'পথের কবি' : এ পথে যে আমি গেছি বার বার..

তিথীডোর এর ছবি
লিখেছেন তিথীডোর (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৯/১২/২০১১ - ১১:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নিম্নবুদ্ধিমত্তাজনিত কারণে পড়াশোনার গণ্ডি অতীব সীমিত বলে অনেককিছু নিয়েই আমি বেশ কমপ্লেক্সে ভুগি।
প্রিয় কিছু নিয়ে কেউ দু-চার লাইন লিখতে বললেও তাই কী বোর্ড‌‌ তোতলায়, পারবো তো? মন খারাপ

পছন্দের বই কিংবা মানুষকে নিয়ে লেখা সহজ নয়, যদি সংখ্যাটা খুব বেশি বা খুব কম হয়ে থাকে-- উভয়ক্ষেত্রেই। ভাল লাগা বই নিঃসন্দেহে অসংখ্য, অসংখ্য এবং অসংখ্য। তবে সবচেয়ে বেশি ভালবাসা নিয়ে বার বার যে লেখকের কাছে ফিরে যাওয়া তিনি নিছক লেখক নন। কবি।
কেবল মাত্রা কিংবা ছন্দে বদ্ধ নন, তার কাব্যময়তার সুর বর্ণে এবং গন্ধেও। 'কালকাসুন্দি, ঘেঁটু, পুঁই, মুথাঘাস, কাশ, শরবন, শালুক, শ্যাওলা, ডুমুর, চালতা, গোলঞ্চ, হেলেঞ্চা, কলমি প্রভৃতির সবুজে যে এতো রং, এত মনোরম সুবাস-- তা আমরা কোনওদিন জানতে পেতাম কি?' যদি না পেতাম বিভূতিকে, পথের কবি যিনি : বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসি

‘সূর্য পূর্বদিকে ওঠে’ [রোজ কেয়ামতের দিনের কথা বাদ] কিংবা ‘হাতি তৃণভোজী প্রাণী’-- এই টাইপের চিরন্তন সত্যগুলোর মতো বিভূতিবাবুর একটা বই প্রায় সব বাঙালীই বোধহয় পড়েছেন। 'পথের পাঁচালী'। অন্নদাশঙ্কর রায়ের কথায়—

বাংলা উপন্যাসের ছোট একটা তালিকা করলেও পথের পাঁচালীকে বাদ দেওয়া অসম্ভব। দশখানার মধ্যে একখানা তো বটেই, পাঁচখানার মধ্যেও একখানা।

একজনকে অবশ্য পেয়েছিলাম, যে স্কলারশিপের টাকায় উপহার দেওয়া এই পুস্তকখানার তিনপাতায় পৌঁছে হাল ছেড়ে দিয়েছিল!
হা হতোস্মি!!

জিতেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন--

যাদের বই পড়ার অভ্যাস আছে, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে চিন্তা করার অভ্যাস বিশেষ নেই, তাঁরা মনে মনে বিভূতিভূষণের সাহিত্যধর্ম সমন্ধে কতকগুলো ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে থাকেন। তাঁদের মতে, বিভূতি রচনাবলী থেকে তারা প্রচুর পরিমাণে আনন্দ আহরণ করতে পারেন সত্য, কিন্তু এ আনন্দ বাস্তবতা-বিরোধী, জীবন- পলাতক, অতি- রোমান্টিক আনন্দ।

হয়তো তাই। জিততে চাওয়া দুঃসাহসীদের কাছে বারবার হেরে গিয়ে ছোট্ট ঘুপচিতে বন্দী জীবন [প্রায়] কাটিয়ে দিয়েছি বলেই হয়তো নামিদামি ওয়ার্ল্ড ক্লাসিকের চাইতে মন খারাপের দুপুরগুলোতে চুইংগাম কিংবা টকঝাল আচারের জ্যাকেট জিবে চড়িয়ে বারবার…বারবার ডুবেছি 'অপরাজিতে'। চরৈবেতি মন্ত্রে দুঃখের মেঘে ছাওয়া ‘আরণ্যকের’ আকাশে কোথাও কেউ একটানা বাজিয়ে গেছে ‘আম আঁটির ভেঁপু’।
শীতের সন্ধ্যায় পরীক্ষা ফুরানোর খুশিতে লেপের ওম মেখে শিউরে উঠেছি সিংহের গর্জনে। মরীচিকার ছলনা ডিঙিয়ে শংকর পারবে তো ‘চাঁদের পাহাড়’ পেরিয়ে দেশে ফিরে আসতে?

পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন-- মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে, বীরু রায়ের বটতলায় কী ধলচিতের খেয়াঘাটের সীমানায়।
সোনাডাঙা মাঠ ছাড়িয়ে, ইছামতী পার হয়ে, পদ্মফুলে ভরা মধুমতী বিলের পাশ কাটিয়ে, বেত্রবতীর খেয়ায় পাড়ি দিয়ে পথ আমার চলে গেল সামনে.. সামনে.. শুধুই সামনে।

স্মৃতিমেদুর পরাণবাউলের স্বভাব নিয়ে পথ পেরিয়ে যাওয়ার সময় বিভূতি দেখেছেন অনেককিছুই। নিজের জীবনপথের সেই কাব্যই তাঁর যাবতীয় লেখার ক্যানভাসে। অপুর চরিত্র বিভূতির নিজেরই শৈশব-কৈশোরের প্রতিচ্ছবি। সর্বজয়ার মধ্যে আছেন মাতৃদেবী মৃণালিনী, ইন্দিরঠাকরুনের মধ্যে মেনকা পিসি, হরিহরের মধ্যে পিতা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়।

হিসেবের খেরোখাতায় কালিকলমে নয়, মায়ার অঞ্জন দিয়ে তাঁর যাবতীয় লেখা মোড়ানো। খুব খাঁটি উঁচু দরের কথায় মন ভোলাবার জন্য সস্তাদরের রাঙতার সাজ পরানোর চেষ্টা নেই তাতে। ‘ইছামতী’র জলে নেই স্পিডবোটের ভটভটে ইঞ্জিনের কলরোল, ‘দৃষ্টিপ্রদীপে’ নেই পেট্রোম্যাক্সের ঝলমলে আলোর ঝিকিমিকি।
ঘরের কাছে, পথের কাছে ছড়িয়ে থাকা অজস্র চরিত্রকে হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভবে বিভূতি তুলে এনেছেন উপন্যাসে। 'আদর্শ হিন্দু হোটেল' নামের উপন্যাসখানাও বারাকপুরের পথে পরিচিত হাজারি ভট্টাচার্য নামের এক বামুনঠাকুরকে নিয়ে লেখা।

কলেজ জীবন থেকেই থিওসফিক্যাল সোসাইটির সভ্য বিভূতির প্রবল বিশ্বাস ছিল আধ্যাত্মিকতায়। সেই সুরে বাঁধা উপন্যাস 'দেবযান', যদিও আমার পছন্দের তালিকায় এর জায়গা অনেক তলার দিকে। অতিলৌকিক জগৎ সর্ম্পকে বিশ্বাস তার সমস্তজীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে প্রথম গল্প 'উপেক্ষিতা' থেকেই তার ছাপ সুপষ্ট। এই ধারাবাহিকতাতেই রচিত উপন্যাস 'তারানাথ তান্ত্রিক', ষোড়শীকান্ত চট্টোপাধ্যায় নামের এক ভৈরবী শিষ্যের আদলে যে চরিত্রটি চিত্রিত।

প্রিয় তালিকায় আরো আছে উপন্যাস 'দুই বাড়ী' আর 'অশনি সংকেত'। অনেকদিন ধরে খুঁজছি 'বিপিনের সংসার, কেদার রাজা, অথৈ জল আর দম্পতি’। কেউ [নরম/ শক্ত চোখ টিপি ] সংগ্রহসুত্র পাঠাইলে/জানাইলে কৃতজ্ঞ থাকিব।

