কারসাজির ক্যামেরাবাজি -৪

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন শোহেইল মতাহির চৌধুরী (তারিখ: শনি, ২৫/০৪/২০০৯ - ৩:৫৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(তিনের বাকী দুই কল-কব্জা)

উঠে যাওয়ার সিঁড়ি

এ্যাপারচার
ক্যামেরায় যে আলো ঢুকে তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য প্রত্যেক লেন্সের মধ্যে আছে আইরিস – বলা যায় ছিদ্র। এটা ছোট বা বড় করা যায়। ছিদ্রটা ছোট হলে কম আলো আসে, সুতরাং ছবির জন্য পর্যাপ্ত আলো ধরে রাখতে পর্দা বেশি সময় ধরে খুলে রাখার দরকার হয়। অর্থাৎ শাটার স্পিড হতে হবে ধীর,লম্বা সময়ের।
ছিদ্রের (বা এ্যাপারচার) আকার কিন্তু আরেকটা জিনিস নির্ধারণ করে। তা হলো, আপনার শটের কতটা কড়া ফোকাসে থাকবে – স্পষ্ট থাকবে। কাছে থেকে দূরে যত জিনিস ছবিতে ধরা পড়বে তাদের কোনগুলো স্পষ্ট দেখা যাবে বা ঝাপসা লাগবে তা নির্ভর করে এই এ্যাপারচারের ওপর। ছবির কতদূর থেকে কতদূর পর্যন্ত স্পষ্ট দেখা যাবে তাকে বলে ডেপথ্ অব ফিল্ড। ছিদ্র বা এ্যাপারচারের আকার ছোট হলে ছবিতে পাওয়া যাবে বেশি ডেপথ্ অব ফিল্ড; প্রাকৃতিক দৃশ্যের ছবি তুলতে যা খুব দরকার – কাছের ঘাস থেকে শুরু করে দূরের পাহাড় সব কেমন ঝকঝকা। এ্যাপারচার যদি বড় হয় তবে ছবির দূরের অংশ (ব্যাকগ্রাউন্ড) ঝাপসা দেখায়; পোর্ট্রেট ছবি তুলতে দক্ষ ক্যামেরাবাজরা এই পেছন ঝাপসা করার কারসাজি দেখিয়ে দর্শককে মাত করেন।

এ্যাপারচার মাপা হয় এফ স্টপ দিয়ে। তবে একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে এফ স্টপগুলোর নাম দেখে - এফ/২.৮, এফ/৪, এফ/৫.৬, এফ/৮, এফ/১১, এফ/১৬ এবং এফ/২২। এফ স্টপের মান যখন কমে তখন বাস্তবে এ্যাপারচারের আকার কিন্তু বড় হয়। অর্থাৎ এফ ২.৮ –এ এ্যাপারচার বা ছিদ্রের আকার বড় হয় এবং বেশি আলো ঢুকে।

ডিজিটাল ক্যামেরায় এসব এফ-স্টপের মাঝামাঝি নানা মান ব্যবহার করা যায় – তবে আগে উপরে দেয়া মানগুলো ব্যবহারে দক্ষ হয়ে উঠলে ঐসব আধাআধি এফ-স্টপেও অসুবিধা হবে না। আবার অনেক লেন্সের মধ্যে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন এ্যাপারচারের মান দেয়া থাকে (যেমন এফ ২.৮- এফ ৫.৬)। সেক্ষেত্রে ঐ লেন্স ব্যবহার করে সব ধরনের এ্যাপারচারের সুবিধা পাওয়া যাবে না।

(তত্ত্ব নিয়ে কচকচানি আমাদের উদ্দেশ্য নয়। তবু আইএসও নিয়ে পরের অংশটুকু লিখতেই হয়। নতুবা পরবর্তীতে অনেক বেসিক বিষয় বুঝানো সম্ভব হবে না। তবে ছবি তুলতে যে বিষয়বস্তুর ছবি তুলবেন, ছবির পশ্চাৎভূমি বা ব্যাকগ্রাউন্ড, আলো ও যন্ত্রপাতি নিয়ে পেশাজীবি ক্যামেরাবাজরা কীভাবে ভাবেন তা দেখুন নীচের ভিডিওতে)

