বঙ্গবাজার দীর্ঘজীবী হোক

রাগিব এর ছবি
লিখেছেন রাগিব (তারিখ: শনি, ০২/০২/২০০৮ - ৩:৫০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

কাপড় চোপড় কেনার ক্ষেত্রে বঙ্গবাজার হলো আমার দৌড়। মানে প্যান্ট কেনা আর কি। চট্টগ্রামে ছিলো জহুর হকার্স মার্কেট, আর ঢাকায় যখন পড়তে আসলাম বুয়েটে, তখন থেকেই জিন্স কিনতে হলে রিকশায় চেপে সেই বঙ্গবাজারে যাওয়া।

ওখানে কেনাকাটা করার বেশ কিছু কৌশল আছে। যদি খুব মাঞ্জা মেরে যান, দোকানদার আপনাকে মালদার পার্টি মনে করে ঐরকমই দাম চাইবে। বঙ্গ-তে কেনাকাটা করতে হলে তাই আমি সবসময় যেতাম স্যান্ডেল পায়ে, টিশার্ট আর জিন্স পরে।

দামাদামি হলো বঙ্গতে আমার সবচেয়ে পছন্দের ব্যাপার। জিন্সের দাম চাইতো শুরুতে ৮০০ টাকা। আমি বলতাম ১০০ টাকার নীচে, বা ভালো লাগলে খুব বেশি হলে ১০০টাকা। দোকানদার হয়তো আঁতকে উঠে কিপটামি সংক্রান্ত একটা বাঁকা কথা বলতো। ওসব কথা গায়ে মাখলে আর বঙ্গতে কেনাকাটা করা লাগতো না। তাই দিব্বি বিশাল হাসি বজায় রেখে দোকানদারের সাথে আড্ডা জমাতাম। কারণ, দোকানদার যদি আপনার পিছনে ২০ মিনিট বা আধা ঘন্টা সময় ব্যয় করে, তাহলে এক সময় ঠিক দামেই জিনিষটা দিয়ে দিবে। নইলে তো তার সময়টা গচ্চা গেলো। এরকম আড্ডা মারতে মারতে ৮০০ টাকা দাম হাঁকা ঐ জিন্স কিনতাম ১৮০ বা খুব বেশি হলে ২২০ টাকায়।

ঐযে বলেছিলাম, কাপড় চোপড় দেখে ওরা দাম হাঁকে। বিয়ের পরে একদিন আমার স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলাম। ঐ একই দোকানদার একই জিন্সের দাম শুরু করলো ১৫০০ টাকা হতে। অবশ্য দামাদামির স্টাইল দেখে বুঝে নিলো অল্প পরেই যে পুরানো পাবলিক। ২২০ টাকাতেই শেষে দিলো।

বিদেশে যখন পড়তে যাচ্ছি, তখন শীতের বড় জ্যাকেট কিনতে বঙ্গবাজারে গিয়েছিলাম। পিছনের দিকের একটা জায়গায় এগুলো বিক্রি করে। প্রচুর শীতের কাপড় নিয়ে গিয়েছিলাম ঐবার, যার মধ্যে দুইটা বড় জ্যাকেট ছিলো, একটা হাঁটু পর্যন্ত।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর ওখানকার বাংলাদেশীরা ভয় দেখালো। ৫-৬ বছর দেশে যাননি, এমন একজন প্রশ্ন করলেন, ইলিনয়ের শীত তো খুব বেশি, কাপড় কিনবো কবে। আমি জানালাম আমার বঙ্গের জ্যাকেটের কথা। উপস্থিত অনেকে হাসাহাসি করলেন, বললেন বঙ্গের ঐ জ্যাকেটে বাংলাদেশের শীত মানতে পারে, আমেরিকার শীত মানবে না। কাজেই আমি যেন মানে মানে সময় থাকতে এখান থেকে জ্যাকেট কিনে নেই। তখন অবশ্য গরম কাল ছিলো, তাই অন্যরা কী জ্যাকেট পরছে তা দেখিনি। ভাবলাম, বঙ্গ কী শেষ পর্যন্ত ডোবাবে নাকী আমাকে!!

