ছোট্ট গোল রুটি - ০৯

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি
লিখেছেন সংসারে এক সন্ন্যাসী (তারিখ: বিষ্যুদ, ১০/০৪/২০০৮ - ১২:২৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

খুদে-গল্পাতঙ্কে কেউ ভুগলেও আমার কিছু করার নেই হাসি । সবে ঝাঁপি খুলে বসেছি। সময়-সুযোগ বুঝে ঢালতে থাকবো একের পর এক।

লক্ষ্য করে দেখেছি, মন্তব্যে অপছন্দের কথা সচরাচর কেউ লিখতে চায় না। সকলের কাছে অনুরোধ/আহ্বান/আর্তি জানাতে চাই - আপনাদের প্রতিক্রিয়ার কথা খোলাখুলি লিখুন। সমালোচনা গ্রহণ করার ক্ষমতা ও ইচ্ছে - দুইই আছে আমার।

(খুদে রসগল্পের এই সিরিজে প্রকাশিতব্য অধিকাংশ গল্পই সোভিয়েত যুগের। রুশ ছাড়াও ইউক্রেনীয়, বেলারুশীয়, জর্জিয়ান বা অন্য সোভিয়েত প্রজাতন্ত্রগুলোর লেখকদের লেখা গল্পের অনুবাদও ছাড়া হবে এই সিরিজে। গল্পগুলো অবশ্যই মজার কৌতুকের মতো হাসি-উদ্রেককারী নয়, তবে পাঠকদের মনের ভেতরে একটা মুচকি হাসি যদি অন্তত জেগে ওঠে, তাতেই আমার তৃপ্তি।

অধিকাংশ গল্পই রুশ ভাষা থেকে অনূদিত। কয়েকটি ইউক্রেনীয় থেকে।

আজকের গল্পটি এক জর্জিয়ান লেখকের।)

_____________

ভালোবাসা নিয়ে আরও একটি গল্প

ভ. কাপিয়ানিদজে

- আমি তোমাকে ভালোবাসি, স্বেতা, - বললো মিশকিন।
- না! - স্বেতলানা বললো অনমনীয় স্বরে। - কেউ যখন ভালোবাসে, সে তখন ঠিক যেন উড়তে থাকে, ভেসে বেড়ায় বাতাসে।

মিশকিন দু'বাহু ঝাপটাতে শুরু করলো দু'পাশে। ছাদের ঠিক নিচে ভেসে রইলো সে।

- আমি তোমাকে ভালোবাসি, স্বেতা, - আবার বললো মিশকিন।
- এটা সত্যিকারের ভালোবাসা নয়, - জেদী সুরে ঠোঁট ফুলিয়ে বললো স্বেতলানা। - কেউ যখন ভালোবাসে, সে তখন ঠিক যেন গলতে থাকে। বরফের মতো।

মিশকিন নেমে এলো স্বেতলানার পায়ের কাছে। সংকুচিত হতে শুরু করলো তার শরীর।

- আমি তোমাকে ভালোবাসি, স্বেতা, - আকারে ক্ষুদ্রতর হতে হতে ক্ষীণস্বরে উচ্চারণ করলো সে।
- এটা কোনও প্রমাণ নয়! - দু'পায়ে মেঝেতে আঘাত করতে করতে বললো স্বেতলানা। - কেউ যখন ভালোবাসে, সে তখন ঠিক যেন জ্বলতে থাকে আগুনে।

দীর্ঘশ্বাস ফেললো মিশকিন। শরীরের চারপাশে কুণ্ডলি পাকিয়ে উঠলো ধোঁয়া। সেই ধোঁয়ার ভেতর থেকে উঁকি দিতে লাগলো আগুনের লকলকে জিভ।

- এভাবে কেউ জ্বলে! - স্পষ্ট অতৃপ্তির স্বরে স্বেতলানা বললো। - এই আগুনে তো স্যুপও গরম হবে না।
- আমি তোমাকে ভালোবাসি, স্বেতা, - কোনওমতে বলতে পারলো মিশকিন। প্রেমপূর্ণ হৃদয়ের তীব্র দহনে ভস্ম হয়ে গেল তার শরীর।

- যত্তোসব ঝামেলা এই পুরুষদের নিয়ে! - ময়লা ফেলার বালতিতে ছাই ঝেড়ে ফেলতে ফেলতে বিরক্তির সুরে বললো স্বেতলানা।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ইসস...।ছাই হয়ে গেল...।মেয়েজাতি বড়ই নিষ্ঠুর।
-নিরিবিলি

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍মিশকিনের জন্য আমারও কষ্ট হয়েছে। বেচারা!
তবে সমগ্র নারীজাতিকে ঢালাওভাবে নিষ্ঠুর বলাটা, আমার মনে হয়, যুক্তিযুক্ত নয়।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

মিশকিনের জন্য দুঃখ হয়। তবে দুঃখটা মিলিয়েও যায়। একদিন ওই ছাইয়ের আদরেই হয়তো বেড়ে ওঠবে কোনো গোলাপকুঁড়ি। স্বেতলানা হয়তো সৌন্দর্যের ভিত গড়তে ছাইয়ের কৃতিত্ব ভাববেই না, হয়তো ভাববে। হয়তো একটু কষ্ট কষ্ট ভাবও হবে তার। হয়তোবা তাও হবে না।

