শূন্য দশমিক শূন্য ডট ডট ডট

শেহাব এর ছবি
লিখেছেন শেহাব (তারিখ: শুক্র, ২৪/০১/২০১৪ - ৭:২৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

শেষ নির্বাচনের রিপোর্ট এখনও ওয়েবসাইটে আসেনি। কাজেই ২০০৮ সাল পর্যন্ত তথ্য নিয়েই এই লেখা। আমি হিসেব করে দেখলাম স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমরা কমপক্ষে বাইশটি বামপন্থী দল পেয়েছি। তাদের বেশির ভাগের মধ্যে একটি মিল আছে। সেটি হল প্রতি নির্বাচনেই তাদের ভোট মোট দেয়া ভোটের যে শতাংশ হয় সেটি সাধারণত: একটি ভগ্নাংশ। খুব কমই দেখা যায় এটি এক শতাংশের বেশি। দেশ তো স্বাধীন হয়েছে কয়েক দশক হয়ে গেল। দলগুলোও তো কম পুরোনো না। তাহলে এখনও তাদের ভোটের ভাগ শূন্য দশমিক কিছু একটা বা টেনে টুনে এক দশমিক কিছু একটা কেন?

যে প্রশ্নটি করলাম সেটি কি ভুল প্রশ্ন নাকি সঠিক প্রশ্ন? আমি ভয় পাচ্ছি গতকাল মাত্র যে তরুণটি পৃথিবী পাল্টে দেয়ার স্বপ্ন আর বিশ্বাস নিয়ে কোন একটি বামদলে যোগ দিয়েছে সে আবার ভাববে না তো আমি তার দলকে ছোট করে দেখছি? আমি আসলে ছোট করে দেখছি না। আমার প্রত্যাশা আর প্রাপ্তির মধ্যের যে বিশাল দূরত্ব সেটি নিয়ে আমি কিছুটা হতাশ।

একটি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে আমি কি চাই? আমার কোন নির্দিষ্ট ফর্মুলা নেই, কাজেই এই মুহুর্তে মাথায় যা আসছে তা বলি। আওয়ামী লীগের কাছে আমার চাওয়া খুব কম - কাগজে কলমে ধর্মনিরপেক্ষ হলেও তারা অনেক সময় কাজে সেটি ভুলে যায় এই ব্যাপারটি দ্রুত কমিয়ে আনা আর বাঙালী জাতীয়তাবাদ বলতে তারা কি বুঝায় সেটি সমতল আর পাহাড়ের ভিন্নভাষী আদিবাসীদের কাছে পরিষ্কার করে বুঝানো। বিএনপির কাছে আমার চাওয়া আরো কম - তাদের কাজ পর্যন্ত যাওয়ার দরকার নেই, কাগজে কলমে আর ওয়েবসাইটে মতাদর্শের নামে তারা যেসব আবর্জনা লিখে রেখেছে সেটি বাদ দিয়ে বাহাত্তরের সংবিধানের চারটি মূলনীতি আগে বুঝা তারপর সেটির ভিত্তিতে তাদের মতাদর্শ ঠিক করা। বামপন্থী দলগুলোর কাছে আমার চাওয়া হল তারা আমাদের একটু পরিষ্কার ধারণা দিক যে তারা আসলে কি চায় - গত ৪২ বছরে তাদের অর্জন কি আর আগামী ৪২ বছরে তাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যগুলো কি কি? তাদের অর্জনের মূল্যায়ন আমরা ভোট প্রাপ্তি দিয়ে করবে কিনা? না করলে কেন নয়?

একটি ছেলে বা মেয়ে যখন পাশ করে চাকরীর ইন্টারভিউ দেয় তখন তাকে সবসময় জিজ্ঞেস করা হয়, আগামী ৫ ও ১০ বছরে নিজেকে কোথায় দেখতে চাও? আমার বামদলগুলোকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছা করছে আগামী ৫টি বা ১০টি নির্বাচনে আপনারা নিজেদের কোথায় দেখতে চান? সেই অবস্থানে যাওয়ার পথটিতে ঝুঁকিগুলো কি কি?