প্রকৃতি আর মানুষের মাঝের সম্পর্কের রহস্যময় মাধুর্যের যে স্পর্শ বিভূতির লেখা গল্প কিংবা উপন্যাসে ছড়ানো, তা বারবার মনে করিয়ে দেয় আমার অতি প্রিয় এক কবির কথা। নির্জনতা যাঁর কাব্যের মূলে প্রোথিত, জীবনানন্দ দাশহাসি

কবি না হয়েও কবিতার মতো যাঁর ভাষা চিত্ররূপময় সেই বিভূতির সবগুলো গল্পও অবশ্য এখনো পড়া হয়নি। কিশোরপাঠ্য গল্পের মধ্যে প্রিয় 'তালনবমী'। বিশেষভাবে ভাল লাগা গল্প 'পুঁইমাচা' আর 'মেঘমল্লার'

বিভূতিভূষণের বর্হিজীবন আর অন্তর্জীবনের এক অসামান্য আলেখ্য কিশলয় ঠাকুরের লেখা জীবনীগ্রন্থ 'পথের কবি।' যা অবিমিশ্রিত মুগ্দ্ধতায় পরপর দুবার পাঠের প্রতিক্রিয়া হিসেবে ছ্যাঁচা খাওয়ার সমূহ সম্ভাবনা নিয়েও এই আবজাব পোস্ট দেওয়া।

যুগে যুগে অপরাজিত জীবন রহস্য কী অর্পূব মহিমাতেই আবার আত্মপ্রকাশ করে!

পরাজিত পদাবলীর ভারে ক্লিষ্ট ২০১১ শেষে আরেকটা বছরের শুরু হচ্ছে শিগগিরই।

সচলায়তনের সব লেখক- পাঠকদের নুতন বছরের আগাম শুভেচ্ছা। হাসি

ছবি: 
24/10/2009 - 12:25অপরাহ্ন

মন্তব্য

নাঈম এর ছবি

নাহ! আপনার জ্বালায় আর বাঁচা গেল না। গত এক মাসে বিভূতির চারটা বই কিনলাম, "দুই বাড়ী" শাহবাগে খুইজা পাই নাই, আবার একগাদা নাম ধরাইয়া দিছেন। ওঁয়া ওঁয়া
আপনে খুব খ্রাপ দেঁতো হাসি

তিথীডোর এর ছবি

'অশনি সংকেত' বইটার নাম উল্লেখ করতে ভুলে গিয়েছিলাম রে ভাই,
সেটাও এখন জুড়ে দিয়েছি। খাইছে

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তিথীডোর এর ছবি

দুই বাড়ী : পিডিএফ লিঙ্ক এখানে। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নাঈম এর ছবি

আরো একখানা....অ্যাঁ দেখি পাওয়া যায় কিনা। লিংকের জন্য আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
নতুন বছরের শুভেচ্ছা...

তিথীডোর এর ছবি

হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তাপস শর্মা এর ছবি

আলোচনা ভাল্লাগছে। উল্লেখিত বই এর কিছু কিছু পড়া আছে, আবার কিছু কিছু পড়া হয়নি... তবে পড়ব একদিন নিশ্চয়ই...

নতুন বছর আপনার ভালো কাটুক হাসি

তিথীডোর এর ছবি

কিশলয় ঠাকুরের এই বইটা কিন্তু 'অবশ্যপাঠ্য' গোত্রের, না পড়ে থাকলে পড়ে ফেলুন।
শুভ কামনার জন্য ধন্যবাদ দাদা। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তাপস শর্মা এর ছবি

আশনি সংকেত - জুড়ে দিলেন দেখে ভাল্লাগ্লো। জানিনা সবাই পথের পাঁচালির কথাই বেশী বলে। কিন্তু আমার কাছে পথের পাঁচালির চেয়েও আশনি সংকেত বেশী টানে...

