ফোরেলে সন্ধ্যায় স্মৃতি খাউজানি

সুমন চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন সুমন চৌধুরী (তারিখ: শুক্র, ১২/১১/২০১০ - ১:৪৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সচলায়তনে ইদানিং বেশ রেসিপিটেসিপি পড়তেছে। দিফিওর রেসিপি ধইরা কালী পূজার দিন কাচ্চি রানছিলাম। মাইনসে ভালোই কইছে খাইয়া। সেইটা যে পুরাপুরি ভদ্রতা না পাতিল খালি হওয়া তার প্রমাণ। তারপরের কয়েকদিন গেলো আবারো ধুনফুন খাইয়া। কোনদিন ইউনির মেন্জায়, কোনদিন তুর্কি দোকান থিকা ড্যোনার কিংবা ভেড়ার মাথার সুপ আর নাইলে রুটি দিয়া টমেটো ডিমের লণ্ডভণ্ড।

 

সময়টা খারাপ। আগেও খারাপ ছিল। ভবিষ্যতেও খুব সাংঘাতিকভাবে বদলাইয়া যাবে তেমন সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাইতেছে না। জীবনটা এই পর্যন্ত বাঁশের উপর দিয়া গেছে। ভবিষ্যতও খুব সম্ভবত যাবে। বাঁশের আয়তনটায়তনে হয়তো কখনোসখনো পরিবর্তন আসতে পারে। কিন্তু বাঁশ যে খাইয়াই যাইতে হবে সেই বিষয়ে এই মুহুর্তে তেমন কোন সন্দেহ নাই।

 

কথা হইলো দু:সময়ের দু:খে খাওয়া তো আর বন্ধ থাকবো না। সাদাকলারের কামলা হোক, ফকিন্নির পুতের কামলা হোক, ধার কইরা হোক, ভিক্ষা কইরা হোক যতক্ষণ জান আছে প্যাট খালি রাখার কোন অপশন নাই। আইজ সকালে কামলা দিয়া দুপুরে লাইব্রেরীতে কিছু সময়হত্যা কইরা   বিকালের দিকে বাইর হইয়া একটা বিড়ি ধরাইয়া এই কথাগুলাই ভাবতেছিলাম। ভাবতে ভাবতে বাসায় ফিরার পথ বদলাইয়া সোজা গেলাম গিয়া টেগুটএ। টেগুট হইলো উচ্চমধ্যবিত্তের সুপার মার্কেট। মানে সব জিনিসের দামই অন্য সুপার মার্কেটগুলার থিকা একটু কইরা বেশী। গিয়া কতক্ষণ এদিকসেদিক ঘুরলাম। এইটা সেইটা হাতে নিয়া লাড়াচাড়া কইরা আবার থুইয়া দেই। এরকম ঘুরতে ঘুরতে একসময় গেলামগা যেইখানে তাজা মাছ ব্যাচে সেইখানে। দেখি একটা মাত্র আনগেবট মানে সস্তার অফার আছে এই সপ্তাহে। সেইটাও আমার অতিপ্রিয় মাছ ফোরেলে। ইংরেজীতে যারে কয় ট্রাউট। অফারের শিল্ডের উপর বড় কইরা লেখা ১ ইউরো। আমার তো মন মেজাজ ভালো হইয়া গেলো লগে লগে। তাজা ফোরেলে মোটে এক টাকা ! কইলাম দেন একটা। বেডি দেখি বড় একটা উঠাইয়া সেইটা আবার ওজন করে। লেবেলের দিকে খিয়াল কইরা দেখি ১ ইউরোর উপর ছোট ছোট অক্ষরে ১০০ গ্রাম লেখা। পুরা মাছটার দাম খাড়াইলো তিন ইউরো তেত্রিশ সেন্ট। ফ্রোজেন কিনলে দুই ইউরোতে দুইটা পাইতাম। তাতে পার্থক্য হইতে যে বাসায় আইসা সেটা গলাইতে আবার কিছু টাইম যাইতো। কী আর করা মাছ কিনা টেগুট থিকা বাইর হইয়া বাসায় ফিরতে ফিরতে মনে হইলো কিনাই যখন ফালাইছি তখন আইজকা একটা গজব এক্সপেরিমেন্ট ফরজ।

