টেরেস্ট্রিয়ালি ইন্টারনেটে যুক্ত হওয়া কি জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকী?

সজল এর ছবি
লিখেছেন সজল (তারিখ: সোম, ২১/১১/২০১১ - ১২:৩৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হওয়ার আগে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে ইন্টারনেটে যুক্ত হওয়ার জন্য ভিস্যাটের উপর নির্ভর করত। ভিস্যাটের মাধ্যমে তথ্য আদানপ্রদান অনেক ধীরগতির এবং অনির্ভরযোগ্য। তাই প্রয়োজন ছিলো দ্রুততর ফিজিক্যাল মাধ্যমে বহির্বিশ্বে যুক্ত হওয়া। অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে তথ্য আদানপ্রদান অবিশ্বাস্য রকমের দ্রুতগতির, তাই একটা বহুজাতিক কনসোর্টিয়াম গঠন করে সমুদ্রের নীচ দিয়ে বয়ে যাওয়া অপটিক্যাল ফাইবারের সংযোগ নেয় বাংলাদেশ।

সমুদ্রের নীচে প্রায়ই এই তার কাটা পড়ে কিংবা অন্য নানা বিপত্তি দেখা দেয়। একটমাত্র লাইন হওয়ায় এই ধরণের যেকোন দুর্ঘটনা প্রভাব ফেলে বাংলাদেশের সাথে বাকি বিশ্বের ইন্টারনেট সংযোগে। তাই দরকার ছিলো একটি বিকল্প অপটিক্যাল ফাইবার সংযোগের। শুরুতেই এই বিকল্প সংযোগ তৈরী না করে এখন যখন চেষ্টা করা হচ্ছে আরেকটি সাবমেরিন ক্যাবল লাইন প্রতিষ্ঠার, দেখা যাচ্ছে অন্য কাউকে সাথে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সড়ক পথে এই বিকল্প তৈরী করার। সরকার ছয়টি কোম্পানীর সাথে চুক্তি করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এই ছয়টি কোম্পানী বাংলাদেশে গেটওয়ের কাজ করবে, এবং তারা ভারতের স্থলভাগের উপর দিয়ে এই ডাটা বাইরে পাঠাবে। ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে এই সংযোগ, তাই এটি টেরেস্ট্রিয়াল সংযোগ।

বাংলাদেশী ছয়টি কোম্পানী ভারতীয় কোম্পানীর সাথে চুক্তি করে তাদের মাধ্যমে ইন্টারনেটের ডাটা বাইরে পাঠাবে এবং ভেতরে নিয়ে আসবে। জাকারিয়া স্বপন এই ব্যাপারটাকে হাইলাইট করে জাতীয় নিরাপত্তার কী হবে, এমন আশংকা প্রকাশ করে প্রিয়.কমে একটি ব্লগ লিখেছেন এবং পরবর্তীতে দৈনিক সমকালেও এটা প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে উনি নানা যুক্তি এবং আশংকার কথা উল্লেখ করেছেন। কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনীয়ারিং-এ একটা ডিগ্রী নিতে হওয়ায় নেটওয়ার্কিং নিয়ে কিছুটা পড়তে হয়েছিলো। নিজেকে বিশেষজ্ঞ দাবী করছি না, কিন্তু সাধারণ ধারণা থেকেই উনার লেখা পড়ে আমার বেশ খটকা লেগেছে, তাই এই লেখার অবতারণা। ঘরপোড়া গরু যেমন সিঁদুরে মেঘ দেখে ভয় পায়, আমারও তেমনি মনে হয়েছে ভারত জুজুর ভয় দেখিয়ে এখানে আবারো ৯২-৯৩ তে সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত না হওয়ার ঘটনার পুনরাবৃত্তি করার একটা অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলা হচ্ছে।

উনার ব্লগের মূল যে বিষয়ে আমার প্রতিক্রিয়া জানাতে চাচ্ছি, তা হচ্ছে,

আমাদের সব ডাটা যদি যায় ভারতের ওপর দিয়ে, তবে সেই ডাটা নিত্যদিন দেখতে পাওয়া কি কঠিন কোনো বিষয়? আমাদের ই-মেইলের একটি কপি, আমার পাসওয়ার্ড, সরকারি কোনো ই-মেইল, গোপনীয় ফাইলের অ্যাটাচমেন্ট, আমেরিকা কিংবা চীনের সঙ্গে আমাদের সামরিক বাহিনীর কোনো যোগাযোগ- আরও কিছু কি বলতে হবে? আর শুধু কি ডাটা? টেলিফোন কলও তো যাবে এর ওপর দিয়ে!

তাই শুরুতেই কীভাবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিরাপদে ডাটার আদান প্রদান হয় সেই সম্পর্কে কিছুটা বলে নিব।

খাঁচার ভিতর অচিন ডাটা কেমনে আসে যায়...
ধরা যাক আপনি ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিলেন, আপনার প্রোফাইলে খালি বাক্সমত একটা জায়গায় (টেক্সটবক্স), তারপর এন্টার চেপে চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই দেখলেন স্ট্যাটাস পোস্ট হয়ে গেছে, তারপর বেশি ভাবের স্ট্যাটাস হলে মূহুর্তের মাঝে লাইক আর লাইক। তো এখানে ডাটার আদান প্রদান কীভাবে ঘটছে সেটা দেখা যাক।

আপনি যে বাক্যটি লিখে এন্টার চাপলেন, সেটা আপনি আসলে ফেসবুকের সার্ভারের উদ্দেশ্যে পাঠালেন। এই ডাটা প্রথমে আপনার কম্পিউটারে পরিবহণের উপযোগী আকারে প্রসেস হবে, তারপর কম্পিউটার পাঠাবে আপনার আইএসপির কাছে, আইএসপি পাঠাবে গেটওয়ের কাছে, গেটওয়ে পাঠাবে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। গেটওয়েকে ধরা যেতে পারে দেশের (বা একটা সীমাবদ্ধ এলাকার) শেষ প্রান্ত।

আপনার ডাটা অনেক বড় হতে পারে, তাই আপনার কম্পিউটারে শুরুতেই এই বড় ডাটাকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিবে। আর এই ছোট ছোট অংশের সাথে তাদের গন্তব্য (এখানে ফেসবুক।কম) এবং আরো নানা চলার পথের কাজের তথ্য জুড়ে দিয়ে একটা পরিবহণ ইউনিট তৈরী করা হবে, এই ইউনিটকে বলা হয় প্যাকেট।

প্যাকেট করার কাজ শেষ হলে প্যাকেটগুলো এবার কম্পিউটার ছেড়ে বেরিয়ে পড়বে আপনার আইএসপির উদ্দেশ্যে। আইএসপিতে পৌঁছানোর পর আইএসপির কম্পিউটার প্যাকেটগুলোর গন্তব্য দেখে দেখে সেগুলোকে সুবিধামত গেটওয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করিয়ে দিবে। গেটওয়েতে পৌঁছা প্যাকেটগুলোকে একটা ভ্রমণ-পরিকল্পনা ঠিক করে পৃথিবীর পথে ছেড়ে দেয়া হবে, এরা তখন পৃথিবীর নানা স্টেশন হয়ে গন্তব্য সার্ভার অর্থাৎ ফেসবুকে গিয়ে পৌঁছাবে।

একই ভাবে ফেসবুকে যখন আমরা নানা কিছু পড়ি, সেই তথ্যগুলো ঠিক উলটো পথে আমাদের কম্পিউটারে এসে পৌঁছায়, প্যাকেট জোড়া লাগিয়ে আমাদের ব্রাউজার আমাদের মানুষের বুঝার উপযোগী তথ্য হিসাবে উপস্থাপন করে। নীচের ছবিতে বিষয়টা দেখা যেতে পারে।

net

প্যাকেট চুরির নানা তরিকা
দেখতেই পাচ্ছেন, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিন, বউকে লুকিয়ে বান্ধবীকে চিঠি দিন কি ব্রিজ বানাতে কমিশনের ভাগ চেয়ে ফরিয়াদ করুন সবই প্যাকেট আকারে পৃথিবীর নানা প্রান্ত ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছে। তাহলে এই প্যাকেটগুলো যেন কারো হাতে না পড়ে সে নিয়ে অবশ্যই আমাদের চিন্তা করতে হবে। তার দিয়ে চলাচল করা প্যাকেট তারের মাঝখান থেকে কেউ তুলে পড়বে না। সমস্যা হবে প্যাকেটগুলো যখন কোন রাউটারে যাবে।

রাউটারের কাজ হচ্ছে তার কাছে আসা কোন প্যাকেটের গন্তব্য দেখে ওই প্যাকেটের গন্তব্যে পৌঁছাতে হলে পরের কোন পথে রওয়ানা করিয়ে দিতে হবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্যাকেটটাকে সামনের দিকে এগিয়ে দেয়। অর্থাৎ নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে যেতে যেতে যখন পথ শেষ হয়ে যাবে, তখন প্যাকেটকে কোন একটা রাউটারে পৌঁছে বাকি পথের দিশা জানতে হবে। এই রাউটারে পৌঁছা ডাটা নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা অথবা নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে কোন হ্যাকার চুরি করে নিতে পারে। অথবা যে কোম্পানীর রাউটার হয়ে প্যাকেট যাচ্ছে তারা যদি নিজেরাই এই অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে ব্যাকডোর অর্থাৎ চোরের জন্য পেছনের দরজা খুলে দেয়, তাহলে আমাদের ডাটা চুরি যেতে পারে।

