রে ব্র্যাডবেরীর উদ্ধৃতি, বই পড়ার অভ্যাস ও আমার চিন্তার খোরাক

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি
লিখেছেন প্রোফেসর হিজিবিজবিজ [অতিথি] (তারিখ: সোম, ২৯/০৭/২০১৩ - ৩:৩২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ফেসবুকে আজ এক নেটাতো বন্ধু ( যার লেখার আমি একজন বড় ভক্তও) দেখি অন্যতম প্রিয় সায়েন্স ফিকশন লেখক রে ব্র্যাডবেরীর একটা কথা উদ্ধৃতি দিয়েছে। কথাটা হলো –

You don’t have to burn books to destroy a culture. Just get people to stop reading them

পড়ে কিছুক্ষণ থমকে থাকলাম। আমার ভেতরে ভীষন রকম নাড়া দিয়ে গেলো কথাটা। আমাদের বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কথাটা তো যারপরনাই সত্য! এখন পড়ার বইয়ের পাশাপাশি কতজন পড়ছেন গল্পের বই? বই নিত্যসঙ্গী কয়জনের? একুশে বইমেলা বাদ দিলে সারা বছর জুড়ে কতজন বই কিনছেন? সঠিক পরিসংখ্যান আমার কাছে নেই, পরিসংখ্যান করা হয়েছে বলেও মনে হয় না। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা থেকেই বলতে পারি সংখ্যাটা খুব বেশী নয়। আরো ভয়ানক কথা হচ্ছে - এই সংখ্যাটা সম্ভবত দিন দিন কমছে!

কেন বলছি? বলছি কয়েকটা অভিজ্ঞতা আর পরিদর্শন থেকে। বর্তমানে ফেসবুক ও অন্তর্জালের যুগে অনেক বেশী বই পড়ুয়ার সাথে পরিচয় হচ্ছে প্রতিনিয়ত, বইয়ের রিভিউও পাচ্ছি অনেক বেশী। আর ই-বুকের তো কথাই নেই – এখন বাংলা ই-বুকও পাচ্ছি অজস্র। তারপরও কেন আমার এই হতাশাবাদী কথা? আমি তো আশাবাদীই হতে চাই, কিন্তু আশেপাশের নমুনা দেখে আশা করার আশাটাও যে করতে পারছি না!

বছর দশেক আগেকার কথা। আমি মাত্র চাকরিতে ঢুকেছি। প্রতি বৃহস্পতিবার বিকেলের বাস ধরে ফিরে যাই আমার পদ্মা পাড়ের শহরে – ছুটির দুটো দিন ওখানে কাটিয়ে সংগ্রহ করে আনি পরের পাঁচ দিনের জীবন সংগ্রামের রসদ। অবধারিত ভাবে অফিস থেকে বের হয়ে আগে একটা-দুটো বই কিনি, ফেরার পথ কোন দিক দিয়ে পার হয়ে যায় টের পাই না। বাড়ি ফেরার টানের সাথে বইয়েরও একটা প্রধান ভূমিকা থাকে এতে।

অফিস থেকে বাস স্ট্যান্ড – এই পথের মধ্যেই দুই তিনটা বইয়ের দোকান পড়ত, বই কিনতে খুব একটা সমস্যায় পড়তে হয়নি তাই। বিশেষ করে পথের মাঝে কিছুটা দূরে দূরে দুটো বাস স্টপে ছিল দুটো বইয়ের দোকান যারা আমার বিশেষ প্রিয় ছিল। আর আমার নিজের ছোট্ট শহরটাতে তো এখানে ওখানে বইয়ের দোকান ছিল – সমবায় সুপার মার্কেট নামে একটা মার্কেটই ছিল বইয়ের দোকানে ভর্তি।

