আরো এক রিকশাওয়ালার কথা

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি
লিখেছেন সুবিনয় মুস্তফী (তারিখ: শনি, ১২/০৭/২০০৮ - ৪:৪১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রণদীপমের লেখাটা পড়তে পড়তে সম্প্রতি কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে, সেগুলো লেখার তাগিদ অনুভব করলাম।

এখানে আমার বন্ধুমহলে একজন পাকিস্তানী আছে। করাচীর ডাক্তার। লন্ডনের বাইরে এক হাসপাতালে কাজ করে। তার বাড়ির গল্প তার থেকে আগে শুনেছি - বুড়ো বাবা-মা, এক ভাই-ভাবী আর ভাস্তে-ভাস্তি। সব দেশে।

ওদের ফ্যামিলিতে আরেকজন আছে। বেলাল নামের এক বাংলাদেশী ছেলে। ফেনীর ছাগলনাইয়া তার বাড়ী। ১৫-১৬ বছর বয়সে বেলাল দেশছাড়া হয় আদমবেপারীর সহায়তায়। পাকিস্তান গিয়ে ঠেকে শেষ পর্যন্ত, এবং করাচীর এই পরিবারে ভৃত্য হিসাবে কাজ খুঁজে পায়। তারপরে প্রমোশন হয়ে বাবুর্চি। প্রায় ২০ বছর যাবত তাদের সাথে থাকায় পরিবারের একজনের মতই ধরা হয় বেলালকে।

এরই ফাঁকে ফাঁকে কয়েক বছর অন্তর অন্তর বেলাল দেশ থেকে ঘুরে আসে। যেহেতু লিগ্যালি সে পাকিস্তান যায়নি, প্রতিবারই কিছুটা ঝুঁকি নিয়ে, অনেকখানি টাকা খরচ করে স্থলপথে যাওয়া আসা করতে হয়। কয়েক বছর আগে বেলাল দেশে গিয়ে বিয়ে করে। কয়েক ট্রিপ শেষে তার তিনটে বাচ্চাও হয়েছে দেশে। বৌ-বাচ্চা সবাই ফেনীর গ্রামেই থাকে, ওদিকে বেলাল দূর দেশে বাবুর্চি।

কয়েক মাস আগে বেলাল দেশে চিরতরে ফিরে যাওয়ার জন্যে মনস্থির করে। সন্তানেরা বড় হয়ে যাচ্ছে, অথচ সে পাশে নেই, নিজের বাচ্চারা তার অবর্তমানে অপরিচিত হিসাবে বেড়ে উঠবে, সেটা বেলাল মানতে পারে না। তাই করাচীর পরিবারকে বিদায় জানিয়ে বেলাল দেশে ফেরত যায় মাস তিনেক আগে। এসবই আমি জানতে পারি এই বন্ধুর কাছ থেকে।

*

কিছুদিন আগে শুনলাম বেলাল ফেনীতে রিকশা চালানো শুরু করেছে। পড়াশুনা জানা নেই - অন্য কোন কাজ পায়নি। কিন্তু পাঁচজনের পরিবার। মফস্বলে রিকশা চালিয়ে যেই উপার্জন, দুর্মূল্যের বাজারে তা দিয়ে দিন যায় না।

ডাক্তার বন্ধু আমাকে দুই সপ্তাহ আগে জিজ্ঞেস করলো যে সে বেলালের কাছে কিছু টাকা পাঠাতে চায়, কিন্তু বেলালের ব্যাংক একাউন্ট জাতীয় কিছু নেই। আমি যদি দেশে টাকা পাঠিয়ে থাকি, তাহলে ওর হয়ে বেলালকে কি কিছু টাকা পাঠানো যায়?