 

রাস্তা পার হইয়া হাঁটতে হাঁটতে গেলামগা রেভে। এইটাও একটু নাক উঁচা সুপার মার্কেট তবে টেগুটের থিকা কিছু কম।  এক কেজি আলু কিনলাম। একবোতল অলিভ অয়েল আর এক বোতল বালজামিকো। বালজামিকো জিনিসটা মনে হয় জীবনে এই প্রথম কিনলাম।  কে জানি একবার কইছিলো যে ফোরেলে বেক করার সময় পিঁয়াইজের লগে একটু কইরা বালজামিকো দিলে স্বাদ বাড়ে। 

 

মাথার মধ্যে নানারকম আইডিয়া ঘুরতাছে কী দিয়া কেমনে কী। বাসায় আইসা প্রথমেই যেইটা করলাম ওভেন অন কইরা ১৮০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেডে দিয়া দিলাম। তারপর গল্ফের বলের সাইজের পিঁয়াইজ কাটলাম একটা এক্কেরে পুরা কুচাইয়া। মার্বেল সাইজের দুই কোয়া রসুন কাটলাম আরো সূক্ষ কুচি কইরা। লগে চাইরটা মাঝারি সাইজের কাঁচামরিচ।  তারপর সবগুলারে একলগে কইরা আরো একদফা মৌলিক কুচি। তারপর তিনটা মোটামুটি বড় সাইজের আলুর চামড়া ছাড়াইয়া একেকটারে মাঝখান থিকা দুইভাগ করলাম। ব্যাস কাটাকুটা শ্যাষ।

 

এইবার ফোরেলের প্যাকেট খুইলা দেখলাম প্যাট ফাড়াই আছে। প্যাটের মধ্যে পিঁয়াইজ-রসুন-কাঁচামিরচের ঘন্ট ভইরা দিয়া উপরে দুইতিন ফোঁটা বালজামিকো দিয়া দিলাম। এইবার মাছের সাইজের থিকা এদিক এদিক আধাবিঘৎ মতন বড় রাইখা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ছিঁড়লাম। তারপর ওর উপরে একটুস খানি অলিভ অয়েল আর দুই চিমটি মতন লবণ ছড়াইয়া তার উপরে রাখলাম মাছটা। এইবার মাছের উপরে আর দুই চিমটি মতন লবণ আর সামান্য অলিভ অয়েল দিয়া অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলরে এমনভাবে মোড়াইয়া দিলাম যাতে বেগানা বাতাস কোন চান্স পায়। আরো একটা অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল দিয়া আলুর সাইজমত ঠোঙ্গা বানাইয়া তার মধ্যে প্রথমে দিলাম কিছুটা আইরিশ বাটার আর লবণ তার উপর আলু দিয়া তারো উপর আবারো দুইতিন চিমটি লবণ ছিটাইয়া দিলাম। তারপর মনে হইলো আরে রেসিপি যেই দেশেরই হোক। আমি যেইটা করতেছি সেইটা কজমোপলিট্যান  হওয়া ফরজ। পিঁয়াইজের আর কাচামরিচের কুঁচি যা বাঁইচা গেছিলো তার পুরাটাই ছিটাইয়া দিলাম আলুর উপরে। তারপর ঐ আলুরেও এয়ারটাইট কইরা ঠোঙ্গা দুইটা দিলাম ওভেনে ভইরা। ঘড়িতে তখন কাঁটায় কাঁটায় সন্ধ্যা ছয়টা বিশ।

 