এই চুরিটা যেমন ভারতের রাউটার থেকে ওই রাউটারের মালিক কোম্পানীর সাহায্য নিয়ে ভারতীয়রা চুরি করতে পারে। তেমন একই স্থান থেকে একই ডাটা অ্যামেরিকার মাটিতে বসে অ্যামেরিকান কোন হ্যাকারও চুরি করে নিতে পারে। অর্থাৎ ভারত থেকে ডাটা চুরি করার জন্য আপনাকে ভারতে অবস্থান নিতেও হবে না, আবার ভারতীয়ও হতে হবে না। শুধু একজন দুষ্ট কিন্তু প্রতিভাবান হ্যাকার হতে হবে। তথ্য চুরির জন্য ডাটা এবং চোরের ফিজিক্যাল লোকেশন যে তেমন গুরুত্বপূর্ণ না, তা সমর্থন করা যায় জাকারিয়া স্বপনের উক্তি দিয়েই, যদিও তিনি সেটা বলেছেন ভারত ডাটা চুরি করে নেবে ধারণাকে সমর্থন করতেই।

বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি ওয়েবসাইট কিছুদিন পরপর হ্যাক হয়। আপনার কি ধারণা, এ যাবতীয় হ্যাকিং বাংলাদেশের মাটি থেকেই হচ্ছে? পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে এরা এসে হাজির হতে পারে। এই তো গত সপ্তাহেই জাপানের সবচেয়ে বড় ডিফেন্স কনট্রাক্টর মিতসুবিশির নেটওয়ার্ক হ্যাক হয়েছিল এবং ৮০টি কম্পিউটার থেকে ডাটা চুরি করে নিয়ে গেছে চাইনিজ হ্যাকাররা। আর সেখানে আমাদের নেটওয়ার্কগুলোর তো নিরাপত্তা বলে কোনো কনসেপ্টই নেই।

তাহলে দেখা যাচ্ছে ডাটা কোন পথে যাচ্ছে সেটার চেয়েও নিরাপত্তার কনসেপ্ট জনিত সমস্যাই গুরুতর!

কেন ভারতই চুরি করবে?
ধরা যাক আপনি ফেসবুকে খুপসুরত ইরানী বালিকা দেখে শরাহত হয়ে রোমান্সে পূর্ণ একটা ইমেইল লিখে পাঠিয়ে দিলেন, তাহলে আপনার চিঠি টুকরা টুকরা হয়ে প্যাকেট আকারে নানা দেশ থেকে বের হয়ে ভারতের নানা রাউটার হয়ে তারপর ইরানে পৌঁছাবে। সেই প্যাকেট গুলো যদি ভারতের রাউটারে থাকা অবস্থায় কেউ পড়ে ফেলে? তাহলে আপনার গোপনীয়তা গেলো।

যেহেতু তারা সড়ক পথে বিকল্প পথ তৈরীর চেষ্টা করছে, আগের গেটওয়েগুলোর মত সমুদ্রের পানিতে(আসলে অপটিক্যাল ফাইবারে) ডাটা ছেড়ে না দিয়ে এবার তারা সড়ক পথে অর্থাৎ ভূমিতে থাকা কোন পরিবহণ মাধ্যমে ডাটা ছেড়ে দিবে। আমাদের তিনদিকে ভারত, মায়ানমারের সাথে সামান্য সীমান্ত থাকলেও সেটা দুর্গম, সুতরাং এই গেটওয়ে গুলো ডাটাকে সামনে পাঠিয়ে দেয়ার জন্য ভারতের বিভিন্ন কোম্পানীর মালিকানায় থাকা মাধ্যম (উদাহরণ স্বরূপ অপটিক্যাল ফাইবার) ব্যবহার করেই ডাটা সামনের দিকে ছাড়বে। সেই ডাটা ভারত ছেড়ে বের হওয়ার আগে ভারতীয় নানা কোম্পানীর রাউটার হয়ে যাবে। আর সেই অবস্থায় যদি এই কোম্পানীগুলো মাসুম প্যাকেটগুলোকে চুরি করে পড়ে ফেলে? তাই দৃশ্য পটে আসছে ভারত।

প্যাকেটের মাঝে বসত করা গোপন কথার মানে
যে জানার সে জানেরে বন্ধু, যে জানার সে জানে

তাহলে আমরা দেখলাম আমাদের ডাটা ভারতের রাউটার হয়ে যাওয়ার সময় সেটা চুরি হতে পারে। ধরা যাক শুকনো ডাটা পাঠাতে হলে সেটা ঠেকানোর কোন উপায়ই নেই। তাহলে আমাদের কী হবে? এখানেই আসে এনক্রিপশনের ধারণা। অর্থাৎ ডাটা যখন শ্বাপদ সংকুল নানা দেশ ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছাবে, পথে পথে নানা তস্কর ডাটা চুরি করলেও যেন সে ডাটা পড়ে তার মানে বুঝতে না পারে, সেই জন্য নানা ফন্দি ফিকির করা হয়। পাঠানোর আগেই প্যাকেটের ডাটাকে এমন ভাবে বদলে দেয়া হবে যেন কেউ সেই প্যাকেটে থাকা কথার মানে বুঝতে না পারে।

ছোট বেলা আমরা অনেকেই নানা সাংকেতিক ভাষা আবিস্কার করে তার মাধ্যমে কথা বলতাম, যেমন কেউ দেখা যেত পুরো শব্দটা উলটো দিক দিয়ে পড়ছে (সজল কে লজস) আবার কেউ বা কোন বর্ণকে তার দুই স্থান পরের বর্ণ দিয়ে বদলে দিয়ে কোড তৈরী করছে (সজলকে য়ঞষ)। যারা এই বদলে দেয়ার উপায়টা জানে, কেবলমাত্র তারাই বদলে দেয়া শব্দ থেকে আসল শব্দটা জানতে পারবে। অন্যরা শুনলেও কিছু বুঝতে পারবে না। প্যাকেটগুলোকেও ঠিক এইভাবেই নানা জটিল গাণিতিক ফর্মূলা দিয়ে বদলে দেয়া হয়, সেই গোপন ফর্মূলাটা শুধুমাত্র প্রেরক আর প্রাপকেরই জানা থাকে। তাই মাঝপথে কেউ যদি ডাটা পড়েও ফেলে, সে তার কোন মানে বুঝতে পারবে না। অর্থাৎ এনক্রিপশন হচ্ছে আমাদের গোপনীয়তা রক্ষার উপায়।

কেউ যদি এনক্রিপট না করেই ডাটা পাঠায় তখনি সত্যিকার বিপদ, কারণ চুরি করা ডাটা পড়াও যাবে!

সবই তো বুঝলাম, কিন্তু আপনার বক্তব্যটা কী?
১। আমাদের ডাটা পৃথিবীর নানা দেশের নানা কোম্পানীর রাউটার ঘুরে যায়। রাউটার থেকে ব্যাকডোর তৈরী করে ডাটা চুরি তাহলে যেকোন দেশই করতে পারে, তাও তো আমরা ডাটা পাঠাচ্ছি, তারা যে ব্যাকডোর তৈরী করছে না, সেটা আমরা কীভাবে নিশ্চিত হচ্ছি? নিশ্চিত হচ্ছি সেই সব দেশের উপর নিষ্কলুষ বিশ্বাস থেকে না, বরং রাউটার চালনা কারী কোম্পানীগুলোর ব্যবসায়িক ও আইনগত দায়বদ্ধতা থেকে।

অনেকে বলতে পারেন ভারতীয় কোম্পানীগুলোর সাথে বাংলাদেশী গেটওয়ে কোম্পানীগুলোর চুক্তি দ্বিপাক্ষিক, তাই তারা চাইলেই আইন ভেঙ্গে যা খুশি করতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশীয় কোম্পানীগুলো যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে ওদের সাথে চুক্তিতে যাবেই বা কেন? আর চুক্তিতে সেটা নিশ্চিত থাকলে তারপরও যদি সেটা ভারতীয় কোম্পানীগুলো ভঙ্গ করে সেটা মনিটরের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং আন্তর্জাতিক আদালতে সেটার বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে। মনে রাখতে হবে ব্যবসার জগতে অন্ধ বিশ্বাস একটা অপ্রচলিত ধারণা। ঠিক যে কারণে চৌদ্দ জাতীয় কনসোর্টিয়ামে কেউ চুক্তি ভেঙ্গে পার পাবে না, সেই একই কারণে ভারতীয় কোম্পানী বাংলাদেশী কোম্পানীর সাথে চুক্তি ভঙ্গ করে পার পাবে না।

২। ডাটা এনক্রিপশন করলে সেটা নিরাপদ বুঝলাম, কিন্তু বাংলাদেশের ডাটা এনক্রিপশন কতটা করা হয়? জিমেইল ইত্যাদি পরিচিত সার্ভিস ব্যবহার করে ডাটা আদানপ্রদানে এনক্রিপশন করা হয়। কিন্তু অনেকের নিজস্ব মেইল সার্ভার আছে, অনেকে নিজস্ব পদ্ধতিতে ওয়েবসাইট থেকে তাদের ডাটাবেসে এক্সেস দেয়। সেই ক্ষেত্রে তারা যদি এনক্রিপশন না করেই ডাটা ছেড়ে দেয়, তাহলে বিপদ আছে অবশ্যই। কিন্তু এনক্রিপট না করে ডাটা ছাড়লে সেটা পৃথিবীর যে কোন প্রান্তেই চুরি হতে পারে, সে সমুদ্রের নীচ দিয়ে পাঠান আর আকাশে করে পাঠান। বাড়তি বিপদ চুরি করা ডাটা তখন পড়াও যাবে।

তাহলে উপায়? উপায় হচ্ছে ডাটা এনক্রিপট করে পাঠাতে হবে। এই বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের দেশীয় সরকারী বেসরকারী কোম্পানীগুলোকে সচেতন হতে হবে, সবাইকে একটা আদর্শ ডাটা পরিবহণ ব্যবস্থা মেনে চলতে হবে। সেটা এমন কোন কঠিন বিষয় না, শুধু জানতে হবে।