ঢাকায় আমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ডকে ফোন করি। ঘটনাক্রমে মাতু নিজেও নোয়াখাইল্যা, যদিও ঢাকাতেই বড় হয়েছে। কলেজ-ভার্সিটি একসাথে শেষ করেছি। মাতুকে বলি ঘটনা। মাতু জানায় ও টাকাটা হস্তান্তর করতে পারবে। বেলাল যেন কোনভাবে ওকে মোবাইলে ফোন করে, আর ঢাকায় এসে টাকাটা কালেক্ট করে নিয়ে যায়।

আমি এখানে ডাক্তারকে জানাই। বলি যে একবারে বেশি করে পাঠাতে, বারেবারে পাঠালে ব্যাংক ফী দিতে হবে প্রতিবারে। তাই আমার মাধ্যমে আড়াইশো পাউন্ড পাঠায় গত সপ্তাহে - বোধ হয় ৩৪-৩৫,০০০ টাকার মত হবে। তিন মাস অন্তর অন্তর পাঠানোর প্ল্যান করেছিল।

কিন্তু গতকাল সকালে সে ফোন করে বলে যে বেলাল তার মাইন্ড চেঞ্জ করেছে। রিকশা চালিয়ে সে সার্ভাইভ করতে পারবে না, বুঝতে পেরেছে। ফ্রেন্ডের পাঠানো টাকা দিয়েও না। তাই সে ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করেছে - সে আবার করাচী ফেরত যেতে পারবে কিনা? যেই বাড়িতে ২০ বছর কাজ করেছে, সেখানেই ফিরে যেতে চায়। অনেকদিনের দাবীতে। নিজের পরিবারকে হয়তো কখনোই নিয়ে যেতে পারবে না, কিন্তু কেবল বেঁচে থাকার তাগিদে সে করাচী ফিরতে রাজি আছে। তা সম্ভব কি না জানতে চেয়ে ফোন করেছে - তাহলে টাকাটা সে আদমকে দিয়ে দেবে।

*

আমি শুনি। আমার ফ্রেন্ড মনে করে যে বেলালের তার বাচ্চা-কাচ্চাদের সাথেই থাকা দরকার। কিন্তু এও বুঝতে পারে যে বেলালের কি রকম অভাবের দিন যাচ্ছে। তাই আমার কি মতামত?

আমি আক্ষরিক অর্থেই কোন জবাব খুঁজে পাই না। কি বলবো? লজ্জায় শুধু মাথা হেঁট হয়।


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

লজ্জায় মাথা নত হয় আমারও, আমাদেরও। আপনি প্রশ্নের উত্তর দিলে একজন বেলালের সমস্যা হয়ত সমাধান করতে পারবেন। কিন্তু বাকি বেলালদের কি হবে?

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

মাহবুব লীলেন এর ছবি

বহুদিন থেকেই সচলায়তন গোমড়ামুখো লেখায় ভরে গেছে
ফানি কিছু হবে মনে করে খুললাম পোস্টটা
কিন্তু খুলেই দেখলাম পত্রিকায় হেডিং দেখেই যে নিউজগুলো এড়িয়ে যাই
সেগুলোরই এক বিস্তৃত বিন্যাস

মুশফিকা মুমু এর ছবি

গোমড়ামুখো মানে কি ভাইয়া?
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

রণদীপম বসু এর ছবি

লীলেন ভাই, বর্তমান অলৌকিক পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার রেটিং-এ মাইনাস ফিগারে থেকেও আমরা অনেকেই যে এখনো ভৌতিক অবস্থায় বেঁচে আছি, এটাই সবচেয়ে ফানি বিষয় নয় কি ?

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

মন খারাপ হয়ে গেল লেখাটা পড়ে...

ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

এখন তো পড়ার পর মাথা নিচু হয়ে গেল কিন্তু এসব রিক্সাওয়ালাদের জন্য আমরা কি করছি ? জবাব একটাই, কিছুই না অথবা কিছু করতেও পারবোনা শুধু চেয়ে দেখা ছাড়া।
মন খারাপ করে দেয়া লেখাটা।

--------------------------------------------------------

থার্ড আই এর ছবি

শুধূই দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কিছুই তো লিখতে পারছিনা।
---------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