আইএসও
ডিজিটাল ক্যামেরার ক্ষেত্রে আইএসও হচ্ছে ক্যামেরার সেন্সরের সেনসিটিভিটি। আইএসও যত বেশি হবে আপনি তত কম আলোয় ছবি তুলতে পারবেন। আইএসও সাধারণত: দ্বিগুণ হয়ে বাড়ে যেমন: ১০০, ২০০, ৪০০, ৮০০, ১৬০০, ৩২০০।

আইএসও বেশি দিয়ে কম আলোয় ছবি তুলতে পারাটা একটা বিরাট সুবিধা। কিন্তু অসুবিধা হচ্ছে এতে ছবি কিছুটা দানা দানা দেখায়। সুতরাং যতটা সম্ভব কম আইএসওতেই ছবি তোলার চেষ্টা করা দরকার। সাধারণত ১০০ বা ২০০ আইএসও ব্যবহার করেই ক্যামেরাবাজরা ছবি তোলেন।

আরেকটা কথা মনে রাখা দরকার যে, আইএসও হচ্ছে এই তিন কল-কব্জার মধ্যে শেষ অস্ত্র। যদি এ্যাপারচার ও শাটার স্পিড ব্যবহার করেও দৃশ্যকে যথাযথ ক্যামেরায় বন্দী করার সমস্যা দূর না হয় তখনই শুধু আইএসও-র দারস্থ হওয়া উচিত।

(কম আলোতে ছবি তোলার প্রস্তুতি ও ছবি তোলা নিয়ে একটা ভিডিও দেখুন এখানে)

(তাত্ত্বিক আলোচনা মোটামুটি এখানেই শেষ। এরপর থেকে সব হবে ছবি তোলার ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা আর টিপস্ বিনিময়। ছবি তুলতে থাকুন মনের আনন্দে। আর কয়েকদিনের জন্য ছবি তোলার একটা নির্দিষ্ট বিষয় ঠিক করুন। শুধু সেই বিষয়ের ছবি তুলুন। অসুবিধাগুলো সম্পর্কে নোট রাখুন। ছবিটা ফ্লিকারে দিয়ে বিজ্ঞজনদের মতামত চান। তাছাড়া ক্যামেরাবাজি সম্পর্কে আপনাদের যেকোনো জিজ্ঞাসা থাকলে মন্তব্যের জায়গায় প্রশ্ন করুন। আমরা এর উত্তর খুঁজে বের করবো। ক্যামেরাবাজি শুভ হোক!)


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার পুরোনো Sony DSC-F505 ক্যামেরার ব্যাটারী দুষ্প্রাপ্যতার কারনে নতুন একটা কিনতে হলো ক্যামেরাবাজীর ক্লাস চালানোর জন্য। দোকানীকে বলেছিলাম আনাড়ী ক্যামেরাবাজের জন্য কঠিন অপটিক্যাল জুমের একখান ক্যামেরা দেন। দিল নীচের মডেলখান। চলবে কী?

Model : Sony H50
Resolution : 9.10 Megapixels
Lens : 15.00x optical zoom (31-465mm eq.)
ISO : 80-3200
Shutter: 30-1/4000
Aperture range: f/2.7- f/8 at wide angle
: f/4.5 to f/8 at telephoto.

Nikon D60 কেনার ইচ্ছে ছিল। সাহস হলো না এতটা পেশাদার হতে পারবো না ভয় করে।

-নীড় সন্ধানী

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ইশ্... সময়াভাবে ফ্লিকারে আর গ্রুপে সক্রিয় হতে পারছি না। ক্যামেরার ডিটেইলস চাইছিলেন তাও দিতে পারতেছি না। কয়টা দিন একটু মনে হয় দৌড়ের উপরেই কাটবে।

তবে পড়ে যাচ্ছি... যদিও এই কথাগুলো জানা ছিলো... তবু একটু ঝালাইলাম...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