৩। অনেক আগে “রাষ্ট্রীয় তথ্য পাঁচার হয়ে যাবে” এই অজুহাতে আমরা বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে যুক্ত না হয়ে নিজেদের দেশকে পিছিয়ে দিয়েছিলাম কয়েক দশক। ওই সময়টাতে যখন ভারত তরতর করে আইটির দিকে এগিয়ে গিয়েছিলো, আমরা তখন রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্যকে পাশবালিশের মত করে আগলে রেখে নিরাপদে ঘুমিয়ে ছিলাম। ভারত যখন তথ্যপ্রযুক্তির বাজারের বড় একটা অংশে নিজেদের শেয়ার গড়ে তুলেছে, আমরা তখনো নানা উপায়ে সেই বাজারে ঢুকার চেষ্টা করে যাচ্ছি।

আমাদের দ্বিতীয় একটা লাইন দরকার, যেহেতু সাবমেরিন ক্যাবল স্থাপন করা যাচ্ছে না, স্থলপথেই সেটা করতে হবে। আনুষঙ্গিক যে নিরাপত্তাজনিত ইস্যুগুলো জাকারিয়া স্বপন তুলে ধরেছেন, সেগুলো সমাধানের কাজটা কম্পিউটার সায়েন্টিস্টরা অনেক আগেই করে গেছেন। আমাদের দরকার শুধু সেটা ইমপ্লিমেন্ট করা। এই জন্য আমাদের দেশী বিশেষজ্ঞদের কাজে লাগাতে হবে। পনেরো কোটি মানুষের দেশে এই কাজে দক্ষ বিশেষজ্ঞ নেই সেটা বাস্তবতা নয়।

৪। জাকারিয়া স্বপন আরো বলেছেন,

বাংলাদেশে যতগুলো বিদেশি অ্যাম্বাসি আছে, তারা কেউ বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহার করে না। নিরাপত্তার কারণে তারা তাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে। এই নিজস্ব যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকার পরও জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ (উইকিলিকস) যে খেলা দেখাচ্ছেন, তারপর কি আর খুলে বলার প্রয়োজন আছে?

বিদেশী অ্যাম্বেসিগুলো আসলেই ভিস্যাট ব্যবহার করে ইন্টারনেট সংযোগ করে কিনা আমার জানা নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ভিস্যাটে করে পাঠানো ডাটা মাঝপথে চুরি করা আরো সহজ। কিন্তু তারপরও তারা এই মাধ্যমে পাঠাচ্ছে কেন? নিশ্চয়ই তারা জানে তাদের ডাটা চুরি গেলেও পড়া যাবে না। জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ প্রসঙ্গে উনি যা বলেছেন, তা নিখাদ বিস্ময়ের জন্ম দেয়। উইকিলিকসের পাওয়া সব গোপন তথ্য কিন্ত ইনসাইডার জব। অর্থাৎ সরকারগুলোর ভেতরের কেউ তথ্য চুরি করে অ্যাসাঞ্জের হাতে তুলে দিয়েছেন। এখানে ইন্টারনেট পরিবহণের সময় ডাটা চুরির কোন ব্যাপার নেই। এটাকে ইন্টারনেট সিকিওরিটির সাথে জড়ানো তাই হাস্যকর একটা ব্যাপার।

শেষ কথাঃ
ভারতকে আমাদের বন্ধু ভাবার কারণ নেই, কোন রাষ্ট্র অন্য রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলে না, নিজের স্বার্থ ব্যাহত হয় না এমন একটা সম্পর্ক বজায় রাখে মাত্র। শুধু বিশ্বাসের উপর আস্থা রেখে ব্যবসায় জড়ালে এক তরফা টিপাইমুখ বাঁধের মত ব্যাপার ঘটতেই পারে। এই জন্য প্রয়োজন নেগোশিয়েশন পাওয়ার, নিজের স্বার্থ বুঝে ভারতের সাথে সম্পর্কে জড়ানো। কিন্তু সেটা না করে ভারত জুজুর ভয় দেখিয়ে নিজেদেরকে আবদ্ধ করে রাখলে আখেরে আমরাই পিছিয়ে পড়ব, আর প্রতিযোগিতায় আমাদের অনুপস্থিতি ভারতকেই শুধু এগিয়ে যেতেই সাহায্য করবে। নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করার তাও একটা কার্যকারণ বুঝা যায়, কিন্তু নিজের যাত্রাভঙ্গের কি কোন কারণ আছে?

পরামর্শ এবং মতামত দিয়ে ব্লগটি লিখতে সাহায্য করায় অভি, আসিফ, রকিব এবং বাহারের প্রতি কৃতজ্ঞতা।


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

জাকারিয়া স্বপনের লেখা থেকে কোট করা অংশগুলো কোটমার্কে দিলে ভালো হতো বোধহয়।

সজল এর ছবি

দিয়েছিলাম। সাথে কিছু প্যারাগ্রাফের শিরোনামে বোল্ডফেস করে, কিন্তু কোন একটা কারণে ফরমেটিং নষ্ট হয়ে গেছে। আবার এডিট করে ঠিক করলাম।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

চমৎকার একটি লেখা। সাবলীলভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সুপ্রিয় দেব শান্ত এর ছবি

লেখা ভালো লেগেছে।

সজল এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

সজল এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রাগিব এর ছবি

ঐ লেখাটা কয়েকদিন ফেলে রেখে আবার পড়লাম। টেকনিকাল ব্যাপারগুলাতে আসলে যেই আশংকা দেখানো হয়েছে, তা মূলত ভিত্তিহীন (ডেটা চুরি নিয়ে)। কিন্তু দ্বিতীয়বার পড়ার সময় মনে হলো, লেখকের একটা পয়েন্ট ছিলো, যা টেকনিকাল ব্যাপারগুলার আড়ালে চাপা পড়েছে বা উনি ভালো করে বোঝাতে পারেননি, সেটা এরকম - ভারতের উপরে নির্ভরতা বাড়ালে দরকার মতো ভারত বাংলাদেশের ইন্টআরনেট ব্যবস্থাকে আড়ালে বা প্রকাশ্যেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। যেমন, নিজেদের স্বার্থে বাংলাদেশের ইন্টারনেট কানেকটিভিটি বিঘ্নিত করা, প্যাকেট ডিলে বাড়িয়ে বাংলাদেশের প্যাকেটগুলোকে বাজে রকমের দেরী করানো, এসব। প্রচুর আইএসপি কিন্তু এখন বাণিজ্যিক স্বার্থে এরকম করে - অ্যাপ্লিকেশন লেয়ার গেইটওয়ে দিয়ে বিশেষ কিছু প্যাকেটকে স্লথগতির সার্ভিস দেয় (যেমন, বিটটরেন্ট প্যাকেটকে ধীর করে দেয়া)।

স্বপন ভাইয়ের লেখায় যেটা আসেনি, বা হয়তো উনি বোঝাতে পারেননি, তা হলো চিহ্নিত স্বার্থপর কোনো গোষ্ঠী বা দেশের হাতে যোগাযোগ ব্যবস্থার একাংশের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিলে পরে দেশের সমস্যা হতে পারে। একটা সিনারিও ভাবা যাক, বাংলাদেশের হাতে আউটসোর্সিং বা কল সেন্টারের ব্যবসা চলে যাওয়া কমাতে যদি এই সব ভারতীয় সার্ভিস প্রোভাইডার বাংলাদেশমুখী বা সেখান থেকে আসা ভিওআইপি প্যাকেটকে ধীর গতির করে দেয়, তাতে দেশের এই সব খাতের ব্যবসার লালবাতি জ্বলে যাবে। অথবা বাংলাদেশের সাথে মনোমালিন্যের সময়ে ঐ দিকের ইন্টারনেট কানেকশন কেটে দিয়ে চাপ সৃষ্টি করার ব্যাপার আসতে পারে। (অনেক দেশ কিন্তু আসলেই এটা করে। রাশিয়ার গ্যাস ইউরোপের অনেক দেসে যায় ইউক্রেইনের মধ্য দিয়ে পাইপলাইনে করে। ২০০৯ সালে রাশিয়া-ইউক্রেনের ঝগড়ার সময়ে ইউক্রেইন এই গ্যাস পাইপলাইন বন্ধ করে দিয়ে পূর্ব ইউরোপের অনেক দেশকে শীতে জমিয়ে মারার উপক্রম করেছিলো।)

কাজেই, স্বপন ভাইয়ের লেখাটার কারিগরী উদাহরণগুলা ঠিক না, তবে সমস্যাটা নিয়ে ভাববার কারণ আছে।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

সজল এর ছবি

কারিগরি বিষয়টাতেই মূলত গুরুত্ব দিতে চাইছিলাম। এই যে প্যাকেট ধীর করিয়ে দেয়া বা কানেকশন কেটে দেয়া তার বিরুদ্ধে কি কিছুটা সুরক্ষা বাংলাদেশী কোম্পানীগুলোর সাথে ভারতীয় কোম্পানীর চুক্তিতে পাওয়া যাবে না?
তবে এটা ঠিক, যদি ব্যাপারটাকে এমন করা হয় যে আমাদের ইন্টারনেটে যোগাযোগের জন্য পুরোপুরি ভারতের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ি, তার সুযোগ নিয়ে ভারত আমাদেরকে নানা ভোগান্তির মাঝে ফেলতে পারে, এবং দরকার মত সেটা তারা করবেও। তবে কিছুটা স্বস্তি নিশ্চয়ইঃ ভারতের মধ্য দিয়ে সংযোগটা আমাদের এক মাত্র সংযোগ না, ইতিমধ্যে আমাদের সাবমেরিন ক্যাবল আছে। আর সবচেয়ে ভালো হত আমরা যদি আরেকটা সাবমেরিন ক্যাবল কানেকশন নিতে পারতাম, ভবিষ্যতে সম্ভব হবে কিনা কে জানে, কিন্তু সুযোগ পাওয়া (বা তৈরী করে)মাত্র সেটার ব্যবস্থা করা উচিত। ভারতের সাথে চুক্তিতে সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিয়ে যাওয়া উচিত, তবে আরেকটা সাবমেরিন ক্যাবল যেহেতু এখনি পাওয়া যাচ্ছে না, আপাতত ভারতের মাঝ দিয়ে টেরেস্ট্রিয়াল সংযোগই ভরসা। কারণ, আমাদের হাতে তো বিকল্প নেই।
আর কেন আরেকটা সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হওয়া গেলো না, সেটারও একটু খোঁজ-খবর নেয়া দরকার ছিল।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রাগিব এর ছবি