আপনার উল্লেখিত কিশলয় ঠাকুরের পথের কবি বইটা পড়া হয়নি। আর যেহেতু আপনি 'অবশ্যপাঠ্য' এর ট্যাগ লাগিয়ে দিয়েছেন, তাহলে পড়তেই হয়। বলুন কোন প্রকাশনীর। দেখি ফেব্রুয়ারির বইমেলায় বাজেয়াপ্ত করা যায় কিনা হাসি

তিথীডোর এর ছবি

'পথের কবি'র প্রকাশক কলকাতার আনন্দ পাবলিশার্স। প্রথম প্রকাশ জুন ১৯৭৮। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

উচ্ছলা এর ছবি
তিথীডোর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- জিপসি আপু। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অনিকেত এর ছবি

তোর লেখার সবচেয়ে আকর্ষক দিকটা হল- মৌনমুখরতা, আত্মমগ্নতা।
তোর লেখা পড়লেই মনে হয় আরেহ, এইটা তো আমার লেখার কথা ছিল!
আমি নিশ্চিত এইখানে আরো অনেকেই এমনটা অনুভব করেন।
বিভূতিকে এমন চমৎকার শ্রদ্ধার্ঘ্য আর কখনো আমার চোখে পড়েনি--
এমন আরো আসুক, ক্রমশ নিজেই নিজেকে ছাড়িয়ে যা, পেরিয়ে যা আমাদের অশ্রু-বন-নদীর কোলাহল--
শুভেচ্ছা নিরন্তর

তিথীডোর এর ছবি

আর আপনার মন্তব্যের সবচেয়ে আকর্ষক দিকটা হল- এমন নিখাদ মায়ায় (অতি) প্রশংসা করেন, খুশিতে দাঁত বের করে হেসে ফেলতে ইচ্ছে করে। দেঁতো হাসি

কৃতজ্ঞতা ভাইয়া। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

শ্যামল এর ছবি

কতকগুলা পড়ি নাই, দাড়ান খুজতাছি।

তিথীডোর এর ছবি

'খোঁজ the Search?' খাইছে

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

আয়নামতি এর ছবি

অসম্ভব ভালো লাগলো তিথী! নতুন বছরের শুভেচ্ছা থাকলো প্রিয় বালিকা হাসি

তিথীডোর এর ছবি

অনে-কদিন পর বায়নামতিদিকে দেখে তিথী বহুৎ খুশ হুয়া! দেঁতো হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

আয়নামতি এর ছবি

ও খুকি, 'কিশলয় ঠাকুর' তো আমি পড়িনি, কি হবে আমার ওঁয়া ওঁয়া ইয়ে এটার পিডিএফ লিঙ্ক দেয়া যায় না দেঁতো হাসি

তিথীডোর এর ছবি

ক) পিডিএফে চোখ খ্রাপ হয়, ওটা বুড়োদের না পড়াই ভাল। দেঁতো হাসি
খ) 'বই কিনে কেউ কখনো দেউলে হয় না'। খাইছে
গ) খুকি? ওঁয়া ওঁয়া
'নাদের আলি, আমি আর কবে বড় হবো!' অ্যাঁ

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

আয়নামতি এর ছবি

বয়স না হয় একটু বাড়তির দিকেই, তাতে করে বুড়ি হতে পারি, কিন্তু তাই বলে বুড়ো! বলি ব্যাকরণ কি ঘুলে খাওয়া হয়েছে শয়তানী হাসি হিহিহিহি...এত ভোরে ভোরে শিশির মাড়িয়ে এলে যে বড়! নাও মিস্টি মেয়ের জন্য মিস্টি একটা গান উপ্পহার http://youtu.be/dRBckbKj2Wo

তিথীডোর এর ছবি

নাও, বিভূতিকে নিয়ে গাওয়া কবীর সুমনের গান : এই পথে একদিন হাঁটতেন বিভূতিভূষণ... হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

আয়নামতি এর ছবি

গানটা আগে শোনা হয়নি। গতরাতে শুনেছি। বেশ গান রে তিথী হাসি অনেক ধন্যবাদ (গুড়)

আশালতা এর ছবি

বুড়ো হয়েছি, চোখে না হলেও মনে চালশে পড়েছে। হাতড়ে দেখে খুব অবাক হলাম। বিভুতির লেখা আমি বোধ হয় পড়িনি রে। এইবার বইমেলায় বিভুতি মাস্ট।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