তারপর প্রথমে গত তিনদিনের জইমা থাকা থালাবাটি ধুইলাম। অরবাদে একটা নিরতিশয় সস্তা হোয়াইট ওয়াইনের কর্ক খুইলা কম্পুর সামনে আইসা বসলাম। কম্পক্ষে সোয়া একঘন্টা আরো বইসা থাকা লাগবো। কারণ তাপ দিছি মোট ১৮০ ডিগ্রি। কতক্ষণ দৈনিক পত্রিকা আর সচল লাইড়া গেলাম ইউটিউবে। পুরানা বাংলা ছবির গান শুন্তে খুব ইচ্ছা করতাছিল কয়েকদিন ধইরা। দিলাম সার্চ। কয়েক মাস আগেও একবার এরকম সার্চ দিছিলাম তখন কিছুই পাই নাই। আজকে টিবি দেওয়া মাত্র দেখি একটার পর একটা আসতেছে। শুন্তে আর দেখতে থাকলাম একেকটা কয়েকবার কইরা। আপনারাও শুনেন। ততক্ষণ আমার ফোরেলে আর আলু ওভেনে সাইজ হইতে থাকুক। 

 

 

 

 

 

সবগুলাই ফালতু গান। কিন্তু চালু গান। এরকম চালুগান আজকাল আর হয় না। অথবা হয় কিন্তু আমার কাছে চালু লাগে না।

 

একসময় দেড় ঘন্টা পার হয়। ওভেন খুইলা বাইর করলাম। বড় একটা বাসনে সাজাইলাম। এখন খামু। কুত্তার মতো খিদা লাগছে। খাওয়া শুরু করার আগে লেখাটা পোস্টাইলাম।

 

প্রৌস্ট উণ্ড গুটেন আপেটিট! 


মন্তব্য

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

পইড়া খিদা পাইলো। মন খারাপ

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

সুমন চৌধুরী এর ছবি

খারাপ হয় নাই খাইতে। তবে আলু মাঝখানের দিকে একটু কাঁচা ছিল। পরেরবার ১৮০´র বদলে ২০০তে করুম।



অজ্ঞাতবাস

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

বালজামিকো

কী?
এই মাছ এই দেশে পাওন যায় না, তাই এই রেসিপি বাদ। আপনের তেহারী রেসিপিটা ব্লগের আনাচ কানাচ থেকে খুঁজে বের করতে হইবো আবার। আমি তেহারী রানতারিনা... একবার রানতে গিয়া জুইত হয় নাই মন খারাপ
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

সুমন চৌধুরী এর ছবি

বালজামিকো হইলো একরকমের ইটালিয়ান ভিনেগার। উইকিতে দেখেন।

ইটালিয়ানরা এইটা উঠতে বইতে ইউজ করে।

তেহারির একটা ভিডিও ডেমো বানামু ভাবতেছি দুই বছর ধইরা। ভিডু ক্যামেরা নাই বইলা হইতেছে না মন খারাপ



অজ্ঞাতবাস

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

খুরশীদ আলমের গাওয়া, জাভেদ অভিনীত, "নিশান" সিনেমার "এই স্মৃতি একদিন ইতিহাস হবে" গানটার অডিও/ভিডিও কোথাও পেলে একটু টোকা দিয়েন।

পুরনো গানের মধ্যে "আমি তো বন্ধু মাতাল নই, মানুষ যদি মোরে নাই বল - বেঈমান বলো, বেঈমান" ট্রাই করে দেখতে পারেন।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ঐ গানটা আমিও সার্চ দিছিলাম। পাই নাই। আমি তো বন্ধু মাতাল নই অতমজা লাগে নাই মন খারাপ

আমি এক পাহারাদার সাধ্য আছে কার বাবার খুঁজতেছিলাম। হাবিবেরটা পাই। কিন্তু আসলটা কথাও পাই নাই। আমি আসলে রিমিক্স পছন্দ করি না।



অজ্ঞাতবাস

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

নিশানের গানটা খুঁজতে থাকেন, খুব দরকার। রাহাত ফতেহ্‌ আলী খানের "দিলতো বাচ্চা হ্যায়" গানের সুর ঐ গানের সুর দ্বারা বড়ই "ইন্সপায়ার্ড"। লোকজনকে এই তথ্য দিয়েছিলাম, কেউ বিশ্বাস করেনা। আসলে ঐ গানটা তারা শোনেনি তো।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

এ স্মৃতি একদিন ইতিহাস হবে/তুমি যে আমার মানসী হবে/হবে তুমি মোর অনুরাগী, ছন্দ হারা মনে ছন্দ জাগাবে.........খুবই প্রিয় গান ছিলো। শুধু এই গানটা শুনবো এবং দেখবো বলে নিশান দেখেছিলাম ১৩ বার।সত্তুরের দশকে সিনেমা আর গান ছিল আমার সকল সাধনার উৎস!
খুরশীদ আলমের এই গানটাকে নকল করে গাওয়া একটা হিন্দি গানও পরে শুনেছিলাম (কিশোর কুমারের কন্ঠে?)!

