নাম আহমদ ছফা, পিতা হেদায়েত আলী

শুভাশীষ দাশ এর ছবি
লিখেছেন শুভাশীষ দাশ (তারিখ: বিষ্যুদ, ৩০/০৬/২০১১ - ৭:০৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আহমদ ছফার জন্ম ১৯৪৩ সালের ৩০শে জুন চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের গাছবাড়িয়া গ্রামে। তাঁর পিতা মরহুম হেদায়েত আলী ওরফে ধন মিয়া। মা মরহুমা আসিয়া খাতুন।

জীবিত অবস্থায় আহমদ ছফা অনেক বিপদজনক কথা বলে গেছেন। মৃত হয়ে যাবার পরে আহমদ ছফার এইসব বিপদজনক কথাকে সাম্প্রদায়িকতা ও প্রতিক্রিয়াশীলতার মোড়কে ঢেকে প্রচার-প্রসারে নানাজন ব্যস্ত। তবে আহমদ ছফাকে নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা এমনকি গালাগাল করার প্রয়োজনীয়তা আছে। বাংলা ভাষায় আমাদের কালের লেখকদের মধ্যে বাংলাদেশে প্রচলিত সমাজ-ব্যবস্থা তার মধ্যকার এন্ডাগান্ডা নানারকম ভুল বা বিচ্যুতি আহমদ ছফার মতো স্পষ্ট আকারে কেউ দেখান নি। আহমদ ছফার চিন্তা বা দর্শনের মধ্যে একটা ব্যাপার বোঝা যায়- তিনি মানুষ ছিলেন, মহাপুরুষ বা নবী হওয়ার খায়েশ তাঁর কখনো ছিল না। আর তাঁর দর্শনচর্চার ক্ষেত্র আন্তর্জাতিক না হয়ে প্রভিন্‌সিয়াল বাংলাদেশের সীমানাতেই থেকে গিয়েছিল। এই জায়গাতেই ছফাকে অনন্য মনে হয়।

আহমদ ছফা লেখালেখি ছাড়া অন্য কোনো পেশাকে গ্রহণ করতে পারেননি। তাঁর পিতার ধারণা ছিল ছেলে বড় হলে পয়গম্বর হবে। ছফা পয়গম্বর হতে পারেন নি। হয়তো চেয়েছিলেন গ্যোতের মতো সমস্ত প্রাণশক্তি পুঞ্জীভূত করে একটামাত্র প্রবল ফুৎকারে দেববীর্যে বলীয়ান মানুষ সৃষ্টি করতে। তাও পারেন নি।

আজ ছফার জন্মদিন। বেঁচে থাকুন ছফা।

--

ছফাগিরি


মন্তব্য

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

শুভাশীষ,
আপনাকে কি বলে যে কৃতজ্ঞতা জানাবো ভেবে পাচ্ছি না। বহু আগে পড়া "এনালস অব রুরাল বেঙ্গল" আজ আবার নতুন করে খুঁজে পেলাম। আপনার "ছফাগিরি। কিস্তি এক"-এর কল্যানে। ভাবছি আজ সারারাত প্রেম করবো এর সাথে। আচ্ছা কিভাবে আন্তঃজাল সংস্করণ থেকে প্রিন্ট নেয়া যায়?

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

গুগলবুকসে "এনালস অব রুরাল বেঙ্গল" এর পিডিএফ ভার্সন ডাউনলোড করার অপশন আছে। পিডিএফ প্রিন্ট করা তো খুব সোজা।

ধৈবত(অতিথি) এর ছবি

বেঁচে থাকুন ছফা....

তানভীর এর ছবি

ছফাও তো মরহুম। তাঁর পিতা-মাতার নামের আগে আলাদা করে মরহুম/মরহুমা লেখার প্রয়োজন ছিলো কি?