চুক্তি দিয়ে কাজ তখনই হয় যখন দুই পক্ষ সমান সমান থাকে। ভারতের সাথে আমাদের আসলে ঐরকম অবস্থা নাই। তিন বিঘা করিডোর নিয়ে ৩৫ বছর আগে চুক্তি হলেও সেটা বাস্তবায়িত হতে বহু বহু দিন সময় লেগেছে।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

হিমু এর ছবি

এটা একটা চরম সত্য কথা। ভারতের সাথে চুক্তি করার পর সেই চুক্তি মেনে চলার গরজ ভারতের মধ্যে খুব একটা দেখা যায় না।

আমার মনে হয়, আমাদের দেশে ইন্টারনেট ইউজকে দুই ভাগে ভাগ করে এই সমস্যা কিছুটা মোকাবেলা করা যেতে পারে। দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের একটা বড় অংশই অবাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবে (ফেসবুক-টরেন্ট-ইউটিউব-মেইল-ব্লগ), তাদের জন্যে টেরেস্ট্রিয়াল কানেকশন, আর বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যের জন্যে সাবমেরিন কানেকশন। ভারত আমাদের ফেসবুকে লুলুপনা কিংবা নেংটু ডাউনলোড কয়েক ঘন্টা পিছিয়ে দিয়ে আনন্দ পেলে পাক।

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

নেংটু ডাউনলোড কয়েক ঘন্টা পিছিয়ে দিয়ে আনন্দ পেলে পাক।

চিন্তিত

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সজল এর ছবি

হ্যাঁ, এই রকম কিছু করতে পারলে খুবই ভালো হতো। জাতির কর্মঘন্টা আর নৈতিক চরিত্র এবং দৈহিক স্বাস্থ্য তিনেরই উন্নতি হতো চোখ টিপি
নীচে শিশিরকণার কমেন্টের জবাবে কিছুটা বলতে চেষ্টা করেছি।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সজল এর ছবি

হুম চিন্তিত
প্রথমে ভাবছিলাম বাংলাদেশ সরকারের সাথে ভারত সরকারের চুক্তি হলে ভারত সরকারের সেটা মেনে চলার তেমন গরজ থাকবে না, তবে দুই দেশের দুই কোম্পানীর মাঝের চুক্তিগুলো হয়ত আন্তর্জাতিক আদালতের সালিশীর মাধ্যমে দুই পক্ষকেই মেনে চলতে বাধ্য করা যাবে। তবে দিন শেষে ভারতীয় কোম্পানীকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ভারত সরকারের ভালোভাবেই আছে। ওদের উপর নির্ভরশীল হয়ে গেলে তাই সার্ভিস ইন্টারাপট করে ভালোমতই ঝামেলা করতে পারবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

লাবন্যপ্রভা এর ছবি

এটাকি আমাদের ব্যাকআপ সংযোগ হিসেবে ব্যাবহৃত হবে না? যদি বর্তমান SEA-ME-WE 4 যেমন আছে তেমন থাকে তাহলেতো আমরা ভারতের উপর পুরো নির্ভর হচ্ছিও না, হয়তো ১% বা তারও অনেক কম। লিংক ডাওন থাকার চেয়ে স্লও থাকাতো মনে হয় কিছুটা হলেও মন্দের ভাল হাসি

নিটোল এর ছবি

লেখা অনেক ভালো লাগল। টেকনিক্যাল বিষয়গুলো ভালোমতো তুলে ধরেছেন। অনেক বিষয় পরিস্কার হয়েছে।

_________________
[খোমাখাতা]

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ নিটোল।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রাইহান এর ছবি

সজল ভাই শুরুতেই ধন্যবাদ আপনার লেখাটির জন্য। জাকারিয়া স্বপনের লেখাটা পড়ে আমার মেজাজ অনেক খারাপ হয়েছিল,কিছু একটা লিখব লিখব করেও লেখা হয়া ওঠে নি। জাকারিয়া স্বপনের মমত লোক এমন লেখা লেখলে এখন আর মোস্তফা জব্বারকে দোষ দেবার কোন কারণ দেখছি না।

রাগিব ভায়ের পয়েন্টটা হয়ত ঠিক, কিন্তু জাকারিয়া স্বপনতো এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যপারটি বাদ দিয়ে ডাটা চুরির হাস্যকর সব যুক্তি নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

লাবন্যপ্রভা এর ছবি

Embassy গুলোতো আমাদের ISP থেকে লিংক নেয়, আর খুবকমই VSAT ব্যাকআপ রাখে। আমেরিকান এম্বাসী, ইতালিয়ান এম্বেসী, ফিলিপাইন এম্বাসী, ব্রাজিল, সৌদী এম্বাসী... সবাই ISP থেকে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ব্যাবহার করে।

সজল এর ছবি

আচ্ছা, এই ব্যাপারটা ঠিক জানি না। কোন লিংক দিতে পারেন?

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

বাওয়ানী এর ছবি

Embassy গুলোতো আমাদের ISP থেকে লিংক নেয়, আর খুবকমই VSAT ব্যাকআপ রাখে। আমেরিকাtন এম্বাসী, ইতালিয়ান এম্বেসী, ফিলিপাইন এম্বাসী, ব্রাজিল, সৌদী এম্বাসী... সবাই ISP থেকে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ ব্যাবহার করে।

ব্যাপারটা পুরোপুরি ঠিক না। এম্বাসীগুলা আইএসপি থেকে ব্যান্ডউইথ ব্যাবহার করে তাদের দৈনন্দিন রুটিন অফিস কাজের জন্য, কিন্তু গুরুত্বপুর্ন ডাটা পাঠানোর জন্য হয় ভিস্যাট অথবা IPLC (International Private Leased Circuit)ব্যবহার করে।

শাহেনশাহ সিমন এর ছবি

আইপিএলসি তো বিটিসিএল ই দেয়। বিটিসিএল ও একখানা আইএসপি এবং আইআইজি, তাই না?

_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না

বাওয়ানী এর ছবি

আইপিএলসি সার্কিট প্রধানত বিটিসিএল দেয়, তবে তাদের সাথে আপনি SingTel এর কাছ থেকেও নিতে পারেন। SingTEL বিটিসিএলের কাছ থেকে বাল্ক ক্যাপাসিটি কিনে রেখেছে যেগুলা মেইন্টেইন করে ঢাকার কোম্পানী আইডিএন। এছারা তাদের আইপিএলসি ভায়া ভিস্যাট সার্ভিস আছে যেটা বিটিসিএলের কোন সাহায্য ছারাই চলে তবে দাম অনেক বেশী।

আর হ্যা, বিটিসিএল নিজেই আইএসইপি, আইআইজি, আইসিএক্স মোটকথা যা যা হওয়া সম্ভব।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

বাংলাদেশের একটা বিকল্প গেটওয়ে অবশ্যই দরকার। ভারতকে বাদ দিয়ে টেরেষ্ট্রিয়াল গেটওয়ে অবাস্তবও বটে। আবার আরেকটা সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হওয়াও দুষ্কর এই সময়ে। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে আমাদের এই টেরেষ্ট্রিয়াল সুযোগটাই গ্রহন করতে হবে।

এখন ডেটা নিরাপত্তার কথা বলি। ধরা গেল সরকারী ডাটা এনক্রিপশান ছাড়া যাবে না। কিন্তু তাহলে জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জের কি হবে? এনক্রিপশনের উপর আমাদের আস্থা তো হালকা করে দিয়েছে লোকটা।

আসলে খেয়াল রাখতে হবে সবগুলো ডিম যেন এক ঝুড়িতে না রাখি।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

সজল এর ছবি

কিন্তু তাহলে জুলিয়ান অ্যাসেঞ্জের কি হবে? এনক্রিপশনের উপর আমাদের আস্থা তো হালকা করে দিয়েছে লোকটা।

উইকিলিকস কিন্তু ইন্টারনেট ডাটা হ্যাক করে পাবলিশ করে দেয় না। ওদের ফাঁস করে দেয়া ডকুমেন্টের পেছনে থাকে কোন না কোন ইনসাইডার। ধরা যাক একজন এমপ্লয়ি তার কোম্পানীর একটা ফাইল পড়ে মনে করলো এখানে বাজে কিছু ঘটছে যা সবাইকে জানিয়ে দেয়া দরকার, তখন সে ফাইলটা কপি করে গোপনে উইকিলিকসের কাছে দিয়ে দিলো। যে ফাইলটা লিক করলো তার কাছে কিন্তু ডাটা এনক্রিপটেড ছিলো না, বা তার অ্যাক্সেস ছিলো। উইকিপিডিয়া কী বলছে দেখা যায়,

WikiLeaks is an international self-described not-for-profit[6] organisation that publishes submissions of private, secret, and classified media from anonymous news sources, news leaks, and whistleblowers.

তার মানে উইকিলিকস আসলে এনক্রিপটেড ডাটাকে হুমকীর মুখে ফেলেনি। ইনসাইডার জব হতে থাকলে আসলে টেকনোলজিক্যাল নিরাপত্তা কাজে আসবে না।

আসলে খেয়াল রাখতে হবে সবগুলো ডিম যেন এক ঝুড়িতে না রাখি।

একমত।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

zahid এর ছবি

ধন্যবাদ।

হ্যাকিং যেকোনো দেশ এ বসেই করা যায়। কিন্তু ডাটা পাথ এ ফিজিকাল অ্যাক্সেস পেলে ব্রিজ মোডে ডিপ প্যাকেট ইন্সপেক্টর বসিয়ে ডাটা নেয়া খুব সোজা একটা উপায়।

সজল এর ছবি

ডিপিআই বসিয়ে ডাটার উপর নজরদারী করা যায় ঠিক, কিন্তু এনক্রিপশন ব্যবহার করেতো ঠিকই প্যাকেটের ডাটা অংশ (অর্থ) লুকিয়ে রাখা যায়। উইকিপিডিয়াতে পাচ্ছি,

End points can utilize encryption and obfuscation techniques to evade DPI actions in many cases.

