রশীদ হলের চিড়িয়াখানা - ৫ (অথঃ চোর সমাচার)

রাগিব এর ছবি
লিখেছেন রাগিব (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৫/০৫/২০০৮ - ৪:২৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রশীদ হলের কথা আসলেই মনে পড়ে সেখানকার বিচিত্র সব চোরের উৎপাত। তাই রশীদ হলজীবনের স্মৃতি এই চোরদের উপাখ্যান ছাড়া অসম্পূর্ণই রয়ে যাবে। আজকের লেখা সেই চোরদের কাহিনী নিয়েই।
----

চোর কত প্রকার ও কী কী
বুয়েটের সব হলের মতোই রশীদ হলে চোরদের প্রচন্ড উৎপাত। ছিঁচকে চোর, ভদ্র চোর, ঘাপটি মারা চোর, এমনকি ছাত্রবেশী চোর থেকে শুরু করে নানা রকমের চোরেরা আনাগোনা করে। ম্যানেজার চোরকে না হয় গনার বাইরেই ধরলাম।

হলবাসী ছেলেপেলেদের সম্বল সীমিত। টেবিলে কিছু পাঠ্যবই, ক্যালকুলেটর, আর হয়তো কম্পিউটার। আর সৌখিন জিনিষ বলতে আঁতেলীয় সম্বল বাহারী দামী ফ্রেমের চশমা। কাপড়চোপড়ে হলবাসীরা বঙ্গজীবী, তাই দুয়েকটা ব্যতিক্রম ছাড়া চুরি করার মতো কাপড়ও নেই।

ও হ্যাঁ, আরেকটা জিনিষ ব্যাপক জনপ্রিয় চোর মহলে, তা হলো ক্যালকুলেটর। ক্যাসিওর সাইন্টিফিক ক্যালকুলেটর হলো মিস্তিরি মহলে বাধ্যতামূলক -- সবার কাছে একটা থাকবেই। আমাদের সময়ে জাপানী ক্যালকুলেটরগুলো ছিলো মহার্ঘ ... ৯০০- ১২০০ টাকা দাম ওগুলোর। ক্যাসিওরই মালয়েশীয় সংস্করণগুলো ছিলো বেশ সস্তা, ৬০০-৭০০ টাকাতেই fx-570v টাইপের বেশ কার্যকর ক্যালকুলেটর পাওয়া যেতো। যাহোক, রুমে চুরি হলে অবধারিত ব্যাপার, সবার আগে যাবে এই ক্যালকুলেটর।

ভোরপার্টি
আমাদের রুমে চুরির গল্প আগে করেছি। আমরা রুমমেট তিনজন ছিলাম কুম্ভকর্ণের ভাগ্নে গোছের ... ঘুমালে নাক ডাকা ছাড়া তিনজনেরই সাড়া শব্দ মিলতোনা। এহেন কুম্ভকর্ণ পার্টিদের রুমে চুরি করার জন্য চোরেরা যা করতো, এরকম -- হলের রুমে রুমে ভোরবেলাতে দরজা টেনে দেখতো কেমন অবস্থা ঘরে, রুম খালি বা কেউ ঘুমাচ্ছে দেখলেই জলদি করে টেবিল থেকে জিনিষপত্র হাতিয়ে পগার পার। যে দিন আমাদের রুমে হানা দিলো এহেন ভোর-পার্টি, আমার গেলো ক্যালকুলেটর, আর বয়েলস্টেডের ইলেক্ট্রনিক্সের বইটা, রমণীমোহন রুমমেটের মানিব্যাগ /বই, আর শিল্পপতির গেলো সোনালী ফ্রেমের চশমা!!