সময়ের ইতিহাসে কোনোকিছুই আবর্জনা নয়, হয়তো কোনোকিছুই প্রয়োজনীয়ও নয়।

(নিন্দুক টাইপ সমালোচকের যুদ্ধংদেহী ভঙ্গি নিয়ে পড়া শুরু করলেও এ গল্পে সে সুযোগ পেলাম না। নেক্সট গল্পে টেরাই দিবো। হাসি )

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

"নিন্দুক টাইপ সমালোচকের যুদ্ধংদেহী ভঙ্গি"‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍ ত্যাগ না করলেই খুশি হবো। অন্তত আমার লেখাগুলোর ক্ষেত্রে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

আমিও কোমড় বেঁধেই পড়া শুরু করেছিলাম... কিন্তু শেষতক বলার মত একটাই কথা রইলো-- "হক কথা!"

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

ঠিক কী প্রসঙ্গে "হক কথা" ‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍বললেন, বুজতার্লাম্না মন খারাপ

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

সেই রকম লাগলো।
শেষটা ভেবেছিলাম অন্য কিছু হতে যাচ্ছে ... যা হোক হলো না। তাও অনেক অনেক ভালো লাগলো।

___________________________
বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

শেষটা ভেবেছিলাম অন্য কিছু হতে যাচ্ছে ... যা হোক হলো না

দোষ অনুবাদকের নয়, লেখকের হো হো হো
‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- একটু "বদনাম" করি।

পোলাটার দুইহাত পাশে ঝাপটাইয়া ছাদের কাছাকাছি উঠাইয়া দিলেন, কিছু কই নাই। হেরপর তারে মাটিতে আছাড় খাওয়াইয়া 'তরল' বানাইয়া দিলেন, কিছু কই নাই। তরল থাইকা টার শরীরের চাইর দিকে আগুনের কুন্ডলী পাকাইয়া দিলেন এইবারও কিছু কই নাই। মাগার যখন ছাই বানাইয়া মাইয়াটার হাতে ফেলানো শুরু করলেন, তখনতো আর মুখ বন্ধ কইরা রাখবার পারলাম না।

ভালোবাসার লাইগা এতো কিছু যে করতে পারে, উড়া থাইকা সাধারণ মানুষ, সেখান থাইকা পানি, পানি থাইকা আবার মানুষ হইয়া আগুন, তাইলে সে আগুন থাইকা সাধারণ মানুষ হইতে পারলো না ক্যান? হালায় কি নিজেরে ফিনিক্স মনে করছে নাকি যে পুইড়া গেলেও ফিচকী দিয়া উঠবো?

অবশ্য দোষটা আপনের না। হালা কাপিয়ানিদজেরে পাইয়া লই। লানারে পাইলেও হইবো। এই দুইজনের গোঁপন আঁতাত আছে ঘটনাটারে আপনের হাতে এইরম পুংখানুপুংখ লেখানোর লাইগা!
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

বিপ্লব রহমান এর ছবি

গল্পটি বরাবরের মতোই জাঝা। বদনাম করতে পারলাম না বলে দুঃখিত।

একেবারে শেষাংশে এসে আমাদের ধুসরের জন্য খারাপ লাগলো। আহা, বেচারা শেষে কী না ভালবাসার জন্য গোধূলি থেকে ধুসর ছাইয়ে পরিনত হলো! মন খারাপ

খুব মন খারাপ নিয়ে গল্পটি আবার পড়তে গিয়ে দেখি, আরে না, ওই আহাম্মকের নাম মিশকিন, ধুসর নয়। দেঁতো হাসি


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍আপনারা সবাই ধুগোর পিছু লেগেছেন কেন, বলুন তো? হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

@ ধুসর গোধূলি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍হালা কাপিয়ানিদজেরে পাইয়া লই। লানারে পাইলেও হইবো।

লানারে পাওনের ইচ্ছার কার্যকারণ বুজলাম, মাগার কাপিয়ানিদজেরে লইয়া কী করবেন, তা-ই ভাবতেছি চিন্তিত

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- দর্শক ছাড়া ধর্ষক হওয়ার মজা কোথায় সন্নাসী বাবু! চোখ টিপি
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রাণ খুলে হাসলাম। ভীষণ ভাল।
বেচারা! ---------------------

ক্যামেলিয়া আলম

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍আমার ধারণা ছিলো, কোনও পাঠিকার মতামত আমি এই গল্পে পাবো না। ভেবেছিলাম, অনেক মেয়েই ধরে নেবে, এই গল্পে সব মেয়েকে চিত্রিত করা হয়েছে নিষ্ঠুর হিসেবে (যদিও এমন যুক্তিহীন সরলীকরণ কোনও পাঠিকার মাথায় আসবে না, তা বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয়)।

আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সন্ন্যাসীর সাধনা এইবার বোধহয় ফেইল মারলো
ক্যামেলিয়ারে চিনেন না
আপনার একটু প্রসংশা করে বিজ্ঞাপন করল মাত্র
পরে এমন প্যাদানি দেবে যে সন্ন্যাসতো যাবে যাবেই সংসারও যাবে

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍ডরাইছি ইয়ে, মানে...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আপনাদের প্রতিক্রিয়ার কথা খোলাখুলি লিখুন। সমালোচনা গ্রহণ করার ক্ষমতা ও ইচ্ছে - দুইই আছে আমার।