নিচের সারণীতে এখন পর্যন্ত বামদলগুলো কোন নির্বাচনে কে কত শতাংশ ভোট পেয়েছে সেটি দিলাম।

এবার একটু দেখি তাদের ভোটের ভাগ সময়ের সাথে সাথে বাড়ছে না কমছে। যেখানে দেখবেন শূন্যে নেমে গেছে ধরে নিবেন তারা নির্বাচনে অংশ নেয়নি অথবা নিলেও কোন ভোট পায় নি, অথবা সেই নির্বাচন পর্যন্ত দলটি টিকেই ছিল না।

নির্বাচনের ভোট হল মানুষের আস্থার বহি:প্রকাশ। ভোট কেনাবেচা হয়, মানুষ সচেতন না এগুলো কোন অজুহাত না। আর তাছাড়া যেকোন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটারের নিজস্ব প্রায়োরিটি থাকে। সেটি সে বোকার মত ঠিক করে না, যথেষ্ট হিসেব করেই ঠিক করে। কেউ যখন ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য ভোট দেয় সেটি তার হিসেবে আছে বলেই ঠিক দেয়, কেউ যখন আগের রাতে ৫০০ টাকা নিয়ে ভোট দেয় তখনও সেটি তার হিসেবের মধ্যে আছে বলেই ভেবে চিন্তে দেয়। সবার ভোট বিক্রির মূল্য বা কারেন্সি একই হওয়ার কথা না। সবার কারেন্সী বুঝে সে অনুযায়ী আস্থার জায়গা তৈরি করে নেয়াকেই বলে রাজনীতি।

৪০ বছর ধরে বামদলের নেতাকর্মীরা যা করছেন সেটিও রাজনীতি। কিন্তু ওনাদের রাজনীতিটি আমি কেন যেন ঠিক বুঝতে পারছি না। ওনারা কেমন বাংলাদেশ চান? সেই বাংলাদেশের নীতি, সংবিধান, আইন, বিধি, বিধান কেমন হতে হবে? সংসদে যদি বসতেই না পারা যায় তাহলে সেই বাংলাদেশ কেমন করে হবে? নাকি তারা একটু ধীরগতিতে আগাচ্ছেন? সেটি হলে তা কতটুকু ধীর?

তাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে হলে তো সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দলদুটির একটি হতে হবে তো!‍ চলুন দেখি তারা তাদের সে লক্ষ্য থেকে কতটুকু দূরে আছেন? সবচেয়ে বড় দল আওয়ামী লীগের ভোটটি উপরের গ্রাফে বসালে কেমন হয় দেখি?

বামদলগুলোর গ্রাফ আওয়ামী লীগের গ্রাফের গোঁড়ালিতে জড়াজড়ি করে পড়ে আছে। তাও এক দু বছর ধরে না, ৪২ বছর ধরে। এটি কি প্রত্যাশিত?

নিজের পছন্দমত নীতি, সংবিধান ও আইন করতে গেলে তো ৪০ শতাংশ ভোট পেতে হবে। গড়ে এক শতাংশ ভোট পেতেই তো ওনাদের ৪২ বছর লেগে গেল। বাকি ৩৯ শতাংশ পেতে কত বছর লাগবে? ৪২ গুণ ৩৯ = ১৬৩৮ বছর? গত কাল যে তরুণটি কোন একটি বামদলে যোগ দিল তার দল কি তাকে তার জীবদ্দশায় পুথিবী পাল্টানোর সুযোগ দিতে পারবে?

আমি বলছি না যে একজন নেতা বা কর্মীর জীবদ্দশাতেই পৃথিবী বা নিদেনপক্ষে দেশ পাল্টাতে পারতে হবে। তা ছাড়া পরিবর্তন নিজেই একটি চলমান প্রক্রিয়া। কিন্তু সেই জায়গায় পৌঁছানোর একটি ধাপ তো জাতীয় নীতিগুলো সংশোধনের জন্য দরকারী ভোটগুলো পাওয়া। সেই ধাপটিতে কতদিনে পৌছানো যাবে তার কোন ধারণা কি বামদলগুলোর বড় বড় নেতাদের আছে? সেটি কি দেড় হাজার বছর?