ব্লেজার পরা চোর
এরকম চোরেরা অনেক সময়ে নানা ছদ্মবেশ ধরে আসতো। ছাত্রবেশে আসতো তো বটেই, চশমা লাগিয়ে আঁতেল ব্যক্তি সেজে হলের জনসমূদ্রে মিশে যেতে সময় লাগতোনা। তবে সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছিলো এক চোর, ভর বিকালে ব্লেজার লাগিয়ে বিশাল সুটেড বুটেড হয়ে চুরি করতে এসেছিলো আমাদের হলে। ক্যালকুলেটর হাতিয়ে বেরিয়েও এসেছিলো, কিন্তু ঘটনা চক্রে বাথরুম ফেরতা কারো সামনে বমাল পড়ে যাওয়াতে ধরা পড়ে হাতে নাতে।

আর তার উপরে, চোরের ভাগ্যটাও খারাপ। চুরি করবি তো কর, গোবেচারা পোলাপানের রুমেই কর!! তা না করে, হয়তোবা না জেনে শুনেই চোর গিয়ে হাজির হয়েছিলো মুকি ভাইয়ের রুমে। মুকি ভাইকে যাঁরা চেনেন, দ্বিতীয়বার আর বলা লাগেনা, যাঁরা চেনেননা তাঁদের জন্য বলি, ইনি হলেন পরবর্তীতে সনি হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত (পরে বিএনপি সরকারের কল্যাণে তা রদ হয়ে যাবজ্জ্বীবন প্রাপ্ত) আসামী - ছাত্রদলের ক্যাডার।

বেচারা চোর, ব্লেজার লাগিয়ে টাগিয়ে কিনা চুরি করতে গেছিলো মুকি ভাইয়ের রুমে!! তখন সেখানে না থাকলেও চোর ধরা পড়ার পরে মুকি ভাইয়ের আবির্ভাব ঘটলো। হলের গেস্ট রুমে বেটাকে বেঁধে ছেদে রাখা হয়েছে মুকি ভাইয়ের অপেক্ষায়। চোর মুকি ভাইকে না চিনলেও সবার মুখে শুনছে "মুকি ভাই আইলো" - আর তা শুনে চোরের মুখ শুকিয়ে চুন। যথারীতি মুকি ভাই ভয়ংকর চেহারা করে হাজির, আর গর্জনেই চোর প্রায় আধমরা। মুকি ভাই অবশ্য কিছুক্ষণ হাতের সুখ মিটিয়ে তার পর ক্লান্ত হয়ে খ্যামা দিলেন। হাজার হলেও বুয়েটের ক্যাডার, মার ধোর করার দৌড়ও সীমিত।

চোর এর জল্লাদ
চোর ধরতে পারলে এরকম করেই হলের গেস্ট রুমে প্রহার পর্ব চলতো। "আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না" -- একথা সিনেমাতে দেখে দেখে অভ্যস্ত লোকজনও তামাশা দেখতে হাজির থাকতো। ব্যাপারটা অমানবিক প্রচন্ড, কিন্তু হলের ভুখামাগা টিউশনী-জীবী ছেলেপেলের শখের কম্পিউটার বা অন্ধের যষ্টি মার্কা ক্যালকুলেটর নিয়ে হাঁটা দিলে সেসব চোরের জন্য মায়া খুব কমজনেরই থাকতো। আর বুয়েটের নিয়ম হলো, চোর দের হল থেকে নিয়ে পুলিশে না দিয়ে বুয়েটের সিকিউরিটি অফিসে পাঠানো ... সেখান থেকে চোরেরা আদৌ হাজতে যেতো কিনা কেউ দেখেনি কখনো, বরং ঘন্টা কয়েক বসিয়ে রেখে জামাই আদরে ছেড়ে দেয়া হতো।

