২০০৩ সনে টিম হর্টনের মিডিয়াম এককাপ কফি খেয়েছিলাম ১ ডলার দিয়ে। কয়েকজনে কী একটা কাজ শেষ করে সেখানে ঢুকি। সদ্য বাংলাদেশে থেকে এসেছি। দল বেঁধে খাওয়ার দোকানে ঢুকলে বিল একজনই দেবে তেমনটাই ভেবেছিলাম। অবাক হওয়ার পালা যখন সবাইকে আলাদা আলাদা বিল দিতে দেখি।
সে সব দিন এখনও স্মৃতিতে উজ্ব্বল। মনে হয় গত বছরের কথা।
ক্রিস্টোফার যেদিন পিয়ারসন এয়ারপোর্ট থেকে আমাকে ওয়েস্ট ডেল ভিলেজে নামিয়ে দেয় সেদিন এছো গ্যস স্টেশনে তেলের দাম ঝোলানো ছিল ৬৬সেন্ট। আজ সে দাম দ্বিগুনেরও বেশী-- ১২৭ সেন্ট। রেশনিং করেও লাভ নেই কারণ তেল পোড়ানোর মত সময়ই বা কোথায়। মিনিমাল যা খরচ তা করতেই হবে।
টিম হর্টন কফির দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কারণ-- কফি বিন-এর দাম বেড়েছে, কর্মচারীদের বেতন বেড়েছে। তেল কোম্পানিগুলো দফায় দফায় বাড়াচ্ছে তেলের দাম। কানাডিয়ান ডলারের দাম বেড়ে গেছে আমেরিকানের তুলনায়। ২০০৩ এ এক আমেরিকানে ১ ডলার ৪৭ কানাডিয়ান মনে হয় পেয়েছিলাম। এখন এক আমেরিকানে ৯৭ কানাডিয়ান সেন্ট। ভাবতেই অবাক লাগে। কোথায় থেকে কোথায় গেছে।
অর্থনীতি বুঝিনা, মূল্যস্ফীতি বা মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে সম্পর্ক আছে নাকি নাই তাও জানিনা। তবে বুঝতে পারছি সামনে হয়তো ৫ ডলার দিয় ফুলকপি কিনতে হবে। মূল্য ফোলার সাথে সাথে বেতনটা ফুলে গেলে অবশ্য মন্দ হতোনা।
একটা অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়-- কানাডার কর্পোরেশনগুলো নাকি জনগনকে চুষে খায়। এরা বলে রিপিং অফ। পকেটে টাকা রাখার কোন উপায় নেই। যেন প্রকারে তা অন্যের হস্তগত হবে। সরকার ট্যাক্স কাটবে (বিনিময়ে সরকার অনেক সার্ভিস দেয় অবশ্য), মোবাইল ফোন পকেট মারবে, ইন্টারনেট কোম্পানি ডাউনলোড লিমিটেশনের নামে খাঁড়া হাতে বসে থাকবে কখন সীমা অতিক্রম করে। অতিক্রম করলেই সাথে সাথে ৩০ ডলার গচ্চা।
গচ্চা দিতে দিতেও এদেশে বেশ ভালোমতই খেয়ে পড়ে বাঁচা যায়।
দেশের কথা মনে পড়লে নানা কারণে দুশ্চিন্তা হয়।
গতরাতে দু:স্বপ্ন দেখেও ঘুম ভাঙেনি। স্বপ্নের মধ্যেই এক স্বপ্ন থেকে আরেক দু:স্বপ্নের জগতে ঘুরছিলাম। নেস্টেড স্বপ্নের মত, মাঝে মাঝে যেটা আবার লুপে পড়ে যায়।
ভাগ্য ভালো- সকালে উঠে দু:স্বপ্নগুলো আমার মনে থাকে না।
মাঝে মাঝে অন্যের কষ্টে নিজের মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছে করে। ব্যর্থতার কষ্টে, কিছু না করতে পারার কষ্টে, নিজেকে লিমন হোসেনের জায়গায় চিন্তা করে দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার কষ্টে। না, পারি না। আমি অনেক নিরাপদেই আছি। স্বার্থপর তো বটেই। বড়ই স্বার্থপর আমরা। নিজের ঘাড়ে কোপ না পড়া পর্যন্ত আমাদের বোধদয় হয় না। এই মুহূর্তে স্বরাষ্ট্র-খালাম্মার কথা মনে পড়ছে।
ব্যর্থ রাষ্ট্র বলে এক সময় অনেকে ঘুম হারাম করে ফেলতেন। তারা এখন দিব্বি ঘুমাচ্ছেন। পেট ভরা থাকলে অবশ্য এমনই হয়।
২০১১/০৪/০৬
মন্তব্য
বেড়ালের বাচ্চাকে স্পেশাল মাছ-দুধ খাইয়ে বাঘ বানিয়েছেন। তারপর সেই বাঘের পিঠে চড়ে বসেছেন। বাঘের পিঠে চড়ার আয়রনিটা হচ্ছে এই যে, আপনি কখনো বাঘের পিঠ থেকে নামতে পারবেন না। যেই মুহূর্তে আপনি বাঘের পিঠ থেকে নামবেন, অমনি আপনি বাঘের মালিক থেকে বাঘের খাদ্যে পরিণত হবেন।
খালের এই পাড়ে যারা থাকে তারা জানে বেঁচে থাকাটাই সবচে' বড় ব্যাপার; আর নিরাপত্তা, সুরক্ষা এইসব কথাগুলো কতো বড় তামাশা। খালাম্মাকে যখন সাফাই গাইতে দেখি তখন তার জন্য মায়াই হয়। তিনিও তো জানেন সত্যটা কী, আর কোন অবস্থানে থাকলে বিবৃতির ভাষা কী হতে হয়।
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
ভালো বলেছেন।
-এইটাই আসল কথা!