আমি সচল হবার পর থেকে বোধহয় কোনো গোল রুটি বাদ পড়েনি পড়তে
এনজয় করছিলাম গল্প হিসাবে। এবং মন্তব্য করছিলাম কাহিনী নিয়ে। তার গঠন এবং অনুবাদ নিয়ে কোনো কথা বলিনি
কিন্তু প্রথম থেকেই একটা বিষয় খেয়াল করছিলাম। তা হলো সংলাপ এবং সংলাপ পরিচিতি (সংলাপ দাতার অবস্থা বর্ণনা) কিন্তু বাংলা ভাষার মতো থাকছে না

এটা আমি প্রায় সবগুলো রুশ সাহিত্যে দেখেছি। প্রথমে সংলাপ বলে তার পর সংলাপদাতার অবস্থা বর্ণনা করে

যেমন

- আমি তোমাকে ভালোবাসি, স্বেতা, - আবার বললো মিশকিন।
- এটা সত্যিকারের ভালোবাসা নয়, - জেদী সুরে ঠোঁট ফুলিয়ে বললো স্বেতলানা।
- আমি তোমাকে ভালোবাসি, স্বেতা, - আকারে ক্ষুদ্রতর হতে হতে ক্ষীণস্বরে উচ্চারণ করলো সে।
- এটা কোনও প্রমাণ নয়! - দু'পায়ে মেঝেতে আঘাত করতে করতে বললো স্বেতলানা।
....

কিন্তু বাংলা ভাষায় আমরা আগে বর্ণনা এবং পরে সংলাপে অভ্যস্থ। যেমন কোনো বাঙালির হাতে এই গল্প লেখা হলে হয়তো এরকম হতো:

মিশকিন আবার বললো- আমি তোমাকে ভালোবাসি, স্বেতা
স্বেতলানা জেদী সুরে ঠোঁট ফোলালো- এটা সত্যিকারের ভালোবাসা নয়

০২

আমার মনে হয় বাক্যের গঠনটাকে বাঙালি করা দরকার। তাহলে অনেক বেশি কাছাকাছি মনে হবে গল্পগুলো

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍তার গঠন এবং অনুবাদ নিয়ে কোনো কথা বলিনি

কিন্তু এটাই আমি চাই এবং ভবিষ্যতেও চাইবো।

সংলাপ এবং সংলাপ পরিচিতি (সংলাপ দাতার অবস্থা বর্ণনা) কিন্তু বাংলা ভাষার মতো থাকছে না

একমত। কিন্তু অনুবাদ করতে গেলে যে-সমস্যাটি সমাধানাতীত বলে মনে হয়, তা হলো: মূল লেখার গঠনশৈলীর প্রতি কতোটা বিশ্বস্ত থাকা প্রয়োজন?

সম্পূর্ণ বাঙালি ঘরানায় অনুবাদ করাটা, বোধ হয়, অনুবাদকের অধিকার বহির্ভূত এবং সেই অনুবাদকে ভাবানুবাদ বলাটাই উচিত হবে বলে মনে হয়।

আপনার প্রতিমন্তব্য আশা করছি।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সম্পূর্ণ বাঙালি ঘরানায় অনুবাদ করাটা, বোধ হয়, অনুবাদকের অধিকার বহির্ভূত এবং সেই অনুবাদকে ভাবানুবাদ বলাটাই উচিত হবে বলে মনে হয়।

ভাবানুবাদ বোধহয় অন্য জিনিস
রবীন্দ্রনাথের এসো নিপবনে ছায়াবীথি তলে... (শেক্সপিয়রের আন্ডার দ্য গ্রিন উড ট্রি)
কুরোসাওয়ার ফিল্ম থর্ন অব ব্লাড (ম্যাকবেথ)
কিংবা আলী জাকেরের দর্পণ (হেমলেট থেকে)
এগুলোকেই আপাতত মনে পড়ছে ভাবানুবাদ বলে

যেখানে মূল ভাবটাকে/স্টরিকে ঠিক রেখে পুরো পটভূমি বদলে দেয়া হয়। অথবা দেশীয় পটভূমিতে বিদেশি গল্পকে প্রবাহিত করা হয়
......................
০১
আহমদ ছফার ফাউস্ট এর কথা মনে আছে?
গ্যাটেকে বাংলায় অনুবাদ করতে গিয়ে তিনি বেছে নিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথের ভাষা শৈলী
০২
নজরুলে করা ওমর খৈয়ামের রু্বাইয়াতের অনুবাদগুলোর পুরোটাই বিদেশি। পুরো্টাই খৈয়ামের কিন্তু ভাষাটা নজরুলের...
০৩
সৈয়দ আলী আহসানের ইডিপাস; পুরোটাই সফোক্লিসের কিন্তু ভাষাটা তার। শুধু একটা সংলাপের অনুবাদ বদলে দিলেন তিনি
(ইডিপাস যখন জানতে পারলো তার স্ত্রী জোকাস্টা তার নিজেরও মা) জোকাস্টা মাই ওয়াইফ

আলী আহসান সেটাকে জোকাস্টা আমার বৌ না করে করলেন জোকাস্টা আমার জোকাস্টা

এই মূহূর্তে কোনো উপন্যাসের নাম মনে পড়ছে না। কিন্তু আমি এরকম পড়েছি বেশ কয়েকটা (অনেকেই পড়েছেন)