তাই অমানবিক হোক যাই হোক, হলের চোরদের হাল্কা "জামাই আদর" হলেই করা হতো। মুকি ভাইয়ের মতো শক্ত মন সবার ছিলোনা, তাই চোর পেটানোর দায়িত্ব বাধা ছিলো হলের গার্ড নুরুন্নবী ভাইয়ের। বেঁটে খাটো মানুষটার মাথায় প্রচন্ড চকচকে টাক, আর মুখে রীতিমত মিলিটারি মার্কা গোঁফ। চোর পেটানোর বিবিধ কৌশল নখদর্পনে ... ওনার হাতের কাজ দেখতে সবাই জড়ো হতো। অবশ্য বেশি দূর বাড়ার আগেই বুয়েটের সিকিউরিটি অফিসের লোকজনে হাজির হতো। অনেক সময় স্থায়ী নিদর্শন হিসাবে কাঁচির প্রয়োগ ঘটতো ... ভয়ের কিছু নেই ... চোরের চুল বা ভুরুই কেবল কাটা পড়তো বেঘোরে।

চোর যখন প্রেমিক , চোর যখন ওস্তাদ

অনেক সময়ে হল থেকে সিকিউরিটি অফিসে অগস্ত্য যাত্রা করা চোরদের ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অনেকের নজরে আসতো পরবর্তীতে। ব্লেজার পরা সেই চোর মুকি ভাইয়ের মার খেয়ে সম্ভবত কয়েকদিন শয্যাগত ছিলো। তবে বেশি দিন লাগেনি, সপ্তাহ খানেক পরেই নিউমার্কেটে তাকে দেখা গেছে - রিপোর্ট অনুসারে এক তরুণীর বাহুলগ্ন অবস্থায় ডেটিং এর সময়ে। হয়তো হলের ক্যালকুলেটর বিক্রয়লব্ধ টাকাই উড়াচ্ছিলো সেখানে।

প্রেমিক বা ছিঁচকে চোর ছাড়াও ছিলো সংঘবদ্ধ চোর বাহিনী। সাইকেল চোর যেমন --- হলের ভিতর থেকে অজস্র সাইকেল চুরি গেছে। এসএসসি পাশের পরে কেনা আমার প্রথম সাইকেলটাকে বুয়েটে নিয়ে এসেছিলাম। শক্ত তালা দিয়ে সিঁড়ির ভেতরে রাখা ছিলো। কোরবানী ঈদের ছুটিতে এসেই দেখি ওটা লাপাত্তা। সবাই জানালো, আজিমপুরের সাইকেলের দোকানে গেলে এখনই ওটা ফেরত পাবো হাজার খানেক টাকায়, দোকান প্রেরিত চোরেরাই এই কাজ করে থাকে।

সংঘবদ্ধ চোরদের নিয়ে আরেক ঘটনা, অবশ্য রশীদ হলের না ঠিক ... আমাদের কম্পিউটার কৌশল বিভাগের ল্যাবের সামনে জুতা খুলে ঢোকার নিয়ম ছিলো। অবধারিত ভাবে সেখান থেকে জুতা চুরি যেতো। একদিন ক্লাসের এক ছেলে বেরিয়ে দেখে, তার চকচকে কেডসটা পায়ে দিয়ে একজন হাঁটা দিয়েছে। দৌড়ে ব্যাটাকে ধরার পরে হালকা দুএক ঘা দিতেই জানালো, সে আসল বড় চোর না ...তার ওস্তাদ নিচে অপেক্ষা করছে, তাকে পাঠিয়েছে এই কাজে। ছেলেপেলে চার তলা থেকে তাকিয়ে দেখে, আসলেই টাক্কু এক লোক অপেক্ষা করছে নিচে। দল বেঁধে না গিয়ে পা টিপে টিপে বিশাল এক বাহিনী গিয়ে আচমকা ঘিরে ধরে ওস্তাদকে গ্রেপ্তার করলো। অনেকেরই সে সপ্তাহে বা আগের মাসে স্যান্ডেল/জুতা চুরি গেছে, খালি পায়ে বাড়ি ফেরার অপমান সইতে হয়েছে। মার দেয়ার উৎসাহ প্রবল। তবে মারতে গিয়ে আর হাত উঠেনা বেশি। ওস্তাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হলো ... আমার এক বন্ধুর আবার ব্যবসাবুদ্ধি প্রবল, সে সোৎসাহে প্রশ্ন করলো, জুতা প্রতি কত টাকা লাভ হয়? যেনো, লাভ বেশি হলে সেও ব্যাপারটা ভেবে দেখবে!!