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

দ্যা রক্ এর ছবি

এনক্রিপশন ব্যপারটিও হ্যাক করার যোগ্য যদি আমরা প্রচলিত এনক্রিপশন গুলো ব্যবহার করি!
ভারত বা পাকিস্তান যাই বলুন! হ্যাকার হ্যাকারই! ফ্লাগ দেখালেই একটা গোটা দেশ হ্যকার হতে হবে এমন কোন কথা নেই!
হ্যাকার রা যা করে নিজেদের জন্যই করে! দেশ বা জাতির স্বার্থ তাদের কাছে নেই বল্লেই চলে।
ঘর যেমন থাকবে, চোর ও থাকবে! তাই বলে ঘরে বাস করবোনা এর কোন যৌক্তিকতা নেই।
আমি বলবো, প্রচলিত নিরাপত্তা ব্যবস্থাগুলো ঠিক রেখে আমাদের এই চুক্তি করা উচিত।
তবে.. আমাদের দেশের ইন্টারনেট স্পিড গুলোর যে দশা! তাতে এইরকম ১৬০০টা কোম্পানিকে চুক্তিনামায় সই করালেও! আমাদের কোন লাভ আসবেনা।
এই ব্যপারটিও সবাই লক্ষ করুন!

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে। গোটা দেশ হ্যাকার না হলেও সরকারী ভাবে হস্তক্ষেপ করে ডাটা হাতিয়ে নেয়ার সম্ভাবনাতো থেকেই যায় যদি উপযুক্তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা না নেয়া হয়।
স্পিডের ব্যাপারে একমত, সরকার বিভিন্ন কোম্পানীর কাছে অনেক কম দামে ব্যান্ডউইডথ বিক্রি করে, তারা সাধারণ ব্যবহারকারীদের কাছে সেই তুলনায় কত দামে কত ব্যান্ডউইডথ পৌঁছে দিচ্ছে সেটাও আলোচনার দাবী রাখে। এই বিষয়ে আপনার কিছু জানা থাকলে লিখুন।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রু (অতিথি) এর ছবি

ভালো লিখেছেন। উপরে রাগিবের সাথে একমত। চাপটা আস্তে পারে অন্যদিক থেকে আস্তে পারে, সরাসরি তথ্য চুরির ভয় না পেলেও চলবে।

নেটওয়ার্ক সিকিউরিটির উপর বেশ কয়েকটা লেখা দেওয়ার ইচ্ছা আছে।

হিমু এর ছবি

এই প্রসঙ্গ যখন উঠেই পড়েছে, তখন সিরিজ শুরু করে দিন জলদি জলদি।

সজল এর ছবি

খুবই কাজের একটা সিরিজ হবে। শুরু করে দিন তাড়াতাড়ি।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

ভুল ধারণাটি স্থায়ী হবার আগেই সবাই এই লেখাটি ছড়িয়ে দিন!!!

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যুক্তিনির্ভর, সময়োপযোগী লেখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ, সজলদা। চলুক


_____________________
Give Her Freedom!

সজল এর ছবি

শুধু ভুল ধারণার ব্যাপার না, বিভিন্ন কমেন্টে যেমন আগে না বলা কিছু ধারণাও উঠে আসছে, সেগুলো সম্পর্কেও জানা দরকার সবার। আর নিরাপত্তা (চুরি না হলেও, সার্ভিস ইন্টারাপশন)'র আশংকা একেবারে ভিত্তিহীন তাও কিন্তু না।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

শিশিরকণা এর ছবি

সহজ ভাষায় জটিল লেখা।
ডেটা স্ট্রিম গুরুত্বপূর্ণ (ব্রিজের কমিশন, ব্যাঙ্ক একাউন্ট ট্রান্সফার) আর অগুরুত্বপূর্ণ ( ফেসবুকিং, টরেন্ট) হিসেবে সর্ট করে দুই আলাদা পথে পাঠানো কিভাবে সম্ভব? প্যাকেট এর গায়ে ঠিকানা দেখে?

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ।
আমি যেটা বুঝতে পারছি যে গেটওয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে যুক্ত, সে তার কাছে আসা ডাটা শুধু সাবমেরিন ক্যাবল দিয়েই পাঠাতে পারবে। এখন যেমন ম্যাংগো টেলিসার্ভিসেস সাবমেরিন অপটিক্যাল ফাইবারের সাথে যুক্ত, এবং এই অপটিক্যাল ফাইবারের ক্যাপাসিটি (ব্যান্ডউইডথ) বিভিন্ন আইএসপি'এর কাছে বিক্রি করছে। এই আইএসপিগুলো আবার তাদের কেনা ব্যান্ডউইডথের ছোট ছোট অংশ ইন্ডিভিজ্যুয়াল ব্যবহারকারীর কাছে বিক্রী করছে। তার মানে আমার ব্যবহার করা ডাটা কোন পথে যাবে সেটা নির্ভর করবে আমার আইএসপি যে গেটওয়ের কাছ থেকে ব্যান্ডউইডথ কিনেছে, তারা ডাটা পাঠানোর জন্য কোন পথে যুক্ত তার উপর। গেটওয়ে লেভেলে প্যাকেট দুইভাগ করে দুই দিকে পাঠানোর জন্য গেটওয়ে কোম্পানীকে দুই মাধ্যমেই যুক্ত থাকতে হবে।

একটা কাজ করা যেতে পারে, সব আইএসপিকেই একাধিক বড় কোম্পানী (ম্যাংগো টেলিসার্ভিসেস/নভোটেল/বিএসসিসিএল) থেকে ব্যান্ডউইডথ কিনতে বাধ্য করা যেন তার দুইটা উৎস দুইটা বিকল্প মাধ্যমে বহির্বিশ্বে যুক্ত হয়। তারপর তারা দুই রকম ব্যান্ডউইডথ বিক্রি করবে গুরুত্বপূর্ণ এবং ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন ব্যবহারকারীর কাছে যথাক্রমে। প্রথম ক্যাটাগরির কাছে সাবমেরিন ক্যাবলের ব্যান্ডউইডথ, দ্বিতীয় ক্যাটাগরির কাছে টেরেস্ট্রিয়াল ব্যান্ডউইডথ। কোন একটা লাইন বন্ধ হয়ে গেলে তখন একটা লাইন দিয়েই সবাইকে সংযোগ দেয়া যেতে পারে। প্যাকেটের গন্তব্য দেখে যেহেতু তার পাথ প্ল্যানিং করা হয়, সুতরাং বাড়তি ফিল্টারিং করাটা মনে হয় না কঠিন কিছু হবে। তবে প্র্যাকটিক্যালি কী করা হয় সে সম্পর্কে হয়ত অন্য কেউ বলতে পারবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

নাসাদ  এর ছবি

প্যাকেট আলাদা করার সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে আইপি এড্রেস অথবা পোর্ট নাম্বার । দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে ফেসবুক যেমন পোর্ট ৮০ ব্যবহার করে তার সার্ভিসের জন্য, ঠিক অনেক গুরুত্বপুর্ন ওয়েবসাইটগুলোও তাই করে। অন্যদিকে আইপি এড্রেস পরিবর্তনশীল এবং অন্যান্য অনেক কারনে বৃহত্তর পরিসরে প্যাকেট ফিল্টারিং এর জন্য উপযুক্ত নয়। কাজেই আমার মতে আলাদা পথে ভিন্ন ধরনের ট্রাফিক পাঠানো বাস্তবে সম্ভব হবে না। বিট-টরেন্টের ক্ষেত্রে এটা করা যেতে পারে যেহেতু বিট-টরেন্ট প্রটোকল ভিন্ন পোর্ট ব্যবহার করে।

সবজান্তা এর ছবি

কয়েকটা ব্যাপারে একটু বলি- বাংলাদেশের ইন্টারনেট গেটওয়ে বর্তমানে দুইটা কোম্পানি। সরকারি প্রতিষ্ঠাণ বিটিসিএল আর বেসরকারিতে ম্যাঙ্গো টেলিসার্ভিসেস। বেসরকারি পর্যায়ে আরো কিছু কোম্পানি খুব দ্রুতই আসছে বলা শোনা যাচ্ছে, তবে এখনো নিশ্চিত না কারা আসছে।

আপনি যেমনটা বললেন, বাস্তবের কিছুটা চিত্র কিন্তু এখনই এমন। প্রতিটা ইন্টারনেট গেটওয়েই একাধিক 'আপস্ট্রিম' -এর সাথে যুক্ত (চার অথবা পাঁচটা)- এদের মধ্যে ভারতী এয়ারটেল, সিঙ্গটেল, টেলিকম ইটালিয়া, টেলিকম মালয়শিয়া এমন অনেকে আছে। তবে এই রাউটগুলি ডাটার গুরুত্ব অনুযায়ী না, বরং ভাগ করা হয় কাস্টোমার বেজ অনুযায়ী। ধরা যাক আইএসপি ক এবং আইএসপি খ দুইজনই ম্যাঙ্গোর গ্রাহক- এখন ম্যাঙ্গো তার ক্যাপাসিটি এবং অন্যান্য পলিসি অনুযায়ী হয়তো আইএসপি 'ক'কে পাঠাবে সিঙ্গটেল দিয়ে এবং 'খ'কে পাঠাবে টেলিকম ইটালিয়া দিয়ে। এছাড়া বিভিন্ন সময় যখন কোন একটি আপস্ট্রিমে কিংবা সাবমেরিন কেবলেরই কোন একটি নির্দিষ্ট অংশে কাজ হয় তখন অন্য অংশ দিয়ে ট্রাফিক রিরাউট করা হয়, সেইসময়ও আইএসপির আপস্ট্রিমগুলি রিলোকেট হয়।

