যুগে যুগে কেয়ামত বেচে খাওয়ার অভিনব কায়দা

রংতুলি এর ছবি
লিখেছেন রংতুলি [অতিথি] (তারিখ: রবি, ০৯/১২/২০১২ - ১১:০৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দক্ষিন ফ্রান্সের ছোট্ট গ্রাম বুগারাশ। জনসংখ্যা খুব বেশী হলে দু'শর মত। কোলাহল থেকে দুরে শান্ত, স্নিগ্ধ, প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যে ভরা একটি গ্রাম বুগারাশ। কোন এক অদ্ভুত রহস্যজনক কারণে গত দু'বছর ধরে গ্রামটিতে বহিরাগতের সংখ্যা কিছুটা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়েছে। ছোট্ট গ্রামটির ধারণক্ষমতার বাইরে এরূপ দলে দলে পর্যটকের আগমনে শুরু থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে এখানকার মেয়র। জুল ভার্নের Journey to the Center of the Earth বা পাতাল অভিযানের বিখ্যাত সে পাহাড় যার ভেতরে লুকানো আছে পাতালে যাওয়ার রহস্যাবৃত এক পথ, যে পথের একমাথা দিয়ে ঢুকে আরেক মাথায় বেরুলে ঘটে যায় পারিপার্শ্বিকতার অভুতপূর্ব পরিবর্তন, সেই অজানা এক রহস্যপুরী ১২৩০ মিটার উঁচু পাহাড়টির নাম Pic De Bugarach। আর এই বুগারাশ পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত গ্রামটিই হলো বুগারাশ। জুল ভার্নের আরেক দুঃসাহসী উপন্যাস Clovis Dardentor এও আছে যার উল্লেখ। বর্তমানে অঞ্চল্টিতে জড়ো হওয়া লাখখানেক দর্শনার্থীর প্রধান আকর্ষণ মূলত এই পাহাড়টিকে ঘিরেই। তাদের বিশ্বাস পাহাড়টির ভেতরে বাস্তবেই অন্যজগতে যাওয়ার কোনো লুকানো পথ আছে।

যথারীতি কিছু সুবিধাভোগী মানুষের তৎপরতাও শুরু হয়েছে সেখানে জোরেশোরে। চলছে অথেনটিক বুগারাশ পাথরের সেল, স্থানীয় জলপ্রপাতের পানি বুগারাশের চোখের জল নামে বিক্রি হচ্ছে এক বোতল £১৫। খুব সাধারণ কোন বাড়ির দাম হাঁকানো হচ্ছে রাত প্রতি £১২০০! কেউ আবার সহৃদয়বান ব্যক্তি নিজের পরিত্যক্ত বঞ্জর ভূমিটিকে ক্যাম্পিংয়ের জন্যে ছেড়ে দিচ্ছে মাত্র ৩২৪ পাউন্ডেই। রাতারাতি কাঁচা টাকা কামানোর মোক্ষম সুযোগ ছাড়ছে না রেস্টুরেন্টগুলোও, সেখানেও চলছে নানা অফার, নানা তকমা।

যাইহোক যে কারণে এতো শোরগোল সেটাই বলা হলো না এখন পর্যন্ত, আর তা হলো -- আদিম মায়াদের দীর্ঘ ক্যালেন্ডারে সমাপ্তি হিসেবে রেখে যাওয়া '২১ ডিসেম্বর ২০১২' এর ঘাপলা! একদল শুরু থেকেই কৌশলে হাওয়া ছড়িয়ে আসছে এই নির্দিষ্ট দিনটিই পৃথিবীর শেষ দিন অর্থাৎ রোজ কেয়ামত। সে হাওয়াকে বাণিজ্যিক রূপ দিতে বরাবরের মতই তৎপর কিছু অতি ধুরন্ধর সুযোগসন্ধানী চক্র -- ম্যাগাজিন কাভারেজ, ব্লক বাস্টার মুভি, মিথ বা গুজবপ্রেমীদের জন্যে মাল্টি-মিলিয়ন ডলার বাজেটের ইউটিউব প্রোডাকশন এবং তা থেকে আরো অনেকগুণ বেশি প্রফিট ইত্যাদি...

