[justify]আমার প্রথম স্কুলের স্মৃতি তেমন মনে নেই, অল্প কিছু ছাড়া। আমার যে ঘিলু, তাতে না থাকাই স্বাভাবিক। এইনিয়ে আমার আক্ষেপ নেই, শুধু মাঝে মাঝে একটু দুঃখ পাই। আমার পরিচিত বন্ধুরা কী সুন্দর করে তাদের প্রথম স্কুলের নানা স্মরণীয় ঘটনা আওড়ে নিজেদের শৈশবের অমৃত আস্বাদন করে। আর আমি তা শুনে শুনে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাই। ব্যাপারটা বড়ই বেদনাদায়ক। এবং নিজের কাছে চরম অস্বস্তিকর। মানুষের জীবনের অন্যতম চমৎকার একটা সময়ের স্মৃতি তেমন কিছুই মনে নেই! সব হজম করে ফেলেছি! এ কীভাবে সম্ভব? মাথায় মাঝে মাঝে একান্তে ঝাঁকি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করি কোন মডেলের হাঁদারাম এটা। টকটক শব্দ হয় শুধু, আর কিছু মেলেনা। ইদানিং পরিচিত কয়েকজনের স্কুলের প্রথম অভিজ্ঞতার কিছু অসাধারণ রোমন্থন পড়লাম। তারপর থেকে বেশি বেশি মনে করার চেষ্টা করছি নিজের স্মৃতি। কিন্তু ঘুরেফিরে মনে থাকা ঘটনাই আবার চলে আসছে স্মরণে। নতুন কিছু মিলছেনা। কিন্তু সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হলো, সাথে একটা সেই সময়ের শোনা
[justify]১
গালে হাত দিয়ে তন্দ্রা মন খারাপ করে বসে আছে সোফায়। পাশে আম্মু। আব্বু আর ভাইয়া উঠে গেছে নিজনিজ ঘরে। এত্ত মনখারাপ হয়েছে যে কী করবে তন্দ্রা খুঁজে পাচ্ছেনা। মন খারাপ হবেই না বা কেনো। কী চমৎকার একটা নতুন পর্ব দিয়েছে আজ টম এন্ড জেরির; আর আম্মু এসে বলা নেই, কওয়া নেই, খুট করে দিলো চ্যানেল বদল করে। আম্মু, আম্মু কিংবা না, না, বলে চিৎকারের সময়ও পায়নি সে। তার আগেই আম্মু বললো, লক্ষীসোনা, রাতে খাওয়ার সময় দেখো বাকিটুকু। এখন আমি নাটক দেখি। নাস্তা ঝটপট খেয়ে গিয়ে ততক্ষণে হোমওয়ার্ক সেরে নাও। আর নাস্তা খাওয়া। তন্দ্রা গাল ফুলিয়ে বসে থাকলো কিছুক্ষণ।
আনমনে আনাগোনা মেঘময় মইতে,
উদাসীন জালবোনা স্মৃতিগড়া বইতে;
নীলহারা আসমানে মেঘালয় দুর্মর,
ঝিরিঝিরি বারিধারা মায়াময় মর্মর।
এইপারে বুনোঘাস কেঁপেকেঁপে উচ্ছল,
ওইদূরে তটিনীর জলনাচে চঞ্চল;
মনভরে স্নানসেরে গাছসব পাতাতে
চারিদিক ঝরঝর সুরময় দোলাতে।
এই সময়ের প্রতিটি নগরে কৃত্তিমতা জমে ওঠে
দীর্ঘশ্বাস ছাপিয়ে যখন স্বপ্নরা মৃতজন্মে
আস্তে আস্তে গড়ে জীবনের পরমায়ু;
হেঁটে চলা অনিশ্চয়তায় অবাধ্য দৃষ্টি,