যখন শীতকাল এলো, তখন শেষ হাসিটা আমিই হাসলাম। চারিদিকে সবাই যেই জ্যাকেট পরছে, সবই বঙ্গের জ্যাকেটের কপি। কিন্তু তফাৎটা হলো, এসব জ্যাকেট এরা কিনেছে প্রায় ৫০ থেকে ১০০ ডলার দিয়ে। সেই জায়গায় আমার বঙ্গের একই মানের জ্যাকেটটা কিনেছিলাম ৪০০ টাকায়। একদিন জেসিপেনি নামের শপিং মলের বিশাল দোকানটায় গিয়ে দেখি আমার ঐ জ্যাকেটটাই ঝুলছে। ট্যাগ চেক করে দেখি মেইড ইন বাংলাদেশ!!

আজ এই কথা মনে হলো আবারো, বঙ্গের সেই জ্যাকেট পরে যখন বাইরে বরফ পরিষ্কার করতে বেরিয়েছিলাম। দিব্বি আরামে -১৫ সে তাপমাত্রাতেও গরম ছিলাম।

তাই বারে বারে বলি,

বঙ্গবাজার দীর্ঘজীবী হোক।

(লেখাটা এক বছর আগে লেখা। এবার দেশে গিয়ে ঘটলো উলটো ঘটনা। দেশে যাওয়ার এক সপ্তাহ আগে এখানে নামী দোকানে বিশাল sale দেয়াতে ২০ ডলার দিয়ে একটা জ্যাকেট কিনে বেশ খুশি ছিলাম। দেশে গিয়ে ঢাকার রাস্তায় জনে জনে ওটার মতো জ্যাকেট পরে ঘুরছে দেখে ঘাবড়ে গেলাম। জ্যাকেটটা ভালো করে দেখতে গিয়েই আবিষ্কার করলাম, এটাও "Made in Bangladesh"!, এবং বঙ্গে ২০০-৩০০ টাকাতে বিক্রি হচ্ছে।)


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

দেঁতো হাসি বঙ্গ না থাকলে ঢাকার পোলাপাইনের আর পাট মারা হতো না। আমাদের এক ফ্রেন্ড একদিন ভার্সিটিতে আসছে 'adidas' এর একটা গেঞ্জি পড়ে। তার সে কি ভাব! এইটা অরজিনাল, এইটা সেটা। কয়দিন পর দেখলাম রিকশা আলা থেকে শুরু করে সবার গায়ে সেই অরিজিনাল গেঞ্জি।
রায়হান আবীর

কেমিকেল আলী এর ছবি

আমার ইচ্ছা আবার দেশে গেলে বঙ্গ থেকে সব এডিডাস, নাইকি আর রিবোক লেখা টিশার্টগুলো বেশি করে কিনবো।
এইখানের লোকেরা তো আর বুঝবে না এইটা আসল না নকল!!!

চামে চামে ভাব!!!!!!!

রাগিব এর ছবি

অনেক "জাতে-উঠা" প্রবাসী বাংলাদেশী আবার বলে, "ব্র্যান্ডের শার্ট/প্যান্ট ছাড়া আমি পরিনা"। এরকম একটা মাঝারি মানের ব্র্যান্ড হলো Hagar যার শার্ট/প্যান্ট ছাড়া নাকি অনেকে পরেই না।

দেশে এক গার্মেন্টস ব্যবসায়ীর সাথে কথা হচ্ছিলো, উনারা ১ ডজন Hagar এর শার্ট ৯ ডলারে চালান দেন!!!

বঙ্গতে হেন ব্র্যান্ড নাই, যা পাওয়া যাবে না।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

তানভীর এর ছবি

চিন্তা করে দেখলাম আমার ব্র্যান্ডের তেমন কোন জামা-কাপড় নাই মন খারাপ জামা-কাপড় পড়া লাগে, তাই হাতের কাছে যা পাই তা-ই পড়ি। ব্র্যান্ড নিয়ে কোন মোহ নাই। এ কারণেই হয়তো বংগবাজারেও তেমন ঢুঁ মারা হয় নি। তবে ছোটবেলায় কেউ একটু বিদেশী সিল-ছাপ্পড় মারা কাপড় পড়লেই আমরা খেপাতাম এটা 'টাল এন্ড কোং' (জহুর মার্কেট) থেকে কেনা হয়েছে দেঁতো হাসি