০২

অনুবাদ তা যতটুকুই হোক না কেন? তাতে কি মূল লেখকের লেখা শৈলি ধরে রাখা সম্ভব?
আমার তো মনে হয় সম্ভব না
এটা শুধু ভাষা দক্ষতার জন্য না বরং ভাষা ব্যবধানের কারণেই সম্ভব না
একেকটা ভাষার গঠন তো একেবারেই আলাদা
.......
আমরা কিন্তু আদৌ জানি না ভাষা ব্যবহারে টলস্টয়ের মুনশিয়ানা কী ছিল। দস্তয়ভস্কির গদ্যের ধরন কীরকম ছিল

সবচে বড়ো বিষয় হলো বেশ কয়েকজন রাশান আমাকে বলেছে কোনো বিদেশির পুশকিন পড়াই উচিত না। কারণ পুশকিন নাকি এতো বেশি রাশান। তাকে অনুবাধে ধরা প্রায় অসম্ভব

একবার এক জাপানি আমাকে ধমক দিযেছিল যখন আমি বলেছিলাম যে আমি কিছু কিছু হাইকু পড়েছি
_ সে সোজা বলে বসেছিল যে যার জন্ম জাপানে হয়নি তার হাইকু পড়ার কোনো অধিকাই নেই

এই সবগুলোই হলো ভাষা থেকে ভাষা এবং সংস্কতি থেকে সংস্কৃতির দূরত্বের কারণে। তিন চার জেনারেশন অনুবাদের পরে (বেশিরভাগই কেরানিদের হাতে অনুবাদ) যখন বাংলা ভাষায় রাশান কিংবা ল্যাটিন সাহিত্য এসে পৌঁছায় আমার কিন্তু টলস্টয় কিংবা মার্কেজকে বড়ো লেখক বলতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা হয় না
(অথচ আমি অনুমানও করতে পারি না তার কীভাবে বাক্য রচনা করতেন)

তাহলে?

অনুবাদে যেখানে ভাষা রক্ষা করা কঠিন সেখানে হায়াত মামুদদের মতো কেরানি অনুবাদে ভাষার ফর্মেট নিয়ে টানাটানি করা উচিত নাকি আহমদ ছফার মতো খুঁজে বের করা উচিত- বাংলায় গ্যাটেকে ধারণ করতে পারে একমাত্র রবীন্দ্রনাথের ভাষাশৈলী?

আমি আহমদ ছফা এবং সৈয়দ আলী আহসানের স্টাইলের পক্ষে

......

বিভিন্ন কেরানি এবং অধ্যাপক (অসাহিত্যিক) দের করা বাংলা কবিতার অনুবাদ দেখেছি। দেখে আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে এদের অনুবাদে যদি আমি জীবনান্দকে চিনতাম তাহলে জীবনেও তাকে আমি কবি বলতাম না

একটা অনুবাদের কথা মনে পড়ছে। জীবনানন্দের আট বছর আগের একদিন কবিতা
এই কবিতার ৮টা অনুবাদ আমি পড়েছি শুধু লাশকাটা ঘর শব্দটাকে কে কী বলেছে তা দেখার জন্য
সবাই লিখেছে পোস্টমর্টেম রুম
শুধু হুমায়ুন আজাদ করেছেন ডিসেকটিং রুম

আমার মনে হয়েছে একমাত্র হুমায়ুন আজাদাই থাকতে পেরেছেন মূলানূগ (কারণ তিনি ভাষার কেরানি ছিলেন না)

আল মাহমুদরে সোনালি কাবিন বইয়ের

বৃষ্টির দোহাই বিবি তিল বর্ণ ধানের দোহাই
দোহাই মাছ মাংস দুগ্ধবতী হালাল পশুর

এই হালাল পশুকে কেরানিরা করেছে - সেক অব হোলি কাউ

হোলি কাউ কিন্তু ইহুদিদের প্রতীক!

তো?

এসব ক্ষেত্রে আমার মনে হয় মূলকে যেহেতু রাখা সম্ভব না সেহেতু তাকে যে ভাষায় অনুবাদ করা হতে তার ছাছে ঢেলে দেয়াই উচিত

......
এই কেরানিদের করা রুশ সাহিত্য পড়ে দীর্ঘদিন আমার ধারণা ছিল সামোভার এক ধরনের খাবার জিনিস
কিন্তু সামোভারকে অন্যভাবে বাংলায় অনুবাদ করা যেত

.......

বর্তমানে সৈয়দ হক কিছু অনুবাদ করছেন। দুর্ধর্ষ তার অনুবাদগুলো

........

আপনি স্যার একটু দেখেন না। গল্পগুলোকে ঠিক রেখে বাংলা গঠনশৈলীতে নিয়ে আসা যায় কি না?

........