বিষাক্ত নিলয়ের গভীরতা,
অনাহুত সম্পর্কের বুনট আর
স্থবির কিছু সন্দেহ।
[justify]১
বিকাল প্রায় পৌনে পাঁচটা। স্কুল আরও পনের মিনিট আগে ছুটি হয়ে গেছে। অর্ঘ্য আজ মহাখুশি। মহানন্দে পা নাচাতে নাচাতে এগুচ্ছে স্কুলের গেটের প্রাচীর ঘেঁষে অসাড় পড়ে থাকা ফুটপাথ ধরে। আজ আম্মু কিংবা আব্বু আসেননি গাড়ী নিয়ে তাকে নিয়ে যেতে। যদিও বাসা স্কুল থেকে বেশি দূরে নয়, হেঁটে মাত্র পনের থেকে বিশ মিনিটের পথ। আব্বু সাধারণত আসেননা,অফিসে থাকেন বলে। আম্মুই আসেন। আর আম্মু ব্যস্ত থাকলে কাদের চাচা, অর্ঘ্যদের গাড়ির ড্রাইভার।
[justify]আঁধারের পরে যে অন্ধকারে নিয়ে যায় আপনাকে
ক্রমাগত ক্ষয়ে যাওয়া অতীত, চেতনার মুখ
পূর্বাশার আলোতে ধরা পড়ে ছায়ার নিদারুণ আকুতি
কখনওবা উপেক্ষায় প্রাপ্তির সবটুকু সুখ।
নির্বিকার পদচিহ্নে ক্রমশ অস্পষ্ট হয়ে যেতে থাকে
ধুঁকে ধুঁকে এগিয়ে আসা গন্তব্য,
অনুভূতিতে আঁকড়ে থাকে হারানোর ইতিহাস
আর শূণ্যতার স্বরচিত মৃতকাব্য।
[justify]তোমাদের এই শহরে একদা একটি রাস্তার পাশে একটি নাম না জানা বৃক্ষ ছিল। ইঠ-কাঠ-বালিতে ঠাসা এই শহরে রাস্তার পাশে বৃক্ষ থাকা নিতান্তই বেমানান। বৃক্ষ থাকবে না, থাকবে শুধু কিছু কান্ডহীন পাতাবাহারের সমাহার। তাও থাকবে রাস্তার মাঝখানের ডিভাইডার কিংবা আইল্যান্ডে। অন্য কোথাও থাকার সুযোগে নেই। মানুষ সভ্যতার সবটুকু আবর্জনা নিজে শোষণ করে না কখনও। ফেলে যায় সেসব পাতার উপর জমে থাকা ধূলোর আস্তরণে প্রতিদিন। সময়ের ঘূর্ণিচক্রে তা মাটিতে মিশে যায়, হয়ত ফাল্গুনের শুরুতে কিংবা বর্ষার শেষে। এ শহরের পৃষ্ঠদেশ পুরোটাই প্রায় কংক্রিটের বর্মে আচ্ছাদিত। এ শহরের মাটিকে মানুষ সূর্যালোকের স্পর্শ দেয়না। সে পায়না কোনো বৃষ্টির স্নিগ্ধতা, বাতাসের ঘ্রাণ, বৃক্ষের শিকড়ের বাহুডোর, ফুলের পবিত্রতার ছোঁয়া। মাটির অপেক্ষায় অভাবে আস্তে আস্তে সেগুলো পচে গলে গলে গড়িয়ে যায় নর্দমার ঢাল বেয়ে, মানুষের উচ্ছিষ্টের সাথে। নর্দমাগুলো সে উদ্দেশ্যেই তৈরি।
[justify]মনমাঝি
চাঁদনি পসর রাইত
[justify]চাঁদখানি ভাসছে কুয়াশার চাদরে,
বুনোঘাস ঘামছে শিশিরের আদরে।
তারাগুলো লুকিয়ে আকাশের আড়ালে,
পাতাঝরা শিমুলটা দাঁড়িয়ে আকালে।
পাড়খানি কাঁপছে পুকুরে জড়ায়ে,
একপাশে কাশবন নীরবে ছড়ায়ে।
আসমান বিষাদে ধূসরিত উপরে,
মেঘতায় ঝুলছে শীতেফাটা গতরে।