অন্য পাঠকদের জন্য এখানে চট্টগ্রামের জহুর মার্কেট সম্পর্কেও একটু বলি। এটা অফিশিয়াল নাম 'জহুর হকার্স মার্কেট'। কিন্তু এক সময় এটা 'টাল কোম্পানী' বা 'টাল এন্ড কোং' নামে পরিচিত ছিল। জাহাজ থেকে আসা বিদেশী পুরানো লটের কাপড় টাল করে মার্কেটে রাখা হতো বলে এই নাম। এখন অবশ্য সবই বাংলাদেশী গার্মেন্টস-এর কাপড়। এছাড়া আন-অফিশিয়ালী এ মার্কেটকে আমেরিকান ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের নামেও ডাকা হয়। নিক্সন আমলে এটাকে ডাকা হত 'নিক্সন মার্কেট', রেগান আমলে 'রেগান মার্কেট' ইত্যাদি। এভাবে এখন আর ডাকা হয় কি না জানি না। নাম-করণের এই ধারাটা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং লাগত।

=============
"কথা বল আমার ভাষায়, আমার রক্তে।"

রাগিব এর ছবি

জহুর মার্কেট কিন্তু অনেক দিক থেকে বঙ্গের চেয়েও সমৃদ্ধ। আমার বন্ধুরা অনেকেই রীতিমত মাপ দিয়ে জিন্সের প্যান্ট সেলাই করাতো ওখান থেকে।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটি পড়ে একটা অনেক পুরনো গল্প মনে পড়ে গেল। তখন বংগবাজারও তৈরী হয়নি। সে আমলে সস্তায় জামা কাপড় কিনবার জন্য অনেকেই যেতো পুরনো জামা কাপড়ের মার্কেটে (যার আন অফিশিয়াল নাম ছিল নিক্সন মার্কেট)। আমার পরিচিত একজন তখন আমেরিকায় যাচ্ছে। তার গোটা শপিং সে করলো নিক্সন মার্কেটে। যখন তাকে শুধোলাম কেন সে নতুন কিছু কিনলোনা, তার উত্তর ছিল,"জায়গার জিনিস জায়গায় ফিরত দিয়া আসি।"

-নির্বাসিত
_______________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

পুরুজিত এর ছবি

গত সেমেস্টারে পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটির কথা পড়ে আমি আর আমার রুমমেট হিসেব করে বের করেছিলাম যে, আমেরিকার ১ ডলার বাংলাদেশে ১০/১৫ টাকার সমান (মানে এখানে ১ ডলার খরচ করলে দেশে ১৫ টাকা খরচ করার মত বেদনা দেয়)। সেই হিসেবে রাগিব ভাই, আপনি ২০ ডলারের জ্যাকেট কিনে ঠকেন নি খুব একটা।
বংগবাজার, গাউসিয়া - এদের ব্যাপারে আমার বড় ধরনের বিরাগ ছিল। আমি মোটেই দামাদামি করতে পারতাম না, সবসময়েই মনে হোত ঠকছি। আর হেলথ এন্ড সেফটি রেগুলেশনের কোন বালাই নেই। ঘুপচি দোকান, আগুন লাগলে সর্বনাশ। পকেটে পয়সা না থাকলেই যে এমন পরিবেশে কেনাকাটা করতে হবে এটা মানতে পারি না। এদের অবস্থা আরো ভালো করা সম্ভব - দাম না বাড়িয়েও।

রাগিব এর ছবি

আমি মোটেই দামাদামি করতে পারতাম না, সবসময়েই মনে হোত ঠকছি।

দামাদামি করতে পারিনা বলেই তো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দোকানে কিছু কিনে মনে সুখ পাই না। দামাদামি করাতেই তো কেনার অর্ধেক মজা।

পকেটে পয়সা না থাকলেই যে এমন পরিবেশে কেনাকাটা করতে হবে এটা মানতে পারি না।

পয়সার জন্য না ... আসলে যে জিনিষের যা দাম, দোকানের আলোকসজ্জ্বার জন্য তার ৪ গুণ দাম দেয়ার ইচ্ছা করে না। কাপড় চোপড়ের ম্যানুফ্যাকচারিং কস্ট কিন্তু খুব কম ... একটা জিন্সের প্যান্টের কাঁচামাল আর গার্মেন্টসে সেলাই খরচ ১০০ টাকার চেয়েও অনেক কম। বঙ্গবাজারের আগে বদনাম ছিলো, খুঁতযুক্ত মালগুলো ওখানে আসে। এখন অবশ্য মান দেখে মনে হয়, গার্মেন্টসের যেসব অর্ডার বাতিল হয়, সেগুলো ওখানে চলে আসে ... মানগত সমস্যা নাই।