শেষে চোর-ওস্তাদ -- দুইজনকেই সেই ব্ল্যাকহোল সিকিউরিটি অফিসে পাঠানো হলো, পেছন পেছন আমার আরেক শোকাহত বন্ধু ছুটলো। বেচারার নাকি নতুন কেনা ৭০০ টাকার দামী লেদারের স্যান্ডেল (ঐ আমলে এটাই অনেক দাম ছিলো) গত সপ্তাহেই চুরি গেছে। পাবলিকের সামনে লজ্জা করছিলো, তাই সিকিউরিটি অফিসের বারান্দাতে ওস্তাদকে গুনে গুনে ৭টা লাথি দিয়ে মনের ঝাল মেটালো।

-------------

পাদটীকা

চোরদের উপরে হালকা মারধোর করাটা অমানবিক, কিন্তু একই চোর যখন মাসের পর মাস ভোর-পার্টি হয়ে হলে চুরি দারি করে বসে, গ্রাম - মফস্বল থেকে আসা টিউশনি- করে খাওয়া ছেলেদের সবচেয়ে দামী সম্বলটুকু চুরি করে নিয়ে নিউমার্কেটে ডেটিং করে, তখন তাদের উপরে ছাত্রদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভটা কেনো থাকে তা বুঝতে পারি। তবে এদের চেয়েও জঘন্য চোরের কথা শুনেছিলাম রশীদ হলেই ... কোনো এক ছাত্র এক দিনের জন্য হলের বাইরে গেলে তার রুমমেটই সেই ছাত্রের ক্যালকুলেটর আর বইপত্র চুরি করে বেচে দিয়েছিলো। পরে বমাল ধরা পড়া সেই চোরের কী শাস্তি হয়েছিলো, তা অবশ্য জানতে পারিনি।


মন্তব্য

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

মজা হইছে...।
জব্বর!!!

খেকশিয়াল এর ছবি

কাহিনী !

-----------------------------------------
রাজামশাই বলে উঠলেন, 'পক্ষীরাজ যদি হবে, তা হলে ন্যাজ নেই কেন?'

-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'

সুমন চৌধুরী এর ছবি

গুল্লি

আমাদের হলে (মীর মশাররফ হোসেন হল) ছিল লুঙ্গীচোর। রীতিমতো সংঘবদ্ধ চক্র। প্রথম ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনের (১৯৯৮) পরে বেশ কয়েক জন পলাতক ক্যাডারের রূম ভাঙ্গা হলে, পালের গোদার ঘর থেকে উদ্ধার হয় ১১টা লুঙ্গী, ১৮টা গামছা আর প্রায় পঁচিশটার মতো চটি(স্যান্ডেল না)।
সেই সময় একবার লুঙ্গীচুরির বিরুদ্ধে মিছিল হয়েছিল। শ্লোগান ছিল সমবেত কণ্ঠে গান
ফিরিয়ে দাও
আমারই লুঙ্গী তুমি ফিরিয়ে দাও
তবু এভাবে টেনে নিও না....

ধুসর গোধূলি এর ছবি
রাগিব এর ছবি

রশীদ হলেও লুঙ্গি চুরি যেতো, তবে তা করতো ছিঁচকে চোরেরা। একটু অভিজাত টাইপের চোরেরা বারান্দা থেকে লুঙ্গির বদলে অন্য জিনিষ যেমন সোয়েটার চুরি করতো। পাশের রুমের এক ছেলে সকালে দাঁত ব্রাশ করতে করতে দেখে, তার সোয়েটার নিয়ে গায়ে দিয়ে দিব্যি একজন চলে যাচ্ছে। দৌড়ে ধাওয়া করে ধরে পরে নুরুন্নবী ভাইয়ের জিম্মায় দেয়া হয়েছিলো [:)]
----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

গামছা নাহয় লাগতো... কিন্তু তাই বইলা ধর্ষরন করতেই এত লুঙ্গি? গানটা ভালো হইছে। ______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রায়হান আবীর এর ছবি

মজা পেলাম...আমাদের এখানে অবশ্য চোরের উপদ্রব একদম নেই...