আর তারই শেষ প্রফিটটা গুণছে বর্তমানে বুগারাশের এই সুবিধাভোগীরা, যেখানে শুরু থেকেই ছড়ানো হয়েছে বুগারাশই পৃথিবীর একমাত্র স্থান যা '২১ ডিসেম্বর ২০১২' এর মহাপ্রলয়ের হাতে হতে রক্ষা পাবে। বিষয়টিকে ধর্মীয়ভাবেও সমর্থন করে, বুগারাশকে ঈশ্বরের করুণাপ্রাপ্ত বিশেষ পবিত্রস্থান হিসেবে দাবি করেও আসছে একদল ধর্মযাজক। অনেকে আবার এই পাহাড়টিকে 'সুপার মাউন্টেন' হিসেবে উল্লেখ করে, তার চারপাশের রহস্য আরো ঘনীভুত করার চেষ্টা করছে, তাদের মতে পাহাড়টি ঘিরে আছে আশ্চর্য চৌম্বকীয় শক্তি, যা ভিনগ্রহীদের গোপন আস্তানা নির্দেশ করে। এমনকি তারা এখানে আশ্চর্যরকম রশ্মি, ভূগর্ভস্থ নানাবিধ শব্দ, সৈন্যসামন্ত, ফ্লাইং সসারের নিত্য যাওয়া-আসা দেখে বলেও দাবী করে। তারা এ পর্যন্ত কল্পনা করে রেখেছে যখন পৃথিবী ধ্বংস হবে, তখন এখানে অবস্থিত ভিনগ্রহীরা তাদের আস্তানাসমেত পুরো অঞ্চলটিকেই এখান থেকে তুলে নিয়ে যাবে, অতএব এভাবেই তারা নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাবে। অর্থাৎ যেকারণে কেয়ামতের ভয়ে দলে দলে লোক লোটা-বাটি হাতে পৌঁছাচ্ছে বুগারাশ পাহাড়ের সান্নিধ্যে!

'২১ ডিসেম্বরের ২০১২' সত্যি কি মায়ারা তাদের দীর্ঘ গণনায় এই দিনটিকে পৃথিবীর শেষদিন হিসেবে নির্ণয় করেছিলো?

আদিম মায়াদের রেখে যাওয়া ১,৩০০ বছর পুরনো এই ক্যালেন্ডারটিতে দিন গণনা শুরু করা হয়েছে খৃষ্টপূর্ব ৩১১৪ বছর থেকে যেখানে ৩৯৪ বছর সময়কালকে একেকটা 'বাকতুন' হিসেবে ধরা হয়েছে। মায়াদের কাছে ১৩ ছিলো একটা তাৎপর্যপূর্ণ সংখ্যা। আর ১৩ বাকতুন একটি তাৎপর্যপূর্ণ ফলক যা পূর্ণ হয় ৫,১২৫ বছরের দীর্ঘ গণনার পর ২১ ডিসেম্বর ২০১২-এর কাছাকাছি, যা একটি পূর্ণচক্র বা অব্দের সমাপ্তি নির্দেশ করে। মায়াদের এই হিসেব মতে আসছে ২১ ডিসেম্বর পৃথিবী একটি চক্র অতিক্রম করতে যাচ্ছে, এবং খুব স্বাভাবিকভাবেই যার পর আরেকটি নতুন চক্রের শুরু হওয়ার কথা। আমাদের প্রচলিত ক্যালেন্ডারের যেমন শেষ থাকে - '৩১ ডিসেম্বরের' পর কোনো মাস বা তারিখ থাকে না তারপর নতুন আর একটা বছরের শুরু হয় বিষয়টি খানিকটা সেরকম। অতএব ২১এ ডিসেম্বর পৃথিবীর শেষ দিন বা কেয়ামত এরকম কোনো ভবিষদ্বাণী মায়ারা করেনি, এটা স্রেফ একটা ভ্রান্ত ধারণা বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি মিথ!

এটা সত্য যে কেয়ামতকে চোখের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা এবং এটা নিয়ে জল্পনা-কল্পনাও মানুষের জন্যে নতুন কোন বিষয় নয়। যুগ যুগ ধরেই মানুষ অতি উৎসাহের সাথে পৃথবীর সম্ভাব্য ধ্বংসের একের পর এক দিন ধার্য করেই যাচ্ছে, লক্ষ্যণীয় যে এই ভবিষ্যৎবাণীগুলি ঠিক এমনভাবে করা হয় যেন, সেসময়ের প্রতিটি মানুষই সেই মহাপ্রলয়ের ভেতর নিজেকে দেখতে পায়, এবং নিজের করুণ পরিণতি ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। এবার দেখা যাক কেয়ামত নিয়ে অতীতের কিছু চাঞ্চল্যকর পূর্বানুমান বা ভবিষ্যৎবাণী --

১। ভিসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতঃ আমাদের আগে বুঝতে হবে, কেয়ামত বা পৃথিবীর শেষ বলতে আমরা আসলেই কি বুঝি? মৃত্যু, ধ্বংস? কিন্তু মৃত্যু, ধ্বংসের অর্থও মূলত সবসময় শেষ বা সমাপ্তি বোঝায় না। বরং অনেক সময় মৃত্যুও স্থান করে দেয় নতুন প্রাণের। ধ্বংসযজ্ঞের উপর জেগে উঠে নতুন প্রাঞ্জল সভ্যতার। এযাবৎ পৃথিবীর শেষ নিয়ে কিছুটা অভুতপূর্ব ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন প্রাচীন রোমান দার্শনিক সেনেকা যিনি মারা গিয়েছিলেন খৃষ্টপূর্ব ৬৫ সালে। এবং তার করা পৃথিবীর পরিসমাপ্তির অনুমানটি ছিলো, সমগ্র পৃথিবী ধোঁয়ায় ছেয়ে যাবে, যা খৃষ্টপূর্ব ৭৯ সালের ভিসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাত ও পম্পেইএর মতো নগরীর ধ্বংসলীলার সাথে মেলানো হয়, যেন এরকম কিছুই নির্দেশ করেছিলেন দার্শনিক সেনেকা। কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে এতো কিছুর পরেও শেষ কিন্তু আসেনি, এবং মানুষের জীবনও থেমে থাকেনি। বরং আরো দুই হাজার বছর পেরিয়ে মানুষ সেই ধ্বংসযজ্ঞের উপরই অবাক বিস্ময়ে খেয়াল করে নতুন প্রাণের স্রোত। "All we see and admire today will burn in the universal fire that ushers in a new, just, happy world,"

২। লন্ডনের বিশাল অগ্নিকান্ডঃ ইউরোপের খ্রীষ্টধর্মাবলম্বীরা ১৬৬৬ সালটি নিয়ে ভয়ে অস্থির ছিলো। কারণ বাইবেলে ৬৬৬ এই সংখ্যাটি অশুভ শক্তিধর শয়তানের সংখ্যা হিসেবে ধরা হয়। যা মেলানো হয় ১৯৬৫ সালে প্লেগ মাহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া এবং তার পরপরই যখন লন্ডনে ভয়াবহ আগ্নিকান্ডের ঘটনার সাথে। মানুষ ভেবেছিলো ঈশ্বরের অভিশাপ কেয়ামতের রূপ নিয়ে নেমে এসে সবকিছু তছনছ করে দিয়ে গেছে। অথচ তারপরেও কেটে গেছে আরো কয়েক শতাব্দী। কিন্তু 'শেষ', সে কোথায়? লন্ডনসহ পুরো পৃথিবীই তো আছে এখনো দিব্যি!

৩। ১৯১০ সাল, হ্যালির ধূমকেতুঃ হ্যালির ধূমকেতুর আবির্ভাব হয় প্রতি ৭৬ বছর পরপর। যাকে ইতিহাসে বরাবরই দুর্যোগের শকুন হিসেবে মনে করা হয়েছে। ১৯১০ সালে এটি আবির্ভাব হলে ইউরোপ-আমেরিকায় ব্যাপক সোরগোল পড়ে যায় যে এটার লেজে এমন বিষাক্ত গ্যাস আছে যার কারণে পৃথিবীর মানুষের ভয়ানক হিস্টিরিয়া শুরু হবে। ফ্রান্সের জ্যোতির্বিজ্ঞানী Camille Flammarion ভবিষ্যৎবাণী করে বসলো যে, এর প্রভাব পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের উপর এতো ভয়াবহ হবে যে, সব প্রাণই হুমকির মুখে পড়ে বিনাশ হবে। যথারীতি মায়া ক্যালেন্ডার কন্সপিরেসির মতই এখানেও কিছু সুবিধাবাদী চক্র এই ভবিষ্যৎবাণীর ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করতে থাকে -- মাস্ক, কমেট পিল, স্কাই রকেট, অক্সিজেন ইত্যাদির রমরমা ব্যবসা শুরু হয়ে যায়। মানুষও নিজেকে ও নিজের পরিবার রক্ষার তাগিদে ধূমকেতুর অতিক্রমের পুরো সময়টা ধরে নিজ বাসায় এসবের সরবরাহ মজুদ রাখে। বিশেষ করে রোমে এমনটা বেশি হয়েছিলো।

৪। হেল-বব ধূমকেতুঃ এই অতি-উজ্জল ধূমকেতুটিকে আবিষ্কার হয় ১৯৯৫ সালে, এবং পৃথিবী থেকে এটিকে শেষ দেখা যায় ১৯৯৭ সা্লের মার্চ অব্দি। যাকে স্বরণ করা হয় এক করুন পরিহাসের ইতিহাস হিসেবে! এক ধর্মীয় গ্রুপ থেকে এই ধূমকেতুকে স্বর্গের দ্বার হিসেবে বিশ্বাস করা হয়ে আসছিলো, তাদের মতে পৃথিবী পরিচালিত হচ্ছে শয়তানের দ্বারা এবং খুব শীঘ্র শয়তান সবকিছুই ধ্বংস করে দিবে এবং এর থেকে উদ্ধারের একমাত্র উপায় হলো স্বর্গের উড়ন্ত দ্বারে আশ্রয় নেয়া। ক্যালিফোর্নিয়ার পাশ দিয়ে যখন এটি অতিক্রম করে তখন সেখানে ৩৯ জন মানুষ আত্নহত্যা করছিলো, পৃথিবীর প্রলয়কারী ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেতে বা ডাইরেক্ট স্বর্গে যাওয়ার আশায়। মায়া ক্যালেন্ডারে অনুমিত শেষদিন ২১ ডিসেম্বরের ২০১২ এ কেয়ামতের হাত থেকে রক্ষা পেতেও অনেকে আগে থেকেই এরকম আত্নহুত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। বিস্তারিত এখানে