আর ততদিন কি বাকি দলগুলো বসে থাকবে?

বামদলগুলোর নেতারা হয়তো ধর্মে বিশ্বাস করে না কিন্তু পৃথিবী যে একদিন ধ্বংস হবে সেটি কিন্তু বিজ্ঞানও বলে - কেয়ামত হোক বা না হোক। হাজার বছর একটু বেশিই দেরি হয়ে যাচ্ছে! ওনারা কিছু না করলেও পৃথিবী ততদিনে পাল্টে যাবে।


মন্তব্য

হিমু এর ছবি

ঞলিবারেল আলালোদুলালডটঅর্গের আমন্ত্রণে ইঙ্গ-ইন্দো-ইসরায়েলীয় ষড়যন্ত্রের ঘাঁটি সাম্রাজ্যবাদের আঁটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক নগরীতে "বাংলাদেশে বাম রাজনীতির পুনর্ভাবন" বিষয়ে বক্তিমা দিতে যাচ্ছেন আনুদাস পাল। গঠনতন্ত্রে নাই বলে উনি আবার বিম্পিজামাতের নির্বিচার গাছ কাটার প্রতিবাদ করতে পারেন নাই।

এক লহমা এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

সুন্দর বিশ্লেষণ। চলুক

সাইদ এর ছবি

বামাতি জামাতি ভাই ভাই
অন্য কারো রক্ষা নাই

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আহা ইস্কুল কলেজের হিসাব সরাসরি ইসকুলের ইনকাম-সুনাম দিয়া করলে কি চলে?
ইস্কুলের ইনকাম-সুনাম গুনা-গুনতি করতে হয় সেই ইসকুল পাশ ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যত ইনকাম-সুনাম দিয়া

০২

বাংলাদেশের বামদলগুলা রাজনীতির ইসকুল। এই ইসকুলের শিক্ষার্থীরা সরাসরি কিছু পার্টটাইম জব (মানে ভোটে দাঁড়ানো) করলেও মুলত চাকরি নেয় মুজিব-মুশতাক-জিয়া-এরশাদ-খালেদা-হাসিনার ইন্ডস্ট্রিতে...

০৩
বাংলাদেশে বামপন্থা ইশকুল পাশ রাজনীতিবিদের অন্যপন্থার রাজনীতিতে অবস্থানের সংখ্যা কিন্তু এখনো বিশাল
এইটাই বা কম কিসে?

হাসিব এর ছবি

ইস্কুলের ধারণাটা ঠিকাছে।

শেহাব এর ছবি

বামদলের ঠিক কোন শিক্ষাটি এনারা আওয়ামী লীগ বা বিএনপিতে গিয়ে কাজে লাগান?

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ভাল তথ্য। তারমানে বামদলগুলো সাধারণ মানুষের কাছে একেবারেই পৌছাতে পারছেনা। আরেকটা অ্যানালাইসিস করা গেলে ভাল হত, এই ভোটগুলো যারা দিচ্ছে তারা কি রাজনীতি না করা সাধারণ মানুষ নাকি, যারা শুধু রাজনৈতিক দলের সাথে সরাসরি জড়িত তারা? তবে সেটা তো মনে হয় না করা সম্ভব হবে।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

ভারতেও একই অবস্থা
বামেদের ক্ষয় অব্যাহত...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

- ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে বাসদ আসলো কোথা থেকে? তখন তো তার জন্মই হয়নি!
- ১৯৭৩, ১৯৯১, ১৯৯৬-এ জাসদের ভোটের হিসাব কই?
- ছক্কা সয়ফুরের এক সদস্যবিশিষ্ট ইসলামী সমাজতান্ত্রিক দল বাম দল তো দূরে থাক, পলিটিক্যাল পার্টি হলো কী করে?
- ১৯৯১-এর পরের নির্বাচনগুলোতে সিপিবি'র ভোটের হিসাব কই?
- বামরা যখন নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছে তখন তাদের ভোট কীভাবে হিসাব করা হয়েছে?