আপনার দেওয়া বুদ্ধিটা একদম ফেলনা না; তবে সেই ক্ষেত্রে দরকারি অদরকারি এই ভাগাভাগিটা প্রতিষ্ঠাণ অনুযায়ী করতে হবে অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক, আর্মি কিংবা অন্য যে কোন গুরুত্বপুর্ণ অফিসকে দরকারি প্রতিষ্ঠাণ ঘোষণা করে তার সম্পূর্ণ ট্রাফিককে একটা আলাদা রাউটে নিয়ে আসতে হবে। অন্যদিকে অদরকারির মধ্যে ছোটখাটো অফিস, বাসাবাড়ি ইত্যাদি থাকলো- আর তাছাড়া অ্যাপ্লিকেশন লেয়ারের সিকিউরিটি তো সবার জন্যই আছে। তবে একই ক্লায়েন্টের ক্ষেত্রে কিছু ডাটা এক পথে আর কিছু ডাটা আরেকপথে এমনটা করা মনে হয় ফিজিবল না। বড় ভলিউমের ডাটার ক্ষেত্রে আপস্ট্রিমের রাউটারের সিপিউ ইউটিলাইজেশন দেখার মতো হবে দেঁতো হাসি

শিশিরকণা এর ছবি

সরকারী তথ্য পাচার নিয়েই যখন এত হাউকাউ, তখন সরকারী প্রতিষ্ঠান গুলোকে সাবমেরিন আর ম্যাঙ্গো পিপলের জন্য টেরেস্ট্রিয়াল লাইন দিলেই হয়। অন্যান্য ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠান চাইলে চড়া মূল্যে সাবমেরিন কেবল এর ব্যান্ডুইডথ কিনতে পারবে। দেঁতো হাসি

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

সজল এর ছবি

তবে একই ক্লায়েন্টের ক্ষেত্রে কিছু ডাটা এক পথে আর কিছু ডাটা আরেকপথে এমনটা করা মনে হয় ফিজিবল না।

হুম, ক্লায়েন্ট এর গুরুত্ব বুঝে আলাদা রাউটে আনাই ভালো হবে। ক্লায়েন্ট অনুযায়ী ব্যবহার বুঝার জন্য কিছু পরিসংখ্যানের সাহায্য নেয়া যেতে পারে (কীভাবে এই পরিসংখ্যান পাওয়া যাবে আইডিয়া নাই খাইছে )। আমার ধারণা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের আদানপ্রদান হয় এমন ইন্টারনেট ব্যবহার আজাইরা ব্যবহারের চেয়ে কমই হবে। তাই চাইলে এটাকে আলাদা করে দেয়া যেতে পারে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

আরিফুর রহমান এর ছবি

জাকারিয়া স্বপনের লেখাটা পড়ার পরে অনেকেরই 'গেলো রে গেলো রে' জাতীয় চিৎকার দেখে একদিকে হাসি পেয়েছে, আরেকদিকে বিরক্তি। আচরনের মিল দেখেই ভিন্ন দুইটা ঘটনাকে এক পাল্লায় মেপে দেখবার হাউকাউ দেখে হাসি পেয়েছে, কিন্তু বিরক্তির কারন হলো স্বপনের কথা (যেটা উপরে রাগিব আমাদের কাছে পরিষ্কার করেছেন) ভালো মতো না বুঝেই চিৎকার চ্যাচামেচি শুরু হয়ে গিয়েছিলো।

জাকারিয়া স্বপন অনেকদিন ধরেই লেখেন, আজ থেকে চৌদ্দ বছর আগে যখন কম্পুটার জগৎ নামে একটা ম্যাগাজিন বের হতো, সেখানেও জাকারিয়া লিখতেন। তার লেখায় অসংগতি তেমন একটা নেই, যেমনটা আমাদের জব্বার কাকুর লেখায় দেখা যায়। সেই জাকারিয়াকে বেশিরভাগেই চেনেন না, তার বক্তব্যের দিকে মনযোগ না দিয়ে হাউকাউ বাধিয়ে দেয়া হয়েছে। যদিও এখানে তার ভুমিকা কিছুটা রয়েছে, বাংলাদেশের ব্লগ পরিমন্ডলে নানাহ্ প্রজাতির চীজ সম্পর্কে ওনার কতটুকু ধারনা আছে/ছিলো, সে ব্যাপারে আমার এখনো সন্দেহ আছে।

যাহৌক, আলোচনার শেষের দিকে ওই পোস্টে, (আমি যেতে পারছি না কেন যেন আর), জাকারিয়ার সতর্কবাণী অনেকে বুঝতে চেষ্টা করেছেন। সেটা আশার কথা...লাভের মাঝে লাভ যেটা হচ্ছে, বিষয়টা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

ভারতের কাজে একতরফা কোনো গরু বন্ধক দেয়া মোটেও বিজ্ঞের পরিচয় নয়, কারন উপরে হিমু যেমনটা বলেছেন, বৃহৎ ও কিছুটা উ্ন্নাসিক প্রতিবেশী হিসেবে তার একধরনের হামবড়া ভাব আছে। তাকে এমন একটা ভূমিতে আনতে হবে, যেখানে আমাদের 'লেভারেজ' থাকতে পারে। এখন ট্রান্সশিপমেন্ট নিয়ে যে লেভরেজ আমাদের আছে, ডাটা যাওয়া শুরু করলে, পানির মতো ওটাকেও লেভরেজ বানাতে পারে ভারত।

আমি গনহারে জামাতী/হিজুবুতী অথবা বামজাতীয় ভারতবিরোধীতা করি নাই। প্রাসংগিক এবং ইস্যুভিত্তিক আত্ম মর্যাদা রক্ষা হয় এমন চুক্তিত/ ডীল ইত্যদি নিয়ে আগ্রহী। আমার মনে হয় অনেকেই একমত হবেন।

সজল এর ছবি

রাগিব ভাইয়ের তুলা ইস্যুটা আসলেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। জাকারিয়া স্বপন সম্পর্কে কোন অসম্মানসূচক কথা বলা আমার উদ্দেশ্য না, আমি শুধু আমার ধারণায় অস্বাভাবিক লাগা বিষয়গুলো তুলে ধরতে চেয়েছি। এখন আপনি বলুন, রাগিব ভাই যে বিষয়টা বলেছেন, সেটা কি জাকারিয়া স্বপন তার লেখায় স্পষ্ট বা বোধগম্য ভাবে তুলে ধরেছেন? উনি মূলত ব্যস্ত ছিলেন ডাটা চুরি যাবে এই ব্যাপারটা তুলে ধরতে। সবজান্তা যেমন বলেছেন, হয়ত সহজবোধ্য ভাবে লিখতে গিয়ে টেকনোলজিক্যাল ব্যাপার বাদ দিয়ে ব্যাপারটা পরিস্কার করতে পারেন নি। কিন্তু সে দায় কি উনার নিজের না?

আমার নিজেরও নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে জ্ঞান খুব বেশি না, এই ব্লগে তাই বিভিন্নজনের আলোচনা থেকে নানা প্রসঙ্গ উঠে আসছে দেখে অনেক কিছু জানতে পারছি। তবে জাকারিয়া স্বপনকে অনেক ধন্যবাদ, উনি উনার আশংকার কথাগুলো তুলে না ধরলে হয়তো এ ব্যাপারে সচেতনতা তৈরী হত না এবং সত্যিকারের বিপদগুলো সম্পর্কে আমরা উদাসিনই থেকে যেতাম।

ভারতের কাজে একতরফা কোনো গরু বন্ধক দেয়া মোটেও বিজ্ঞের পরিচয় নয়, কারন উপরে হিমু যেমনটা বলেছেন, বৃহৎ ও কিছুটা উ্ন্নাসিক প্রতিবেশী হিসেবে তার একধরনের হামবড়া ভাব আছে। তাকে এমন একটা ভূমিতে আনতে হবে, যেখানে আমাদের 'লেভারেজ' থাকতে পারে। এখন ট্রান্সশিপমেন্ট নিয়ে যে লেভরেজ আমাদের আছে, ডাটা যাওয়া শুরু করলে, পানির মতো ওটাকেও লেভরেজ বানাতে পারে ভারত।

সম্পূর্ণভাবে একমত। আমরা কিন্তু ট্রানজিট এর মত বিষয়গুলোকে নিজেদের হাতে নেগোশিয়েশন পাওয়ার হিসেবে হাতে রাখতে পারতাম। কিন্তু সরকার তো আগে থেকেই সব দিয়ে বসে আছে!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সবজান্তা এর ছবি

ভালো লেখা। জাকারিয়া স্বপনের উচিত ছিলো টেকনিক্যাল বিষয়টাকে এইভাবেই ব্যাখ্যা করার। যা টেকনিক্যাল, তা শেষ পর্যন্ত টেকনিক্যালই- সহজবোধ্য করে লিখতে যেয়ে অপরিহার্য অংশ পরিহার করলে দিন শেষে তা বিভ্রান্তিই বাড়ায়। প্রিয় ডট কমের লেখাটাতে একটা মন্তব্য করেছিলাম, আফসোস উত্তর দিলেন না মন খারাপ

এনক্রিপশন একটা গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য ব্যাপার, বিশেষত স্পর্শকাতর তথ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে। এই কারণেই নেটওয়ার্ক সিকিউরিটির বিশেষজ্ঞের চাহিদা বাড়ছে। শুধু ইন্টারনেট না, ব্যাংকিং সহ নানা রকম স্পর্শকাতর তথ্যের জন্য লোকাল নেটওয়ার্কেও আইপিসেক ভিপিএন সহ নানা রকমের সিকিউরিটি নেওয়া হচ্ছে। কাজেই ভারতের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেখেই ডাটা চুরি হবে এমনটা ভাবার সুযোগ নাই, চুরিটা যেইভাবেই যাক হবেই, এবং হচ্ছেও।

