'ডানার রৌদ্রের গন্ধ'

তিথীডোর এর ছবি
লিখেছেন তিথীডোর (তারিখ: শুক্র, ১৯/১১/২০১০ - ১০:০১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


"ভিজে হয়ে আসে মেঘে এ-দুপুর-- চিল একা নদীটির পাশে
জারুল গাছের ডালে ব'সে ব'সে চেয়ে থাকে ওপারের দিকে
.."

মিরুজিন নদীটির ধার ঘেঁষে ঐ যে মস্ত জঙ্গল, তাতে ক্লান্ত সমুদ্র সফেন সম অশ্বত্থ গাছ, আরো নানা রকমের গাছ সারি সারি। নিবিড় বট, দেবদারু আর আমলকী গাছ তারা। ধূসর পাতার ফাঁকফোঁকরে ম্যালা পাখির বাসা...

ক'জোড়া শঙ্খচিল এ রাজ্যের আদি বাসিন্দা, বড় নাকউচুঁ ভাবসাব তাদের! কিন্তু বুড়ো চিলের ঐ যে অন্ধ ডানাভাঙা ছানাটি.. সে বেচারির ভাব দেখানোর জো নেই।
উড়তে না জানলে পাখির আবার কদর কিসের? দু-দণ্ড গল্পগাছা করতেও তাই তাকে কেউ ডাকে না। মিনারের মতো মেঘ সোনালি চিল কে তার জানালায় ডাকে, ভাঙা ডানায় রোদের নরম রং শিশুর গালের মতো লাল, তার কপালে তাই জোটে গমের এঁটো দানা,
তার জায়গা কেবল হেলেঞ্চা ঝোপের চুপটি কোণে!

অন্ধ চিলের ছানা ভাঙা ডানা নিয়েই তবু রোজ ওড়ে। নক্সাপেড়ে শাড়িখানার গন্ধ মাখা জলসিঁড়ি ঘাট পেরিয়ে, বেলকুঁড়ি -ছাওয়া পথ পেরিয়ে, বউ-কথা-কও আর
কোকিলের পাখনার মতন দীঘির গভীর পাতা -মাখা শান্ত নীল জল ছুঁয়ে... কর্ণফুলী, ধলেশ্বরী, পদ্মা, জলাঙ্গীরে দেয় অবিরল জল.. সেইখানে
শঙ্খচিল পানের বনের মতো হাওয়ায় চঞ্চল ওড়ে..

নাটার মতন রাঙা মেঘ নিঙড়ে নেওয়া সন্ধ্যার আকাশ দু-মুহূর্ত ভরে রাখে, তারপর মৌরির গন্ধমাখা ঘাস পড়ে থাকে কেবল.. লক্ষীপেঁচা ডাল থেকে ডালে শুধু
উড়ে চলে বনে। মাঠ থেকে গাজন ধানের ম্লান ধোঁয়াটে উচ্ছাস ভেসে আসে আকন্দ বনের দিকে। আধ ফোটা জোত্‍স্নায় তারি সঙ্গে হাড়পাহাড়ের দিকে কুয়াশায় গা
ভাসিয়ে উড়ে চলে ডানাভাঙা চিল...

মাঝেসাঝে হলুদ নরম পায়ে খয়েরী শালিখগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সেই-ই নীলনদ তক পৌঁছে যায় সে। পিরামিড্ বেবিলন শেষ হয়, দুপুরের নিঃসঙ্গ বাতাসে নীল
লাল কমলা রঙের ডানা স্ফুট হ'য়ে ভাসে! ফেনসা ভাতের গন্ধে আমমুকুলের গন্ধ মিশে যায় যেন বার -বার... টসটসে ভিজে জামরুলের মতো পানকৌঁড়ি বউ হররোজ পাতাল ঘেঁটে তুলে আনে গেঁড়িশামুক, ডুবসাঁতারেও তাকে হারায় শঙ্খচিল!
ক্ষীরুই গাছের পাশে কালীদহে মীনকন্যাদের মতো ভাসে সরপুঁটি চিতলের ঝাঁক, সবুজ জলের ফাঁকে তাদের রহস্যে ঘেরা পাতালপুরী ঘর.. চিল জানে তারো
সুলুকসন্ধান!