জিজ্ঞাসু এর ছবি

তাত্ত্বিক আলোচনাটা বেশ লাগল এর খুঁটিনাটি সবিস্তারে বর্ণনার জন্য।

@ নীড় সন্ধানী
আমার মনে হয় তাত্ত্বিক ক্যামেরাবাজিতে ডিজিটাল ক্যামেরার চেয়ে ম্যানুয়াল এসএলআর (সিঙ্গেল লেন্স রিফ্লেক্স) বেশি কার্যকর - তত্ত্বকে হাতেকলমে বোঝার ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে আদর্শ হল জাপানি পেনট্যাক্স কে ১০০০ - যদিও এর উৎপাদন এখন বন্ধ তবু্ও পুরনো সংগ্রহ করা যেতে পারে। পাশাপাশি পুরনো জার্মানির প্রাকটিকাও খুব ভাল এসএলআর ম্যানুয়াল ক্যামেরা।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

জিজ্ঞাসু হয়তো বলতে চেয়েছেন শুধু ম্যানুয়াল ক্যামেরার কথা। তবে আমি অরূপের সাথে একমত -- আধুনিক ডিএসএলআর দিয়ে তত্ব বোঝা অনেক সহজ। কারণ এতে একসাথে ফুল-ডিজিটাল এবং ফুল ম্যানুয়াল অপশন আছে।

পেনট্যাক্স K-1000 নিয়ে একসময় ফটোগ্রাফারদের ফ্যাসিনেশন ছিলো। বাংলাদেশের অনেক নাম করা ফটুরে এইটা ছাড়া অন্যকোন ক্যামেরাকে ক্যামেরাই মনে করতো না। ফ্যাসিনেশনের মূল কারণ কি আমি জানিনা তবে আন্দাজ করি এর ছোট আকার আর হালকা গড়ন হয়তো হবে। প্রেস ফটোগ্রাফিতে এর উপযোগিতা ছিল বোধ করি। একসময় মিনলটা আর K-1000 দিয়ে ছবি তোলার সৌভাগ্য হয়েছিল। মিনলটা ছিল প্রায় দেড় কেজির* মত ভারি, আর পেনট্যাক্স ছিল তার প্রায় অর্ধেক।

* দেড় কেজির ব্যাপারটা আন্দাজে বললাম আরকি। তখন বয়স কম ছিল তো চোখ টিপি

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

কি কয়? ১ডি অথবা ৫ডি তে যান। তবে ৫ডি আমার কাছে ততটা ভালো লাগেনা শুধু ওর ফুল-ফ্রেম অপশন ছাড়া। টেকনিক্যালি ৫ডি আসলে ৪০ডির চেয়েও ইনফিরিয়র। তবে ৫ডি মার্ক-২ তে মনে হয় সব নতুন ফিচার আছে।

অতিথি লেখক এর ছবি

টি২ এর দামতো অনেক কম!! কিন্তু ফিল্ম কিনাইতো ঝামেলার কাজ ইয়ে, মানে...
----------
উদ্ভ্রান্ত পথিক

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

7D/60D আসতেছে। ওয়েট করতেছি ওইটার জন্য।

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

জিজ্ঞাসু এর ছবি

@অরূপ
আচ্ছা বলি। এগুলো আগে ব্যবহার করেছি। সবগুণই ওগুলোতে আছে। তবে নিজের ঘাটতিটা হল ভালমানের ডিজিটাল এসএলআর এখনও ব্যবহার করিনি অর্থাৎ কিনিনি। এর আগে কোথাও মন্তব্যে বলেছিলাম ডিজিটাল এসএলআর কিনব কিনব করে দশ বছর পার হয়ে গেছে। আপনিই বলুন না কোনটা কিনব। তাছাড়া ডিজিটাল এসএলআরে ফুল ম্যানুয়াল অপশনের ব্যাপারটাও আমার অজানা ছিল। আসলে ম্যানুয়াল ক্যামেরার মত কবে যে নিজেই অব্সলিট হয়ে গেছি। সময় খুব দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

