আমার ক্যামেরা চুরি যাওয়ার কাহিনি ও একটি ভ্রমণের গল্প।

সুমাদ্রী এর ছবি
লিখেছেন সুমাদ্রী (তারিখ: মঙ্গল, ২৯/১১/২০১১ - ৬:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[ বড় লেখা পড়তে যাদের অনীহা তারা লেখাটা এড়িয়ে যেতে পারেন।]
নীল দানিয়ুব আর কাল দানিয়ুবের সঙ্গমস্থল
বহুসাধের একখানা ক্যামেরা পেয়েছিলাম মেজদা’র কল্যাণে। মার্কিন দেশে সন্ত যীশুর জন্মতিথি উপলক্ষে বাজারে যে বিশেষ ছাড় দেয়া হয় তাতে মোটামুটি সস্তায় কেনা হয়েছিল যন্ত্রটি। আমি তো খুশীতে আটখানা। ছবি আঁকতে না পারার দুঃখটাকে ভোলার জন্য দিনরাত ছবি তুলি। মশার দিকে লোভাতুর চোখে তাকিয়ে থাকা দেয়ালের টিকটিকি থেকে শুরু করে মাঠের ওপারের বিল্ডিংযের ছাদে দুরন্ত বাতাসে উড়তে থাকা গোলাপী শাড়ি, কোনকিছুই বাদ যায়না। ছবি তোলার ব্যাকরণ জানিনা কিছুই, আমারও তাতে মাথা ব্যাথা নেই, দৃশ্যটা কীকরে আমি দেখছি সেটাই আসল- বাক্যটা মাথায় রেখে দিনরাত শাটার টিপে যাই। মেজদা সাবধান করে দিয়েছিল, “ দেখিস, হারাস না। আর যত্ন করে রাখিস। ধূলো আর পানি কিন্তু এর প্রধান শত্রু।” যত্নের বলিহারি যাই। মা যেমন শিশুকে পরম মমতায় আগলে রাখেন, আমিও আক্ষরিকভাবে ক্যামেরাখানা বুকের সাথে বেঁধে রাখতাম। ছবি তোলা চলছে, দামী দামী কয়েকটা বইও কিনে রীতিমত গবেষণা শুরু করে দিলাম। যার মাথায় এই ভূত একবার ঢুকেছে তিনিই জানেন একে নামানো কোন ওঝার কম্ম নয়। এদিকে পড়াশোনার পাট শেষ, চাকরীর জন্য বন্ধুদের দেখলাম প্রফেসরস, সাইফুরস,মেন্টরস নিয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করতে। চাকরীতো আমারও দরকার। “ টিউশনি করে তো দশটা বছর কাটালে, তোমার একটা ক্যারিয়ারের কথাতো ভাবতে হবে এবার।” এটা মা বলতো। কিন্তু অংকতো আমার মাথায় ঢোকেনা, এ দশ বছরে কেবল গিলেছি সব গল্প, কবিতা আর উপন্যাস। “ আরে আমিতো হব কার্তিয়ের ব্রেসোঁ। রঘু রায়ের নাম শুনেছো?” মাকে হেঁয়ালি করে বলতাম। “কে? আমাদের বাড়ির রাজমিস্ত্রী দুলালের বাপের নাম ছিল রঘু রায়, তুই তো রাজমিস্ত্রীর ছেলে না।” মা হেঁয়ালি কম বোঝেন।

ঐ যে বলছিলাম, ক্যামেরার ভেতরে থাকে এক অদৃশ্য ভূত, একবার যার ঘাড়ে চেপেছে সে কী আর সহজে তারে ছাড়ে! ভূতগ্রস্থ আমি ক্যামেরাখানা বুকের সাথে বেঁধে নিয়ে একদিন চলে এলাম আফ্রিকায় । এখানে কথা বলার চাকরী আমার। কথা বলি মানুষের সাথে গ্রামে গ্রামে গিয়ে। অভাবে জর্জরিত মানুষ, পরনে মলিন কাপড়, পেটানো শরীরের পুরুষের কপালে লেগে থাকে স্বেদবিন্দু, মুখে অমলিন হাসি। কৃষ্ণসুন্দরী পিঠে পুটলির মত বেঁধে নিয়েছে তার খোকনটিকে, চলেছে মানিয়ক ক্ষেতে অথবা কলা বেচতে। রোগে-শোকে ভুগে কাহিল, চিকিৎসা নেই। গ্রামের টিউবওয়েলগুলো অকেজো পড়ে আছে। পানির তীব্র সংকট। অথচ দিনমান বৃষ্টি হচ্ছে অঝোরে। আমার মাঝে মাঝে মনে হত, আফ্রিকা আসলে কাঁদছে।

