মানুষের কাজই উদ্ভট সব কথা বলা, ভাবে সান্টিয়াগো। মাঝে মাঝে মনে হয়, ভেড়ারাই ভালো, কোনো কথাবার্তা বলেনা, চুপচাপ থাকে। আর না হলে বইতো আছেই। যখন যেমন ইচ্ছা, বই থেকে কত অবিশ্বাস্য সব কাহিনী জেনে নেওয়া যায়! অথচ মানুষের সাথে কথা বলতে গেলেই যত সমস্যা, কেউ কেউ এমন কথা বলে, এমন আজব সব কথা যে আর আলাপ চালিয়ে যাওয়ার উপায় থাকেনা।
“আমার নাম মেলখিযেডেক,” বলল বুড়ো। “কতগুলো ভেড়া আছে তোমার?”
দিগন্ত জুড়ে লালচে আভা ছড়িয়ে পড়ছিল, সূর্যটা হঠাৎই উঠল। বাবার সাথে ওইদিনের আলাপের কথা ভাবল সান্টিয়াগো, খুশি খুশি লাগল। কত প্রাসাদ প্রতিম দালান দেখলো, কত মেয়ে দেখলো, কিন্তু যে মেয়েটার জন্য গত কয়দিন থেকে ও অধীর হয়ে আছে, তার সাথে কোনোকিছুরই তুলনা চলেনা।
যুবকের নাম সান্টিয়াগো। পশুপাল নিয়ে ও যখন পরিত্যক্ত গির্জাটায় পৌঁছল, তখন চরাচরে ঘনিয়ে আসছিল সান্ধ্য আঁধার। গির্জার এদিকটার ছাদ ধ্বসে পড়েছে বহু আগেই। কোনো এক কালে যেখানে সাজঘরটা ছিল, ধ্বসে পড়া ছাদ ফুঁড়ে আজ সেখানে সগর্বে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল একটা ডুমুর গাছ।
চিঠিটা পেয়েছিলাম আমেরিকান প্রকাশনা সংস্থা হারপারকলিন্স থেকে, সেখানে বলা হয়েছিল, “দ্য অ্যালকেমিস্ট পড়ে মনে হয়, ভোরে ঘুম থেকে উঠে সূর্যের আবির্ভাব দেখা যাচ্ছে, অথচ বাকি পৃথিবী তখনও ঘুমিয়ে।” বাইরে গিয়ে আকাশের দিকে তাকালাম, নিজের মনেই ভাবলাম, “বইটা তাহলে অনুবাদ হতে যাচ্ছে!”