পূর্বকথা: যে ছবিটা নিয়ে এখন লিখছি সেটা বিগ সি'র সিলেকশন। বিগ সি যে কত বড় ক্যামেরাবাজ এবং বড় শিক্ষক তা তাঁর ছবি সিলেকশন দেখলেই বোঝা যায়। যাহোক চলে আসি আসল কথায়। নিচের ছবিটা দেখুন:
_MG_1147
অশ্বক্ষুরাকৃতির (কানাডিয়ান) নায়াগ্রা ফলস, রাতের বেলা কানাডা থেকে যেমন দেখায়।

ছবিটাতে আজকের আলোচ্য বিষয়ের সবগুলিই এ্যাপ্লাই করা হয়েছে। প্রথমত: ছবিটা রাতের বেলা তোলা হয়েছে, এবং চারপাশে কোন আলো ছিলনা। শুধুমাত্র নায়াগ্রার উপরে সাদা আলো ফেলা আছে। সেই আলোতেই ছবি তুলতে হবে।

ছবি তোলার সময় লক্ষ্য ছিল পানির পতন যেনো ঘোলা ঘোলা আসে, আর ছবিটা যতটা সম্ভব কম ব্লারি হয়। তবুও দূরের আলোগুলো দেখলে বোঝা যায় হাত একটু হলেও কেঁপেছিল। যেটা অস্বাভাবিক নয়, কারণ এই এক্সপোজারে হাত না কাঁপিয়ে ছবি তোলা প্রায় অসম্ভব। এধরনের ছবি তোলার জন্য ট্রাইপড অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্ত ঐ সময় আমার ট্রাইপড ছিলনা, ফলে হাতে নিয়েই তোলা। উল্লেখ্য, লেন্সের ইমেজ স্ট্যাবিলাইজার সুবিধার সদ্ব্যবহার করা হয়েছে।

পর্যাপ্ত আলো না থাকায় শুধু এক্সোপোজার কন্ট্রোল করে ছবি তোলা সম্ভব ছিলনা। আমার ক্যামেরার সর্বোচ্চ f হলো 3.5, অর্থাৎ লেন্স কতটা বড় করে খোলা যায় তার হিসাব। এর পরে সাটার স্পীড কমিয়ে দেয়া হলো পানির পতনের ঘোলা এফেক্ট ক্যাপচারের জন্য। কমাতে কমাতে ০.৩ সেকেন্ড করে দেয়া হলো, এর চে নিচে নিলে হাতে নিয়ে এই ছবি তোলা কঠিন হতো। ফলে এক্সপোজার দাঁড়ালো 3.5/0.3. এর পরে "শেষ" অস্ত্র প্রয়োগ করা হলো-- আইএসও নাম্বার। আমার Canon 40Dর সর্বোচ্চ আইএসও 1600। ক্যামেরার সেন্সরের সংবেদনশীলতা সবচেয়ে বেশিতে সেট করে দিলাম যাতে সামান্য আলোতেই সে ছবি তুলতে পারে।

আসলে আইএসও-ই শেষ অস্ত্র নয়, এর পরেও একটা জিনিস থাকে-- "এক্সপোজার বায়াস কন্ট্রোল"। অর্থাৎ ক্যামেরা যে এক্সপোজার দেখাচ্ছে সেটাকে একটু এদিক-সেদিক করা। এর মাধ্যমে হয় আলো আরেকটু বাড়িয়ে দেয়া, (ওভার এক্সপোজড) বা একটু কমিয়ে দেয়া যায় (আন্ডার এক্সপোজড)। আমি এক্সপোজার বায়াস +1 করে দিলাম, অর্থাৎ ওভার এক্সপোজড করে দিলাম যাতে আরেকটু বেশি আলো ক্যামেরায় ঢোকে।

এভাবেই ছবিটা তোলা হয়েছে। এরপর কোনো ডিজিটাল কারসাজি করা হয়নি, কেবল সামান্য শার্পনেস হয়তো বাড়ানো হয়েছিল। তবে সেটা কতটা বাড়িয়েছি তা মনে নেই।