আমার ক্যামেরাতে আমি সব টুকে নিই। সাদা পেটঅলা দাঁড়কাক, সোনালু ফল ক্ষেতে আসা ধনেশ পাখি, বিকেলের হলুদ আলোকে লজ্জ্বায় ফেলে দেওয়া অতিঊজ্জ্বল মার্গারিট ফুল, লিলিপুটের দেশের পাহাড়ের মত উইপোকাদের নির্মিত দূর্গগুলোDSC_0240 (2), সারাটিক্ষণ স্ত্রী প্রাণিটিকে তাড়া করে ফেরা সরীসৃপ মারগুইয়াDSC_0214 (2), পাহাড়ের মাথায় হেলান দিয়ে বিশ্রাম নিতে থাকা গুচ্ছ গুচ্ছ মেঘ, আরো কত কি! ক্যামেরা তো কোন ছল জানেনা, সে ঠিকই বন্দী করে রাখে অভুক্ত বৃদ্ধার চোখের জল, বিস্কুট পেয়ে পরমানন্দে লাফিয়ে ওঠা রঙিন স্কুল ব্যাগ পিঠে চলতে থাকা কিশোরের হাসি, কিংবা ফরাসী শোষণের কাহিনি বলতে থাকা তরুন লেবির হঠাৎ উত্তেজিত চেহারা। একেকটি ছবি একেকটি গল্পের সমান। মাঝে মাঝে কাজে বেরুতে গেলে মানিব্যাগ, মোবাইল নিতে ভুলে যাই, ভুল হয়না শুধু পিঠে ঝোলাতে ক্যামেরার ব্যাগ। কখনও মনে আসেনি এই শংকা যে হারাতে পারি যন্ত্রখানা, কিংবা কেউ ছিনিয়ে নিয়ে যেতে পারে তাকে আমার কাছ থেকে। যন্ত্র কখনও কখনও পরম বন্ধু হয়ে ওঠে। সে তখন নিঃসঙ্গ প্রহরের একমাত্র সঙ্গী। বন্ধু আলমগীর ভাই অনেক বছর সুরের সাধনা করে চলেছেন। বিবাহের বয়স অতিক্রান্ত প্রায়। একদিন অত্যুৎসাহে জিজ্ঞেস করেছিলাম, “ ব্যাপার কী, নারীর প্রতি মোহ নেই কি কোন? দ্বার পরিগ্রহে অনুৎসাহী কেন?” হেসে উত্তর দিয়েছিলেন, “ আমি তো বিবাহ করে ফেলেছি ছোঁড়া, এই গীটারখানাই আমার স্ত্রী।”

মাস ছয়েক পর হাঁপিয়ে উঠলাম। চাকরীর কল্যাণে সেনজেন ভিসাটা এখান থেকে সহজে পাওয়া যায়। ভাবলাম ইউরোপের গ্রীষ্মের আমেজটা এ সুযোগে নিয়েই আসি। জুলাইয়ে চলে এলাম ফ্রান্সে। ওখানেই বিনে পয়সায় সবচেয়ে বেশিদিন থাকা আর খাওয়া যাবে। সঙ্গে এল আমার তৃতীয় নয়নখানি। দীর্ঘ সূর্যালোকিত সব দিন। দুচোখ ভরে আমি ইউরোপার রূপসুধা পান করতে লাগলাম আর স্মৃতিগুলো সব টুকে রাখতে লাগলাম ক্যামেরার মগজে। ফ্রান্স থেকে স্পেন, স্পেন থেকে ইটালি হয়ে একদিন ঢুকে পড়লাম অস্ট্রিয়ায়। এর মধ্যে মাদ্রিদে রাত কাটিয়েছি এয়ারপোর্টে, ভেনিসে রেল স্টেশনে, সালস্‌বুর্গে পুলিশ লাথি মেরে ভাঙ্গিয়েছে কাঁচা ঘুম। পিঠে ছিল বোঁচকাখানা আর কাঁধে ঝোলানো ক্যামেরা। ইউরোপ কি আর আমাদের দেশ যে চোর ছিঁচকেরা পথিকের চোখে মলম মেখে দিয়ে জিনিসপত্র নিয়ে ভাগবে- এই প্রত্যয় নিয়ে নির্ভাবনায় রাত কাটিয়েছি এখানে ওখানে। অস্ট্রিয়া নিয়ে ছিল আমার বাড়তি ঊচ্ছ্বাস। কারণ দুটি। এক, মোজার্ট নামক এক সুরকার জন্মেছিলেন সালস্‌বুর্গ নামের অস্ট্রিয়ান এক শহরে। দুই, রাজপ্রাসাদের শহর, সংগীতের শহর রাজধানী ভিয়েনার বুক চিরে চলে গেছে বিখ্যাত এক নদী দানিয়ুব। দানিয়ুব নিয়ে শুনেছি কত গল্প, পড়েছি কত কাহিনি। এ নদীর আবার দুটি অংশ, দু অংশের পানির রঙ দুরকম। কাল দানিউব আর নীল দানিউব। এই দানিয়ুব ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী, প্রথমটি রাশান ভোলগা।