মধুকূপী ঘাস আর ময়ূরপঙ্খী ভোরের সিন্ধুর অবাক প্রহরে, এলাচিফুল আর দারুচিনির দুএক গুচ্ছ ঘ্রাণ লুকিয়ে ডানাভাঙা ছোট্ট শঙ্খচিল মনে মনে রোজ
অ-নেক, অনেকখানি ওড়ে.....


মন্তব্য

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

তিথী, পরে এসে পড়ে যাব । এখন একদম সময় নেই । তবে বুঝতে পারছি ডানায় রৌদ্রের গন্ধ আমাকে মাতিয়ে রাখবে নিশ্চিত ।

……………………………………
বলছি এক জ্যোতির্ময়ীর কথা

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

উড়তে না জানলে পাখির আবার কদর কিসের?

তিথী, খুব ভাল লাগল । তাসনীম ঠিক বলেছেন এই লেখার ট্যাগ হওয়া উচিত কবিতা, জীবনানন্দ গদ্য লিখলে এমনই লিখতেন ।

সবটুকু উদাস বিধুরতা ভাল লাগল ।

……………………………………
বলছি এক জ্যোতির্ময়ীর কথা

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

তিথীডোর এর ছবি

আমি তো ছুটু মানুষ আপু, পড়াশোনাও সীমিত.. হাসি
গত ক'দিন মন খারাপের ঝোঁকে খুব জীবনবাবুকে পড়া হলো, ঐ সময়েই লেখা।

অনেক ধন্যবাদ!! হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তুলিরেখা এর ছবি

আহ, আহ, কিছু বলতে পারছি না এত ভালো লাগছে।

"কোনোদিন মৃত্যু যদি দূর নক্ষত্রের তলে
অচেনা ঘাসের বুকে আমারে ঘুমায়ে যেতে বলে
তবু সে ঘাস এই বাংলার অবিরল ঘাসের মতন
মৌরীর মৃদুগন্ধে ভরে রবে।"

খুব খুব ভালো লাগলো তিথীডোর, আচ্ছন্ন হয়ে আছি প্রতিটা শব্দে, প্রতিটা বাক্যে। কথা অমৃতসমান।

-----------------------------------------------
কোন্‌ দূর নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

তিথীডোর এর ছবি

"আমরা বেসেছি যারা অন্ধকারে দীর্ঘ শীতরাত্রিটিরে ভালো,
খড়ের চালের পরে শুনিয়াছি মুগ্ধ রাতে ডানার সঞ্চার;
পুরোনা পেঁচার ঘ্রাণ — অন্ধকারে আবার সে কোথায় হারালো!
বুঝেছি শীতের রাত অপরূপ — মাঠে মাঠে ডানা ভাসাবার
গভীর আহ্লাদে ভরা; অশত্থের ডালে ডালে ডাকিয়াছে বক;
আমরা বুঝেছি যারা জীবনের এই সব নিভৃত কুহক।।"

কৃতজ্ঞতা দিদি! হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তাসনীম এর ছবি

খুব সুন্দর...কবিতা কবিতা। জীবনানন্দ গদ্য লিখলে এরকম হোত হাসি

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

অতিথি লেখক এর ছবি

জীবনানন্দ গদ্য লিখেছেন কিন্তু তার গদ্যগুলো অন্যরকম; কবিতার মত আকুতি নেই সেখানে। কবিতা কবিতাই, গদ্য কখনো তার কাছে পৌছাতে পারবে না। তিথীডোর যেই ট্যাগই লাগাক, এটা কবিতাই। মোহময় কবিতা।

অনন্ত আত্মা

তিথীডোর এর ছবি

থ্যাঙ্কু এমিল ভাইয়া! হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তিথীডোর এর ছবি