এরপর চাকরীর সুবাদে ঘোরাঘুরি দেশের উত্তর প্রান্তের শহরগুলোতে। ওখানে অবস্থানের দিনগুলিতে বই কিনতে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছিল। একটা কারণ চাকরীর ধরণ – সময় খুব বেশী পাওয়া যেত না। আরেকটা কারণ নতুন শহরের আনাচে কানাচে সেভাবে হয়তো খোঁজ নিতে পারি নি। তাই বই কিনতে প্রায়ই পুরো শহর পাড়ি দিয়ে অন্যপ্রান্তে যেতে হতো। যখন বইয়ের খোঁজে শহরের এমাথা থেকে ওমাথা যেতাম, মনের ভেতরে একটা কষ্ট গুমরে উঠতো রাস্তার পাশে একটু দূর পর পর মোবাইলের দোকান, ফাস্ট ফুডের দোকান দেখে। রাজধানী থেকে এত দূরেও ব্যাঙের ছাতার মত ফাস্ট ফুড বা মোবাইলের এটা ওটার দোকান গজিয়ে উঠতে তো কোন অসুবিধে হয়নি, কয়েকটা বইয়ের দোকান হতে কী ক্ষতি ছিল? নিজেকে স্বান্ত্বনা দিতাম - ছোট শহর তো, তার উপরে দেশের দরিদ্রতম এলাকার একটা- এখানে বইয়ের দোকান সেভাবে এখনি তো হবে না, তবে হবে নিশ্চয়ই, হবে অদূর কিংবা সুদূর ভবিষ্যতে।

এরপর আবার বছর কয়েকের জন্য ফিরে এলাম আমার আশৈশব প্রিয় শহরে। কিন্তু মন গহনে বয়ে চলা দুঃখের সেই চোরাস্রোত থামলো না! এত্তগুলো বইয়ের দোকান ছিল, এখন আছে মাত্র গুটি কয়েক! কোথায় সমবায় মার্কেটের সারি সারি দোকান গুলো? সেগুলো আমাদের স্মৃতিতে সরে গেছে, জায়গা ছেড়ে দিয়ে গেছে স্টেশনারী আর জেনারেল স্টোরকে! প্যাপিরাস, সূচীপত্র আর গ্রন্থমেলার জায়গা নিয়েছে মেসার্স হালিম ট্রেডার্স আর জেনারেল পেপার স্টোর। একপাশে তাও একটা বই বাজার আছে, আছে ঐতিহ্যবাহী আলিগড় লাইব্রেরীও, কিন্তু তারা স্নাতক-স্নাতকত্তোর শ্রেণির বই ছাড়া অন্য কোন বই রাখে না। এদের পাশে টিমটিম করে হাতে গোনা গুটিকয় দোকান এখনো আছে, কিন্তু তারা মনে হচ্ছে ডাইনোসরের প্রজাতি – অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই তাদের হিমশিম খাবার অবস্থা! অথচ মোবাইলের যন্ত্রপাতি আর ফাস্ট ফুডের দোকানের রমরমা অবস্থা এখানেও। রীতিমতো দুই-তিনটা আলাদা বাজারই বসে গেছে এদের জন্য!

এরপর আমার পুনরাগমন রাজধানী শহরে। থানা গাড়লাম শহরের উত্তরপ্রান্তের একটা এলাকায়। হয়তো রাজধানীর সাথে খুব একটা চেনা জানা নেই বলেই আশে পাশে কোথায় বইয়ের দোকান আছে খুঁজে পাই না, যাও দুয়েকটা পাই, তারা ইংরেজী মাধ্যমের স্কুলের বই আর খুব বেশী হলে স্নাতক শ্রেনির কিছু বই রাখে, তাও জনপ্রিয় কিছু বিষয় যেমন কম্পিউটার, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ব্যবসায় প্রশাসন ইত্যাদির। অগত্যা আবার সেই নীলক্ষেতের দ্বারস্থ হতে হলো।
কিন্তু তিলোত্তমা ঢাকা নগরীর এমাথা থেকে ওমাথা যাওয়ার চেয়ে “বড় বালাই আর নাই”। তাই বাধ্য হয়ে মাসে এক-দুবার যাই, একেবার একগাদা করে বই কিনে ফিরে আসি। আর পথের ধারে মোবাইলের ছোট ছোট দোকানগুলো দেখে কষ্টের চোরাস্রোতটা তিরতির করে কাঁপন তোলে বুকের মাঝে।

আসা যাওয়ার পথের ধার থেকে খুব বেশী দূরে নয় আমার বছর দশেক আগেকার সেই সাপ্তাহিক পথটা। একদিন গেছিলাম পুরাতন সেই দুই বইয়ের দোকানের খোঁজে। নিয়মিত বই কেনার সুবাদে কয়েকজনের সাথে বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেছিল, তাদের সাথে আবার দেখা করার একটা সুপ্ত বাসনাও ছিল মনের মাঝে। কিন্তু ওখানে গিয়ে আবারও হোঁচট খেলাম – বইয়ের দোকানদুটো উঠে গেছে! আর সেখানে বসেছে মোবাইলের একটা দোকান আর একটা কনফেকশনারী!