রোম পর্যন্ত তোলা ছবির কতকটা ছেড়েছিলাম ফেসবুকে বন্ধুদের বুকে ঈর্ষা ছড়ানোর জন্য। যেন বার্তাটা ছিল এরকম, “ দেখ ব্যাটারা, তোরা ব্যাংক আর সরকারী ফাইলে কলম পিষতে পিষতে মরছিস, আর আমি ভাসছি হাওয়ায় ।” প্ল্যান ছিল ওদের ঈর্ষার আগুনে ধূপ ঢেলে দেবার, তাই ফ্লোরেন্স, ভেনিস, সালস্‌বুর্গ, ভিয়েনা এসব শহরের ছবি তুলেছি এন্তার, শুধু সময়ের অভাবে আর বিরুপ আবহাওয়ার কারণেই সাইবার ক্যাফেগুলোতে ঢোকা হয়নি রোমের পর থেকে। বলছিলাম দানিয়ুবের কথা। সুনীল গাঙ্গুলির মত আমারও খুব ইচ্ছে বিখ্যাত নদীগুলোর জলে আঙুল ডোবানোর। দানিয়ুবের তীরে ঐ উদ্দেশ্য নিয়েই যাওয়া। দেখি তার পাশে অবাক করা সুন্দর একটা গীর্জা ঠায় দাঁড়ানো। নাম তার মেক্সিকোপ্লাত্‌জ্‌। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বেশ কিছু ছবি তোলার পর ব্যস্তবাগীশ এক পথচারীকে থামালাম নিজের একখানা ফটো তুলে দেবার জন্য। সে একবার এদিকে যাও, একবার ওদিকে যাও বলতে বলতে বেশ কিছুটা পিছিয়ে গিয়ে ঝটপট কয়েকবার শাটারে টিপ দিয়ে দিল। ঐ দূরত্ব থেকে সে যদি ক্যামেরা নিয়ে দৌঁড় লাগাত, পিঠে ভারী একটা বোঝা নিয়ে তাকে ধরা আমার সাধ্য হতনা। কিন্তু, আমি ওরকম ভাবতে যাবই বা কেন? ইউরোপ কি আর বাংলাদেশ যে রাস্তায় রাস্তায় গামছা পার্টির লোকজন গামছা ঘোরাতে ঘোরাতে বুক ফুলিয়ে হাঁটবে। সত্যি আমার মনটা না একদম ছোট।
দানিয়ুব নদী ভিয়েনার উপর দিয়ে চলে গেছে পাশের দেশ স্লোভাকিয়ায়। একসময়ের চেকোস্লোভাকিয়া থেকে ছিঁড়ে আসা দেশটাতে ঢোকার একমাত্র উদ্দেশ্য পূর্ব-ইউরোপীয় গন্ধ একটু গায়ে লাগানো। যদিও স্লোভাকিয়া সে অর্থে পূর্ব ইউরোপে পড়েনি, সমাজতন্ত্রের হাওয়ার একটা ঝাপট এখানেও এসে পড়েছিল, তার রেশটুকু নিশ্চয়ই কিছুটা হলেও আছে এখানে এই ভেবেই ভিয়েনা থেকে ব্লাতিস্লাভাগামী ট্রেনে চেপে বসি এক বিকেলে। পথেই চোখে পড়ল নীল দানিয়ুব, মেক্সিকোপ্লাত্‌জ্‌ এর সামনের দানিয়ুব ছিল ঘোলাটেনীল দানিয়ুব আর কাল দানিয়ুবের সঙ্গমস্থল