৫। ৫-ই মে ২০০০ সালে সৌরজগতের পাঁচটি গ্রহের সারিবদ্ধ হওয়ার ঘটনাঃ এটা বেশীদিন আগের ঘটনা নয় বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনি সৌরজগতের এই পাঁচটি গ্রহ সূর্য ও চন্দ্রের সাথে সরল রেখায় আসার ঘটনা জন্ম দেয় রোজকেয়ামতের মোটা-তাগড়া এক পূর্বাভাসের। কেউ অনুমান করে পুরো পৃথিবী বরফে ছেয়ে যাবে, আবার কারো মতে - ভয়াবহ ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাত, পৃথিবীতে নানা যায়গায় ফাটল দেখা দিবে... আতঙ্কে জমে যাওয়ার মত অবস্থা হয়েছিলো আমাদের অনেকের। আমরা তিন ভাইবোন মিলে একটা চিঠি লিখে জ্যামের বয়ামেও ভরে রেখেছিলাম! এখন যদিও হাসি পায় ঘটনাটা মনে পড়লে, কিন্তু বাস্তবতা হলো, মানুষের এই অনুভূতি বা আতংককে পুঞ্জি করেই যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এসব কেয়ামতকে বেচে খাওয়া বাণিজ্য। তারপরেও এই বুড়ো গ্রহটা রয়ে গেছে বহাল তবিয়তে।

এবার ২১ ডিসেম্বর নিয়ে তৈরি হওয়া নানা হাইপোথিসিস, ভুয়া বিজ্ঞান বা 'pseudo-science' এর তেলেসমাতিঃ ২০১২ সালের কেয়ামতের গুজব বন্য আগুনের মতই অতি দ্রুত নানা শাখাপ্রশাখায় ছড়িয়ে পড়তে মূলত ঘিয়ের কাজ করে '2012' এর মত ব্লকবাস্টার মুভি ও বিজ্ঞানকে বিকৃতকরণের মাধ্যমে সহজে এই মিথ মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলে ধরায় ব্যবহৃত বর্তমান প্রযুক্তি। সিউডো সাইন্সের হাইপোথিসিস মতে ২১ এ ডিসেম্বর পৃথিবী সম্ভাব্য ধ্বংসের কিছু বিস্ময়কর কল্পনার দৌড় -

১। পৃথিবীর সাথে নিবিরু অথবা প্ল্যানেট এক্স এর সংঘর্ষঃ এই গল্পটার শুরুই হয়েছিলো সুমেরীয়দের তথাকথিত গ্রহ নিবিরু আবিষ্কারের পর থেকে। শুরু থেকেই এই গ্রহটিকেও কেয়ামতের মতই পৃথিবীর উপর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয়েছিলো ২০০৩ সালের মে-তে এটা পৃথিবীর উপর আছড়ে পরবে যখন এরকম কিছুই ঘটলো না তারপর মায়া ক্যালেন্ডারের ২১ ডিসেম্বর ২০১২ এর কেয়ামতের হাইপোথিসিসের সাথে সুমেরীয় নিবিরুকে যোগ করা হলো। নিবিরু বা প্লানেট এক্স এর মত গ্রহের অস্তিত্ব যদি বাস্তবেই থাকত এবং পৃথিবীর সাথে সংঘর্ষের অপেক্ষায় থাকত তো একটা অন্তত কয়েক দশক আগেই জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করতো, আর এতদিনে তো এটাকে সবাই খালি চোখেই দেখতে পেতো।

২। উল্কাপিন্ডের তাণ্ডবঃ পৃথিবীতে এই উল্কা বা গ্রহাণুর আঘাতেই একসময় ডাইনোসরের মত প্রাণীর বিলুপ্তি ঘটেছে ৬৫ মিলিয়ন বছর আগেই অতএব পৃথিবী ধ্বংস বা কেয়ামতের সাথে এই উল্কাঝড় বেশ যায়। কিন্তু নাসার বেরসিক জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা Spaceguard Survey নামে এক জরিপ পরিচালনা করে আসছে, যার কাজ হলো পৃথিবীর কাছের যেকোনো গ্রহাণুর অস্তিত্ব খুঁজে বের করা এবং প্রয়োজনে পৃথিবীতে কোনো হুমকী সৃষ্টির আগেই সেটিকে ধ্বংস করা। সেখান থেকেও নিশ্চিত করা হয়েছে আপাতত এক্সাইটেড হওয়ার মত কিছুই ঘটছে না, অর্থাৎ ২০১২ সালে কোনো উল্কা, ধূমকেতু, গ্রহাণু কিছুই পৃথিবীতে আঘাত করছে না। এই প্রক্রিয়াটি এতোই সোজাসাপ্টা যে আপনি নিজেও রোজ এখানে আপডেট পেতে পারেন NASA Near-Earth Object Program Office website।