জনগণের স্বার্থ নিয়ে কথা বলে, কাজ করে এমন দাবী করা বামদলগুলো এত বছরেও জনগণের কাছে পৌঁছাতে না পারার একটা বড় কারণ হচ্ছে তারা সাধারণ মানুষের বোধগম্য ভাষায় কথা বলতে বা লিখতে পারে না। এজন্য তাদের কর্মসূচীগুলোর কোনটাই সাধারণ জনগণের মর্মে পশে না।

আরেকটা বড় কারণ হচ্ছে তারা উত্তরে শাহবাগ, দক্ষিণে বাহাদুর শাহ্‌ পার্ক, পূর্বে বায়তুল মোকার্‌রম, পশ্চিমে নীলক্ষেতের বাইরে যেতে অক্ষম। ফলে ১৭/১৮ কোটি লোকের দেশের শতকরা শূন্য দশমিক শূন্য ডট ডট ডট মানুষের চোখে তাদের কোন কার্যক্রম ধরা পড়ে।

স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা সব প্রতিষ্ঠানেই থাকা দরকার। স্বচ্ছতা কেবল টাকাপয়সার হিসাবে নয়, কোন সিদ্ধান্ত কীভাবে নেয়া হলো, কেন নেয়া হলো সেখানেও থাকা দরকার। দলের ভেতর নীতি ও বিধানের চর্চাটা কীভাবে হচ্ছে সেটাও পরিষ্কার থাকা দরকার। কতদিনে দল কতটুকু অর্জন করতে পারবে তার লক্ষ্যমাত্রা ও সময়সীমা থাকা দরকার। সেটা অর্জিত না হলে কেন অর্জিত হলো না সেই জবাবদিহীতা থাকা দরকার। পরিস্থিতির ব্যাপারে ফোরকাস্ট আর ঘটিত বিষয়সমূহের লিঙ্কিং আপে ব্যর্থ হলে সে ব্যাপারেও জবাবদিহীতা থাকতে হবে।

নিয়মিত জাতীয় নির্বাচন ও স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নেয় এমন সংসদীয় বামদের কেউ কি বলতে পারবে অধিকাংশ আসনে জয় দূরে থাক, কত বছরে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে? পারবে না। কারণ, এসব তাদের ভাবনায় নেই। থাকলে তার প্রচারণা এবং সেই লক্ষ্যে তাদের কর্মসূচী চোখে পড়তো।

নির্বাচনপন্থায় বিশ্বাস করে না এমন বিপ্লবী বামদের কেউ কি বলতে পারবে, তারা যেভাবে কাজ করছে তাতে কত বছর পরে তাদের কাঙ্খিত বৈপ্লবিক পরিস্থিতির উদ্ভব হবে? না, সেটা তারা বলতে পারবে না। কারণ, এসব তাদের ভাবনায় নেই। থাকলে তার প্রচারণা এবং সেই লক্ষ্যে তাদের কর্মসূচী চোখে পড়তো।

মাঠপর্যায়ে রাজনীতি করে গড়ে ওঠা কর্মী আর পল্টনে বসে রাজনীতি করা নেতার মধ্যে বোধের যে পার্থক্য আছে সেটা যে কেউ বোঝেন। কিন্তু এই সত্য আবিষ্কার করার সামর্থ্য বা হজম করার মানসিকতা পল্টনওয়ালাদের নেই। এগুলো আর রাজনৈতিক দল নেই, রাজনৈতিক এনজিও হয়ে গেছে। সাধারণ এনজিও চালাতে তাও কিছু নিয়মনীতি মানতে হয়, এখানে তাও লাগে না।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চলুক