"অতল, তোমার সাক্ষাৎ পেয়ে চিনতে পারিনি বলে
কবি ডুবে মরে, কবি ভেসে যায় অলকানন্দা জলে।।"
*জয় গোস্বামী

কবিতা বড় ভালু পাই..
মন্তব্যের জন্য অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-!! হাসি

___________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো। এটুকুই বলবো।

---আশফাক আহমেদ

তিথীডোর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আশফাক। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

বইখাতা এর ছবি

তিথী, কিছু কিছু উপমা আমি বুঝিনি। খুব সম্ভবত শব্দগুলো আমার কাছে অচেনা বলেই। তবে পড়তে খুব ভাল লাগল। একটা সময়ে আমি জীবনানন্দ আর বিভূতিভূষণে পুরোপুরি ডুবে ছিলাম।

তিথীডোর এর ছবি

আপু,
প্রায় সবগুলো উপমাই "রুপসী বাংলা" থেকে নেয়া...
জীবনানন্দ আর বিভূতিভূষণ, দু-জনেই আমার ভয়াবহ প্রিয়!
সবচেয়ে প্রিয় অবশ্য রবিবুড়ো! হাসি

অনেক ধন্যবাদ রইলো।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

মন কেমন করা লেখা....

মেঘলা

তিথীডোর এর ছবি

"অনেক মুহূর্ত আমি করেছি ক্ষয়
করে ফেলে বুঝছি সময়
যদিও অনন্ত, তবু প্রেম যেন অনন্ত নিয়ে নয়।
তবু তোমাকে ভালোবেসে
মুহূর্তের মধ্যে ফিরে এসে
বুঝেছি অকূলে জেগে রয়
ঘড়ির সময়ে আর মহাকালে যেখানেই রাখি এ হৃদয়।"

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- মেঘলা।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অনিকেত এর ছবি

উফফফ........ কী করে লিখিস এমন করে???!!
তোর কি মনে কোন মায়াদয়া নেই রে??
এমনিতেই উচাটন মন-প্রাণ,
তার উপর তোর এই লেখার টান
সারা দিনটা আমার হল ছত্রখান......

তিথীডোর এর ছবি

"তোমার মতন কেউ ছিল না কোথাও?
কেন যে সবের আগে তুমি চলে যাও।
কেন যে সবের আগে তুমি
পৃথিবীকে করে গেলে শূন্য মরুভূমি
(কেন যে সবের আগে তুমি)
ছিঁড়ে গেলে কুহকের ঝিলমিল টানা ও পোড়েন,
কবেকার বনলতা সেন।

কত যে আসবে সন্ধ্যা প্রান্তরে আকাশ,
কত যে ঘুমিয়ে রবো বস্তির পাশে,
কত যে চমকে জেগে উঠব বাতাসে,
হিজল জামের বনে থেমেছে স্টেশনে বুঝি রাত্রির ট্রেন,
নিশুথির বনলতা সেন।"

বিষাদপ্রিয় কবিতাখোর সঙ্ঘের সভাপতিকে আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-খাইছে

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

রানা মেহের এর ছবি

ওরে জীবনানন্দী
সুন্দর লিখেছো তো
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