ব্রাতিস্লাভা স্লোভাকিয়ার রাজধানী শহরব্রাতিস্লাভার পুরোনো অংশ। ট্রেন থেকে নামতেই কনকনে ঠাণ্ডার তীর এসে বিঁধতে লাগল গায়ে, বাইরে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি। প্ল্যান ছিল বরাবরের মত স্টেশনে রাত কাটানোর, কিন্তু চারপাশ একটু ভাল করে পরখ করে বুঝলাম এখানে সুবিধা হবেনা ভাল এই যাত্রায়। কারণ এর মধ্যেই কয়েকজন এসে হাত বাড়িয়ে ধরেছে আমার সামনে, আরে ব্যাটা আমারও যে একই অবস্থা এটা তোরা বুঝিস না কেন? ডাইরি খুলে ইয়ুথ হোস্টেলের লিস্টটাতে চোখ বোলালাম, সদ্য কেনা ম্যাপে কয়েকটা হোস্টেলের অবস্থান দাগিয়ে স্টেশনের বাইরে আসতেই চোখ পড়ল শহরের উপর। রাস্তার উপর ট্রাম-লাইন, আর বোধ হয় সেই কম্যুনিস্ট আমলেরই লক্কর-ঝক্কর মার্কা সব ট্রামটুরিস্ট বাস। এক তরুনী স্মিতহাস্যেই বেশ সাহায্য করল টিকেট কাটার ব্যাপারে। টার্গেট করা ইয়ুথ হোস্টেলটিতে গিয়ে মাথায় পড়ল বাজ। হোস্টেলগুলোতে আগে থেকেই বুকিং দিতে হয়, আমি ও পথে যাইনি, অতএব “ সরি, আমাদের সব বেডই অলরেডি বুকড্‌ কিংবা আপনার জন্য আমাদের কোন রুম খালি নেই।” রিসেপশনিস্ট মহিলাকে অনেক অনুনয় করার পর উনি একটা ম্যাপ দিলেন, ওতে দাগিয়ে দিলেন আর আর হোস্টেলগুলোর অবস্থান, তারপর বললেন, “ গুডলাক।” এরপর আরও দুটো হোস্টেলে গিয়ে দেখি একই ব্যাপার। মনে একটু ভয় আসলেও হতোদ্যম না হয়ে হাঁটতে হাঁটতে পেয়ে গেলাম সিটি ইয়থ হোস্টেল। ভাগ্য আমার সুপ্রসন্ন। চেক-ইন করার পর রিসেপশনিস্ট মহিলা স্মিতহাস্যেই বললেন, “ সতের ইউরো, বেডের তৃতীয় তলায়।” “ আমি দুঃখিত” বলে মহিলার দিকে তাকিয়ে আছি দেখে তিনি নিজেই আমাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলেন গন একটা রুমে, তারপর ইয়া উঁচু তিন থাকঅলা একটা বিছানা দেখিয়ে বললেন, “ এর ছাদেই তোমাকে থাকতে হবে, রাজী?” “ নো, প্রবলেম।”{ স্টেশনের শক্ত ফ্লোরের চেয়ে নিঃসন্দেহে এর বিছানা অনেক আরামদায়ক।}

আমার ব্যাগটি লকারে রেখে তালা মেরে বেরিয়ে এলাম। ক্যামেরাটাকে বিশ্রাম দিলাম, তার উপর মেজদার সতর্কবাণী আবার মনে পড়ল। বাইরে বৃষ্টির সাথে পাল্লা দিচ্ছিল কনকনে হাওয়া। মোটামুটি শহরের পর্যটন স্পটেই আমার হোস্টেলের অবস্থান, ব্লাতিস্লাভাও দানিয়ুবের পাড়ে গড়ে ওঠা শহর। একটা পাহাড়ের উপর সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে নগরীর প্রধান আকর্ষণ একাদশ শতকে নির্মিত কেল্টিক দূর্গ হ্রাদbratislava_3। শহরের যেকোন পয়েন্ট থেকেই দেখা যায় লালরঙা এই সুন্দর দালান। পরের দিন সকালের জন্য হ্রাদ ভ্রমণ জমিয়ে রেখে গেলাম দানিয়ুবের তীরের দিকে। দানিউবের উপর সুদৃশ্য একটা ব্রীজ মাথায় একটা রেস্তোরাঁকে টুপির মত পরে দাঁড়ানো। নাম তার নোভি মোস্তদানিয়ুব। নদীর ঐ পাড়ে দেখলাম বড় বড় সব দালান। বুঝলাম শহরের আধুনিক অংশটা ঐ দিকেই। হাঁটতে হাঁটতে শহরের পুরোনো দিকটায় আবার ঢুকে পড়লাম। শহরের কেন্দ্রস্থল হ্লাভনে নামেস্তিয়েতে তখন চলছে একটা ওপেন এয়ার কনসার্ট। বৃষ্টি-বাদলার সন্ধ্যা, মানুষজন হাতে গোনা। কিছুক্ষণ হাত-পা নেড়ে আমি আমার পথ দেখলাম। দূর থেকে চোখে পড়ল ম্যানহোল থেকে অর্ধেক বেরিয়ে রয়েছে একটা মানুষ। চারপাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া লোকগুলো ওর দিকে ভ্রুক্ষেপও করছে না। কী নির্দয় শহররে বাবা, একটা লোক এই অবস্থায়, অথচ কেউ সাহায্য করছে না। দৌঁড়ে গেলাম লোকটাকে টেনে তোলার জন্য। ওমা, এতো একটা পুরো ব্রোঞ্জের মূর্তি, ম্যানহোলের ভেতরে ঢুকিয়ে রেখেছে কে?দ্যা ওয়াচার আমার বোকা বনে যাওয়া অবস্থা দেখে কয়েকজন দেখলাম মুচকি, মুচকি হাসছেন। একজন চেঁচিয়ে বলল, “ আরও অনেক দেখবে হে সামনে।” এবার সতর্ক দৃষ্টি রেখে হাঁটতে লাগলাম। ক্যামেরাটা না আনায় বেশ আফসোস হচ্ছিল। কিছুদূর যাওয়ার পর দেখলাম একটা লোক একটা বাড়ির আড়ালে দাঁড়িয়ে চোখে দূরবীন লাগিয়ে কাকে দেখছে যেন। ব্যাপার কী, নড়ন নেই, চড়ন নেই, নিবিষ্ট মনে কাকে দেখছে এ লোক, পাপারাজ্জি নয়তো?পাপারাজ্জি ভাবলাম লোকটার কাছে গিয়ে চিৎকার করে উঠব, ওতেই ব্যাটা ভিমড়ি খেয়ে পড়বে, গোপনে নজরদারি করার মজাটা বুঝবে তখন। এই ভেবে কাছাকাছি গিয়ে যেই চিৎকার দেব অমনি দেখলাম একটা বাচ্চা এসে লোকটার কান মলে দিচ্ছে, আর লোকটা সেই আগের অবস্থায়, নো নড়ন-চড়ন। একটু এগিয়ে গিয়ে পিছু ফিরে দেখলাম সেই একই ম্যানহোল স্টোরির পুনরাবৃত্তি। ভাগ্যিস এই যাত্রায় কোন বোকামি করে ফেলিনি, মনে মনে বাচ্চাটাকে ধন্যবাদ জানিয়ে সামনে এগিয়ে গেলাম।