আজকাল ইউটিউবে এইসব খুঁজি আর শুনি। সুমনের দেয়া সবকয়টা গানই শুনেছি গত সপ্তাহে। আজ শুনেছি---শুধাই তোরে রাখাল বন্ধু বইসা নদীর ধারে/দিবানিশি বাজাও বাঁশি/ খুঁইজা বেড়াও কারে......(রাজ্জাক আর বেবী জামান)।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

ধন্যবাদ রিটন ভাই। আপনার দেয়া এই সার্টিফিকেটটার কথা এখন লোকজনকে বলতে পারবো। ভারতের বা পাকিস্তানের অনেকেই যে বাংলাদেশের গানের সুর নকল করে এটা এখানে অনেকেই মানতে চান না। আমাদের "আল্লাহ্‌ মেঘ দে, পানি দে, ছায়া দে-রে তুই আল্লাহ্‌ মেঘ দে" গানটার সুর নকল করা হিন্দী গান ("শারাবী" সিনেমাতে), উর্দু গান (রুনা লায়লার গাওয়া) শুনেছি। এমন আরো উদাহরণ আছে।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

হিন্দি 'শারাবী' ছবিতে 'দে দে পেয়ার দে পেয়ার দে পেয়ার দে রে, দে দে পেয়ার দে' গানটিতে 'আল্লা মেঘ দে পানি দে ছায়া দে রে তুই, আল্লা মেঘ দে'র সুরটা মেরে দিয়েছিলেন বাপ্পী লাহিড়ী। কিন্তু পান্ডব, নিশান ছবির 'এ স্মৃতি একদিন ইতিহাস হবে' গানটি একটি হিন্দি গানের নকল। মন্তব্যে আমি টুইস্ট করেছিলাম, যা মাঠে মারা গেছে!
অবশ্য হিন্দিওয়ালারা আমাদের দেশের গান থেকে প্রায়ই মেরে টেরে দেয়। শাফিন-এর একটা গান মেরে দিয়েছিলো। বেবী নাজনীনের একটা গানও।

ভালো থেকো।

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

এহ্‌হে, আপনার ট্যুইস্টটা আমার মাথার উপর দিয়ে গিয়েছে - তাই ধরতে পারিনি। আপনার কথাই ঠিক। খোদ "নিশান" সিনেমাটা হিন্দী "কিস্‌মাত" সিনেমার নকল।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

পান্ডব,
এই নাও তোমার প্রার্থীত সেই গানটি--এ স্মৃতি একদিন ইতিহাস হবে.....

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

অসংখ্য ধন্যবাদ বস্‌! এই বস্তু খুঁজে বের করলেন কীভাবে?!



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

সুমন ভাই, আমি নিজে মাছ তেমন পছন্দ করে না খেলেও আপনার রেসিপি পড়ে 'মুখজল' আটকাতে পারছি না। আমার বাড়িতে কেউ কখনও টুনা খায়নি (স্ত্রী ছাড়া)। আজকে দুই ক্যান কিনলাম। দেখি কালকে এগুলোকে সাইজ করা লাগবে।

রাতঃস্মরণীয়

সুমন চৌধুরী এর ছবি

টিনের টুনা দিয়া বছর দুই আগে কাবাব বানাইছিলাম। হারাম পানির সাথে খুব ভালো লাগছিল খাইতে।