এবার গিয়ে ছফার উপন্যাসসমগ্র কিনে নিয়ে আসলাম। রয়েসয়ে পড়বো। বেঁচে থাকুন ছফা।

শুভাশীষ দাশ এর ছবি

ছফার একটা লেখার শিরোনাম ছিল- 'আমার নাম আহমদ ছফা, পিতা মরহুম হেদায়েত আলী'। শিরোনামটা সেখান থেকেই।

আর মরহুম বাদ্দিলাম।

lনাবিক এর ছবি

একটা কথা সবিনয়ে বলতে চাই, আহমদ ছফাকে আমি বাঙালিত্বের বিনষ্টকারী ছাড়া আর কিছুই বলতে পারি না। দেখবেন , সব ছাগু আর সাম্প্রদায়িকের এক কেবলা, সেটা ছফা। কথায় কথায় তাদের ছফা। মেহেরজানোয়ার পরিচালিকা রুবাইয়াত ও তার গঙও তাদের এই ছিঃনেমাকে হালাল করতে ছফার বইয়ের উদ্ধৃতি দেয়। কাজেই ছফাকে আমি নিজেদের লোক মনে করতে পারি না , সরি। (লক্ষণীয়, ছফার বেশীরভাগ ভক্তই মগবাজারী লেবেলের লোক, বরবাদ মজহার, সলিমুলো খান ইত্যাদি ইত্যাদি, তাই ছফাকে তাত্ত্বিক ছাগুদের গুরু বললে দোষ হয় না বোধকরি )

ঢাকাইয়্যা যাদুকর () এর ছবি

@ নাবিক - একটা কথা সবিনয়ে বলতে চাই, আহমদ ছফাকে 'বাঙালিত্বের বিনষ্টকারী' ফতোয়া দেয়ার আগে উনার উপরে একটু পড়াশুনা করে আসুন।

এখন ছাগু সম্প্রদায় কেন ছফাকে কেবলা মানে*, কেন উনার উদ্ধৃতি ভুল জায়গাতে অপব্যাক্ষা দেয়** সেটাতো উনার দোষনা।
ছফা কি বাঙালিদের গুরু নাকি মগবাজারী ছাগুদের গুরু সেটা বিচার করার আগে উনার কাজকর্ম, চিন্তাধারনা আর লিখালিখির পিছনে একটু সময় দিন... ঠিকাছে?

ছাগুরা সবসময় ছাগুই থাকবে আর আপনার মত 'নিজেদের লোক' সবসময় নব্য ছাগুদের আরও উৎসাহিত করবেন এই কামনা রইল।

(যদ্যপি আপনার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায় তথাপি ছাগুদের গুরু নিত্যানন্দ রায়)

ঢাকাইয়্যা যাদুকর

*রেফারেন্স: নাবিক
**রেফারেন্স: নাবিক

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আহমদ ছফাকে আমি বাঙালিত্বের বিনষ্টকারী ছাড়া আর কিছুই বলতে পারি না

অ ভাইজান
ফতোয়া দেবার আগে দয়া করে ছফাকে একটু ঘাঁটেন ভালো করে

চাকু দিয়ে যেমন মানুষ মারা যায় তেমনি বলবেন কলমও কিন্তু গুঁতা দিয়ে মানুষের পেটে ঢুকিয়ে ফেলা সম্ভব এবং এতে মানুষ মরেও যেতে পারে

কে কীভাবে কাকে ব্যবহার করল তা না দেখে ব্যবহৃতকে দোষ দেয়া বোধহয় ঠিক না

মাহবুব লীলেন এর ছবি

জয়তু আহমদ ছফা

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

পোস্টের মন্তব্যগুলো খেয়াল করলেই বোঝা যায় ছফা আজো কেন প্রাসঙ্গিক আর ছফা পাঠ এখনো কেনো জরুরী। কাদা শুকালে শক্ত হয়ে গুড়ো হয়ে ঝরে পড়ে। তাই কাদা লাগানো নিয়ে ভাবিনা। বুদ্ধিবেশ্যারা মরে গিয়ে শুধু পঁচে না, বেঁচে থাকতে খোলস পাল্টাতে পাল্টাতেও পঁচে যায়। ছফা বুদ্ধিবেশ্যা ছিলেন না। ছফার গায়ে মোটে এক পরত চামড়া ছিলো; তাই খোলসা পাল্টানো বা বেঁচে থাকতে পঁচে যাবার ভয় ছিলো না - আজও নেই।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আবুল খায়ের এর ছবি

মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ছফা সাহেব কখনোই “জয় বাংলা” বলতেন না, “ক্ষয় বাংলা” বলতেন। ফ্রেডারিক নীটশের ভাব শিষ্য পাড় নৈরাজ্যবাদী আহমদ ছফার জার্মানীতে নাৎসী যোগাযোগও ছিল। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুর খুনীদের লিবিয়ায় পাঠানো এবঙ সেখানে তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে দিতে তিনি সচেষ্ট ছিলেন। এরশাদের সময় পুরানা পল্টনে অফিস ভাড়া নিয়ে গাদ্দাফীর সবুজ গ্রন্থ অনুবাদ ও প্রকাশে মনোনিবেশ করেন। মুক্তিযুদ্ধের অর্জনসমূহকে বিতর্কিত করতে আহমদ ছফা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। ’৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আহমদ ছফা, মাহবুব আলম চাষী, তাহেরউদ্দীন ঠাকুর, সৈয়দ আলী আহসান এরা একই গ্রুপ মেইনটেইন করতো। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের পোষ্য এই কুলাঙ্গার হইলো হাজী সাহেবের সেই ভালো ছেলেটা যেইটা গাছে উইঠা মাইনষের মাথায় মুতে।

আবুল খায়ের এর ছবি

মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ছফা সাহেব কখনোই “জয় বাংলা” বলতেন না, “ক্ষয় বাংলা” বলতেন। ফ্রেডারিক নীটশের ভাব শিষ্য পাড় নৈরাজ্যবাদী আহমদ ছফার জার্মানীতে নাৎসী যোগাযোগও ছিল। তাছাড়া বঙ্গবন্ধুর খুনীদের লিবিয়ায় পাঠানো এবঙ সেখানে তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল গড়ে দিতে তিনি সচেষ্ট ছিলেন। এরশাদের সময় পুরানা পল্টনে অফিস ভাড়া নিয়ে গাদ্দাফীর সবুজ গ্রন্থ অনুবাদ ও প্রকাশে মনোনিবেশ করেন। মুক্তিযুদ্ধের অর্জনসমূহকে বিতর্কিত করতে আহমদ ছফা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। ’৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আহমদ ছফা, মাহবুব আলম চাষী, তাহেরউদ্দীন ঠাকুর, সৈয়দ আলী আহসান এরা একই গ্রুপ মেইনটেইন করতো। ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের পোষ্য এই কুলাঙ্গার হইলো হাজী সাহেবের সেই ভালো ছেলেটা যেইটা গাছে উইঠা মাইনষের মাথায় মুতে।

বন্দনা কবীর এর ছবি

যতবারই ছফাকে পড়ি ততবারই একটা বিচিত্র মিশ্র অনুভুতির স্পর্শ অনুভব করি।

শুভ জন্মদিন ছফা ভাই...

বন্দনা কবীর এর ছবি

যতবারই ছফাকে পড়ি ততবারই একটা বিচিত্র মিশ্র অনুভুতির স্পর্শ অনুভব করি।

শুভ জন্মদিন ছফা ভাই...

বন্দনা কবীর এর ছবি

যতবারই ছফাকে পড়ি ততবারই একটা বিচিত্র মিশ্র অনুভুতির স্পর্শ অনুভব করি।

শুভ জন্মদিন ছফা ভাই...

বন্দনা কবীর এর ছবি

যতবারই ছফাকে পড়ি ততবারই একটা বিচিত্র মিশ্র অনুভুতির স্পর্শ অনুভব করি।

শুভ জন্মদিন ছফা ভাই...

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ভালো লেখক ছিলেন, রাজনীতিতে ব্যাপক সমস্যা ছিলো হাসি

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

বাংলাদেশে আহমদ ছফা এক ট্র্যাজিক লেখক। লেখালেখিই তাঁর ধ্যানজ্ঞান পেশা হলেও লেখালেখি থেকে তিনি জীবদ্দশায় তেমন কিছু কামাই করতে পারেননি। এমনকি তার চিকিৎসাব্যয়ও না। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর তার লেখালেখি প্রকাশ করার বিশাল হিড়িক পড়ে যায়, তার উপন্যাস প্রকাশ করে প্রচুর কামাই করে প্রকাশকগন, যার একাংশ পেলেও ছফার শেষ জীবনটা আরেকটু কম কষ্টকর হতো।

আপনাকে জন্মদিনের ট্র্যাজিক শুভেচ্ছা আহমদ ছফা!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

guest_writerআদু ভাই এর ছবি

ছফা বুদ্ধিবেশ্যা ছিলেন না। ছফার গায়ে মোটে এক পরত চামড়া ছিলো; তাই খোলসা পাল্টানো বা বেঁচে থাকতে পঁচে যাবার ভয় ছিলো না - আজও নেই। ষষ্ঠ পাণ্ডবকে ধন্যবাদ এক কথায় অনেক কিছু বুঝিয়ে দেয়ার জন্য।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।