বৃষ্টি আর বাতাসের দাপটের কাছে হার মেনে ঘোরাঘুরি বাদ দিয়ে হোস্টেলে ফিরে এলাম। এসে দেখি আমার রুমভর্তি ছেলেমেয়ে। আমার নীচতলায় লাজুক একটা ছেলে। ভাঙা ভাঙা ইংরেজীতে নামধাম জানাল। সামনের বিছানা-বিল্ডিং এ দুটো আইরিশ ছেলে। আড্ডাটা ওদের সাথেই শুরু করলাম। বাংলাদেশকে চেনে ক্রিকেটের জন্য। তামিমের নামটাও বলল পরিষ্কার করে। ওদের পাশের বিছানা-বিল্ডিং এ দুটো চীনা মেয়ে। আমি নিহাও বললাম, ওরা সুন্দর ইংরেজীতে অভিবাদন জানাল। আমি আর কথা বাড়ালামনা। আসার পথে দেখেছি একটা সস্তার হোটেলে ভাত পাওয়া যায়। দোকানের নাম শ্রীগোবিন্দ। ইস্কন হোটেল। শেষ ভাতের গন্ধ নাকে লেগেছিল রোমে মিজান ভাইয়ের বাসায়। চার পাঁচ দিন ভাত খাইনি অথচ মনে হচ্ছিল যেন কতকাল ধরে পেটে কিছু পড়েনি। শ্রীগোবিন্দে গিয়ে দেখলাম পরিবেশনকারিনী শাড়িপরিহিতা এক শ্বেতাঙ্গিনি। আমায় দেখে চমকে উঠল। আমি ডাহা একটা মিথ্যে দিয়ে আলাপ শুরু করলাম, “ শাড়িতে আপনাকে ভালই লাগছে ম্যাম।” খেয়েদেয়ে হোস্টেলে ফিরে এসে লকারে মানিব্যাগ রেখে দে ঘুম। টাকা-পয়সা, মোবাইল আর লকারের চাবি প্যান্টের পকেটে।