---------------------------------
জ্ঞানীরা ভাবলেন খুব নাস্তানাবুদ করে ছাড়া গেছে...আআআহ...কি আরাম। বিশাল মাঠের একটি তৃণের সাথে লড়াই করে জিতে গেলেন।

ছোট্ট তৃণের জন্য অপরিসীম ঘৃণা।

তীরন্দাজ এর ছবি

মজার গল্প! তবে চোরকে পেটানোর ঘোর বিরোধী আমি। জীবনে কখনো করিনি, করতে পারবোও না।

অনেক বড়বড় চোর রয়েছে, যাদেরকে দেখে সালাম দিই দরকারে আমরা অনেকেই।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

রাগিব এর ছবি

আমিও ঘোরতর বিরোধী। তবে এটাও ঠিক যে, ইলেট্রনিক্স পরীক্ষার ১ দিন আগে যখন ক্যালকুলেটর আর পরীক্ষার জন্য পাঠ্য বয়েলস্টেডের বইটা চুরি গেছিলো, তখন সেই চোরকে পেলে হয়তো অস্থায়ীভাবে বিরোধীতা-টিতা বাদ দিতাম! অনেক সময় চরম বিপদে পড়ে চোখে সর্ষেফুল দেখার ক্ষণে তাত্ত্বিকভাবে আগে থেকে ভাবা অনেক কিছুই ঠিক রাখা যায়না। মন খারাপ

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

তীরন্দাজ এর ছবি

এটাও ঠিক বলেছেন রাগিব। নিজে তেমন অবস্থায় পড়িনি কখনো।

তবে আমার ছোটভাই চোর পিটিয়েছিল একবার, আমি আর মা মিলে দারুনভাবেই বাঁধা দিয়েছিলাম।
**********************************
কৌনিক দুরত্ব মাপে পৌরাণিক ঘোড়া!

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

চোরকে সবসময় মাইরের উপরে রাখা উচিত। নাইলে অলস হয়ে যাবে, ফিটনেস থাকবে না। চোখ টিপি

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

মুশফিকা মুমু এর ছবি

হাহাহাহা গড়াগড়ি দিয়া হাসি খুব মজা পেলাম। হলে থাকার খুব লোভ হচ্ছে।
-------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

মুশফিকা মুমু এর ছবি

জি না। হলে থাকার অভিজ্ঞতার জন্য বললাম, ছেলেদের হলে না।
-------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

এসব কি, হ্যাঁ??? গোধু খালি মাইরপিটের সুযোগ খোঁজে!

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

কনফুসিয়াস এর ছবি

হা হা হা!
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

যে দিন আমাদের রুমে হানা দিলো এহেন ভোর-পার্টি, আমার গেলো ক্যালকুলেটর, আর বয়েলস্টেডের ইলেক্ট্রনিক্সের বইটা

এই বয়েলস্টেডের ইলেকট্রনিক্স বইয়ের উপরে আমার একটা ক্ষোভ আছে ... ফার্স্ট ইয়ারে পড়ার সময় বইটা লাইব্রেরি থেকে পাইছিলাম ... চামড়া দিয়া বাধাই করা অরিজিনাল বই, চেহারা দেখলেই ভালোবাস্তে ইচ্ছা করে ...

তো ফার্স্ট সেমিস্টারের পরে বন্ধে কক্সবাজার গেলাম, গিয়া সুন্দরীদের দেখার তালে চশমা নিয়াই পানিতে নামলাম, অবধারিতভাবে সেটা সমুদ্রে বিসর্জন দিয়া আসতে হইলো ...