তিথীডোর এর ছবি

ওরে রানা'পু-----
তুমি মন্তব্য করতে পারো?? চোখ টিপি

ধইন্যা পাতা নাও... হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

চলুক
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

তিথীডোর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

কৌস্তুভ এর ছবি

কবিতা তেমন বুঝি না আমি। তবে এনার কবিতা ভালো লাগে। আপনার লেখাটাও লাগল।

তিথীডোর এর ছবি

হুমম, 'কবিতা আর পরিসংখ্যান' দুটোই আসলে জটিল জিনিস!!! খাইছে

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

তাসনীম ভাই বলেছেন, “খুব সুন্দর...কবিতা কবিতা। জীবনানন্দ গদ্য লিখলে এরকম হোত”। আর আমি তিথীর লেখায় এক ভিন্নধাঁচের মুগ্ধতা খুঁজে পাই। সেখনে আচ্ছন্নতার চেয়ে বেশী কাজ করে গতিময়তা, যেন কর্ণফুলীর স্বচ্ছতোয়া স্রোতধারা। গতির নুপুর বাজিয়ে ছলকে ছলকে যাচ্ছে সবুজ পাহাড়ের পা ধুয়ে দিতে দিতে। তিথী যে জীবনানন্দীয় শব্দরাজী ব্যবহার করেছেন তা যেন সবুজ পাহাড়ের মতোই একরাশ সুন্দরকে বুকে ধরে নদীটির যাত্রাপথের শোভাবর্ধন করেছে। সেই সুন্দরের প্রশান্তরূপ ছাপিয়ে তিথীর লেখাটি স্বকীয়তার অনন্যসাধারণ দীপ্তি মেলে ধরেছে। দীপ্তিময় পথ জুড়ে ‘অবসাদের গান’ যেন ‘আনন্দময় কীর্তনে’ রূপ খুলেছে।

আসুন না, দেখি কেমন গদ্য লিখেছিলেন জীবনানন্দ। অন্তহীন উপমার স্নানে স্নাত তাঁর গল্প, “করুণার পথ ধরে”। সবটুকুই জীবনানন্দীয় জগতের বর্ণ-গন্ধ-রূপ-রস সঞ্জাত। উদ্ধৃত করা যাকঃ

১। মেঘের কিনার দিয়ে জাফরান রঙের ডানা বাড়িয়ে-হীরকের মতো ঝলমল পিছল নদীর জলকে বেতের ফলের মতো নীল নিস্তব্ধ করে দিয়ে কার্তিকের দিন, দিনের মাঝখানেই ফুরিয়ে গেল।
২। ......জামরুলের ডালপালার ভেতর থেকে যেন কোনো সুন্দরী বউয়ের ফুলের মতো সোনালি রঙের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদের দিকে।
৩। ভোরের পাখির মতো উড়ে যেতে হবে একবার পশ্চিম আকাশের দিকে, তারপর দুপুরের চিলের মতো আকাঙ্ক্ষার খয়েরি ডানা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দূর উত্তর আকাশের দিকে উড়ে যেতে হবে আর-একবার।
৪। রুপালি, সোনালি, কলরবহীন কুয়াশার দেশের কেমন এক বীজশূন্য শেকড়শূন্য উড়ন্ত মেঘের মতো হাসি।

এমন উদাহরণ দেয়া যাবে শত-সহস্র। বর্ণবিভার রঙে রঙে সয়লাব এই গল্পের শেষটিঃ
‘একদিন সোনালি চিলের মতো আকাশের দিকে উড়েছিলাম পৃথিবীর কুহক দেখবার জন্য, রৌদ্রের মতন গভীর রক্তিম প্রেমকে আস্বাদ করবার জন্য, কিন্তু কোথা থেকে মা ও মেয়ে এসে আমাকে শিকার করে নিয়ে গেল’।

অনন্ত আত্মা বলেছেন, “জীবনানন্দ গদ্য লিখেছেন কিন্তু তার গদ্যগুলো অন্যরকম; কবিতার মত আকুতি নেই সেখানে। কবিতা কবিতাই, গদ্য কখনো তার কাছে পৌছাতে পারবে না”।

জীবনানন্দের গদ্যের কয়েকটি পঙক্তি কবিতার মতো পঙক্তিসজ্জিত করে জীবনানন্দের কবিতার প্রতিস্পর্ধী করে তোলা যায়। সম্পন্ন গদ্য ও কাব্যের পাতলা পর্দার সীমারেখা স্পর্ধাভরে ভেদ করে নিরন্তর চলে বর্ণবিভার মোহন ক্লান্তিহীন অভিস্রবণ। উদ্ধৃত করা যাকঃ