পরদিন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে এক জঙ্গল দাঁড়ি কামানোর জন্য টয়লেটে ঢুকলাম। মোবাইল আর লকারের চাবি রেখে গেলাম বালিশের নীচে । নীচতলার লুকাস ছেলেটার নাক ডাকছে। আইরিশরা, চীনারা অচেতন। সাফ-সুতরো হয়ে এসে দেখি লুকাস নেই। বাকিরা সবে ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলাচ্ছে। সন্ধ্যায় আমার প্যারিস ফিরে যাওয়ার বিমান ধরতে হবে। তাই এ বেলায় যা কিছু দেখার সব দেখে নিতে হবে। মনে মনে তাই একটা ছক কষে নিচ্ছিলাম। ভাবলাম ঘুরবই যখন তখন হোস্টেলে সময় নষ্ট না করে বেরিয়ে পড়াই ভাল। রিসেপশনে গিয়ে দেখলাম গতকালের মহিলার জায়গায় সুবেশী একটা ছেলে। বিল মিটিয়ে এসে লকার খুলে জিনিসপত্র গোছাতে লাগলাম। কিন্তু কী একটা জিনিস যেন মিসিং। পাসপোর্ট তো আছে, মোবাইলও নিয়েছি, মানিব্যাগও। সবইতো আছে। তবুও বারবার মনে হতে লাগল গুরুত্বপূর্ণ কী একটা জিনিস যেন উধাও। হঠাৎ, আরে তাইতো, আমার ক্যামেরা কই, আমার তৃতীয় নয়ন? উলটে পালটে ব্যাগটা দেখলাম। নাহ্‌ নেই। আমার স্পষ্ট মনে আছে ব্যাগেই ভরেছি শেষবার ওটি। মানিব্যাগ খুলে দেখলাম খুচরো সব টাকা হাওয়া। লুকাস নেই। যা বোঝার বুঝে নিয়ে দ্রুত রিসেপশনিস্টকে ডেকে আনলাম। সব শুনে সেও থ। “ লকারের চাবি আপনার কাছে, কিন্তু লকারের ভেতরের জিনিস চুরি গেল কিকরে?” আমি সকাল থেকে সমস্ত ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গেলাম। লুকাসের হঠাৎ অন্তর্ধান হয়ে যাওয়ার বিষয়টি ওকে জানালাম। “ আমি সত্যিই দুঃখিত, এরকম ঘটনা এ হোস্টেলে এই প্রথম। আপনি যদি চান আমরা পুলিশকে খবর দিতে পারি।” আইরিশ ছেলেগুলোও জানাল তারা কোন শব্দ শোনেনি। আমি মোটামুটি ধরে নিলাম ভদ্রবেশী লুকাসই কম্মটি করেছে, যখন আমি প্রসাধনে ব্যস্ত ছিলাম সেই মুহুর্তে বাকিদের ঘুমের সুবিধাটুকু নিয়ে বালিশের তলা থেকে লকারের চাবি নিয়ে অতি সন্তর্পণে কাজটি সেরেছে সে। তবে এতে যে অন্য কেউ জড়িত ছিলনা সেও কিকরে বলি। কী যে করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। পুলিশ মানেই ঝামেলা, দেশ থেকেই এই প্রবাদ শিখে এসেছি। তাছাড়া পুলিশ আসার পূর্বেই তো চোর পালিয়ে বহুদূরে চলে যাবে সন্দেহ নেই। কষ্টে আমার বুক ফেটে যাচ্ছিল। রিসেপশনিস্ট বারবার দুঃখপ্রকাশ করে যাচ্ছিল। আমার মনে পড়ে যাচ্ছিল ইউরোপের সব স্মৃতি যাদের আমি ধরে রেখেছিলাম ক্যামেরার মগজে। মেজদার কথাটা বারবার বাজছিল কানে, “দেখিস হারাস না। আর যত্ন করে রাখিস।” কাকে দোষ দেব ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। হোস্টেল ছেড়ে বেরুতেই শ্রীগোবিন্দের রাধিকার সাথে দেখা। আমায় দেখে একটু হাসল। আমি তখন হাসতেও ভুলে গেছি। মনে হচ্ছিল আমার যেন প্রিয়েবিচ্ছেদ হয়েছে। হ্রাদ দূর্গের দিকে পা বাড়ালাম। পুরো ব্রাতিস্লাভাকে পৃথিবীর কুৎসিততম শহর মনে হচ্ছিল তখন।Image009

[ ব্রাতিস্লাভার প্রায় ছবিই নেট থেকে সংগৃহিত। কয়েকটা তুলেছি সবেধন নীলমনি মোবাইলটি দিয়ে।]


মন্তব্য

অন্যকেউ এর ছবি

মনটা খারাপ করিয়ে দিলেন। ক্যামেরা তো আবার হবে, এই ক্যামেরাটাতো আর হবে না। মন খারাপ

যাক, দুঃখ জিনিসটা আসেই ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাবার জন্য।

নতুন সঙ্গীর সাথে জীবনটা ভালো কাটুক।

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

সুমাদ্রি এর ছবি

সঙ্গীহীন, সঙ্গতিহীনও।

ফাহিম হাসান এর ছবি

ক্যামেরার প্রতি আপনার ভালবাসাকে চলুক
যদিও চুরি যাওয়ার ঘটনায় পুরাই মেজাজ খারাপ।

একটা ছোট্ট পরামর্শ - বড় টুরের সময় ক্যামেরার ছবির অনলাইন ব্যাকাপ রাখা উচিত। একটা বড় কার্ডের বদলে একাধিক ছোট মেমরি কার্ড ব্যবহার করা উচিত। বন্ধুস্থানীয় কেউ থাকলে তার ল্যাপ্টপে ছবি ডাউনলোড করে পেন ড্রাইভে নিয়ে নিতে পারেন।

পোস্ট প্রসঙ্গে -
আপনার লেখাগুলো বেশ নির্মোহ ভঙ্গীতে হয়, এইবারেরটায় ব্যক্তিগত ছাপটুকু প্রবল। বেশ লাগল পড়তে। ছবি তোলার শখ/নেশা যখন আছে, ক্যামেরা তো জীবনে আরো আসবে।