৩। ধ্বংসাত্মক সৌরঝড়ঃ সূর্যে সৃষ্টি হওয়া প্রলঙ্কারী সৌর ঝড়ের একটি শিখাই যথেষ্ট পৃথিবীকে পুড়িয়ে ছার-খার করতে! আইডিয়াটা খারাপ না তবে সমস্যা হলো - সৌর গতিবিধি একটি নির্দিষ্ট চক্রের মধ্যেই আবর্তিত হয়, যা প্রতি এগারো বছরের কাছাকাছি সময় ঘটে থাকে। এই সময় সূর্যের সৃষ্টি হওয়া এই আগুনের ঝড় বড়জোরউপগ্রহনির্ভর যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ক্ষতি করতে পারে, তবে বর্তমানে গবেষকরা চেষ্টা করছে কিভাবে আরো প্রটেক্টেড সোলার স্টর্ম ইলেক্ট্রনিকস তৈরি করা যায়। বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছে ২০১২ সালে সৌরঝড়ের তেমন কোন ঝুঁকি নাই। পরবর্তী সৌরঝড় ২০১২ থেকে ২০১৪ এই ফ্রেমে ঘটবে, যা একটা স্বাভাবিক সৌর-চক্রের মতই অনুমান করা হচ্ছে। মানে এর সাথে অতীতের সৌরচক্রগুলোর কোন তফাৎ থাকবে না। আরো জানুন এখানে

৪। পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ চৌম্বকীয় রদবদলঃ আগেই বলেছি বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির যুগে গুজব-বেচনেওয়ালারা ইনোভেটিভ উপায়ে অধিক গ্রহণযোগ্য করে টোপ ফেলে মানুষকে বোকা বানিয়ে থাকে। ২১শে ডিসেম্বরের কেয়ামতের হাইপোথিসিসের সাথে আর এক ইনোভেটিভ সংযোজন হলো পৃথিবীর কোরের চৌম্বকীয় ক্ষেত্রে বিশাল পরিবর্তন, যার প্রভাবে পৃথিবীর উপরিভাগ পুরাই ওলটপালট হয়ে যাবে, যেমন - উত্তর মেরু হয়ে যাবে দক্ষিণ মেরু, আর দক্ষিণ মেরু হয়ে যাবে উত্তর মেরু। কেয়ামত যেন সাক্ষাৎ পৃথিবীর মাটি ফুঁড়ে উঠে আসবে। ক্ষতিকর মহাজাগতিক রশ্মিগুলো আর ফিরিয়ে দেয়ার শক্তি আর এই গ্রহটার থাকবে না, স্যাটেলাইটগুলোও তাদের কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যাবে। তাহলে কি হবে? আমাদের যাবতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা - সবই এগুলোর ওপর নির্ভরশীল, তাই সবই বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। জিপিএস ছাড়া পৃথিবীর বিমানগুলো উড়তে পারবে না, মাটিতে বসে হাওয়া খাবে ইত্যাদি.. পৃথিবীতে দেখা দেবে বিশৃঙ্খলা, মৃত্যু, বিপর্যয়, কেয়ামত। নাসা বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীর সবকিছু এভাবে আচমকা উল্টেপাল্টে যাওয়াটা পুরো অসম্ভব একটা ব্যাপার। আমাদের এই পৃথিবীর মহাদেশগুলো খুবই আস্তে আস্তে একটি থেকে আর একটি দুরে সরে যাচ্ছে, কিন্তু এটার সাথে দুই মেরুর অবস্থান পরিবর্তনের কোন সম্পর্ক নাই। পৃথিবীর পোলারিটি এতো দ্রুত পরিবর্তন হওয়া সম্ভব না, যা হতে পারে প্রায় ৪,০০,০০০ বছরে একবার। আর তাছাড়া বিজ্ঞানীরা মনে করেন আগামী কয়েক হাজার বছরে এই পোলারিটি পরিবর্তিত হওয়ার সম্ভাবনাও নাই।

এবং রোজ রোজ জন্ম নেয়া কেয়ামতের এরকম আরো অনেক কল্পনা, যার প্রতিটির সাথে পেরে উঠায় লাগে অসীম ধৈর্য্য আর সময়, যতক্ষণে বিজ্ঞানীরা একটা ভ্রান্তধারণা যুক্তি ও বিশ্লেষন দিয়ে খণ্ডাতে ব্যস্ত ততক্ষনে কল্পনাবাদীরা হাজারটা কল্পনায় তকমা লাগিয়ে সাধারণ মানুষের সামনে পরিবেশন করেই যাচ্ছে।

