ইয়োগা: সুদেহী মনের খোঁজে ।৩৪। আসন: বৃক্ষাসন।

রণদীপম বসু এর ছবি
লিখেছেন রণদীপম বসু (তারিখ: শুক্র, ১৯/০৬/২০০৯ - ১২:২৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

# বৃক্ষাসন(Vrikshasana):

পদ্ধতি:

auto

প্রথমে শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়ান। এখন হাত দু’টো নমস্কারের ভঙ্গিতে বুকের কাছে রাখুন কিংবা নমস্কারের ভঙ্গিমায় রেখে মাথার উপরে তুলুন যেন হাত কানের সঙ্গে লেগে থাকে। এবার ডান পা উঠিয়ে বাঁ পায়ের উরুতে রাখুন। পায়ের পাতার নিচের দিকটা উরুর সঙ্গে লেগে থাকবে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ২০সেঃ থেকে ৩০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন।
এরপর ডান পা নামিয়ে একইভাবে বাঁ পা উঠিয়ে আসনটি আবার করুন। এভাবে পা বদল করে করে আসনটি ছ’বার থেকে আটবার অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজনমত শবাসনে বিশ্রাম নিন।

auto

উপকারিতা:
এ আসন অভ্যাসে দেহের ভারসাম্য ঠিক থাকে। পায়ের ধমনী, শিরা, পেশী ও স্নায়ু সতেজ ও সক্রিয় থাকে এবং পায়ের, কোমরের ও মেরুদণ্ডের শক্তি বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও উরুর সংযোগস্থলের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। বাতরোগ হতে মুক্ত রাখে এবং পায়ের গঠন দৃঢ় ও সুন্দর হয়।

@ অধো মুখ বৃক্ষাসন (Adho Mukha Vrikshasana)

পদ্ধতি:
প্রথমে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এরপর উবু হয়ে দু’হাতের তালু মাটিতে স্থাপন করুন। এখন দু’হাতের উপর ধীরে ধীরে শরীরের ভারসাম্য স্থাপন করে পা দু’টো মাটি থেকে শূন্যে তুলতে থাকুন এবং মাটির সাথে উল্বম্বভাবে শরীরটাকে সোজা উপরে খাড়া করে রাখুন। এ অবস্থায় শরীর বিপরীতমুখী অবস্থানে থাকবে অর্থাৎ মাথা নিচের দিকে এবং পা দুটো সোজা শূন্যে উপরের দিকে থাকবে। মাথাটাকে ঘাড় থেকে বাঁকিয়ে সামনের দিকে দেখার চেষ্টা করুন। শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে ১০সেঃ থেকে ২০সেঃ এ অবস্থায় থাকুন।
অতঃপর ধীরে ধীরে পা দুটো ভাঁজ করুন এবং কোমর থেকে বাঁকিয়ে সাবধানে পা দুটো ফের মাটিতে নামিয়ে আনুন। প্রয়োজনমত শবাসনে বিশ্রাম নিন।