অনেক রাতে
বাবলা ও হিজলের ছায়ার ভিতর দিয়ে
ফিরে আসবো ঘরের দিকে।
নক্ষত্রেরএ রূপালী আগুনে আকাশ ভরে রয়েছে তখন,
কোথাও কোন শব্দ নেই,
হিজলের ডালপালার ফাঁকা জানালার ভিতরে
গাঁয়ের মৃত রূপসীদের এক-আধজন হয়তো এসে বসেছে,
শিশির ঝরছে,
আশার অতীত জীবনের
মৃত প্রেমের
অস্পষ্ট শব্দের মতো পরিচ্ছন্ন আকাশ থেকে
নির্মল কাকাতুয়ার রাশির মতো শাদা হাওয়ার ভিড়
পৃথিবীর ঘাসে ঘাসে
আনন্দের কোলাহলে ছিঁড়ে পড়ছে যেন।
[‘করুণার পথ ধরে’, জীবনানন্দ দাশ]

তাঁর কবিতায় যে নিয়তিচেতনা কাজ করেছে উপন্যাসে তা ধারণ করেছে তীক্ষ্ণতম রূপ। ‘আটবছর আগের একদিন’-এর ‘থ্যাঁতা ইঁদুরের মতো’ ‘নিরূপম যাত্রা’য় প্রভাতের কারণহীন যুক্তিহীন মৃত্যু। এই উপন্যাসে গতি আছে, গতির সাথে তাল মেলাতে গিয়ে জীবনানন্দীয় জগতের বর্ণ-গন্ধ-রূপ-রস-উপমা-প্রকৃতিমুগ্ধতা-অবসাদ একটি মুহূর্তের জন্যেও ছিটকে পড়েনি। উদ্ধৃত করা যাকঃ

তারপর রাত্রি নেমে আসে—অবসন্ন ঝিঁঝিঁর ডাক, কোকিলের গান ও ব্যাঙের কলরবের ভিতর দিয়ে মাঠ-প্রান্তরের সীমানায় জোনাকিমাখা বাতাসের ভিতরে ট্রেন এসে থামে। তারপর ষ্টিমার—এ এক নিরুপম বিচিত্র যাত্রা—মাঠ আছে তেপান্তর আছে; সমস্ত রাত বিচিত্র সরীসৃপের মতো এঁকে বেঁকে নদী যেন তিমিরাবৃত শীতল পাতাল দেশের দিকে চলেছে—
[‘নিরুপম যাত্রা’, জীবনানন্দ দাশ]

তাঁর উপন্যাস তাঁর মানস ও চেতনালোকের নানা নবতর প্রান্ত খুলে দিলেও এমন কোনো মেরু তৈরি করে না যা তার কবিতার বিরোধী। জীবনানন্দের কবিতা ও কথকথা পরস্পরের পরিপূরক, এই দুই উপাদানের সম্মিলন ও সমীকরণে পাওয়া যাবে তাঁর মানসলোকের সুস্পষ্ট গড়ন বা ছবি, এই দুই উপাদানের মিলিত পাঠ থেকে তাঁর লেখা বোঝা ও ব্যাখ্যা করা সম্ভবপর হবে।

আমরা বেসেছি যারা অন্ধকারে দীর্ঘ শীত-রাত্রিটিরে ভালো,
খড়ের চালের ’পরে শুনিয়াছি মুগ্ধরাতে ডানার সঞ্চার;
পুরানো পেঁচার ঘ্রাণ; — অন্ধকারে আবার সে কোথায় হারালো!
বুঝেছি শীতের রাত অপরূপ, — মাঠে মাঠে ডানা ভাসাবার
গভীর আহ্লাদে ভরা; অশত্থের ডালে-ডালে ডাকিয়াছে বক;
আমরা বুঝেছি যারা জীবনের এই সব নিভৃত কুহক;
[ধুসর পান্ডুলিপি, ‘মৃত্যুর আগে’, দ্বিতীয় স্তবক, জীবনানন্দ দাশ]