অতএব এত গেঁজানোর পর আমরা আসলে কি কি জানলাম -

১। আসছে ২১শে ডিসেম্বর এই বিশেষ দিনটিতে কোন বিশেষ ঘটনাই ঘটতে যাচ্ছে না, তবে যেহেতু দিনটি শুক্রবার পড়ছে তো নিঃসন্দেহে ফ্রাইডে নাইট পার্টি হতে পারে।
২। কোনো আদিম সভ্যতা, নবী-রাসুল বা কেয়ামতের তত্ত্ব প্রদানকারী সূত্র এখন পর্যন্ত পৃথিবী ধ্বংসের নির্দিষ্ট কোন দিন প্রমাণ করতে পারে নাই, তাই অতীতের ভুল প্রমাণিত নানা অনুমান থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিত।
৩। তারপরেও যথারীতি একদল আতঙ্কিত মানুষ বরাবরের মতই সব কিছুতেই কেয়ামতের আলামত খুঁজতে থাকবে।
৪। উত্তরোত্তর উন্নত প্রযুক্তির কল্যাণে আরো ক্রিয়েটিভ ও ইনোভেটিভ উপায়ে এই কেয়ামত আতঙ্কে হরহামেশায় ঘি ঢালার চেষ্টা চলতে থাকবে।
৫। এবং এই সুযোগে সুবিধাবাদীরা তাদের পকেট ভরতে থাকবে। ২১শে ডিসেম্বর পৃথিবীর যাই হোক না কেন এধরণের সুবিধাবাদী/সুযোগসন্ধানীদের পকেট কিন্তু ইতোমধ্যে লাল!

মূলকথাঃ
আপাতত কেয়ামতের চেয়ে বেশি আতঙ্কের বিষয় হলো মানুষের সেইসব অন্ধবিশ্বাস বা ভ্রান্তধারণা যা কোন বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ দিয়েও দুর করা সম্ভব না। তার উপর বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগে খুব সহজেই এরকম ভুরিভুরি ভুয়া বিশ্লেষণ হাজির করা সম্ভব তাদের অন্ধবিশ্বাসের খোরাক যোগাতে। আর এই ফাঁকে হয়তো পৃথিবীর প্রকৃত কিছু সমস্যা যেগুলোতে আসলেই মানুষের নজর দেয়া প্রয়োজন তাই তাদের নজর এড়িয়ে যায়, যেমন - পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তন, তাপমাত্রার পরিবর্তন, নানা প্রজাতি (প্রাণী, গাছ) বিলুপ্তি, প্রকৃতির চেইন ধ্বংস ইত্যাদি। যে সমস্যাগুলোর জন্যে মানুষ নিজে দায়ী হলেও দিনদিন তা চলে যাচ্ছে মানুষের আওতার বাইরে। যেগুলো আপাতত কেয়ামত না হলেও অদুর ভবিষ্যতে কেয়ামতের চেয়ে কোন অংশে কম ভয়াবহ পরিণাম বয়ে আনবে না। অর্থাৎ কেয়ামত কোন আকস্মিক আরোপিত দুর্যোগের চেয়ে নিজে বয়ে আনা অপরিণামদর্শী ফলাফলও হতে পারে। অথচ তা নিয়ে কেয়ামতবাদীদের খুব বেশী চিন্তিত মনে হয়না।

যাইহোক পৃথিবী তো একদিন ধ্বংস হবেই, আরো চার বিলিয়ন বছরের কাছাকাছি সময় যখন সূর্যের মজুত হাইড্রোজেন গ্যাসের পরিমাণ শেষ হয়ে আসবে। যখন আমাদের কাছের এই নক্ষত্রটি বেলুনের মত ফুলতে শুরু করবে গ্রাস করবে আশেপাশের সব গ্রহ উপগ্রহকে। পৃথিবী পরিণত হবে টোস্টে। আপাতত এইটাই একমাত্র পৃথিবীর শেষ বা কেয়ামতের নিশ্চিত বিজ্ঞান প্রমাণিত সময়কাল। যা নিয়ে আমাদে্র এখনি উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। আর সেই একটি দিনের চিন্তায় জীবনের বাকি দিনগুলোও অর্থহীন করার প্রয়োজন নেই। তারচেয়ে এই সুন্দর নীল গ্রহটাকে কিভাবে আরো অনেকদিন মানুষের বসবাসের উপযুক্ত রাখা যায়, বরং তা নিয়ে ভাবি।