auto

উপকারিতা:
শীর্ষাসনের সব উপকার এ আসনে পাওয়া যায় এবং হাতের গঠন দৃঢ়, সুন্দর ও সতেজ হয়ে ওঠে। এ আসন অবস্থায় হৃৎপিণ্ড মাথার উপরে থাকে এবং শিরা, উপশিরা, ধমনী সবই বিপরীতমুখী হয় বলে খুব সহজে হৃৎপিণ্ড মস্তিষ্কে প্রচুর রক্ত সঞ্চালিত করতে পারে। মস্তিষ্ক ও গলদেশ রক্তে প্লাবিত হয়ে যায়। ফলে মাথায় ও গলদেশে অবস্থিত সমস্ত গ্রন্থি ও স্নায়ুজাল রক্ত থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান দ্রুত সংগ্রহ করে সুস্থ ও সক্রিয় থাকতে পারে। মাথার সবগুলো স্নায়ুজাল রক্তে প্লাবিত হয় বলে চোখ, কান, নাক ও দাঁতে সহজে কোন রোগ আক্রমণ করতে পারে না। লালাগ্রন্থি বা স্যালভারী গ্রন্থির নিঃসরণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় বলে খাদ্যবস্তু সহজে হজম হয়। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটফাঁপা ইত্যাদি রোগ হতে পারে না। থাইরয়েড গ্রন্থির কর্মমতা বৃদ্ধি পায়, ফলে দেহের সমস্ত গ্রন্থি ও স্নায়ুজাল সুস্থ ও সক্রিয় থাকে। কোনদিন টনসিলের সমস্যা হয় না। আসন অবস্থায় হৃৎপিণ্ড কিছুক্ষণ মাধ্যাকর্ষণের বিপরীত অবস্থানে থাকে এবং মাধ্যাকর্ষণ থেকে অব্যাহতি পায়, ফলে তার কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। পিনিয়াল গ্রন্থি ও পিটুইটারি গ্রন্থি সুস্থ ও সক্রিয় থাকে, ফলে মনের শক্তি, স্মৃতিশক্তি ও ইচ্ছাশক্তি বৃদ্ধি পায়। দৃষ্টিশক্তি হ্রাস, কর্মবিমুখতা, মাথাধরা, লিকুরিয়া, রক্তাল্পতা, অর্শ, একশিরা, হাঁপানি প্রভৃতি রোগ হতে পারে না। কোন স্ত্রীরোগ সহজে আক্রান্ত করতে পারে না। আসনটি নিয়মিত অভ্যাস রাখলে স্থানচ্যুত জরায়ু ঠিক জায়গায় ফিরে আসে।

auto

নিষেধ:
যাদের কোন হৃদরোগ বা রক্তচাপ বৃদ্ধিজনীত রোগ আছে, তাদের রোগ নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত এ আসন করা ঠিক নয়। অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের এ আসন করা উচিৎ নয়। প্রাতঃক্রিয়াদি সম্পন্ন না করে, স্নান বা প্রাণায়াম করার ঠিক পরে অথবা কোন শ্রমসাধ্য ব্যায়ামের পর বিশ্রাম না নিয়ে এ আসন করা কখনও উচিৎ হবে না।
[Images: from internet]

(চলবে...)

পর্ব: [৩৩][**][৩৫]


মন্তব্য

দ্রোহী এর ছবি

প্রথম চারটা ছবিতে উত্তম জাঝা এবং পঞ্চম ছবিতে দিক্কার।

রণদীপম বসু এর ছবি

আহা ! মানুষ নিজের ছবিরেও এমন দিক্কার দেয়... !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

এনকিদু এর ছবি

বৃক্ষ তোমার নাম কী ? ফলে পরিচয় ।

চতুর্থ ছবিটা বৃক্ষ নয়, কারন তাতে ফল নাই ।


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

রণদীপম বসু এর ছবি

হা ভোলানাথ ! মানুষ আইজকাইল চারা রুইবার আগেই ফল চায় !! তাগোর বালামুসিবত দুর কইরা দাও মাবুদ !!!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

তানবীরা এর ছবি

রনদার ভীমরতি হইছে। বেগানা মাইয়া লুকের বেপর্দা ছবি সারাক্ষন নাড়াচাড়া করে। রনদারে তুমি পানা দাও ইয়া এলাহী।
---------------------------------------------------------
রাত্রে যদি সূর্যশোকে ঝরে অশ্রুধারা
সূর্য নাহি ফেরে শুধু ব্যর্থ হয় তারা

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

রণদীপম বসু এর ছবি

ক্যান, আপনেগো জন্যে বেপর্দা বেটাপোলার ছবিও তো দিতেছি ! এরুম হিংসা করেন ক্যান !!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মুশফিকা মুমু এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

মন্তব্যে উত্তম জাঝা!

ধুসর গোধূলি এর ছবি
রণদীপম বসু এর ছবি

কার শ্যালিকা হয় খোঁজ নেন.....

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

মুশফিকা মুমু এর ছবি

শেষের দুইটা ছারা অন্য গুলি পারব খাইছে

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

রণদীপম বসু এর ছবি

ছবি না দেইখা বিশ্বাস করি না...

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।