অজ্ঞাতবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

টুনার সাথে একটা হালাল শ্যাম্পেন কিনেছি। খুলনায় যে ক্যানড টুনা, হালাল শ্যাম্পেন, এইসব পাওয়া যায় তা জানা ছিলো না। তবে যা বুঝতে পারছি ওই হালাল শ্যাম্পেনের গোটা বোতল আমারই শেষ করা লাগবে। বাড়িতে ওটা মার্কেট পায়নি। আর হারাম পানির সাথে কাবাব মনে হয় বেষ্ট এক্সেসরিজ।

রাতঃস্মরণীয়

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হালাল শ্যাম্পেন মন খারাপ



অজ্ঞাতবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

ওই আর কি! গতবছর কেনিয়ায় গিয়ে প্রথম ওটা দেখি। মাসাই মারা সাফারিতে একটা পুলসাইড ব্রেকফাষ্ট ছিলো। ওইখানে শ্যাম্পেন ছিলো। ব্যাচে কিছু নাবালক পোলাপানও ছিলো। আর আমিও কিছুকাল হলো শরাববিমূখ হয়েছি। ওরা আমাদের এই হালাল শ্যাম্পেন সার্ভ করেছিলো। আজ সন্ধ্যায় মার্কেটে যেয়ে দেখি সেই মাল খুলনায়। জিনিস কিছুই না, স্পার্কলিং গ্রেপস জ্যুস বা আ্যাপল জ্যুস। এই হলো হালাল শ্যাম্পেন।

রাতঃস্মরণীয়

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ক্যানড টুনা মনে হয় সবখানেই পাওয়া যায়। আমি সরাসরি তেলটা ছেঁকে পাউরুটিতে মাখন বা চিজ লাগিয়ে তার উপর স্প্রেড করে স্যান্ডুইচ বানায়ে ফেলি। সাথে আলুর চিপস থাকলে দারুণ হয়। হাসি
তবে অধিকাংশ বাংলাদেশীই দেখেছি (আমার পরিবারেও) একটুও প্রসেস না করে খেতে গেলে তেলের গন্ধটা ভালো লাগে না বলেন। সেক্ষেত্রে উত্তম হল পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ বদ্দা স্টাইলে কুচি করে, পারলে টমেটো আর আলুও ছোট্ট ছোট্ট টুকরো করে, সামান্য তেল গরম করে, ফ্লেকড টুনা ক্যানের তেল ছেঁকে ঢেলে দিয়ে, সবকিছু একসাথে ভেজে ফেলা। এইটা ডাল-ভাত, রুটি, সবকিছুতেই ভালো লাগে খেতে।

আটলান্টিক ব্লু ফিন্ড টুনা কিন্তু এক্সটিংকশনের পথে! আমি তাই যতই প্রিয় হোক, খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি এখন। হাসি

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

দুর্দান্ত এর ছবি

আটলান্টিক ব্লু ফিন্ড টুনা কিন্তু এক্সটিংকশনের পথে!

ভয় নাই! যে জিনিস ফ্রোজেন কেজি'র দাম ২০০ ইউরোর ওপরে, সেটা ৭০ সেন্ট এর ক্যানের জিনিস খেয়ে বিলুপ্ত করা যাবেনা।

ওডিন এর ছবি

সময়টা খারাপ। আগেও খারাপ ছিল। ভবিষ্যতেও খুব সাংঘাতিকভাবে বদলাইয়া যাবে তেমন সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাইতেছে না। জীবনটা এই পর্যন্ত বাঁশের উপর দিয়া গেছে। ভবিষ্যতও খুব সম্ভবত যাবে। বাঁশের আয়তনটায়তনে হয়তো কখনোসখনো পরিবর্তন আসতে পারে। কিন্তু বাঁশ যে খাইয়াই যাইতে হবে সেই বিষয়ে এই মুহুর্তে তেমন কোন সন্দেহ নাই।

কথা হইলো দু:সময়ের দু:খে খাওয়া তো আর বন্ধ থাকবো না।

আমগো লাইফটারে স্বয়ং গৌতম বুদ্ধও এতো সহজভাবে ব্যখা করতে পারতো বইলা মনে হয় না। এইজন্যেই দিনকালসময়মনশরীর খারাপ থাকলেই কইষা একটা খাওয়াদাওয়ার ধুন্ধুমার করে ফেলি। হাসি