---------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

তথ্য ও ছবি সূত্রঃ

ন্যাশনাল জিওগ্রাফী
ডিসকভারি নিউজ
ইউনিভার্স টুডে
বিবিসি ও
নাসা


মন্তব্য

দিগন্ত এর ছবি

খুবই ভাল লেখা, এইরকম যুগে যুগেই মহাপ্রলয়ের ভয় দেখিয়ে জনগণকে লাইনে আনা হয়েছে। আরো প্রাচীন কিছু উদাহরণও আছে এর সাথে - প্রাচীন ব্যাবিলন বা মিশরেও সর্বগ্রাসী প্রলয়ের ভয় দেখানো হত।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ ভাইয়া! আপনার মন্তব্য পেয়ে অনেক ভালো লাগলো। এই যুগে এসেও মানুষের এই পরিমাণ মিথভীতি দেখে আসলে কিছুটা অবাকই লাগলো, তার উপর আবার এই ভয়কে ভাঙ্গিয়ে চলা রমরমা বাণিজ্যিক কাজ-কারবার দেখে হাসবো না কাঁদবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।

ঊর্ণনাভ এর ছবি

তিন বছর আগে এটা নিয়ে আমি কম গবেষণা করি নাই। আবারও সেই বোকামির দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেল।

রংতুলি এর ছবি

তাও ভালো গবেষণা করে অন্তত বোকামিটা তো বুঝছেন, লোকজন তো ভুরিভুরি গবেষণা চোখের সামনে থাকা সত্তেও বুগারাশ ছুটছে!

তুলিরেখা এর ছবি

লেখাটি চমৎকার।
একটা সামান্য জিনিস একটু ঠিক করে দিলে ভালো হয়। শেষ ‌প্যারাগ্রাফে লিখেছেন " যাইহোক পৃথিবী তো একদিন ধ্বংস হবেই, আরো চার মিলিয়ন বছরের কাছাকাছি সময় যখন সূর্যের মজুত হাইড্রোজেন গ্যাসের পরিমাণ শেষ হয়ে আসবে। যখন আমাদের কাছের এই নক্ষত্রটি বেলুনের মত ফুলতে শুরু করবে গ্রাস করবে আশেপাশের সব গ্রহ উপগ্রহকে।"
আসলে সূর্যের কেন্দ্রাঞ্চলের মজুত হাইড্রোজেন ফুরিয়ে যাবে ( হিলিয়ামে পরিণত হবে) আরো সাড়ে চার থেকে পাঁচ বিলিয়ন বছর পরে, মিলিয়ন না। ততদিন সূর্য স্টেবল থাকবে, মসৃণ গতিতে শক্তি বিকিরণ করে যাবে।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

রংতুলি এর ছবি

ওটা অবশ্যই অবশ্যই বিলিয়ন হবার কথা, মিলিয়ন না!! 'approximately' চার বিলিয়ন বছর পর সূর্যের কোরে মজুদ হাইড্রজেনের পরিমাণ কমে আসবে। আমার প্রায় লেখায় দেখি এরকম দুই একটা হাস্যকর ভুল থেকে যায়, তাও ভালো এখন হাচল হয়েছি তাই এডিটের সুযোগটা নিতে পারলাম। দেঁতো হাসি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ তুলিরেখা!

কৌস্তুভ এর ছবি

ভালো কালেকশন লেখা -গুড়- হয়েছে

লাইটহাউসের ছবিটা কী বোঝাচ্ছে?

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ কৌস্তুভদা। লইজ্জা লাগে

ছবিটা খুব সম্ভব চাঁদ আর শক্রর একসাথে এক লাইনে আসার... একটু খুঁজলে অবশ্য অন্য ইমেজ দেয়া যেত কিন্তু আর ইচ্ছে করছিলো না।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

রংতুলি এর ছবি

হাসি হাসি

তারেক অণু এর ছবি

তবে যেহেতু দিনটি শুক্রবার পড়ছে তো নিঃসন্দেহে ফ্রাইডে নাইট পার্টি হতে পারে। দেঁতো হাসি হয়ে যাবে

শালার মানুষজন কেন যে খালি পৃথিবী ধ্বংসের দিন গুনে, আমার শুধু মেজাজ খারাপ হয় এগুলা শুনলে।

মায়াদের নতুন বর্ষপঞ্জি আবিস্কার হয়েছে কয়েক মাস আগে, তাতে দেখা গেছে বৃত্তের পর বৃত্ত, মানে বিশ্ব চলতেই থাকবে। কিন্তু কথা সেটা না, আসল কথা হচ্ছে মানুষ কোনদিনই ভবিষ্যৎ মানে দুই সেকেন্ড পরেই কি ঘটবে এটা বলতে সক্ষম হবে না, ধারণা দিতে পারে, কিন্তু শতভাগ নিখুঁত হবে না কোনদিনই, তাই যখনই দেখি কোন ব্যাটা ভবিষ্যৎ বলছে, মনে হয় ঠ্যাডায়ে দুটা- বুঝে নিও।

তমসা  এর ছবি

গুল্লি

মনে হয় ঠ্যাডায়ে দুটা- বুঝে নিও।

রংতুলি এর ছবি

মেজাজ আমারও খারাপ হয়। অবশ্য যারা গুজব ছড়ায় তাদের চেয়ে যারা এগুলাতে কান দেয় তাদের উপর বেশি বিরক্ত লাগে। তোদের টাকা এতো বেশি হইছে তো কিছু নাহয় তাদের দে যারা না খায়ে মরতেছে, তানা করে এক কেয়ামত আতংকের পেছনে এরা টাকা নষ্ট করবে। কেয়ামত তো দূরের কথা সাধারণ মরণের হাত থেকেই কি কেউ কখনো পালায় বাঁচছিলো, অথচ এই সিম্পল জিনিষটাই তো তারা বুঝলে!