‘আমার দেশ’ চিত্রমালা দেখতে দেখতে দেখতে ছেলেবেলায় একবার বড়ো স্বাদ হয়েছিলো কখনো কোন এক ছবি আঁকার উৎসবে শিশুদের মাঝে মিশে গিয়ে পুরো ক্যানভাস জুড়ে ‘মৃত্যুর আগে’ কবিতাটি লিখে দিয়ে আসি। পাড়াগাঁর এমন নান্দনিক বর্ণনা, বাংলার এমন পরিশীলিত রূপচিত্রণ আমি কোথাও খুঁজে পাই না আর। উপমা ও উদাহরণের অজস্রতা দিয়ে ধুয়ে খোলতাই ফোটানো অতুলনীয় রূপের এই পসরা বড়োই কোমল, মুগ্ধতাঘণ, সুক্ষ্ণ ইন্দ্রিয়ানুভূতির যুথচারী অনুরণনে সিনেস্থেসিয়াগ্রস্থ। যেন একটির পর একটি ছবি এঁকে গেছেন তিনি নির্মোহ সততায়, ‘কোন সাধ নেই তার ফসলের তরে’। ‘আমরা হেঁটেছি যারা...আমরা বেসেছি যারা...আমরা দেখেছি যারা, আমরা বুঝেছি যারা...’ এইসব সর্বনামের প্রতিটি ইন্দ্রিয়যোগে আত্মস্থ করা সেই ছবিগুলির রঙ ও গন্ধ আমাদের বিশ্লেষণের বুদ্ধিগত পথে পরিচালিত করে না, টেনে নিয়ে যায় প্রখর-তীব্র-সজাগ অনুভূতির এক প্রশান্ত জগতে, মগ্ন-চেতন ইন্দ্রিয়ালোকে, মাদকতাময়-দামি-দেশি এসেন্সের একটি বিহ্বল করা আবেশ আমাদের বুঁদ করে রাখে, বিবশ করে রাখে অপরূপ স্বপ্নাচ্ছন্নতায়। সেই সাথে আমাদের সবকটি ইন্দ্রিয় শৈল্পিক প্রাখর্যে থাকে সুনিবিড় সজাগ। উদ্ধৃত করা যাকঃ

দেখেছি সবুজ পাতা অঘ্রানের অন্ধকারে হয়েছে হলুদ,
হিজলের জানালায় আলো আর বুলবুলি করিয়াছে খেলা,
ইঁদুর শীতের রাতে রেশমের মতো রোমে মাখিয়াছে খুদ,
চালের ধুসর গন্ধে তরঙ্গেরা রূপ হয়ে ঝরেছে দু’বেলা
নির্জন মাছের চোখে;—পুকুরের পাড়ে হাঁস সন্ধ্যার আঁধারে
পেয়েছে ঘুমের ঘ্রাণ—মেয়েলি হাতের স্পর্শ লয়ে গেছে তারে;
[চতুর্থ স্তবক]

মিনারের মতো মেঘ সোনালী চিলেরে তার জানালায় ডাকে,
বেতের লতার নিচে চড়ুয়ের ডিম যেন শক্ত হয়ে আছে,
নরম জলের গন্ধ দিয়ে নদী বার-বার তার তীরটিরে মাখে,
খড়ের চালের ছায়া গাঢ় রাতে জ্যোৎস্নার উঠানে পড়িয়াছে;
বাতাসে ঝিঁঝির গন্ধ—বৈশাখের প্রান্তরের সবুজ বাতাসে:
নীলাভ নোনার বুকে ঘণ রস গাঢ় আকাঙ্ক্ষায় নেমে আসে;
[পঞ্চম স্তবক]

আমরা দেখেছি যারা নিবিড় বটের নিচে লাল লাল ফল
প’ড়ে আছে; নির্জন মাঠের ভিড় মুখ দেখে নদীর ভিতরে;
যত নীল আকাশেরা রয়ে গেছে খুঁজে ফেরে আরো নীল আকাশের তল;
পথে পথে দেখিয়াছি মৃদু চোখ ছায়া ফেলে পৃথিবীর ’পরে;
আমরা দেখেছি যারা সুপুরির সারি বেয়ে সন্ধ্যা আসে রোজ,
প্রতিদিন ভোর আসে ধানের গুচ্ছের মতো সবুজ সহজ;
[ষষ্ঠ স্তবক]