বইয়ের দোকানের এভাবে ক্রমশ লোপপ্রাপ্তির পেছনে কারণ কি এটাই যে আমরা ক্রমশ বই বিমুখ হয়ে পড়ছি? ঢাকায় চলাফেরার সময়ে বাসে কিংবা বিভিন্ন সময়ে চায়ের দোকানে প্রচুর কিশোর-তরুনকে দেখি। মোবাইলে কথা বলার পাশাপাশি এরা গেমস বা ফেসবুক ইত্যাদি ব্যবহার করে। শুধু কৌতুহল বশত প্রায় জনা পনেরো জনকে প্রশ্ন করে জেনেছি এরা কেউ মোবাইলকে ই-বুক রিডার হিসেবে ব্যবহার করে না। বেশীরভাগ তো কিনডলের নামই শোনেনি, যদিও রেইল রাশ বা টেম্পল রান পরিচিত সবার কাছেই। আমার এই ছোট্ট কৌতুহলী প্রশ্ন অবশ্যই বর্তমানকে কোন ক্রমেই সর্বোতভাবে প্রতিফলিত করে না। কিন্তু আমার নিজের কাছেই এই প্রশ্নটা বার বার মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। আমরা আগেও খুব একটা বইপ্রেমী বা পড়ুয়া জাতি ছিলাম না। যেটুকু ছিলাম, এখন কি তাও হারিয়ে যেতে বসেছে? আজ রে ব্র্যাডবেরীর কথাটা পড়ার পরে মনে হচ্ছে পাকিস্তানীরা ভয়াল ছোবল হেনে আমাদের যে জায়গাটায় চরম ক্ষতি করতে চেয়েছিল কিন্তু একেবারে ধ্বংস করতে পারেনি, আমরা নিজেরাই কি আমাদের সেই জায়গাটাকে ধ্বংস করার উৎসবে মেতেছি?

- প্রোফেসর হিজিবিজবিজ


মন্তব্য

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

প্রধান সমস্যা হলো বইয়ের জগতের খবর সারাদেশে পৌঁছুচ্ছে না। প্রচার নেই একদমই। ফলে আগ্রহও তৈরি হচ্ছে না। সারাদেশের বইয়ের দোকানগুলো কয়েকটা হুমায়ুন, মিলন, কাসেম বিন আবু বকর রেখেই দায়িত্ব শেষ করছে। ফলে পাঠক বই পাচ্ছে না, জানতে পারছে না বই সম্পর্কে। পড়ার আগ্রহ কিভাবে তৈরি হবে? এভাবে একসময় চাহিদা কমে যাচ্ছে। বইয়ের দোকানগুলো চিরতরে বিসর্জন দিচ্ছে সাহিত্যকে। ইসলামী বইয়ের বাজার ভালো

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

ইসলামী বই বলতে কিন্তু কয়েকটি ধরণ আছে - যেমন "খাব নামা ফালনামা" বা "মরণের আগে ও পরে" টাইপের কিছু বই। আবার "নামাজ শিক্ষা" বা "মকসুদুল মূমেনীন" টাইপের বই। এগুলোই বেশী চলে বোধহয়। কিন্তু কিছু চিন্তাশীল বা গবেষণা ধর্মী বই যেমন "সোনালী যুগের মুসলিম নৌ শক্তি" বা "মুহম্মদ বিন কাসেম" এগুলির পাঠক বোধহয় নির্দিষ্ট একটি শ্রেণি।
চমৎকার মতামতের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

তিথীডোর এর ছবি

শেরে মহীশূর মহান কাসেম বিন আবু বকরের ইসলামী ধাঁচের একটা প্রেমের উপন্যাসও এখনো পড়া হলো না। [হতাশ ইমো]
রমজান ফুরানোর আগেই দু-একটা কিনে/ ধারে জোটাতে হবে। খাইছে