-------------------------------
স্বপ্নকে ছুঁতে চাই সৃষ্টির উল্লাসে

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

এই কাহিনীর পরে আমার মনে হইছিলো কব্বরে শামসুর রাহমান সাহেবরে একটা ফোন দেই। 'স্বাধীনতা তুমি' কবিতায় কিছু নতুন লাইন যোগ করার সময় হইছে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনি বরং কোন ভাবে বেলালে সাথে কথা বলেন এবং তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন কেন তাকে দেশে থাকা উচিত। আপনার ডাক্তার বন্ধু তাকে যে পরিমান টাকা দিতে চেয়েছে তা দিয়ে বেলাল আরো ৩-৪ রিকসা কিনে তার মালিক হতে পারেব এবং রিকসার ভাড়া থেকে মাসে যা আয় হবে তাতে প্রথম কয়েক মাস কষ্ট হবে কিন্তু পরে রিকাসার সংখ্যা বেড়ে গেলে (যেহেতু আপনার বন্ধু তিনমাস পরে পরে টাকা পাঠাবে বলেছেন) বছর শেষে বেলালের আর কষ্টের দিন শেষ হবে বলে আমি মনে করছি।

তবে, একটি বিষয় মনে রাখবেন শুধু মাত্র নগদ টাকা দিয়ে বসে বসে খেলে বেলালের অবস্থার কোন পরিবর্তন হবে বলে আমি মনে করিনা।

কল্পনা আক্তার

.................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

ঢাকায় এক রিকশার পিছনে একটা সরল অথচ অতি জরুরি দার্শনিক প্রশ্ন লেখা দেখেছিলাম : কে দিবে টাকা?

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

রেনেট এর ছবি

কিছুটা অফটপিক...আরো অনেক অনেক কারণ আছে, তবে আমার মনে হয়,জনসংখ্যার বিস্ফোরণ আমাদের বেশীরভাগ সমস্যার জন্য দায়ী। এই ছোট্ট একটা দেশে এতগুলো মানুষ থাকলে সমস্যা হতেই থাকবে...এটা নাহয় ওটা।
আলোচ্য বেলালের ও তিন সন্তান।
-----------------------------------------------------
We cannot change the cards we are dealt, just how we play the hand.

---------------------------------------------------------------------------
একা একা লাগে

এনকিদু এর ছবি

এই প্রসঙ্গে একটা জিনিস মনে পড়ল । কিছুদিন আগে পরিচিত এক ভদ্রলোক বলেছিলেন গ্রামে গঞ্জে মাঠ পর্যায়ে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রন কার্যক্রম, সচেতনতা বৃদ্ধি ইত্যাদি নাকি সরকার কয়েক বছর আগে বন্ধ করে দিয়েছে । এই ব্যাপারে কেউ কি কিছু জানেন ?


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সৌরভ এর ছবি

আমিও এরকমটি জানতাম।
পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মচারী যারা ছিলেন, তারা এখনও আছেন। সরকারের নতুন তেমন কোন বাজেট নেই নতুন লোকবল নেওয়ার জন্যে, কিংবা প্রচারণার জন্যে। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মচারীরা এখন আগের মতো বাড়ি বাড়ি গিয়ে মেয়েদের-মায়েদের মাঝে চিরুনি-প্রচারণা চালানোর মতো কাজ গুলো করেন না।

তবে, এখনকার দেশ চালানো ফেরেশতাদের কোন একজন গত সপ্তায় চীনের মতো এক সন্তান নীতির পক্ষে কোথাও বোধহয় বক্তব্য দিয়েছেন


আহ ঈশ্বর, আমাদের ক্ষোভ কি তোমাকে স্পর্শ করে?


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

উত্তম লেখা।

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

মুশফিকা মুমু এর ছবি

আজব মানুষতো অ্যাঁ , কেজানে ওখানে তার আরেক বৌ-বাচ্চা আছে কিনা কে জানে।
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

সৌরভ এর ছবি

মুমু, এটা কেমন কমেন্ট হলো?


আহ ঈশ্বর, আমাদের ক্ষোভ কি তোমাকে স্পর্শ করে?