আশালতা এর ছবি

লেখাটা ভাল্লাগলো। চলুক

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

রংতুলি এর ছবি

জেনে আমারো ভাল্লাগলো! হাসি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

লোকজনের পকেট ফাঁকা করতে অলৌকিকওয়ালাদের জুড়ি নেই। আমরা বিজ্ঞান পড়ি, প্রযুক্তি ব্যবহার করি, বিজ্ঞানের সুফল ভোগ করি কিন্তু বিজ্ঞানমনস্ক হই না। এই সুযোগে অলৌকিকত্বের ফেরিওয়ালারা সওদা করে যায়।

সামনে আসছে এমন কয়েকটা 'কেয়ামত'-এর হদিস বের করুন। আমি নিশ্চিত একটু খোঁজ করলেই পেয়ে যাবেন। তারপর সেগুলোর অসারত্ব প্রমানসহ পোস্ট দিন। রোগ সারানোর আগেই রোগ হবার সম্ভাবনাকে প্রতিরোধ করতে হবে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ দাদা তবে কেয়ামত নিয়ে আর না! এটা নেহায়েৎ বুগারাশ নিউজটা পড়ে মানুষের কেয়ামত বেচে খাওয়ার কাজ কারবার দেখে নিজে কিছুটা টাস্কি খাওয়া থেকে লেখা...

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

চলুক চলুক চলুক

রংতুলি এর ছবি

হাসি হাসি হাসি

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চলুক চলুক
দারুন পোস্ট। এমন পোস্ট আরও আসুক।

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ আরজু! হাসি

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

হাহ্ হাহ্ হা, ঐ দিন আমি পরিবারসহ কক্সবাজার থাকবো। যাহোক, সবার কাছ থেকে তাহলে বাদায় নিয়েই যাবো।
ধন্যবাদ, এমন একটি লেখার জন্য। সত্যি বলতে, অনেক অজানা তথ্য জানা হল।

রংতুলি এর ছবি

হা হা হা! নির্ভয়ে ঘুরে আসুন অনেক শুভকামনা থাকলো! আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

স্যাম এর ছবি

চলুক চলুক

রংতুলি এর ছবি

হাসি হাসি

ইয়াসির আরাফাত এর ছবি

ভালো লেগেছে চলুক

রংতুলি এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই! হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ধুস্ শালা!! কেয়ামত হবে না??? অ্যাঁ আমি আরো নতুন পাঞ্জাবী কিনলাম যে?? ওঁয়া ওঁয়া

লেখা ফাট্টাফাটি হয়েছে।

ফারাসাত

রংতুলি এর ছবি

এখন পাঞ্জাবীটা সেলে দেন, তার আগে ওইটার গায়ে লিখে দিয়েন 'কেয়ামতের গজব থেকে বাঁচার পাঞ্জাবী'। হো হো হো

তমসা  এর ছবি

লেখা -গুড়- হয়েছে উত্তম জাঝা!

রংতুলি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- লইজ্জা লাগে

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

চলুক

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

রংতুলি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

যাইহোক পৃথিবী তো একদিন ধ্বংস হবেই, আরো চার বিলিয়ন বছরের কাছাকাছি সময় যখন সূর্যের মজুত হাইড্রোজেন গ্যাসের পরিমাণ শেষ হয়ে আসবে। যখন আমাদের কাছের এই নক্ষত্রটি বেলুনের মত ফুলতে শুরু করবে গ্রাস করবে আশেপাশের সব গ্রহ উপগ্রহকে। পৃথিবী পরিণত হবে টোস্টে। আপাতত এইটাই একমাত্র পৃথিবীর শেষ বা কেয়ামতের নিশ্চিত বিজ্ঞান প্রমাণিত সময়কাল। যা নিয়ে আমাদে্র এখনি উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। আর সেই একটি দিনের চিন্তায় জীবনের বাকি দিনগুলোও অর্থহীন করার প্রয়োজন নেই। তারচেয়ে এই সুন্দর নীল গ্রহটাকে কিভাবে আরো অনেকদিন মানুষের বসবাসের উপযুক্ত রাখা যায়, বরং তা নিয়ে ভাবি।

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।