বঙ্গের পরিবেশ নিয়ে আমার কখনোই খারাপ লাগেনি। একটু গাদাগাদি, এই যা। বসুন্ধরা সিটির দোকানেও একই দশা মনে হলো (টি-শার্ট কিনতে গিয়ে ট্রায়াল দিতে চাইলে কফিনের মতো দেড়হাত চওড়া বাক্সমার্কা একটা ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছিলো, কোনো মতে বেঁচে ফিরেছি!)।

বঙ্গের সবচেয়ে মজার অভিজ্ঞতা ছিলো, জিন্সের প্যান্ট কিনতে গিয়ে ট্রায়াল দেয়াটা (বুয়েটে পড়ার সময়ে)। ট্রায়াল কীভাবে দিবো জানতে চাওয়াতে দোকানদার বললো, কোনো সমস্যা নেই, আর বাড়িয়ে ধরলো লুঙ্গি। সেই ভীড়ের মধ্যেই লুঙ্গির আড়ালে ট্রায়াল দিয়ে দেখলাম।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

শামীম এর ছবি

এখনতো বঙ্গবাজারে দোতালাতে অনেক সেলাইয়ের দোকান। জিন্স কিনে প্যান্টের পায়ের দৈর্ঘ ঠিক করাতে ওখানেই চলে যান। ২০টাকাতেই হয়ে যাবে।

আগুন লেগে পুড়ে যাওয়ার পর বঙ্গবাজারে কিছু উন্নতি হয়েছিল। চলাচলের প্যাসেজগুলোর উপরে কিছুদুর পর পর একজস্ট ফ্যানের মত ফ্যান লাগানো আছে, যেগুলো ভেতরের বাতাস রিলে করে করে বাইরে পাঠিয়ে দেয়। তাই গরমকালে আগের মত তন্দুর-গরম হয় না।

রাগিবের পোশাক হাইপোথেসিসটার সাথে একমত। ওখানে গেলে জিন্স-স্যান্ডেল পোশাকে যেতাম।

একবার ঠকেছিলাম। বিদ্যূৎ ছিল না মোমের আলোতে তাড়াহুড়া করে ইনার হিসেবে যা কিনে আনলাম সেটার দুই পা দুইরকম দৈর্ঘ্যের ছিল ... মোটামুটি ৬-৭ ইঞ্চির পার্থক্য!!
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

কনফুসিয়াস এর ছবি

বঙ্গবাজারের পাশেই থাকতাম ভার্সিটিলাইফে, দুয়েকবার গিয়েছিলাম। বেকুব মানুষ, তাই সুবিধা করে উঠতে পারি নি।
তবে জায়গাটায় গেলে আজব একটা থ্রিলিং ভাব হয়, না কি বলেন? চোখ টিপি
-----------------------------------
যা দেখি তা-ই বলি...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমি আর আমার বাবা দুই জনেই বেকুব কিসিমের। ৮০০ চাইলে ভদ্রতা করে ৫৫০-র নিচে নামতে পারি না। শেষতক খুশিমনে ৬৭৫ টাকায় কিনে আনি। মা আবার এত ভদ্রতার মধ্যে নাই। রীতিমত রাগিবীয় কায়দায় ১০০ টাকা বলে হাঁটা দেয়। আমি পেছন পেছন বকতে থাকতাম, এত ছোটলোক আর কিপটার মত দাম বলে কীভাবে মানুষ??

