনে করাটাও একটা দুর্নীতি হইয়া উঠনের সম্ভাবনা থাকে।

প্রশাসন আপনের পোস্টে বড় বিষয় হইছে, কিন্তু প্রশাসন দুর্নীতির সহযোগিতা করে ব্যাপারটা আদৌ মনে হয় এমন না। প্রশাসন টিকা থাকে ক্ষমতাসীনগো ইচ্ছাধীন...সেইটা একটা শ্রেণীর সংস্কৃতি, কিন্তু প্রশাসনে মুসলিমরা ছিলো বিধায় তারা বেশি দুর্নীতিগ্রস্থ হইছে এইটা কোন যুক্তি বচনই হইতে পারে না। দুর্নীতি তার স্বাভাবিক নিয়মেই হইছে, ভারতেও এমনকি আরো অন্যদেশেও দুর্নীতি একইভাবে আসে, পরিমানের কিম্বা আয়তনের কিছু পার্থক্য নিয়া।

দুর্নীতি একটা সিস্টেমের বহিঃপ্রকাশ এইটার সাথে খালি এরিস্টোক্র্যাটরা আছে বাকীরা নাই এমনে ভাবনটা কেবল সরলীকরণ না, বরং অপরাধ। প্রশাসনে যারা এই মুহুর্তে দুর্নীতি করে তাগো মধ্যে অনেক গরীব খাইটা খাওয়া মানুষের সন্তানও আছে, তখনও ছিলো, সেইখানে মুসলিম-হিন্দু-খ্রিস্টানও ছিলো। আর এইটা আগেই কইছি দুর্নীতি কোন মেটাফিজিক্যাল সত্ত্বা না, এইটা একটা আচরন।

নিজেরে এরিস্টোক্র্যাট ভাবনটা কিরূপে আসে সেইটা কি আপনে কইতে পারেন?


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

আমার ছোটবেলাটা কাটে একটা হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায়। নিজের চোখের সামনে অনেক হিন্দু পরিবারকে ভারতে চলে যেতে দেখেছি। এবং সবচেয়ে মর্মান্তিক সত্য হলো, তাদের অধিকাংশ পরিবারই আর্থিকভাবে সুপ্রতিষ্ঠিত ছিলো, শিক্ষিত ছিলো এবং ভারতে গিয়ে অধিকাংশেরই জীবনযাত্রার মান অনেক নেমেছে।

তারা প্রায় প্রত্যেকেই দেশ ছেড়েছে মুসলমানদের দ্বারা ভীতির শিকার হয়ে। সম্পত্তি জবরদখল মেনে নিয়েও অনেক পরিবার থেকে যাচ্ছিলো; কিন্তু তাদের মেয়েরা যখন বড় হলো, তখন আর থাকা সম্ভব হয় নি। এবং এর প্রত্যেকটি ঘটনাই প্রশাসন জানতো।

আওয়ামী লীগের আমলে আওয়ামী লীগের একজন এমপি - হাসিনার খুব কাছের লোক - একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় হিন্দু নেতাকে খুন করায়। কোনো বিচার হয় নি আজ অবধি।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

দিগন্ত এর ছবি

ভাল লেখা ও ভালো আলোচনা। তবে আমার মনে হয় দুর্নীতি ব্যাপারটা আরো অনেক গভীরে, শুধু কিছু ডেমোগ্রাফিক পরিবর্তন দিয়ে ব্যাপারটাকে মাপা যাবে না। দুর্নীতি ভারতে, পাকিস্তানে বা শ্রীলঙ্কায় কম কিছু নেই, যদিও এসব দেশে আপনার বর্ণিত কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমার মনে হয় সামাজিক স্বচ্ছতার অভাব এই সব দেশে দুর্নীতি এনেছে, তবে এটাই একমাত্র কারণ নয়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

অপ বাক এর ছবি

ক্ষমতার চর্চার জায়গাটাকে একেবারে সরল ভাবে আমি দুর্নীতিগ্রস্ত বলতে চাই না- ক্ষমতার দ্বন্দ্ব আর এই অর্থনৈতিক সচ্ছলতার লড়াইটা ক্রিয়াশীল দ্বন্দ্ব হয়ে দুর্নীতিকে সচল করেছে প্রশাসনিক পর্যায়ে এই স্থানে আমি ভিন্নমত পোষণ করি-

ভারতে মুসলিম নিষ্পেশনের ইতিহাস আছে- সাম্প্রদায়িকতার ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় অনেক কিছুই ঘটেছে তবে ভারতে পুঁজিবাদী বিকাশের জায়গাটা শুধু সম্প্রদায়িকতার জন্য রুদ্ধ হয়ে থাকে নি-