অনেক এলোমেলো ভাবে বললাম। এখান থেকে আমার মূল বক্তব্য খুঁজে বের করা বোধহয় আমার জন্যই কঠিন হবে
পারলে বের করে নেবেন

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍বিশদ মতামতের জন্য সবিশেষ ধন্যবাদ।

ভাবানুবাদ বিষয়ে যা লিখেছেন, তা পড়ে আমি বুঝলাম, ভাবানুবাদ আর রূপান্তর (ADAPTATION) একই বস্তু। আমার আসলেই ধোঁয়াটে ধারণা ছিলো এ-ব্যাপারে।

রুশ ভাষায় একটা শব্দবন্ধ আছে, যার অর্থ হতে পারে "স্বাধীন অনুবাদ"। মূল পটভুমি, পাত্র-পাত্রীর নাম-ধাম, কাহিনীর কাঠামো অবিকৃত রেখে অনুবাদকের মর্জি অনুযায়ী তার পছন্দের বাক্যশৈলী ব্যবহার করে অনুবাদ করাটাই হলো স্বাধীন অনুবাদ। আমি সেটাকেই ভাবানুবাদ ভেবেছিলাম।

আমার নগণ্য অনুবাদ আলোচনা করতে গিয়ে আহমদ ছফা, নজরুল ইসলাম, সৈয়দ আলী আহসানকে টেনে এনে আমাকে ফেলেছেন মহাবিপদে। ওঁদের অনুবাদের সঙ্গে আমার অনুবাদের তুলনা করতে যাওয়াটা ঘোর অনুচিত বলে আমি মনে করি (শেখ সাদীর সঙ্গে ছাগলের বর্জ্যের তুলনাসূচক বাংলা প্রবচনটি মাথায় এলো)।

আমার তো, ভাই, অতো পড়াশোনা নেই, নেই অনুবাদের তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক জ্ঞান। তাই সৌখিন অনুবাদককে যতোটুকু টিপস দেয়া যায়, ততোটুকু দিলেই বর্তে যাই।

অনুবাদ ব্যাপারটা আসলেই ভয়ংকর জটিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনেক লেখার রুশ অনুবাদ আমি পড়েছি। গদ্যের অনুবাদ তবু পড়া যায় ভাষার মাধুর্য ঝলসে যাওয়া সত্বেও। কিন্তু কবিতার অনুবাদ দেখে যত্পরোনাস্তি হতাশ হয়েছি। "দুই পাখি"-র অনুবাদ পড়ে হতাশায়, ক্ষোভে কেঁদেই ফেলেছিলাম প্রায়। তখনই মনে হলো, রবি বাবুর লেখার সত্যিকারের স্বাদ পেতে হলে বাংলা জানতে হবে। অন্য কোনও উপায় নেই। বুঝতেই পারছেন, পুশকিন প্রসঙ্গে আপনার পরিচিত রাশানরা বা হাইকু সম্পর্কে সেই জাপানি ভুল খুব একটা বলেননি।

আমার মনে হয় মূলকে যেহেতু রাখা সম্ভব না সেহেতু তাকে যে ভাষায় অনুবাদ করা হতে তার ছাছে ঢেলে দেয়াই উচিত

এ-ক্ষেত্রে আমি কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করি। ছাঁচটি অনূদিত ভাষার হলে ভালো হয়, তা সত্যি। তবে মূল ভাষার ধরনটি সম্পর্কে পাঠককে কিছুটা আঁচ দিতে পারলে ক্ষতি কী? জানি, পড়ার সময় পাঠকের আরাম পাবার প্রসঙ্গটি এখানে উঠতে পারে। তাহলে তো যাবতীয় সাহিত্য জলবত তরলং করে রচনা করতে হয়!

সামোভারকে অন্যভাবে বাংলায় অনুবাদ করা যেত

যে বস্তটি আমাদের নেই, যার ব্যবহার নেই আমাদের জীবনে, সেই বস্তুটির জন্য একটি জুতসই বাংলা শব্দ বের করার প্রয়োজনীয়তাটি কোথায়? অনুবাদকেরা সামোভার শব্দটি ব্যবহার করার সময় একটা টীকা দিয়ে দিলেই আর কোনও ঝামেলা হতো বলে মনে হয় না।

গল্পগুলোকে ঠিক রেখে বাংলা গঠনশৈলীতে নিয়ে আসা যায় কি না?

বাক্যগঠন যথাসম্ভব "বাঙালি" করার চেষ্টা সব সময় থাকবে। তবে বাংলায় যে ঢঙে গল্প বলা হয়, অনুবাদেও সেই ঢঙটি অক্ষুণ্ণ রাখার প্রস্তাবটি মন এখনও গ্রহণ করতে পারছে না।

আপনাকে সত্যিই অজস্র ধন্যবাদ জানাতে চাই। আপনার সদা-রসময় বুদ্ধিদীপ্ত মন্তব্য আমি সোত্সাহে পড়ি। আর তাছাড়া ব্যবহারিক নানাবিধ উপদেশ দেয়ার কারণে আপনাকে সচলায়তনের প্রধান উপদেশদাতা (নাকি উপদেষ্টা?) পদে নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। কেথায় যেন লিখেছিলেন, "নিজের খেয়ে আর কতো উপদেশ দেয়া যায়" জাতীয় একটি বাক্য। পড়ে মনে হলো, আপনাকে "বন্য মহিষ বিতাড়ন কমিটি"-র আজীবন সভাপতি পদটিও দিয়ে দেয়া যেতে পারে হাসি

পুনশ্চ: আমার পোস্টগুলো বরাবরই পিচ্চি সাইজের হয়। বড়ো লেখা লিখতে পারি না। ধৈর্য্য থাকে না। অথচ অ্যাত্তো বড়ো একটা মন্তব্য লিখে ফেললাম। আমি নিজেই হতবাক!