______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আমি লগ আউট করে চলে যাচ্ছিলাম, আজকে যে এখনো চোখ খোলা রাখতে পেরেছি তাই অনেক মনে হচ্ছে! কিন্তু 'ফোরেলে', আপনার নাম এগুলো দেখে আবার ঢুকে পড়লাম। আমার জানা মতে ট্রাউট খুব স্বাদের মাছ, (নিজে খেয়েছি কিনা এখন মনে করতে পারছি না)!
আমি নিজে রান্না পারত পক্ষে করতে চাই না। কিন্তু বাধ্য হয়ে করতেই হয় কমবেশি, সাম্প্রতিক কালে রেহাই মিলেছে কিছুটা। আমার আসল পছন্দ হল খাওয়া!! দেঁতো হাসি খালি অবাক লাগে আপনারা প্রায় সব পুরোনো ব্লগাররাই পাকা রাঁধুনি তো বটেই, তবে বেশি বিস্ময়কর হল কীভাবে এইরকম আকর্ষণীয় করে রান্নার বিবরণ দেন?! রাঁধতে পারার বিষয়টা তো একটা শিল্প বটেই (নিজের রান্না খেয়েই টের পাই)! কিন্তু রান্নার এহেন বর্ণনা দিতে পারাটা অনেক বড় শিল্প মনে হয়!
যাই হোক, অনেকদিন পরে আমার আবার ব্রিটিশ ফিশ এ্যান্ড চিপসের কথা মনে পড়ে গেল! ব্রিটিশ্রা বেশি করে কড আর হ্যাডক দিয়ে মনে হয়। কিন্তু এখনতো মনে হয় না আমার আর ঘুম হবে! মন খারাপ

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

মূলত পাঠক এর ছবি

এই প্রিপারেশানে ঐ মাছের পেটের ভিতর লেবু চাকা চাকা করে কেটে দিলে আরো খোলতাই হয়! আর অয়েল পোচ করতে পারলে তো কথাই নেই (সেক্ষেত্রে ঐ প্যাকেজিং লাগবে না, সুতলি দিয়ে বেঁধে নিতে হবে)।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

ময়না কো? হেয় টের পায় নাই?

ভাইনাখটের সুমায় আইমু। লুল্ছিব্বাইয়ের লগে পিলান হৈতাছে। তখন ফোরেল কোরেল সবই টেরাই মারুমনি। অখন সার্ডিনের ভর্তা দিয়া ঠাইস্যা ভাত খায়াই পরান জুরাই।



বিএসএফ—
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ

কৌস্তুভ এর ছবি

ইশ, পড়ে খিদা পেয়ে গেল!

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

পড়ে ভালো লাগলো; খেতে নিশ্চয়ই সেরকম হয়েছিল?

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনারা হলেন ঘরসংসারী মানুষ, রান্নাবাড়া করেন মনের খেয়ালে প্রাণের আনন্দে। আর এইরকম পোস্টগুলো দিয়ে যে আমাদের বাধ্যতামূলকরাঁধুনে ব্যাচিলরদের দিলে বোয়ালমাছ সাইজের দাগা দিয়ে যান, সে কি বোঝেন্না?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

দাদা, আপনি কাকে বললেন কথাগুলো চোখ টিপি

কৌস্তুভ এর ছবি

ঘরসংসারী মানুষদের! ওই তো, নিচে মিম্বরের ১ নম্বর মন্তব্য দেখেন না!