Exposure: 0.3 sec (3/10)
Aperture: f/3.5
Focal Length: 28 mm
ISO Speed: 1600
Exposure Bias: 1 EV
Flash: Flash did not fire

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

হুম। ডার্করুমের ডিজিটাল ভার্সন পিপি। মনে আছে, একসময় ফুলের ছবি তুললে তার চারপাশ শার্প না আসলে লোকে বলতো ছবি তোলাই জানেনা। আর এখন পুরাটাই উল্টা। ফুল বাদে বাকি সব ঘোলা না হলেই বরং বলবে ছবিটার সৌন্দর্যই নষ্ট হয়ে গিয়েছে।

আপনি পিপি নিয়া আরো কিছু পোস্ট দেন। আপনে আমার এইচডিআর গুরু দেঁতো হাসি

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

ধন্যবাদ প্রকৃতিপ্রেমিক। আপনার ছবি নিয়ে এই আলোচনা আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে অনেক কিছু শেখাবে। উত্তম জাঝা।
ছবিটি নিয়ে যা যা প্রশ্ন করার ছিল তার সবই আপনি সুন্দর করে উত্তর দিয়েছেন। তার মানে অনুমান করছি আপনি সার্টিফিকেট পাওয়া ফটোগ্রাফার।

(লজ্জার সাথে বলি, আপনার মত এই ছবি তুলতে আমার আরো দুই বছর লাগবে। কসম কাইটা কই, আমি মাত্র ক্যামেরাবাজি শিখতে শুরু করছি।তবে আমি আবার একা একা কিছু শিখতে পারি না তাই সচলে একটা মেলা খুললাম আর কি।)

আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।

প্রকৃতিপ্রেমিকের এই আলোচনা পড়ে যারা উপকৃত হলেন তারা তাকে ধন্যবাদ দিতে কার্পন্য করবেন না।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

কী যে বলেন.. লজ্জায় পড়ে গেলাম। আমার ছবিতে না থাকে শিল্প না থাকে কৌশল। একেবারে সাদামাটা ছবি। আপনি অতি বিনয়ী, তাই এমনটা বলেছেন। তবে সার্টিফিকেটের কথা যখন বললেন তখন দুইখান কথা রেকর্ড করে রাখি।

হ্যাঁ সার্টিফিকেট অবশ্য একটা পাইছি, সেটা ১৯৯৩ সালে যখন নটরডেম ন্যাচার স্টাডি ক্লাবে প্রথম এসএলআর ক্যামেরার কোর্স করি। যাদের অবদান সবসময়ই স্বীকার করতে হবে তাঁরা হলেন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া যিনি কখনোই ফ্ল্যাশ ফটোগ্রাফি পছন্দ করতেননা, বরং উৎসাহিত করতেন ফ্ল্যাশ ছাড়া ছবি তুলতে; রনি ভাই (৯০র ব্যাচ), শরীফ ভাই (৯০র ব্যাচ, যার মিনলটা ক্যামেরা দিয়েই ক্যামেরাবাজী শিখেছি), সাজেদ ভাই (৯০র ব্যাচ, যিনি বিপিএস থেকে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করতেন), শেখর ভাই (৮৮র ব্যাচ, যিনি আমার পাখি দেখার গুরু)। এঁদের কাছেই ক্যামেরাবাজী শিখেছি। নিজের প্রথম এসএলআর কিনি ১৯৯৪এ, রাশান জেনিথ ক্যামেরা। ওটা দিয়েই চালিয়েছি ২ বছর।

নিজেকে থিওরেটিক্যাল ফটোগ্রাফারই বলতে হবে, কারণ ক্যামেরার অভাবে প্রায় ১২ বছর এর থেকে দূরে ছিলাম। সচলে আসার পরে সেটা আবার চাগার দিয়ে উঠেছে হাসি টাকা পয়সা না থাকলে ফটোগ্রাফির শখ পালন করা কঠিন।