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

শেহাব এর ছবি

১. তাহলে ১৯৭৩ সালে ওই নামে অন্য কোন রাজনৈতিক দল ছিল। অন্তত সরকারী রিপোর্ট অনুযায়ী।
২. নির্বাচন কমিশনের লিস্টে নেই কেন তা তো জানি না।
৩. আমি যেসব দলের নামে সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ এসব দেখেছি তাদের হিসেবে রেখেছি।
৪. কমিশনের রিপোর্টে নেই যে?
৫. শুধু একটি নির্বাচনে সেটি আলাদা হিসেব করা হয়েছে মনে হয়।

ফাইয়াজ জামাল এর ছবি

১৯৭৩ সালের জাসদ এর ভোটকেই বাসদ হিসেবে দেখানো হয়েছে এখানে।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

নির্বাচন সংক্রান্ত সকল তথ্যের জন্য কেবল নির্বাচন কমিশনের তথ্যের (ওয়েবসাইট) ওপর নির্ভর না করে অন্য সোর্সগুলোর সাহায্য নিন এবং ভেরিফাই করে নিজের ইন্টারপ্রেটেশন দাঁড় করান। ব্যক্তিগতভাবে নির্বাচনী ফলাফলের ওপর যখনই কাজ করার চেষ্টা করেছি তখন এই পদ্ধতি অনুসরণ করেছি। নয়তো এমন অসম্পূর্ণ তথ্য ও ভুল তথ্যের শিকার হবেন।

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনগুলোতে (১ম, ২য়, ৩য়, ৫ম, ৭ম, ৮ম, ৯ম ও ১০ম) বামদের ভোটের হিসাব বের করা অত্যন্ত কঠিন কাজ। কারণ,

১. প্রথমে আপনাকে বের করতে হবে বাম দল কোনগুলোকে বলবেন। ছক্কা সয়ফুরের এক সদস্যবিশিষ্ট ইসলামী সমাজতান্ত্রিক দল বা কমরেড নূরুল হক মেহেদীর গরিবী হটাও আন্দোলন কেন বাম দল নয় সেটা তাদের অ্যাকটিভিটি থেকে বুঝতে হবে। জার্মানীর National Socialist German Workers' Party-কে যেমন বাম দল বলে গণ্য করার উপায় নেই।

২. বাম দল ঠিক করার পর আপনাকে বের করতে হবে তারা কে, কোন নির্বাচনে কীভাবে (মানে একক, নাকি বাম জোট, নাকি অন্যের মার্কা নিয়ে) করেছে। তাহলে তাদের মোট প্রাপ্ত ভোটের হিসেব বের করতে পারবেন।

৩. ভোটের হিসেব করার সময় শতকরা হিসেবটা কীভাবে করলেন সেটাও স্পষ্ট হওয়া দরকার। ১০ আসনে লড়াই করা দলের প্রাপ্ত ভোটের শতকরা হিসেব ১০ আসনের বিপরীতে করলেন নাকি ৩০০ আসনের বিপরীতে করলেন সেটা স্পষ্ট করুন। বলতে পারেন, হিসেব তো ৩০০ আসনের বিপরীতেই হবার কথা। সেটা ঠিক। কিন্তু যেহেতু, ৩০% ভোট পেলেও সংসদে ৩০% আসন পাবার গ্যারান্টি নেই, তাই ঐ ১০ আসনে শতকরা হিসেবে কতোটা ভোট পাওয়া গেলো সেটা গুরুত্বপূর্ণ।

তবে ভোটের হিসেব যেভাবেই করুন না কেন একটা কথা সত্য, জাতীয় পর্যায়ে ভোটের রাজনীতিতে বামদের বিশেষ বেইল নাই। আওয়ামী লীগ ১৫ দল, ৮ দল বা ১৪ দলে ব্যানারে বিভিন্ন সময়ে এদেরকে ছায়া না দিলে এদের পক্ষে ১০টা জাতীয় নির্বাচন মিলিয়ে মোট কতোটা আসনে জয়লাভ করা সম্ভব হতো সেটা গভীর গবেষণার বিষয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