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

বিপ্লব রহমান এর ছবি

ঞ ! @ মুমু খাইছে


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

মুশফিকা মুমু এর ছবি

ইয়ে, মানে... আমিতো শুধু একটা পসিবিলিটির কথা বললাম ইয়ে, মানে...
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বাহ্... এ তো মহা ভাগ্যবান রিক্সাওয়ালা... আগের মনিব তারে এতগুলো টাকা পাঠাতে চায়।
এবার তাহলে চিন্তা করেন নদী ভাঙনের ফলে ভিটে উচ্ছেদ হয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যে লোকগুলো ঢাকায় এসেছিলো রিক্সা চালাতে তাদের অবস্থা... অন্য পেশার অন্য লোকদের কথা নাহয় নাই বললাম।

আমাদের সরকার বলে যে আমাদের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে... দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পরেও তো লোকজন কিনে খেতে পারছে... বাংলাদেশ আসলেই ধনীদের দেশে পরিণত হচ্ছে... রোড শো হয়... চলেন যোগ দেই...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নিরিবিলি এর ছবি

আমি বলবো সে একজন ভাগ্যবান রিক্‌সাওয়ালা। সুযোগ কি বার বার আসে? এখনে থাকলে না খেয়ে মরতে হবে একদিন।

সৌরভ এর ছবি

সচলায়তনে সাহিত্যের ভীড়ে সাহিত্যজ্ঞান শূন্য একজন হয়ে কী কমেন্ট করি, ভেবে পাই না, তাই লগইন করা হয়ে ওঠে না।
এই পোস্টটায় কমেন্ট করার জন্যেই লগইন করলাম।

ভাল্লাগলো এইরকম বাস্তব গল্প দিয়ে সবাইকে নাড়া দিয়ে যাবার জন্যে।
এই গল্প কোন বিরল ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।
রিকশাঅলায় পরিণত হওয়া বেলাল অনেক ভাগ্যবান, বলবো। তার সামনে অন্য অপশন খোলা। করাচী যাওয়া অথবা, আপনার ডাক্তার বন্ধুর সাহায্য নিয়ে দেশেই হয়তো অন্য কিছু করার চেষ্টা করা।

আরে অনেক বেলালকে আমি আমার গণ্ডীর আশপাশেই দেখেছি, নিদারুণ কষ্টে ঝরে যেতে, সম্ভাবনাময় জীবনে নিঃশেষ হয়ে যেতে।



আহ ঈশ্বর, আমাদের ক্ষোভ কি তোমাকে স্পর্শ করে?


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

সুবিনয় মুস্তফী এর ছবি

সৌরভ,
আমার মাথায় গত কয়দিন ধরে যেই প্রশ্নটা ঘুরে বেড়াচ্ছে আর যেটার উত্তর কোনভাবেই মিলছে না, তা হলো - আমরা তাইলে কি বালের স্বাধীনতা অর্জন করলাম? মানুষকে পেটের তাগিদে পাকিস্তান যেতে হচ্ছে - এর থেকে বড় ধিক্কার যে আর কি হতে পারে, আমার জানা নেই। সবাই মিলে কি সমাজ তৈরী করেছি এতদিন ধরে?
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর

সবজান্তা এর ছবি

নির্মম সত্যি কথা আপনার মন্তব্যে উঠে এসেছে।

আমরা যেই স্বাধীনতা পেয়েছি, সেটা সত্যিকার অর্থেই বালের স্বাধীনতা।


অলমিতি বিস্তারেণ

সৌরভ এর ছবি

মানুষকে পেটের তাগিদে পাকিস্তান যেতে হচ্ছে - এর থেকে বড় ধিক্কার যে আর কি হতে পারে, আমার জানা নেই।

করাচি তে যদি আপনার আপত্তি থাকে, তাহলে বলবো, করাচি বোধহয় খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু নয়। জানেনইতো, অভিবাসন করলেই ভাগ্যের চাকা ঘুরবে, এই বোধটা খুব পুরনো। সেটা করাচি হোক আর জোহানেসবার্গ অথবা জিম্বাবুয়ে।

বাংলাদেশিরা জালিয়াতি করে দক্ষিণ আফ্রিকায়ও অভিবাসন করে। বিবিসিতে গত সপ্তায় একটা নিউজ বেরিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় মহিলাদের অজান্তেই তাদের নাগরিকত্ব তথ্য জাল করে ভূয়া বিয়ের তথ্য দিয়ে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ব্রাজিলের মতোন দেশগুলো থেকে লোক ঢুকছে। এরকম চার হাজার ঘটনা ধরা পড়েছে। দুজন বাংলাদেশী গ্রেফতারও হয়েছে।

আমাদের স্বাধীনতা আমাদেরকে নিরাপত্তা তো দেয়ই নি। দিয়েছে এইরকমভাবে প্রতিনিয়ত অপমানিত হবার নিয়তি।



আহ ঈশ্বর, আমাদের ক্ষোভ কি তোমাকে স্পর্শ করে?