তিথীডোর এর ছবি

কস্কি মমিন!
অ্যাকাডেমিক লাইফে গাড্ডু খেলেও অপাঠ্য পুস্তকের বেলায় আমার মেমরি মাশাল্লাহ! খাইছে

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মাসুম এর ছবি

লেখাটা পড়ে ভাল লাগলো

তিথীডোর এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

shafi.m এর ছবি

পড়িনি, এক্টাও। পড়ব, কেনাও দুঃসাধ্য তবে বই কিনে দেওলিয়া হওয়া কঠিন আছে। আপাতত ডস্তেয়স্কি পড়ছি। এরপর টল্স্ট্য়, গান্স-জার্মস-স্টিল, চার্ল্স ডিকেন্স, আমেরিক্যেন গড্স আছে। পথের প্যাচালিটা পড়ার ইচ্ছে ছিল অনেক আগ থেকেই অবশ্য। বই সময় পেলেই কিনি, কিন্তু পড়ি বেশীরভাগই টিউবে-কাজের বা স্কুলের উদ্দ্যেশে পাড়ি দিতে দিতে পড়া। ছোটবেলায় আপুকে জোরে জোরে পড়তে শুনেছিলাম, "লাইফ ইজ নট এ বেড অব রোজ"; এখন জানি বইতে যা যা থাকে তা অনেক সময়ই সত্য হয়। কিন্তু, লা ভেটা এ বেলা!

শাফি।

তিথীডোর এর ছবি

আমি চুনোপুঁটি গোছের পাঠক, গান্স-জার্মস-স্টিল...এদের সঙ্গে সখ্যতা নেই। মন খারাপ

পাঠ ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

shafi.m এর ছবি

লজ্জা পেলাম। আপ্নি চুনোপুটি গোছের পাঠক যে নন সেটা সকল সচল/অতিথি/হাচল মাত্রই জানে। আমি পাঠক, তবে ভাল পাঠক, আপ্নাদের প্রায় সকল লেখাই মন দিয়ে পড়ি। আর গান্স-জার্মস-স্টিল আমিও এখনো পড়িনি, কিনে রেখেছি পড়ব তাই, জানি সখ্যতা হবে। বাংলা পড়ি, শিব্রাম, সুনিল, শীর্ষেন্দু এক্সময় গিলেছি। বাংলা তো আমার রক্তে, রক্ত কিভাবে অস্বিকার করি?

শাফি।

তিথীডোর এর ছবি

বাংলা তো আমার রক্তে, রক্ত কিভাবে অস্বীকার করি?

চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

জানি, বিভূতিভূষণ ও জীবনানন্দ দুজনেই তিথীর প্রিয়তম পাতা। তবে দেখি বিভূতিকে নিয়ে কেমন ছিল জীবনানন্দের মূল্যায়ন,

I think Bibhutibhusan, probably more circumsribed in his experience than Tarasankar has had in him the gift of high imagination and in his hand the novel--in one book at least--may be said to have achieved first-rate excellence. But the imagination of Bibhutibhusan despite its wonderful distinction is not of the Tolstoyan sort nor even is it of Jame's or Tagore's or Thomas Mann's keen and classice type, but is more sentimental and pensive and less chastened than theirs. Granting that this novelist's remarkable gift has not left him in these days, its special nature as just described will hardly allow the author to do anything but repeat the mood and perfection of Pather Panchali--his one outstanding book. His vitality is not of the kind of Tolstoy or Tagore that readily breaks up into new forms of greatness.
(Jibonanonda Das, 'The Bengali Novel Today')

বাংলা উপন্যাসের জগতে রবীন্দ্রনাথ ও শরৎচন্দ্রের পর যে চারজন লেখক আমার সবচেয়ে প্রিয় তাঁরা হলেন, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও অদ্বৈত মল্ল বর্মন। টলষ্টয়ের মহত্ব ছুঁতে না পারলেও এঁরা বেঁচে থাকবেন অনেকদিন, সন্দেহ কি?