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

তীরন্দাজ এর ছবি

এভাবে কেউ জ্বলে! - স্পষ্ট অতৃপ্তির স্বরে স্বেতলানা বললো। - এই আগুনে তো স্যুপও গরম হবে না।

আমার কাছে এই লাইনটি মজা লেগেছে বেশী। এতো ভালবাসার মাঝে স্যুপের কথাটি জরুরী হয়ে দাঁড়ালো।

মাহবুব লীলেনের কথানুযায়ী, কিন্তু বাংলা ভাষায় আমরা আগে বর্ণনা এবং পরে সংলাপে অভ্যস্থ।
সবসময়েই কি তাই? যদি লেখা অন্যভাবে গতিময়তা পায়, তাহলে অন্যকিছু করবো না কেন?
**********************************
যাহা বলিব সত্য বলিব

**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সব সময়ে অবশ্যই আগে বর্ণনা পরে সংলাপ হয় না
কিন্তু ক্রমাগত সংলাপের পরে বর্ণনাকে আমরা অনেক বেশি বিদেশি বিদেশি হিসেবে অভ্যাস করা শিখে গেছি। আমি সেটাই বলতে চেয়েছিলাম

আর একটা কথা
ছোট্ট গোল রুটি

এই কথাটার মানে এখনও আমার মাথায় ঢোকেনি
এই কথাটা শুনলেই মনে হয় এটা বোধহয় একটা দুর্ভিক্ষের গল্প

বিপ্লব রহমান এর ছবি

ছোট্ট গোল রুটি
চলছে গুটিগুটি

ময়দা দিয়ে মেখে
ঘি দিয়ে ভেজে
জুড়োতে দিলেম যেই
পালিয়ে গেলো সেই

খোকা পেলো না
খুকু পেলো না
বুড়ো পেলো না
বুড়ি পেলো না

ওরে সোনা
তুমিও পাবে না।...
---
সেই কোন শৈশবে প্রগতি প্রকাশনীর 'রুশ দেশের উপকথায়' পড়া ছড়াটি স্মৃতি থেকে তুলে দিলাম।

লীলেন ভাই এখন বোধহয় ছোট্ট গোল রুটি নামকরণের যোগসূত্র খুঁজে পাবেন।


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍@ তীরন্দাজ
স্যুপের কথাটি পড়ার সময় আমিও মজা পেয়েছিলাম খুব।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

স্বপ্নাহত এর ছবি

অনেক ভাল লাগছে।
সমালোচনা করতে কইসেন। আমি কিছু খুঁজে পাইনাই।সাধারণ পাঠক।সাধারন দৃষ্টি দিয়ে পড়তেই ভালবাসি।কোন গল্প যদি মনে আবেদন সৃষ্টি করতে পারে এইতো যথেস্ট। লাইন টু লাইন চুলচেরা বিশ্লেষণ করতে গেলে সেটা অনেক তিতে হয়ে যায় বড়।আমার কাছে পড়ার দর্শনটা এরকমই। সেটাই কইলাম আর কি...

---------------------------

থাকে শুধু অন্ধকার,মুখোমুখি বসিবার...

---------------------------------

বাঁইচ্যা আছি

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍ধন্যবাদ।
চুলচেরা বিশ্লেষণ না করলেও চলবে। তবে পড়তে গিয়ে কোথাও খটকা লাগলে, কোনও শব্দের ব্যবহার বা বাক্যগঠন অপছন্দ হলে তা যদি বলে ফেলেন নিঃসংকোচে, তাতেই খুশি হবো। আর কীভাবে লিখলে ভালো হতো বলে আপনার ধারণা, সাথে এ-ও যদি বলেন, তো তা হবে সোনায় সোহাগা।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

পরিবর্তনশীল এর ছবি

মনে করছিলাম যাইচা আইস্যা যখন সমালোচনা চাইছেন...করুম। কিন্তু ওস্তাদ... চান্স পাইলাম না। আপনি মিয়া যেভাবে গোল রুটি বানান... কোনদিন মনে হয় চান্স পামুও না।

আর সংলাপে পরে অবস্থা বর্ণনা। এইটা মন্দ কী? আমার তো ভালো লাগে।
---------------------------------
ছেঁড়া স্যান্ডেল

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍রুটির স্বাদ খারাপ হইলে সেইটাও জানতে চাই। আর বাকি কথা স্বপ্নাহতরে লেখছি। প্লীজ, পইড়া নিয়েন।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অমিত আহমেদ এর ছবি

আচ্ছা, তাহলে প্রশংসা শুনতে শুনতে এই হয়েছে? এখন গালি খাবার শখ।

আচ্ছা। তবে তাই হোক।

আমি অনুবাদের যাচাই করি এভাবে, একটা অনুবাদ পড়ে যত কম মনে হবে এটা অনুবাদ সেটা তত বেশি সফল। সে স্কেলে আপনার বেশির ভাগ অনুবাদ গুলো মাঝামাঝির একটু উপরে থাকবে। (একই স্কেলে সব চেয়ে উপরে থাকা অনুবাদ গুলোর দু'টি "কুমায়ুনের মানুষখেকো" আর "রবিনহুড", দু'টোই কাজী'দার করা।)। যেমন এই লাইনটা "মিশকিন দু'বাহু তুলে ঝাঁকাতে শুরু করলো দু'পাশে। ছাদের ঠিক নিচে ভেসে রইলো সে।
- আমি তোমাকে ভালোবাসি, স্বেতা, - আবার বললো মিশকিন।"

এটাকে একটু বাঙালি বানানো যায় এভাবে, "শুনেই দু'হাত ঝাপটানো শুরু করলো মিশকিন। উড়ে চলে গেল ছাদের ঠিক কাছাকাছি। সেখান থেকে বললো, "আমি তোমাকে ভালোবাসি, স্বেতা!""