তবে এনক্রিপশন বাদেও কিছু সিকিউরিটির ব্যাপার আছে যেগুলি হয়তো পিয়ারিং কান্ট্রির অসততার উপর নির্ভর করে- অবশ্য এই ধরনের অসততার ব্যাপারগুলি বর্তমানের ইন্টারনেট ব্যবস্থাতেও আছে। যে কারো ইচ্ছাকৃত ভুল রাউট অ্যানানাউন্সমেন্ট বাজে সমস্যা তৈরি করতে পারে। ইন ফ্যাক্ট, বিজিপিকে প্রভাবিত করে কিছু ডাটা চুরির অভিযোগ চীনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকবার উঠেছে।

শেষ কথা হলো, নেটওয়ার্ক থাকলে তার সমস্যাও থাকবে- সেইটা যেই ধরনের নেটওয়ার্কই হোক।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ।
সিকিওরিটির অন্যান্য ইস্যু নিয়ে লিখুন না। স্বচ্ছ একটা ধারণা গড়ে উঠলে সবার পক্ষেই নিজস্ব মতামত তৈরী করা সহজ হবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সচল জাহিদ এর ছবি

সহজবোধ্য লেখা। চলুক চলুক চলুক

জাকারিয়া স্বপনের লেখাটি পড়েছিলাম, এই লেখাটিও পড়লাম। বিষয়টি মোটামুটি পরিষ্কার হচ্ছে এখন। এই বিষয়ে সাম্যক জ্ঞান নেই তবে যতটুকু বুঝলাম পোষ্ট ও মন্তব্য পড়ে (বিশেষত রাগিবের মন্তব্য) তা হচ্ছে বিষয়টি নিয়ে আরো ভাববার অবকাশ আছে। আশা করি সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে সরকারের নীতি নির্ধারক মহলে এটি নিয়ে আরো বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা হবে ।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ জাহিদ ভাই। হ্যাঁ, ভাববার অবকাশ আছে। হুঠ করে সিদ্ধান্ত না নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে মত বিনিময় করে এই ব্যাপারে আগানো উচিত। সরকারের তাড়াহুড়া করে নেয়া সিদ্ধান্তগুলো সাধারণত দেশের স্বার্থের পক্ষে যায় না।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

অরূপ এর ছবি

সজল, লেখা ভাল হইসে। খুব সহজবোধ্য। রাগিব হাসানের সাথে সম্পূর্ণভাবে একমত।

সজল এর ছবি

থ্যাংকস অরূপ। তুইতো নেটওয়ার্কিং নিয়ে কিছু কাজ করছিস। তোর ধারণা শেয়ার করতে পারিস এখানে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

তারেক অণু এর ছবি
সজল এর ছবি

ধন্যবাদ তারেক ভাই।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

চলুক

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ রাতঃস্মরণীয় ভাই।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

বাওয়ানী এর ছবি

ভাইরে, একটা মজার তথ্য দেই, বর্তমানে কিন্তু আমাদের সাবমেরিন ক্যাবলের ডাটার একটা বিড়াট অংশ ভারতীয় কোম্পানীর রাউটার হয়েই যায়.
ব্যাপারে
এই একটা লেখা পোস্ট করেছিলাম অনেক আগে, দেখে আসতে পারেন।

সজল এর ছবি

তার মানে আমরা ইতিমধ্যে মাইনফিল্ডে বসে আছি! এই ম্যাপ দেখেতো মনে হচ্ছে, মূল ক্যাবলের মধ্য দিয়েই ডাটা আদানপ্রদান করা যেত।

ওদের ওয়েবসাইটের ব্যানারে মূল লাইনটাকে আরো ভালো ভাবে দেখা যাবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

বাওয়ানী এর ছবি

সত্যিই তাই। সমস্যা হচ্ছে এই ক্যাবলের মধ্য দিয়েই যে ডাটা ট্রান্সফার হয় তা ইন্টারনেটে সংযোগের জন্য অন্য কনো কোম্পানী / প্রোভাইডারের সাথে ল্যজিক্যল কানেকশন করতে হয় যা 'peer' বলে পরিচিত। বর্তমানে আমাদের বিটিসিলের peer হচ্ছে :

১. TATA (India)
২. SingTEL (Singapore)
3. Seabone (Italy)

এই peer গুলাই হচ্ছে মুল গেটওয়ে।

বিটিসিএলের প্রধান গেটওয়ে হচ্ছে টাটা (ভারত), যা দিয়ে বেশিরভাগ ডাটা ইন্টারনেটে পৌছায়।

আমি অত্তন্ত দু:খিত যে বাংলায় ব্যপারটা ভালভাবে বোঝাতে পারছি না, যদি কেও জানতে চান তাহলে অন্য কোথাও ইংরেজীতে পোস্ট করে এখানে লন্ক দিতে পারি।

অ.ট. : Google Crome থেকে মন্তব্য করতে পারছি না, "To complete this form, please complete the word verification below". দেখায় কিন্তু কোন ক্যাপচা বক্স দেখায় না মন খারাপ

রু (অতিথি) এর ছবি

অ.ট. : Google Crome থেকে মন্তব্য করতে পারছি না, "To complete this form, please complete the word verification below". দেখায় কিন্তু কোন ক্যাপচা বক্স দেখায় না

আপনাকে একটা ধন্যবাদ না দিলেই নয়। এক্সপ্লোরারে যে ওয়ার্ড ভেরিফিকেশনের ছবি দেখা যায় আমি জানতাম না। এটা নিয়ে খুব ঝামেলায় ছিলাম।

সজল এর ছবি

peering তো হচ্ছে ডাটা সোয়াপ, অর্থাৎ আমাদের নেটওয়ার্কের ডাটা ওদের নেটওয়ার্কে, ওদের নেটওয়ার্কের ডাটা আমাদের নেটওয়ার্কে চলে আসবে। তাহলে কি দুই পক্ষ সমান রিস্কে (সম পরিমাণ ডাটার জন্য) থাকবে না?

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

বাওয়ানী এর ছবি

না, বাংলাদেশের মত 'end user' দেশের জন্য peering ডাটা সোয়াপে ব্যাবহার হয় না, বরং একটা upstream - downstream সিনারিও তৈরি হয় যেখানে বাংলাদেশের সমস্ত peer partner মুলত ইন্টারনেট গেটওয়ে হিসেবে কাজ করে।

বহিরাগত এর ছবি

গ্রাহকরা এনক্রিপশন সম্পর্কে উদাসীন থাকলেও, একটা ভালো ব্যাপার হচ্ছে জিমেইল বা ইয়াহু এর মত ওয়েব সাইটগুলো স্পর্শকাতর তথ্য এসএসএল ব্যাবহার করেই লোড করে। আমাজন কিংবা ইয়াহু যখনই পেমেন্ট সংক্রান্ত পেজ আদান-প্রদান করে তখন ই hhtps এ সুইচ করে।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ। সেগুলো তো আছেই। তবে নিজস্ব মেইল সার্ভার, ওয়েবপেইজে নিজস্ব ডাটাবেসের অ্যাক্সেস এইগুলোতে হয়ত কেউ কেউ এনক্রিপশন না করেই ডাটা আদানপ্রদানের ব্যবস্থা রেখে দিয়েছে। তাদেরকেও সতর্ক হতে হবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

বহিরাগত এর ছবি

ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে কেউ কখনোই ডাটা ফিজিক্যাল লেয়ারে যে পথ নেয় তা সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রন করতে পারবেনা, এটাই ইন্টারনেট, পৃথিবীর হাজারো নেটওয়ার্কের ইন্টারকানেকশন। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ডাটা নেয়ার জন্য আমাদেরকে অনেক থার্ড পার্টির হার্ডওয়্যাট / সফটওয়্যারের উপর নির্ভর করতেই হবে। এপ্লিকেশন লেয়ারের প্রয়োজনীয় সতর্কতাই পারে ডাটা চুরি অনেকটা ঠেকাতে।
আর রাগিব ভাই যে ব্যাপারটা তুলে ধরেছেন , সে ব‌্যাপারে বলতে চাই যে শুধু আমাদের ক্ষেত্রেই নয়, নেট নিউট্রালিটি বা সব ডাটাকে সমান গুরুত্বপূর্ন দেয়ার বিষয়টা নিয়ে সব জায়গায় ই বিতর্ক হচ্ছে। আইএসপি গুলো কোন ডাটা কে স্লো করে অধিকার রাখে কিনা সেটা আসলেই বড় প্রশ্ন। আমাদের সতর্কতার সাথেই ভারতের সাথে চুক্তিতে যেতে হবে।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ। নেট নিউট্রালিটির ব্যাপারে আইএসপিগুলোর আইনগত বাধ্যবাধকতা কতটুকু আছে, নাকি যে যার মত করে প্রায়োরাটাইজ করে যাচ্ছে?