অতিথি লেখক এর ছবি

বাঁশের চিন্তায় মনডা উদাস হয়ে ছিল। আপনার "কথা হইলো দু:সময়ের দু:খে খাওয়া তো আর বন্ধ থাকবো না।" পড়ে মনে হইল কি আছে জীবনে। কিন্তু জোগাড়যন্তর করার তেল নাই, তাই রেস্টুরেন্টে গিয়াই পেট ভরে খেয়ে এলাম।

সজল

দ্রোহী এর ছবি

১.
কী হাঙ্গামা করেন আপনারা! বিবিকে ভয় দেখাইবেন,"ত্বরা করে ভাত রান বেডি। নাইলে বিয়া কইরালামু আরেকখান।" দেখবেন চোক্ষের পলকে বিরানী হাজির।

২.
বালসামিক ভিনেগারকে বালছাল ভিনেগার বলায় একবেলা ভাল খাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছিলাম। লেখাটা পড়ে সেই বেদনাদায়ক স্মৃতি মনে পড়ে গেল। তবে বালসামিক ভিনেগার জিনিসটা আমার কাছে দুর্ধর্ষ লাগে।

মন খারাপ

৩.
হ। এইরাম চালু গান এখন আর হয় না। আপনের রুচি ঠিকই আছে কিন্তু গান বানানেওয়ালাদের রুচি নষ্ট হয়ে গেছে।


কাকস্য পরিবেদনা

দিফিও [অতিথি] এর ছবি

আপনার মশাই কপাল বটে, বিবিকে "মেশিন" ডাকেন, আবার দরকারমত নতুন বিয়ের চোখ রাঙানিও দেখান! তবে আপনার "মেশিনে"র সাথে আমি সহমত, বালসামিক ভিনেগারকে বা**ছাল ভিনেগার বললে আমিও মাইন্ড খেতাম।

@লেখকঃ ফয়েল খোলা, ধোঁয়া ওঠা মাছটাকে যেন দিব্য চোখে দেখতে পাচ্ছি, নিশ্চয়ই খেতে সেরকম হয়েছিল হাসি আপনার তেহারির পোস্ট খুঁজে বের করলাম, উইকেন্ডে ট্রাই করব, খালি এখন একটা হিন্দী সিনেমা দরকার দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

রান্নার বর্ননা পইড়া আফ্রিকান-আম্রিকান দের মতন গলা মোটা কইরা কইতে মন চাইলো - "ডাইয়ূম!!!"!!! কাফী হইছে ভাই।

-মেফিস্টো।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

ওরে খিদারে! মন খারাপ

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

মুস্তাফিজ এর ছবি

পেট খারাপ হউক।

...........................
Every Picture Tells a Story

মুস্তাফিজ এর ছবি

হ, আর টয়লেট পেপারে মরিচের গুড়া।

...........................
Every Picture Tells a Story

দ্রোহী এর ছবি

কমোডে সিট কভার না থাকুক বললেন না কেউ?


কাকস্য পরিবেদনা

অমিত এর ছবি

রিপিট, ঘ্যাচাং

অমিত এর ছবি

হাগতে আবার কমোড লাগে নাকি ?

দুর্দান্ত এর ছবি

ফোরেল? সুমধুর।

ফ্রিজে এই সামারে ধরা দুই একটা অবশিষ্ট থাকতেউ পারে। দেখি আজকেই তোমার রেসিপি ট্রাই দিমু। তবে আমি মনে হয় দের ঘন্টা তক যাবোনা। ট্রাউট-স্যামন-টুনা-সার্ডিন-হেরিং, মানে তেলতেলা মাছগুলা একটু 'আন্ডার' হইলে বেশী মজা পাই।

পরের বার একই রসিপি খালি ফয়েল/ওভেনের বদলে ৫০/৫০ জপফইতেল/ কমলাররসে মাছ ডুবাইয়া হালকা আঁচে ২০ মিনিট। সাবধান, কোন মতেই যেন বলক না উঠে।

হর্সরাডিশ (জার্মানিতে মনে হয় মিয়েরাটিখ বলে), কাঁচামরিচ, চাইভ (শ্নিতলাউখ) আর লালপিয়াজ কুচি আধা কাপ বাল্সামিকে ভিজায়া রাখতে হবে আধা ঘন্টা। তারপর সেইটা সিদ্ধ আলু বা পাস্তা'র উপরে।

সাথে এক দুই চুমুক মাঝারি সেক্ত্‌ বা রিজলিং, না থাকলে এক দুই চুমুক পোর্ট ই সই।

অমিত এর ছবি

জার্মানি যাওয়াটা ফরজের উপরে উঠল বলে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।