আপনার উদ্দমেই জোর করেই সমালোচনা করলাম। আগে করার প্রয়োজন বোধ করিনি কারণ, প্রতিটা গল্প পড়েই আমোদ পেয়েছি। আর সেটাই তো যে কোনো অনুবাদের মূল প্রতিপাদ্য। আর সে হিসেবে তো আপনি ঠিকই সফল।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

ধুসর গোধূলি এর ছবি
সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

@ ‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍অমিত আহমেদ

আপনার পুরো (নাকি পুরোটা বলেননি? ) প্রতিক্রিয়া জানতে পেরে ভালো লাগছে। অ্যাদ্দিনে লেখালেখি বিষয়ে কিছুটা গঠনমূলক আলোচনা শুরু হয়েছে সচলায়তনে।

এবার আমার প্রতিমন্তব্য। অনুবাদের ধরন বিষয়ে মাহবুব লীলেনের মন্তব্যের জবাবে বিশদ লিখেছি। পড়ে নিলে বাধিত হই।

আপনার প্রস্তাবিত অংশে ("শুনেই দু'হাত ঝাপটানো শুরু করলো মিশকিন। উড়ে চলে গেল ছাদের ঠিক কাছাকাছি। সেখান থেকে বললো, "আমি তোমাকে ভালোবাসি, স্বেতা!"") আমার খুব পছন্দ হলো "ঝাপটানো" শব্দটি। অনুবাদের সময় শালা কিছুতেই এলো না মাথায়। আপনি অনুমতি দিলে বদলে দিতে চাই। আর বাকি অংশ সম্পর্কে কিছুটা আপত্তি আছে। অনুবাদকের স্বাধীনতা কতোটা বিস্তৃত - এই প্রশ্নটির জবাব কোথাও পাইনি আজও। তবে আমার ধারণা, নিজের মাথা থেকে কিছু শব্দ বা বাক্যাংশ (যেমন "সেখান থেকে"। মূলে তা অনুপস্থিত।)অনুবাদে জুড়ে দেয়াটা, বোধ হয়, উচিত নয়। অনুবাদ জ্যাজ মিউজিক নয় যে, সেখানে ইম্প্রোভাইজেশন প্রয়োগ করতে হবে।

সব ক্ষেত্রে আমি আমার মতো করে শব্দ বা বাক্যশৈলী ব্যবহার করলে তা কি ঠিক অনুবাদ হবে? গত পর্বের "পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া" আর এই গল্পটির তুলনা করলে বুঝতে পারবেন, আমি চেষ্টা করেছি মূল লেখাটির প্রতি অনুগত থাকতে। আনুগত্যের মাত্রা প্রবল মনে হলে তা হ্রাস করার উদ্যোগ নেয়া যায় কিন্তু সম্পূর্ণ আনুগত্যহীনতা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?

আমি জানি, অনুবাদকে বাঙালিত্ব দিলে তা সুপাঠ্য হয় বটে, তবে তাতে মূল লেখাকে কিছুটা অশ্রদ্ধা করা হয় বলে আমার ধারণা।

আপনার যে-কোনও যুক্তি বা মন্তব্য আলোচনাকে জোরদার করবে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অমিত আহমেদ এর ছবি

আমাকে অবাক করলেন রে ভাই। শব্দ ব্যবহার করার জন্য কি অনুমতি লাগে? নিদ্বিধায় ব্যবহার করুন।

বাক্যের গঠন নিয়ে আপনার বিপরীতেই দাঁড়াতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ মনে হলো যদি আমার কোনো লেখা অনুবাদ করার সময় কেউ বাক্যগঠণ বদলে ইচ্ছে মতো শব্দ বসায় তাহলে আমার ভালো লাগবে নাকি। জবাব হলো লাগবে না। অনুবাদের সাথে সাথে মূল ভাষার ধরনটি সম্পর্কে পাঠককে কিছুটা আঁচ দিতে চাইবার ব্যাপারটিও আমার মনে ধরেছে। তাই এ যুক্তিটি আমি মেনে নিলাম।

আর কাহিনীতে পুরোপুরি বাঙালিয়ানা আনার কথা আমি বলিনি। আমি বলেছি অনুবাদ পড়তে গিয়ে হোঁচট খাবার কথা আর বিরক্তি আসার সম্ভাবনার কথা। এই দু'টো এড়ানো যায় উপযুক্ত শব্দবাছাই, আর যেখানে অন্যভাষার বাক্যগঠন অনুসরণ করে বাঙালি পাঠককে রস দেয়া সম্ভব নয় সেখানে জোর করে বাক্যগঠন পরিবর্তন না করা। এ দু'টোই ক্ষেত্র যাচাই করে অনুবাদকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

কনফু বলেছেন অনুবাদ পড়ে এটা যে অনুবাদ সেটা পাঠকের বুঝতে পারার দরকার আছে। আমার তো মনে হয় এটা পাঠক সবসময়ই বুঝতে পারবে। (ভাবানুবাদে অন্য কথা।)


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

নিত্য স্বাদের গোল রুটি খেয়ে সমালোচনা করবো, এমন রুটি-হারাম এখনো হৈনি।

যার রুটি খাই তার টুটি চেপে ধরবো??