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

তিথীডোর এর ছবি

ইয়ে ভাইয়া, অদ্বৈত মল্ল বর্মনের 'তিতাস একটি নদীর নাম' ছাড়া তো আর কিছু পড়িনি এখনো। ইয়ে, মানে...
বুদ্ধদেব বসুও আমার অনেক পছন্দের ঔপন্যাসিক।

সচল 'মহাস্থবির জাতক' কয়েকটা সুত্র দিলেন আজ। রুশতী সেনগুপ্তের লেখা আর বিভূতির জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে জয় গোস্বামীর সিরিজ কবিতা।
কিন্তু এত এত বই কে কিনে দেবে আমাকে? কে? কে? [দেয়ালে মাথা ঠোকার ইমো]

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

দময়ন্তী এর ছবি

আর 'মৌরীফুল'এর কথা কে বলবে? 'হীরা মাণিক জ্বলে'র কথাই বা কে বলবে হ্যাঁ তিথীখুকী?

বিভুতিভূষণের সমস্ত লেখালেখি মিত্র ও ঘোষ পাবলিশার্স রচনাবলী আকারে বের করেছেন|

লেখাটা খাসা

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

তিথীডোর এর ছবি

'মৌরীফুল আর হীরা মাণিক জ্বলে' এ দুটোও পড়েছি দিদি। হাসি
পড়া হয় নি ভ্রমণকাহিনী ও দিনলিপিগুলো [অভিযাত্রিক, স্মৃতির রেখা, তৃণাঙ্কুর, ঊর্মিমুখর, বনে পাহাড়ে, উৎকর্ণ, হে অরণ্য কথা কও]

কৃতজ্ঞতা। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

দময়ন্তী এর ছবি

চতুর্থ খন্ড| হাসি

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

তিথীডোর এর ছবি

কিনতে হবে। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

ফাহিম হাসান এর ছবি

কাব্যগন্ধী গদ্য, তবে এত চমৎকার একটা লেখা "যুবা" ট্যাগ কেন?

তিথীডোর এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি
ট্যাগ সরিয়ে দিলাম।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

কতকিছু যে পড়া হয়নি মন খারাপ
কম্পিউটার স্ক্রীন থেকে পড়তে পারি না বলে, এইমাত্র একটা কিন্ডল অর্ডার করলাম দেঁতো হাসি

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

তিথীডোর এর ছবি

আমি গরীব মানুষ। ল্যাপি পর্যন্ত নেই। ওঁয়া ওঁয়া
কিন্তু চোখ [এখনো] দারুণ ভাল, চশমাও লাগে না। চোখ টিপি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

হাওয়াইমিঠাই এর ছবি

এই ব্লগে শুধু পোকাদের বাস । এক একটা লিখা পড়ি আর মাথায় পুকা ঢুকে যায়। মনে হয় কতকিছুই না এখনো রয়ে গেল।
অদ্ভুত, চমৎকার, লোভনীয় ...

তিথীডোর এর ছবি

পোকা? হাসি
দিলেন তো মনে করিয়ে--

যা কিছু নিঃশব্দ, যা কিছু শব্দময়, যা কিছু দৃশ্যগোচর, দৃশ্যাতীত, সবকিছুই একজোট হয়ে হাত ধরাধরি করে ঘিরে ধরে, অদ্ভুত এক বাজনার তালে আস্ত একটি রাত মোমের মতো গলে পড়ে, পোকা শোনে, শুনতে পায়। পোকা পোকা হয়ে যায়।

#কালো বরফ : মাহমুদুল হক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

পদ্মজা এর ছবি

এই একজন ভদ্রলোকের কারণে আমার রেলসড়কের ফ্যান্টাসি কোনদিনও কাটলোনা।
আমার ছোট ভাইয়ের জন্য অন্ধ স্নেহ হয়তো অপুর কারনেই।
আরণ্যক আর পথের পাঁচালি মোহমুগ্ধ হয়ে থাকবো আজীবন।
লেখা মিষ্টি।

তিথীডোর এর ছবি

পথের পাঁচালি আমি কিছুদিন পরপরই পড়ি, ঘোর কাটে না।

একশত বৎসর একসঙ্গে থাকিলেও কেহ হয়তো আমার হৃদয়ের বাহিরে থাকিয়া যায়, যদি না কোনো বিশেষ ঘটনায় সে আমার হৃদয়ের কবাট খুলিতে পারে।

কী অদ্ভুত একটা লাইন!

অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনাকে। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তদানিন্তন পাঁঠা এর ছবি

বেশীরভাগই এখনো পড়া হয়ে উঠে নাই। মন খারাপ কবে যে ইট্টু টাইম পামু। লেখা উত্তম জাঝা! । নববর্ষের শুভেচ্ছা।

তিথীডোর এর ছবি

মন খারাপ 'সময় যা হাতে ছিল সবটাই শেষ....♪♪
পড়ে আছে শুধু অজস্র অসময়!'

শুভেচ্ছার জন্য ধন্যবাদ। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

তারেক অণু এর ছবি

গুল্লি প্রিয় লেখকের জন্য।
এমনভাবে প্রকৃতিকে বাংলা ভাষায় আর কেউই ফোটাতে পারেন নি। আহ পথের পাঁচালি, হা আরন্যক।

তিথীডোর এর ছবি

পাঠে কৃতজ্ঞতা অণু দ্য গামা ভাই। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

পথিক পরাণ এর ছবি

পাঠের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন- মূর্খ বালক- পাঠ তো তোমার কিছুই হয়নি? কি আর করা আপু! কত কি যে পড়ার বাকি রয়ে গেলো!

বিভূতির মতন আরেকজন লেখক প্রকৃতির ছবিটা বেশ কাছ থেকে আঁকেন বলে মনে হয়- বুদ্ধদেব গুহ।

আপনার এই সচল পাঁচালীটা একেবারে আরণ্যকের চাঁদের পাহাড় অপরাজিত হয়ে পেরিয়ে এসে ইছামতীর কোলে আদর্শ হিন্দু হোটেলে আয়েশ করে বসে দৃষ্টি প্রদীপ জ্বেলে অশনি সংকেত মুছে আম আঁটির ভেঁপু শুনতে শুনতে পুঁইমাচার টাটকা পুঁইয়ের সাথে ইলিশ মাছের মুড়োর ঘণ্ট খাবার মতো মুখরোচক হয়েছে...

তিথীডোর এর ছবি

বুদ্ধদেব গুহের মাধুকরী, কোজাগর আর শিকার কাহিনিগুলো চমৎকার।
তবে উনার কয়েকটা বই নেহায়েত ট্র্যাশ মনে হয়েছে আমার। ইয়ে, মানে...

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

পথিক পরাণ এর ছবি

আপু
আপনার এই সচল পাঁচালীটা আরণ্যকের চাঁদের পাহাড়ের অশনিসংকেত মুছে অপরাজিত হয়ে পেরিয়ে এসে ইছামতীর কূলে আদর্শ হিন্দু হোটেলে বসে মেঘমল্লারের পানে দৃষ্টি প্রদীপ মেলে আম আঁটির ভেঁপু শুনতে শুনতে পুঁইমাচার টাটকা পুঁইয়ের সাথে ইলিশ মাছের মুড়োর ঘণ্ট আয়েশ করে খাবার মতই উপাদেয় হয়েছে।

---------------------
পথেই আমার পথ হারিয়ে
চালচুলোহীন ছন্নছাড়া ঘুরছি ভীষণ...

তিথীডোর এর ছবি

আরণ্যকের চাঁদের পাহাড়ের অশনিসংকেত মুছে অপরাজিত হয়ে পেরিয়ে এসে ইছামতীর কূলে আদর্শ হিন্দু হোটেলে বসে মেঘমল্লারের পানে দৃষ্টি প্রদীপ মেলে আম আঁটির ভেঁপু শুনতে শুনতে পুঁইমাচার টাটকা পুঁইয়ের সাথে ইলিশ মাছের মুড়োর ঘণ্ট আয়েশ করে খাবার মতই

হাঃহাঃ...
ধন্যবাদ। হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।