অম্লান অভি এর ছবি

ক্যামেরার বর্ণনা বিহীন ক্যামেরাবাজীর ছাত্র হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলাম। আজ একটা
Olympus Camera দেখলাম কিনব নাকি তাই সাহায্য ও অনুমতি চাচ্ছি অভিজ্ঞদের অভিজ্ঞতা ভাগেরঃ

FE20
8.0MP
3X Optical Zoom
2.5" LCD

এতটুকু্‌ই জানানোর মত জানি।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

অলিম্পাস, ফুজি জানিনা-- তবে সোনি সুবিধার নয় (কেউ মাইন্ড করবেন না)। সোনির মেমরি কার্ড সংক্রান্ত একটা বিষয় আছে, অরূপ যেমনটা ইংগিত দিয়েছেন। অবশ্যই ক্যানন, নয়তো নাইকন। এখনকার ক্যানন গুলোতে ডিএসএলআর-এর প্রায় সবকিছুই আছে শুধু সেন্সরটা ছাড়া।

অম্লান অভি এর ছবি

এব্যাপারে আমাদের প্রযুক্তি'তে সাহায্য চেয়েছিলাম সেখানে আপনাকে রেফার করা হয়েছে আমার সাহায্যে- রেফারার বিপ্রতীপদা।
শুধু একটু যদি বলেন অলিম্পাস ঐ মডেলের সমতুল্য ক্যানন বা নাইকন এর দাম এবং কোথা থেকে কিনব।

মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান.....

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনি যদি বাংলাদেশে থাকেন তাহলে আমি বলতে পারবোনা কোথায় পাওয়া যাবে, তবে ইকুইভ্যালেন্ট ক্যাননের টা হবে A720 অথবা নাইকন কুলপিক্স L19। দুটোই ৮ মেগাপিক্সেলের, দাম ১২০-১৫০ ডলারের মতো, প্রায় ৮-১০ হাজার টাকার মধ্যে।

নীড় সন্ধানী [অতিথি] এর ছবি

আমিতো সনি কিনে ফেলেছি। গিয়েছিলাম নাইকন ডি৬০ কিনতে। কিন্তু দোকানী বললো পেশাদার ছাড়া এই ক্যামেরা ব্যবহার করা কঠিন। তাই সহজ ক্যামেরা সনি এইচ৫০ নিয়ে এলাম। মেমরি কার্ড এখন আর দুষ্প্রাপ্য নয়। দামও কমেছে অনেকগুন। কিন্তু এটাতে টেকনিক্যাল সমস্যা আছে কিনা জানি না। ছবি তুলে পাঠাবো।

রণদীপম বসু এর ছবি

লাস্ট বেঞ্চার আমি সব খিয়াল করতেছি। কিছু বুঝতেছি কিনা জানি না। তবে পিপি দা'তে একটা উত্তম জাঝা না দিলে নির্ঘাৎ কার্পণ্যের দায়ে অভিযুক্ত হবো।
বাকী জীবনে সেইরম একটা ক্যামেরা কিনা হইব কিনা তাই তো জানি না। হেরপর এইরম ছবি !

এইবার আমার আনাড়ি ২ম্যাঃপিঃ মোবাইল ক্যামেরার ততোধিক আনাড়ি ক্লিক- (বড় করতে চাইলে ছবিতে ক্লিক)

auto

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ছবির বিষয়বস্তু যে সবসময় "সৌন্দর্য" হবে এমনটা নয় কিন্তু। আপনার ছবিতে সুন্দর কিছু নাই, তবে লক্ষ্য করেন কী সুন্দর একটা ফ্রেমিং হয়েছে। রাস্তাটা T হয়ে গেছে আর পাশের বিল্ডিংটার কারণে পার্সপেক্টিভ সুন্দর বোঝা যাচ্ছে। তবে আমি তুললে হয়তোবা নিচের বাগানের অংশটা আরেকটু কম কাভার করে উপরে ডান কোণের দিকে কাভারেজ একটু বাড়াতাম। (জানিনা কেন, হঠাৎ মনে হলো তাই বললাম হাসি )