এই কবিতার যে বিষয়টি আমায় ইদানীং ভাবাচ্ছে তা হলো যতিচিহ্নের ব্যবহার। দাঁড়ি ব্যবহৃত হয়েছে মাত্র একটি, শেষ দু’লাইনের আগে, যেখানে আমি মনে করি, একটি দীর্ঘ ও নিবিড় পর্যবেক্ষনের পরিসমাপ্তি ঘটেছে। প্রতি স্তবকের শেষে (শেষ স্তবক ব্যতীত) একটি করে সেমিকোলন যেন বর্ণনার ধারাবাহিকতা রক্ষায় বিনিসুতো মালার সংযোগস্থল। আটটি স্তবকের মধ্যে ছয়টিরই শুরু হয়েছে ‘আমরা’ শব্দ-সহযোগে, কবি যেন একনিষ্ঠভাবেই নিজের মুখোমুখি। চতুর্থ স্তবকে তা উহ্য থাকলেও স্তবকটিতে কবির প্রকাশভংগী ব্যক্তিক। পঞ্চম স্তবকে এসে কবি কিছুটা নৈর্ব্যক্তিক হয়তোবা, দূরে দাঁড়ানো দর্শকের মতো, যিনি দেখেন ও বর্ণনা করেন। কবিতাটি ড্যাস, কমা-ড্যাস, সেমিকোলন-ড্যাসে ভরপুর, যেন নিবিষ্টমনে মালা গেঁথেই চলেছেন নিপুন মালাকার এক। কোলন দু’টি, প্রশ্নবোধক চিহ্ন দু’টি, ভাববোধক চিহ্নও দু’টি; দ্বিতীয় স্তবকে একটি, পরিসমাপ্তিতে অন্যটি। সে বিষয়ে অন্যত্র আলোচনা করা যাবে।

তিথীডোরের লেখায় পাই, “উড়তে না জানলে পাখির আবার কদর কিসের?” বোধকরি, আকাশে উড়ন্ত পাখিরাই জীবনানন্দকে বেশী নাড়া দিয়েছে। উদ্ধৃত করিঃ

ওই দিকে শোনা যায় সমুদ্রের স্বর,
স্কাইলাইট মাথার উপর,
আকাশে পাখিরা কথা কয় পরস্পর।
তারপর চ’লে যায় কোথায় আকাশে?
তাদের ডানার ঘ্রাণ চারিদিকে ভাসে!
[ধুসর পান্ডুলিপি, ‘পাখিরা’, জীবনানন্দ দাশ’]

জীবনানন্দের কবিতায় পাখিদের কত মাতামাতি, তিথীডোরের জবানীতে, “ম্যালা পাখির বাসা”। চিল, শকুন, সিন্ধুসারস, পেঁচা, লক্ষ্ণী পেঁচা, শালিখ, হাঁস, বনহংস, রাঙা বক, ধবল বক, কাক, বুলবুলি, মাছরাঙা, চড়ুই, সারস, দোয়েল, শঙ্খচিল, খঞ্জনা, কাকাতুয়া, কোকিল। সব মিলিয়ে বিচিত্র পাখ-পাখালীতে ভরা ‘এই সব নিভৃত কুহক’ দেখার পর আমাদের আর কীইবা দেখার অবশিষ্ট থাকে মৃত্যুর আগে?
-----------------------------------
যে মাঠে ফসল নাই তাহার শিয়রে
চুপে দাঁড়ায়েছে চাঁদ — কোনো সাধ নাই তার ফসলের তরে;

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তিথীডোর এর ছবি

"আজকে অনেক রূঢ় রৌদ্রের ঘুরে প্রাণ
পৃথিবীর মানুষকে মানুষের মতো
ভালোবাসা দিতে গিয়ে তবু,
দেখেছি আমারি হাতে হয়তো নিহত
ভাই বোন বন্ধু পরিজন পড়ে আছে;
পৃথিবীর গভীর গভীরতর অসুখ এখন;
মানুষ তবুও ঋণী পৃথিবীরই কাছে।"

মন্তব্যে গুরু গুরু!
কৃতজ্ঞতা জানবেন। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