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

রান্না ভালো হলেও দাঁতের নিচে যদি পাথর-টুকরো পড়ে‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍, সেটা বলতে তো আপত্তি থাকার কথা নয়, নাকি?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

হিমু এর ছবি

এটাতে লবণ, মশলা সবই মাপমতো হয়েছে।

অনুবাদের ভঙ্গি নিয়ে আগের সচলদের মন্তব্যের সাথে কিছুটা দ্বিমত আছে আমার। যেমন মাহবুব লীলেন বাক্যে সংলাপ আর সংলাপ-উপস্থাপকের বর্ণনার অবস্থান নিয়ে যা বলেছেন, তার সাথে একেবারেই একমত নই। এই রীতি মেনে চললে সব লেখাই নীরস লাগবে। এমন রেজিমেন্টেশন আমি সাধারণত কোন লেখায় কামনা করি না।

অনুবাদ নিয়ে অমিত আহমেদের বিচারের মানদন্ড আমি সাধারণত প্রয়োগ করি না। অনুবাদকৃত লেখাটি যাতে দুষ্পাঠ্য না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি, কিন্তু অন্য ভাষার ভিন্ন ভঙ্গি সম্পর্কেও পাঠকের মনে ছাপ পড়া জরুরি। ভাবানুবাদ সুখপাঠ্য, কিন্তু তাতে কিছু রস অনুপস্থিত থেকেই যায়।

রুশ সাহিত্য খুব সামান্য পড়েছি, বেশির ভাগই বাংলায়, কিছু ছোটগল্প ইংরেজিতে। বাংলায় অনুবাদের কাজ "কেরানি"রা করেছিলেন কি না তা জানি না (পেশাদার অনুবাদক বললে অতটা কর্কশ শোনায় না), তবে অনেক লেখাই ভালো লেগেছিলো। এর একটা কারণ কিন্তু ভাষার অন্যরকম চেহারাটাও।

গল্পটা অনুবাদ হিসেবে কেমন হয়েছে, সে বিচার করতে গেলে মূল গল্পের পাঠও জরুরি। যেহেতু মূল রুশগল্পটি আমার পড়া হয়নি, এর অনুবাদকৃত্যের বিচার করতে যাওয়াটা আমার জন্যে ধৃষ্টতা হবে। বাংলায় পড়ে বেশ লেগেছে, এটুকুই শুধু বলতে পারি।


হাঁটুপানির জলদস্যু

অমিত আহমেদ এর ছবি

রুশদের ব্যাপারটা আলাদা। ওরা ওদের অনুবাদের ধরণের সাথে আমাদের শৈশব থেকেই পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। এই বয়সে এসে প্রথম "ইশকুল", "ছোরা" কিংবা "মালাকাইটের ঝাপি" পড়লে ধাক্কা খেতেন বলেই আমার ধারণা।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- 'মালাকাইটের ঝাঁপি' খুব মিহি সানা'র সন্দেশের স্বাদের মতো এখনো মুখে লেগে আছে।
_________________________________
<সযতনে বেখেয়াল>

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

ভাষার কেরানি বা পেশাদার অনুবাদক - যে-নামেই ডাকা হোক না কেন, ননী ভৌমিক আর হায়াত্ মামুদকে ঘিরে যে মুগ্ধতা আমার ছিলো ছোটবেলা থেকে, তা আজও অটুট আছে।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

কনফুসিয়াস এর ছবি

অনুবাদ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্বান্তে যাওয়া কঠিনই হবে মনে হচ্ছে।
তবে আমি সম্ভবত শব্দ বা বাক্যগঠনে পুরোপুরি বাঙালিয়ানা নিয়ে আসাটা পছন্দ করবো না, মূল গল্পের গঠনশৈলী যতটা অক্ষুন্ন রাখা যায়, ততই মঙ্গল।
*
ছোট গোল রুটি- নিয়ে সমালোচনা করা মুশকিল, যেহেতু মূল গল্প পড়ি নি। এটুকুই বলা যায়, আলাদা গল্প হিসেবেও সেগুলো প্রতিটাই চমৎকার এবং পড়ে বুঝা যায় এটা বাংলাদেশী গল্প নয়, অনুবাদ। এটারও দরকার আছে বলেই মনে করি।
-----------------------------------
... করি বাংলায় চিৎকার ...

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍অনুবাদ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্বান্তে যাওয়া কঠিনই হবে মনে হচ্ছে।

আমারও তা-ই ধারণা। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে না হোক, কিছুদূরও যদি এগোনো যায় আলোচনার মাধ্যমে, সে-ই বা মন্দ কী?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কী যে করি! আবার ফোন করেছিল মাদাম ত্যুসোর মিউজিয়াম থেকে... হাসি

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

নারীর মন বোঝা বড়ই দুষ্কর! দেঁতো হাসি
_______________
বোকা মানুষ মন খারাপ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।