রণদীপম বসু এর ছবি

পিপি দা' কি এভাবে বলছেন ?-

auto

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

অনেকটা সেরকমই, তবে আগেরটাই ভালো লাগছে হাসি

আপনি কি আগের পজিশন থেকেই এই ছবিটা নিয়েছেন? কেন যেন মনে হচ্ছে আগের ছবিটা আপনি আরো ডানদিক থেকে তুলেছেন, এটা মনে হচ্ছে একটু বামে এসে তুলছেন। কিংবা ক্যামেরাটা হয়তো ধরেছেন এমনভাবে যে তাই মনে হচ্ছে।

আপনি আসলেই চলমান ক্যামেরা.. যে যখন যে বিষয়ের ছবি চাইছে আপনি সাথে সাথেই সেটা হাজির করে দিচ্ছেন। বেশ অবাক হচ্ছি!

নীড় সন্ধানী [অতিথি] এর ছবি

ছবিতো দারুন এসেছে রন'দা? মনেই হচ্ছে না মোবাইল ক্যামেরায় তোলা। কোন জায়গার ছবি এটা?

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

২ মেগাপিক্সেলের ছবি ওয়েবসাইটে বা ছোট প্রিন্ট হিসেবে ব্যবহার করা যায় এবং করা হয়।
তবে মোবাইল ক্যামেরায় যেহেতু ছবি খুব স্পষ্ট আসে না সেহেতু বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা তো আছেই।
কম্পোজিশানের খেলা একটা বিকল্প উপায় মোবাইল দিয়ে ছবি তোলার। ক্রিয়েটিভ ব্লারিং বা সাদা-কালো ইত্যাদি কাজেও মোবাইলের ক্যামেরা ব্যবহার করা যেতে পারে।

যাদের ডিএসএলআর নাই তারা তাদের ক্যামেরাকে আরো শিল্পসম্মত ছবি তৈরিতে কীভাবে ব্যবহার করতে পারেন সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত চেয়ে একটা আলাদা পোস্ট দেয়ার পরিকল্পনা আছে।
শুভেচ্ছা।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

দেখছি, পড়ছি সবই। সময় (এবং DSLR) এর অভাবে সেভাবে ছবি তোলা হচ্ছে না। সময় করতে পারলে কাজে হাত দেবো খুবই তাড়াতাড়ি।

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

ভিডিওটা অনেক ভাল লাগল আর তার চেয়েও বেশি বিশেষজ্ঞ ভাইজানদের আলোচনা।
----------------------------------------

--------------------------------------------------------

আরিফ জেবতিক এর ছবি

কিছু মনে করবেন না স্যার , ব্যাকবেঞ্চার হিসেবে হাস্যকর প্রশ্ন করাটা আমার আজীবনের অধিকার থেকেই একটা জিজ্ঞাস্য :

শাটার স্পীড আর এ্যাপারচার , এই দুটোর কাজই আমার কাছে এক মনে হচ্ছে তাই গুলিয়ে যাচ্ছি ।

শাটার যদি বেশিক্ষন খুলে রাখি তাহলে আলো বেশি পাব , আবার এ্যাপারচার যদি কম হয় ( মানে ছিদ্র বড় হয় ) তাহলেও আলো বেশি পাব ।
সেক্ষেত্রে এই দুই জিনিষের মাঝে পার্থক্য কোথায় ?

মানে আমি ত্রিভুজের উপর ক্যামেরা বসিয়ে যদি শাটার বেশিক্ষন খুলে রাখি , তাহলে আবার এ্যাপারচার হিসেব করতে হবে কেন ?

--------
আমি মাঝখানে দুটো ক্লাস মিস করেছি বিদ্যুৎ বিভ্রাটে , তবে মেকাপ ক্লাসে এটেন্ড করছি ।

প্রত্যেক ক্লাস থেকে কী শিখলাম সেগুলো এখন থেকে কমেন্টের ঘরে লিখে রাখব , এতে আমার নিজের বুঝতে সুবিধা আর টিচারও বুঝতে পারবেন আমি কি ক্লাসের সাথে আছি নাকি ফিজিক্সের ক্লাসে ফিলসফির ছাত্র হয়ে বসে আছি ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।