একটু আলবার্টা ঘুরে যান, বস। মিডিয়াম ডাবল ডাবল ১.৩৯। ফুলকপি একবার ৭ ডলারেও কিনেছি ২০০৮-এ কো-অপ থেকে। এখন ৪-৫ পড়ে পাঞ্জাবি দোকান থেকে কিনলে অবশ্য ২.৩৯!
অবশ্য, আজকে তেল কিনলাম ১.১৮-বাড়তেছেই, গত সপ্তাহে ১.০৯ এ কিনেছি!
২০০৬ এ এসে ১ আমেরিকানে ১.১০ পেয়েছি।
অফটপিকঃ
এইমাত্র এই নিউজটা দেখলামঃ এখানে - আওয়ামী ধর্মনিরপেক্ষ ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে আরও একধাপ অগ্রসর হলাম...আমার গ্রামের ভাষায়-"সব মাছই গু খায়, নাম হয় ঘাউরা মাছের"
-------------------------------------------------------------
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন...
অত সব ওভার হেড ইনকাম বিষয় এবং ডলার টলার বুঝি না, আমার একটা অভিজ্ঞতার কথা বলি - গত বছর নিউ ইয়ার্ক গিয়ে চায়ের দাম ৭০ টাকা দিতে হলো, তখন চা খাওয়া বন্দ ক্রা ছাড়া কোন উপায় ছিলো না। যেখানে সারা জীবন ১ থেকে ৫ টাকা দিয়ে এক কাপ চা খেয়েছি সেখানে আমাকে ৭০ টাকা দিয়ে এক কাপ চা খেতে হবে। পকেটের সব টাকা চা খেয়েই শেষ করে যেতে হবে.........।
ঘুমের কথা বোলছেন, যে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় ওহি নাজিলের উপর নির্ভর করে। এতটাই ঘুমে বিভোর যে, বিশ্বের কাছে দেশের সন্মানের কথাও মনে আশে না, তাদেরই ঘুম মানায়।
somomona
উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ বিরানায়...
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
আমি আসিতেছি, কফির দাম বাড়লে তো সমস্যা!!
...........................
Every Picture Tells a Story
তাই নাকি? কবে? একটু জানাইয়েন।
মুস্তাফিজ ভাই, অ্যালবার্টা আসেন। একসাথে বাঘ শিকারে যাব।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
বাঘ কই পাইলা? বরফের বাঘ মারবা নাকি?
হে: হে: টোপ দিয়েছিলাম।
তা বাঘ না থাকলেও ভাল্লুক আছে প্রচুর। ব্যানফ বা জ্যাসপার পার্কে ঢুঁ দিলে ছবি তোলার কমতি হবে না।
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
গরীব গ্র্যাড স্টুডেন্টদের অবস্থা আরো খারাপ!
------------------------
[ওয়েবসাইট] [ফেইসবুক] [ফ্লিকার ]
আসলেই...
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
তেলের দাম, আহা। এখন মনে হয় স্বপ্ন সব। প্রথম যখন ইউরোপে পা দিই তখন প্রতি লিটার ছিলো চুরানব্বুই সেন্ট। এখন এই দাম দিয়ে তেল কিনতে গেলে সাথে সাথে স্টেশনের মালিক পাগলা গারদের ওয়াগেন ডেকে তাতে তুলে দিবে।
Esso দেখি আপনাদের ওখানেও আছে!
স্বরাস্ট্র খালাম্মার কথা নতুন করে কী-ই বা বলার থাকতে পারে। আমার ধারণা এই পদ'টাই তৈরী হয়েছে কিছু খালাম্মা আর মামু টাইপের মানুষকে পদবান করার জন্য। যে যতো বড় কেরদানই হোক না কেনো, এই পদে আসীন হওয়া মাত্রই সব কিছু আল্লার হাতে ছেড়ে দেয়! আমরাও তখন, আম-জনতা পিংপং বলের মতো টাবঘুরুন্টি খাইতে থাকি, আল্লা'র নামে।
খালাম্মারে নিয়া একটা লেখার কথা মনে পড়ে গেলো।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
এখন র্যাব গুলি করে পা ফুটা করে বলে আল্লার রহমতে কোন প্রাণহানি হয়নি!
জাপানে আসার পরপর একদিন এক জাপানিজ ল্যাবমেট আমাকে কফি অফার করলো। সে খাওয়াচ্ছে ধরে নিয়ে আমি টাকা সাথে নেইনি। কিসের কি, মেশিনে গিয়ে সে দিব্বি নিজের টা নিজে কিনে আমার সাথে গল্প করা শুরু করলো।
কানাডাতে জিনিসপত্রের দাম শুনেতো একটু ঘাবড়ে গেলাম, ওদিকেই যাব যাব করছি
খুশীর খবর। কোথায় কবে আসতেছেন রানা ভাই?
মূলোমূলি চলতেছে পিপিদা। দামদর ঠিক হইলে সেপ্টেম্বর লাস্ট উইক আসতেসি, মন্ট্রিয়ল
মন্ট্রিয়ল বেশ কালচারাল শহর। আসেন, দেখা হইতেও পারে। যদিও আমি অনেক দূরে থাকি।
বড়ই স্বার্থপর আমরা!
সুমিমা
নতুন মন্তব্য করুন