নিয়মিত লিখুন আফ্রিকা ভ্রমণের গল্প

সুমাদ্রি এর ছবি

আফ্রিকায় আছি আরো অনেকদিন। চেষ্টা করব এখানের কিছু লেখা অনুবাদ করার। ছবি তোলা নিয়েই সামনে আবার টেবিলে বই-খাতা নিয়ে বসব কিনা তা ভাবছি ইদানিং। ধন্যবাদ।

আশালতা এর ছবি

বাহ্‌, মজার মূর্তি তো। ইশশ আপনার ক্যামেরাটা থাকলে নিশ্চয় আরও মজার মজার ছবি পাওয়া যেত ! আমার প্রথম ক্যামেরাটাও চুরি হয়ে গেছল, আমি জানতাম কে নিয়েছে, কিন্তু চক্ষুলজ্জায় কিছু বলতে পারিনি। মন খারাপ

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

সুমাদ্রি এর ছবি

সেই ব্যাটা/বেটির মুখে ঝামা ঘষে দিন এ বেলা।

guest এর ছবি

মাঝেমাঝে সচলায়তন এ দুয়েকটা লেখা পইড়া মনে হয় - আইজ সালা পয়সা উশুল হইলো পইড়া। আপনের এই লেখাটা পইড়া সেই ফিলিংস পাইলাম। আইজকার লেখার লাইগা মন্তব্য হইলো আপনি ভালো লেখেন।
-মেফিস্টো

সুমাদ্রি এর ছবি

লেখাটা পড়ে আপনি একটু আনন্দ পেলেন এটা জেনেই ভাল লাগছে। যদিও ওটা ছিল একটা দুঃখজনক ঘটনা। ভাল থাকুন।

পাঠক এর ছবি

বস, আমি ঐ অথের্ আনন্দ পাই নাই। আপনার লেখাটা সুন্দর হইছে, লেখ্নী ভালো লাগছে। একটা ভালো লেখা পইড়া মানুষ যে আনন্দ পায় সেটা পাইছি - দুঃখজনক ঘটনা নিয়া ভালো লেখা পইড়াও তো মানুষ আনন্দ পায়।
আর ক্যামেরার ব্যপারটা ? কাম অন, প্রথম ক্যামেরা , অনেক কষ্ট পাইছেন আন্দাজ করতে পারি। কিন্তু ক্যামেরা ভবিষ্যত এ আরো আইবো বস। এ্যায়্সা হোতা হ্যায়। বেশী কষ্ট নিয়েন না। বরং এই যে একটা তুমুল লেখা লিখ্যা ফালাইলেন - এটা কি কম পাওয়া?

-মেফিস্টো

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

আমারও মন খারাপ লাগছে আপনার ক্যামেরার জন্য। নতুনতো কত হাতে আসবে, কিন্তু এই ক্যামেরাতো নয়। (মন খারাপের ইমো)

সুমাদ্রি এর ছবি

মন খারাপ

তন্ময়_আহসান এর ছবি

চলুক

সুমাদ্রি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

তাপস শর্মা  এর ছবি

চলুক । ক্যামেরার জন্য মন খারাপ

সুমাদ্রি এর ছবি

ওঁয়া ওঁয়া

ফাহিম এর ছবি

প্রথম বার্ডস আই ভিউটা দূর্দান্ত হইসে। চলুক

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

সুমাদ্রি এর ছবি

আসলেই সুন্দর ছবি তুলেছে ঐ লোকটা ইন্টারনেটে যে ছবিটা তুলে দিয়েছে।

হিমু এর ছবি

এই গ্রীষ্মে আমিও গিয়েছিলাম ব্রাতিশ্লাভায়, তবে এক দিনের জন্যে। সকালে গিয়ে রাতে ফিরে এসেছি। সামনে সুযোগ হলে প্রাগেও ঘুরে আসুন (জানি না এর মধ্যে গেছেন কি না)। চেকদের তুলনায় স্লোভাকরা অনেক বেশি ট্যুরিস্টবান্ধব। মেয়েগুলোও বেশি সুন্দর হাসি । তবে বাসট্রাম যারা চালায় তারা জার্মান বা ইংলিশ শুনলে ট্যাটনামো করে। তক্কে তক্কে আছি, সুযোগ পেলে সামনের গ্রীষ্মে স্লোভাকিয়ার একটা শৈলশহর, পপরাদে যাবো।

আমার জীবনে যতগুলো ক্যামেরা এসেছে, প্রত্যেকটাই টিপে টিপে পয়সা জমিয়ে কিনেছি। আমার ক্যামেরা খোয়া গেলে আমি খুব দুঃখ পাবো।