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

কি বল তিথী, এখনও শেরে মহীশূর মহান কাসেম বিন আবু বকরের ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক প্রেমপন্নাস পড়ে দেখনাই অ্যাঁ বিরাট মিস করস, হালাল প্রেম কেম্নে করন লাগে শিখতে পারতা। শয়তানী হাসি

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

মর্ম এর ছবি

কোন কিছু না লিখে, কেবল মন্তব্য করেই হাফ-সচল হয়েছেন এমন উদাহরণ আমার দেখা একজনই ছিলেন- কল্যাণ। বলতে নেই, আপনার আর 'এক লহমা'র দিকে বড় আশা নিয়ে তাকিয়েছিলাম! দুজনই জল ঢেলে দিলেন ওঁয়া ওঁয়া

পড়ার আগ্রহটা নির্ভর করে পরিবারের গড়ে দেয়া অভ্যাস, পরে বন্ধুবান্ধবদের বই-প্রীতি আর আরো পরে সময় আর সুযোগের উপর। 'বই হোক নিত্যসংগী'- বাংলা একাডেমীর স্টিকারের কথাটা যেমন মনে গেঁথে গেছে আমাদের- তেমন আর কই?

অনলাইন সমমনা পাঠকদের কাছাকাছি নিয়ে আসছে এটা ঠিক- কিন্তু ফেস-'বই' আর ব্লগ পড়ে টি-টুয়েন্টির স্বাদ পেয়ে যাওয়া মনে ঘন্টা দুয়েকের ছোট উপন্যাস বা গল্পের ওয়ানডে আর বড় উপন্যাসের টেস্ট ক্রিকেটের মেজাজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলেই আমার মনে হয়।

বই না পড়ার সামাজিক অভ্যাস বদলে দেয়ার উপায় তো জানা নেই, তবে বইপড়ার অভ্যাসটা ছোটবেলা থেকে গড়ে দেয়া গেলে বই বস্তুটা সহসা বিলুপ্ত হবে না বলেই মনে হয়!

নিজের বাসার লাইব্রেরিটা কতটুকু বাসার পিচ্চিটার চোখ চকচকে করে তুলছে সে দিকটায় আমাদের নজর রাখাটা একান্ত জরুরী।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

আরে ভাই এত বড় আশা করে ছিলেন, "আগে কইবেন না!" তবে আপনারা এমন করে লেখেন যে পড়তে পড়তে নিজের অজান্তেই কখন যেন লেখার জন্য হাত সুড়সুড় করতে থাকে!

নিজের বাসার লাইব্রেরিটা কতটুকু বাসার পিচ্চিটার চোখ চকচকে করে তুলছে সে দিকটায় আমাদের নজর রাখাটা একান্ত জরুরী।

খাঁটি কথা। তবে প্রশ্ন হচ্ছে এই খেয়াল রাখার কথাটা খেয়াল রাখেন কয়জন? আর এখন কয়জনের বাসয় লাইব্রেরি আছে?

পড়ার জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

রকমারি থেকে বই কিনেছিলাম কয়েকমাস আগে। ভালই সার্ভিস ওদের। তবে ওদের সাইটে ঢুঁ মারার লোক কেমন, সেটাই প্রশ্ন।

পড়ার এবং অসাধারণ মন্তব্যের জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

হুম, ঠিকই বলেছেন।

তারেক অণু এর ছবি

পামুকের কথা মনে পড়ে- এমন এক দেশে থাকি যেখানে বই পড়াকে দেখা হয় মানসিক অসুস্থতা হিসেবে।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

হ।

স্পর্শ এর ছবি

-"শিক্ষা-ই জাতির মেরুদণ্ড।" কে বলেছেন?
-শিক্ষক।
"বই পড়ার অভ্যাস দিনে দিনে কমছে।" কে অভিযোগ করছেন?
-লেখক।

শিক্ষা-দিক্ষা, বই পড়া, এসব নিয়ে বলা কথাকে লোকে তাই সন্দেহের চোখেই দেখে। পামুকের দেশের মত মানসিক অসুস্থতা হিসাবেও দেখে বোধ হয়। বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না। কিন্তু বই পড়ে তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছে, তেমন মানুষ আশেপাশে চোখে পড়ে না। কেউ বই পড়ছে, দেখে তার আশেপাশের মানুষ ভাবে না যে আমাকেও পড়তে হবে। নাইলে ঐ ব্যাটা এগিয়ে যাচ্ছে। যদি, তেমনটা ভাবার কারণ থাকতো, তাহলে এমনিতেই সবাই দলে দলে বই পড়া শিখে নিতো। জ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা, বই পড়ার আনন্দ, স্রেফ এইসব সুকুমারবৃত্তির কথা বলে অভাবী মানুষকে বই এর দিকে টানার উপায় নেই।