জুয়েইরিযাহ মউ এর ছবি

ভালো লাগলো পড়ে যেতে যেতে... চলুক

-----------------------------------------------------------------
নির্জলা নৈবেদ্য


-----------------------------------------------------------------------------------------------------

" ছেলেবেলা থেকেই আমি নিজেকে শুধু নষ্ট হতে দিয়েছি, ভেসে যেতে দিয়েছি, উড়িয়ে-পুড়িয়ে দিতে চেয়েছি নিজেকে। দ্বিধা আর শঙ্কা, এই নিয়েই আমি এক বিতিকিচ্ছিরি

তিথীডোর এর ছবি

থ্যাঙকুশ!! দেঁতো হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

মন খারাপ হলে আমিও চলে যাই জীবন বাবুর কাছে।
ভালো লাগলো খুব তিথী...

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তিথীডোর এর ছবি

মন ভালো নেই....
মন ভালো হয় না...

থ্যাঙ্কু শি'পু! হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব সুন্দর!!!

- মোহনা

তিথীডোর এর ছবি

ধন্যবাদ! হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তানিম এহসান এর ছবি

ভাই তিথীডোর, সবগুলো মন্তব্যও পড়লাম, তবু মনে হচ্ছে কোথায় কি যেন বলা হলোনা, কোথাও আরো কিছু বলা হলে লেখাটি পড়ে যে আবেশ তৈরী হয়েছে তা পূর্ণতা পেত। অথবা, পূর্ণতা পায়নি দেখেই আবেশটা আবেশিত। জানিনা, শুধু বলতে পারি, যে আবেশে হাতের আঙুল বেয়ে বেয়ে সহজ নুপুরের মতন অবিরল ধারায় শব্দগুলো বুনে গেছেন, সে আবেশের মর্ম শব্দের গঠনে পঠন-পাঠনে যতটানা বোঝা গেছে তার চাইতে ঢের বেশী রয়ে গেছে আপনার কাছেই। আপনার এ আবেশের জয় হোক! অভিনন্দন!!

তিথীডোর এর ছবি

''আমি অতো তাড়াতাড়ি কোথাও যেতে চাই না;
আমার জীবন যা চায় সেখানে হেঁটে হেঁটে পৌঁছুবার, পৌঁছে অনেকক্ষণ ব'সে অপেক্ষা করবার অবসর আছে।
জীবনের বিবিধ অত্যাশ্চর্য সফলতার উত্তেজনা অন্য সবাই এসে বহন করুক..
আমি প্রয়োজন বোধ করি না।
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে নক্ষত্রের নিচে।''

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

কৌস্তুভ এর ছবি

p.s., তিথী ভাই নয়, বোন... দেঁতো হাসি

অপছন্দনীয় এর ছবি

এবং একেবারেই পিচ্চি একটি বোন - এখনো শৈশবোত্তীর্ণ হয়নি খাইছে

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার হয়েছে কী, খালিখালি আমাদের ছোট বোনটার পিছে লাগেন? সে যে রেগে গেলে কানাডা গিয়ে আপনাকে পিটিয়ে রুমালিরুটি করে দিয়ে আসবে, সে ডর নাই?

তিথীডোর এর ছবি

'এর থেকে ঢের ভালো ছোট হয়ে থাকা, শুধু ঘুম, শুধু গান, খেলা আর আঁকা...
অথবা হঠাৎ কোনও মন্ত্রের বলে, একেবারে মিশে যাওয়া বড়দের দলে।
দুপুরে গল্প-ঘুম, সন্ধেয় টিভি, কেমন ভাবনাহীন মজার পৃথিবী--
ওগো ঈশ্বর, ওগো অন্তরতর... হয় দাও ছোট করে, নয় খুব বড়!'
#টুপুরের প্রার্থনা: প্রণবকুমার মুখোপাধ্যায়

মনটন খ্রাপ.. তাই আরকিছু আপাতত না বলি। মন খারাপ

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

কৌস্তুভ এর ছবি

কবিতা (গুড়)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।