এখানে ৩টা বড় জাতীয়তাবাদী আন্দোলন হওয়া বড় একটা ছাত্র আন্দোলন হওয়া এই এলাকার মানুষদের রাজনৈতিক সচেতনতার প্রমান বহন করে- তবে সেটা কখনই এখানে ধর্মীয় সন্ত্রাসের পঁচা গন্ধকরে লুকিয়ে রাখতে পারে না-

আমি বলছি না এটাই একমাত্র কারণ তবে অনেকগুলো কারণের ভেতরে এটাও একটা কারণ

ভাস্কর এর ছবি

ক্ষমতা চর্চ্চার জায়গাটারে ঢালাওভাবে দুর্নীতিগ্রস্থ কওনের যৌক্তিকতা আমি নিজেও দেখি না। নৈতিকতা আসলে খুব আপেক্ষিক বিষয় হয় শ্রেণীর গরজে। কিন্তু ক্ষমতার দ্বন্দ্ব চিরকাল দুর্নীতিরে ডাকে...সেই যখন কোন নির্বাহী প্রশাসনের অস্তিত্ব যখন ছিলো না, সেই দাসপ্রথার সূচনাকালই দুর্নীতির নির্দেশক...সামাজিক যে কোন বৈষম্যই দুর্নীতির সূচক (এইটা কিন্তু বুর্জোয়া সভ্যতা বিশ্লেষণের টুল ব্যবহার কইরাই কইলাম)। পরে এই দুর্নীতি আরো পিউরিফায়েড হইলো মডার্ন যুগে আইসা। এইটাতে হিন্দু-মুসলিম-খ্রীস্টান-ইহুদী-বাহাই-ব্রাক্ষ্ম পরিচয় কখনো প্রধান হয় নাই...হইছে সম্পত্তি কার দখলে যাইবো এই চেতনা।

পুঁজির বিকাশ ৬০ দশকের পরে স্বাধীনতা পাওয়া সকল পুঁজিতান্ত্রিক রাষ্ট্রে মুখ থুবরাইছে...কারন তখন পুঁজিতন্ত্রের বড় শরীক মার্কিনীগোই অবস্থা দুর্নীতিময়...ভারতে ঐটা হয় নাই কারন তারা দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধোত্তর শুণ্যতার সময়টারে কাজে লাগাইছে। তাগো ভূমি সৌকর্য্য আর বৈচিত্ররে তারা যথাযথ কাজে লাগানের চেষ্টাটা করনের চেষ্টা করতে পারছে। কিন্তু পুঁজির বিকাশের কালেও তারা ধর্ম নিয়া ভালোই বাড়াবাড়ি করছে।

কিন্তু আমাগো দেশে ধর্ম বরং তেমনে আইছে কম। ধর্মের ব্যবহার নোংরা ভাবে হইছে এইটা ঠিক...কিন্তু সেইটা যতোটা না ধর্মের প্রয়োজনে তার চাইতে অনেক বেশি ক্ষমতার দ্বন্দ্বেই। যেই কারনে হাসিনা ভোটের টাইমে হিজাব পরে, মোনাজাত কইরা ভোট চাওয়া ছবি ছাপায়। অবক্ষয়ী সংস্কৃতিতে এর চাইতে বেশি আর কি চাইতে পারি। হিন্দু নির্যাতন যতোটা না হইছে ধর্মীয় সন্ত্রাসে তার চাইতে বেশি হইছে জমি দখলের নিমিত্তে। ভারতে যাওনের স্কোপ আছে বইলাই এই দেশের হিন্দুগো ভারত পাঠাইয়া তার জমি দখল করতে চায় ক্ষমতাশালী নেতৃত্ব। পিরোজপুরের আওয়ামি নেতা শুনছি নিজেই হিন্দুগো জমি দখল কইরা ভারতে পাঠায়...নিজে কিন্তু বেশ স্বচ্ছল অবস্থায় দেশেই থাকে।

আপনের পোস্ট পইড়া অন্ততঃ আমার মনে হয় নাই আপনে এইটারে একটা কারন কইছেন...পোস্টের বক্তব্য অনুযায়ী এইটারে একমাত্র কারন না হইলেও প্রধান কারন হিসাবে ভাবনের স্কোপ আছে।

আর জ্ঞানী অ্যারিস্টোক্র্যাটরাও দুর্নীতির সাথে থাকে সেইটা হিন্দু কিম্বা মুসলিম যাই হোক না ক্যান সেইটা ম্যাটার করে না। ক্ষমতার কোন জায়গায় থাকে সেইটাই প্রধান কারন হয়...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।