বইয়ের দোকানগুলো এভাবে দিনে দিনে ভ্যানিস হয়ে যাওয়া খেয়াল করছি অনেকদিন ধরেই। ছেলেবেলায় যে শহরে থাকতাম, সেখানে অন্তত তিন-চারটা দোখান ছিলো যারা, শুধুই গল্পের বই বিক্রি করতো। আর টেক্সটবই, নোটবই এসব মিলিয়ে বইয়ের দোকান ছিলো অনেক। এরা আস্তে আস্তে, মোবাইল ফোন আর ফ্লেক্সি লোডের দোকানে পরিণত হলো। পাঠক ১০০ টাকা খরচ করে যখন পড়ছেন কোনো উপন্যাস, তখন বন্ধুটি ৫০ টাকা ফ্লেক্সি করে নিয়ে, চুটিয়ে প্রেমালাপ করছে কোনো সুন্দরীর বা সুন্দরের সাথে। প্রেমালাপই জয়যুক্ত হয়। কদিন পরে তাই পাঠককেও ফ্লেক্সিদোকানের আশেপাশেই পাওয়া যায়।

দেশের আনাচে কানাচে থেকে বই পাওয়া এখ্ন বেশ সহজ হয়েছে বলে জানি। www.rokomari.com এর মাধ্যমে সমস্যা ছাড়া সারাদেশ থেকেই বই কিনতে শুনেছি। এমন আরো সাইট থাকতে পারে। বিজ্ঞাপণের মত শোনালেও বলি। বইয়ের দোকান তো বাঁচানো যাচ্ছে না। (আজিজও আজ গেঞ্জির মার্কেট!) এইসব সাইটগুলোকে পৃষ্ঠপ্রোষকতা দেওয়ার চেষ্টা করি চলুন।


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

মন খারাপ

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

মন খারাপ

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

হ্যাঁ, রিক্সা ভাড়া আর টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে বই কেনা - আহ!

এখন বোধহয় পয়সা বাঁচিয়ে মোবাইলে ফ্লেক্সিলোড করা হয়। মন খারাপ

তিথীডোর এর ছবি

হুঁ। তাও ভাল যে, রবির ঐ জয় পার্টনার অফারটা বন্ধ হয়েছে। পুলাপান পুরাই টঙে যাচ্ছে এইসব করে...

করুক, তাও মানতাম। শুধু যদি একই সুরে বইও পড়ত। সে অভ্যাসে গুড়ে বালি!

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

ঠিক।

অতিথি লেখক এর ছবি

বড়মামা বল্লেন, চল ঘুরে আসি। শর্ত একটাই হাঁটতে হবে। আমিও রাজি। সেই হাঁটা আর ফুরায় না। গোড়ান থেকে রমনা। কিছুক্ষণ বসে আবার ফিরতি হাঁটা। পথে বেইলি রোডের এখানে একটা দোকানে ঢুকে (সম্ভবত সাগর পাবলিশার্স হবে) দুইটা বই কিনে দিল, একটা এডগার রাইস বারোজের টারজান, আরেকটা পঞ্চতন্ত্রের গল্প।
তারপর থেকে শুধুই হাঁটছি, স্কুলের পথখরচ বাঁচিয়ে সেবা। আহা....
এখন সত্যি বিষ্মিত হই। এরা করে কি? দায়টা আসলে আমাদেরই হয়তো। বই বিষয়টাকে একটা মাত্র মাসে এনে বন্দি করেছি। আর বাকি এগারো মাস তাকে জাদুঘরে রেখে দিচ্ছি। লেখা ভালো লেগেছে।

স্বয়ম

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

তানিম এহসান এর ছবি

পেছন দিকে মুখ ফিরিয়ে হাঁটতে শিখে গেছি আমরা। বই পড়লে আর মৌলবাদী হবেন কিভাবে!!!!