ফেরত আইসা নতুন চশমা বানাইলাম, পাঁচশো টাকা গেল [চশমার দাম তখনো ছিল পাচশো এখনো পাচশো, এই একটা জিনিসের দাম বাড়ে নাই] ... সেই চশমা বানানোর এক সপ্তা পরের ঘটনা ...

ডেস্কের উপরে চশমা ছিল ... আমি কানা মানুষ গোসল করে বের হয়ে ডেস্কের সামনের শেলফে হাতড়ায়ে চশমা খুঁজতেছি, আচমকা বলা নাই কওয়া নাই বয়েলস্টেডের বইটা শেলফ থেকে ধুড়ুম করে পড়ে গেল ... টেবিলে থাকা চশমার উপরে ... সেই অফসেট পেপারের চামড়া দিয়া বাধাই বইয়ের ধাক্কায় চশমা পুরা গুড়া ...

এক মাসের মাঝে দুইটা চশমা বানানোর যন্ত্রণায় আমার বয়েলস্টেডের উপরেই তখন থেকে অভক্তি চলে আসছে মন খারাপ
................................................................................
objects in the rear view mirror may appear closer than they are ...

রাগিব এর ছবি

আমরা এতো সুন্দর "চামড়া-বাঁধানো" বই টই চোখেও দেখি নাই। নীলক্ষেতে-পার্টি ছিলাম, প্রথমে বয়েলস্টেডের ইন্ডিয়ান প্রিন্ট, পরে নীলক্ষেত এডিশনটাই পড়েছি।

----------------
গণক মিস্তিরি
ভুট্টা ক্ষেত, আম্রিকা
http://www.ragibhasan.com

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

সবজান্তা এর ছবি

একটা কাহিনী শুনেছিলাম, সত্য মিথ্যা জানি না।

আহসানুল্লাহ হলে একবার এক চোর চুরি করতে আসলো, এবং ধরাও পড়লো। জেরার এক পর্যায়ে সে জানালো, সে বুয়েটের হলে চুরি করতে আসে কারন এখানে ধরা পড়লে কেউ বেশি মারে না, আর ছেড়েও দেয়। এ কথা শুনে নেতা জসীম ভাই ( খুব সম্ভবত ) বেদম পিটিয়েছিলেন।

নীতিগত ভাবে আমি চোর পেটানোর একদম পক্ষপাতী না, কিন্তু মাঝে মাঝে ভাবি, যদি চোর আমার দামী মোবাইল সেটটা চুরি করে ধরা পরে, আর আমি তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেই, পুলিশ তো টাকা খেয়ে দুইদিন পর ছেড়েই দিবে আর ব্যাটা অন্য কারো মোবাইল চুরি করায় মনোযোগ দিবে। এ জায়গায়টায় আসলে আমার লজিক একটু ঝাপসা হয়ে যায়।


অলমিতি বিস্তারেণ

কালো কাক এর ছবি

হলে থাকতে মোবাইল আর ক্যাল্কুলেটর যে কত অসম্ভব জায়গায় লুকিয়ে বাথ্রুমে যেতাম তার ইয়ত্তা নাই। বালিশের নিচ থেকে, ড্রয়ার থেকে, শেলফে বইএর পিছন থেকে এমনকি ঘুমন্ত অবস্থায় পেটের উপর থেকে মোবাইল চুরি যাওয়ার কাহিনী শুনে নিজের মোবাইলটা বালিশের কভারের ভিতর ঢুকিয়ে রেখে যেতাম। অই জ়ায়গা থেকে কারো কিছু চুরি গিয়েছে এমন ঘটনা শুনিনি। খাইছে
মুখ চেপে ঘোৎঘোৎ করে হাসলাম কিছুক্ষণ আপনার চোরকাহিনী পড়ে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।