মায়ের এই বাজার করার গুণটা নানার কাছে পাওয়া। নানা নিউ মার্কেটে বাজার করেছে প্রায় ৩০ বছর। তাকে দেখলেই দোকানদাররা বলতো, "স্যার, কোন কথা বলা লাগবে না। শুধু বলেন কতটুকু নিবেন।" নানা দরদাম করলে আশেপাশের সবাই কম দামে চাবে, তাই।

নানা একটা কথা খুব বলতো। বাজারে ঢুকেই দামাদামি করতে নাই, বা কিছু কিনতে নাই। প্রথমে একটা রাউন্ড ঘুরতে হয় সব দোকানে। দাম জানতে জানতে যাওয়া উচিত। এভাবে একটা ধারণা পেলে কেনা অনেক সহজ হয়।

রাগিব এর ছবি

নানা একটা কথা খুব বলতো। বাজারে ঢুকেই দামাদামি করতে নাই, বা কিছু কিনতে নাই। প্রথমে একটা রাউন্ড ঘুরতে হয় সব দোকানে। দাম জানতে জানতে যাওয়া উচিত। এভাবে একটা ধারণা পেলে কেনা অনেক সহজ হয়।

একেবারে খাঁটি কথা। আমি জীবনে অনেক ধরা খেয়েছি প্রথম বা দ্বিতীয় দোকান থেকে জিনিষ কিনে। তাই এখন মার্কেট পুরা না ঘুরে আর কিনিনা। আমেরিকার মলেও একই কাজ করি ... এবং আসলেই দোকান থেকে দোকানে দামের তফাৎ পাই। তবে সুবিধা হলো, এখানে জিনিষ চাইলেই ফেরত দেয়া যায়।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

দিগন্ত এর ছবি

আগেরবারে বঙ্গবাজার থেকে অনেককিছু কিনেছিলাম। দিল্লীর সরোজিনী মার্কেটের মত। তবে এখন বাংলাদেশের টাকার দাম পড়ে যাওয়ায় বঙ্গবাজারই লাভজনক। তাই এবার আমেরিকা যাচ্ছি বলে তার আগে বঙ্গ আর সরোজিনী দুই থেকেই মার্কেটিং সেরে রেখেছি - আমেরিকায় গিয়ে যাতে কিছু কিনতে না হয়।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দিগন্ত এর ছবি

বঙ্গে আমার সমস্যা হয়েছিল যে আমাকে ভারতীয় বলে আইডেন্টিফাই করে ফেলছিল লোকে। তাই বেশী দাম ... তবে সাথে লোকবল নিয়েই গিয়েছিলাম। তারা দরাদরী এক্সপার্ট। তাই কিনে ফিরতে পেরেছি। নাহলে খালি হাতেই ফিরতে হত। চিনেও একই রকম আন্ডারগ্রউন্ড মার্কেট আছে অনেক। তবে সেখানে ভারতীয় বলে নিজেকে গরিব দেখিয়ে সুবিধা পাওয়া যায় বরং।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

রাগিব এর ছবি

ইন্টারেস্টিং ... "চিনিলো কেমনে*?" কথার টানে ধরেছে?

*"চিনিলো কেমনে" হলো আইয়ুব খানের আমলের একটা বিখ্যাত ডায়ালগ। না শুনে থাকলে ব্যাখ্যা দিবো।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

দিগন্ত এর ছবি

ব্যাখ্যা চাই ...
---------------------------------
হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

রাগিব এর ছবি

পাকিস্তান আমলের কথা। আয়ুব খান তার সামরিক শাসনকে বৈধ্তা দিতে basic democracy নামের খিচুড়ি পদ্ধতি শুরু করেছে ।।। সারা দেশে নিজের অনুগত মোসাহেবদের "নির্বাচিত" বেসিক ডেমোক্র্যাট বানিয়েছে, যারা আবার ভোট দিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে। (অনেকটা মার্কিন সিস্টেমের মতো)।

যথারীতি সব বেসিক ডেমোক্র্যাট আয়ুবের দলের পোষা, আম জনতা একদম দেখতে পারেনা এদের। এহেন এক চামচা বাজারে গেছে, সেসময় এক মস্তান গোছের ষাঁড় সুযোগ বুঝে তেড়ে এসে শিং দিয়ে গুতা দিয়ে চামচা সাহেবের দফারফা করে দিলো।

সামরিক শাসন, তাই পত্রিকাতে এ নিয়ে আমোদ করা চলেনা, কিন্তু ইত্তেফাক ছাড়েনি, রসকষহীন করে খবর ছেপেছে, কিন্তু ক্যাপশনে দিয়েছে, "চিনিলো কেমনে" [:)]

এই হলো কথাটার শানে নযুল।
----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।