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

হুম।

পড়ার জন্য ধন্যবাদ তানিম ভাই।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদের দেশে বই পড়া কাউকে এখনো সবাই একটু পাগলা ডাকে,আর দু-চার লিখলে তো কোন কথাই নাই বলে ওই দ্যাখো কবি হয়েছে।এতো ব্যাঙ্গাত্নক ভাবে কবি বলা হয় যেন এটা একটা হাস্যকর বিষয়।তাই আমি দেখি কেউ আর বলতে চায়না সে কবিতা প্রেমী,বই প্রেমী।এ এক অদ্ভুত সমাজ ব্যবস্থা।আবার কেউ কেউ বলে বাস্তব বাদী হও,এই কবিতা-বই দিয়ে ভাত জুটবেনা।বই পড়া অলস মানুষের কাজ কারবারতখন আমার আর কিছু বলতে ইচ্ছে করেনা।বাস্তববাদী বলতে আসলে কি বুঝায় আমদের সমাজে?সকাল-বিকেল অফিষ করো,বাসায় বউ এর সাথে বসে ভারতীয় সিরিয়াল দ্যাখো কিংবা একটু বেশি বাস্তবিক হয়ে এই চ্যানেল থেকে ওই চ্যানেলে খবর আর আলোচনা শুনে যাও?বাস্তবতার এমন ডেফিনেশন শুধু বোধহয় আমাদের দেশেই সম্ভব।
আর যে গুটি কয়েক পাঠক আছে তাদের বেশি ভাগি হুমায়ূন আহমেদ নামের চানাচুর টাইপের লেখকের কঠিন ভক্ত।হুম আমি বই পড়ি,হুমায়ূন আহমেদ,সমরেশ আর ইমদাদুল হক মিলন! লইজ্জা লাগে সহজ সস্তা ভাবুলতার গল্পে বাঙালি বিনোধন পায়,রবীন্দ্রনাথ,শরৎ,বিভূতি ভূষন তাই আমাদে দেশে দূরহ বলে বাতিল করে দেওয়া হয়।ক্লাস সেভেন এইটের ছেলে মেয়েদের হাতে তুলে দেওয়া হয় হুমায়ুন আহম্মেদ,ইমদাদুলহক আর কাশেমবিন আবু বক্করদের।এদের দলে নতুন সংস্কারণ আনিসুল হক।এরা নাকি পাঠক তৈরি করে।হা হা,তাদের পাঠকরা বয়সে বড় হয় ঠিকি কিন্তু তারা কোনদিন মানসিক ভাবে বিকাশিত হয়না,মানসিক ভাবে সেই শিশুই থেকে যায়।এভাবেই চলছে আমাদের সমাজ,খুব কম পরিবারি বই পড়ার উৎসাহ দেয়,তারচেয়ে ও কম পরিবারে ব্যাক্তিগত পাঠাগার আছে।কিন্তু সব পরিবারেই আছে বেহেস্তের চাবিকাঠি,কেয়ামতের আগে পরে,দোজখের আগুন আর খোয়াবনামা নামক রুপকথার সব ধর্মীয় বই।যা পড়ে সোয়াব আদায় করে বাঙালি,বই পড়ে জ্ঞানের জন্যে নয়,সোয়াব কামাই করে বেহেস্তে যাওয়ার জন্যে।উদ্দেশ্য যখন এমন হয় সেখানে ফল আর কি হতে পারে।
আর এখনতো প্রযুক্তির যুগ,ছেলেমেয়েদের কে কিনে দিতে হচ্ছে ট্যাব,গ্যালাক্সি সহ নিত্যনতুন ফোন,সেই ট্যাবে কিংবা ফোনে চলছে গ্যাম ডাউনলোড,ফেসবুক ব্যবহার আর চ্যাটিং।আমি তাই শংকিত আমাদের পরবর্তি প্রজন্ম নিয়ে,বই বাঙালি আগেও খুব বেশি পড়েনি,আর এখন সেটার সংখ্যা আরো কমে যাচ্ছে।বই না পড়া একটা ভবিষৎ জাতিকে কোথায় দাড় করাবে,এখনিতো দেখি বাঙালি যুক্তি প্রমান মানে না,সহনশীলতা বুঝে না,নীতি আদর্শ ও লক্ষ্য মাইল দূরের ব্যাপার।আমাদের ভবিষত যাত্রা তাই অন্ধের মতো অনিশ্চয়তার পথ ধরে।