নির্বাচন সংক্রান্ত সকল তথ্যের জন্য কেবল নির্বাচন কমিশনের তথ্যের (ওয়েবসাইট) ওপর নির্ভর না করে অন্য সোর্সগুলোর সাহায্য নিন

প্রথম কয়েক নির্বাচনের তথ্যের জন্য আর তেমন কোনও উৎস কি পাওয়া যাবে?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

শেহাব এর ছবি

অন‌্য সোর্স মানে পত্রপত্রিকার কথা বলছেন?

আমি এখানে যেসব দলের নামে সমাজবাদ, সাম্যবাদ, কম্যুনিজম, সমাজতন্ত্র রয়েছে সেগুলো ধরেছি। শ্রমিক থাকলে অবশ্য ধরিনি।

শতকরা হিসেব মোট ভোটের উপর হয়েছে। নির্বাচন কমিশনও তাই করে।

হাসিব এর ছবি

সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ না থাকলেও বামদল হতে পারে কিন্তুক।

শেহাব এর ছবি

এক্ষেত্রে বোধহয় সংবিধান পড়ে দেখতে হবে। এই কষ্টটি আমি অবশ্য করিনি।

সৌরভ কবীর এর ছবি

চলুক

__________________
জানি নিসর্গ এক নিপুণ জেলে
কখনো গোধূলির হাওয়া, নিস্তরঙ্গ জ্যোৎস্নার ফাঁদ পেতে রাখে

এক লহমা এর ছবি

চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চলুক

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি

সুমন চৌধুরী এর ছবি

এক. বাংলাদেশ রাষ্ট্রে সক্রিয়(!) "বামপন্থী" দলগুলির প্রধান সমস্যা স্পষ্ট কর্মসূচীর অনুপস্থিতি এবং সেই সূত্রে শ্রেণিসংগ্রাম থেকে ক্রমশ দূরত্ব বৃদ্ধি।

দুই. "বাম" রাজনীতি , "কমিউনিস্ট" রাজনীতি, "সমাজতন্ত্রী" এবং "সামাজিক-গণতন্ত্রী" রাজনীতি এগুলি আলাদা আলাদা পরিভাষা। কিন্তু তিন প্রকার রাজনীতিই কোন না কোন ভাবে অন্তত তত্ত্বীয় অর্থে শ্রেণিসংগ্রামের সাথে যুক্ত। সুতরাং শ্রেণি সংগ্রামের সাথে দূরত্ব বৃদ্ধি উপরের পরিভাষাগুলির সংজ্ঞার্থসমূহকে অকার্যকর করে ফেলে। পোস্টে যে পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে সেটা এই অকার্যকরতার প্রতিফলন।

তিন. পলিটিক্যাল সায়েন্সে অপারচুনিটি ফ্যাক্টার বলে একটা পরিভাষা আছে। "সমাজতন্ত্রী" এবং "কমিউনিস্ট" রাজনীতিতে "মজুরি শ্রম" হচ্ছে সেই অপারচুনিটি ফ্যাক্টর। একে রাজনৈতিকভাবে কাজে লাগাতে খুব কমদিন এবং অনেক বেশিদিন দুই রকমই লাগতে পারে। পুরো ব্যাপারটাই নির্ভর করে "সমাজতন্ত্রী" এবং "কমিউনিস্ট" পরিচয় দানকারী রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনার উপর। আর সেই ব্যবস্থাপনা নির্ভর করে দলগুলির নীতিনির্ধারকদের উপর। সেখানে ইতিবাচক পরিবর্তন আসলে দলগুলির পলিটিক্যাল অ্যাকশানেও পরিবর্তন আসবে।

যা বললাম পলিটিক্যাল সায়েন্সের দৃষ্টিতে বললাম। পলিটিক্যাল সায়েন্স খারাপ বিষয়। পাশ কইরা চাকরি নাই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।