সুমাদ্রি এর ছবি

প্রাগে যাওয়া হয়নি হিমু ভাই ঐ ঘটনার পর। বুদাপেস্টও যাব ভেবেছিলাম। পরের বার সুযোগ পেলে ঐ বামাকুল দেখার লোভেই হয়ত ওদিকে একটা ঢুঁ মারতে পারি। ভাল থাকুন।

তারেক অণু এর ছবি

বেশী দুঃখ করেন না দাদা, অন্তত এমন দর্শনীয় জায়গাগুলো দেখা তো হয়েছে, পরের বার ছবি তুলবেন আবার।
আমার হিমালয়ের প্রথমবারের ছবিগুলো প্রায় সবই ডিলিট হয়ে গেছিল !
ব্রাতিস্লাভা বেশ ভালই লেগেছিল আমার, কিন্তু দানিয়ুব ছুয়েছি বুদাপেস্ট দিয়ে।
বর্ণনা চমৎকার লাগল।

সুমাদ্রি এর ছবি

দুঃখ তো একটু পেতেই হবে। আপনার দক্ষিণ আমেরিকার যাত্রায় যেন কোন চোরের খপ্পরে না পড়েন সেই আশাই করছি। ভাল থাকুন।

চিত্রাঙ্গদা এর ছবি

আমার প্রথম এবং একমাত্র ক্যামেরা কেনার পরে আনাড়ি হাতে একের পরে এক সাটার টিপে যেতাম সারাদিন । কাক থেকে শুরু করে লাস্যময়ী তরুণী সব কিছুই তখন অপার্থিব সুন্দর ছিল আমার কাছে। আমার আনাড়িপনায় বিরক্ত হয়ে একদিন চোর বাবাজি ক্যামেরাটাকে হাপিশ করে দিলেন ।
এখন আমি মর্মর সাগর তীরে উজ্জল সোনালি রোদে বানজেনটাইন সম্রাজ্যের প্রাচীন সব রাজপ্রাসাদে আর যাদুঘরে ঘুরে বেড়াচ্ছি...সবই আছে শুধু আমার প্রথম ওই কামেরাটা আর ছবি তোলার উৎসাহ ছাড়া!!

সুমাদ্রি এর ছবি

দুনিয়ার সব ক্যামেরা চোরেরা চুরির পর ছবিগুলো যদি কোন ওয়েবসাইটে আপলোড করে রাখত যেখান থেকে সব ছবি পুনরায় উদ্ধার করা যাবে তাহলে ক্যামেরা খোয়া যাওয়ার দুঃখটা একটু হলেও ঘুচত।

রণদীপম বসু এর ছবি

সাবধানবাণী দেখেই তো পোস্টে ঢুকেছিলাম, শুধু ছবিগুলো দেখবো, পড়বো না একটুও ! পোস্টের নিচে এসে বুঝলাম সব পড়ে ফেলেছি ! এখন উপায় ! ভুলতেও তো পারছি না যে আপনি ক্যামেরা হারিয়ে ফেলেছেন !

কী আর করা ! তবে কলমে মধু আছে আপনার, নির্দ্বিধায় ঝরাতে পারেন।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

সুমাদ্রি এর ছবি

উৎসাহ দিচ্ছেন, ভাল লাগল, আপনার কবিতার ব্লগটিতে নতুন কবিতা জুড়ছেননা যে!

রিয়েল ডেমোন এর ছবি

ম্যানহোলের ছবিটা আসলেই দারুন মজার।

সুমাদ্রি এর ছবি

আসলেই!

চরম উদাস এর ছবি

চলুক

সুমাদ্রি এর ছবি

হাসি

দ্যা রিডার এর ছবি

চলুক

উচ্ছলা এর ছবি

বড় লেখায় যাদের এলার্জী তাদের শুরুতেই পড়তে নিষেধ করেছেন যে?! যে কাজে নিষেধ আছে, সেইটা আমি বেশি করে করি !

লেখা খুব মনকাড়া হয়েছে হাসি

সুমাদ্রি এর ছবি

হাসি

রু (অতিথি) এর ছবি

ভালো লাগলো, তবে টিকটিকির ছবি না দিলেও পারতেন।

সুমাদ্রি এর ছবি

এটা আসলে ঠিক টিকটিকি নয়, এই সরীসৃপকে এখানে বলে মারগুইয়া, মাথাটাকে উঁচু করে তুলে সবসময় সে খুঁজছে নারী প্রাণিটিকে।

সিরাজুল লিটন এর ছবি

ফটোকগুলি ভালা পাইলাম।

'সিরাজুল লিটন'

মারুফ এর ছবি

অসাধারণ !!! ভালো লাগলো !!!

বিড়ি এর ছবি

মন খারাপ করবেন না ক্যামেরা পাওয়া যাবে কিন্তু মন খারাপ করে যে সময় চলে যায় তা পাওয়া যাবে না ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।