মাসুদ সজীব

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

একমত। তবে একটা কথা - আমিও কিন্তু চানাচুর টাইপের বই দিয়েই শুরু করেছিলাম। হয়তো আরো অনেকেরই তাই। চানাচুর দিয়েই শুরু হলে হোক, কিন্তু শুরুটাতো অন্তত: হোক! মনে আছে ছেলেবেলার কথা, যখন বাড়ির পাশে দোকান ছিল না, তাই হাটবারে কিংবা মেলার সময়েই শুধু কেনা হতো চানাচুর। পরে চানানুর সহজলভ্য হওয়াতে এখন কত রকমের চানাচুর পাওয়া যায় বাজারে, আর কত কোম্পানী!! হোক না, বইয়ের ক্ষেত্রেও এমনই হোক!
পড়ার জন্য আর মননশীল মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

খায়রুল মাসুদ  এর ছবি

এই শূন্যতাটা সবসময় অনুভব করি

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আমাদের দেশে এক শ্রেণীর মানুষের কাছে ব্লগার মানেই নাস্তিক। তারা জানেনা, জামাতের যে পেইড ব্লগার আছে। আবার সৃজনশীলতা, বইপড়া ইত্যাদি বিষয়গুলো প্রগতিশীলতা অর্থাৎ কিনা কিছুটা বাম ঘেঁষা মানে সেখানেও নাস্তিকতার বদবু !
আপনার লেখা এবং লেখার বিষয়বস্তু ভাল লেগেছে। অনেক অনেক লিখুন। চলুক

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

হ্যাঁ, তাদের কাছে এই সব বই হলো 'আউট বই"। এরা পড়ার বইয়ের বাইরে খুব বেশী হলে খাবনামা পড়ে!!

ধন্যবাদ।

হাসান এর ছবি

বই পড়া মানুষ মাত্রই ভাবুক, হাবাগোবা এটাও ভুল ধারনা। প্রচুর মানুষ আছেন যারা নিয়মিত পড়েন- সত্যিকার অর্থেই, আবার সংসারধর্মও পালন করে চলেন সময়মতো।
লেখাটা ভালো লেগেছে, যদিও একটু হতাশ ভাব আছে। আমি নিজেও এই রকম হতাশায় ভুগতাম একসময়, অবশ্য ওই হতাশার সাথে একটু "আমার মতো কেই বই পড়ে না" ধরনের আত্ন অহমিকাও ছিলো। এখন কোনোটাই নেই। আমার হাঁটুর বয়সী ছেলেপিলেদের পড়া এবং জানার পরিমান দেখে লজ্জায় আর আনন্দে সব হতাশা চলে গেছে। কবি বলেছেন- নিরাশ হইও না যদি তুমি মমিন হও।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

হ্যাঁ হাসান ভাই, হতাশা থেকেই লিখেছি। তবে না, কোন আত্ম অহমিকা কাজ করেনি লেখাটার পেছনে।
"আমার হাঁটুর বয়সী ছেলেপিলেদের পড়া এবং জানার পরিমান দেখে লজ্জায় আর আনন্দে সব হতাশা চলে গেছে" - খুব ভালো লাগলো। যত বেশী মানুষ বই পড়ে, ততই ভালো। তবে আমার হতাশা বইয়ের দোকানের অবলুপ্তি দেখে।

হিমু এর ছবি

বই পড়া এক অর্থে নিজের সঙ্গে সময় কাটানোর মতো। আগে কাজটা সহজ ছিলো হয়তো। এখন ফেসবুক আর মুঠোফোনের কল্যাণে নিজেকে সময় দেওয়া মানুষের জন্যে কঠিন হয়ে গেছে।

একটা ভালো বই পড়লে সাথে সাথে যত জোরে সম্ভব আওয়াজ দিয়ে চেনা-অচেনা সবাইকে জানিয়ে দেবেন। তাহলে হয়তো কিছুটা কাজ হতে পারে।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