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

সবজান্তা এর ছবি

আমার কাছে সবচেয়ে বেদনাদায়ক ব্যাপার এটাই যে, পৃথিবীর অনেক ক্ষেত্রেই ফ্রড কিংবা চিটিং এ পাকিস্তানের পাশাপাশি আমাদের নাম উচ্চারিত হয়।

কি নিদারুন উপহাস ! সত্যি নিজেদের কোথায় নামিয়েছি আমরা ! পাকিস্তানের পাশাপাশি আজ আমাদের নাম উচ্চারিত হয় !


অলমিতি বিস্তারেণ

বিপ্লব রহমান এর ছবি

দীর্ঘশ্বাস!


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

সৌরভ এর ছবি

আগের কমেন্টে টাইপো শুদ্ধি:

আরে অনেক বেলালকে আমি আমার গণ্ডীর আশপাশেই ..
->
আরো অনেক বেলালকে আমি আমার গণ্ডীর আশপাশেই ..


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

আমার মনে হয় বেলাল ফের পালাতে চাচ্ছে তার আশপাশের বিরূপ পরিবেশ-পরিস্থিতি থেকে। রিকশা তেমন একটি সমস্যা হয়তো নয়। আরো লক্ষ রিকশাচালক বেঁচে আছে।

আসলে সে এতদিন একটি নির্ঝঞ্ঝাট জীবন কাটিয়ে এসে হঠাত্ অচেনা পরিবেশের সঙ্গে নিজকে খাপ খাওয়াতে পারছে না।

চারদিকে এত অনাচার, বাজারের সব দুর্মূল্য, জীবন-যাপনের ব্যয় অতিরিক্ত বলে সে পালাতে চাচ্ছে। এখানে না থাকলে এত কিছু তাকে দেখতে হবে না। মাসে মাসে টাকা পাঠিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবে। আমার মত। দেঁতো হাসি

____________________________________
ব্যাকুল প্রত্যাশা উর্ধমুখী; হয়তো বা কেটে যাবে মেঘ।
দূর হবে শকুনের ছাঁয়া। কাটাবে আঁধার আমাদের ঘোলা চোখ
আলোকের উদ্ভাসনে; হবে পুন: পল্লবীত বিশুষ্ক বৃক্ষের ডাল।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

দিগন্ত এর ছবি

আমার মনে হয়না বেলাল করাচিতে গিয়েও খুব একটা ভাল থাকবে ... ঘুরেফিরে সেই "নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিশ্বাস ... "


হাতি ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

নিঝুম এর ছবি

বেলাল কে আমি ভালো করেই চিনি । উনি পাকিস্তানে গিয়েছিলেন অনেকদিন আগে । আমি তখন অনেক ছোট । উনার এই গল্প পড়ে খুব অবাক হলাম । দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কিছু নেই ।
---------------------------------------------------------
পৃথিবীর সব সীমান্ত আমায় বিরক্ত করে। আমার বিশ্রী লাগে যে, আমি কিছুই জানিনা...

---------------------------------------------------------------------------
কারও শেষ হয় নির্বাসনের জীবন । কারও হয় না । আমি কিন্তু পুষে রাখি দুঃসহ দেশহীনতা । মাঝে মাঝে শুধু কষ্টের কথা গুলো জড়ো করে কাউকে শোনাই, ভূমিকা ছাড়াই -- তসলিমা নাসরিন

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍‍দীর্ঘশ্বাস...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
মৌমাছির জীবন কি মধুর?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

Shajid এর ছবি

Valo legechey lekhati

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।