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

হিমু এর ছবি

মায়ানমারে গণতন্ত্র জিনিসটা আমাদের জন্যই খুব জরুরি।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ওটা সহসা হবার নয়। চীনাদের অস্ত্র বিক্রির ব্যবসা (সরকার ও বিদ্রোহী উভয় পক্ষের কাছে), আন্তর্জাতিক অস্ত্র ও মাদকের গেটওয়ে হিসাবে ব্যবহার, তেরো-চৌদ্দটা জনজাতির ওপর বর্মীদের দাদাগিরি এগুলো যতদিন আছে ততোদিন বিশেষ আশা করার কিছু নেই। নয়তো দুনিয়ার কোনো দুর্বল দেশে পান থেকে চুণ খসতে না খসতে দুনিয়াব্যাপী হাউকাউ, অর্থনৈতিক অবরোধ, ন্যাটোর আক্রমণ, ড্রোণ হামলা কী না হয়! আর মায়ানমার! সেখানে দলে-পিষে মেরে ফেললেও বাইরের দুনিয়া রা কাড়ে না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সজল এর ছবি

মায়ানমারের জমি লিজ নিয়ে আমাদের কৃষিকাজ করার এক প্ল্যানের কথা অনেক দিন ধরেই শুনি। সেটা যদি সম্ভব হয়, তাহলে ওদের ভূমির উপর দিয়ে ইন্টারনেট সংযোগও সম্ভব হতে পারে। তবে ওদের প্রয়োজনীয় অবকাঠামো আছে কিনা কে জানে!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

প্রদীপ্ত এর ছবি

লেখাটি পড়ে অনেক কিছু জানলাম ও বুঝলাম। সুন্দর ও তথ্যবহুল লেখার জন্য ধন্যবাদ।

সজল এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

নোবেল এর ছবি

এতদিনে একটা কামের লিখা লিখলা সজল ! ভালৈছে চলুক

সজল এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ডাইনোসর এর ছবি

ডাইনোসর
অনেক তথ্য জানতে পারলাম।
আমরা পিছিয়ে থাকতে চাইনা।

সজল এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সজলায়তন এর ছবি

চলুক
সহজবোধ্য ও জরুরী একটা লেখা।

সজল এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

[অফটপিকঃ আপনার নামটা সামান্য অস্বস্তি জাগায়, আমার নিক আর সচলায়তনের ব্লেন্ডিং মনে হয়। কিছু মনে করবেন না হাসি ]

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

সজলায়তন এর ছবি

বাহ! আপনার মাথায় তো অনেক বুদ্ধি! হাসি
কি করবো? নিজের নামে তো আর আপনি সচলায়তনে লেখালেখির কোন সুযোগ দিলেন না। ওঁয়া ওঁয়া

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চলুক

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ মুর্শেদ ভাই।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

তাপস শর্মা এর ছবি

চলুক . পড়লাম। অনেক অজানা কিছু জানা হল

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ তাপসদা।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

উচ্ছলা এর ছবি

অকাট-মূর্খ আমাকে এই বিষয়টা এত সহজ আর সুন্দর করে বুঝানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ, সজল হাসি

সজল এর ছবি

চাল্লু
ধন্যবাদ আফা!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

শেফাদ এর ছবি

যে সব দেশ ল্যান্ডলকড, তারা কি করে এ বিষয়ের সমাধান করে জানেন কি?

সজল এর ছবি

ঠিক জানি না। তাদের ক্ষেত্রেতো প্রতিবেশী দেশের উপর দিয়ে না গিয়ে উপায় নেই। আমার মনে হয় প্রতিটা ব্যাপারই ইউনিক, নির্ভর করে প্রতিবেশী দুই দেশের অর্থনৈতিক শক্তির পার্থক্যের উপর। এখানে একটা খবরের লিংক পেলাম, যেখানে ল্যান্ডলকড কান্ট্রি সাবমেরিন ক্যাবলে যুক্ত হচ্ছে, প্রতিবেশী দেশের উপর দিয়ে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

চরম উদাস এর ছবি

চমৎকার একটা লেখা অনেক দেরীতে পড়লাম। সচল ভর্তি বিভিন্ন ধরনের গবেষক আছে। সবার নিজ নিজ ক্ষেত্র নিয়ে, অভিজ্ঞতা নিয়ে এরকম লেখা দেয়া উচিৎ। নাহলে সাধারণ মানুষের কাছে জব্বার আর জাকারিয়া স্বপনরাই ডিজিটাল বাংলাদেশের কেস্টু বিস্টু হয়ে থাকবে।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ উদাস ভাই!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

শাব্দিক এর ছবি

চলুক

সজল এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

দ্রোহী এর ছবি

আমরা একটা আজব দেশ! আমাদের দেশে প্রযুক্তিমুরুক্ষু লোকজন হয় প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ! মোস্তফা জব্বার হয় তথ‌্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা!

এনক্রিপটেড তথ‌্য চুরি যাওয়ার ঝুঁকি আমাদের জন‌্য যতটুকু আমেরিকার জন‌্যও ঠিক ততোটুকু, নাকি ভুল বললাম? যেখানে ফেসবুক সিকিউর কানেকশন ব‌্যবহার করে সেখানে সরকারী ডেটা কেন এনক্রিপটেড থাকবে না সেটার পক্ষে কোন যুক্তি খুঁজে পেলাম না!

তাছাড়া ভারতের সাথে ঠিক কী ধরনের চুক্তি করা হবে যে ভারত বসে বসে তার ফুটো করে আমাদের ডেটা চুরি করবে? অ্যাঁ

সত‌্যি কথা হচ্ছে আমরা আধুনিক প্রযুক্তির জন‌্য উপযুক্ত জাতি না। আমাদের জন‌্য সেরা অপশন হচ্ছে গত শতাব্দির রানার প্রযুক্তি। আমাদের GET রিকোয়েস্টগুলো সীমান্তে জড়ো করা হবে। তারপর সেগুলো কাঁধে করে আমাদের রানারেরা ভারত পার করে দিয়ে অন‌্য কোন দেশে গিয়ে ছেড়ে দিয়ে আসবে।ফলে ভারতীয়রা হাজার চেষ্টা করেও আমাদের ডেটা দেখতে পাবে না। একেকটা রিকোয়েস্টের জন‌্য মাসখানেক লাগলেও ক্ষতি কী? তথ‌্য চুরি তো যাবে না। দেঁতো হাসি

আমাদের কী এমন দামী তথ‌্য আছে যা চুরি যাওয়ার ভয়ে আমরা ১৫ বছর পরে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কে যোগ দিই?

হিমু এর ছবি

যে গর্দভ তথ্য চুরি যাওয়ার জুজু দেখিয়ে ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্কে ঢুকতে বাংলাদেশকে দেরি করালো, একে খুঁজে বের করে বিচার করা দরকার। খোদ এনএসআইয়ের ডিরেক্টর যেখানে ট্রাকে করে অস্ত্র পাচারের সাথে জড়িত থাকে, সেই দেশে তথ্য কেবল দিয়ে চুরি যাওয়া লাগে?

সজল এর ছবি

এনক্রিপটেড ডাটা চুরি যাওয়ার ঝুঁকি সমানই। ভারতের তরফ থেকে ঝামেলা যেটা হতে পারে প্যাকেট স্লো করে দেয়া বা লাইন কেটে দেয়া।

ওই ১৫ বছরে একটা দেশকে কতটা পিছিয়ে দিয়েছে সেটা যদি ওই সময়ের নীতি নির্ধারকেরা বুঝতে পারত এই সময়ে এসেও। এদের প্রতিক্রিয়া জানতে খুব ইচ্ছা হয়।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ধুসর গোধূলি এর ছবি

রাইট, এক লাইনে বললে, চুক্তির ব্যাপারে এটাই ফোকাসড হওয়া উচিৎ। ভারত তথা তাদের ক্যারিয়ারগুলো আমাদের লাইনের সাথে কোনো হাদুমপাদুম করলেই ধইরা ঠাডায়া চটকানা।

দেশের নিরাপত্তা গেলো ধোঁয়া তুলে চুরিদারীর ব্যাপার স্যাপার বলতে গিয়ে অযথা মূল বিষয়ের কলেবরই বাড়নো হবে এখানে। নিজের পিছনের লুঙ্গি তোলা থাকলে যে কেউ এসে টর্চ লাইট মেরে দেখবেই। লুঙ্গি নামায়া রাখো, অন্যে টর্চ মারলেও অসুবিধা নাই।

সজল এর ছবি

হ, এই দিকটা খেয়াল রাখতে হবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

দ্রোহী এর ছবি

ভারতের তরফ থেকে ঝামেলা যেটা হতে পারে প্যাকেট স্লো করে দেয়া বা লাইন কেটে দেয়া।

ঠিক কী ধরনের চুক্তি হলে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এ ধরনের কাজ করা সম্ভব তা কল্পনা করতে পারলাম না! অ্যাঁ

সজল এর ছবি

আসলে চুক্তিতো সরকারের সাথে সরকারের হচ্ছে না। হবে বাংলাদেশী কোম্পানীর সাথে ভারতীয় কোম্পানীর। তবে ভারত সরকার চাইলে তার কোম্পানীকে নিয়ন্ত্রণ করে এই কাজ করতে পারে, মানে এটা একটা সম্ভাবনা, এবং ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক খারাপ হলে সেটা করতে পারে, যদিও আমার ধারণা ওই কোম্পানীগুলোর কিছুটা হলেও দায়বদ্ধতা আছে চুক্তি মেনে চলার। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, আমাদের বর্তমান সাবমেরিন ক্যাবলের ডাটার একটা বড় অংশ টাটার গেটওয়ে হয়ে যায়। কিন্তু এত বছরে এখনো পর্যন্ত টাটা এমন কিছু করেছে এমনটা শোনা যায়নি, যদিও বিএনপি সরকারের আমলে বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক অন্তত বন্ধুত্বপূর্ণ ছিলো না। নিশ্চয়ই খুব খারাপ পরিস্থিতিতে না জড়িয়ে পড়লে ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতা মেনে চলতে কোম্পানীগুলোর কিছুটা হলেও দায়বদ্ধতা থাকবে। রাগিব ভাই হয়ত এই ব্যাপারে ভালো বলতে পারবেন। [উপরের দিকে রাগিব ভাইয়ের কমেন্টটা দেখতে পারেন]

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

বোবার চিতকার এর ছবি

জুজু ব্যাপারটা ভালোই গেলে আমাদের দেশে।

আমাদের পশ্চাত দিয়ে হাত ঢুকাইয়া কলিজা-মগজ চুরি করিয়া লইবে এই চিন্তা থেকেই একদা সাবমেরিন কেবল ছুড়ে ফেলা হয়েছিল!

দ্রোহী ভাই, আপনার মন্তব্যটা পছন্দ হইছে। লাইক।

ফাহিম হাসান এর ছবি

ভাল লিখেছেন সজল ভাই, বেশ ঝরঝরে লাগল।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ ফাহিম ভাই হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।