ধন্যবাদ হিমু ভাই। এটা ঠিকই বলেছেন।

আয়নামতি এর ছবি

সিনেমার রিভিউয়ের পাশাপাশা বইয়ের রিভিউ বেশি করে লেখা হোক। এতে করে হয়ত অনেকেরই পুরানো
অভ্যেসটা ভুশ্ করে মাথা চাড়া দিবে। চানাচুর হোক ক্ষতি নেই। সাথে যোগ হবে চানাবুট। তারপর টমেটো... পেঁয়াজ...মুড়ি আড্ডা জমে উঠলে অনেকেই বই পড়ার মেজাজে ফিরে যেতে চাইবেন। আমি লিখতে পারিনা।নইলে আমিই শুরু করে দিতাম 'পুউর ইকোনোমিক্সের' একটা সেইরাম রিভিউ। প্রোফেসর সাহেব, আপনার কাছ থেকে যোগ্য পোষ্টই এসেছে, অভিনন্দন! হাততালি হতাশ হবেন না। পাশে আশা'কেও রাখুন।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

হাসি অসংখ্য ধন্যবাদ

তিথীডোর এর ছবি

দুইন্যায় এত কিছু থাকতে ইকোনমিক্স কেনু? চোখ টিপি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চিন্তিত

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

অতিথি লেখক এর ছবি

চানাচুর কিন্তু আমরা সবাই খাই,কিন্তু সেটা বয়সের সাথে কমে আসে,হুমায়ূন আহম্মেদ কে দিয়ে আমারও শুরু।আমি ব্যাক্তিগত ভাবে হুমায়ূন আহম্মেদ কে অপছন্দ করিনা তার লেখার জন্যে।কেউ যদি তার বই এর গন্ডি পেরিয়ে যেতে না পারে তাহলে সেটা তার ব্যাক্তিগত ব্যর্থতা।কেউ যদি নিজ থেকে বড় হতে না চায় তাহলে তাকে কে বড় করবে।আপনাকে ও আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- ,প্রফেসর হিজিবিজবিজ

মাসুদ সজীব

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

একমত।

অতিথি লেখক এর ছবি

জীবনে প্রথম বই উপহার পেয়েছিলাম ক্লাস থ্রী'তে পড়ার সময়, বন্দে আলি মিয়ার লেখা দুটি বই- ক্রিষ্টোফার কলম্বাস আর কামাল পাশা। খানিকটা পড়ে মাথা মুন্ডু তেমন কিছুই না বুঝে এবং বিন্দুমাত্র মজা না পেয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম বই পড়ার মত নিরস কাজ এ জগতে আর কিছুই নেই, হোক সে ক্লাসের পাঠ্য বই কিংবা বাবার দেয়া উপহার। ক্লাস ফাইভে পড়াকালীন সময়ে গোপাল ভাঁড়ের গল্প হাতে পেয়ে সে ধারনা পাল্টে গিয়েছিল, পরবর্তীতে দিন যতই গড়িয়েছে পরিবর্তিত ধারনাই আরো পোক্ত হয়েছে। কিন্ত সমাজের সর্বত্র ব্যাপারটা সেরকম ছিল না। তখন ডিস, টিভি, মোবাইল, ইন্টারনেট, ফেসবুক কোন কিছুই ছিল না, তবুও বই পড়ার আগ্রহ খুব মানুষেরই ছিল, এই আজাইরা কাজ সুনজরে দেখার মানুষ খুব সামান্যই ছিল। কলেজে পড়ার সময় খুব উৎসাহ নিয়ে একটা পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেছিলাম, টার্গেট পিপলের অনাগ্রহে সে উৎসাহ মিইয়ে যেতে সময় লাগে নি।

বই পড়ার পদ্ধতিগত ব্যাপারে এখন এক ধরনের ক্রান্তিকাল চলছে, ই-বুক এবং ইন্টারনেট বই পড়ার পদ্ধতিতে একটা আমূল পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। আমার ধারনা এবং আশা ভবিষ্যতে মানুষ আরও বেশী বেশী বই পড়বে, আমাদের দেশেও।

আব্দুল্লাহ এ এম

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

আশা ভবিষ্যতে মানুষ আরও বেশী বেশী বই পড়বে, আমাদের দেশেও।

আশা নিয়ে বাস করি, আশায় পকেট ভরি ---

ধন্যবাদ

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

আমি তো ইদানীং জোরজবরদস্তি করে বই গছিয়ে দিচ্ছি।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

ধন্যবাদ - সুন্দর উদ‌্যম ও প্রচেষ্টার জন্য।

____________________________

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।